সাইকো_লাভার পর্বঃ১৫
#লেখিকাঃসাদিয়া_সিদ্দিক_মিম
দিয়ার চাচ্চু আর মামু একটা বাংলো বাড়ির গেটের আড়ালে দাড়িয়ে নজর রাখছে ভিতরে কোন গার্ড আছে কী না।
রায়হানঃ ভাই মশায় কামড়াইয়া খেয়ে ফেলল আমারে,আর কতক্ষণ এভাবে দাঁড়িয়ে থাকব বলুন।
আশরাফঃ রায়হান তুমি একটু চুপ করো ত,আমার মেয়েটা ভিতরে কী পরিস্থিতিতে আছে আল্লা মালুম,আর তুমি আছো আজাইরা কথা নিয়ে।
রায়হানঃ মেয়েটা ত ভিতরে বাইরে ত না,,,তবে আমরা বাইরে দাড়িয়ে থেকে কী করব,,,ভিতরে চলেন,,,দিয়াকে নিয়ে আসি।
কথাটা বলেই আশরাফের হাত ধরে টেনে ভিতরে নিয়ে যেতে নেয় কিন্তু তার আগেই আশরাফ তার হাত ঝাড়া দিয়ে ছাড়িয়ে রেগে বলল,,,,
আশরাফঃ তোমার মাথা ঠিক আছে হে,,,দেখতে পারছো না সামনে গার্ডরা পাহারা দিতাছে।তোমাকে নিয়ে আসাটাই আমার ভুল হয়েছে।গতবার যেমন তীরে এসে তরী ডুবাইছো এবারও না জানি তাই করো,,,,চুপচাপ দাঁড়াও এখানে।
রায়হানঃ গতবার আমি আবার কী করলাম,,,,স্প্রে না হয় আমি মারছি কিন্তু তুমি নিজে কী করছো হুম,,,,সেফটির জন্য মাক্স পড়তে পারলা না তুমি।আমি না হয় বোকা সোকা মানুষ কিন্তু তুমি ত কলেজের প্রিন্সিপাল তুমি কী করছো মিয়া,,,,এই বুদ্ধি নিয়া কলেজ চালাও কেমতে হে।
আশরাফঃ রায়হহহহহান,,,,ইচ্ছে করতাছে তোমারে পঁচা ডোবায় চুবাইতাম।তুমি একটু চুপ করবা,,এখানে কী আমরা ঝগড়া করতে আসছি হে,,,,, ঝগড়ুটে একটা।(হালকা চিৎকার করে)
রায়হানঃ কী আমি ঝগড়ুটে,,,,ঐ মিয়া তুমি ঝগড়ুটে,,,তোমার আটাশ গোষ্ঠী ঝগড়ুটে,তোমারে আমি পাবনা পা,,,,
আশরাফঃ চুপ,,,,গার্ডসরা এদিকেই আসছে।(রায়হানের মুখে হাত চেপে ধরে আড়ালে লুকিয়ে পড়ল)
গার্ডসরা গেটের বাইরে আশেপাশে ভালো করে চেক করে দেখে কেউ নেই তাই তারা গেট লাগিয়ে ভিতরের দিকে হাঁটা ধরে।আশরাফ রায়হানের মুখ থেকে হাত সরিয়ে আস্তে করে বলে,,,
আশরাফঃ শোন মন দিয়ে,,,,গার্ডসরা এখন অন্য দিকে গেছে ৫ মিনিটের আগে অরা এদিকে আসবে না,,,,ততক্ষণে আমাদের বাংলোর বাগানে প্রবেশ করতে হবে,,,তারপর অরা যখন ফিরে এসে আবার এদিকটা চেক করবে তখন আমরা ভিতরে চলে যাব,,,বুঝতে পারছো আমি কী বলেছি।
রায়হান মাথা নাড়িয়ে হ্যা বুঝায় তারপর তারা সাথে সাথে দেয়াল টপকে বাগানের ভিতরে ডুকে একটা গাছের আড়ালে লুকিয়ে পড়ে,,,,,গার্ডসরা এখনও গেটের দিকে আসে নি।
রায়হানঃ ভাই গার্ডসরা এখনও ত এলো না,,,মনে হয় দেরি হবে আসতে।চলেন এই ফাঁকে আমরা ভিতরে যাই।
আশরাফঃ একদম নয়,,,এত চালাকি করতে হবে না,,,চুপচাপ দাঁড়াও এখানে।
রায়হানঃ আমি দাড়িয়ে থাকতে পারব না,,,,আপনি দাড়িয়ে থাকেন,,,আপনার মত আমি এত ভীতু নই আমি গেলাম আমার ভাগনীকে উদ্ধার করতে।(ভাব নিয়ে)
রায়হান কথাটা বলে আর দাড়ায় না বাংলোর ভিতরের দিকে যাওয়ার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে,,,পিছন থেকে আশরাফ না করছে এখন যেতে কিন্তু রায়হান নিজের সাহসের পরিচয় দেয়ার জন্য এগিয়ে যাচ্ছে।বাংলোর কাছাকাছি আসতেই দুই জন গার্ডস এসে পড়ে আর রায়হান একদম গার্ডসদের সামনে পড়ে যায়।রায়হানের হাত পা কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে গেছে,,,বেচারা আসছে হিরো হতে কিন্তু হয়ে গেলো জিরো।
গার্ডসঃ কে আপনি?কী চাই এখানে,সোজাসাপ্টা উওর দিন,,,নয়ত এখানেই লাশ ফেলে দিব।(রায়হানের দিকে বন্ধুক তাক করে)
রায়হানের ত আগে থেকেই কাঁপা-কাঁপি শুরু হয়ে গেছে বন্ধুক দেখে রায়হান আর নিজেকে সামলাতে পারল না জ্ঞান হারাল।
আশরাফঃ উফফ এটা আমি কাকে নিয়ে এলাম,,,কিছু না কিছু গন্ডগোল করবেই করবে,,,,এটাকে না আবার গার্ড গুলো আদির কাছে নিয়ে যায়,,,আদির কানে খবর যাওয়ার আগেই আমাকে কিছু করতে হবে নয়ত দিয়াকে নিয়ে আবার কই লুকিয়ে পড়বে জানতেও পারব না।
আশরাফ আশেপাশে খুঁজে একটা আম গাছের ডাল পায়,,,,সেটা নিয়ে সামনে এগিয়ে যায়,,,তখন গার্ডদের মধ্যে একজন রায়হানের মুখে পানি ছিটায় আরেকজন ফোন বের করে কাউকে কল দিচ্ছে,,,,তখনি আশরাফ গিয়ে গার্ডদের মাথায় আঘাত করে আর গার্ডগুলো মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।তারপর আশরাফ তাড়াতাড়ি রায়হানের মুখে পানি ছিটিয়ে জ্ঞান ফেরানোর চেষ্টা করছে।এভাবে কিছুক্ষণ পর রায়হানের জ্ঞান ফেরে।আর সাথে সাথে রায়হান ধরফরিয়ে উঠে আর উঠেই যেই চিৎকার করতে যাবে আশরাফ রায়হানের মুখ চেপে ধরে বাংলোর ভিতরে প্রবেশ করে।
🍁অন্যদিকে🍁
আদি আধশোয়া হয়ে দিয়ার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,
আদিঃ আমার জান,,,,ইস্ কী আরামে ঘুমাচ্ছে দেখো,,,আমার ঘুম হারাম করে উনি শান্তির ঘুম ঘুমাচ্ছে।আর কয়টা দিন তখন আমার মত তোমারও ঘুম হারাম হবে দেখে নিও।খালি একবার জেনে নেই কে সায়ান ভাইয়ার উপর এ্যাটাক করিয়েছে,,,,তারপর সব ভুল বোঝাবুঝি মিটিয়ে তোমাকে নিজের করে নিব।
একটু থেমে আবারও বলে উঠল,,,
আদিঃ চার চারটা মাস দূরে রেখেছো আমাকে তোমার থেকে,,,,তার প্রতিশোধ গুনে গুনে নিব।এমন টর্চার করব না তোমাকে হাড়ে হাড়ে টের পাবে আমাকে কষ্ট দেয়ার ফল কী।যেমন তেমন টর্চার করবো না একদম লাভ টর্চার করব।
আদি যখন এসব কথায় মশগুল তখনি দিয়া নড়েচড়ে উঠে,,,সেটা দেখে আদি মুচকি হেঁসে বিছানার পিছনে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে।
আমার যখন ঘুম ভাঙ্গে তখন নিজেকে একটা রুমে আবিষ্কার করি,,,,এটা ত আমাদের বাড়ি না আর না আদিদের বাড়ি,,,তখন অন্ধকার ছিল তাই বুঝতে পারি নি এটা কোথায়।কিন্তু আদি কোথায়,,,,আশেপাশে কোথাও ত দেখছি না,,,,দেৎ জাহান্নামে যাক,,,,,এই কলার কাদি যত অশান্তির মূলে,,,,রুমে নেই ভালোই হয়েছে এই সুযোগে এখান থেকে পালাতে হবে।
যেই বিছানা থেকে নামতে যাব ওমনি আদি কোথা থেকে এসে আমাকে বিছানায় ফেলে আমার উপরে শুয়ে নিজের সব ভর ছেড়ে দেয়।
দিয়াঃ আল্লা গো আল্লা,,,,মেরে ফেলল গো,,,,হাতির নাতি কোথাকার নামুন আমার উপর থেকে।(রেগে)
আদিঃ কই পালানোর প্ল্যান করছিলা হুম,,,,এই আদিল আদনান শরীফের হাত থেকে পালানো কী এতই সোজা নাকি হুম।একবার পালিয়েছো বলে কী বারবার পালানোর সুযোগ পাবে নাকি হুম।(দিয়ার গালে বুড়ো আঙুল দিয়ে স্লাইড করতে করতে)
দিয়াঃ দদদেখুন,,,,,আআমি কোথাও পালাচ্ছিলাম না,,,,আআআমার খিদে পপপেয়েছে।
আদিঃ ইস্ আমার জানের খিদে পেয়েছে বুঝি,,,,আমারও না খুব খিদে পেয়েছে।
দিয়াঃ ততবে উউঠুন আর কিছু খখাওয়ার জন্য আনুন।
আদিঃ উমহুম উঠব না,,,,,আমি এখন তোমার মিষ্টি ঠোঁট দুটো খাব।(দিয়ার ঠোঁটে আলতো হাত ছুয়ে)
এই বজ্জাতটা বলে কী,,,এই সাইকো দেহি পুরাই রোমান্টিক মুডে চলে গেছে উল্টো পাল্টা কিছু করে না বসে।
দিয়াঃ দদদদেখখ,,,,,
আর বলতে পারল না আদি দিয়ার ঠোঁট জোড়া দখল করে নিল,,,,দিয়া ছোটার জন্য আদিকে কিল ঘুসি দিয়ে যাচ্ছে অনবরত কিন্তু আদি ছাড়ছেই না,,,আদি ব্যাস্ত দিয়ার ঠোঁটের স্বাদ নিতে,,,এভাবে অনেকক্ষণ থাকার পর আদি দিয়াকে ছেড়ে বাঁকা হেসে উঠে দাঁড়ায়।
আদিঃ এবার থেকে মিথ্যা বললে এমন মিষ্টি পাবা,,,সো মিথ্যা বলার আগে ভেবে নিও।
বলেই আদি চলে গেলো,,,কিন্তু বজ্জাতটা বুঝল কেমতে আমি তখন পালাতে চাইছিলাম আর সেটা অস্বীকার করে খাওয়ার কথা বলছি।দেৎ এত কিছু ভাবতে পারব না আগে দেখি এটা কোন জায়গা।
যেই ভাবা সেই কাজ বিছানা থেকে নেমে উর্না ঠিক করে সামনের দিকে হাঁটা দেই,,,এটা কোন জায়গা কিছুই বুঝতে পারছি না,,,কিন্তু বজ্জাতটা গেলো কই,,,এত বড় বাড়ি কই খুঁজব বজ্জাত কলার কাদিকে,,,বজ্জাতটা যেহেতু আশেপাশে নেই সেহেতু কোন না কোন গন্ডগোল আছে,,,,ও জানে আমি একা থাকলেই পালাতে চাইব,,,আর আমাকে একা রেখে চলে গেলো,,,নিশ্চয়ই গাপলা আছে।
এসব ভাবতে ভাবতে একটা ঘরের সামনে এসে দাঁড়ালাম ঘরটার ভিতরে কেউ ফিসফিসিয়ে কথা বলছে।আমি দরজাটা হালকা ধাক্কা দিতেই দরজাটা খুলে যায় আর ভিতরে যা দেখি তাতে আমার অন্তর্আত্মা কেঁপে উঠে।
#চলবে…
(সবার দোয়ায় এখন আল্লা রহমতে ভালো আছি,,,এখন থেকে রেগুলার গল্প দিব)