#হৃদয়ের_অনুভূতি
#পর্বঃ০৪
#লেখকঃআয়ান_আহম্মেদ_শুভ
* আয়ান বাইকটা থামিয়ে ছলছল চোখে একটা বিকট চিৎকার করে উঠল। আয়ান দেখতে পেলো রাস্তার এক পাশে তার বাবা পরে আছে। আয়ান মোটেও এমন দৃশ্য দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলো না। আয়ান তার বাবার এমন পরিস্থিতি দেখে নিজেকে সামলাতে পারলো না। আয়ান দৌড়ে চলে আসে তার বাবার কাছে। আয়ানের বাবা অফিস থেকে ফেরার পথে এক্সিডেন্ট করেছে। আয়ানের বাবার গাড়ি থেকে ছিটকে পড়ে যায় আর ওনার গাড়িটা সম্পূর্ন গুড়িয়ে যায়। আয়ান তার বাবার মাথাটা কোলে তুলে নিয়ে বলতে লাগলো……
— বাবা, কি হয়েছে তোমার? এই সব কি করে হলো?……
আয়ানের চিৎকার ও আর্তনাদে পুরো পরিবেশটা ভারি হয়ে গেলো। মিনিট খানেক যেতেই একটা আম্বুলেন্স সেখানে চলে আসে। আয়ান বুঝতে পারছে না যে তার বাবার আসলে কি হয়েছে? আয়ানের বাবার মাথার পিছন দিক থেকে প্রচুর পরিমাণে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। আয়ান ও রাজ মিলে কোনো মতে আয়ানের বাবাকে আম্বুলেন্সে তুললো, এবং রওনা দিলো হসপিটালের উদ্দেশ্যে। আয়ান শুধু কাঁন্না করে যাচ্ছে। “বাবা নামক বড গাছটা জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ?… তা শুধু তারাই বোঝে যাদের বাবা নেই”…..
আয়ান তার বাবাকে নিয়ে চলে আসে হসপিটালে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আয়ানের বাবাকে ও.টি.তে নিয়ে যায়। আয়ান বাহিরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে একটা ভালো খবরের জন্য…………
✒️ নেহা কফি শপ থেকে বেরিয়ে রিক্সায় উঠলো বাসায় যাবে সে। রিক্সা আপন গতিতে এগিয়ে চলেছে। নেহা আনমনে আয়ানের কথা কল্পনা করছে। আচ্ছা, আয়ান যদি আমায় না ভালোবাসতো তা হলে আমাকে নিয়ে কেউ বাজে কথা বললে ওর কেনো কষ্ট হয়?…. আয়ানের দূর্বলতা যদি মেয়েদের প্রতি হয়। তা হলে এতো অপমান করার পরেও কেনো আমার কাছে আসে?….. আয়ানের উদ্দেশ্য যদি মেয়েদের শরীর ভোগ করাই হয়। তবে সে কেনো আমাকে ভোগ করার পরেও পিছনে পরে আছে? সত্যিই মাথা কাজ করছে না আমার। এই ছেলেটা কি চায়?….. ওর বলা প্রতিটি কথার মাঝে কেনো নিঃস্বার্থ ভালোবাসা থাকে? যেখানে আয়ান আমার সম্মান নষ্ট করেছে। ওর প্রতিটা স্পর্শ আমাকে কেনো এখনো ব্যাকুল করে?… আমি কেনো আয়ানের কষ্ট নিজে অনুভব করি?… তবে কি আমি ওকে এখনো ভালোবাসি?… না আর কিছু ভাবা যায় না। আয়ান আমাকে যদি ভালোই বাসতো তবে আমার কষ্টটা বুঝতো। সম্মান নিয়ে খেলতো না কখনো। আমার প্রতি ওর ভালোবাসার নির্মম নির্যাতন আমাকে ভাবিয়ে তোলে বার বার……
* রিক্সা বাসার সামনে চলে এলো। আমি রিক্সা থেকে নেমে বাসায় চলে আসি। রুমে এসে দেখি মা-বাবা বসে আছে সোফায়। হয়তো কোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে তারা। আমি তাদের এড়িয়ে নিজের রুমের দিকে এগোতেই পিছন থেকে মা বলল……
— নেহা, এদিকে আয় কিছু কথা আছে তোর সাথে……
আমি পিছন ফিরে কৌতুহল নিয়ে বললাম…..
— কি কথা মা?…..
— আগে এখানে আয়।
বাধ্য মেয়ের মতো চলে যাই মা এর কাছে। মা আমাকে সরাসরি কোনো দিন কোনো প্রশ্ন করেনি। তবে আজ মা এর চোখে এক অজানা ভয় দেখতে পাচ্ছি আমি। আমি মাকে বললাম……
— হ্যাঁ, বলো……
— আগে বল আমি যা যা জ্বিগাসা করবো তার সত্যি উত্তর দিবি তুই।
— উফফফফ মা এমনিতেই আমার মন খারাপ তার উপর কি সব বলছো? আচ্ছা আমি কি কখনও তোমাদের মিথ্যে বলেছি?…..
— না তা বলিসনি তবে সত্যিই টা এড়িয়ে গিয়েছিস….
— আচ্ছা মা বলো কি বলবে? আমি সত্যিই উত্তর দিবো।
— রিহানের সাথে কি হয়েছে তোর? আর ও কেনো বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে?
— সেটা আমি কি করে বলবো? হয়তো আমাকে পছন্দ হয়নি ওর তাই ভেঙ্গে দিয়েছে…….
আমার কথা শেষ হওয়ার আগেই মা সোফা থেকে উঠে আমার গালে কষিয়ে একটা থাপ্পর মারলো। থাপ্পরের শব্দে পুরো রুমটা কেঁপে উঠল। মা ছলছল চোখে বলতে লাগলো……
— এই দিনটা দেখার জন্য আমরা বেঁচে ছিলাম। আজ তোর জন্য তোর বাবার মান-সম্মান নষ্ট হলো। ছিঃ, একটা নির্লজ্জ মেয়ের মতো তুই কিনা অন্য ছেলেদের……
মাকে থামিয়ে দিলাম আমি…..
— কাকে নির্লজ্জ বলছো মা? আমাকে!… আমার জন্য বাবার মান-সম্মান নষ্ট হয়েছে। এই বিয়েটা হলে সব ঠিক হয়ে যেতো? যে ছেলে বিয়ের আগে আমাকে চায়। আমার সম্মান নষ্ট করতে চায়। আমাকে ভোগ করতে চায়। আমাকে বাজারের মেয়েদের সাথে তুলনা করে। তাকে আমি বিয়ে করবো? এতে করে কি বাবার সম্মান বেড়ে যাবে? এই বিয়ে ভেঙ্গে গেছে বলে বাবার সম্মান চলে গেছে। আচ্ছা মা তোমার মেয়ের কি বিন্দুমাত্র সম্মান নেই? বলো মা!.. এখন চুপ করে আছো কেনো?
মা আমার কথায় থ হয়ে গেলো। বাবা তো মাথা নিচু করে আছে। মা আবারও বলতে লাগলো…..
— আয়ানের সাথে তোর কি সম্পর্ক?….
— আয়ানের সাথে?.. কোনটা শুনলে খুশি হবে? আমি আয়ানকে ভালোবাসি। আর আমি মরে গেলেও হয়তো আয়ানকেই ভালোবেসে যাবো। কেনো জানো মা? ও একটা নির্লজ্জ, খারাপ চরিত্রের মানুষ, ও বড় লোক বাবার বখাটে ছেলে, তবুও ওর চোখে আমি আমার জন্য ভালোবাসা দেখেছি। হ্যাঁ আমিও ওকে ভালোবাসি। আয়ান আমাকে জোর করে পেতে চেয়েছে। আয়ান আমাকে নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে গিয়ে ওর ইচ্ছে পূরণ করতে বাধ্য করেছে। রেপ করেছে আমাকে…….
* নেহার কথাটা শুনে সবাই ভিশন রকম চমকে উঠে। একি বলছে নেহা? নিজের সব কথা নির্ভয়ে প্রকাশ করছে কি করে? নেহার কথা গুলো শুনে নেহার মা দাঁড়ানো অবস্থা থেকে সোফার উপর ধপাস করে বসে পরলো। নেহার কথা গুলো যে তার বুকে গিয়ে আঘাত করেছে তা এড়ানো দায়। নেহা একটু থেমে আবারো বলতে লাগলো……..
— মা আয়ান আমার সাথে যা করেছে তারপর ওকে ভালোবাসি কথাটা হাস্যকর হলেও সত্যি। বিশ্বাস করো মা আমার জায়গায় অন্য যে কেউ হলে আয়ানকে ঘৃণা করতো। আমিও ঘৃণা করি আয়ানকে কিন্তু ওর প্রতি যে পরিমাণে ঘৃণা আমার মনের মধ্যে আছে। তাকে ছাপিয়ে গেছে ওর ভালোবাসা। আমি ধর্ষনের শিকার এটা জানার পর রিহান আমার সুযোগ নিতে চেয়েছে। এই জন্যই আমি নিজে বিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছি।
নেহা আবারও থেমে গেলো। পুরো ঘরটা নিঃশব্দ হয়ে আছে। সকলে নিরব। এই নিরবতা জানান দিচ্ছে নেহার বাবা মাকে মে তার মেয়ে এই সমাজের কাছে এখন শুধু মাত্র অবহেলার পাত্রী। জানান দিচ্ছে এই কথা বাহিরের কারো কাছে প্রকাশ করলে হারাতে হবে তাদের সম্মান। তাদের মেয়ে ধর্ষিতা। এটা শোনার পরে আশে পাশের লোকজন মজা নিতে আসবে। সারা জীবনের জন্য তাদের মেয়েকে এই সমাজে মুখ লুকিয়ে থাকতে হবে। সবাই আঙ্গুল তুলবে তার মেয়ের দিকে। নেহার বাবা কিছু বলার ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না। হয়তো কিছুটা বাধ্য হয়ে উনি বললেন……
— নেহা দেখ মা যা হবার তা তো গেছে। আমরা চাইলেও তা বদলাতে পারবো না। তোর সামনে একটা সুন্দর জীবন আছে। আমরা তোর বাবা মা। সব দিক চিন্তা করে আমরা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তোর আর আয়ানের বিয়ে….
— না বাবা। আমি আয়ানকে ভালোবাসি ঠিক তবে ওকে আর পেতে চাই না।
— কি সব পাগলের মতো বলছিস তুই? আয়ান তোর সাথে যা যা করেছে। তারপর তোকে কে মেনে নিবে?
– আমি কাউকে আর চাই না। নিজের মতো করে বাঁচতে চাই। নিজের একটা পরিচয় তৈরি করতে চাই। আয়ানের সাথে বিয়ে করা মানে ওর জেদ পূরণ করা। আয়ান এটাই চেয়েছে আমি যেনো ওকে বিয়ে করি। আর এই জন্যই এতো বড় একটা কাজ করতে ২বার ভাবে নাই । কিন্তু আমি ওর এই ইচ্ছে পূরণ হতে দিবো না। আমি নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করবো। দেখিয়ে দিবো ওকে ছাড়া আমি অচল না…..
— কিন্তু মা এই সমাজ তোকে নিচু ভাববে। তোকে নিয়ে আজে বাজে কথা বলবে। তাই বলছিলাম……
— হাহাহাহাহা, সমাজ তো পরে আমি তো তোমাদের চোখেই ছোট হয়ে গেছি। আমি আয়ানকে বিয়ে করে নিলে আয়ান ভাববে আমি ওকে মেনে নিয়েছি। বাধ্য হয়ে ওর কাছে গিয়েছি। প্রতিনিয়ত এটাই মেনে নিতে হবে আমায়। এটা প্রমানিত হয়ে যাবে নারীর দূর্বলতা তার শরীরের। না বাবা আমি পারবো না। আমি প্রমান করে দিবো নারীর কোনো দূর্বলতা নেই। আমি প্রমান করে দিবো আয়ান ছাড়াও আমি একা নিজেকে সামলে নিতে পারি। শুধু তোমাদের একটু সাহায্য চাই।
নেহার কথায় ও যুক্তিতে তার বাবা মা খানেকটা বাধ্য হয়ে রাজি হয় নেহার কথা মেনে নিতে। নেহার মা নেহাকে বলে…….
— কি সাহায্য চাস তুই? বল। তোর ইচ্ছে অনুযায়ী সব হবে…..
— আমি এই দেশে থাকতে চাই না। নতুন শহরে নতুন করে বাঁচতে চাই। আয়ানকে ভূলে যেতে চাই। এমন এক শহরে যেতে চাই, যেখানে আয়ানের ছায়াটাও আমাকে ছুঁতে পারবে না।
— ঠিক আছে আমায় কিছু দিন সময় দে আমি ব্যবস্থা করছি।
— না বাবা সময় দেওয়া যাবে না। আমি আর আয়ানের মায়ায় নিজেকে জড়াতে চাই না। ও থাকুক ওর মতো করে অন্য কারো সাথে। আমি না হয় দূর থেকে ওর মঙ্গল কামনা করবো……
✒️ আমি কথাটা শেষ করেই নিজের রুমের চলে আসি। কেনো জানি আজ আয়ানের জন্য ভিশন কষ্ট হচ্ছে। আয়ানকে ছাড়ে চলে যাবো অনেক দূরে। যেখান থেকে আয়ান আর আমাকে খুঁজে পাবে না। আয়ানকে আর কখনও দেখতে পাবো না। এই কথাটা বলা যতটা সহজ মন থেকে মেনে নেয়া ততটাই কঠিন। বুকের ভিতরটা মুচরে উঠছে বার বার। এই ভেবে, কেনো আয়ান তুই অন্য কারোর হয়ে যাবি? কেনো আজ আমি তোকে ভালোবাসার পরেও নিজে থেকে দূরে চলে যেতে চাচ্ছি? একটা বার তুই আমার মতো করে হতে পারলি না কেনো? কেনো তুই আমার হৃদয়টাকে বার বার আঘাত করে রক্তাক্ত করছিস? কেনো আজ ভালোবেসে আমি ভালো নেই?…….
* কথা গুলো বলতে বলতে নেহা কাঁদছে। আর কয়েকটা দিন তারপর ইচ্ছে থাকলেও আর কখনও আয়ানকে দেখা হবে না তার।
✒️ দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরে ও.টি থেকে আয়ানের বাবাকে কেবিনে সিফ্ট করা হলো। আয়ানের মা হসপিটালে এসে কাঁন্না করে যাচ্ছে। আয়ান তার মাকে শান্তনা দিবে কি করে? তা জানে না। অপারেশন শেষে আয়ান ডক্টরের সাথে কথা বলছে…….
— ডক্টর আমার বাবা ঠিক আছে তো?….
— এইভাবে ভেঙ্গে পরেছেন কেনো? উনি একদম ফিট আছে। ভয়ের কোনো কারণ নেই। আসলে উনি সব সময় খুব টেনশনে থাকে। এই জন্য ছোট্ট একটা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। আর উনি যখন ড্রাইভ করছিলেন তখন হওয়াতে এক্সিডেন্ট হয়। আপনি তো তার ছেলে!… ওনার খেয়াল রাখুন।
— জ্বি ধন্যবাদ…..
* ডক্টরের কথায় আয়ান প্রাণ ফিরে পেল। ছলছল চোখ, মলিন মুখে হঠাৎ করেই একটু হাসি উঁকি দিলো। হুম, বাবা ঠিক আছে। আয়ান দৌড়ে চলে যায় তার বাবার কাছে। নিজের জীবনে সব থেকে বেশি যদি আয়ান কাউকে ভালোবাসে তবে সে হলো তার বাবা। আয়ান তার বাবার কাছে যেতেই তার বাবা তাকে বলল………
— এই ফাজিল ছেলে এখানে আয়। এখনও বাচ্চা রয়ে গেলি তুই। কাঁদছিস কেনো?….
বাবাকে জরিয়ে ধরে আয়ান
— বাবা এখন কেমন আছো?…
— আমি ভালো আছি। ঐ আর কি নিজে ড্রাইভ করতে গিয়ে আঘাত লেগেছে….
— তুমি আর কখনও ড্রাইভ করবে না। ড্রাইভার চালাবে। আর তুমি পিছনে বসে অফিসে যাবে।
— হ্যাঁ, তা ঠিক বলেছিস। তবুও আমাকে রিটায়েড দিবি না। এই বিজনেস পেশার আমি আর একা সামলাতে পারছি না। বয়স হয়েছে আমার। এইবার তো আমায় রেহাই দে……
— আগে তুমি ঠিক হয়ে যাও তারপর আমরা দুজন মিলে বিজনেস সামলাবো। ওকে?..
— হুম
✒️ দুদিন পর হাসপাতাল থেকে বাবা ছাড়া হলো বাবাকে। বাবাকে নিয়ে আমি বাড়িতে চলে আসি। বাবা এখন মোটামুটি সুস্থ। বাসায় এসে বাবাকে তাঁর রুমে নিয়ে যাই আমি। বাবা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলে……
— কাল থেকে আমার সাথে অফিসে যাবি তুই।
— কাল থেকে? বাবা আমি তোমার পরিচয়ে না নিজের পরিচয়ে বাঁচতে চাই…
— ভালো কথা। আমার অফিসে চাকরি কর। এম.ডি হয়ে জয়েন কর। আর তোর এমন.ডি হওয়ার সম্পূর্ণ যোগ্যতা আছে।
— ওকে ঠিক আছে কিন্তু…….
— কিন্তু কি?
— না বাবা কিছু না ঐ এমনিই। আচ্ছা আমি এখন আসি।
* আয়ান তাড়াতাড়ি তার বাবার রুম থেকে বেরিয়ে গেলো। আজ মুখ ফসকে নেহার নাম বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়ে ছিলো। তবে আয়ান বলেনি। আয়ান নিজের রুমে এসে ভাবতে লাগলো নেহার কথা……
— কি মেয়ে? দুদিন ধরে আমাকে না দেখে থাকতে পারলো কি করে? একটা কল ও করলো না। কি সেলফিশ মানুষ!… আমিও কত্ত বড় বোকা। এতো কিছু হয়ে যাওয়ার পর নেহা নিজে থেকে আমার খবর নিবে তা কেমন করে আশা করি আমি? সত্যিই আমি ঐ দিন একদম ঠিক করিনি। জেদ চেপে গিয়েছিল আমার। রিহানের সাথে ওকে কখনও মেনে নিবো না আমি। তবে তা করার করে ফেলেছি। আমার বিশ্বাস আছে নেহা একটা সময় আমাকে নিশ্চই ক্ষমা করে দিবে। আমি জানি সে আমায় মুখে যতই না করুক না কেনো!… মন থেকে আমাকে ভালোবাসে। কিন্তু কি জন্য আমাকে অবহেলা করে আমি জানি না……
* আনমনে কথা গুলো বলে আয়ান। নিজের ফোন থেকে নেহার কয়েকটা পিক দেখে সে। তাদের এক সাথে কাটানো মূহুর্তের তোলা কিছু ছবি। আনমনে ছবি গুলো দেখতে দেখতে আয়ান বিরবির করে বলে উঠে……..
— এতো সুন্দরী কেনো তুমি? চাইলেও তোমাকে ভূলে থাকতে পারিনা কেনো? একটু মনটা নরম করে আমাকে ভালোবেসে দেখো। সারাটা জীবন আগলে রাখবো। কিন্তু তুমি তো তুমিই ভালো থাকতে দিবে না আমায়। অভিমানী মেয়ে একটা…..
* ছবি গুলো দেখার পর আয়ান রাজকে কল করলো
— হ্যালো….
— ঐ রাজ কি খবর তোর?…
— এইতো মামা আছি। তোর কি খবর?…
— আমার আর খবর!.. আচ্ছা নেহা কি ভার্সিটিতে রোজ আসে?
— না তো!… গত দুই দিন আমি ওকে দেখি নাই।
— ওহহ, বুঝতে পেরেছি মেম রাগ করে আছে। ওনার বাসায় যেতে হবে।
— কি দরকার আয়ান? থাকতে দেনা ওকে ওর মতো।
— একদমই না। এখন ওর বাসায় যাবো। ওর সাথে কথা বলবো আর ওকে একটা সুসংবাদ দিবো।
— আয়ান এতো অপমান, অবহেলার পরেও কেনো বার বার যাস?
— সেটা তুই বুঝবি না রে…..
* আয়ান ফ্রেশ হয়ে বাইক নিয়ে বেরিয়ে পরে নেহার বাড়ির উদ্দেশ্যে। আয়ান নেহার বাসার সামনে যেতেই ভিশন অবাক হয়ে যায়। আয়ান দেখতে পায় নেহার………………..
#চলবে……………………