হঠাৎ ভালোবেসে ফেলেছি পর্ব ১৯+২০

#হঠাৎ_ভালোবেসে_ফেলেছি💕
The_unexpected_Love
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
Part-19

দুপুরের রোদের সাথে বাতাস টা কিন্তু মন্দ নয়।ঘুম ধরানো একটা পরিবেশ।এমন পরিবেশে নীল আকাশের নিচে চোখে চোখ রেখে দাঁড়িয়ে আছে দুজন ব্যাক্তি।নীলাভ প্রীতি চোখ থেকে নিজের চোখ সরিয়ে গম্ভীর মুখে বলল,

-তোমাকে আমি একদম ঠিক নাম ই দিয়েছি মিস. ঝামেলা।যদি রেলিং থেকে পড়তা তাহলে তো একদম মরে উপরে চলে যাইতা

প্রীতি নাক ফুলিয়ে বলল,

-আর আপনি কি গোমড়ামুখো একটা ।যাই হোক,আপনি আমার বাসায় কি করেন?

নীলাভ হেসে উড়িয়ে দিলো।মনে হয় সে খুব মজার কথা শুনেছে।প্রীতির ভ্রু কুচকানো এমন প্রশ্ন শুনে নীলাভ বলে উঠে,

-তোমার বাসা?আগে ভাবছিলাম তুমি মনে হয় তারছিড়া কিন্তু এখন দেখি সত্যি সত্যি তারছিড়া পাগল।ভুল করে এই বাসায় চলে আসছো না কি?

প্রীতি অবাক হয়ে বলল,

-মানে? এটা তো আমারই বাসা।

নীলাভের মুখ আবার গম্ভীর হয়ে এলো।ও আশ্চর্যের সুরে বলে উঠলো,

-মাথা খারাপ হয়ে গেছে না কি?সেইদিন তাহলে কার বাসা ছিলো?যেইদিন আমি রাতে তোমাকে বাইক দিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসলাম।

প্রীতি মিনমিনিয়ে গলায় বলল,

-ওটা আমার বাসা ছিলো না।আমি আপনাকে ভুল বাসা বলেছি যাতে আপনি আমার বাসা না চিনেন।

নীলাভ কিছুক্ষন চুপ থেকে দাতে দাত চেপে বলে উঠলো,

-কেনো আমাকে তোমার বাসা দেখালে কি আমি তোমাদের বাসায় এসে উঠতাম?বরং আরো আসতাম ই না।

প্রীতি বিরবির করে বলল,

-বাসা না দেখায়েই বাসায় এসে হাজির।আর বাসা দেখালে যে আরো কি হতো আল্লাহ ই জানে।

নীলাভ পুরো কথাই শুনেছে।ও তেড়ে কি বলল,

-ইউ……..

প্রীতি দাত কেলিয়ে বলল,

-আই প্রীতি। নীলাভ দাত কটমট করে নিজের রাগ কন্ট্রোল করলো।

কিছুক্ষণ দুজনে চুপ থাকলো। মনে মনে অনেক কিছু মিলানোর চেষ্টা করে শেষে নীলাভ বলে উঠলো,

-ওহ তুমি তাহলে সেই মেয়ে যে জোরে জোরে গান বাজাচ্ছিলো।

প্রীতি ও সাথে সাথে বলে উঠেছে,

-আপনি তাহলে সেই মেহমান যে আজ আমাদের বাড়িতে এসেছে।

একসাথে কথা বলে দুজনেই চুপ হয়ে গেলো।নীলাভ ছোট্ট করে বলে,

– হু…আমার বাবা তোমার বাবার বন্ধু।

দুজনেই আবার চুপ কেউ যেনো কোনো কথাই খুজে পাচ্ছে না।কিছুক্ষণ পর নীলাভ ই প্রথমে প্রশ্ন করলো,

-আচ্ছা ব্রেকাপ সং কেনো বাজাচ্ছিলা?

প্রীতি কাদো কাদো মুখ করে বলে উঠলো,

-আমার ৮ নাম্বার বয়ফ্রেন্ডের সাথে ব্রেকাপ হয়েছে তাই ব্রেকাপ সং এ নাচতাছিলাম।শালার আর প্রেমই করমু না।সবাই খালি আমার সাথে ব্রেকাপ করে।আমি কি এতোই বাচাল?

প্রীতির এমন মুখ দেখে নীলাভের সেই হাসি পাচ্ছে।কিন্তু সে হাসি চেপে রাখলো।তাকে যখন তখন হাসিতে মানায় না।তার হাসি মানেই অমূল্য রতন।

______________________________

ডাইনিং টেবিলে সবাই বসে দুপুরের খাবার খাচ্ছে।নীলাভের এক পাশে প্রীতি অন্যপাশে তার মা বসেছে।

নীলা চৌধুরী একবার প্রীতির মিস্টি মুখের দিকে তাকিয়ে আবার আড়চোখে নিজের ছেলের দিকে তাকালেন।কনুই দিকে ছেলেকে গোতা দিয়ে ফিসফিস করে বলে উঠলেন,

-প্রীতিকে তোর কেমন লাগে রে?

নীলাভের পুরো মনোযোগ খাওয়ার দিকে।তবুও সে কাটকাট গলায় জবাব দিলো,

-একদম ই ভালো লাগে না মা।

নীলা চৌধুরী ছেলের এমন কাটকাট জবাব শুনে ফুসে উঠলেন।গলার স্বর খাদে নামিয়ে তিনি আবার বলে উঠলেন,

-তা ভালো লাগবে কীভাবে?তুই ভালো মন্দ কিছু বুঝিস?কত সুন্দর মিস্টি একটা মেয়ে। আর তুই বললি একদম ই ভালো লাগে না।মা হিসেবে আমি একদম ব্যর্থ যে নিজের ছেলেকে ভালো মন্দের তফাৎ বুঝাতে পারলাম না আজও।

মায়ের এমন ওভার রিয়েক্ট নীলাভের বরাবর ই বিরক্তের বস্তু।ও ভ্রু কুচকে বিরক্তির সুরে বলে উঠলো,

-মা খাও তো।

নীলা চৌধুরী ছেলের দিকে একবার নাক ফুলিয়ে তাকিয়ে রাফিয়া আহসানের দিকে তাকালেন।মিস্টি করে হেসে বলে উঠলেন,

-তা রাফিয়া।আমাদের প্রীতি মায়ের বিয়ে দিবে না।এতো সুন্দর আমাদের মেয়েকে কোন রাজপুত্রের হাতে তুলে দিবে গো।

নীলাভের উপর দিয়ে প্রীতির মাথায় হাত রেখে বললেন নীলা চৌধুরী।

রাফিয়া আহসান মুচকি হেসে বললেন,

-মেয়ের বিয়ে তো ঠিক ই ভাবি।

তৌফিক চৌধুরী এবার মুখ খুললেন,

-কার সাথে?

প্রনয় আহসান একটু আপসোসের স্বরে বললেন,

-ওহ তোকে তো বলাই হয় নি।আরে আমার এক বিসনেস পার্টনার এর ছেলের সাথে।তোর সাথে তো আমার ভারসিটি লাইফ পর্যন্তই শেষ দেখা হয়েছে।বিসনেস লাইফে এসে তামিম রহমান আমাকে অনেক সাহায্য করে।এরপর তিনি ছোটোবেলায় প্রীতি আর তার ছেলের বিয়ের প্রস্তাব দেন।মানবতার আর কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে আমিও রাজি হয়ে গেছি।

তৌফিক চৌধুরী ‘ওহ’ বলে আবার খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।

নীলা চৌধুরীর চোখ ছলছল করে এলো।তার মন টা যেনো একদম ভেঙে গেছে।নীলা চৌধুরী আবার প্রীতির মুখের দিকে তাকালেন।কি সুন্দর চেহারা!কি সুন্দর মুখের গড়ন।পাতলা লাল টকটকে ঠোঁট। ফর্সা শরীর। বাদামি চোখ।লম্বা স্ট্রেট সিল্কি চুল।এমন একটা মেয়ে তার ঘরের বউ হলে কতই না খুশি হতেন তিনি। সারাদিন মাথায় উঠিয়ে রাখতেন।নীলা চৌধুরীর ভাবনার ঘোর কাটলো স্নেহার ডাকে,

-আন্টি, আরেকটু পোলাও দেই।

নীলা চৌধুরী চোখের সেই পানিগুলোকে আড়াল করে জোরপূর্বক মিস্টি হেসে বললেন,

-না মা তার দরকার নেই গো।আমার খাওয়া শেষ।

প্লেটে খাবার রেখেই উঠে পড়লেন নীলা চৌধুরী। সবাই সেদিকে এক নজর তাকিয়ে আবার খাওয়ায় মনোযোগ দিলো।ব্যাপারটা স্বাভাবিক ই ধরেছে সবাই।

কিন্তু তৌফিক চৌধুরী এখনো স্ত্রীর যাওয়ার পানে তাকিয়ে রয়েছেন।তিনি বুঝতে পেরেছেন তার স্ত্রী কি বলতে চেয়েছিলো।ছেলের বিয়ে দেওয়ার জন্য বড্ড কাঙাল সে।একটা বউমার জন্য সে বড্ড বেপরোয়া। সারাদিন একা একা থাকতে হয় বলে তার কতো নালিশ কত অভিযোগ। হয়তো প্রীতিকে তার খুব মনে ধরেছে।কিন্তু প্রীতির বিয়ে ঠিক হয়ে যাওয়ার কথা শুনে সে উঠে চলে গেলো।

তৌফিক চৌধুরী সব ভেবে একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লেন।তিনি স্ত্রীর জন্য অনেক কিছুই করতে চান। কিন্তু কিছুই করতে পারেন না।

,

কেউ ই জানে না যে প্রীতি আর নীলাভ একে অপরকে চেনে।তাই ওরা দুজন চুপচাপ খাবার খাচ্ছে।কিন্তু নীলাভ এবার প্রীতি কাছ ঘেঁষে ফিসফিস করে বলল,

-কংগ্রাচুলেশন মিস.ঝামেলা।কার কপালে যে তোমার মতো পাগল ছাগল যাচ্ছে আল্লাহ ই জানে।বেচারা তার দশা যে কি হবে খোদা ছাড়া আর কেউ জানে না।ছেলেটার জন্য না আমার খুব কষ্ট হচ্ছে।বেচারা বুঝতেই পারছে না যে সে যেচে কি বয়ে নিয়ে যাচ্ছে।আস্ত একটা গাধাকে সে বউ করে নিয়ে যাচ্ছে।

প্রীতি নীলাভের দিকে কটমট করে তাকিয়ে নীলাভের পেটে কনুই দিয়ে একটা গোতা দিলো।নীলাভ গোতা খেয়ে বলল,

-পেটে গোতা দেও কেনো?আমার শরীরে টাচ করবা না।মেয়েদের টাচ আমার একদম ই পছন্দ না।আর হ্যা, একদম কাছে আসার চেষ্টা করবা না।

প্রীতি চোখ গরম করে তাকিয়ে বলল,

-আপনিও একদম এডভান্টেজ নিবেন না।আসছে আমার সাধু পুরুষ।

নীলাভ -ঝামেলা।

প্রীতি -গোমড়ামুখো।

,
,

বিকেল হয়ে গেছে নীলাভেরা এবার ফিরে যাবে।বাড়ির বাইরে এসে প্রনয় আহসান আর তৌফিক চৌধুরী কথা বলছেন। রাফিয়া আহসান আর নীলা চৌধুরী কথা বলছেন।

নীলাভ প্রীতির কাছে এসে বলল,

-বাই বাই মিস.ঝামেলা।

প্রীতি চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে বলে,

-আপনি যে একটা মিনমিনে শয়তান তা কি আপনি জানেন?

নীলাভ -তুমি ই বানাইছো।আমি কি এমন ছিলাম না কি?

এই বলে নীলাভ গাড়িতে গিয়ে বসে পড়লো।নীলা চৌধুরী এবার প্রীতির দিকে তাকিয়ে বললেন,

-ভালো থেকো মা।আসি।

নীলা চৌধুরীর দিকে প্রীতি কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো।অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই যেনো এই মহিলাটা তার অনেক আপন হয়ে গেছে।প্রীতি ভালো করে নীলা চৌধুরীর দিকে তাকাতেই আবিষ্কার করলো নীলা চৌধুরীর চোখ হুবহু নীলাভের মতো।নীল রঙের। মহিলাটিকে এখনো মনে হয় একুশ বছরের যুবতি।প্রীতিকে এই অল্প কিছুক্ষনের মধ্যেই আদরে ভরিয়ে দিয়েছেন সে।কতবার যে চুমু দিয়েছেন প্রীতির গালে কপালে তার হিসেব নেই।অনেক ভালো মহিলাটি।প্রীতির ভাষায় ‘ভালো আন্টি’।

প্রীতি ছলছল চোখে বলল,

-আবার এসো ভালো আন্টি।

নীলা চৌধুরী -আসবো মা।ভালো থাকিস তুই।

,

শা শা করে গাড়ি চলে গেলো প্রীতির চোখের আড়ালে। সেদিকে তাকিয়ে থেকেই প্রীতির চোখ থেকে অজান্তেই দু ফোটা পানি পড়লো।

___________________________________

বাড়ি ফিরেছে প্রায় দু ঘন্টা হয়ে গেছে।নীলা চৌধুরী সেই যে সোফায় বসেছেন।এখনো বসেই আছেন।গালে হাত রেখে একমনে একদিকে চেয়ে আছেন তিনি। মুখে যেনো আষাঢ়ের কালো মেঘের ছায়া।কিছুক্ষণ চুপচাপ থেকে তিনি ডেকে উঠলেন,

-তাহসিন…তাহসিন।

তাহসিন কোথা থেকে তাড়াতাড়ি নীলা চৌধুরীর সামনে এসে বলল,

-জি খালামনি।

নীলা চৌধুরী -বাবা আমার মাথা ম্যাথার ওষুধ টা একটু এনে দে তো।তুই ই তো আমার ওষুধ সব গুছিয়ে রাখিস।

তাহসিন-আচ্ছা খালামনি।

তাহসিন ছোটোবেলা থেকেই এ বাড়িতে থাকে।নীলা চৌধুরীর একমাত্র মৃত বোনের ছেলে তাহসিন।ছোটোবেলায়ই তাহসিনের মা মারা গেছে।সেখান থেকে পরম যত্নে তাহসিনকে নিজের ছেলের মতো মানুষ করেছেন তিনি।তাহসিন মেডিকেলে পড়েছে।ইন্টার্নি করছে ও।

তাহসিন নীলা চৌধুরীর হাতে ওষুধ দিতে না দিতেই তার আবার ডাক পড়লো নীলাভের ঘর থেকে।তাহসিন দৌড়ে সেদিকে চলে গেলো।নীলা চৌধুরী কিছুক্ষন নীলাভের ঘরের দিকে চেয়ে থাকলেন।

নীলাভের ঘরে গিয়ে তাহসিন বলে উঠলো,

-জি ভাইয়া ডেকেছো আমাকে?

নীলাভ -ধর টাকাগুলো নে।যা দরকার হয় তা নিয়ে কেনাকাটা করে বাকিগুলো নিজের কাছে রেখে দিস।এখন গিয়ে ঘুমিয়ে পড় যাহ…

তাহসিন কিছু বলতে চাইলেই নীলাভ চোখ রাঙানি দিলো তাহসিন সুরসুর করে রুম থেকে বেরিয়ে চলে গেলো।এটা নতুন নয় সবসময় নীলাভ যখন তাহসিনের হাতে টাকা দেয়।তাহসিন নিতে চায় না।তখন নীলাভ একবার চোখ রাঙালেই তাহসিন শেষ। হার্ট অ্যাটাক করার মতো অবস্থা হয় ওর।

,

এদিকে নীলা চৌধুরী কিছুতেই মাথা থেকে প্রীতি নামটা সরাতে পারছে না।যতোই ভাবছে সেই মেয়ে সম্পর্কে সে আর ভাববে না ততই প্রীতির সেই মিস্টি করে হাসি মাখানো মমতাময়ী মুখটা ভেসে উঠছে।নাহ…আর পারা যাচ্ছে না।এই মেয়েটাকে তার চাই ই চাই।মেয়েটার বিয়ে ভেঙে হলেও এ মেয়েকে তিনি ঘরের বউ করে নিয়ে আসবেন।

আর কিছু না ভেবে ছেলের ঘরের দিকে পা বাড়ালেন৷ নীলা চৌধুরী।
,

নীলাভ এসে ঝটপট ফ্রেস হয়েই বিছানায় আধাশোয়া হয়ে লেপটপে কাজ করছে।

নীলা চৌধুরী গিয়ে জানালা বারান্দায় পর্দা দিয়ে দিলেন।এরপর নীলাভের মুখোমুখি থম মেরে বসে রইলেন।নীলাভ একবার আড়চোখে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো,

-কিছু বলবে মা?

নীলা চৌধুরীর সোজাসাপ্টা জবাব,

-আমি ওই মেয়েকে আমার ঘরের বউ করতে চাই।

নীলাভ লেপটপ টা রেখে অস্থির মাখানো অবাক কন্ঠে বলে,

-ইম্পসিবল।যেচে আমি আমার ঘরে ঝামেলা তারছিরা ঝগরুটে মেয়ে আনবো না কি?আমি কখনো ওই মেয়েকে বিয়ে করবো না।তোমার এতো সখ তুমি তাহসিনের সাথে ওর বিয়ে দিয়ে দেও যাও।

নীলা চৌধুরী -আমি তোর সাথে ওর বিয়ের কথা বলছি।তাহসিনের সাথে নয়।আর তাহসিনের এখনো বিয়ের বয়স হয় নি।আমি প্রীতিকে আমার ছেলের বউ করতে চাই।

নীলাভ -মা আর ইউ মেড?তুমি জানো না এই মেয়ে কি?

নীলাভের কথার মাঝেই নীলা চৌধুরী এবার ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে উঠলেন,

-সেই কখন থেকে বারবার বলছিস ঝগড়ুটে তারছিড়া।তুই তো প্রীতিকে আজ ই দেখলি আর আজ দেখেই তুই এগুলো কেনো বলছিস হ্যা?

নীলাভ -মা আমি……

নীলাভকে কথা বলতে না দিয়ে নীলা চৌধুরী ধমকে বলে উঠলেন,

-চুপ। ছি ছি ছি! আমি তোকে এই শিক্ষা দিয়েছি? একটা মেয়েকে না চেনে না জেনে তার সম্পর্কে তুই খারাপ মন্তব্য করিস নীলাভ?কবে থেকে তুই এমন হয়েছিস?আমার মাতৃত্ব ই বৃথা করে দিয়েছিস তুই।

নীলাভ এবার অনুনয় সুরে বলে,

-মা গো আমার মা…. আমাকে একবার বলতে তো দেও মা।

নীলা চৌধুরী -কি বলবি তুই বল।বলার আর কি বাকি আছে তোর।

নীলাভ এক নিঃশ্বাসে বলল,

-এই সেই বান্দরবানের মেয়ে মা।যার কথা আমি তোমাকে বলেছিলাম।

নীলা চৌধুরী অবাক হয়ে ছেলের দিকে তাকালেন।বেশ কিছুক্ষণপর হুট করে তিনি চিল্লিয়ে বলে উঠলেন,

-কিহহহহ…..প্রীতি ই সেই মেয়ে? এই সেই মিস্টি মেয়ে?বেয়াদপ আর তুই বলছিস প্রীতি তারছিড়া ঝগড়ুটে। ওমন সুন্দর মায়াবী মেয়েকে কেউ এগুলো বলে।তোর চোখের ডাক্তার দেখাতে হবে।তা না হলে তোর ডিএনএ টেস্ট করাতে হবে যে তুই সত্যি আমার ছেলে কি না।আরে প্রীতি না থাকলে তো তোর মাতৃভাষাই বৃথা যেতো রে।

নীলাভ ভ্যাবাচেকা খেয়ে বসে আছে।মায়ের কথা শুনে মাথার হাত রেখে হাটুর সাথে ঠেকিয়ে মুখ ফুলিয়ে একটা নিঃশ্বাস ছাড়লো।সে বুঝে গেছে কোনো কাজ হবে না।নীলাভ দুঃখের সহীত ভাবতে লাগলো,

– আমার মায়ের ভাষায় এই মেয়ের জন্য আজ আমার মায়ের মাতৃত্ব,মাতৃভাষা সব বৃথা গেছে।বুঝিনা আমি বেচে কেনো আছি?আমার তো কবেই কাঠাল খেয়ে নয়তো আকাশি দড়িতে ঝুলে মরে যাওয়ার দরকার ছিলো🐸
#হঠাৎ_ভালোবেসে_ফেলেছি💕
The_unexpected_love
#মুমুর্ষিরা_শাহরীন
Part-20

চৌধুরী বাড়িতে ব্যস্ততার আনাগুনা।

একটুপরই তোফিক চৌধুরী আর নীলাভ অফিসের জন্য বেরিয়ে যাবে।এরপর আবার বাড়িটা ফাকা একদম ফাকা হয়ে যাবে।সেই ফাকা দমবন্ধকর বাড়িতে আরো একটাদিন কেটে যাবে নীলা চৌধুরীর ভাবলেই তার কষ্টে বুকটা ভরে যায়।কতদিন কারো সাথে তিনি ঠিক মতো কথা বলেন না।কতদিন মন খুলে হাসেন না। সেই যে প্রীতিদের বাড়িতেই একটু প্রান ভরে কথা বলতে পেরেছিলেন তিনি।এরপর সাতদিন হয়ে গেছে তাকে আবার আগের মতো নির্বাক থাকতে হয়।কথা বলার মানুষ নেই।

রান্নাঘরে টুংটাং আওয়াজ তুলে নীলা চৌধুরী নানানধরনের কাজ করছেন।সাতটা দিন হয়ে গেছে তবুও তিনি প্রীতিকে ভুলতে পারেন নি।মনে হচ্ছে, মেয়েটাকে যদি তিনি নিজের ঘরের বউ করে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে সারাক্ষন নিজের বুকের মাঝে লুকিয়ে রাখবেন।

খুব অভিমান লাগছে তার সেই সাথে অনেক রাগ। প্রীতিকে যে তার বড্ড মনে ধরেছে এটা যেনো কেউ কেনো পাত্তাই দিচ্ছে না।কেনো দিচ্ছে না?নীলা চৌধুরীর মুখটা অভিমানে থমথমে হয়ে গেলো।তিনি কাজ করার ফাকেই একবার বসার ঘরে চোখ রাখলেন সাথে সাথে তার চোখ চড়কগাছ হয়ে উঠলো।

সিড়ি বেয়ে তৌফিক চৌধুরী নামছে।তিনি এক হাতে অফিসের ব্যাগ ধরে আছেন আর আরেক হাত বুকে।তিনি বাম পাশের বুকে হাত রেখে খুব কষ্টের সহীত সিড়ি দিয়ে নামছেন।মুখে কোনো কিছুর অসহ্যকর ব্যাথার ছাপ পড়েছে।তৌফিক চৌধুরী শেষ সিড়িতে পা রাখতেই উল্টে পড়ে যেতে ধরলেন।ততক্ষনে নীলা চৌধুরী স্বামীর কাছে এসে পড়েছেন। তিনি দৌড়ে স্বামীকে ধরে চিল্লিয়ে বলে উঠলেন,

-কি হয়েছে গো?তোমার কি হয়েছে? এমন করছো কেনো?

তৌফিক চৌধুরী নিজের বুকে হাত রেখেই নীলা চৌধুরীর উদ্দেশ্যে বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলে অনেক কষ্টে বলে উঠলেন,

-নীলা…নীলা আমাকে বসাও।

নীলা চৌধুরী স্বামীকে সোফায় বসিয়ে চিতকার করে ডেকে উঠলেন,

-নীলাভ….কই তুই?দেখে যা বাবা।

নীলাভ কেবলি রুম থেকে বের হচ্ছিলো অফিসের উদ্দেশ্যে মায়ের চিতকারে সে এবার তাড়াতাড়ি নেমে এলো।

নীলা চৌধুরী স্বামীর বুকে হাত বুলিয়ে বলে উঠলো,

-কোথায় কষ্ট হচ্ছে গো তোমার?এইখানে?বুকে কষ্ট হচ্ছে?বলো না গো।ওগো বলো।

নীলাভ ছুটে এসে তৌফিক চৌধুরীকে এই অবস্থায় দেখে ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো।ও তাড়াতাড়ি তৌফিক চৌধুরীর কাছে এসে বলে উঠলো,

-বাবা,কি হয়েছে বাবা?মা,বাবা এমন করছে কেনো? কি হয়েছে।

নীলা চৌধুরী কাদতে কাদতে বলে উঠলেন,

-দেখ না।তোর বাবা সিড়ি দিয়ে নামছিলো তখনি আমি এই অবস্থায় দেখলাম। কি হলো বল তো?মানুষটা তো কাল পর্যন্ত ঠিক ছিলো।

নীলাভ তৌফিক চৌধুরীকে ধরে বললেন,

-মা তুমি তাড়াতাড়ি ডাক্তার আংকেল কে ফোন দেও।

মায়ের অপেক্ষা না করে নীলাভ নিজেই গিয়ে ডাক্তার কে ফোন দিলো।এই মুহুর্তে তাহসিন ও বাড়িতে নেই।

নীলাভ ফোন করে আবার ছুটে আসলো বাবার পাশে।নীলাভ বাবার হাত ধরে দেখলো ঠান্ডা হয়ে গেছে।চমকে তাকালো ও।তৌফিক চৌধুরী বড় বড় নিঃশ্বাস ফেলছে।তার শরীর রীতিমতো কাপছে ব্যাপকমাত্রায়।শরীর ঠান্ডা হয়ে এসেছে।

নীলাভ বাবার হাত ঘষছে।আর নীলা চৌধুরী স্বামীর পা ঘষছে।

নীলাভ এবার আর অপেক্ষা না করে সোফা থেকে তৌফিক চৌধুরীকে অনেক কষ্টে নিজের কাধে তুলে নিলো।নীলাভ খানিকটা উল্টে যেতে ধরেও নিজেকে সামলে নিলো। সিড়ি বেয়ে উপরে উঠতে লাগলো।তৌফিক চৌধুরীর পুরো শরীর নিস্তেজ হয়ে রয়েছে।নীলাভের ও খুব কষ্ট হচ্ছে। এতো বড় দেহের একজন পুরুষকে কাধে তুলে সিড়ি বেয়ে উপরে নিয়ে যাওয়া চারট্টিখানি কথা না।

,

নীলাভ তৌফিক চৌধুরীকে এনে রুমে শোয়ালো।ওর ঘাম ছুটে গেছে।ও আবার এসে বাবার পাশে বসলো।এর মাঝেই ডাক্তার এসে পড়েছে।নীলাভ জায়গাটা ফাকা করে উঠে বাবার মাথার পাশে দাড়ালো।

ডাক্তার তৌফিক চৌধুরীকে কিছুক্ষণ দেখার পর একটা ঘুমের ইঞ্জেকশন দিলো।আর কিছু মেডিসিন লিখে দিলো।নীলা চৌধুরী স্বামীর পাশে নিস্তেজ হয়ে বসে আছে।চোখ থেকে তার টপটপ করে পানি গড়িয়ে পড়ছে থামার নাম ই নেই।

নীলাভ এগিয়ে এসে বলে উঠলো,

-ডাক্তার আংকেল কি হয়েছে আমার বাবার।

ডাক্তার -তেমন কিছু না।

নীলা চৌধুরী স্বামীর মুখের দিকে তাকিয়েই নিস্তেজ গলায় উত্তর দিলো,

-তেমন কিছু না হলে তো এমন হওয়ার কথা ছিলো না ডাক্তার সাহেব।কি হয়েছে ওর?

নীলাভ -জি আংকেল বলুন।

ডাক্তার একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলে উঠলো,

-দেখো নীলাভ।আমি তোমাদের ফেমিলি ডক্টর। অনেকদিন থেকেই তোমাদের পরিবারের সেবা করে আসছি।তোমার বাবা আমার বন্ধুর চেয়েও প্রিয়।সেই হিসেবে তোমাদের পরিবারের প্রতি আমার একটা আলাদা টান আছে।

একটু থেমে ডাক্তার আবারো বলে উঠলো,

-তোমার বাবার তেমন কিছু হয় নি আবার অনেক কিছুই হয়েছে।

নীলা চৌধুরী মলিন চোখে ডাক্তারের দিকে তাকিয়ে বলে,

-কি হয়েছে ওর?

ডাক্তার -ভাবী,তেমন কিছু না বেশি স্ট্রেস পড়েছে ওর উপর তাই এমন হয়েছে।আমার মতে,এই বয়সে এতো খাটাখাটুনি না করাই ভালো।নীলাভ,তোমরা তো জানোই তোমার বাবার হার্টের সমস্যা।যেকোনো সময় যা কিছু হতে পারে।তাও কীভাবে তোমরা তোমার বাবাকে এতোটা স্টেস এর উপর রাখতে পারো।ওকে যতটা সম্ভব রিলেক্সে রেখো।তা না হলে বড় কিছু হয়ে যেতে পারে। মৃত্যুর সম্মুখীন হতে পারে তোমার বাবা।

,

আরো কিছু কথা বলে ডাক্তার চলে গেলো।

নীলাভ ওর বাবার মুখের দিকে তাকালো খানিকক্ষণ। কিছুক্ষনের মধ্যেই কেমন শুকিয়ে গেছে বাবার মুখটা।গাল চাপার ভেতর ঢুকে গেছে।চোখ দুটো গর্তে। চোখের নিচে কালি পড়েছে।নীলাভ আরেকটু ভালো ভাবে খেয়াল করতেই দেখলো তার বাবা বেশ কালো হয়ে গেছে। আগেই সেই সুঠাম দেহ নেই অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। মুখে বয়সের ছাপ পড়েছে।নীলাভ চোখ জ্বলজ্বল করে উঠলো।নীলা চৌধুরী বেশ শান্ত গলায় বলে উঠলেন,

-ওর বয়স হয়েছে।ও তোমার বাবা।ছেলে হিসেবে কি তোমার কোনো দায়িত্ব নেই?শুধু কি আমাদের একার দায়িত্ব?

মায়ের আচমকা এমন কথা শুনে নীলাভ চোখ তুলে তাকালো।নীলা চৌধুরী এবার একটু অনুনয় সুরে বললেন,

-আমি তোর কাছে আমার স্বামীর প্রান ভিক্ষা চাইছি বাবা।তুই আমার স্বামীকে বাচা।এতোটা প্রেসারে ওকে রাখিস না।ওর কিছু হয়ে গেলে আমি বাচবো না।তুই জেদ করিস না বাবা।তুই তোর বাবার দায়িত্ব কাধে তুলে নে এবার।আমার স্বামীকে একটু মুক্তি দে।একটু শান্তি দে।আমি হাত জোর করে বলছি তোকে।ভিক্ষা চাইছি আমি তোর কাছে আমার স্বামীর জীবন।

নীলা চৌধুরী কথা বলতে বলতেই ডুকরে কেদে উঠলেন।নীলাভ বিচলিত হয়ে মায়ের দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বলে উঠলো,

-এসব কি বলছো তুমি মা?মা,তোমার স্বামী আমার বাবা।আর তার জীবন তুমি আমার কাছে ভিক্ষা চাইছো?আরে তোমরা চাইলে তো আমার জান ও হাজির হয়ে যাবে।আর তুমি আজ আমাকে এতোটা নিচে নামিয়ে কথা বলতে পারলে মা?

নীলা চৌধুরী -তাহলে তুই তুই এক্ষুনি তোর ওই চাকরি তে রেজিগনেশন লেটার দে।

নীলাভ তৎক্ষনাৎ রেজিগনেশন লেটার ইমেইল করে পাঠিয়ে দিলো।

আরো বেশ কিছুক্ষণ পর তৌফিক চৌধুরীর জ্ঞান ফিরল।পাশে ছেলেকে তার হাত ধরে বসে থাকতে দেখে তার চোখে পানি এসে পড়লো।অনেকদিন পর তিনি ছেলেকে এতো কাছ থেকে দেখছেন। ব্যস্ততার চাপে ছেলের সাথে তার দেখাই হয় না।সকালে তিনি আগে কাজে বেরিয়ে যান আবার নীলাভ রাতে আসার আগেই তিনি ঘুমিয়ে যান।ছেলেটাকে তিনি বড্ড বেশি ভালোবাসেন বড্ড।কিন্তু বুঝাতে পারেন না।

নীলাভ বাবার হাত দুটো শক্ত করে ধরে বলে উঠে,

-আমি আর তোমাকে কোনো কাজ করতে দিবো না বাবা।আমি কাল থেকে আমাদের কোম্পানিতে জয়েন করবো।তুমি এখন থেকে একদম ফিট থাকবে বাবা।ইয়াং ম্যান হয়ে যাবে তুমি।

তৌফিক চৌধুরী একটু মুচকি হেসে বলে,

-তার দরকার নেই, বাবা।আমি সব সামলে নিতে পারবো।তুমি তোমার লাইফটাকে নিজের মতো করে গড়ো।

নীলাভ চট করে উঠে দাড়ালো। মুহুর্তের মধ্যে মুখটাকে কঠিন করে বলে উঠলো,

-আমি যা বলেছি তাই।এর বাইরে কোনো কথা শুনবো না।আমি ওই চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।পরসুদিন থেকে আমি আমাদের অফিস জয়েন করবো।ব্যস….

নীলাভ হনহন করে বাবা মায়ের ঘর ছাড়লো।তৌফিক চৌধুরী সেদিকে চেয়ে হালকা আওয়াজ করে হাসলেন।হঠাৎ চোখ নীলা চৌধুরীর দিকে পড়তেই দেখলেন তার বউ খুব সচেতন দৃষ্টিতে তার দিকে তাকিয়ে আছে।হাসি থামিয়ে তৌফিক চৌধুরী বলে উঠে,

-কি হয়েছে?

নীয়াল চৌধুরী -আজ বুঝলাম তুমি ইচ্ছা করেই আমার ছেলেটাকে রাগাও।কেনো বলো তো?আমার এতো শান্ত শিষ্ঠ ছেলেকে বারবার কেনো রাগিয়ে দেও তুমি?

তৌফিক চৌধুরী বিনিময়ে শুধু মিস্টি করে হাসলেন।

নীলা চৌধুরী সেদিকে চেয়ে রইলেন।আজ ও তিনি এই হাসির কাঙাল।এই হাসি দেখলেই প্রেমে পড়ে যান।যেই হাসিতে তিনি হঠাৎ ভালোবেসে ফেলেছিলেন তৌফিক চৌধুরীকে।

______________________________

দুহাত কপালে ঠেকিয়ে মাথা নিচু করে বসে আছে নীলাভ।পড়নে সকালের সেই অফিসের যাওয়ার জন্য ড্রেসাপ।চেঞ্জ করে নি আর।বলতে গেলে ইচ্ছে করে নি।খুব অস্বস্থি হচ্ছে।মনের ভেতর খচখচ করছে। মনে হচ্ছে সব কিছু ভেঙে গুড়িয়ে দেই।বাবার এই অসুস্থতার কারন একমাত্র সে।ভাবতেই বুকের ভেতর কেপে উঠে তার।বাবার এই অসুস্থতার পিছনে যে একমাত্র সে দায়ী সেটা নীলা চৌধুরী আরো ভালোমতন বুঝিয়ে দিয়েছেন।আজ আরো বড় কিছু হয়ে যেতে পারতো।কেনো এতো জেদ নীলাভের কেনো?কেনো সে পরিবারের সকলকে ভালো রাখতে পারলো না?ভালো ছেলে না সে..ভালো ছেলে হলে আজ তার বাবার এমন দশা কেনো?

ভাবতে ভাবতেই নীলাভের ফোনটা ভেজে উঠলো।নীলাভ একবার ফোনের দিকে তাকিয়েই চোখ সরিয়ে নিলো ধরলো না।পর পর আরো বেশ কিছুবার বেজে উঠলে নীলাভ ফোন ব্যাক করলো।

ফোন রিসিভ করার সাথে সাথে প্রীতি বলে উঠে,

-এতোগুলা মিসকল দিলাম কই থাকেন?আমার টাকা মারতে চাইছেন?আজ প্রায় ১৫ দিনের মতো হয়ে গেছে এখনো আমি আমার হাতে টাকা পেলাম না।সমস্যা কি এতো ছেছড়ামো কি করে কেউ করতে পারে?এই আপনি না এক লাখ ৬৩ হাজার টাকার চাকরি করেন? তাহলে এই কিছু টাকা দিতে কি সমস্যা আপনার?

প্রীতিকে আর কোনোকিছু বলার সুযোগ না দিয়ে নীলাভ চিল্লিয়ে বলে উঠলো,

-ফাইজলামি করেন আপনি আমার সাথে?সকাল নাই বিকাল নাই দুপুর নাই পাইছেন এক ৬৩ টাকা।কি সমস্যা কি আপনার?ইনডিরেক্টিলি আমাকে ডিস্টার্ব করছেন?হ্যা?খেয়ে দেয়ে আর কোনো কাজ নেই?আরে আমি তো বলেছিলাম ই আমি আপনার ফোনে ১০০ টাকা ফেক্সি করে দিচ্ছি দরকার হলে এর চেয়েও বেশি দিবো।কিন্তু তাও আপনি ৬৩ টাকা করছে যেখানে আপনি জানেন ই ৬৩ টাকা ফেক্সি হয় না।সারাদিন আমাকে বলেন ছেছড়া মিসকিন।কিন্তু আপনি যে কি লেবেলের ছেছড়া তা তো জানেন না।জানলে একটা অপরিচিত ছেলেকে এভাবে ডিস্টার্ব করতেন না।আপনাদের মতো মেয়েদের আমার ভালো করে চেনা আছে।আপনি ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার সাথে এমন করেছেন।আপনাদের মতো কিছু মেয়ের জন্যই আজ আমাদের সমাজের নারীরা এতো নিচে।এরজন্যই আমি মেয়েদের দেখতে পারি না।

চলবে🙂

কেমন লাগলো?🙃খুব শীঘ্রই একটা ধামাকা আসতে চলেছে।

ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে দেখবেন।

আল্লাহ হাফেজ💕
চলবে🙂

আজ বেশ বড় করে লিখেছি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here