🌸#হৃদয়ের_প্রতিশ্রুতি🌸
#লেখিকাঃআদিলা
#পর্বঃ১৯_২০
_________________________🌸
সরু চিকন রাস্তার পাশ ধরে হেটে চলচ্ছে ইয়ামিনা। আর চলার শক্তি টুকু শরীরে নেই। তারপরও ইয়ামিনা হেটেই চলচ্ছে যে করে হোক তাকে দিহানের কাছে যেতে হবে কেন দিহান এমন করলো তার সাথে। কেন দিহান কথা দিয়ে ফিরে আসে নি। সকাল থেকে ইয়ামিনা দাড়িয়ে আছে ও ঝিল পারের শিউলী গাছের নিচে। প্রখর কড়া রোদ ইয়ামিনার মুখে বার বার এসে তার মুখশ্রী চণ্ডি লাল করে তুলেছে৷। তারপর ইয়ামিনা দাঁড়িয়ে আছে এক অন্য অজানা ভয় ইয়ামিনার মনে উকিঝুকি দিচ্ছে।
না দিহান কথা দিয়েছে আসবে।। এসব আমার চিন্তা জানি উনি আসবে!!! আসবে!!!নিজের অশান্ত মনটাকে বারং বার এই বলে শান্তা দিচ্ছে।
কিন্তু দিহানের আসার নাম গন্ধ নেই। সময় নিজের মত করে অতিবাহিত হচ্ছে।।সকাল গড়িয়ে দুপুর হতে চলচ্ছে।। কিন্তু ওইযে ইয়ামিনা দাড়িয়ে আছে এখনো দেহ সঠান করে রেখেছে। চোখ থেকে টপ টপ করে এক দুফোটা পানি গড়িয়ে পরচ্ছে৷
হঠা ফোনের টুং করে শব্দতে ইয়ামিনার ধ্যান ভাঙে।। দিহানজির মেসেজ।খুশি হয়ে মেসেজটা ওপেন করলে পরক্ষনে ইয়ামিনার মুখ কালো অন্ধকারে আছন্ন হয়ে আসে।।।চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা জল ফোনের স্কীনে টপ টপ গড়িয়ে পরচ্ছে।।।
মেসেজে শুধু এতটুকু লিখা ছিল…..
ভালো থেকো তার সাথে যার সাথে বিয়ে হচ্ছে। সে তোমাকে অনেক সুখে রাখবে।আমার থেকেও বেশি।
পারলাম না প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা রক্ষা করতে। আমাকে ক্ষমা করে দিও।।।
_______ইতি
দিহানজি 🌸
ইয়ামিনা আর এক সেকেন্ডও দেরি না করে দিহানের বাসার উদেশ্যে হাটা দেয়।দিহানের বাসার সামনে দাড়িয়ে আছে। দিহানের মা সারা আহমেদ রাগে দাত কটমট করে দু হাত কচলাচ্ছে৷
এই মেয়ে এখানে কেন এসেছো তোমার না কাল বিয়ে আমার ছেলের মাথা তো খেয়ে নিয়েছো এখন কি আমার মাথা খেতে এসেছো। যাও এখান থেকে আর জামেল বাড়িও না।
___ইয়ামিনার গলা যেন ধরে আসচ্ছে কান্নাজড়িত কন্ঠে বলে…. আন্টি আপনি তো আমাদের বিয়েতে রাজি ছিলেন।আপনি সায় দিয়েছেন বলেতো আগামী মাসে বিয়ে করতাম
___সায় না ছাই।এই মেয়ে শোনো তোমাকে আমার কোনো দিনও পছন্দ ছিলনা। আমার ছেলের গলায় ঝুলে পড়েছো বলে আমার ছেলে মাথা খেয়ে খেয়ে আমাকে হ্যা করিয়েছে।
ইয়ামিনা অনবরত কেদেই চলচ্ছে। আন্টি প্লিজ একবার দিহানকে ডাকুন আমার ওর সাথে কথা বলার খুব প্রয়োজন।
কেন রে আবার আমার ছেলের মাথা খাবি। এখনি বের হো ওর সাথে কোনো দিনও যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করবি না।সারা আহমেদ ইয়ামিনাকে যা না তাই বলে কথা শুনিয়ে চলচ্ছে। ইয়ামিনা আর না পেরে চিৎকার করে দিহানকে ডাকে কিন্তু দিহান নামচ্ছে না। ইয়ামিনার আর্তনাদ দেখে দিহানের বুক ফেটে যাচ্ছে কিন্ত কোন মুখ নিয়ে ইয়ামিনার সামনে যাবে সে যে তার মার কাছে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।দিহান বুকে হাত দিয়ে রেখেছে চোখ দিয়ে অবাধ্য কিছু জল আজ না চাইতেও গড়িয়ে পরছে৷
শেষমেশ দিহান না পেরে নেমে আসে। ইয়ামিনা মুখের দিকে তাকানোর সাধ্যটুকু তার নেই সে অপরাধী।ইয়ামিনা দৌড়ে দিহানের সামনে দাড়ায়।
আন্টি এসব কি বলচ্ছে?সব কিছুই তো ঠিক ছিল কেন এমন করচ্ছেন বলেন না।আমি সব কিছু ছেড়েছুরে আপনার কাছে চলে এসেছি শুধু আপনার সাথে থাকবো বলে। চলেন না আমরা দুরে কোথাও চলে যায় যেখানে কোনো বাধা বিপত্তি থাকবে না।
দিহানের দৃষ্টি এখনও নিচের দিকে… নিচে তাকিয়ে বলে.. মা যা বলচ্ছে সব সত্যি। তুমি আর কখনও এখানে এসো না বিয়ে করে নাও।
ইয়ামিনা চিৎকার দিয়ে দিহানের কাধ ঝাকিয়ে বলে… কি বলচ্ছেন কি।লজ্জা করে না এসব বলতে কোন মুখে এসব বলছেন। ইয়ামিনা নিজেকে যথা সম্ভব শান্ত করে কাতর গলায় বলে… আমি অন্য কারো বউ হলে অন্য কারো সংসার করলে সেটা আপনি দেখতে পারবেন।বলচ্ছেন না কেন বলেন খুশি হবেন আপনি। বলেন!!!
____বিয়ে করে নাও ইয়ু। তোমাকে সুখে রাখবে আমার থেকেও বেশি। কোনো কিছুর অভাব হবে না৷
____বিয়ে বিয়ে বিয়েএএএএএএ বিয়ে মাই ফুট। আমি শুধু হ্যা আর না জানতে চেয়েছি। বলুন আপনি দেখতে পারবেন….
____দিহান লম্বা শ্বাস টেনে চোখ বন্ধ করে বলে “হ্যা”আর এটাতে আমি সবথেকে খুশি হবো।
দিহানের বাহু থেকে ইয়ামিনার হাত আলগা হয়ে আসে। চোখ জোড়া লাল অশ্রুসিক্তে ভেজা।আমি বিয়ে করলে খুশি হবেন তাই না। ইয়ামিনা দিহানের কলার ধরে টেনে বলে…ঘৃণা হচ্ছে আপনার এই চেহারা দেখে। কখন এই মুখ আমার সামনে নিয়ে আসবেন না।। ইয়ামিনার হাতে আংটি টা খুলে দিহানে কাছে ছুড়ে মারে।
খুশি থাকবো অনেক খুশি থাকবো। একদিন এই আপনি আমার খুশি দেখে জ্বলবেন। বলে ইয়ামিনা বের হয়ে আসে।
নিয়তিতে আজ আমিরের সাথে ইয়ামিনার বিয়ে সম্পুর্ন হয়। লোকটাকে কোনো দিন দেখেও নি তবে নাম অনেক শুনেছিল৷ বিয়ের প্রথম দিন ইয়ামিনা তাকে দেখতে পায় হুইল চেয়ারে…
বর্তমান…….🌸
ছোট খাটো একটা কপি শপ। সেখানে ইয়ামিনা চোখ বন্ধ করে হাত ঘুটিয়ে বসে আছে। আর কিছুটা সামনে চেয়ারে বসে আছে তার অতীত দিহানজি।ইয়ামিনাকে তখন ফোনে দিহান এখানে আসতে বলেছিল৷ ইয়ামিনা আসতে চায়নি তার মুখ দেখারো ইচ্ছা তার নেই।কিন্তু কেন জানি দিহানের কথা ফেলতে পারে নি দিহান এত করে বলচ্ছে তাই হ্যা বলে দিয়েছে৷
ইয়মিনার অস্বস্তি লাগচ্ছে খুব বেশি অস্বস্তি লাগছে। সব থেকে বেশি লাগচ্ছে দিহানের চাহনি। ওই যে ইয়ামিনা কপি শপে এসেছে তখন থেকে এক নজরে তাকিয়ে আছে। পলক ফেলতে ভুলে গেছে। ইয়ামিনাকে দেখেই চোখের সব তৃষ্ণা মিটাচ্ছে।।।
ইয়ামিনা বার বার চোখ এদিক ওদিক করচ্ছে। তখন ধরে বসে আছে কিন্তু কেউ কোনো কথাই বলচ্ছে না।
____খুব সুখে আছো তাই না?
ইয়ামিনা তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলে… সেটাই তো চেয়েছিলেন।
মিথ্যে যখন বলতে পারো না তো কেন বলছো তোমার চোখ মুখ বলে দিচ্ছে তুমি সুখে আছো কি খারাপ।।
সুখে আছি কি খারাপ সেটা আমার আর আমার হাসবেন্ডের ম্যাটার আপনি না পরলে ভালো হবে। কি জন্য ডেকেছেন সেটা বলেন?
আগে তো সারাদিন অপেক্ষায় থাকতে তোমার দিহানজির। কেন এখন আর আমার প্রতি ভালোবাসা কাজ করে না তোমার। নাকি তোমার ওই সো কল্ড বরের উপর ভালোবাসা জেগেছে। শুনেছি পা বলে ঠিক হয়ে গেছে।
শুনুন ওই নাম আর মুখে আনবেন না ওটা আমি অনেক আগে মাটি চাপা দিয়ে দিয়েছে। আর আপনি আমাকে এসব বলতে এখানে ডেকেছেন।আপনার এসব চিপ কথা শুনার বিন্দু মাএ ইচ্ছে নেই।আর নেক্সট টাইম আমার বরের নামে এসব কথা টলারেট করবোনা। আপনি আমার খারাপ রুপ দেখতে বাধ্য হবেন।।
ইয়ুমনি শুনো বলেই দিহান ইয়ামিনার হাতটা ধরতে যাবে তার আগে পাশ থেকে বিকট একটা শব্দ হয়। শব্দ শুনে ইয়ামিনা আতকে উঠে কানে হাত দিয়ে পাশে তাকাতে ইয়ামিনা রীতিমতো কাপাকাপি শুরু করে দেয়।
লাল লাল একজোড়া চোখ রক্তীম ভাবে ইয়ামিনা আর দিহানের দিকে চেয়ে আছে। চুল গুলো এলোমেলো। ফরমাল লুকে দেখে বুঝা যাচ্ছে সোজা অফিস থেকে এসেছে।। পাশে চেয়ারটা ভেঙে চার খন্ড হয়ে আছে।ইয়ামিনা এইভাবে আমিরকে দেখে ভয় পেয়ে গেছে।
আমির ইয়ামিনার কব্জি শক্ত করে ধরে টেনে উঠায়।। ইয়ামিনার দিকে এমন ভাবে তাকিয়ে আছে যেন চাহনিতে ইয়ামিনার মাডার করে দিবে। ইয়ামিনা হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে আমির। দিহান কিছু বলতে যাবে তার আগে আমির পিছন ফিরে আঙুল উঠিয়ে বলে….খবরদার আমার আর আমার বউয়ের মাঝে আসার চেষ্টা করেছো তো আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। ফারদার যেন আমি না দেখি আমার বউয়ের পিছনে লাগতে।
বলে আমির ইয়ামিনার হাত শক্ত করে ধরে গট গট করে সেখান থেকে চলে যায়৷৷
.
.
.
.
পর্বঃ২০🌸
______________________🌸
আমির ইয়ামিনাকে রুমে এনে সামনে ছুড়ে মারে৷।। আশে পাশে যা আছে সব ফ্লোরে ছুড়ে মারচ্ছে।বুক সেল্ফের যত বই আছে সব কিছু ছুড়ে মারচ্ছে ফ্লোরে আমির। কষ্ট হচ্ছে খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে। দিহানের সাথে ইয়ামিনাকে দেখে। ইয়ামিনা আমিরের এমন রাগ এর আগে কখনো দেখে নি। কোনো রকম ভাবে দাড়িয়ে আছে ইয়ামিনা। কিছুতেই আমিরের সামনে যেতে পারচ্ছে৷ আমির সব এক এক করে ফ্লোরে ছুড়ে ফেলছে।
ইয়ামিনা কাপা কাপা কন্ঠে বলে…প্লিজ আ..আ..পনি শান্ত হোন। আমার কথাটা শুনুন।
সাহস কিভাবে হয় ওই দিহানের তোমাকে ওই চোখ দিয়ে দেখার। তোমার সাথে কথা বলার। ওই দিহানকে আমি খুন করে ছাড়বো আমার বউয়ের দিকে নজর দেওয়া ও কে বলে আমির হাতের কাছে ডেস্কের জিনিসগুলো সব ছুরে মারে।। আমির রাগে ফুসচ্ছে কিছুতেই রাগ শান্ত হচ্ছে। জোরে জোরে চিৎকার করচ্ছে কিছুতেই এই অশান্ত মনটা শান্ত হচ্ছে না।।
ইয়ামিনা স্তব্ধ হয়ে আছে আমিরের আচরণে। এমন কেন করচ্ছে উনি তো আমাকে ভালোবাসে না। ইয়ামিনার চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে৷
প..প..প্লিজ আমাকে কিছু বল……হঠাৎ কিছু একটা ইয়ামিনার হাতের সাথে লেগে ইয়ামিনার হাত কেটে যায়। ইয়ামিনা ব্যাথায় আহহহ করে সাথে সাথে হাত নিজের কাছে গুটিয়ে নেয়।
আমির ইয়ামিমার দিকে তাকাতে দেখে ইয়ামিনার হাত কেটে সেখান থেকে অনেকক্ষানি রক্ত ঝরচ্ছে। আমির দৌড়ে ইয়ামিনার কাছে যায়। ইয়ামিনার হাতটা নিজের কাছে নিয়ে অস্থির হয়ে বলে…
স.স.স্যরি মিষ্টি পাখি আমি তোমাকে হার্ট করতে চায় নি। আমি বুঝতে পারিনি তোমার গায়ে লাগবে। তোমাকে হার্ট করার কথা আমি কল্পনায় আনতে পারি না। খুব বেশি ব্যাথা করচ্ছে। আমি খুব বেশি ব্যথা দিয়ে ফেলেছি।বিশ্বাস করো আমি এমনটা করতে চায় নি।
ইয়ামিনা এক দৃষ্টিতে আমিরের দিকে তাকিয়ে আছে৷ চোখের কোনে জল
বলনা খুব বেশি ব্যাথা করচ্ছে। আমির ইয়ামিনাকে টেনে খাটে বসিয়ে দেয়৷অস্থির হয়ে দৌড়ে ফাস্ট এড বক্স নিয়ে আসে। ইয়ামিনার মনে হচ্ছে ব্যাথা আমির পেয়েছে এমন রিয়েক্ট করছে।
আমির ইয়ামিনার সামনে হাটুগেরে বসে হাতে যত্ন করে বেন্ডিজ করে দেয়।।বেন্ডিজে মনোযোগ দিয়ে নরম গলায় বলে.. ব্যাথা লাগচ্ছে খুব মিষ্টি পাখি।
আমির ইয়ামিয়ানার বেন্ডিজ করা হাতে পাগলের মত ছোট ছোট করে অজস্র চুমু দিচ্ছে৷ সরি মিষ্টিপাখি তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য।
ইয়ামিনার হতভাগ হয়ে আমিরের দিকে চেয়ে আছে…মুখের বুলি ওষ্টধরে আটকে গেছে।
আমির দুহাত দিয়ে ইয়ামিনার মুখ আজলে ধরে… ইয়ামিনার চোখে চোখ রেখে কাতর গলায় বলে… সেদিন ইশিতা এসেছিল ওর স্বার্থে জন্য। আবার স্বার্থ শেষ হলে চলে যাবে।ও কোনো দিনও আমাকে ভালো বাসে নি।।ভালোবাসা কি বুঝতাম না জানতাম না ওর সাথে থেকে কোনো দিন ভালোবাসাটা ফিল করি নি। ইশিতা ছোট ছোট কাপর পরে আমার সামনে আসত ওর দিকে সবাই তাকিয়ে থাকলে আমার জেলাস বোধটা কাজ করত না।কিন্তু বিশ্বাস করো তোমার দিকে কেউ একটু চোখ তুলে তাকালে আমার মাথা গরম হয়ে যায় আসে পাশের কিছুই খেয়াল থাকেনা।সেদিন তুমি আমার চোখ খুলে দিয়েছিল আমি এতদিন ভুল মানুষের হাত ধরে পথ আগাচ্ছিলাম। সামনে থেকেও ভালোবাসার মানুষটাকে চিনতে পারিনি। সেদিনে বুঝে গিয়েছিলাম ইশিতার আমার উপর কোনো ভালোবাসা ছিল না আমার ইশিতার উপর কোনো ভালোবাসা ছিল।শুধু একটা মোহ কাজ করতো।
আমির একটু থেমে নরম শান্ত গলায় বলে…
ভালোবাসি অনেক ভালোবাসি। কতটা ভালোবাসি সেটা আমি পরিমাপ করতে পারবো না।আমি ঘুমোতে পারিনা রাতে তোমাকে বুকে না নিয়ে ঘুমালে আমার ঘুম হয়না। বিশ্বাস করো প্রতি রাতে আমি জেগে থাকি চোখ বন্ধ করে কখন তুমি ঘুমাবে আর কখন তোমাকে আমার বুকের মাঝে নিয়ে আসবো।তোমার গায়ে স্মলটা আমাকে আরও পাগল করে দেয়। এই স্মেলটা আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। জানো আমি ইচ্ছে করে আমার কাপড় এলোমেলো করে রাখি কারন তুমি কাপড় গুলো ভাজ করলে সেখানে তোমার স্পর্শ থাকবে। তোমার প্রতিটা কাজকে আমি নিজের করে নিয়েছি।
আমার চোখের দিকে তাকিয়ে দেখ। শুনেছি মানুষের চোখ কখনও মিথ্যে বলে না আমার চোখে কি তোমার জন্য ভালোবাসা দেখোনা। আমি কিছুর ভাগ দিতে পারলে তোমার ভাগ কাউকে দিতে পারবো না। কাউকে না। এই তুমিটা যে আমার পাজরে বসবাস করে কিভাবে অন্য কাউকে দিয়ে দিবো।তোমার উপর তো শুধু আমার অধিকার।। তোমাকে দেখার, তোমাকে ধরার তোমার সব কিছুতেই শুধুই আমার অধিকার। আর ওই দিহান কিভাবে তোমার দিকে চেয়েছিল বলে আমির মুখটা অন্য পাশ করে চোখ বন্ধ করে নেয়।
ইয়ামিনার চোখ দিয়ে পানি পরচ্ছে তবে সেটা খুশির আমির তাকে ভালোবাসে। একটু নয় অনেক বেশি।
আমির মুখ ঘুরিয়ে এনে ইয়ামিনার কপালের সাথে নিজের কপাল চেপে ধরে…. আমি পুরোটাই তোমার। তোমার কাছে এই আমার আমিটাকে দিলাম। তোমার মত করে গড়ে নাও। পারবেনা নিতে নিজের করে।। ইয়ামিনার গালদুটো আরও আকরে নিজের কাছে নিয়ে আসে তৃষ্ণার্থ গলায় বলে… একবার বলবে ভালোবাসি। তোমার ভালোবাসা পাওয়ার জন্য আমি মরিয়া হয়ে আছি তুমি কি সেটা বুঝোনা। শুধু একবার বলো…. আমি শুনতে চায়।
ইয়ামিনা তখন ধরে কেদেই চলচ্ছে। এটাই তার কাছে অনেক বড় প্রাপ্তি। এটাই তো চেয়েছিল ইয়ামিনা। ইয়ামিনা আমিরের হাতের ওপর হাত রেখে কিছু বলতে নিবে……হঠাৎ জাফরা ভাবির চিৎকারের শোনা যায়।। আমির ইয়ামিনার দিকে তাকিয়ে দৌড়ে জাফরা ভাবির রুমে যায় ইয়ামিনা পিছে পিছে ছুটে যায়….
–
–
–
–
সবে মাএ ড.আবির চেক আপ করে গেছেন। জাফরাকে ঘুমের ওষুধ দিয়েছে।জাফরা ভাবি ঘুমাচ্ছে।আর এই সময়ে বেশি সতর্ক থাকতে বলেছে।আরুশি ভার্সিটি থেকে সবে মাএ এসেছে।। জাবির ভয় পেয়ে গিয়েছিল জাফরা কথা শুনে কোনো রকম অফিস থেকে বাসায় চলে আসে।জাবির বসে আছে জাফরার পাশে। আমির ইয়ামিনা আরুশি এতক্ষন রুমে ছিল।। জাবির বাদে সবাই রুম থেকে বের হয়ে আসে।
ইয়ামিনা বারান্দায় গ্রিল ধরে দাড়িয়ে আছে।। হিমেল ঠান্ডা বাতাস ইয়ামিনাকে বার বার ছুয়ে দিচ্ছে। এক অন্য রকম ভালো কাজ করচ্ছে। সেটা যে আমিরের ভালোবাসা তা ইয়ামিনা ভালো করে বুঝচ্ছে৷ আমিরের মুখ থেকে ভালোবাসা কথা শোনার পর থেকে অন্য রকম ভয়ংকর অনুভুতি কাজ করচ্ছে৷ অবশেষে এই মানুষটা শুধু তার। কোনো তয় পক্ষ আসবে না আমাদের মাঝে। এই মানুষটাই তো আসতে দিবেনা । ভেবে ইয়ামিনা মুচকি হাসে। গাল গুলো লাল হয়ে গেছে।।
.
.
.
.