হৃদমাঝারে শুধুই তুই পর্ব -১৬

#হৃদমাঝারে_শুধুই_তুই
#লেখনীতে:মিথিলা মাশরেকা
পর্ব-১৬

আরমানের দিকে তাকিয়ে কিছুটা ভরকে গেলাম আমি।চোখের এলোমেলো চাওনিটা আর নেই,নেশাতুর একদমই লাগছে না,কিন্তু ভয়টা সেখানেই। আরো গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছেন উনি আমার দিকে।এমনভাবে তাকিয়ে আছেন যেনো ওই চোখে আমার সর্বনাশ আকা।ঠোটের হাসিটারও বর্ননা দেওয়ার সামর্থ্য আমার নেই।হাসছেন না উনি,আবার হাসছেনও।হার্টবিট বাড়তে থাকলো আমার।কাপাকাপা গলায় বললাম,

-ক্ ক্ কি?

উনি একপা এগিয়ে শীতল কন্ঠে বললেন,

-সেটাই তো বললাম,এবার কি?

-দ্ দেখুন,এ্ একদম মাতলামো করবেন না।মেরে মাথা ফাটিয়ে দেবো আপনার।

উনি আরো এগিয়ে আমার দিকে একদম ঝুকে দাড়ালেন।শ্বাস আটকে দাড়িয়ে আছি আমি।আরমান একটা ডেভিল হাসি দিয়ে বললেন,

-দেন গো অ্যাহেড!আগে মাথা ফাটাও,তারপর মাতলামি করবো।

নাহ্!এ লোকের চড়ে গেছে বেশি।এখানে থাকলে এভাবেই জ্বালাবেন আ‌মাকে।রুমের দিকে দৌড় লাগাতেই পিছন থেকে হাত ধরে আটকে দিলেন উনি আমাকে।চোখ খিচে বন্ধ করে নিয়ে ওভাবে দাড়িয়েই বললাম,

-আ্ আপনি কিন্তু লিমিট ক্রস করছেন!

-এখনো করিনি।এন্ড ইউ নো দ্যাট!

-প্লিজ ছেড়ে দিন।আপনি এখন স্বজ্ঞানে নেই।আমি কিন্তু…প্লিজ ছাড়ুন আমার হাত!!!

আরমান এবার আমার সামনে এসে দাড়িয়ে বললেন,

-যদি স্বজ্ঞানে থাকি?অ্যালাও করবে?

চোখ‌ মেলে তাকালাম ওনার দিকে।উনি মুচকি হেসে আবারো বললেন,

-কি বলো?কাছে আসবো তোমার?

আমার চোখ বেরিয়েই আসবে এবার।টের পাচ্ছি আমি।একটা শুকনো ঢোক গিলে হাত মুচড়ামুচড়ি শুরু করে দিলাম।উনি ঠোট টিপে হেসে ছেড়ে দিলেন আমাকে।তৎক্ষনাৎ বেশ অনেকটা পিছিয়ে গেলাম।আরমান এতোক্ষন স্বাভাবিকভাবে দাড়িয়ে থাকলেও আবারো দুলতে শুরু করলেন।আধো আধোভাবে বললেন,

-ইচ্ছে করছে খেয়ে ফেলি!

আমি আরো পিছিয়ে গিয়ে নিজের হাত বুকে চেপে ধরে ভ্রুকুচকে তাকালাম ওনার দিকে।উনি আমার দিকে তাকিয়ে দাত বের করে হেসে হেলে দুলে সেন্টার টেবিলের দিকে এগোলেন।টেবিলে থাকা সাদা পানীয় ভর্তি একটা কাচের বোতল।উনি ওটা হাতে নিয়ে বললেন,

-এইটা খেয়ে ফেলার কথা বলেছি।হিহি!

হায় হায়!ওটা তো সেই বোতলগুলোর মতোই,যা শিমুলদের বাড়িতে ছিলো,যা খেয়ে এই দশা এদের।মামা তারমানে হাতে করে একটা নিয়েও এসেছেন?উফ্!কি যে শুরু হলো!নাহ্!ওটার আর একফোটা পেটে পরতে দেওয়া যাবে না এর।এগিয়ে গিয়ে বোতলটা নিতে যাবো আরমান হাত সরিয়ে নিয়ে বললো,

-এই?তুমি এটার দিকে হাত বাড়িয়েছো কেনো?ডোন্ট ইউ নো ম্যানার্স?অন্যের জিনিসে হাত দিচ্ছো?

-আরমান!ওটা আমাকে দিয়ে দিন।

উনি হাত পিছনে লুকিয়ে বললেন,

-নোপ!দিবো না।

-দিন,প্লিজ!

-জানো,এইটা খেলে মনে হয় হাওয়ায় ভাসছো।হোয়াট আ ফিলিং!

এই ফিলিং এর তো….!নাহ্!যে করেই হোক,ওটা নিতে হবে।বললাম,

-দেখুন,ওটা আমাকে দিয়ে দিন।

-দিলে?

-যা বলবেন তাই!

কথাটা বলে হাত দিয়ে মুখ চেপে ধরলাম।এ কি বলে ফেললাম আমি?আরমান বড়সর একটা হাসি দিয়ে এগিয়ে এসে বললেন,

-ভেবে বলছো?

লোকটা ড্রাংক!উল্টাপাল্টা কিছু বললে?ধুউউর!কি বলবে?আর আমি কি হাত পা গুটিয়ে বসে থাকবো নাকি?আচ্ছা,আগে তো বোতলটা নেই,পরে দেখে নেবো।মুখে বললাম,

-হুম।ভেবেই‌ বলেছি।ওটা দিন আমাকে।

আরমান বোতলটা আমার দিকে বাড়িয়ে ধরলেন।ছো মেরে ওটা নিয়ে চোখ বন্ধ করে একটা স্বস্তির নিশ্বাস ফেললাম।চোখ খুলতেই আগে সামনে দাড়িয়ে থাকা আরমানের ঠোটের টেডিস্মাইল চোখে পরলো।ওনার দুষ্টু‌ হাসি দেখে নিজেকে‌ শক্ত করে নিলাম।আজ এই লোক যাই বলবে,এনার বারোটা বাজিয়ে দিবো একদম।আরমান চিন্তার ভাব ধরে বললেন,

-কি চাওয়া যায় তোমার কাছে বলোতো?

বিরক্তি নিয়ে তাকিয়ে আছি শুধু।উনি একটু ভেবে উত্তেজিত হয়ে বললেন,

-পেয়ে গেছি!

হাত দিয়ে ওড়না মুঠো করে ধরলাম।শান্ত চোখে তাকিয়ে আছি ওনার দিকে।উনি একটু ঝুকে বললেন,

-তুমি আজ আমাকে…

বড়বড় করে তাকালাম এবার।কি বলতে চাইছেন উনি?এতোক্ষন সাহস নিয়ে দাড়ালেও আবার ভয় করছে আমার।

-উম্ তুমি?আজ?আমাকে…

জোরে শ্বাস নিতে নিতে চেচিয়ে বললাম,

-হোয়াট?

-আজ তুমি…

-হেয়ালি না করে বলুন!

-তুমি,আমাকে..

-আসছি আমি।

-ভয় পেয়ে গেলে?

-মিথি ভয় পায় না।যা বলার বলুন।নইলে রুমে যাবো।

উনি মাথা উচিয়ে বললেন,

-বাবাহ্!একটু বেশিই তাড়া তোমার?

দাত কিড়মিড়িয়ে পা বাড়ালাম রুমের দিকে।আরমান মেঝেতে বসে গিয়ে বললেন,

-ওই?তুমি আজ আমাকে রুমে পৌছে দিবা?

অবাক হয়ে পিছন ফিরে তাকালাম।উনি গাল ফুলিয়ে বাচ্চাদের মতো মেঝেতে বসে আছেন।দেখে হাসি পাচ্ছিলো।তবুও সিরিয়াস মুখ করে বললাম,

-মানে?

উনি ওভাবে বসে থেকেই‌ ঠোট উল্টে বললেন,

-বা রে!বোতল চাইলা‌,দিয়ে দিলাম,একটু হেল্প তো করো?রুম অবদি পৌছে দাও না!

আবারো হাসি পাচ্ছে।খুব কষ্টে আটকে রেখে বললাম,

-রুমে পৌছে না দিলে?

-আমি এখানেই ঘুমোবো।তারপর সকালে শামীমা আন্টিকে বলে দেবো যে তুমি আমার বিছানায় পানি ফেলেছিলে,এজন্য এখানে ঘুমিয়েছি।তারপর বুঝবে হুম!

কি বুদ্ধি রে বাবা!এতোসব চলে এর মাথায়?মামীকে সত্যি যদি বলে দেয়?রুমে পৌছে দেওয়া আর কি ব্যাপার!সাতপাচ না ভেবে হাত বারিয়ে বললাম,

-উঠুন!

উনি হেসে আমার হাত ধরে উঠে দাড়াতে গিয়ে পরে যাচ্ছিলেন।আবারো জাপটে জরিয়ে ধরলেন আমাকে।ছাড়িয়ে নিয়ে আঙুল উচিয়ে বললাম,

-একদম গায়ে পরবেন না!

আরমান ওভাবেই গাল ফুলিয়ে মাথা নারলেন।ওনার হাত ধরে রুমে গিয়ে বেডে বসিয়ে দিলাম।দাত কেলিয়ে বললেন,

-থ্যাংক ইউ।

মুখ বাকিয়ে চলে আসছিলাম।উনি হাক ছেড়ে বললেন,

-ওই?শুনো না!আমার হাত পা ব্যথা করছে।একটু…

রাগী চেহারা নিয়ে পিছন ফিরতেই‌ উনি মেকি হাসি দিয়ে বললেন,

-হি হি,ইয়ে মানে একটু ঘুম দরকার।তাহলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।গুড নাইট।

ফু দিয়ে শ্বাস ফেলে রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম তাড়াহুড়ো করে।পিছন থেকে আরমান আবারো ডাক লাগিয়ে বললেন,

-মিথি!

জোরে একটা শ্বাস ফেলে পিছন ফিরলাম আবারো।উনি দরজায় হেলান দিয়ে একপা আরেকপায়ের পিছনে পেচিয়ে পকেটে একহাত গুজে আরেকহাতে মোবাইল ঘাটছেন।একদম স্বাভাবিক লাগছে ওনাকে।কপাল কুচকে তাকালাম।কে বলবে এনাকে দেখে যে দু মিনিট আগে আমার সাথে ওমন করেছে।উনি মোবাইল থেকে চোখ‌ উঠিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে দাত কেলিয়ে বললেন,

-হাউ ডু আই লুক?

এ কেমন প্রশ্ন?মাতলামো করে হাউ ডাজ হি লুক?সোজাভাবে বললাম,

-মাতাল!

মোবাইলটা পকেটে পুরে বুকে হাত গুজে ঠোট টিপে হাসলেন উনি।বললেন,

-তোমার সত্যিই তাই মনে হয়?

এখন তো মনে হচ্ছেই না।তবুও বললাম,

-আজেবাজে জিনিস খেয়ে মাথাটা গেছে আপনার।যান,ম্ মানে গিয়ে ঘুমোন।

উনি আরো বেশি হেসে বললেন,

-জান,আ’ম নট ড্রাংক!পুরোই স্বজ্ঞানে আছি!

অগ্নিচক্ষু করে তাকালাম তার দিকে।এইটা যদি সত্যি হয় তবে আজ উনি শেষ!আরমান চোখ মেরে বললেন,

-এসব খাইনা আমি।তোমার মামাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে খাওয়ানোর কারন যাতে আমার তোমার সাথে রোমান্সের পথটা একটু সহজ হয়।দেখলে না?কি সুন্দর করে জ্বালালাম তোমাকে!ট্রাস্ট মি,ইট ওয়াজ লাইক আ ড্রিম!

রাগ সপ্তম আসমানে উঠে গেলো আমার।কান দিয়ে ধোয়া বেরোচ্ছে যেনো।তারমানে এতোক্ষন উনি নাটক করছিলেন?এভাবে বোকা বানালেন আমাকে?আর আমি?আমিও ওনাকে বিশ্বাস করে নিলাম?উনি ভ্রু নাচিয়ে বললেন,

-কেসা লাগা মেরা এক্টিং?

রাগে আশেপাশে তাকিয়ে শুধু ডাইনিং টেবিলের উপর একটা বড় চামচ খুজে পেলাম।ওইটা হাতে তুলে যেই‌ দৌড় লাগিয়েছি ওনার দিক আরমান হন্তদম্ত হয়ে বলতে লাগলেন,

-বাপরে!হবু বউ খেপেছে।ভাগ আরমান ভাগ।গুড নাইট জান!উম্মা!

কথাগুলো বলে আমার মুখের উপর দরজা লাগিয়ে দিলেন উনি।অল্পের জন্য খাম্বাটার মাথা ফাটানো মিস গেলো আমার।এমনভাবে আজ অবদি কেউ বোকাবনে পাঠায় নি আমাকে।নিজের উপরই রাগ হচ্ছে প্রচুর।কাপতে কাপতে সোফায় এসে বসলাম।গলাটা শুকনো লাগছে।হয়তো রাগেই।সামনে থাকা বোতলটা হাতে নিয়ে কোনোদিক না তাকিয়ে ঢকঢক করে গিলতে লাগলাম।

অফিস থেকে‌ এসে‌ সারাদিন খুব একটা ভালো কাটেনি রিয়ার।অফিসে যা হলো,সেটাকি ঠিক হলো?সারাদিন এই একটা কথাই ভেবেছে ও।মাহির স্যার অনেক ভালোমানুষ,বেশ মিশুক একটা মানুষ।ওকে শুধু ফ্যামিলিতে কে কে আছে এই একটা কথা জিজ্ঞাসা করতেই ওর ওভাবে রিয়্যাক্ট করাটা একদমই ঠিক হয় নি।এসব ভাবতে ভাবতেই দিন কেটে গেছে ওর।ডিনারের জন্য ডাক পরতেই গুটিগুটি পায়ে ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসলো ও।
কবির রহমান বললেন,

-ফাইলটা পেয়েও এতো টেন্সড কেনো তুমি রিয়া?

-ও কিছু না আব্বু।কালদিন পরই তো জয়েন আমার।এ নিয়ে একটু…

-টেনশন করো না।এমনতো নয় তুমি পেটের দায়ে চাকরি করছো!

রিয়ার মনটা খারাপ হয়ে গেলো।ও চেয়েছিলো ওর বাবা বলুক এমনতো নয় তোমার যোগ্যতার অভাবে আর চাকরি জুটবে না,একটা গেলে আরেকটা আসবে।তার পরিবর্তে উনি ইনকামের বিষয়টাকেই বড় দেখলেন।কবির রহমান আবারো বললেন,

-অফিসে আজ মাহবুব বললো কালই নাকি মিথি চিটাগাং থেকে আসছে।কথা হয়েছে তোমার সাথে?

রিয়ার মন নিমিষেই ভালো হয়ে গেলো।সবকিছুর মধ্যে আজ ও ভুলেই গেছিলো পরদিন মিথি আসছে।বললো,

-হ্যাঁ আব্বু।কথা হয়েছে।

রিয়ার আম্মু ওর প্লেটে তরকারি বেড়ে দিয়ে বললো,

-সত্যি আসছে ও কাল?মেয়েটাকে ছাড়া দুটো বাসাই ফাকা ফাকা লাগে।

রিয়া মৃদ্যু হেসে ঘাড় নাড়লো।অনেকসময় ওর মনে হয় মিথি ওর নিজের বোন। আম্মু আব্বুর নিজের মেয়ে।এতোটাই ভালোবাসেন ওকে ওনারা।রিয়া বললো,

-কাল ওর জন্য একটা গিফট কিনতে যাবো।কি বলো আম্মু?

-হুম।চলে যাস।

-চলে যাস মানে?তুমি যাবা না?

-না।আমি গিয়ে কি করবো?

-কি করবা মানে?আমি একা একা যাবো?

-অফিসে তো একাই যাবা তুমি!

-ওটা তো ওয়ার্কপ্লেস।পাব্লিকপ্লেস আর ওয়ার্কপ্লেস এক হলো?

-এতোবড় মেয়ে হয়েছিস এখনো আম্মুর আচল ধরে বাজারে যেতে হবে?তোর এইসব ব্যবহারেই মাঝেমধ্যে ভাবি নাতিনাতনির মুখ না দেখেই অক্কা পেতে হবে আমাদের দুজনকে।

কবির রহমান মুখ খুললেন।বললেন,

-ডাইনিং টেবিলে এতো কথা বলতে নেই এই মিনিমাম কথাটা কয়দিন বোঝাবো তোমাকে রিয়ার আম্মু?

মিসেস রহমান হাত থেকে ঠাস করে ডালের বাটি টেবিলের উপর রাখলেন।বললেন,

-খালি আমার কথাটা শোনোই,বুঝবে কবে তোমরা বাপ মেয়ে?

রিয়া হাসলো।ওর বিয়ে নিয়ে এমন একটা দিন নাই‌ এ বাসায় ওর আব্বু আম্মুর কথা কাটাকাটি হয় না।ওর আম্মু চায় ওর বিয়েটা হয়ে যাক,চাকরি না করে সংসার করুক।তাই পাত্রপক্ষ আসলেই হয়েছে।উনি আদাজল খেয়ে লেগে পরেন রিয়ার মুখ থেকে হ্যাঁ বের করাতে।আর কবির রহমানের ইচ্ছে বিয়ের সিদ্ধান্তটা রিয়া নিজে নিক,সেটা যখন ওর মনে হয়,কিন্তু চাকরিটা করা উনিও ভালোভাবে নেননি ততটা।

মিসেস রহমান আবারো বললেন,

-মেয়ের বিয়েটা কি কপালে নেই আমার?মরে গেলে…

রিয়া ঝাড়া দিয়ে বললো,

-আম্মু?কি শুরু করেছো তখন থেকে?মরা আর বিয়ে!এগুলো ছাড়া আর কথা নাই তোমার?

-আছে।চাকরিটা করিস না।

রিয়া বিরক্তি নিয়ে আবারো খাওয়ায় মন দিলো।কবির রহমান বললেন,

-চাকরি করাটা কি খুব জরুরি?ছাড়ার জন্য জোর করছি না।তবে এতোটা ঝামেলা পোহানোর কি দরকার?

রিয়া চুপচাপ খেতে থাকলো।ওর আব্বুর কথার কাছে নিজের ইচ্ছেটাকে বিসর্জন দেওয়া কোনো ব্যাপার না ওর কাছে।কিন্তু এইবার ওর একটু সময় আর কারন দরকার।

-শোন রিয়া,তোকে চাকরি করতে দেবো।যদি তুই পরের বার পাত্রপক্ষকে হ্যাঁ বলে দিস।

রিয়া থেমে গেলো।ওর মায়ের দিকে তাকালো একপলক।ভালোই আইডিয়া দিয়েছে সে।বড় করে একটা হাসি দিয়ে বললো,

-বেশ।হ্যাঁ বলে দেবো।

কবির রহমান খাওয়া থামিয়ে মেয়ের দিকে তাকালেন।মিসেস রহমান অবাক হয়ে বললেন,

-সত্যি?

-হ্যাঁ।তবে একটা ছোট শর্ত।

-কি?

-কন্ট্রাক্ট ম্যারেজ বোঝো?

-কিসের কন্ট্রাক্ট?

-যাতে লেখা থাকবে বিয়ের পর আমাকে তারা চাকরি করতে দেবে।আর সেটাও ততদিন,যতদিন না আমি নিজ থেকে চাকরি ছাড়ছি।

রিয়া ভাবলেশহীনভাবে কথাটা বলে খাবার খেতে লাগলো।কবির রহমানও একটা শ্বাস নিয়ে আবারো খাওয়ায় মনোযোগী হলেন।মিসেস রহমান কপালে হাত দিয়ে বসে রইলেন দম মেরে।এ অবদি রিয়া বলতো ওর পছন্দ না।তাই এখনো বিয়েটা হয়নি ওর।রিয়ার বাবার যথেষ্ট অর্থসম্পদ আছে,আর একমাত্র মেয়ে বলে ওর চাকরি করার বিষয়টা কোন পাত্রপক্ষ ভালোভাবে নিবে সেটা বরই চিন্তার বিষয়।না জানি এই অযুহাতে তার মেয়ের বিয়ে আরো কতোদিন আটকে থাকে!!!

#চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here