#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ২১
,
,
,
,
আদ্রির ঘুম ভেংগে যায় মাঝ রাতের দিকে।প্রচন্ড খিদায় ঘুমটা ভেংগে যায়।উঠে বসতে গেলে পায়ের উপর ভারি কিছু অনুভব করে।আদ্রি নিচে তাকিয়ে দেখে নির আদ্রির কোমর জড়িয়ে ধরে পেটে মুখ গুজে শুয়ে আছে।আদ্রির সময় জেনো সেখানেই থমকে যায়।নিশ্বাস আপন মনেই ভারি হতে শুরু করে।আপন মনেই হাত চলে যায় নির এর চুলের ভাজে।
নির একটু নড়ে চড়ে উঠে। আর এর কারনে নির এর নাকটাও আদ্রির পেটে আরও গভির ভায়ে ছুয়ে যায়।আদ্রি নির এর চুল খামচে চোখ বন্ধ করে নেয়।
চুলে টান পরায় নির এর ঘুম টাও ভেংগে যায়।আদ্রির বন্ধ চোখ জোড়ার দিকে তাকাতেই নির এর জেনো ঘোর লেগে যায়।
নির উঠে বসে আদ্রির মুখের সামনে পড়া চুল গুলো কানের পিছনে গুজে দেয়।আদ্রি চোখ মেলে তাকাতেই নির এর নেশালো চোখে আটকে যায়।
নিরঃএটা কিন্তু ঠিক না আদরপাখি এই ভাবে আমাকে বেসামাল করে দিওনা। পরে কিন্তু সামলাতে পারবা না (দুষ্টু সুরে)
নির এর বলার ধরন দেখে লজ্জায় গাল দুইটা লজ্জায় লাল বর্ন ধারণ করলো।
আদ্রিঃযতসব ফালতু কথা এবার উঠুন আমার পা কি আপনার কাছে বিছানা মনে হয় নাকি।
নিরঃযদি চাই তো তোমার পা কেনো তোমার পুরো শরীরকে নিজের বিছানা বানাতেও আমার একটুও সময় লাগবেনা।
আদ্রিঃযতসব ফালতু(রাগী কন্ঠে)
আদ্রি সেখান থেকে চলে যেতেই নির হো হো করে হেসে উঠে।
নিরঃআদর পাখিরে ভেবেছিলাম তোকে শাস্তি দিবো বাট আমি আমার প্ল্যান চেঞ্জ করে নিয়েছি। তোলে শাস্তি দিলে তোর চোখ দিয়ে পানি বেরুবে যেটা সহ্য করার ক্ষমতা আমার নেই। এর চেয়ে ভালো তোর এই লজ্জায় রাঙানো মুখটা দেখবো।খুব শখ না নিজেকে খারাপ বলার অপবিত্র বলার।না খেয়ে থাকার চোখের পানি ফেলার সব কিছু শুদে আসলে তুলবো(ডেভিল স্মাইল দিয়ে)
আদ্রি কিচেনে এসে দেখে সেখানে রান্না করা কিছু নেই আর সেও তেমন একটা রান্না পারেনা তবুও ফ্রীজে থাকা আলু দেখে ভাবলো আলুর ভর্তার সাথে গরম ভাত খাবে। ব্যাস ডান। আদ্রি কোমরে ওর্না পেচে কাজে লেগে পড়লো।
নির কিচেনের দেওয়ালে হেলান দিয়ে আদ্রির কাজ করা দেখছে পাক্কা গৃহীনি লাগছে তাকে। অদ্ভুদ এক মায়া জেনো ঘিরে ধরেছে তাকে।অবাক নয়নে তাকায় আছে নির আদ্রির দিকে মোহনীয় এক ঘ্রানে পুরো কিচেন মৌ মৌ করছে।
আদ্রি ভাত নামাছিলো এমন সময় নির আদ্রির কানের কাছে নিজের মুখ নিয়ে যেয়ে স্লো ভয়েস এ বললো
ঃআমার বউ হবে আমার মনের পাখি আমার আদরপাখি
আদ্রির সারা শরীর বেয়ে আলাদা শিহরণ বয়ে গেলো কিন্তু পরক্ষনেই মনে পড়ে গেলো পার্টির রাতে নির এর বলা কথা গুলো।আদ্রি তাচ্ছিল্য হেসে ভাত নামিয়ে সব কিছু নিয়ে ডাইনিং টেবিলে বসলো।
——-
হস্পিটালের করিডোরে বসে আছে মেহের। হাতে তার ম্যাডিকেল ফাইল। কিছু দিন ধরেই অসুস্থ লাগছিলো তাই এসেছিলো আর টেস্ট করাতেই তার সন্দেহ ঠিক হলো ১ মাসের প্রেগন্যান্ট সে।তার ভিতরে বেড়ে উঠছে রিয়াজ এর অংশ। মেহের হাসবে না কান্না করবে জানেনা সে। কয়দিন পরে তার ডিভোর্স এর হেয়ারিং আর এদিকে তাদের জীবনে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি আসতে চলেছে।
হ্যা রিয়াজ আর মেহের এর ডিভোর্স। রিয়াজ তার বাবা মাকে খুব ভালোবাসে। আর তার মা প্রতিবার সেটার ই সুযোগ নেয় এবার ও একই কাজ করেছে সে নিজেকে মেরে ফেলার হুকমি দিয়ে রিয়াজ এর থেকে ডিভোর্স এর পেপার এ সিগনেচার করায়ে নিয়েছে।মেহের জানতো এমন কিছু হবে।
মেহের পেটের উপর হাত দেয়
মেহেরঃএই শুনতে পাছিস।আমি তোর মা। খুব অভিমান হচ্ছে তোর তাই না যে কেমন মা আমি বাকি আম্মু রা তার বেবিদের আশার কথা শুনলে খুশিতে নেচে উঠে কিন্তু তোর মা চোখের পানি ফেলছে।আই এম সরি বাচ্চাটা। তোর মাম্মাম তোকে খুব ভালোবাসে সত্যি।আই লাভ ইউ।
মেহের এর চোখ দিয়ে পানি পরতে গেলেই মেহের চোখ বন্ধ করে ফেলে।
——-
আদ্রিয়ান নওমিকে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছে।
নওমি জেদ ধরায় দুইজনে কোলকাতার রাস্তা ঘুরতে বেরিয়েছে।
নওমি বিভিন্ন কথা বলছে আর আদ্রিয়ান ভালো শ্রোতার মতো সব শুনছে।
হঠাৎ করে সেখানে বিকট একটা শব্দ হলো। দুইটা গাড়ির সংগর্ষ লেগেছে। একটা গাড়ি থেকে লোক বের হয়ে এসে অপর গাড়ির লোকের কোলার চেপে ধরলো। মহূর্তে নওমির মস্তিষ্কের কিছু নিউরন সচল হতে শুরু করলো চোখের সামনে যেগুলো সৃতি স্পষ্ট ছিলোনা সেগুলো স্পষ্ট হয়ে চোখের সামনে ফুটে উঠলো।মাথায় সব চাপ নিতে না পেরে মাথা ধরে বসে পরলো নাক বেয়ে রক্ত বের হতে আরম্ভ করলো।একসময় অজ্ঞান হয়ে রাস্তায় ঢলে পরলো। আদ্রিয়ান অস্থির হয়ে নওমিকে কোলে তুলে নিয়ে সামনের হাস্পাতালে নিয়ে গেলো।
আদ্রিয়ান নিজেই নওমিকে চেক আপ করতে শুরু করলো।নওমির কিছু টেস্ট ও করালো আর সেটা দেখে আদ্রিয়ান খুশিতে আত্নহারা হয়ে গেলো।কারন সেদিনের জন্য নওমির মস্তিষ্কের নিউরন গুলো অচল হয়ে গেছিলো সেগুলো এখন সচল হয়ে গেছে পুনরায়।
ভোরের আলো চোখে পড়তেই ঘুম ভেংগে গেলো নওমির।নিজেকে অচেনা জায়গায় দেখে চমকে গেলো।মাথায় অসম্ভব ব্যাথা করছে।টি টেবিল থেকে পানি নিতে গেলে জগটা পরে যায়।
কাচ ভাংগার আওয়াজে ঘুম ভেংগে যায় আদ্রিয়ান এর।নওমির জ্ঞান ফিরে এসেছে দেখে আদ্রিয়ান হতদম্ভ হয়ে ছুটে আসে। রুমের কাউচে শুয়ে ছিলো আদ্রিয়ান।
আদ্রিয়ানঃএই মেয়ে ঘুম ভেংগে গেছে তো আমাকে ডাকবে না যদি তোমার আঘাত লাগতো তখন দেখি আসতে আসতে উঠো।
নওমি অবাক চোখে দেখছে। অচেনা একটা লোকের চোখের নিজের এতো চিন্তা তার মস্তিষ্কে আঘাত হানছে।
নওমিঃআমি কোথায় আ,আমার আব্বু আম্মু কোথায় আপনি কে ডাক্তার।(আশেপাশে তাকিয়ে)
আদ্রিয়ান দুই কদম পিছিয়ে যায়।তার আর বুঝতে বাকি নেয় নওমি ঠিক হয়ে গেছে সম্পূর্ণ রুপে।ভুলে গেছে সে তাকে।তার সৃতির পাতা থেকে মুছে গেছে আদ্রিয়ান নামক ব্যাক্তিটির পরিচয়।
আদ্রিয়ান কোন রকম নিজেকে শান্ত করে বাহিরে যেয়ে হস্পিটালের একটা ডাক্তার কে বলে চেক আপ করতে। ততক্ষনে নির আর আদ্রিও পৌঁছে গেছে সেখানে।আদ্রিয়ান কালকেই নিরকে ফোন করে জানিয়েছে।
আদ্রিয়ান ফাকা রাস্তায় হেটে যাচ্ছে।সে জানতো একদিন এমনটা হবে। সবকিছু ভুলে যাওয়ার চান্স ছিলো ৯৮%।২% সুস্থ হওয়ার চান্স যেনো আদ্রিয়ান এর কাছে ২০০% পার্সেন্ট ছিলো। কিন্তু আজকে নওমির চোখে নিজেকে অচেনা হিসেবে দেখে বুকের বা পাশটাই চিনিচিন ব্যাথা হছিলো।মনে হচ্ছিলো কেউ তার কলিজা ছিড়ে বের করে ফেলেছে কেউ।
আদ্রিয়ান ফাকা রাস্তাই বসে পরলো হাটু গেড়ে দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে চিৎকার করে উঠলো।পরিবেশ যেনো থমকে গেলো। আদ্রিয়ান এর চিৎকারে মেঘের মনটাও যেনো বিষিয়ে গেলো সেও আকাশের উপর অভিমান করে কান্না করে দিলো পুরো শহর আজকে মেঘের পানিতে ভিজবে।
আদ্রিয়ানঃকেন ভুলে গেলি তুই আমাকে।এটা তো কথা ছিলোনা।কথা ছিলোনা আমাকে ভুলার আজীবন তোর সাথে থাকার কথা ছিলো। কিন্তু তুই মাঝ পথেই ছেড়ে দিলি আমার হাত কেনো। আমি তোকে মাফ করবোনা কোনদিন ও না (চিৎকার করে)
—–
জানালা ধরে দাঁড়িয়ে আছে আদ্রি।নির তার পিছনে এসে দাঁড়িয়েছে বুঝতে পেরেও নড়লোনা সে
নিরঃমন খারাপ(পকেটে দুই হাত গুজে)
আদ্রিঃভাইয়ার জন্য খারাপ লাগছে। না জানি কতোটা কষ্ট পাচ্ছে।যার চোখে এতোদিন নিজের জন্য আলাদা এক অনূভুতি দেখেছে যাকে আপন হিসেবে চিনেছে আজকে তার চোখে সে অচেনা। এর চেয়ে বেশি কষ্ট আর কোন অনূভুতিতে নেয়। সেটা আমার থেকে ভালো আর কে বুঝবে।
আজকের পরিবেশ টা বড্ড ভারী আজকে কারো ঠোঁটের কোনে লেগে নেয় হাসি সবার চোখে আজ পানি কেউ প্রিয় মানুষ কে নিজ দোষে হারিয়ে। কেউ অজান্তে হারিয়ে।কেউ আবার পরিবারের জন্য।কেউ আবার ভালোবাসার মানুষটির চোখে পানি দেখে।
কোথায় এসে দাঁড়াবে এদের কাহিনী। কি হবে এদের জীবনে আদৌ কোনদিন এদের জীবন একে অন্যের সাথে জুরবে???
#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ২২
,
,
,
,
,
দেখতে দেখতে কেটে গেলো একটা সপ্তাহ।বাবার মৃত্যুর কথা এখনো জানেনা আদ্রিয়ান আদ্রি।মিসেস খান চলে গেছেন আমেরিকাতে। আদ্রি নির এর বাসাতেই থাকে এক প্রকার বাধ্য হয়ে। নওমি আর ওর ফ্রেন্ডশিপ হয়ে গেছে খুব ভালো বেস্ট ফ্রেন্ডস তারা।
জানালার বাহিরে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নওমি।দৃষ্টিতে উদ্দাসীনতা এসে হানা দিয়েছে। তার কোন কিছুই মনে নেয় আগেকার কোন কথা। সবাই শুধু এই টুকু বলেছে তার এখন ২২ বছর তাছাড়া কিছু তার জানা নাই।
নওমিঃএই যে নিল আকাশ তুমি তো খুব বিশাল। তোমার কোন সীমানা তো নেই।পুরো পৃথিবীতে আবৃত হয়ে আছো তাহলে তুমি নিশ্চয় জানো এই ১০ বছরে কি হয়েছে।আমার না কেন জেনো খুব একা একা লাগছে কিন্তু আমার কাছে তো সবাই আছে বাবা আম্মুর কবরেও যায় রোজ। তবুও কিসের এই অজানা অনূভুতি কেনো মনে হয় কেউ খুব কাছে থেকেও নেই। কখনো কখনো কি মনে হয় যানো কেউ আমাকে দেখছে। খুব গভির ভাবে দেখছে। (মন খারাপ কর কথা গুলো আওরাতে থাকে নওমি)
নওমির জানালা থেকে কিছু টা দূরেই অন্ধকারে ভ্যানের উপরে বসে থেকে নওমিকে দেখছে আদ্রিয়ান। লাল দুই ঠোঁটের ভাজে পুরছে জলন্ত সিগারেট।উজ্জ্বল মুখটা কেমন কালো হয়ে গেছে।।
নির তখন আসে নওমির রুমে।বোনের উদাস দৃষ্টি নির এর চোখে বড্ড কাটা দিছে।।তার বোনের মন টা ভালো নেয় কিন্তু সে নিরুপায় কি করে করবে মন ভালো তার বোনের। এটা যে মনের টান তার বোনের মন ও যে পুরছে তার প্রিয় মানুষ টার জন্য যার কথা তার মনে না থাকলেও তার প্রতিটি নিশ্বাস তার মনের মাঝে গেথে আছে।
নিরঃপিচ্চি
নওমি এতোটাই প্রকৃতি দেখতে মশগুল ছিলো যে ভাইয়ের ডাক তার কান অব্দি পৌঁছাতে পারেনি।
নির পুনরায় ডেকে উঠে এবার ডাকটা একটু জোড়েই ছিলো চমকে উঠলো পিছনে তাকিয়ে ভাইকে দেখে শান্ত হয়।নির বোনের ভয়ার্ত মুখটা দেখে এগিয়ে যায় বোনের কাছে এক হাত দিয়ে আগলে নেয় বোনকে।
নিরঃমন খারাপ কেনো বুচি(আদূরে কন্ঠে)
নওমিঃজানিনা ভাইয়া।জানো কাউকে না খুব মনে পরে মনে হয় কেউ একজন খুব কাছে থেকেও দূরে। কেউ একজন আছে যাকে এই মন কাছে চায় খুব করে কিন্তু কে সে। খুব চেষ্টা করি পুরাতন কথা গুলো মনে করতে কিন্তু পারিনা। চোখের সামনে ঝাপসা হয়ে আসে।
নিরঃফাকা বসে থাকিস তাই এইসব উল্টো পাল্টা চিনতা ঘুরে বেরায়। কালকে থেকে সকাল বেলা উঠে বাড়ির সব কাজ করবি। বসে থেকে মোটা হয়ে যাছিস(নাক টিপে)
নওমিঃআমি কাজ করবো। আমি মোটা হয়ে যাচ্ছি দ্বারা
বলেই নওমি নির এর পিছা নিতে শুরু করে মারার জন্য। নির ও দেয় দৌড়। দৌড়াতে দৌড়াতে দুইজন নিচে নেমে আসে। আদ্রিতা কফি নিয়ে কিচেন থেকে বের হছিলো তখনি নির দৌড়াতে দৌড়াতে এসে আদ্রির পিছনে যেয়ে লুকিয়ে কানে কানে কিছু বলে ততক্ষনে নওমিও নিচে নেমে আসে দুই ভাই বোনের ধরাধরির মাঝেই নির আদ্রির গালে কিস করে দেয় দৌড়। নওমি সেটা দেখে হো হো করে হেসে উঠে আদ্রি লজ্জায় সেখান থেকে চলে যায়।
নির আদ্রিয়ান কে দেখেনিয়েছিলো নিচে তাই আদ্রিকে কানে কানে বলে দিলো আদ্রিয়ান বাহিরে।আদ্রি মনে মনে নির কে বকে বাহিরের দিকে চলে গেলো।
আদ্রি যেয়ে আদ্রিয়ান কে দেখে আদ্রিয়ান বসে বসে সিগারেট ফুকছে।আদ্রি রেগে আদ্রিয়ান এর হাত থেকে সিগারেট টেনে নিয়ে নেয়।
আদ্রিঃকি এই সব হ্যা কি এই সব ভালোই তো উন্নতি হয়েছে।
আদ্রিয়ানঃসোনাবাচ্চা তুই এই রাতে বাহিরে কেন বাসার ভিতরে যা।
আদ্রিঃচুপ একদম চুপ আর একদিন যদি দেখেছি এইসব ছাইপাঁশ গিলতে। তবে
আদ্রিয়ানঃতবে(ভ্রু কুচকে)
আদ্রিঃতবে আমিও খাওয়া শুরু করে দিবো(মাঝায় হাত দিয়ে)
আদ্রিয়ানঃতুই খাবি (হো হো করে হেসে দিয়ে).
আদ্রি নাক ফুলায়। আদ্রিয়ানঃখাবো না আর যা(আলতো হেসে আদ্রিয়ান বোনকে বুকে জরায় নিলো)
——–
পেটে হাত দিয়ে বিছানার এপাশ ওপাশ করছে কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছে না তার।বমি করতে করতে অবস্থা খারাপ।যে সময়টা একটা মেয়ে সবার সাপোর্ট চায় সে জায়গায় মেহের কে একাই সব সহ্য করতে হচ্ছে।
মেহেরঃকি হয়েছে বাবাটা ঘুমচ্ছোনা কেনো হাম মাম্মাম প্রচুর টায়ার্ড। একটু ঘুমাও। এই রাতে তোমার আইস্ক্রীম খাইতে ইচ্ছা হলো পাগল বাচ্চাটা। আচ্ছা চলো দেখি ফ্রীজে আছে কি না।
মেহের উঠে যেয়ে ফ্রীজ খুলে দেখে ফ্রীজে আইস্ক্রীম নাই। মেহেরঃআইস্ক্রীম তো নাই বাচ্চাটা আচ্ছা আজকে থাক কালকে খাওয়াবো কেমন
উফফ বাবার মতোই জেদী আচ্ছা চলো দেখি
মেহের মাথায় ওর্না পেচিয়ে বের হয়ে যায়। মেহের আশেপাশে তাকায়ে দেখে দূরের একটা ছোট সোপ। মেহের সেখানে যায়তেই পা দুইটা থমকে যায়। রিয়াজ দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু একা নয় তার পাশেই বসে আছে অত্যন্ত সুন্দরী এক রমনী।পরনে কালো শাড়ি পরি থেকে জেনো কোন অংশে কম লাগছেনা মেয়েটাকে।
মেহের এর চোখ দুইটাতে পানিতে টইটম্বুর হয়ে আছে। জেনো এই মহূর্তে জল গরিয়ে পরবে চোখ থেকে। রিয়াজ এর কোন দিকে খেয়াল নেই সে তো ব্যাস্ত নিজের হাতের ফোন চালাতে।
মেহেরঃখুব তো বলেছিলাম পারবো তোমাকে অন্য কারো সাথে সহ্য করতে কিন্তু কোথায় পারছি।বুকের ভিতর টা যে জ্বলে যাছে।সে তো কেবল তোমার পাশে দাড়িয়েছে তাতেই এই অবস্থা (মনে মনে কথা গুলো নিজেকে বলে)
মেহের এর ধ্যান ভাংগে দোকানদারের ডাকে
ঃআপামনি আপনাকে কি দিবো
মেহেরঃভ্যানিলা চকলেট স্ট্রোবেরি ম্যংগো সব মিক্স করে দেন (নিজেকে স্বাভাবিক করে)
উপস্থিত সবাই অবাক হয় হয়তো প্রথমবার কেউ এমন টা চেয়েছে।রিয়াজ মেহের এর কন্ঠ শুনে তাকায় সব চেয়ে বেশি অবাক হয় তার অর্ডার করা স্টাইলে। কারন মেহের স্ট্রোবেরি আর ম্যংগো আইস্ক্রীম সহ্য করতে পারেনা।
সেখানে থাকা এক বয়স্ক মহিলা মেহের দিকে যেয়ে মেহের এর থুতনি তুলে
মহিলাঃকি রে মা মুখের যে তেজ যে লাবণ্যতা কয় মাস চলছে হুম
মেহের ঘাবড়ে যায় পিছনে তাকিয়ে একবার রিয়াজ এর দিকে চায় রিয়াজ ও উৎসুক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। সে ও যে অবাক হয়েছে সেটা তার দৃষ্টিতে স্পষ্ট।
মেহেরঃনা না আন্টি আপনি কি বলছেন এরকুম কিছুই না
(কথা কাটাতে)
মহিলাঃএই চুল তো আর এমনি এমনি পাকে নি রে মা। মেয়েদের মুখের এই উজ্জ্বলতা তখনি আসে যখন সে তার মাঝে অন্য কোন প্রান থাকে।
মেহের কি বলবে বুঝতে পারেনা। তখনি দোকানদার এর ডাক পরে। মেহের মহিলা কে বিদায় দিয়ে চলে যায়। রিয়াজ তার পাশে থাকা মেয়েটাকে যেতে বলে সেও মেহের এর পিছু নেয়।
হঠাৎ করে হাতে টান পরায় মেহের ভয় পেয়ে যায়। পিছনে ঘুরে রিয়াজ কে দেখে অবাক হয় সাথে খানিকটা ঘাবড়েও যায়
মেহেরঃতু তুমি এখানে। আর ধরেছো কেনো ছাড়ো
রিয়াজঃআগে আমার প্রশ্নের উত্তর দেও।(হাত টেনে নিজের কাছে নিয়ে এসে)
মেহেরঃকি কিসের প্রশ্ন হ্যা আর কিসের উত্তর।
(ঘাবড়ে যেয়ে)
রিয়াজঃকি হয়েছে তোমার
মেহেরঃকি করবা যেনে সেটা
রিয়াজঃমেহের কি হয়েছে
মেহেরঃহবু বউ কিন্তু মাশাল্লাহ খুব সুন্দর কোন হুর
রিয়াজঃআমার বউ তার থেকে হাজার গুনে সুন্দর(মনে মনে)কথা কাটাবা না
মেহেরঃতোমাকে বলার প্রয়োজন মনে করিনা আর ভুলে যেও না তুমি নিজে সব শেষ করেছো।সো এই অধিকার আমার উপর খাটাবা না।
মেহের হাত ঝাড়া দিয়ে সেখান থেকে চলে যায়।রিয়াজ সেখানে দাঁড়ায় থাকে
রিয়াজঃতোমার এই এড়িয়ে যাওয়াটা আমার সামনে সব স্পষ্ট করে দিলো মায়াপরী। তোমাকে আমি কোন দিন ও ছাড়তাম না আর না তোমার জায়গায় অন্য কাউকে বিয়ে করতাম। একটু সময় দিতে পারোনি। তুমি আমার কাছ থেকে এতো বড় একটা সত্যি লুকিয়ে একদম ঠিক করোনি।।।।(ডেভিল স্মাইল দিয়ে)
,
,
,
,
,
চলবে!!!!