সীমাহীন ভালোবাসার নীড় পর্ব -১০

#সীমাহীন_ভালোবাসার_নীড়২
#লেখিকাঃনওশিন_আদ্রিতা
#পার্টঃ১০
,
,
,
,
—ভিতরে চলো বাতাস প্রচুর ঠান্ডা লেগে যাবে

হঠাৎ পুরুষালি গম্ভীর কন্ঠ শুনে পিছনে ফিরে তাকালো আদ্রি। সেখান থেকে নড়লোনা বরং নির এর দিকে মুখ করে রেলিং স্পর্শ করে দাড়িয়ে রইলো।

—কেন এনেছেন আমাকে এখানে

—হানিমুন করতে। ইউ নো আমার না সমুদ্রর মাঝখানে বাসর করার ইচ্ছাটা অনেক আগের ভাবছি এবার ইচ্ছাটা পূরণ করেই ফেলবো কি বলো বার্বিডোল

রসিকতার স্বরে কথা গুলো বলে ফিচেল হাসলো।এদিকে নির এর এমন অকপটে জবাবে থো হয়ে দ্বাড়িয়ে রইলো আদ্রি। লজ্জায় মহূর্তে গাল দুইটা গরম হয়ে উঠলো। সে বুঝেনা এই লোকটার এমন লাগাম হীন কথায় রাগ না হয়ে এক আকাশ সমান লজ্জায় কেন তাকে ঘিরে ধরে।

—আপনার এই সব অসভ্য লাগামহীন কথা শুনার মতো সময় নেই আমার। আমি বাসায় যাবো আমার কাজ আছে আপনার মতো নই

—তোমার সবটাই আমার শুধুমাত্র আমার সেখানে সময়টা কেন অন্যকারো হবে। বেবি গার্ল

—কেন এমন করছেন প্রতিশোধ টা কোন বিষয়ের জন্য নিচ্ছেন বলে দেন শুনি আমিও কোন অপরাধে দা গ্রেট মাফিয়া কিং যাকে দেখে আন্ডার ওয়ার্ডল্ডের বড় বড় মাফিয়া ভয় পায় সে কোন প্রতিশোধে আমাকে পুরাচ্ছেন

—প্রতিশোধ যদি নিতে যায় তাহলে এই জনমে প্রতিশোধ ফুরাবেনা আর আমি এতো বোকা নই যে এতো সুন্দর মেয়েকে প্রতিশোধের আগুনে পুরাবো হুম। তোমাকে এমন ভাবে পুরাবো যে তুমি সেচ্ছায় সে আগুনে ঝাপ দিবা।

—আগুনের উত্তাপ আমাকে কি পুরাবে যে অলরেডি সে আগুনের বাসিন্দা। আমাকে কোন আগুন পুরাবে।

আদ্রি কথাটা বলেই পিছন ঘুরে গেলো। চোখ বেয়ে টুপ করে এক ফোটা পানি বেরিয়ে গেলো।চোখের পর্দায় ভেসে উঠলো মাউএর আর্তনাদ বাবার নিষ্ঠুরতা। বড় ভাইয়ের ব্যস্ততা। তাচ্ছিল্যের হাসিতে ঠোঁটের কোনা মেতে উঠলো।

হঠাৎ ঘাড়ে গরম নিশ্বাসের আভাস পেতে চোখ জোড়া আপন মনেই বন্ধ হয়ে গেলো। মানুষটার বুকে আপন মনেই শরীর এলিয়ে দিলো আদ্রি।এতো প্রশান্তি কেন এই জায়গা টাই এতো কেন সুরক্ষিত অনুভূতি হয় এই বুকে সে জানেনা জানতেও চায়না কি হবে সব জেনে। সব জানার পিছনে জীবন কাটায় দেয় বাচবে কিভাবে।

—-

কাদায় লেপ্টানো শরীর নিয়ে গুটি গুটি পায়ে বাসায় প্রবেশ করে ছোট এক পরি। হাতে মুঠ করে রাখা ভাংঙা ব্যাট। সেটা দেখেই অগ্নিরুপে এগিয়ে আসে একজন সুন্দরী রমনী।রমনীকে দেখে পালাতে নিলেই কারো শরীরে লেপ্টে যেতেই মাথা তুলে তাকাতেই তার চোখ আটকে যায় ধূসর বর্ণের মনিতে সাথে সাথে জড়ায় ধরে পেটে মুখ গুজে দেয়।

—–

হঠাৎ চোখ খুলতেই আদ্রির চোখ যায় সমুদ্রের সচ্ছ পানির দিকে।আপন মনেই ঠোঁটের কোনে হাসি ফুটে উঠে।কেন পুরানো সৃতি এতো মধুর হয়।
কেন দিন গুলো কেটে গেলো এতো দ্রুত কেন হারিয়ে গেলো ভালোবাসায় আবরণের আটকে রাখা মানুষ গুলো

—এই আখি দিয়ে পানি বড্ড বেমানান লাগে মায়াবতী। তোমার অগ্নিরুপ টাই যেনো আমার বাচার কারন তোমার ভিতু আখিদ্বয় আমাকে অদ্ভুদ ভালোলাগায় মেতে রাখে।(মনে মনে)

—এই সব কান্না করে আমার কাছে আসতে চাও বেবি গার্ল তুমি তো বড্ড ধান্দাবাজ হুম দেটস নোট ফেয়ার।

আদ্রি জবাব দিলোনা নির এর কথায়,,সেভায়ে পরে রইলো নির এর বুকে। নির ও কিছু না বলে পকেটে হাত পুরে দাঁড়িয়ে রইলো।আদ্রিকে নিজের বুকে ঠেকিয়ে রেখে।

শাড়ি পরে সেজেগুজে পাত্র পক্ষের সামনে বসে রয়েছে মাইশা। চোখ জোড়া তার অস্থির যেনো কাউকে খুজতে ভিষন ভাবে ব্যাস্ত তারা।অন্যকোন দিকে তাকানোর সময় তাদের নেয়। পাশেই তার মা আর খালা(রেয়ান এর মা)দ্বাড়িয়ে রয়েছে।সামনেই মাইশার বাবা আর চাচা দ্বাড়িয়ে পাত্রের বাবা র সাথে আলাপ করছে।

হঠাৎ মায়ের কথায় হুস আসে

—মাইশা মা যা ফারাজ আর ফিহা মা কে ছাদে নিয়ে যা বড়দের গল্পে তোদের কাজ নাই

মাইশা টলমল পায়ে উঠে দাড়ালো।পিছনে তাকিয়ে আরো একবার পিছনে তাকিয়ে দৃষ্টি দিলো মেন ফোটকের দিকে।রেয়ান যদি আসে সে।আশাই।এবার আর মাইশাকে নিরাশ করে না রেয়ান। আদ্রিয়ান এবং রেয়ান দুইজনে একই সাথে প্রবেশ করে আদ্রির বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে করতে।হঠাৎ রেয়ান এর চোখ যায় শাড়ী পরিহিত শ্যামারঙা মেয়েটির দিকে।হঠাৎ বুকের পাশটাই অদ্ভুদ ভাবে চিনচিন করে।উঠে।
চোখ সরানো যেনো দ্বায় হয়ে দাড়িয়েছে। কিন্তু তার মাথায় এটা এলোনা হঠাৎ মাইশা এই ভাবে সং সেজেই বা দ্বাড়িয়ে আছে কেনো

—কি ব্যাপার কিসের এতো আয়োজন হচ্ছে এখানে। (ভ্রু কুচকে প্রশ্ন করে উঠে রেয়ান)

রেয়ান এর প্রশ্নে মাইশার মা এগিয়ে আসে

—মেয়ের বয়স তো আর কম হলোনা তাই তোর চাচু ছেলে দেখেছে ওর জন্য তারাই এসেছে ছেলে দেখতে মাশাল্লাহ। দেখ

রেয়ান ওর চাচীর পিছনে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে। মহূর্তে চোয়াল শক্ত হয়ে যায় তার কাউকে কিছু না বলে হন হন করে মাইশার হাত ধরে টেনে উপরে নিয়ে যায় সবাই হতদম্ভ হয়ে যায় রেয়ান এর এরুপ কাজে। আদ্রিয়ান হেসে সোফায় শরীর এলিয়ে দেয়।

—এই বিয়ে হবেনা অযথা সময় নষ্ট না করে চলে যান।

পাত্রর বাবা রাগী স্বরে মাইশার বাবাকে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আদ্রিয়ান গম্ভির কন্ঠে বলে উঠলো

—যদি মুখ থেকে একটা শব্দ বের হয় আমার গান এর সমস্ত বুলেট আপনার ছেলের শরীরে থাকবে নাউ গেট লস্ট

সবাই রাগে গজগজ করতে লাগলো ফিহা নামক রমনী তখনো এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রয়েছে গম্ভির মুখ করা পুরুষ টির দিকে। চাপ দাড়ি ওয়ালা লোকটা মহূর্তে অষ্টাদশী কন্যার মন কেড়ে নিলো।

মাইশাকে রুমে ছুড়ে মেরে দরজা লাগিয়ে দিলো রেয়ান। মাইশা ভয় পেয়ে দু কদম পিছনে সরে গেলো।রেয়ান সেটা দেখে তেড়ে তার দিকে এগিয়ে এলো মাইশার নরম মুখ জোড়া নিজের বলিষ্ঠ হাতের মুঠোয় নিতেই ব্যাথায় আহ নামক শব্দ টা উচ্চারণ করে উঠলো সেদিকে কোন ধ্যান দিলোনা শক্ত সে হাতের মালিক

—এতো সেজেছিস কার জন্য হ্যা কার জন্য ওই ছেলের জন্য বাহ কাল দিন আগেই না বললি ভালোবাসিস নাকি মোহ উড়ে গেছে খুব শখ না বিয়ে করার আজকে তোর বিয়ের শখ জন্মের মতো মিটাবো আমি

—আমার ভালোবাসাকে মোহ বলার অধিকার তোমার নেয় রেয়ান ভাইয়া। যেদিন থেকে বুঝতে শিক্ষেছি ভালোবাসা কি সেদিন থেকে ভালোবেসে আসছি তোমাকে এক বা দুই দিনের এই ভালোবাসা নয় সে তাকে তুমি মোহ বলে দিবা। আমার সব কিছু তোমার নামেই হয় আজকেও সাজতাম না আমি আম্মু আর চাচীমা জোড় করে সাজিয়ে দিয়েছে এটা আমার দোষ
তুমি বড্ড অদ্ভুদ না নিজে ভালোবাসবা আর না কারো হতে দিবা। আমি কারো হতে চায় ও না আমি তো দিন শেষে তোমার ই নীড়ে ঠাই চাই তোমার #ভালোবাসার_সীমাহীন_নীড়ের বাসিন্দা হতে চায় তাহলে কেন এমন করো। আমার শরীরের রঙ কালো বলে আমার উচ্চতা বাকী মেয়েদের তুলনায় কম বলে নাকি আমার ঠোঁট বাকীমেয়েদের মতো গোলাপি নয় সেজন্য।

রেয়ান কিছু না বলে মাইশার ঠোঁট জোড়া দখল করে নিলো ধীরে করে মাইশার মাথায় থাকা শাড়ি দিয়ে পড়া ঘোমটা ফেলে দিলো খোপায় জোড়া চুল গুলো উমুক্ত করে পিঠে ছেড়ে দিয়ে আলতো করে চুলের ভাজে নিজের হাত ডুবিয়ে শক্ত করে মুঠ ধরে নেয়।

মাইশা ভালোবাসার মানুষের এহেন স্পর্শ র সাড়া না দিয়ে থাকতে পারলোনা। রেয়ান এর ভালোবাসার জবাবে নিজেও রেয়ান এর অধর জোড়ায় নিজের ভালোবাসা দিতে শুরু করলো।

চলবে!
নানী বাড়িতে থাকার কারনে কালকে দিতে পারিনাই।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here