সাত সমুদ্রের তিমির পর্ব ১৯+২০

#সাত_সমুদ্রের_তিমির
পর্বঃ১৯
#সুমাইয়া_আফরিন

ইরা চেয়ারে বসে বসে বিস্কুট খাচ্ছে। হঠাৎ দরজায় জোড়ে জোড়ে ধাক্কা দেওয়ার আওয়াজ পেল সে।
আওয়াজটা এতই তীক্ষ্ম ছিল যে ইরা, লারা, মিমি আর অনু সবাই চমকে গেল।
মনে হচ্ছে এখনই দরজা ভেঙে কোনো মহিশ ভেতরে ঢুকে আসবে।
ইরা বিস্কুটের বয়েম টেবিলে রেখে দৌড়ে দরজার কাছে গিয়ে দরজা খুলে দিল। দরজা খুলতেই ইরাকে এক হাতে ধাক্কা দিয়ে রাফাত হনহন করে বাড়ির ভেতরে ঢুকে গেল।
ইরা এমন কিছুর জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিল না যার কারনে দরজার সাথে ধাক্কা খেয়ে ব্যথায় আর্তনাদ করে ওঠে সে।
রাফাত আগুনের বেগে অনুর রুমে ঢুকে গেল। অনু রাফাতকে দেখে চমকে লাফিয়ে উঠল।
বিছানায় পা ভাজ করে বসে ছিল সে। বিছানা থেকে এক লাফ দিয়ে উঠতেই গালে সজোড়ে থাপ্পর পড়ল তার।
মাহি এক থাপ্পরে মাটিতে বসে পড়েছে। নিজেকে কোনোভাবে সামলিয়ে উঠে দাড়াতেই রাফাত আরেকটা থাপ্পর বসিয়ে দিল তার গালে।
ঘটনার আকস্মিকতায় কিছুই বুঝে উঠতে পারল না সবাই।
নিজেকে ধাতস্থ করতে কয়েক সেকেন্ড সময় লেগে গেল অনুর। মাথাটা যেন ভন ভন করে ঘুরছে তার।
লারা, মিমি আর ইরা রাফাতের এমন অগ্নিমূর্তি দেখে অবাক হচ্ছে প্রতিটামূর্তে। অনুকে রাফাত এমন অমানুষিকভাবে কেন মারলো তা তাদের বোধগম্য নয়। দরজার কাছে হা করে তাকিয়ে আছে তারা।

অনু কোনোরকমে দাঁড়িয়ে ছলছল চোখে রাফাতের দিকে তাকালো।
অনুর বেদনাভরা দৃষ্টিও যেন রাফাতের মন গলাতে পারছে না।
অনু কিছু বলতে যাবে তার আগেই রাফাত অনুর দিকে এগিয়ে গেল।
অনু ভয় পেয়ে দুই পা পিছিয়ে গেলে রাফাত অনুর হাত ধরে হ্যাচকা টান মেরে নিজের কাছে নিয়ে আসে।
অনুর নরম গালদুটো শক্ত করে নিজের এক হাতের মুঠোয় নিয়ে আসে রাফাত। অনুর মুখের কাছে নিজের মুখ নিয়ে বলে ওঠে,

‘তোর এত বড় সাহস তুই আমার ফোন কেটে দিস?নিজেকে কি মনে করিস তুই? আমার সাথে এক রাত কাটানোর জন্য মেয়েরা লাইন দিয়ে থাকে আর তুই আমার ফোন কেটে দিস? এতো দেমাক কোথা থেকে আসে শুনি?’

অনু ব্যথায় হালকা আর্তনাদ করে উঠল। অনুর ব্যথায় হয়তো রাফাতের হুশ আসে। এক ঝাকি দিয়ে অনু মুখটা ছেড়ে দেয় রাফাত। অনু ব্যথায় কুকড়ে উঠছে। অনুর মনে হচ্ছে তার গাল দুটো কেউ টেনে ছিড়ে দিয়েছে। অনু রাফাতের সামনে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে লাগল। অনুর কান্না দেখে রাফাতের রাগ মুহূর্তেই পানি হয়ে গেল। অনুর জন্য এক রাশ মায়া ভাসতে লাগল তার নয়নজুড়ে।

অনুকে এভাবে নির্মমভাবে মারার জন্য মাথায় আগুন ধরে গেছে ইরা,লারা আর মিমির। মিমি নিজের রাগকে আয়ত্তে রাখতে না পেরে উচু স্বরে বলে উঠল,

‘আপনি অনুকে থাপ্পর কেন মারলেন? আপনার সাহস কি হয়, আমাদের বাড়িতে এসে অনুকে থাপ্পর মারার?

লারা মিমিকে সমর্থন করে ক্ষুদ্ধ স্বরে বলে উঠল,

‘ আপনি অনুকে বলছেন ওর সাহস কি করে হয় আপনার ফোন কেটে দেওয়ার?আরে বাবা, এই কথাটা কি আপনি ভালোভাবে বলতে পারতেন না? আপনি জানেন আপনার নামে নারী নির্যাতনের কেইস লাগাতে পারি আমরা?’

রাফাত লারার কথায় ফিচেল হাসল।ব্যঙ্গানো ভঙ্গিতে বলে উঠল,

‘ওহ রিয়েলি? আসলে, আমিও দেখতে চাই, তোমরা কেস করো কীভাবে? সারাদিন পুলিশ স্টেশনে বসে থাকলেও কোনো অফিসারের সাহস হবে না এফআইআর লেখার।’

রাফাতের কথায় হতভম্বিত হয়ে গেল তারা। অনু আর নিজের রাগকে সামলাতে পারলো না। একে তো নির্মমভাবে গায়ে হাত তুলেছে সে তারপরে আবার তর্কও করছে রাফাত। রাফাতের প্রত্যেকটা কথা এখন অনুর কাছে বিষের মতো লাগতে থাকল। অনু নিজের চোখ মুছে ক্রুব্দ্ধভাবে বলে উঠল,

‘কি সমস্যা আপনার? এমন কেন করছেন আপনি?’

রাফাত লারার থেকে চোখ সরিয়ে অনুর দিকে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইল। রাফাত অবাক চক্ষুতে অনুকে জিজ্ঞাসা করল,

‘তোমার কি হয়েছে সেটা আগে বলো? আমার ফোন বারবার কেন কেটে দিচ্ছিলে তুমি? তুমি আমাকে কি পেয়েছো? আমি খেলার পুতুল?যখন চাইলাম খেললাম আর যখন মন চাইল ফেলে দিলাম! আজকে বিকালে তুমি আমার সাথে দেখা করতে চেয়েছো আমি করেছি। বাট যখন আমি তোমার সাথে কথা বলতে চাইছি তুমি ফোন ধরার প্রয়োজন বোধটাও করলে না। কেন অনু? কেন? আশা করি এর উত্তরটা তোমার কাছে আছে।’

রাফাতের কথাগুলো তীরের মতো বিধতে লাগলো অনুর ছোট্ট হৃদয়ে। খুবই কর্কশ স্বরে কথাগুলো বলছে রাফাত। অনুর মনে পড়ে যাচ্ছে কিছুক্ষন আগে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো,

কিছুক্ষন আগে,

অনু মেয়েটার কান্নামিশ্রিত কন্ঠস্বর শুনে থমকে গেল। অনু এক প্রকার থমকে বসে রইল চেয়ারটার উপর। মূর্তিও হয়তো এতটা শক্ত হয়ে বসে থাকতে পারে না যতটা অনু পারছে। মেয়েটার কন্ঠে অনু অস্ফুট বেদনা খুজে পাচ্ছিল। কিন্তু রাফাতের মেসেজগুলোও অস্বীকার করতে পারছে না সে। রাফাত তাকে মিথ্যা কথা বলছে নাকি এই মেয়েটা?

দুই রাস্তার মাঝে আটকে পড়েছে অনু। কোন রাস্তাটা সঠিক আর কোনটা ভুল কিছুই বোধগম্য নয় তার। একজন মানুষ কি করে এতটা ভালো অভিনয় করতে পারে?অনুর বুঝতে বাকি নেই যে দুইজনের মধ্যে কেউ তো নাটক করছে কিন্তু যে নাটক করছে অসাধারন অভিনয় করছে সেই নাটকে। দর্শকদের মন খুব সহজেই মাতিয়ে নিতে পারছে সে।

অনু পুরো পৃথিবী যখন ঠিক ভুলে অন্ধকার হয়ে আসছিল ঠিক তখনই রাফাতের কল আসে। অনু সেই মুহূর্তে কারো ফোনকল ধরার মতো অবস্থায় ছিল না যার কারনে বারবার কেটে দিচ্ছিল রাফাতের ফোন। আর সেই কারনেই রাফাত এত পরিমান রেগে গেছে।

‘কি অনু,কিছু তো বলো? নাকি এখন তুমি বোবা হয়ে গেছো?’

রাফাতের ডাকে অতীত থেকে ফিরে আসে অনু। মাথা নিচু করে ভবছিল সে ঘটনাগুলো। অনু রাফাতকে উদ্দেশ্য করে বলল,

‘আমি ফোনে কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলাম না রাফাত। আপনি সবকিছু না জেনে কথা বলবেন না। আমি মানুষিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছি রাফাত।প্লিজ আমাকে আর এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন করবেন না।’

অনুর কথায় রাফাতের মনটা মোচর দিয়ে উঠল। রাফাত বুঝতে পারছে না হঠাৎ অনু এভাবে কথা বলছে কেন? আর কি কারনে অনু মানুষিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ছে? রাফাত খুব ভালো করেই জানে অনুকে এই বিষয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করলে অনু ঠিক তার বিপরীত উত্তর দেবে। তাই রাফাত নিজেকে কোনোভাবে শান্ত রাখার চেষ্টা করল।

অনু মাথা নিচু করে রাফাতের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। অনুর এমন ব্যবহার রাফাতের কছে অনেকটা অন্যরকম ও রহস্যজনক লাগছে। রাফাত বুঝতে পারছে তার নামে অনু কিছু একটা দেখেছে বা শুনেছে বা জেনেছে যা মোটেই তার পছন্দ হয়নি। সেই অজানা অপছন্দ লাগা বিষয়টি জানার জন্য রাফাত এক কঠিন ও ঝুকিপূর্ন সিদ্ধান্ত নিল।যার জন্য হয়তো প্রতিমুহূর্তে অনুকে অপমানিত হতে হবে। কিন্তু সব অপমানের যে অনু যোগ্য জবাব দিতে পারবে তা রাফাত খুব ভালোভাবেই জানে। যার জন্যেই সে এই সিদ্ধান্ত গ্রহন করল।
#সাত_সমুদ্রের_তিমির
পর্বঃ২০
#সুমাইয়া_আফরিন

‘তুই এই মেয়েকে কেন বাড়িতে নিয়েছিস রাফাত?’

এক দফা অবাক হয়ে কথাটা বলে উঠল কাকলি সরকার। রাফাত অনুর হাত শক্ত করে ধরে দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে। বাড়ির সবাই হা করে তাকিয়ে আছে অনু আর রাফাতের দিকে। কাকলি সরকার আর সায়মা যেন আকাশ থেকে পড়েছে রাফাতের এমন কাজে। কাকলি সরকার আর সায়মা কোনোদিন ভাবেনি রাফাত অনুকে এই বাড়িতে নিয়ে আসবে। নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারল তারা। চোখে রাগ ও আফসোসের পানি ভাসছে সায়মার।

বাড়ির কারো কারো ঠোটের কোণে অস্ফুট হাসি বিরাজ করছে। তারা একটু খুশিই হয়েছে অনু বাড়িতে আসায়। রাফাতকে খুশি দেখার অগাধ ইচ্ছা আছে তাদের। যার কারনেই তাদের মুখে আনন্দের আভা ছড়িয়ে আছে।

রাফাত অনুকে আর নিজের থেকে দূরে রাখার সাহস পাচ্ছল না যার কারনেই অনুকে এখানে নিয়ে আসা। অনু তার চোখের সামনে থাকলে অনুর প্রত্যেকটি পদক্ষেপ বুঝতে পারবে রাফাত। আর কোন কারনে অনু এমন করছিল সেটাও জানতে পারবে সে। রাফাত খুব ভালোভাবে জানে এই বাড়িতে অনুকে সবসময় অপমানিত হতে হবে। অনুর জোবনের ঝুকিও আছে এই বাড়িতে। আর সেই ঝুকি হচ্ছে সায়মা। রাফাত খুব সহজেই সায়ায়মাকে এই বাড়ি থেকে বের করে দিতে পারে কিন্তু তার মায়ের জন্য সে পারছে না। সায়মার প্রধান অস্ত্র হলো তার মা। এই অস্ত্র দিয়েই এখনও যুদ্ধ করে এই বাড়িতে টিকে আছে সে।

রাফাত অনুর হাত ধরে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করল। তার মায়ের সামনে গিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলল,

‘এত অবাক কেন হয়েছো তুমি?অনু আমার স্ত্রী।যতটা তোমার অধিকার আছে এই বাড়িতে থাকার ততটা অনুরও আছে।’

কাকলি সরকার তার ছেলের এমন কথা শুনে অবাকের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে গেলেন। কাকলি সরকারের চোখ অসম্ভব লাল হয়ে আছে। মাথার রগগুলো ফুলে আছে তার। রাগে দাঁত কিটমিট করতে করতে বললেন,

‘তুই এই মেয়েটার সাথে আমার তুলানা করছিস?’

রাফাত তার মায়ের এমন কথায় ভ্রু ক্যচকে তাকিয়ে রইল। ফিচেল হাসি দিয়ে বলে উঠল,

‘তুমি এসব কি বলছো মম? ওর সাথে তোমার কেন তুলনা করবো না বলো তো। ও তো কতো মানুষের জীবন বাঁচিয়েছে আর তুমি তো একটা মেয়ের সম্মানও বাঁচাতে পারোনি।’

কাকলি সরকার হতভম্বিত হয়ে তাকিয়ে রইলেন তার ছেলের দিকে। রাগে হাত পা থর থর করে কাঁপছে তার। রক্তিম চোখ ক্রমশ আরো রক্তবর্ণ ধারন করছে। রাফাত যে কখনো তার সাথে এভাবে কথা বলবে কখনো কল্পনাও করতে পারেনি সে। রাফাতের কথায় অনুর দিকে তাকাতেও এক প্রকার লজ্জা করতে থাকল তার।

রাফাত অনুর হাত আরো শক্ত করে ধরে টানতে টানতে উপরে নিয়ে গেল। রাফাতের পায়ের সাথে অনুর পা মেলাতে বারবার হুমড়ি খেয়ে পড়ছে সে। রাফাত একটা ঘরে এসে থমকে যায়। অনুর হাত ছেড়ে দিয়ে সোফায় ব্লেজারটা খুলে ওয়াশরুমে ঢুকে যায় রাফাত। অনু নির্বিকারভাবে তাকিয়ে থাকে রাফাতের যাওয়ার পানে।

রাফাতের থেকে চোখ সরিয়ে হতাশ হয়ে বিছানায় বসে পড়ে অনু। রাফাত তার বাড়িতে গিয়ে যা যা করেছে সবকিছুই যে এক দঃসপ্ন লাগছে তার কাছে। কিন্তু এটা দঃসপ্ন নয়। এটা বাস্তব ছিল। এক রাশ হতাশা নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দেয় অনু। চোখ বন্ধ হয়ে আসছে তার। মনে পড়তে লাগল সেই আর্তনাদে ভরা সময়টার কথা।

এক ঘন্টা আগে,,,,,,,

রাফাত কিছুক্ষনের জন্য চুপ হয়ে গেল। অনু এখনও ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না করছে । দুইটা থাপ্পরে সম্ভব ব্যথা পেয়েছে সে। ছোট থেকেই মামার কাছে অনেক আদরে বড় হয়ে সে। তার মামা, মামি কখনো উচু গলায় তার সাথে কথা বলেনি আর এই ছেলেটা এসেই তাকে থাপ্পর মেরেছে, এটা ভাবতেই আরো কান্না পাচ্ছে তার। হঠাৎ রাফাত অনুর দিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে উঠল,

‘অনু পাঁচ মিনিটের মধ্যে ব্যাগ গোছাও। আমার বাড়িতে যাবে তুমি।’

অনু এতক্ষন নিচের দিকে তাকিয়ে ছিল। রাফাতের কথায় মাথা উচু করে অবাক দৃষ্টিতে তাকায় সে। রাফাতের কথায় ইরা,লারা আর মিমিও অবাক হয়ে গেছে। হা করে তাকিয়ে আছে রাফাতের ভাবান্তর মুখস্রির দিকে। রাফাত অনুর অবাক দৃষ্টি উপেক্ষা করে বলল,

‘কি হলো?তাড়াতাড়ি করো।’

অনু রাফাতের দিকে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে। অনু রাফাতের কথার কিছুই যেন বুঝতে পারছে না। রাফাতের মা তাকে এক সেকেন্ডের জন্যেও সহ্য করতে পারে না আর এই লোক চাচ্ছে সে নাকি তার মায়ের চোখে সামনে সারাদিন থাকবে। অনু নাক টেনে একটা গলা খাকারি দিল। কান্নামিশ্রিত কন্ঠে বলে উঠল,

‘আপনার মাথা ঠিক আছে তো রাফাত?’

‘তো আমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে আমার মাথা ঠিক নেই?’

‘আসলেই মনে হচ্ছে। কারন আপনার মা আমাকে একদম সহ্য করতে পারে না তো আমি কীভাবে……

আর কিছু বলতে পারল না অনু। তার আগেই চুপ করিয়ে দিল রাফাত। উচ্চ কন্ঠে বলে উঠল,

‘তোমাকে এত বুঝতে হবে না। তোমাকে যতটুকু বলা হপ্যএছে ততটুকু করো।’

রাফাতের কথা শুনে মারাত্মক রাগ উঠছে অনুর। অনু একজন ইনডেপেন্ডেন্ট মেয়ে। কারো উপর সে নির্ভরশীল না। তো কোন কারনে সে রাফাতের কথা শুনবে?রাফাতের এমন কথার জন্য অনু কিছু বলতে গেল কিন্তু আর বলল না। নিজের রাগকে কোনো ভাবে সামলিয়ে ব্যাগ গোছানো শুরু করল।

ইরা, লারা আর মিমি অনুর ব্যাগ গোছানো দেখে অবাকের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌছে গেল। ইরা অনুর বাহুডানা ধরে একটু আড়ালে নিয়ে গিয়ে বলল,

‘অনু তুই সত্যিই রাফাতের সাথে যাবি?রাফাত তোর সাথে যা করলো তারপরেও তুই যাচ্ছিস ওর সাথে।’

অনু ইরার কথায় অনেকটা বিরক্ত হলো। বিরক্তিভরা নয়নে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলল,

‘আরে পাগল, রাফাতের বাড়িতে গেলে ওর বাবার বিষয়ে অনেক প্রমান জোগাড় করতে পারবো। কোনোভাবে রাফাতের বাবাকে হাইপার করে সব সত্যিটা বের করে ফেলবো তার মুখ থেকে। বুঝলি?’

ইরা ভ্রু উচু করে আবার নামিয়ে নিল। ইরা অনুর বুদ্ধির প্রশংসা করে ব্যাগ গোছাতে আগ্রহি করে তুলল।
_____________

হঠাৎ কপালে কারো ঠোটের স্পর্শ পেতেই চমকে উঠল অনু। চোখ খুলতেই নিজের মুখের অত্যন্ত কাছে রাফাতকে আবিষ্কার করল সে। রাফাত অনুর এভাবে জেগে ওঠাতে প্রচন্ড লজ্জা ও ভয় পেয়ে যায়। রাফাত ভেবেছিল অনু হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছে কিন্তু রাফাতকে অবাক করে দিয়ে অনু দিব্যি জেগে আছে।

রাফাত এক লাফ দিয়ে অনুর কাছে থেকে দশ হাত দূরে চলে গেল। অনু ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে রাফাতের লজ্জামিশ্রিত মুখের দিকে। অনু ক্ষীণ স্বরে রাফাতকে বলল,

‘একজন ঘুমন্ত মেয়ের সুযোগ নিচ্ছিলেন? আমি তো আপনাকে ডিসেন্ট বয় ভেবেছিলাম। কিন্তু এখন তো দেখছি আপনি এতটাও ডিসেন্ট না।’

রাফাত অনুর কথার কি উত্তর দেবে বুঝতে পারছে না। হঠাৎ মুখে চিন্তিতভাব এনে বলে উঠল,

চলবে,

(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here