সীমাহীন ভালোবাসার নীড় পর্ব -২৩+২৪

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ২৩
,
,
,
,
,
নওমি আইস্ক্রীম খাছিলো আর কানে হেডফোন দিয়ে গান শুনছিলো এমন সময় তার মাথা যেয়ে বাড়ি খায় কারো বুকে মাথা তুলে তাকিয়ে অচেনা কাউকে দেখে অবাক হয়। কারন এর আগে সে এই মানুষ টাকে দেখেছে বলে তার মনে নেয় কিন্তু মনে হচ্ছে চোখ গুলো তার ভীষণ পরিচিত।

নওমি দূরে সরে যেতে নিলেই বলিষ্ঠ এক হাত এসে তার কোমড় জরিয়ে তার দিকে টেনে নেয়। আচমকা টান পরায় নওমি যেয়ে বারি খায় ছেলেটির বুকে। অচেনা এক ঘ্রাণ মস্তিষ্কে অনেক চেনা বলে মনে হচ্ছে।আলাদা এক মাদকতায় নওমির সারা শরীরে শিহরণ জাগিয়ে দেয় শূন্য জায়গা টা অজান্তেই পূর্ণ মনে হচ্ছে।

নওমি চোখ বন্ধ করে ছেলেটির শরীরের গন্ধ নিতে থাকে।আদ্রিয়ান ও এতোদিন পরে নওমিকে কাছে পেয়ে জরিয়ে ধরে ধীরে করে যাতে নওমি টের না পাই কিন্তু দুইজনার এই সুন্দর মহূর্ত নষ্ট করতে সেখানে আসে নির।

কারো আসার শব্দ পেয়ে আদ্রিয়ান নওমিকে ছেড়ে দেয়।কিন্তু নওমি তখনো আদ্রিয়ান এর শরীরের ঘ্রাণ নিতে ব্যাস্ত

আদ্রিয়ানঃউহুম উহুম ম্যাডাম অচেনা একটা ছেলেকে যে এই ভাবে জড়িয়ে ধরেছেন মানুষে দেখলে তো ভুল ভাববে(নওমির কানের কাছে যেয়ে ধীর গলায়)

নওমি চমকে উঠে নিজের সম্মতি ফিরে পায় দ্রুত আদ্রিয়ান কাছ থেকে দূরে এসে দাঁড়ায়।লজ্জায় আদ্রিয়ান এর দিকে তাকাতেও পারছেনা।

নওমিঃছি নওমি তুই এতোটা নির্লজ্জ হলি কি করে তোর মাথা কি ঠিক নেই অচেনা অজানা এক ছেলের বাহুতে এই ভাবে ছি ছি।কিন্তু কি বা করতাম অজানা এক মাদকতায় ঘিরে ধরেছিলো যে।(মনে মনে মন আর মস্তিষ্কের মধ্যে যুদ্ধ চালাতে লাগলো)

কিন্তু নওমির যুদ্ধটা বেশিক্ষন স্থায়ী হলোনা কারন তার আগেয় নির এসে সেখানে উপস্থিত হলো।

নিরঃএনিথিং রং গাইজ দুইজনে এমন ভাবে দাড়িয়ে আছো কেন
নওমিঃনা না ভাইয়া কিছু হয়নি(তাড়াতাড়ি করে বলে উঠলো)

নওমির বলার ধরন দেখে নির এর ভ্রু কুচকে গেলো আর আদ্রিয়ান এর মুখে ফুটে উঠলো হাসি।

আদ্রিয়ানঃনাথিং মিস্টার নির চৌধুরী।
নিরঃওয়েলকাম মিস্টার খান। রেজওয়ান মেনসানে আপনার স্বাগতম।
আদ্রিয়ানঃথ্যাঙ্কিউ ইউ সো মাচ মিস্টার চৌধুরী।
নিরঃপিচ্চি আজকে দেখে আদ্রিয়ান তোকে পড়াবে।
নওমিঃমানে।
নিরঃতুই ভালো করে জানিস তোর এই অবস্থার জন্য তুই সব ভুলে গেছিস আর এই বয়সে তোকে স্কুলে পাঠানো সম্ভব না সো আজকে থেকে আদ্রিয়ান তোকে পড়াবে গোট ইট

নওমিঃ এই সেরেছে কাজ যাকে প্রথম দিন দেখেই আমার হার্টবুট(হার্টবিট মজা করে বললো) বাইরা গেসে তার কাছে পড়তে লাগলে আমার পড়া তো হবে না উলটো। তার উপরে যে হ্যান্ডসাম এরে দেখে তো স্যার স্যার ফিলিংস ই আসেনা(বিরবির করে)

আদ্রিয়ানঃস্যার স্যার ফিলিং আসেনা তো কি ফিলিং আসে(কানের কাছে ফিসফিস করে)
নওমিঃহিরো হিরো ফিলিং আসে পুরোই আগুন।
আদ্রিয়ানঃতাই নাকি মিস নওমি(জোরে)
নওমি বুঝতে পারে সে কি বলতে যায়ে কি বলে ফেলেছে লজ্জায় সেখান থেকে দৌড়ে চলে যায়। নির আর আদ্রিয়ান হো হো করে হেসে দেয়।

—–

আদ্রি সোফায় বসে অফিসের কিছু কাজ করছিলো এমন সময় নির সেখান দিয়ে যেতে লেগে বলে গেলো “”আমার জন্য এক কাপ কফি নিয়ে আমার রুমে আসবেন ১০ মিনিটের মধ্যে ১ মিনিট হেরফের হলে পানিশমেন্ট “”।কথা গুলো বলে হন হন করে চলে গেলো

আদ্রিঃআমার জন্য এক কাপ কফি করে আনো নাহলে পানিশমেন্ট।(নির এর নকল করে)আইসে আমার রাজা মশাই যতোসব আলাদা ফুটানী চাকরানী করে থুয়ে দিয়েছে। ধূর ভালোলাগে না। আজকে তোরে জন্মের কফি খাওয়াছি দ্বারা তুই।

বলে রেগে মেগে চলে গেলো কিচেনে কফি বানাতে। কফি বানায়ে সেটাতে ইচ্চামতো কাচা মরিচ ভেংগে দিয়ে দিলো কারন গুড়ো মরিচ দিলে লাল হয়ে যাবে আর নির বুঝতে পারবে।

কফিটা ছেকে মগে ঢেলে শয়তানী এক হাসি দিয়ে নির এর রুমের দিকে হাটা দিলো। নির তখন সোফায় বসে ক্লাইন্ট দের সাথে মিটিং করছিলো ভিডিও কলে।

আদ্রি কফি দিয়ে বের হতে নিবে তখনি নির আদ্রির হাত ধরে পাশে বসিয়ে দেয়।

নিরঃমিস আদর প্লিজ জয়েন দেট মিটিং।
আদ্রি আর কি করবে বসে গেলো মিটিং এর জন্য। নির এক সিপ কফি মুখে নিতেই তার ঠোঁটে হাসি ফুটে উঠলো।

নিরঃসরি জেন্টেলম্যানস আমাকে এই মহূর্তে মিটিং আ ক্লোজ করতে হচ্ছে।সরি

ওইপাশ থেকে কেউ কিছু বলতে যাবে তার আগেয় কল কেটে দেয়। আদ্রি দৌড় দিতে নিলেই নির আদ্রির হাত ধরে নিজের কোলে বসায় দেয় আদ্রির জান পাখি উড়ে যাবে এমন অবস্থা।

আদ্রি ছুটাছুটি করছে কিন্তু পেরে উঠছেনা নির এর সাথে।।নির এক হাত দিয়ে আদ্রির কোমড় জড়িয়ে রেখেছে।

আদ্রিঃএবারের মতো বাচিয়ে দেও আল্লাহ আর কোন দিন ও বাঘের সাথে লাগতে যাবোনা ভুল হয়ে গেছে আল্লাহ আমার প্লিজ। (মনে মনে)

নির লম্বা একটা সিপ নিয়ে সেটা না গিলে মুখে রেখে কফির মোগ টা সাইডে রেখে ডান হাত দিয়ে আদ্রির মুখ চেপে ধরে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে নিজের মুখের সমস্ত কফি আদ্রির মুখে দিয়ে দেয়।
আদ্রি যেনো লাড়ি ভুড়ি বের হয়ে যাওয়ার উপক্রমে।এতো ঝাল মুখ নিমিষেই লাল হয়ে যায় ঠোঁট দুইটা ফুলে গেছে রীতিমতো।

নির আদ্রির সোফায় শুয়ায়ে দুই সাইডে দুই হাত বাধায়ে আদ্রির ঠোঁটের ভাজে নিজের ঠোঁট ডুবায় দেয়।
আদ্রি পা দুইটা লাফালাফি করছে।হাত দুইটা মুচরাছে।আদ্রি যখন দেখলো যে কাজ হচ্ছেনা তখন আর না পেরে নির ঠোঁটে বসায় দিলো কামড়। কিন্তু নির এর সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ হলোনা উল্টো নির এর কামড়ে আদ্রির ব্যাথায় চোখে পানি চলে আসে।

প্রায় অনেক ক্ষন পরে নির আদ্রিকে ছেড়ে দেয়।আদ্রি তখন ফুফায় ফুফায় কান্না করছে কিন্তু সেদিকে নির এর কোন খেয়াল নাই সে নিজের ঠোঁট মুছে উঠে দাঁড়ায় কাবার্ড থেকে একটা প্যাকেট বের করে আদ্রির হাতে দেয়।

আদ্রি সেটার দিকে খেয়াল করেনা সে তো নিজের মতো কান্না করতে ব্যস্ত

নিরঃস্টোপ। যদি ৫ মিনিটে রেডি না হয়েছো তাহলে কেবল তো একটা কামড় দিলাম ঠোঁটে তখন পুরো শরীরে কামড়ের দাগ থাকবে আর লাইসেন্স ছাড়া আমি এতো দূরে যেতে চাচ্ছিনা কিন্তু তুমি যদি চাও তাহলে।

নির দুষ্টু চাহনী নিয়ে আদ্রির দিকে এগুতে নিলেই আদ্রি শপিং ব্যাগ নিয়ে দেয় দৌড়

——

রিয়াজঃকি শুরু করেছো হ্যা দিবো কানের নিচে এক থাপ্পড়।
(রাগী চোখে)
মেহেরঃওই একদম ধমকাবা না বলে দিলাম হু(নাক ফুলায়ে)
রিয়াজঃনাহ নাহ আপনাকে ধমকাবো না আদর করবো
মেহেরঃকরো(মিষ্টি হেসে)
রিয়াজঃদিবো এক থাপ্পড়।সব গুলো ফল শেষ করবা একটা যদি বাদ রেখেছো দিবো থাপ্পড়।
না খায়ে না খেয়ে নিজে তো কষ্ট পাছে আমার মেয়েটাকেও দিচ্ছে।
মেহেরঃওহ সব চিন্তা তো নিজের মেয়ের। মেয়ের মায়ের তো চিন্তা নাই থাকবেই বা কেন মেয়ের মাকে থোরি না ভালোবাসে।(অভিমানি কন্ঠে)
রিয়াজঃমেয়ের মাকে না ভালোবাসলে মেয়ে কই থেকে আসছে শুনি(দুই গালে হাত দিয়ে কপালে ভালোবাসার স্পর্শ দিয়ে)

(বুঝলেন না তো। তো শুনেন আজকে ছিলো মেহের আর রিয়াজ এর ডিভোর্স হেয়ারিং।দুইজনেই উপস্থিত ছিলো সেখানে। হুট করে মেহের এর শরীর টা খারাপ হতে শুরু করে কোন রকম চেয়ার থেকে উঠে দাড়াতে নিলেই মাথা ঘুরে উঠে।)

রিয়াজ মেহের কে কোলে তুলে নিয়ে আসে হস্পিটালে। আর সেখানে ডক্টর বলে
“আপনার ওয়াইফ প্রেগন্যান্ট জানার সর্তেও কিসের এতো টেন্সেন আর উনি খাওয়া দাওয়া করে না বিপি লো এরকুম থাকলে যে কেনো সময় মিসকেরেজ হতে পারে। টেক কেয়ার ওফ হার””

ডাক্তার এর মুখে সব শুনে তার মুখটা অন্ধকার হয়ে যায়।সে কেবিনে ঢুকে দেখে মেহের এর জ্ঞান ফিরে এসেছে রিয়াজ কে দেখেই মুখ ঘুরায় নেয় সে। রিয়াজ দরজা বন্ধ করে ভিতরে প্রবেশ করে মেহের এর পাশে বসে

রিয়াজঃশুনো আমাকে যেদিন আম্মু বলেছিলো আরেকটা বিয়ের কথা সেদিন ই আমি মানা করেদি কিন্তু আম্মু শুনেনা জোর করে মাইশা(যার সাথে বিয়ের কথা চলছিলো)দেখা করতে পাঠায় আমি ঠিক করে ফেলি যে ওর সাথে দেখা হলেই সব বলে দিবো কিন্তু যায়ে শুনি সে অন্য কাউকে ভালোবাসে আর বিয়ের দিন পালিয়ে যাবে কারন ছেলেটা কিছুদিন সময় চায় আর আমিও ভেবেনি সে পালিয়ে গেলে আম্মু মান সম্মান বাচানোর তাগিদে তোমার সাথে বিয়ে দিয়ে দিবে।

সব প্ল্যান মাফিক চলছিলো কিন্তু তুমি আমার মাথা খারাপ করে দিয়েছিলা ডিভোর্স ডিভোর্স করে রাগ উঠে গেছিলো তাই আমিও ফেক ডিভোর্স পেপার রেডি করায় তোমাকে শাস্তি দেওয়ার জন্য আর ওইটা কাজি অফিস ছিলো যেটা তুমি খেয়াল করোনি।

সব কিছু বলে দম নেয় রিয়াজ।তারপর কিছুটা মেলো ড্রামা হয়)#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়
#লেখিকাঃনওশিন আদ্রিতা
#পার্টঃ২৪
,
,
,
,
,
আয়নার সামনে দাঁড়ায় থেকে নিজেকে পর্যবেক্ষক করছে আদ্রি।পরনে তার ওফহোয়াইট রংগের ডিজাইনার শাড়ি চুল গুলোতে সাদা আর্টিফিশিয়াল ফুল কালো চুলে ফুল গুলো দেখতে অসম্ভব সুন্দর দেখাছে। চোখে টান টান করে কাজল দেওয়া।ঠোঁটে লাল লিপস্টিক। দুই হাত ভর্তি চুড়ি রিনঝিন করছে।

আদ্রির কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে সেখানে আগমন হলো নির এর। নির এর পরনেও ওফ হোয়াইট কালারের টি শার্ট হোয়াইট কালারের জ্যাকেট ব্লাক জিন্স। এক কথায় অসম্ভব সৌন্দর্য ঘিরে ধরেছে।স্পাইক করে রাখা চুল গুলো যেনো নিরের সৌন্দর্য দ্বিগুন করে দিয়েছে। আদ্রির খুব ইচ্ছা করছে নির এর গালে লেপ্টে থাকা খোচা খোচা দাড়ি গুলোর উপরে হাত বুলাতে কিন্তু তা কি সম্ভব।

নির মুগ্ধ নয়নে তাকিয়ে দেখছে তার আদর পাখিকে।কতো দিনের তৃষ্ণা মেটাছে সে নিজেও জানেনা। তার বড্ড ইচ্ছা ছিলো তার আদর পাখিকে এই সাজে দেখার আজকে তার ইচ্ছা পূরণ হলো এখন যদি মৃত্যুও আসে সেটাতেও কোন আফসোস থাকবে না তার।

নির আদ্রির সামনে হাটু গেরে বসে পড়তেই ভয়ে আদ্রি দুই কদম পিছিয়ে যায় সেটা দেখে নির এর ভ্রু কুচকে যায় আপনাআপনি।

নিরঃকি সমস্যা পেছালেন কেনো।
আদ্রিঃআ আপনি এই ভাভাবে বসলেন কে কেনো (কথা বলতে বলতে বার বার কেপে উঠছে জিহবা)
নিরঃতোতলাছো কেন আমি তোমাকে ধমক দিলাম নাকি বকলাম করলাম টা কি সে ইট ড্যাম ইট কিসের ভয় সামনে আগাও বলছি (রেগে হুংকার দিয়ে উঠে)

আদ্রিকে এগুতে না দেখে নির আদ্রির হাত ধরে টেনে তাকে সামনে নিয়ে এলো। আদ্রির বাম পা তুলে নিজের হাটুর উপর নিতে নিলেই আদ্রি বাধা দেয়।
নির এবার রেগে জোরে টান দেয় আদ্রি কোনরকমে নিজেকে সামলায় তার আর সাহস হয়না পা টা সরানোর নির যে রকম একটা রাগী লুক দিয়েছে যে আদ্রি ভিজা বিড়াল।

নির সযত্নে আদ্রির দুই পায়ে সুন্দর করে আলতা পড়ায় দিলো।আদ্রি অবাক চোখে দেখছে। নির কিছুনা বলে আদ্রির হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো।

দুইজনে পাশাপাশি হাটছে রাত তখন ১০ টা। দুইজনে কিছুদুরে এসে একটা রিক্সা নিলো। দুইজনে পাশাপাশি বসে পড়লো আদ্রি ইতস্ত হয়ে কিছুটা দূরত্ব নিয়ে বসতে নিলেই নির আদ্রির কোমড় জড়িয়ে নিজের দিকে টেনে নিলো।

আদ্রি অবাক চাহনী নিয়ে দেখলো। চাঁদের আলোতে নির এর মুখটা যেনো মুক্তার মতো উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।আদ্রি খুব ইচ্ছা করছে তার পাশে বসা ওই অত্যন্ত সুদর্শন পুরুষ টার বুকে নিজের মাথা টা রাখতে কিন্তু সেটা কি সম্ভব। নিজের পাশে বসিয়েছে এটা কি অনেক নয় তার কি আদৌও অধিকার আছে নির এর পাশে বসার।

রিক্সার ঝাকনিতে আদ্রি পরে যেতে নিলেই নির আদ্রিকে নিজের বুকের সাথে জড়িয়ে নেয়।

দুইজন এসে পৌঁছায় নিস্তব্ধ এক স্বপ্নপুরিতে। আদ্রির মুখে বিস্ময় আলাদা এক সৌন্দর্যতে যেনো জায়গাটা ভরপুর।

নির তালি বাজাতেই সেখানে লাইট জ্বলে উঠে। নির আদ্রির হাত ধরে তাকে নিয়ে যায় জায়গাটির মাঝখানে। আদ্রি ঘুরে ঘুরে সব দেখতে লাগে।চোখ মুখে উপচে পড়ছে আনন্দ।

আদ্রিঃওয়াও স্যার ইটস সো বিউটিফুল। জাস্ট ওয়াও এই সব আপনি করেছেন স্যার কার জন্য (উত্তেজনায় বের হয়ে যায় মুখ থেকে)
নিরঃআমার প্রিয়তমার জন্য
(কানের কাছে মুখ নিয়ে)

মহূর্তে মুখটা অন্ধকার হয়ে যায় আদ্রির। সে ভেবেছিলো সে তার নাম নিবে সে এটা আর বুঝলোনা যে প্রিয়তমা বলতে সে তাকেই বুঝিয়েছে।

আদ্রিঃওহ তাহলে আমাকে এখানে আনলেন কেনো।
(অভিমানী কন্ঠে)
নিরঃআচ্ছা পাগলের পাল্লায় পড়েছি আল্লাহ মানুষ এতোটা বোকা হয় এই মেয়েকে না দেখলে জানতাম ই না (মনে মনে) টেস্ট করানোর জন্য যদি তোমার ভালো না লাগে তাহলে আমি আমার প্রিয়তমাকে অন্য কোথাও নিয়ে যাবো(মজা করে)
আদ্রিঃওহ। আপনি নিয়ে আসেন স্যার আপনার প্রিয়তমা কে অনেক সুন্দর ভিউ।
(আদ্রি কথা টা বলে চলে যেতে নিলেই নির আদ্রির শাড়ির আচল ধরে টেনে নিজের কাছে নিয়ে আসেনি

নির কিছু বলতে যাবে তার আগেয় সেখানে কিছু লোক আসে।আদ্রি ঘাবড়ে যায়। নির ও অবাক হয় কারন এই জায়গাতে কোন কেউ আসতে পারবেনা কারন জায়গাটা আগে থেকেই নির তার গার্ডসদের দিয়ে জায়গাটা ক্লিয়ার করায় দিয়েছিলো

লোকগুলোর মাঝ থেকে বুড়ো করে একটা লোক সেখানে আসে
বুড়াঃতোমরা এখানে নষ্টামি করতে আসো হ্যা তোমাদের জন্য আমাদের এতো সুন্দর গ্রামটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে কিন্তু আর না । এই এদের ধোর ধরে নিয়ে চল এদের আজকেই বিয়ে দিবো
(লোক গুলোকে ইশারা করে)

নির এর প্রথমে রাগ উঠলেও পরে বিয়ের কথা শুনে কিছু একটা ভাবলো তারপর শান্ত হয়ে দাড়িয়ে রইলো।আদ্রি ঘাবড়ে যায়
আদ্রিঃকি বলছেন এসব। আপনারা ভুল ভাবছেন আমাদের মধ্যে এমন কোন সম্পর্ক নেই। উনি আমার স্যার হয়।প্লিজ আমার সাথে বিয়ে দিয়ে উনার সুন্দর জীবনটা নষ্ট করে দিবেন না।

লোকগুলো শুনলোনা দুইজনকে নিয়ে যাওয়া হলো।

—–

ঘুমন্ত নওমির মায়াবী মুখ দেখছে আদ্রিয়ান পরম সুখে পড়ার নাম করে ভিডিও কল দিয়েছিলো কিন্তু নওমি ঔষধ এর ইফেক্ট এ ঘুমিয়ে পরে পড়তে পড়তে।আর সেটার সুযোগ নিয়ে আদ্রিয়ান তার প্রান ভোমর কে দেখছে।

আদ্রিয়ানঃআর পারছিনা তোর কাছ থেকে দূরে যেতে খুব তাড়াতাড়ি তোকে আমার কাছে নিয়ে আসবো আই প্রমিজ পিচ্চিটা।
(চমৎকার এক হাসি দিয়ে)

ঘুমের মাঝেই নওমির ঠোঁটের কোনে আলাদা এক প্রশান্তির হাসি ফুটে উঠলো।

—-

রিয়াজ এর রুমে বসে আছে মেহের।হস্পিটাল থেকে ডাইরেক্ট কাজী অফিসে যেয়ে পুনরায় বিয়ে করে মেহের কে নিজের বাড়িতে উঠেছে রিয়াজ আজকে আর মেহের বাধা দেয়নি। সে চায়না তার সন্তান বাবাহীন অবৈধ বলে বেরে উঠুক।

রিয়াজ এর আম্মু মেহের কে দেখেই রেগে গেছিলেন মারার জন্য তেরে আসতে নিলেই রিয়াজ বাধা হয়ে দাড়ায়। রিয়াজ ওর মা কে মেহের আর ওর বাচ্চার কথা বলতেই কিছু না বলে তিনি ভিতরে চলে যায়।

তখন থেকে রিয়াজ এর আম্মু রুমের ভিতরেই আছে।

—-
রিয়াজ ওয়াসরুম থেকে বের হয়ে মেহের কে মন মরা হয়ে বসে থাকতে দেখে তার কাছে যায়

রিয়াজঃমন খারাপ আমার বউ টার হুম(মুখ তুলে)
মেহেরঃআন্টি সকাল থেকে কিছু খায়নি।এই বয়সে না খেয়ে থেকে যদি বিপি ফোল করে তখন।

রিয়াজ মেহের এর কথায় হো হো করে হেসে দেয়।মেহের ভ্রু কুচকে তাকায় রিয়াজ এর দিকে
মেহেরঃএদিকে চিন্তায় আমার কিছু ভালো লাগছে না আর তুমি হাসছো(রিয়াজ এর বাহুতে কিল ঘুষি দিয়ে)
রিয়াজঃআচ্ছা হাসবোন।আচ্ছা তোমাকে একটা গল্প শোনায়।তখন আমার ১৬ বছর। একদিন আব্বু আম্মুর মধ্যে তুমুল ঝগড়া লাগে হ্যা। আব্বু রেগে বেরিয়ে যায় আম্মুও দরজা বন্ধ করে বসে।যায় আমি আর আপু ভয় পেয়ে যায়। সারাদিন আম্মু।দরজা খুলেনা। আব্বু আসে রাত ১২ টার দিকে এসে এক্সট্রা চাবি দিয়ে দরজা খুলে দেখে আম্মু বিছানায় হাত পা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ঘুমিয়ে আছে।
আর তার আশেপাশে বিভিন্ন রকমের খাবারের প্যাকেট।

আম্মু ছোট বাচ্চাদের মতো চকলেট পেস্ট্রি এগুলো পছন্দ করে আর না খেয়ে থাকতে পারেনা।তাই এগুলো সব সময় আম্মুর।রুমের মিনি ফ্রীজে থাকে।আর সপ্তাহে ৪ দিন ই আব্বুর সাথে ঝগড়া করে রুমে বন্ধি হয়ে থাকে এটা নরমাল বিষয় বুঝলেন ম্যডাম এবার একটা হাসি দেন।

মেহের ও হেসে দেয়।রিয়াজ মেহের কে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

—-
আদ্রি কান্না করতে করতে অবস্থা খারাপ। তার মাথায় একটাই চিন্তা তার জন্য আজকে নির এর জীবন নষ্ট হয়ে গেলো কিছু ক্ষন আগেই নির আর আদ্রির বিয়ের কার্জকর্ম সম্পূর্ণ্য হয়েছে তখন থেকেই কেদে যাচ্ছে আদ্রি।

নির আর না পেরে যেটা করলো সেটাতে আদ্রির চোখ দুইটা বড় বড় হয়ে গেলো কান্না উধাও হয়ে গেলো,!!!!

চলবে!!!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here