সে আমার মায়াবতী পর্ব -২১+২২

#সে_আমার_মায়াবতি
#লেখনিতে_ঈশা_ইসলাম
#পর্ব_২১
— কারো ঘরে আসতে হলে যে নক করে আসতে হয়, এতটুকু কমনসেন্স কি তোর নেই এনা?

এনার অপ্রত্যাশিত ভাবে চলে আসাতে আমি চমকে উঠলেও মিঃ চৌধুরী মোটেও চমকায় নি। ওনার কথায় এনা আমার থেকে ঘার ঘুরিয়ে
মিঃ চৌধুরীর দিকে তাকালে মিঃ চৌধুরী আবার বলে ওঠে-

— প্রাইভেসি বলে যে একটা ওয়ার্ড আছে সেটা কি তুই কমপ্লিটলি ভুলে যাচ্ছিস?

— আ আরাভ না আসলে আমি বুঝতে পারি নি। আগে তো তোমার ঘরে এসে আমরা একসাথে গল্প করতাম তাই –

যদিও কথার টোনে আমি বুঝতে পেরেছি যে উনি কথা গুলো আমাকেই শুনিয়ে বলছেন, কিন্তু এই লোকটা আমাকে না ছেড়ে আরও শক্ত করে চেপে ধরে আছে। আমি মুচরোমুচরি করতেই আরেকটু কাছে নিয়ে আসে। এক হাত দিয়ে নিজের চুল ব্রাশ করছে, আরেক হাত দিয়ে আমার পেটে স্লাইড করছে। ওনার এই স্পর্শ আমি মুখ বুঝে সহ্য করছি। তাই আরও জ্বালাতন শুরু করেছে লোকটা। উনি এবার এনার দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করে বলে –

— আগে আমি একা ছিলাম। কিন্তু এখন আমি ম্যরিড। সে যাই হোক এখন তুই যেতে পারিস। ( মিঃ চৌধুরী)

মিঃ চৌধুরীর কথায় এনা রাগি চোখে আমার দিকে তাকিয়ে, বলে ওঠে-

— আমি শুনেছিলাম বাংলাদেশ এর কালচার ভিন্ন আর খুব শালিন। কিন্তু এখানে তো দেখছি তোমার বউ আমাকে দেখার পরেও তোমার কোল থেকে উঠছে না৷ ( এনা)

— কি মিন করতে চাইছিস তুই? আর বউটা আমার। বাড়ি আমার। ওর যখন ইচ্ছে আমার সাথে যা ইচ্ছে তাই করবে। এর জন্য তোকে কইফিয়ত দিতে হবে? প্লিজ এনা তুই অন্তত্য এই জেনেরাসনের মেয়ে হয়ে টিপিকাল কথা বলিস না। ( মিঃ চৌধুরী)

— আব আরাভ আমার না ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করছে। তুমি তো বলেছিলে বিডি আসলে আমাকে! ( এনা)

— সেটা আগের কথা ছিলো। আর তোর ঘুরতে যেতে ইচ্ছা করছে, ড্রাইভার আছে, নিয়ে যাবে। যা ঘুরে আয়। নাহলে মায়া কে নিয়ে যা। ( মিঃ চৌধুরী)

— আমি তো তোমার সাথে যাবো। এসো না প্লিজ। দেখো আমরা তো আগেও যেতাম। আমরা তো লং ড্রাইভ এ যেতাম। বারে যেতাম, চলো না আজ যাই।

না অনেক হয়েছে এই এনা ফেনার কথা। আর না৷ সেই কখন থেকে আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার মিঃ চৌধুরী কে নিয়ে কি করেছে তার বিবরন দিচ্ছে। আমি বুঝতে পেরেছি ওনি আমাকে ইচ্ছে করে এগুলো শোনাচ্ছে। তাই আমি আর সহ্য না করে বলে উঠলাম –

— এনা আপু আপনি তো দেখছেন আমরা সময় কাটাচ্ছি। তারপর ও বার বার ওনাকে কেন ডাকছেন? ওনি যাবে না এখন। আর আমাদের প্রাইভেসি দরকার। আপাদত আপনি যেতে পারেন। আর হ্যা হুটহাট কারো ঘরে যাওয়ার আগে নক করে নিবেন।

আমার কথা শুনে এনা তো অবাক হয়েছে। তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছে মিঃ চৌধুরী। উনি আমাকে এতটা তেঁতে উঠতে দেখে এনাকে চোখের ইশারায় চলে যেতে বললেন। এনা হাত মুঠ করে চলে গেলো। আমার কি হয়েছে সেটাই বুঝলাম না। এতটা রেগে গেলাম কেন। উনি আমাকে কোলে নিয়ে নিলেন। কিন্তু আমি ওনার দিকে না তাকিয়ে নিচে তাকিয়ে ছিলাম। বেডে বসিয়ে আমার গালে হাত গলিয়ে বলে উঠলেন —

— জান কি হয়েছে তোমার? আর ইউ ওকে? এভাবে আমার পরিটা রেগে গেলো কেন? তবে যাই বলো ইস তোমাকে এখন পুরো ঝাসি কি রানী লাগছে।

কিন্তু আমি ওনার কথায় সায় দিলাম না। ওনি আরেকটু কাছে টেনে নিয়ে চুল ঠিক করতে করতে বললেন-

— কি হয়েছে ঈশুপাখি? আর ইউ জেলাস? ( ঘার কাত করে)

— না আমি জেলাস না। আপনি এনা ফেনার সাথে কথা বলবেন না। আর মিশবেন ও না।

আমি নিজেই অবাক। হায় আল্লাহ আমি কার সামনে কি বলে ফেললাম? উনি ঠোঁট কামরে হেসে আমার গালে ঠোঁট বুলিয়ে বলে উঠলেন-

— আম ইমপ্রেস। এটা কি আমার ঈশু পাখি তুমি ছিলে?
ওফফ জান সেই আগুন চোখ রাগি চেহারা। আমার যে খেয়ে নিতে ইচ্ছে হয়। ক্যন আই কিস ইউ জান –

বলেই আমাকে কিছু বলার সুযোগ সময় না দিয়ে ঠোঁট এ ঠোঁট ডুবিয়ে দিলেন। আমি যখন বুঝতে পারলাম, তখন হাতপা ছুড়াছুড়ি করলেও কাজ হলো না। ওনি প্রায় ২ মিনিট আমাকে কিস করে শ্বাস নিয়ে বললেন –

— টেস্ট গুড জান। পুরাই গোলাপজামুন। ( এক চোখ টিপ দিয়ে)

আমি কোন মতে শ্বাস নিয়ে দাঁড়িয়ে বললাম –

— অসভ্য আপনি। দিন দিন আপনি ভারি অসভ্য হয়ে যাচ্ছেন মিঃ চৌধুরী।

বলে এক মুহুর্ত দেরি না করে ঘর থেকে দৌরে বের হয়ে গেলাম। উনি বুকে হাত দিয়ে মুচকি হেসে বলে উঠলেন-

— তোমার জন্য আমি শুধু অসভ্য না জান। অসভ্যের লেভেল পার করতে পারি।

এদিকে এনা রাগে গজ গজ করতে করতে ঘরে এসে চোখ বন্ধ করলে আমার আর মিঃ চৌধুরীর খুনঁশুটির কথা মনে করে ফ্লাওয়ার ভাজটা ছুঁড়ে মারলেন। রাগে রি রি করতে করতে বললেন —

— আহহহ পারছি না আমি এসব সহ্য করতে। ঈশাআআ ছাড়বো না তোমায়। আমার আরাভ কে কেড়ে নিয়ে খুব সুখে আছো তাই না? আমার আরাভ আমাকে বলে তোমার জন্য প্রাইভেসি লাগবে? জাস্ট ওয়েট করো আমি তোমাকে ছুঁড়ে আরাভ এর লাইফ থেকে ফেলে দিবো।
আরাভ শুধু আমার।শুধুই আমার।

এনা কাদঁতে কাদঁতে নিচে বসে কথাগুলো বললো।
আমি ঘর থেকে বের হয়ে,
বসার ঘরে গেলে দেখলাম আন্টি, আংকেল, ফারাজ ভাইয়া সহ বাড়ির সকলে আছে৷ আমি গেলে মায়া আমাকে ইশারা দিয়ে খোচাতে শুরু করে। সবাই আড্ডা দিতে থাকলে, মায়া আমাকে সাইডে নিয়ে গিয়ে আমার গালে হাত ধরে বলে–

— হ্যা গো আমার ভাইয়ের ঈশুপাখি তো কেমন আদর করলো ভাই আমার?

— মায়া কি হচ্ছে৷ কি বলছিস তুই৷ আর মিঃ চৌধুরীর মতো লুচু কথা বলছিস কেন। অবশ্য বোনটা কার দেখতে হবে তো?

— কি বললি আমি অসভ্য। আর বড় ভাইয়া যে সারাদিন ঈশু পাখি ঈশু পাখি করে তার বেলায়? রাতে বুঝি খুব আদর করে তাই না?

— মায়া ভালো হচ্ছে না কিন্তু। এটা ঠিক না মোটেও৷ একে তো উনি হুটহাট কোলে নিয়ে নেয়। তার ওপর কিস করে বসে। ( কাদোঁ কাদোঁ মুখে)

— আহা তাহলে তো তোদের স্টোরি জমে ক্ষির। ( মায়া)

— হ্যা আয় আমিও আবির ভাইয়া কে বলি তোকেও একটু এমন স্পেশাল কেয়ার নিতে। ( মুখ টিপে হেসে)

— ঈশা ( চোখ গরম করে)

— এই মায়া বলছি যে এই এনা সাবানের ফেনা কোথায় রে? দেখছি না অনেক্ষন হলো?

— হুম জিনিসটা আমিও খেয়াল করেছি। কিন্তু তোরা চলে যাওয়ার পরপর তো চলে গেলো৷ কেন কিছু হয়েছে?

— না আসলে তখন!

আমি তখনকার কথা খুলে বলতেই মায়া বললো-

— এই আমার না মনে হয় এনা আপু বড় ভাইয়াকে পছন্দ করে। আমিও তোর মতো খেয়াল করেছি , তোকে এনা সহ্য করতে পারে না৷

আর কিছু বলার আগে সামিয়া আপু এসে দু- জনকেই সন্ধ্যার স্নেক্স এর জন্য ডেকে দিয়ে যায়। তাই সবাই মিলে খাওয়ার এক পর্যায়, আড্ডা দিতে শুরু করে। কিন্তু এর মাঝে মিঃ চৌধুরী কে একটি বারও দেখি নি। আচ্ছা ওনি কি সাবানের ফেনার সাথে গল্প করছে নাকি? বিভিন্ন খেয়াল চিন্তার মধ্যেই সন্ধ্যা পার হয়ে গিয়ে রাত ঘনিয়ে এলো – আন্টি আংকেল যেতে চাইলেও আম্মু আব্বুর রিকোয়েস্টে আজকের রাতটুকু থাকবেন। বাড়ির সবার সাথে মিশে যাবার সাথেই যে আন্টি, আংকেল আর ফারাজ ভাইয়ার সাথে যে এত কম সময়ে এতটা মিশে যাবো ভাবতে পারি নি৷রাতে খাওয়ার পালা এলেও মিঃ চৌধুরী নিচে নামে নি। আমি যেতে চাইলেও আম্মু বলে উনি স্টাডি রুম এ কাজ করছেন এখন হাযার ডাকলেও আসবেন না।
কিন্তু মানুষটা এত টাইম না খেয়ে ছিলো, এখনো কি খাবে না? লজ্জায় বলতেও পারছি না। মায়া হয়তো আমার অবস্থাটা বুজতে পেরেছে তাই সবাইকে মিথ্যা বলে আমাকে উপরে নিয়ে এসেছে।

— মায়া এইখানে কেন নিয়ে আসলে।

— আমি জানি ঈশা তুমি বড় ভাইয়াকে ছাড়া খাবে না। তাই তোমাকে নিয়ে আসলাম।

— কিন্তু তুই ও তো ডেকে নিয়ে যেতে পারতি । সবাই কি ভাব্বে এখন –

— বড় ভাইয়াকে আমরা কেউ ডাকলে কখনো কাজ ছেড়ে আসবে না। তাই তুই গিয়ে দেখ না যদি আসে। নাহলে তোর জামাই না খেয়ে থাকবে আমার কি হাহ্।

— ব্লেক মিল করছিস? ( চোখ ছোট ছোট করে)

— হি হি হি( মায়া)

— কিন্তু আমার ভয় লাগছে। আম্মু বলেছে উনি কাজের সময় কাউকে এলাও করে না। আমাকে যদি বকা দেয়?

— সেটা তো ভেবে দেখি না। তবে একবার গিয়ে দেখা উচিত।

— হুম যাচ্ছি।

মায়া স্টাডি রুমের সামনে আমাকে দাড় করিয়ে চলে যার। আমি আস্তে করে সামনে এগিয়ে গিয়ে দড়জায় নক করলে উনি, গম্ভির কন্ঠে বলে ওঠে —

— কাম ইন।

আমি আস্তে করে ঘরে প্রবেশ করলে উনি আমার দিকে এক পলক তাকিয়ে ভ্রু উচিয়ে বলে

— কি হয়েছে জান?

— আব আসলে আপনি খেতে যাবেন না? সবাই ওয়েট করছে।

— সত্যি করে বলো তো সবাই ওয়েট করছে নাকি তুমি??

— না না সবাই।

— সত্যি জান?

— হুম।

কিন্তু জান আমি এখন একটা মিটিং করবো। কাল তোমাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য মিটিং ডেট আজকে ফিক্স করেছি। তুমি খেয়ে নাও। আর ঘুমিয়ে পরো। আমার লেইট হবে।

— কে কেন লেইট হবে?

— কি ব্যপার বলো তো, আমাকে ছাড়া কি থাকতে পারছো না?( বাকা হেসে)

—- অসভ্য। আপনি ভিশন অসভ্য হয়ে যাচ্ছেন মিঃ চৌধুরী।

— তাই? তবে কিছু না করেই কেন অসভ্য হবো? কিছু তো!

—ছি থামুন আপনি।

— ঈশা সবাই ওয়েট করছে। তুই কি যাবি না? আমি জানতাম বড় ভাইয়া যাবে না।( মায়া)

আমি মায়ার কথায় অসহায় চোখে তাকালাম। ও একই কাজ করে আমাকে নিয়ে গেল৷ লোকটা কি পরিমান কাজ পাগল সেটা আমি হারে হারে টের পাচ্ছি। কিন্তু আমার খেতে ইচ্ছে করছে না৷ তাই সবাই কে মাথা ব্যথার কথা বলে চলে এসেছি ঘরে৷ শাড়ি পরে ঘুমানো প্রায় অসম্ভব ব্যপার আমার জন্য তাই ফ্রেশ হয়ে একটা সেলোয়ার সেট পরে নিলাম। ভাবতে ভাবতে মোবাইল এ চোখ গেলে দেখলাম তুবার মেসেজ। কাল যাবো কিনা, কখন যাবো, হাযারটা মেসেজ করেছে। কিন্তু লোকটার কাছে এলে যে আমি কিছুতেই মন দিতে পারি না। কেন হচ্ছে এমন।

— বাহ দুই দিনের মেয়ে হয়ে, আরাভ কে বস করে নিয়েছো?

বিসাক্ত কথাটা অনুসরন করে দড়জার দিকে তাকাতেই দেখলাম এনা দাঁড়িয়ে আছে৷ উনি আমার সামনে এসে মুখ বেকিয়ে বলে উঠলেন —

— ভালোই তো অবলা নারি সেজে থাকো আরাভ এর সামনে। ( এনা)

— কি বলতে চাইছো তুমি?

— এটাই যে সোজাসোজি ছেড়ে দাও ওকে। নয়তো আমি ছাড়বো না তোমাকে। ( এনা)

এবার ওনার উদ্যেশ্যটা আমার কাছে আরও ক্লিয়ার হলো তাই আমিও মুচকি হেসে বললাম —

— আমি আগেই বুঝতে পেরেছি তুমি মিঃ চৌধুরীকে পছন্দ করো। কিন্তু এটা মনে রেখো উনি এখন বিবাহিত। আর কি বললে একটু আগে? বস করেছি? ভুল। ইউ আর টোটালি রং। না তো আমি ওনাকে ছাড়বো আর না উনি নিজে আমাকে ছাড়বে। তাই বলছি তুমি যাই করো না কেন, আমাদের মাঝে তৃত্বীয় ব্যক্তি হবার চেষ্টা করবে না।

— এত কনফিডেন্স? বাহ ভালো। আমিও দেখবো কয়দিন তুমি আরভ কে আমার থেকে দূরে রাখো।আমি কেড়ে নেব আমার ভালোবাসাকে।

ওনার সব সহ্য হলেও আমার সামনে দাঁড়িয়ে আমার স্বামীকে ভালোবাসি বলায় সহ্য করতে না পেরে চিৎকার করে বলে উঠি —

— যাস্ট শাট আপ। তুমি একটা থার্ড পারসন আমাদের মাঝে। তাই ভুলেও এই কথাটা বলার চেষ্টা করবে না। আর তুমি কি ভেবেছো সকালের ঘটনাটা আমি দেখি নি?( আমি)

— মা মানে। কি ব বলতে চাইছো তুমি? ( কপালের ঘাম মুছে।

আমি ওনার ভয় পাওয়া আর অস্থিরতা দেখে হালকা হেসে বললাম-

— কি বলতে চাইছি বুঝতে পেরেছেন নাকি যেনেও না জানার ভান করছেন?( আমি)

— ঈ ঈশা দেখো তু তুমি মিথ্যা বলছো।আমি সকালে কফি ফেলি নি। ওইটা! ( এনা)

— আমি কখন বললাম যে তুমি কফি ফেলেছো? আমি তো কিছুই বলি নি এনা। ( আমি)

— তুমি মিথ্যা বলে আমাকে ফাসাতে চাইছো? ( এনা)

—মোটেও না আমি মনে করিয়ে দিচ্ছি যে, মিঃ চৌধুরী আমার এক ফোঁটা কষ্ট হলে কি করতে পারে সেটা নিশ্চয়ই তুমি দেখেছো। তাই বলছি আমি শান্ত,লজ্জাবতি, চুপচাপ আমার স্বামীর সাথে৷ বাহিরের লোকের কাছে না। আমি চাইলেই তোমার কথা বলতে পারতাম সবাইকে কিন্তু বলি নি। তাই ভেবো না আমি ভিতু। (আমি)

— আমি ছাড়বো না তোমাকে। আমার সাথে লাগতে এসে ভালো করলে না তুমি মেয়ে। এর ফল তোমাকে পেতেই হবে। ( এনা)

— আরে ওও এনা সাবানের ফেনা, লাগতে হয় সমানে সমানে। আমাকে বাচ্চা ভেবে ভুল করো না। ( আমি,)

— ইউউউ ( এনা)

আর কিছু না বলেই রাগে গজ গজ করতে করতে চলে গেলেন। কিন্তু আমি ভাবছি আমি তো ওনাকে আন্দাজের ওপর কথাটা বলেছি কিন্তু উনি সত্যি আমার ক্ষতি করতে চেয়েছে? ভাবতে ভাবতেই চুল বেধে ফেললাম। ঘরির দিকে তাকিয়ে দেখি দশটার বেশি হয়েছে। কিন্তু ওনার আসার নাম নেই। তাই বাধ্য হয়ে মায়ার রুমে গেলাম৷ গিয়ে দেখি মেয়েটা আবির ভাইয়ার সাথে কথা বলছে। তাই আপুর রুমে হাটা দিলাম। কিন্তু সেখানে গিয়ে যে এমন অপ্রত্যাশিত সিন দেখতে হবে কল্পনা করি নি। সায়ন ভাইয়া আপুকে জড়িয়ে ধরে কিস করছে। আমি চিৎকার দিতে গেলেই কেউ আমার মুখ চেপে ধরে। আর তখন শুনতে পাই মিঃ চৌধুরীর কন্ঠ —

— রোমেন্স করছিস ভালো কথা। দড়জা চেক করে নিবি তো। তোদের জন্য না আমার পিচ্চি বউ টা খারাপ হয়ে যায়।

আপু লজ্জায় অন্যদিকে ঘুরে গেলো।ভাইয়া মাথা চুলকোচ্ছে।আমি হাত দিয়ে ওনাকে ধাক্কাচ্ছি ওনি সরছেও না। আমাকে এক হাত দিয়ে উচু করে রুম এ নিয়ে এলেন। এতক্ষন পর মুখ ছাড়লে আমি নিশ্বাস নিতে নিতে বেডে বসে পরি। ওনি হন্তদন্ত হয়ে পানি এনে আমাকে খাওয়ালে আমি তবুও নিঃশ্বাস নিতে পারছি না। উনি আমাকে জড়িয়ে ধরলে আমি আস্তে আস্তে শান্ত হই। তারপর মাথা তুলে তাকিয়ে আস্তে করে বলে ওঠি–

— আপ আপনি না বললেন দেরি হবে? তাহলে এখানে কি করছেন?

— কি করবো জান। মিটিংটা কোনমতে শেষ করলাম। আমার যে বউ বউ পাচ্ছে।

— মা মানে ( ভয় পেয়ে)।

— মানে পরে বোঝাচ্ছি আগে বলো তুমি ওদের ঘরের সামনে কি করছিলে?জান তুমি রোমেন্স শিখছিলে? সেইম অন জান। ঘরে জামাই থাকতে তুমি ওদের রোমেন্স দেখছো? চাইলে আমি তোমাকে ট্রেইলার দে!

— মিঃ চৌধুরী প্লিজ থামুন, কি করছেন। ( কানে হাত চেপে)

— আচ্ছা বলবো না। আগে বলো খাও নি কেন?

— আপনি কিভাবে বুঝলেন?

— এই বাড়ির প্রতিটা কোনায় কি হয় সেটার খবর আমি রাখি৷ আর এটা তো আমার জন্য অনেক কিছু । তুমি এত টাইম না খেয়ে আছো কেন।

আমি ভয় পেয়ে গেলাম ওনার কথায় আচ্ছা উনি কি আমার আর এনার বলে কথা গুলো শুনেছেন৷

— জান। চলো ডিনার করে মেডিসিন খেতে হবে।

— মিঃ চৌধুরী আমি মেডিসিন খাবো না। আমার খুব খারাপ লাগে এগুলো খেতে। প্লিজ

— কোন কথা নয় চলো তুমি৷ ঈশু পাখি কি চায় সবার সামনে আমি তাকে কোলে নেই। ( সয়তানি হেসে)

— না না আমি হাটতে পারি। খাবো সব খাবো। ( ঝট করে উঠে)

উনি আর আমি টেবিলে গেলে মোটামুটি সবাই অবাক হয়। এত দ্রুত কাজ শেষ হওয়ার কথা সবাই জিজ্ঞেস করতে উনি আমার দিকে তাকায়। আমি ভাবছি ঠোঁটকাটা লোকটা কি এখানেও মান সম্মান রাখবে না বড়দের সামনে। কিন্তু উনি কাজের যুক্তি দেখিয়ে বিষয়টা বুঝিয়ে বলেন। নিজেও খাচ্ছে, আমাকে হাতে তুলে নিজের হাতে খায়িয়ে দেয়। আমি সত্যি অবাক হই ওনার আচরনে, এতটা ভালো কি আদ্বোও কেউ বাসতে পারে৷ খাওয়া শেষ করে নিজের হাতে মুখ ফ্রেশ করে দিলে আন্টি আংকেল এর চোখে আমি একরাশ সম্মান আর ভালোবাসা দেখি ওনার জন্য।
সত্যি আমি ভাগ্যবতি। যে কিনা আমাকে এতটা আগলে রাখে। এর মাঝেই উনি কানে ফিসফিস করে বলেন –

— ভাবনার রানী মিসেস চৌধুরী আপনি যাকে নিয়ে ভাবছেন, সে আপনাকে নিয়ে সারা জিবন ভেবে যাবে। এতটা আগলে রাখবে যে কেউ ছুঁতে পারবে না। আমার জন্য হলেও তোমাকে আমার চাই জান।

আমি বুঝতে পেরেছি লোকটা পাগল, আর তার পাগলামি ঘিরে আমি আছি। আমি তাই ওনার চোখে চেয়ে বললাম-

— চলুন না আমরা জোস্ন্যা বিলাস করি। আমার না খুব ইচ্ছা, যাবেন মিঃ চৌধুরী?

আমি কিছু বলার আগে উনি আমাকে একহাত দিয়ে ধরে ছাদে নিয়ে এলেন। আর আমরা একসাথে দোলনায় বসে জোস্ন্যা বিলাস করছি। কিন্তু উনি আমার দিকেই তাকিয়ে আছে।

— এদিকে কি দেখছেন? ( আমি)

— আমার চাঁদ কে দেখছি। যে আমার সামনে বসে জোস্ন্যা ছড়াচ্ছে। আর আমি তার উজ্জল জোস্ন্যা কুড়োতে ব্যস্ত।

আমি ওনার কথায় হালকা হাসলে আমার টোল গালে চুমু খেয়ে জড়িয়ে ধরে। আর বিরবির করে বলে

— আমার মায়াবতি যে শুধু আমাকে মুগ্ধ করে। কেন সে এতটা মায়াবি। কেন তার চাহনি এতটা মায়াবি আমাকে কি বলবেন মিসেস চৌধুরী। আমার শুভ্রে পরি। ভালোবাসি।
#সে_আমার_মায়াবতি
#লেখনিতে_ঈশা_ইসলাম
#পর্ব_২২
আজকেও নব দিনের সূচনা হয় চিরচেনা মানুষটার বুকে। ঘুম ঘুম চোখে তাকিয়ে দেখি, লোকটা গভির ঘুম এ মগ্ন। আচ্ছা উনি এত সুপুরুষ কেন? আমার মতো শ্যমলা মেয়ের সাথে কি এই লোকটা কে মানায়। গভির দৃষ্টিতে মানুষটাকে যত দেখি ততো দূর্বল হয়ে যাই। হুট করেই একটা অদম্য ইচ্ছা জেগে উঠলো। আস্তে আস্তে ওনার মুখের ওপর ঝুঁকে গেলাম। যেই না গালে ঠোঁট ছোয়াতে যাবো তখন মনে পরলো —
ছি আমি কি করতে যাচ্ছিলাম। এখন উনি দেখে ফেললে কি হতো, না লোকটা জেগে ওঠার আগেই সরে যেতে হবে। নয়তো কি ভাববে উনি আমায়? যেই ভাবা সেই কাজ যেই না সরে যাবো ওমনি কোন মিষ্টি সুপুরুষ এর কন্ঠস্বর আমার কানে বেজে উঠলো–

— এটা কি হলো জান?তুমি কাজটা ফিলাপ না করে সরে গেলে কেন? ( মিঃ চৌধুরী)

— আ আপনি জেগে আছেন? ( চোখ বড় বড় করে)

— ইয়াহ জান। বাট তুমি যেই কাজটা করতে যাচ্ছিলে সেটা ফিনিশ করো। ( মিঃ চৌধুরী)

— আ আমি কিছু করতে যাই নি৷ বিশ্বাস করুন। আমি কিচ্ছু করি নি। ( চোখ বন্ধ করে) ( আমি)

— তাই বেবি? বাট আমি যে দেখলাম তুমি আমাকে স্কেন করছিলে। কাছে এগিয়ে আসছিলে, আর কিস করতে যাচ্ছিলে। এখন আমি কোন এক্সকিউজ শুনতে চাই নি। (মিঃ চৌধুরি)

— আমি পারবো না। আ আর আপনি ভূল দেখেছেন। আমার উঠতে হ! ( আমি)

মিঃ চৌধুরী আমাকে ঘুরিয়ে আমার ওপর ঝুঁকে গেলেন। আমার গালে স্লাইড করতে করতে বললেন —

— ওপেন ইউর আইস জান। আমাকে রোমেন্টিক করে দিয়ে তুমি পাড় পাবে তা তো হবে না সুন্দরি। এখন আমার আদর চাই বাই হুক অর কুক।
(মিঃ চৌধুরী)

— আপনি কেন বুঝছেন না। আমি এসবের জন্য প্রস্তুত নই৷ প্লিজ আমাকে একটু সময় দিন মিঃ চৌধুরী। ( আমি)

— ঠিক আছে সময় তুমি চেয়েছো কিন্তু আমার জন্য সময় লাগবে না। আম ওলয়েস প্রিপিয়ার্ড। ( বাকা হেসে) ( মিঃ চৌধুরী)

— মানে?

— নো মিসেস চৌধুরী মানে মুখে নয়, ডাইরেকলি বুঝিয়ে দিচ্ছি। ইউ নো তোমাকে কত সুন্দর লাগছে, এই ঘুম ঘুম চোখ, এলোমেলো চুল, ঘুম জড়ানো কন্ঠ, ঈশুপাখি, আমার প্রেম প্রেম পাচ্ছে।

বলে আমাকে আর কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে আমার মুখে একের পর এক চুমু বর্ষন করেই যাচ্ছে। হাত পা ছড়িয়ে বাধা দিতেই দুই হাত চেপে গালে ঠোঁট বুলিয়ে, আমার ঠোঁট এ ঠোঁট ডুবিয়ে দিলেন।এতক্ষন ছটফট করলেও ওনার স্নিগ্ধ স্পর্শে জমে বরফ হয়ে গিয়েছি। কিছু সময় পর আমাকে ছেড়ে ঠোঁট কামরে হেসে বললো-

— টেষ্ট সো গুড। এখন থেকে আমার মরনিং কিস তোমাকে দিয়েই শুরু করবো পাখি। আর শেষ ও তুমি করবে। ( চোখ টিপে) (মিঃ চৌধুরী)

— ছিইই অসভ্য। আপনি ভারি অসভ্য চৌধুরী সাহেব। ( মুখে হাত দিয়ে) ( আমি)

— পৃথিবির প্রত্যেকটা পুরুষ তার স্ত্রীর কাছে অসভ্য জান। তাহলে আমিও তো আমার পরির কাছেই অসভ্য হবো। ( মিঃ চৌধুরী)

ওনার কথায় কান চেপে
কোনমতে বললাম —

— কয়টা বাজে আপনার খবর আছে?নামাজ এ দেরি হচ্ছে প্লিজ। ( অসহায় চোখে) (আমি)

— হ্যা চলুন আজ আমরা একসাথে নামাজে দাঁড়িয়ে যাই একসাথে। ( হাত বাড়িয়ে) ( মিঃ চৌধুরী)

আমিও ওনার হাতে হাত রেখে উঠলাম। একসাথেই দু- জন ওজু করে নিলাম। এর মধ্যে উনি কালকে ছাদে ঘুমিয়ে যাওয়া নিয়ে জ্বালিয়েছে। ফ্রেশ হয়ে আমরা একসাথেই নামাজে দাঁড়িয়ে পড়ি। লোকটা কে শুভ্র পাঞ্জাবি, স্নিগ্ধ সকালের চেহারা তে আরো একবার ক্রাশ খেলাম।
নামাজ পড়া শেষ হলে, উনি ল্যপটপ নিয়ে বসে আমি পেকিং করতে বসি। মনের সুখে কাজ করছি আর ভাবছি আজ কতদিন পর আবার বাড়িতে যাবো। আচ্ছা উনি কি থাকতে দিবে না আমায়? ভাবনায় ছেদ ঘটে মিঃ চৌধুরীর ডাকে–

— তুমি কি একেবারেই চলে যাচ্ছো পাখি?

উনি ল্যপটপ৷ এর দিকে তাকিয়ে এই কথা কি আমাকেই বলছে? এই নামে তো আসমাকেই ডাকে। কিন্তু এই কথা বলছে কেন?

— আপনি কি আমাকে বলছেন?

— না আমি আরেকটা বিয়ে করেছি, সেই বউ কে বলছি। আপনি বুঝতে পেরেছেন মিসেস চৌধুরী?

ওনার কথায় বুঝতে পেরেছি ওনি আমাকে শুনিয়েই এই কথা বলেছে তাই মুখ ভেংচি দিলাম।

— এই মেয়ে তুমি কি করলে? আমাকে মুখ বেকালে তুমি?

বলেই হু হা হা করে হেসে দিলেন। আমি মুগ্ধ নয়নে অপলক তাকিয়ে আছি, ইশ কি সুন্দর হাসে উনি। মায়া তবে আমি যে শুনলাম উনি হাসেই না, আর এখন তো দেখি কথায় কথায় হাসে।

— এই মেয়ে কথা বলছো না কেন? (মিঃ চৌধুরি)

— আপনি আবার আমাকে এই মেয়ে এই মেয়ে বলছেন?
মুখ ফুলিয়ে)

— উপস সরি পাখি। তোমাকে ডাকার জন্য আমার কাছে গোটা নামের সম্ভার পরে আছে,। তাই আগেই বলছি, এত পেকিং না করাই ভালো। আমরা কাল চলে আসবো। (মিঃ চৌধুরী)

— আচ্ছা ঠিক আছে।
আহ হবে না। আমি কিছুদিন থেকে তবেই আসবো। কতদিন বাড়িটা বাড়ির মানুষগুলো দেখি নি। একবার শুধু বের হই আমিও দেখিয়ে দিবো মিঃ চৌধুরী,। ( সয়তানি হেসে মনেমনে) ( আমি)

— আই নো জান। তোমার মাথায় কিছু চলছে। যেটাই চলুক সেটা যে আমাকে ঘিরে সেটাও আমি খুব ভালো করে জানি। দেখা যাক, আমার দূর্বলতায় তুমি কি করো। ( মিঃ চৌধুরী)

আমি পেকিং শেষ করে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি মাত্র সাতটা বাজে। তাই বেলকনিতে গিয়ে ঘুরে আসি। কিচ্ছুক্ষন সময় কাটিয়ে ঘুরে দাড়াতেই চোখ পড়ে বাগানে। ইশ কি সুন্দর বাগান। সারি সারি ফুল, ফলের সমারহ্। দোলনাও আছে। এত সুন্দর নিখুঁত ভাবে সাজিয়ে রেখেছে বাগানটা। আচ্ছা একবার ঘুরে আসলে কেমন হয়? কিন্তু উনি কি বের হতে দিবেন। নখ কামরে কথা গুলো ভাবছিলাম তখন পেছন থেকে উনি জড়িয়ে ধরলেন ,
এতদিনে লোকটার স্পর্শ, শরিরে স্মেল, সব কিছুই আমার চেনা, তাই বুঝতে পারলাম, ইনি আমার স্বামী। আমার মিঃ চৌধুরী।

— কি ভাবছিলে ঈশুপাখি।

— কিছু না।

— গার্ডেন এ যাবে পরি। ( ঘারে মুখ গুজে)

— আপনি নিয়ে যাবেন?

—আমি আগেই বলেছি। এই পুরো সামরাজ্য তোমার। তাই সাড়া বাড়িতে তুমি ঘুরতে পারো। চলো।

আমি সত্যি অবাক।মানুষটা আমার মনের কথাও বোঝে। পাশের বেলকনি তে চোখ পরতেই দেখি আপু আর সায়ন ভাইয়া কফি খাচ্চে আর খুনঁশুটি করছে৷ আমার চোখ অনুকরন করে মিঃ চৌধুরীর তাকালো। মুচকি হেসে আমার হাত ধরে নিচে নিয়ে গেলেন। নিচে যেতেও উনি হাত ছাড়ে নি। মেইডদের দিকে তাকাতেই দেখলাম মুচকি মুচকি হাসছে। তাদের চোখাচোখিতেই আমিও হালকা হাসলাম লোকটার পাগলামো দেখে। আমি তাই হাটার মাঝেই বললাম–

— মিঃ চৌধুরী?

— হুম জান।

— আমি কি ছোট বাচ্চা? সবার সামনে এভাবে হাত ধরে নিয়ে যাবার কি আছে?

— হ্যা বাচ্চা, আমার পরি। আমার কাছে তুমি দশটা সন্তানের মা হলেও বাচ্চাই থাকবে পাখি৷

আমি ওনার কথায় লজ্জা পেলেও সামলে নিলাম। গার্ডেন এ গিয়ে আরও অবাক হলাম, আসলেই অনেক সুন্দর৷ আমি ফুল দেখে লাফিয়ে উঠি। আমি ভুলেই গিয়েছি মিঃ চৌধুরী আমার পাশে আছে। দৌরে এই ফুল ওই ফুল ছুঁয়ে দিচ্ছি। কাঠঁগোলাপ দেখে মিঃ চৌধুরীর দিকে তাকালে, ইশারা দিলেন ফুল ছেড়ার। আমি ফুল ছিড়ে হাতে নিয়ে এদিক সেদিক হাটছি। আর মিঃ চৌধুরী তার ফোনে আমার করা প্রত্যেকটা ভংগিমার অনূভতি লিপিবদ্ধ করছেন। দূর থেকে মালি, গার্ডরা চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। যেই মানুষটা নিজে ফুল, ফলের যত্ন নেয়। কাউকে একচুল ফুল ছিড়তে দেয় না। এমন কি নিজের বোনকেও না। সেই মানুষটা নিজে কালো গোলাপ ছিড়ে আমার কানে গুজে দিলেন। আমিও হেসে দিয়ে তার হাত জড়িয়ে বললাম-

— থ্যংক ইউ মিঃ চৌধুরী। আমার অনেক দিনের ইচ্ছা ছিলো এমন গার্ডেন করার। ফুল ছোয়ার যে বড্য ইচ্ছে ছিলো। আপনার জন্য তা পূরন হয়েছে। ( মুচকি হেসে)

— তোমার মতো ফুলকে খুশি করতে আমি এমন হাজারটা বাগান করতে পারি জান। আজ থেকে এই গার্ডেন আমি তোমার করে দিলাম,নিজের মতো গুছিয়ে নাও। তারপর না হয় আমাকে গুছিয়ে দিবে।

আমার গালে হাত গলিয়ে কথাগুলো বলছিলেন উনি। আমি সত্যি অনেক লাকি মিঃ চৌধুরী সত্যি। আপনি আমাকে সবসময় এভাবে আগলে, ভালোবাসবেন তো?
কথাগুলো মনে মনে বললেও মুখে বলতে পারলাম না৷ এদিকে সকাল সকাল সুইমিংপুল এর পাশে বিচ এরিয়াতে বসে আমাদের খুনঁশুটি তে চোখ বুলিয়েছে চারটি মানুষ। আম্মু আব্বু,আন্টি, আংকেল। যারা এখনো মুগ্ধ নয়নে এদিকেই তাকিয়ে আছে। আর আমি তাকিয়ে আছি, আমার দেখা পৃথিবির সুদর্শন পুরুষ এর দিকে৷ যে তার মোহমায়ায় আমাকে আটকে রেখেছে।
একটু একটু করে যার রঙিন চাহনিতে আমি ডুবে গিয়েছি অতল সাগরে।

#চলবে____________

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here