সুখপাখি পর্ব ৩

সুখপাখি

৩.
শিমু পিটপিট করে চোখ মেলে তাকায়। মাথাটা এখনো ঝিমঝিম করছে। দুইহাতের তালুতে ভর দিয়ে উঠে বসে। দুইহাতে মাথা চেপে ধরে। আবিরের কথা মাথায় আসতেই চোখ মেলে আশেপাশে তাকায়। বেডে দেখলো সেখানে নেই। ড্রেসিং টেবিল ধরে উঠে দাঁড়িয়ে আয়নায় তাকায়। বাম পাশের গাল ফুলে গেছে অনেকটা। ঠোঁট কেটে রক্ত যা বেরিয়েছে শুকিয়ে গেছে। চার আঙুলের দাগ একেবারে স্পষ্ট। শিমু আয়নার মাধ্যমে পেছনে তাকালো। আবির সোফায় বসে সেন্টার টেবিলের উপর পায়ের উপর পা তুলে আয়েসি ভঙ্গিতে বসে আছে। দুইহাত সোফার উপর মেলে দিয়ে পা নাচিয়ে নাচিয়ে শিমুকে উদ্দেশ্য করে বললো,
— “নিজেকে দেখা শেষ হয়েছে? সেই কখন থেকে খালি পেটে বসে আছি। তাড়াতাড়ি আমার জন্য খাবার নিয়ে আয়।”

শিমু পেছনে ফিরে আবিরের দিকে তাকালো। তারপর একবার ঘড়ি দেখলো। সে পাক্কা আড়াই ঘন্টা সেন্সে ছিলো না। শিমু পা টিপে টিপে রুমের বাহিরে এসে থমকে দাঁড়ালো। কোনদিকে যাবে সে জানে না। এতো বড় মেনসনের একটা রুমের মাঝেই দুইদিন কাটিয়ে দিয়েছে। বা দিকে পাঁচ মিনিট হাটলেই সিড়ি আবার ডান দিকেও সেম সিড়ি। কোনদিকে গিয়ে কোথায় খাবার খুজবে ভেবেই পাচ্ছে না। তাছাড়া রান্নাঘর কোনদিকে সেটাও বুঝতে পারছে না। শিমু পাঁচ মিনিট যাবৎ দরজার সামনেই দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ কানের কাছে কেউ বললো,
— “এখানে দাঁড়িয়ে থেকে আমাকে উপোস রাখার চিন্তা করছো?”

শিমু চমকে পেছন ফিরে তাকায়। আবিরকে দেখে দুই কদম পিছিয়ে যায়। আবির প্যান্টের দুই পকেটে হাত ঢুকিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। শিমু নজর নিচু করে মিনমিনে স্বরে বললো,
— “রান্নাঘর কোনদিকে?”

— “আজকে দেখিয়ে দিচ্ছি এরপর আর পারবো না।”

আবিরের পিছু পিছু হাটছে শিমু। কেমন যেনো ভয় ভয় লাগছে। এতোবড় বাড়ি অথচ এই দুইদিনে সে আবিরকে ছাড়া আর কাউকেই দেখেনি। আশ্চর্য লাগছে ব্যাপারটা। আশেপাশে তাকিয়ে দেখছে আর হাটছে। ঘরের সব জিনিস অনেক দামি দামি। সোফা সেট, আসবাবপত্র সবই বেশ দামি। রুমের রঙ থেকে শুরু করে যাই আছে সব কালো। একটাও কালারিং কিছু নেই। বেশ ভূতুড়ে টাইপ লাগছে পরিবেশ। হাটতে হাটতে হোচট খেলো শিমু। সামনে তাকিয়ে দেখলো সে আবিরের সাথে হোচট খেয়েছে। আবির রাগি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। একটু সরে এসে দাঁড়ায়। আবির বললো,
— “এটা কিচেন। এদিক থেকে সামান্য হেটে সামনে গেলে ডাইনিং টেবিল। আমি সেখানে আছি। দশ মিনিট দিলাম। তাড়াতাড়ি খাবার নিয়ে আসো। এগারো মিনিট হলে আমার চেয়ে খারাপ কেউ হবে বলে দিলাম।”

শিমু একটা ঢোক গিলে রান্নাঘরে পা রাখলো৷ এখানেও সব কালো। কি করবে বুঝতে পারছে না। পুরো রান্নাঘর ঘেটে দুইটা নুডলস এর প্যাকেট পেয়েছে। এতোরাতে কি করবে আর। তাই নুডলস রান্না করে তাড়াতাড়ি আবিরের কাছে গেলো। নুডলস এর বাটি টেবিলের উপর রাখতেই আবির তেড়ে এসে শিমুর গাল টিপে ধরে বললো,
— “বললাম না দশ মিনিটে আনতে? তাহলে দেরি করলি কেনো? আধা ঘন্টা হয়েছে। সামান্য নুডলস বানাতে তোর আধা ঘন্টা লাগে?”

শিমু আবিরকে কয়েকবার ধাক্কা দিয়েছে কিন্তু একটুও নড়াতে পারেনি। যে হাত দিয়ে গাল চেপে ধরেছে সে হাতেও খামছি দিয়েছে তাতেও আবিরের ভ্রুক্ষেপ নেই। শিমু ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। আবির ছেড়ে দিয়ে নুডলসের বাটি ছুড়ে মারে ফ্লোরে। ভয়ে কেপে উঠে শিমু। আবির কেনো এমন করছে এসব কিছুই বুঝতে পারছে না। এই দুইদিন তো ঠিকই ছিলো তাহলে হঠাৎ কি এমন হয়ে গেলো যার কারণে এমন হিংস্রতায় রুপ নিয়েছে আবির। শিমু ফুপিয়ে ফুপিয়েই কাঁদছে। আবির এসে শিমুর চুলের মুঠি ধরে বললো,
— “এগুলো তো পরিষ্কার করবিই সাথে আজ তোর খাওয়া বন্ধ। আমাকে দেরিতে খাবার দেয়ার জন্য এটা তোর শাস্তি।”

শিমু হেচকি তুলে তুলে বললো,
— “কিন্তু আমি কি এমন করেছি যার কারণে আপনি আমার সাথে এমন আচরণ করছেন? এই দুইদিন তো ঠিক ছিলেন…”

— “চুপ। একদম চুপ। আমার মুখে মুখে কথা বলার চেষ্টা করবিই না। কোনোদিন না। আমি এমনই। এই দুইদিন অন্যরকম ব্যাবহার করেছি। কিন্তু ভুল ছিলাম আমি। সে যাই হোক। এটাই আমার আসল রুপ। আমি এর থেকেও বেশি হিংস্র।”

শেষ কথাটা চিৎকার করে বলেই শিমুকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। ফ্লোরে ধপাস করে পরে কোমড়ে ব্যাথা পায়। চোখ মুখ খিচে নেয়। শব্দ করেই কেঁদে উঠে। আবির শিমুর সামনে এক হাটু গেড়ে বসে চুলের মুঠি ধরে মুখটা উপরে তুলে বললো,
— “আজকেই শেষ দিন। এরপর যেনো আর কোনোদিন তোকে শব্দ করে কাঁদতে না দেখি। না হলে জিহবা টেনে ছিড়ে ফেলবো।”

শিমু ঢোক গিলে। সাথে কান্নার শব্দও গিলে ফেলে। আবির দাঁড়িয়ে যায়। দুই হাত মেলে চিৎকার করে বললো,
— “এটা আবির চৌধুরির মেনসন। আবির চৌধুরির খাচায় তুই বন্দী। বুঝেছিস?”

শিমু কেঁদে কেঁদে বললো,
— “আমি থাকবো না আপনার এই মেনসনে। আপনার মতো হিংস্র একটা মানুষের সাথে। যার ভেতরে এক, বাহিরে আরেক রুপ। যার সামনে এক, পেছনে আরেক চেহারা। আপনি হচ্ছেন একটা দুই মুখি সাপের মতো। সামনে থেকেও ছোবল দেন, পেছন থেকেও ছোবল দেন।”

শিমুর কথায় আবিরের মাথায় রক্ত উঠে যায়। চোখ লাল হয়ে আসে। চোয়াল শক্ত হয়ে যায়। রাগে পুরো শরীর কাপতে থাকে। শিমুকে টেনে উঠিয়ে ঠাটিয়ে চড় মারে। শিমু আবারো মেঝেতে পরে যায়। কোমড় ধরে ব্যাথায় কুকিয়ে উঠে। শিমুর সামনে বসে গলা চেপে ধরে বললো,
— “কথা খুব কম বলবি। খুবই কম। তোর জন্যই ভালো। ভুলে যাস না তুই আমার টাকায় কেনা সম্পত্তি। আমি যখন যেভাবে চাই ব্যবহার করতে পারি। তাই টু শব্দও করবি না। আর হ্যাঁ, আমি ছোবল সামনে থেকেই দি। পেছন থেকে ছোবল বেঈমানরা দেয়। বেঈমান।”

আবির “বেঈমান” শব্দটা উচ্চারণ করে আরো হিংস্র হয়ে উঠে। শিমুর গলা আরো শক্ত করে চেপে ধরে। শিমুর প্রায় দম বন্ধ হয়ে আসবে এমন অবস্থা। দুই হাতের সর্বশক্তি দিয়ে ধাক্কা দেয় আবিরকে। আবির মেঝেতে বসে যায়। শিমুর কাশি শুরু হয়। সাথে ঘনঘন নিঃশ্বাস নিতে শুরু করে। উঠে ডাইনিং-এ এসে ঢকঢক করে পানি খায়। আবির ওইখানে বসে আছে। মনে হচ্ছে ঝিমুচ্ছে। উঠে দাঁড়িয়ে একবার শিমুর দিকে তাকিয়ে আবার ঢুলে ঢুলে রুমে এসে বেডে চিৎ হয়ে শুয়ে পরে।

এদিকে শিমু মেঝেতে বসেই ফুপিয়ে কেঁদে উঠে। ওড়নার কোনা দিয়ে চোখের পানি মুছতেই আবার চোখ ভরে আসে। মনে মনে বললো,
— “মাহিন ভাইয়া কেনো এমন করলে আমার সাথে? শুধু একটা রাত থাকিনি বলে এমন একজন মানুষের কাছে আমাকে দিয়ে দিলে। যদি এই লোকটা আমাকে মেরে ফেলে তখন? তখন আমি কি করবো?”

শিমু ভয় পায়। চারপাশে তাকিয়ে আরো ভয় পায়। গা ছমছম করে উঠে। এতোবড় বাড়িতে তারা দুইজন ছাড়া আর কেউ নেই। শিমু চোখ বন্ধ করে “দোয়ায় ইউনুস” পড়ে। তারপর ভাবে তাকে শয়তান কুমন্ত্রণা দিচ্ছে মনে। শিমু বড় করে নিঃশ্বাস নেয়। নিজেকে বললো,
— “যেই আবিরকে আমি দুইদিন ধরে দেখেছি সেই আবির আর এই আবিরের মধ্যে কত তফাত। আগের আবিরের মধ্যে একটা বাচ্চাসুলভ আচরণ দেখেছি। মানুষ যখন তার মনের মতো মানুষ পায় তখন তার সাথে খুনসুটি দুষ্টামি করে। তখনই তার ভেতর থেকে বাচ্চাসুলভ আচরণ বেরিয়ে আসে। আর আজকের আবির। এতোটা হিংস্র। মনে হচ্ছে নিজেকে হিংস্র বানিয়ে রেখেছে।”

শিমু উঠে রান্নাঘরে যায়। বেসিনের পানি ছেড়ে দেয়। পানি ধরে দেখলো ঠান্ডা পানি। ওজু করে নেয়। খুব বেশি রেগে গেলে বা মাথায় কিছু ঠিকমত না আসলে শিমু অজু করে নেয়। অজু করে রান্নাঘরের জানালার সামনে দাঁড়িয়ে আকাশের দিক তাকায়। এখন অনেক ফ্রেস লাগছে শিমুর।

ডাইনিং রুমে এসে ফ্লোর পরিষ্কার করে নেয় শিমু। বাটি ধুয়ে রেখে রুমে আসে। আবির বেঘোরে ঘুমাচ্ছে। আবিরের পায়ের জুতা মোজা খুলে দেয়। মাথার কাছে এসে বসে। মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলো খুব নিষ্পাপ লাগছে আবিরকে। বাচ্চাদের মতো ঠোঁট ফুলিয়ে রেখেছে। একটু আগের হিংস্র আবিরের সাথে এখনের আবিরের কোনো মিল নেই।

ফজরের আযান শুরু হয়। শিমু ওয়াশরুমে এসে অজু করে নেয় আবার। নামাজ পড়ে কোর’আন নিয়ে বসে। দুই পৃষ্ঠা পড়তেই চোখে ঘুম নেমে আসে। সব ঠিকঠাক করে রেখে সোফায় ঘুমিয়ে যায়।

——————————
ঘুম থেকে এক ঝটকায় উঠে বসে আবির। মাথা ভার ভার লাগছে। চোখ কচলে পাশে তাকায়। শিমুকে পাশে না দেখে বুকটা ধক করে উঠে। তাড়াতাড়ি বেড থেকে নেমে দেখলো মেয়েটা সোফায় ঘুমিয়ে আছে। একটা প্রশান্তির হাসি হাসে আবির। ধীর পায়ে সেদিকে এগিয়ে যায়। শিমুর মুখের কাছে মেঝেতে বসে। কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকে মুখটার দিকে। দুই গালে সব থাপ্পড়ের দাগ। বাম গাল ফুলে আছে। আবির মুখের উপর থেকে চুল সরিয়ে দিয়ে গালে হাত বুলায়।

শিমুর কপালে চুমু দিয়ে আবারো পলকহীন ভাবে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। কেনো যেনো রাগ বাড়ছে। কিছু একটা মনে পড়তেই রাগ চড়া দিয়ে উঠে মাথায়। চোখ বন্ধ করে চোয়াল শক্ত করে নেয়। ঘুমের মধ্যেই ঠাটিয়ে চড় মারে শিমুর গালে। শিমু উঠে বসে যায়। চোখে পানি টলমল করছে। বললো,
— “মারধর ছাড়া কথা বলতে পারেন না আপনি?

— ” আমার জন্য নাস্তা না বানিয়েই ঘুনিয়ে আছিস। তোকে কি আদর করে করে ঘুম থেকে জাগাবো আমি? তাড়াতাড়ি যা। নাস্তা বানা আমার জন্য। রাতের মতো করলে দেখিস তোর কি করি।”

শিমু কথা না বাড়িয়ে উঠে দাঁড়ায়। ওয়াশরুম থেকে মুখ ধুয়ে এসে নিচে যায়। স্যান্ডউইচ আর কফি বানিয়ে টেবিলে আনে। মনে মনে শান্তি পাচ্ছে কারণ আবির আসার আগেই নাস্তা টেবিলে দিতে পেরেছে। উপর থেকে আবির শিমুকে চিল্লিয়ে ডাক দিলো। শিমু দৌড়ে রুমে আসলে হাত মোচড়ে ধরে বললো,
— “কোন সাহসে আমার কাবার্ডের জিনিস ঘাটিস? কি চুরি করেছিস বল?”

শিমু বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো। কিছু না বলে জিজ্ঞেস করলো,
— “কি হারিয়েছে আপনার?”

— “সাদা শার্ট কই আমার?”

— “একটাই সাদা শার্ট আপনার? আর নেই?”

আবির থতমত খেয়ে গেলো। আমতা-আমতা করে বললো,
— “আছে অনেক সাদা শার্ট আছে।”

— “তো যেকোনো একটা পরে নিলেই তো হয়।”

— “বেশি কথা না বলে সেদিনের শার্ট বের কর যেটা আমি তোকে দিয়েছিলাম।”

— “সরুন আপনি। বের করে দিচ্ছি।”

আবির সরে দাঁড়ায়। শিমু নিচের তাকে শার্টটা ভাজ করে রেখেছিলো। আবিরের হাতে শার্টটা দিয়ে বললো,
— “না জেনে কাউকে মিথ্যে অপবাদ দেয়া ঠিক নয়।”

আবির কিছু বললো না। শিমুর নাক ধরে টান দিয়ে শার্ট পরতে শুরু করে। শিমুর সামনে এসে বললো,
— “বোতাম লাগিয়ে দে।”

— “কেনো? আপনার হাত নেই?”

— “উফ! এতো কথা বলো কেনো? লাগাও বলছি।”

শিমু মুখ ভেঙিয়ে বোতাম লাগাতে শুরু করে। আবির মুখের উপর ফু দিয়ে শিমুর চুল সরিয়ে দেয়। শিমুকে বললো,
— “আমার বডি দেখছো? সিক্স প্যাক দেখো, হুম?”

একথায় বেশ লজ্জা পেলো শিমু। ধবধবে ফর্সা গালে কালচে হয়ে আসা মারের দাগের উপরেও শিমুর লজ্জা পাওয়ায় গোলাপি আভা দেখা যাচ্ছে। আবির টুপ করে শিমুর গালে চুমু দেয়। শিমু সরে আসে। চলে যেতে নিলেই আবির ডাকলো,
— “এই মেয়ে।”

— “হুম।”

— “আমার ঘড়ি কই?”

শিমু ড্রয়ার থেকে ঘড়ি বের করে আবিরকে দিলো। আবির আবার বললো,
— “শিমু আমার ওয়ালেট কই?”

সেটাও আবিরের হাতে দিলো। আবির ভ্রু নাচিয়ে আবার বললো,
— “আমার নাস্তা কই?”

— “নিচে। ডাইনিং টেবিলে রেখে এসেছি।”

শিমুর সামনে এসে দাঁড়িয়ে বললো,
— “নিচে আসো। আমাকে নাস্তা খাইয়ে দিতে।”

চুপচাপ আবিরের সাথে নিচে গেলো। আবির চেয়ারে বসলো। শিমু আবিরের পাশে দাঁড়িয়ে নাস্তা বেড়ে দিলো। রান্নাঘরের দিকে যেতেই বললো,
— “এই মেয়ে। আমাকে খাইয়ে দাও।”

শিমু কিছুক্ষণ আবিরের মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো,
— “আপনি নিজে খেতে পারেন না? আমাকে বলছেন কেনো?”

আবির রাগ দেখিয়ে বললো,
— “দেখ আমার রাগ উঠাস না। এখানে আয় আর আমাকে খাইয়ে দে।”

শিমু মনে মনে বললো,
— “সাইকো।”

আবিরকে খাইয়ে দিচ্ছে। আর আবির মোবাইলে গেমস খেলছে। শিমুর মনে হচ্ছে সে একটা বাচ্চাকে মানুষ করছে। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবিরকে খাওয়াচ্ছে। আবির কফির মগ হাতে নিয়ে বললো,
— “আর খাবো না বাবু।”

শিমু মনে মনে চমকালো। তবে সেটা উপরে প্রকাশ করলো না। সে আবিরের মতিগতি কিছু বুঝে না। ট্রে নিয়ে রান্নাঘরে যাচ্ছিলো পেছন থেকে কিছু ভাঙার আওয়াজ পেয়ে থমকে দাঁড়ায় শিমু। মাথা নিচু করে চোখ বন্ধ করে নেয়। বড় একটা নিঃশ্বাস ফেলে পেছন ফিরে তাকায়। আবির চোখ গরম করে শিমুর দিকে তাকিয়ে আছে। রাগে তেড়ে এসে শিমুর হাত থেকে ট্রে নিয়ে ছুড়ে মারে অন্যদিকে। শিমুর দুই বাহু ধরে বললো,
— “কফিটা ঠান্ডা কেনো?”

— “আপনার জন্য আগেই দিয়েছিলাম তাই হয়ত ঠান্ডা হয়ে গেছে।”

আবিরের মোবাইলের টোন বেজে উঠতেই শিমুকে ছেড়ে দেয়। মেসেজ এসেছে। মেসেজ ওপেন করে দেখে। আস্তে আস্তে আবার হিংস্র হয়ে উঠে আবির৷

চলবে,,,
® নাহার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here