সে কে ছিলো -০২

#সে-কে-ছিলো
সিজন টু
পর্ব ২

#সমুদ্রিত সুমি

অচেনা সেই নাম্বারে নিয়াজ ফোন দিলো।একবার রিং বাজতেই ফোনটা রিসিভ হলো।

তো মিস্টার নিয়াজ, আমার কথা বিশ্বাস হলো তো।

কে আপনি আর আমার মনি কোথায়।

দেখুন নিয়াজ আমি কে সেটা আপনার না জানলেও চলবে,আর বাকি রইলো মনি কোথায়, সেটা আমি জানি না।এমন কিছু হতে পারে আমি আপনাকে সাবধান করেছিলাম।কিন্তু আপনি আমার কথা বিশ্বাস করেননি। এখানে আমার তো আর করার কিছু নেই।আচ্ছা নিয়াজ আপনার একটুও সন্দেহ হয় না।মনিকে ধর্ষণ থেকে শুরু করে সজলদের দুই ভাইয়ের মৃত্যু। সব কিছু একটা রহস্যের জাল ছিলো।আচ্ছা আপনি তো সজলকে চিনতেন,আপনার কি মনে হয়না সজল এমন কিছু করেছে।হয়নি তাই তো ভেবে নিয়েছেন,সজল আসল অপরাধী।কিন্তু আপনি জানেন ওরা দুই ভাই কেউ এসবের জন্য দায়ী নয়।ওরা ফেঁসে গেছে। ওরা নিজেরাও জানতো না এমন কিছু হবে।বেচারারা অকালে প্রান হারালো।যে এসব করছে সে খুব বড় খেলোয়াড় এবং বুদ্ধিমান।সে ভাবছে তাঁকে কেউ ধরতে পারবে না।কিন্তু সে ভুলে গেছে অপরাধী যত বড় হোকনা কেন ভুল সে করেই থাকে।তাঁর ভুলের জন্য সে আমার কাছে ধরা পড়ে গেছে। আরো একটি কথা সে কে আমি কখনোই বলবো না।তাঁর একটাই কারণ আমিও মনির সাথে অন্যায় করেছি।যে অন্যায়ের জন্য নিজেকে বারংবার আঘাত করেও শান্তি পাইনি।আমি বলে দিলে আপনি বিশ্বাস করবেন না সে আসলেই এগুলো করেছে,কিন্তু সে করেছে।নিজের প্রতিশোধ নিতেই তাঁর এতো আয়োজন।তাঁর প্রতিশোধের খাতায় আমারও নাম ছিলো।তাই সে আমাকেও তাঁর অপরাধে আংশিক করেছে।নিজের অজান্তে আমিও আপনাদের ক্ষতি করে ফেলেছি।কিন্তু আমি যখন সব জেনে যাই তখন সে আমায় শাস্তি সরূপ দিয়েছে এক বুক যন্ত্রণা।কিন্তু আমি চাই না সেই একি কষ্টে আপনি বা মনি জ্বলেন।আপনাকেই খুঁজতে হবে সে কে ছিলো।আমি কথা দিচ্ছি সে ধরা পড়লে আমি নিজে এসে আমার অপরাধ স্বীকার করবো।আর হ্যা আমাকে আর ফোন দিবেন না।আমি নিজেই আপনার সাথে যোগাযোগ করবো।শুধু মনে রাখবেন,আসল অপরাধী আপনার খুব কাছের।কতোটা কাছের যখন আপনি জানবেন তখন আর মুখ তুলো তাকাতে পারবেন না।আমিও আপনাদের কাছের কেউ।শুধু এতোটুকু বলবো।আপনারা দু’জন প্রিয়জনের থেকে ধোঁকা পেয়েছেন।পরের থেকে নয়।আর সজল সিয়াম তাঁরা তো নির্দোষ।

টুট টুট করে কেটে গেলো ফোন। আবারো ফোন দিলে নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া গেলো।নিয়াজের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।কে এগুলো করছে।আপন কেউ। কে সেই আপন কেউ যে এগুলো করেছে বা করছে।মাথাটা ভনভন করছে। কিছুই মাথায় আসছে না নিয়াজের।ফোনটা হাতে নিয়ে মায়ের কাছে গেলো নিয়াজ।

———————
এই ঘরে যে অনেক বছর কেউ থাকে না তা ঘরের গন্ধ শুঁকেই বোঝা যায়।ঘরের বাজে গন্ধ বারবার পেট গুলিয়ে আসছে মনির।কিছুক্ষণ আগে মনির বাঁধন খুলে দেওয়া হয়েছে এবং একটি চেয়ারে বসিয়ে একজন মুখোশ ধারি লোক মনির সামনে খাবার ধরে আছে।না মনিকে খেতে বলছে না মুখ থেকে কোন আওয়াজ বের করছে।শুধু মনির সামনে খাবার তুলে ধরেছে।মনি এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে উনার দিকে।মনি বোঝার চেষ্টা করছে আসলে লোকটা কে।মহিলা নাকি পুরুষ। কিন্তু বোঝা বড় দায়।তাঁর পোষাকটা এতোটা ঢোলা যে বোঝা যাচ্ছে না।এই অবস্থায় বেশি সময় না খেয়ে থাকা যাবে না।তাই মনি সামনে তুলে ধরা খাবারটা খেয়ে নিলো।খাবারটা শেষ হতেই মনিকে পানি খাইয়ে লোকটা চলে যেতে নিলেই মনি জিঙ্গেস করলো।

কে আপনি? কেন আমার সাথে আপনি এমন করছেন।প্লিজ আমায় ছেড়ে দিন।আমি সয্য করতে পারছি না এই কষ্ট।প্লিজ আমাকে আমার পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে আসুন।কি লাভ আপনার আমাকে কষ্ট দিয়ে।আমার কষ্টটা বোঝার চেষ্টা করুন।আমি প্রেগন্ট।আমার কোন ক্ষতি হলে আমার বাচ্চাটাও যে বাঁচবে না।তাই আমার উপর একটু দয়া করুন।এর আগে আমার অনেক ক্ষতি হয়েছে।আমি বা আমার পরিবার যদি আপনার ক্ষতি করে থাকি তাহলে প্লিজ আমাকে মাফ করে দিন।আমার বা আমার পরিবারের শাস্তি আমার এই মাসুম সন্তানকে দিবেন না।যে এই দুনিয়ার আলো দেখেনি। যে বোঝে না দুনিয়ার এই বিষাক্ত মায়াজাল।প্লিজ।

মনির এতো কথা শুনেও সামনের লোকটি কোন শব্দ করলো না।যা করলো তা হলো পাশের টেবিল থেকে একটি ডায়েরি এবং একটি কলম নিয়ে কিছু লিখে মনির দিকে এগিয়ে দিলো।মনি সেটা হাতে নিয়ে পড়তেই যেন মাথা ঘুরতে শুরু করলো।

চলবে,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here