হঠাৎ_বসন্তে পর্ব ৩

#হঠাৎ_বসন্তে
#লেখনীতে:সারা মেহেক
#পর্ব:৩

রুহি মুচকি হেসে মাথা নাড়িয়ে সায় দিলো। নির্ভয় আর কিছু বললো না। বরং জায়গা ছেড়ে উঠে রুহির দিকে এক হাত বাড়িয়ে দিলো। রুহি এক হাত দিয়ে শাড়ীর কুঁচি সামলে অপর হাত দিয়ে নির্ভয়ের হাত ধরে উঠে দাঁড়ালো। এরপর দুজনে একসাথে প্যাডেল বোটে উঠার জন্য কাউন্টারের দিকে হাঁটা শুরু করলো। হাঁটতে হাঁটতে দুজনের মধ্যে চললো টুকটাক কথাবার্তা। যার সবটাই পহেলা ফাল্গুনকে ঘিরে।

নির্ভয় এবং রুহি একটা প্যাডেল বোট ভাড়া করে উঠে পরলো। দুজন পাশাপাশি বসে প্যাডেল চালিয়ে নৌকা এগিয়ে নিতে লাগলো। তাদের চারপাশে আরো অনেক মানুষ প্যাডেল বোট চালাচ্ছে৷ যাদের অধিকাংশই কপোত-কপোতী।

অন্যান্য দিনের তুলনায় আজকে ধানমন্ডি লেক লোকেলোকারন্য৷ যদিও আগামীকাল এর চেয়েও দ্বিগুণ মানুষজনের দেখা মিলবে এই লেকে। ভালোবাসা দিবস বলে কথা।
রুহি এবং নির্ভয় প্যাডেল বোট চালাতে চালাতে ভীড়ভাট্টা পরিবেশ থেকে কিছুটা দূরে চলে এলো। হঠাৎ নির্ভয় কি মনে করে কোনো প্রকার ভূমিকা ছাড়াই রুহিকে জিজ্ঞেস করলো,
” অজানা অচেনা একটা ছেলের সাথে এভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। লোকে কি বলবে তা নিয়ে কিছু চিন্তা করছেন না?”

রুহি উদাস চাহনিতে চারপাশ দেখছিলো। হঠাৎ নির্ভয়ের এমন প্রশ্ন শুনে সে চট করে মাথা ঘুরিয়ে নির্ভয়ের দিকে তাকালো। ভ্রু জোড়া কুঁচকে কিছুক্ষণ সন্দেহের দৃষ্টিতে নির্ভয়কে পর্যবেক্ষণ করলো। এরপর হুট করে হালকা হেসে ফেললো সে। বেশ ঝলমলে গলায় বললো,
” মোটেও না৷ লোকেদের কাজই হচ্ছে বলা। তারা বলার কথা বলবে। আমি এক কান দিয়ে ঢুকিয়ে আরেক কান দিয়ে তা বের করে দিব। আর এখানে কতশত ছেলেমেয়েই তো আছে। শুধু আমাকে নিয়েই কেনো কথা বলবে? আমি কি সেলিব্রিটি না কি!” এই বলে সে কয়েক সেকেন্ডের বিরতি নিয়ে আবারো বলল,
“আজ-কাল কার মানুষের কাজই হচ্ছে কোনো ঘটনাকে তিল থেকে তাল বানানো। যেখানে আমি খারাপ কিছু করিনি সেখানে আমার ভয় পাওয়া বা হীনমন্যতায় ভোগা নিয়ে কোনো প্রশ্নই আসে না। ঘুরার কথা ঘুরছি। হ্যাঁ, বান্ধবীদের বদলে একজন অপরিচিত ছেলের সাথে ঘুরছি। তো কি হয়েছে? আমি তাকে স্পর্শ করছি? বা সে আমাকে স্পর্শ করছে? বা আমরা কি প্রাইভেট কথাবার্তা বলছি? এসবের যেহেতু কিছুই হচ্ছে না, সেহেতু লোকেদের সেসব অপ্রয়োজনীয় কথাবার্তা মগজে না ঢুকানোই বেটার।”

নির্ভয়, রুহির কথাবার্তা শুনে বেশ খুশি হলো। সে বেশ বুঝতে পারছে, ভালো একটা মেয়ের সঙ্গ পেয়েছে আজ। যদিওবা সময়টা ক্ষণিকের।
হঠাৎ রুহি, নির্ভয়কে কিছুটা সন্দেহের সুরে জিজ্ঞেস করলো,
” আপনার কোনো আত্মীয়স্বজন আছে? আশেপাশে কোথাও? মানে এই ধানমন্ডি লেকে তাদের দেখেছেন আপনি? ”

রুহির প্রশ্ন শুনে নির্ভয় থতমত খেয়ে গেলো। হুট করে এমন অপ্রয়োজনীয় প্রশ্নের ঝুলির সম্মুখে পরে সে ভড়কে গেলো। জিজ্ঞেস করলো,
” জি! এমন প্রশ্ন করছেন যে? ”

রুহি, নির্ভয়ের চেহারার ভাবভঙ্গি দেখে ফিক করে হেসে ফেললো। অত্যন্ত সাবলীল গলায় সে বললো,
” আপনার প্রশ্নের প্রেক্ষিতেই আমি এমন প্রশ্নটা করে বসলাম। মনে হলো, আপনার কোনো আত্মীয়স্বজন হয়তো আমাকে আর আপনাকে ঘুরতে দেখে ফেলেছে। এজন্য….”

রুহিকে মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে নির্ভয় নিস্তেজ ভাবে বললো,
” তেমনটা নয়। আপনি আমাকে ভুল বুঝছেন। ” এই বলে সে খানিকটা সময় চুপ করে রইলো। এরপর অনেকটা অপরাধী গলায় বললো,
” আমরা একে অপরের পরিচিত নই। মানুষজন আমাদের এভাবে ঘুরতে দেখে অনেক কিছু মনে করতে পারে। বিশেষ করে আপনার পরিচিত কেউ দেখলে….না মানে বলছিলাম যে, অনেক মেয়েই এ নিয়ে হীনমন্যতায় ভোগে। যদিও তাদের ক্ষেত্রে পরিচিত মানুষজনই থাকে তাদের সাথে। কিন্তু আপনার কথা তো ভিন্ন। আমি অপরিচিত, এজন্য আরো বেশি…..”

নির্ভয়ের কথা শেষ হতে না হতেই রুহি শব্দ করে হেসে ফেললো। না চাইতেও নির্ভয়ের কথাবার্তা, ভাবভঙ্গি দেখে তার প্রচণ্ড হাসি পাচ্ছে। যদিও নির্ভয়ের সামনে এভাবে হাসাটা বেশ বেমানান দেখায়। কিন্তু না হেসে উপায় আছে কি! রুহি কিছুক্ষণ হেসে নিলো। তারপর হাসি আটকানোর জন্য হাত দিয়ে ঠোঁট চেপে বললো,
” আমি তো বললামই আপনাকে।” এই বলে সে নির্ভয়ের কাঁধ ছাপিয়ে লেকের ভীড়ভাট্টার দিকে তাকালো। এরপর প্যাডেলের দিকে তাকিয়ে নির্ভয়ের উদ্দেশ্যে বললো,
” আমাদের নৌকাটা ঘুরানো উচিত। আমার হাতে খুব বেশি একটা সময় নেই। হোস্টেলে সূর্যাস্ত হতে হতে না পৌঁছালে পরে এ নিয়ে জবাবদিহি করতে হবে।”

নির্ভয়, রুহির কথার পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বললো না। চুপচাপ বসে থেকে ব্যস্ত পায়ে প্যাডেলে ঘুরিয়ে মেইন কাউন্টারের দিকে নৌকা এগিয়ে নেয়া শুরু করলো।

নৌকা থেকে নেমে নির্ভয় রুহিকে ফুচকা খাওয়ার অফার করলো। প্রথমে রুহি রাজি না হলেও পরে ঠিকই নির্ভয়ের জোরাজোরিতে রাজি হয়ে যায়। ফুচকার দোকানের সামনে এসে দু প্লেট ফুচকার ওর্ডার দিয়ে নির্ভয় এবং রুহি প্লাস্টিকের দুটো চেয়ার টেনে ভীড় থেকে কিছুটা দূরে চলে এলো। দুজনে টুকটাক কথাবার্তা বলে চুপ হয়ে পরলো। কারন কথা বলার মতো তেমন কোনো টপিক তারা খুঁজে পাচ্ছে না। এজন্য রুহি চোখ মেলে চারপাশ দেখতে লাগলো। হাজারো মানুষের ভীড়ে খুঁজতে লাগলো প্রকৃতির সৌন্দর্যকে। মনে পুরে নিতে লাগলো, প্রকৃতির প্রতিটি মূহুর্তের ঘটনাপ্রবাহগুলো। এই যেমন, এখন চারপাশ হালকা শীতল হাওয়ায় মেতে উঠেছে। সেই হাওয়ায় তাল মেলাতে গাছগাছালি হতে পুরোনো পাতাগুলো ঝড়ে পরছে। উড়ে বেড়াচ্ছে মানুষের মাঝে। মাঝেমাঝে কিছু অভাগা পাতা উড়ে বেড়ানোর ক্ষমতা হারিয়ে মানুষের পায়ের নিচে পিষে পরে নিজের শেষ প্রাণটুকু খোয়াচ্ছে। মুক্ত বিহঙ্গগুলো নীড়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছে। পশ্চিম আকাশের প্রায় শেষপ্রান্তে অবস্থানরত সুর্য্যিমামার আলোর খেলায় দূর-দূরান্তের বিহঙ্গগুলো কেমন ধূসর-কালো এক অবয়ব ধারন করেছে। কি অদ্ভুত প্রকৃতির প্রতিটি ঘটনা! এই অদ্ভুত প্রকৃতিকে মাঝেমধ্যে নিজের মধ্যে লুকিয়ে নিতে মন চায় রুহির। কি উদ্ভট এক ইচ্ছা তার!

নির্ভয়, কোনো এক কারণে চুপচাপ রুহিকে দেখে চলছে। দেখে চলছে রুহির নিষ্পলক চাহনি, দেখে চলছে রুহির স্বাভাবিক টানাটানা চোখজোড়া, দেখে চলছে রুহির স্বাভাবিক আকৃতির ঠোঁটজোড়া। যাতে নেই কোনো কৃত্রিম রঙ। সে দেখছে রুহির পরনের শাড়ীটার নকশা। এ শাড়ীটা তাকে খুব টানছে। শাড়ীটার রঙ রূপেই রয়েছে কেমন এক মন স্নিগ্ধ করা ভাবসাব।
আগেপিছে না ভেবে হঠাৎ মনে পড়েছে, এমন একটা ভাবভঙ্গি দেখিয়ে সে রুহিকে জিজ্ঞেস করলো,
” আপনি আপনার পরনের শাড়ীটা কোথা থেকে কিনেছেন?”

প্রকৃতির সৌন্দর্য দেখায় ব্যস্ত রুহিকে এমন প্রশ্ন করে নির্ভয় বেশ দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগছে। তার এ দ্বিধাদ্বন্দ্ব অনুভূতিকে আরো এক ধাপ বাড়িয়ে দিতেই যেনো রুহি বিরক্তিমাখা দৃষ্টিতে তার দিকে তাকালো। ভ্রুজোড়া কুঁচকিয়ে জিজ্ঞেস করলো,
” তা জেনে কি করবেন?”

নির্ভয় আমতাআমতা করে বললো,
” শাড়ীটা বেশ মনে ধরেছে আমার। ভাবছি……”

নির্ভয়ের কথার মাঝে ফোড়ন কেটে রুহি হালকা হেসে বললো,
” বুঝেছি বুঝেছি। আসলে আমি নিজেই জানি না শাড়ীটা কোথা থেকে কেনা। তো, আপনাকেই বা কি বলবো।”

নির্ভয় জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চেয়ে থেকে বললো,
” মানে? ঠিক বুঝলাম না।”

রুহি কিছু বলতে যাবে, তবে তার আগেই অস্থায়ী দোকানের দশ- বারো বছরের ছেলেটা তাদেরকে দু প্লেট ফুচকা দিয়ে কোনোরূপ কথাবার্তা ছাড়াই ছুট লাগালো। রুহি ফুচকার প্লেটটা হাতে নিয়ে তৃপ্তিভরা চাহনিতে সবগুলো ফুচকা এক নজর দেখে নিলো। তেঁতুলের টলটলে টকের মধ্যে প্রথম ফুচকাটা ডুবিয়ে মুখে পুরে তৃপ্তিতে চোখজোড়া বন্ধ করে নিলো। তাকে দেখে মনে হচ্ছে, এ মূহুর্তে পৃথিবীর সবচেয়ে তৃপ্তিদায়ক এক খাবার খাচ্ছে সে। নির্ভয় তো এক প্রকার হা করেই রুহির খাওয়াদাওয়ার পর্ব দেখছে। ফুচকা নামক সাধারণ এক খাবারও যে এতো সুস্বাদু হয় তা রুহির খাওয়ার ধরণ না দেখলে হয়তো সে জানতো না। কয়েক সেকেন্ড রুহির দিকে অদ্ভুতুরে দৃষ্টিতে তাকিয়ে থেকে প্রথম ফুচকাটা মুখে পুরে নিলো নির্ভয়।
কিছুক্ষণ বাদে রুহি ফুচকা চিবুতে চিবুতে বললো,
” মানে বলছিলাম যে, এ শাড়ীটা আমার বান্ধবীর। আমার না। এজন্য আমি জানি না যে সে কোথা থেকে কিনেছে এটা।”

নির্ভয় প্রথমে রুহির কথাটা বুঝতে না পারলেও পরে ঠিকই তা বুঝে নিলো। খানিকটা মিয়িয়ে যাওয়া স্বরে বললো,
” ওহ….. ”

রুহি প্লেটের শেষ ফুচকাটা খেয়ে ভ্রুজোড়া কুঁচকিয়ে সন্দেহের সুরে জিজ্ঞেস করলো,
” কি ব্যাপার বলুন তো? ”

নির্ভয়ও শেষ ফুচকাটা খেয়ে স্বাভাবিকভাবেই বললো,
” কি ব্যাপার হবে?”

” এই যে আপনি শাড়ীর কথা জিজ্ঞেস করছেন। কারণটা কি?”

নির্ভয় হালকা হাসলো। লাজুক হাসি যাকে বলে ঠিক তেমনই হাসির দেখা মিললো তার ঠোঁটের কোনে। বললো,
” ভবিষ্যতের জন্য কিনতে চেয়েছিলাম। কারণ শাড়ীটা আমার বেশ মনে ধরেছে। এ রঙে কেমন যেনো এক পবিত্রতা ভর করেছে। যাই হোক, বুঝবেন না। চলুন উঠা যাক।”

রুহি আর কথা বাড়ালো না। নির্ভয় ফুচকাওয়ালাকে টাকা দিয়ে রুহিকে নিয়ে হাঁটা শুরু করলো। সূর্য ডুবে যেতে শুরু করেছে। কিছুক্ষণ পরেই সন্ধ্যা হয়ে যাবে। প্রকৃতি ডুবে যাবে কালো রঙের সৌন্দর্যে।
ধীর ধীর পায়ে এগিয়ে চলছে রুহি এবং নির্ভয়। কোনো কথাবার্তা চলছে না তাদের মাঝে। কেনো যেনো, বলার মতো কোনো কথা খুঁজে পাচ্ছে না তারা। হঠাৎ ব্যাগ হতে রুহির ফোন বেজে উঠলো। লিজা করেছে। লিজার কল রিসিভ করতেই সে জানতে পেলো, লিজা এবং তারিন ধানমন্ডি লেকের বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। সে যদি হোস্টেলে না গিয়ে এখনও লেকে থেকে থাকে, তাহলে অতিসত্বর যেনো চলে আসে।
রুহি কল কেটে ব্যস্ত ভঙ্গিতে বললো,
” আমার বান্ধবীরা বাইরে দাঁড়িয়ে আছে। ”

নির্ভয় এমনটাই আন্দাজ করেছিলো। কোনো এক কারণে তার মনটা রুহিকে আটকাতে চাইছে। কিন্তু সে জানে, মনের এ আশা পূরণ হওয়ার মত নয়। এজন্য ম্লান হেসে বললো,
” সময়টা একটু বেশিই দ্রুত গতিতে চলে গেলো। ইচ্ছা ছিলো, আপনাকে নিয়ে রবীন্দ্র সরোবরে কিছুক্ষণ বসবো।” এই বলে সে ফোঁস করে নিঃশ্বাস ছেড়ে মাথা নিচু করে হাঁটা শুরু করলো।

নির্ভয়ের কথার প্রতু্ত্তের রুহি কিছু বললো না৷ তারও মনটা চাইছে, আরো কিছু সময় কাটাতে। অতি নির্বিঘ্নে, অতি যতনে। কিন্তু এ ছোট্ট ইচ্ছাটা পূরণ হওয়ার নয়। জগতের সকল ইচ্ছা পূরণ হতে নেই, এমনটা ভেবেই সে নিজেকে সান্ত্বনা দিলো।

ধানমন্ডি লেকের গেট হতে কিছুটা দূরে থাকতেই রুহি সতর্ক কণ্ঠে বলে উঠলো,
” আপনি বরং আমার সাথে না গিয়ে আলাদা যান। আপনার সাথে আমাকে দেখে ফেললে আমার বান্ধবীরা এই সেই নানা প্রশ্ন করে আমার মাথা খেয়ে ফেলবে। ”

নির্ভয় অনিচ্ছা সত্ত্বেও দূর্বল ভঙ্গিতে মাথা দুলিয়ে বললো,
” আচ্ছা ঠিক আছে। আপনি বরং চলে যান। আমি আস্তে-ধীরে আসছি।”

রুহি কিছু বললো না৷ বলার মত কিছু নেই তার কাছে। আছে নিষিদ্ধ এক ইচ্ছা, সময়টাকে দু ঘন্টা পিছিয়ে নিয়ে এই ছেলেটার সাথে আরো কিছু মূহুর্ত অতিবাহিত করার ইচ্ছা। নিরুপায় হয়ে এ নিষিদ্ধ ইচ্ছাকে মাটিচাপা দিয়ে রুহি দূর্বল পায়ে হেঁটে চলে গেলো। একটিবারও পিছনে ফিরে নির্ভয়ের দিকে তাকালো না। তাকাবার মত সাহস নেই তার কাছে। একবার পিছে ফিরে তাকালেই মন চাইবে, ‘ইশ, আরো কিছু সময় কি পাওয়া যেতো না?’
রুহি হাঁটার গতি বাড়িয়ে দিয়ে দ্রুত গেটের বাইরে চলে এলো। ব্যস্ত চোখজোড়া খুঁজতে লাগলো তারিন আর লিজাকে। কয়েক মূহুর্তের মাঝে তাদের পেয়েও গেলো। কোনোরূপ কথাবার্তা ছাড়াই একটা রিকশা ডেকে নিলো সে। চুপচাপ রিকশায় নিজের জায়গা নিয়ে বসে পরে তারিন আর লিজাকে বসতে ইশারা করলো। তারিন এবং লিজা রুহির এ নিঃশ্চুপ ভঙ্গিমা দেখে খানিক অবাক হলো। তবে মুখ ফুটে কেউ কিছু বললো না। শুকনো গোছের লিজা রিকশার উপরের অংশে বসে পরলো আর তারিন বসলো রুহির পাশে। তাদের বসে পরার কয়েক সেকেন্ডের মাঝেই রিকশা চলা আরম্ভ করলো।

নির্ভয় চেয়ে আছে চলন্ত সেই রিকশার পানে। সূর্যের সাথে সাথে সেই রিকশাটা ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে আসছে। ঝাপসা হয়ে আসছে কিছু অনুভূতি, মিলিয়ে যাচ্ছে কিছু ইচ্ছা, বুক চিড়ে বেড়িয়ে আসছে তপ্ত এক দীর্ঘশ্বাস।

#চলবে

®সারা মেহেক

(আগামীকাল সমাপ্তি পর্ব পাবেন)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here