হৃদয়ের প্রতিশ্রুতি পর্ব ২৪

🌸#হৃদয়ের_প্রতিশ্রুতি🌸

#লেখিকাঃআদিলা
#পর্বঃ২৪
______________________🌸
~♪Seene Se Tere Sar Ko Laga Ke~
🍁Sunti Main Rahoon Naam Apna♪🍁

বৃষ্টি থেমে গেছে অনেক আগে। হিম ধরা ঠান্ডা বাতাস এখনো পুরো রুম জুরে প্রবাহমান।আকাশ কালো অন্ধকারে ঢাকা এখনো আলোর আভা ফুটে ওঠে নি।সাদা চাদর সারা শরীরে মুড়িয়ে অন্যপাশ ফিরে শুয়ে আছে ইয়ামিনা। আমির মাথায় এক হাতে ভোর দিয়ে ইয়ামিনার দিকে তাকিয়ে আছে।ঘুমন্ত ইয়ামিনাকে আরও মায়াবি লাগছে আমিরের কাছে আমির যেন চোখই সড়াতে পারচ্ছে না। প্রতিটা নিশ্বাস যেন আমির গুনচ্ছে। আমির ইয়ামিনার দিকে একটু ঝুকে মুখ কানে কাছে নিয়ে নরম গলায় বলে…
_______গুড মর্নিং মিষ্টিপাখি৷

ইয়ামিনা ঘুমের মধ্যে উমম বলে আমিরের দিকে ফিরে আমিরের বুকে মুখ লুকায় আমিরকে জড়িয়ে ধরে। আমির কিছুটা হেসে ইয়ামিনার নাক টেনে দেয়।আমির ইয়ামিনার এলোমেলো চুলোগুলো ঠিক করে পরম যত্নে কানে গুজে দেয়। বার বার বাতাসে চুল আমিরের মুখে এসে পড়ছে। আমিরের যেন নেশা ধরে গেছে এক অন্য রকম নেশা এই নেশাতে সে সারাটাজীবন অভ্যস্ত হতে চায়। আমির ইয়ামিনার নরম ছোট হাতটা নিজের আঙুলের ভাজে নিয়ে নেয়। ইয়ামিনার হাতের পিটে ছোট ছোট করে চুমু দিচ্ছে আর বার বার ইয়ামিনার হাতের দিকে তাকাচ্ছে। ইয়ামিনার হাত গুলো একদম ছোট বাচ্চাদের মত আমিরের হাত থেকে অনেক ছোট ভেবে আমির কিছুটা হেসে দেয়। ইয়ামিনা আমিরের গায়ে হাত পা ছড়িয়ে বুকে মাথা দিয়ে ঘুমিয়ে আছে আরামসে। আমির ইয়ামিনার মাথায় হাত বুলিয়ে ছোট চুমু দিয়ে আদুরি গলায় বলে……

_____মিষ্টিপাখি আজ কি সারাদিন আমার বুকে মাথা রেখে পার করে দিবে ভার্সিটি যাবে না। উঠো
_____উমমম!!
_____কি উমম উঠো মিষ্টিপাখি ফ্রেশ হবে আসো।
ইয়ামিনা ঘুম ঘুম চোখে আমিরের বুক থেকে মাথা তুলে বিরক্ত নিয়ে আমিরের দিকে তাকায়…. সারারাত ঘুমোতে পারি নি আপনার জ্বালায়।আজ ভার্সিটি যাবো না ঘুমাবো আমি বলে ইয়ামিনা আবার আমিরকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।আমিরও ইয়ামিনাকে নিজের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে নেয়।।।


হঠাৎ ফোনে মেসেজের টাং শব্দে ইয়ামিনার ঘুম কিছুটা হাল্কা হয়ে আসে ঘুম ঘুম চোখে ইয়ামিনা বিছানার পাশে হাত রেখে আমিরকে খুজচ্ছে কিন্তু না আমির কোথাও নেই। ইয়ামিনা আরমোড়া দিয়ে হাল্কা উঠে বসে। ওয়াশরুমে পানির শব্দে ইয়ামিনা বুঝতে পারে আমির শাওয়ার নিচ্ছে।। কালকের কথা চিন্তা করে ইয়ামিনা লজ্জায় একদম নুয়ে পড়চ্ছে। কখনও ভাবেনি আমিরের এতটা ভালোবাসা সে পাবে।ইয়ামিনা এ বাসায় এসে ধরে নিয়েছিল শুধু দায়িত্ব বোধের সে এ বাসায় আছে। কিন্তু এখন সব কিছু পরিপূর্ণ লাগচ্ছে।।আমির এখন শুধু তার ভেবেই ইয়ামিনা মুচকি হাসচ্ছে।ইয়ামিনা ফোনটা হাতে নিয়ে দেখে ভোর পাঁচটা বাজে। মেসেজটা অন করতে ইয়ামিনার মুখটা যেন মলিন হয়ে যায় মনের অজান্তে চোখ দিয়ে কয়েক ফোটা জল গড়িয়ে পড়ে।।নাম্বারটা চিনতে ইয়ামিনার একটুকু কষ্ট হয়নি কারন আমিরের ফোনে এর আগেও দেখে ছিল। ইশিতার নাম্বার।।

আমির শাওয়ার সেড়ে মাএ বেরিয়েছে। আমিরকে আসতে দেখে ইয়ামিনা হাতের উল্টো পিট দিয়ে চোখ মুছে নেয়।আমির তোয়ালে দিয়ে চুল মুছতে মুছতে ইয়ামিনার সামনে এসে দাড়ায় আমির একটা মুচকি হাসি দিয়ে বলে….
____কি মিষ্টিপাখি ঘুম ভাঙলো শেষমেষ।উঠো ফ্রেশ হয়ে আসো নামাজ পড়বে।
আমির ইয়ামিনার কপালে চুমু দিয়ে পাশে বসে৷ ইয়ামিনার মুখটা দুহাত দিয়ে আকড়ে মুখের কাছে নিয়ে আসে… সামনে আসা ছোট ছোট চুল গুলো ফু দিয়ে সড়িয়ে দেয়। ঘুমালে তোমাকে পুরো ঘুমপরি লাগে৷ ওই ঘুম পড়ি থেকে চোখ সরাতে বড় দায় হয়ে পড়ে আমার ঘুম পড়ি বলে আমির ইয়ামিনার ঠোঁটে ঠোট ছোয়াতে নিলে ইয়ামিনা মুখটা অন্য পাশ করে নেয়…আমির হাল্কা ব্রু কুচকে নিয়ে বলে…
____কি হলো
____ আ..আ….আজান দিয়েছে লেট হয়ে যাচ্ছে নামাজ পড়তে হবে বলেই ইয়ামিনা চাদর মুড়িয়ে ধরফরিয়ে উঠে ওয়াশরুমে ঢুকে পড়ে। এক সেকেন্ডের জন্য আমিরের কাছে থাকতে চাচ্ছে না। আমির কিছুটা অবাক হয়।।




ইয়ামিনা সকালে যে রান্না ঘরে ডুকেছে বের হওয়ার নামই নেই।আজ ইয়ামিনা ভার্সিটি যায় নি ভালোলাগছিলো না চোখের সামনে শুধু ইশিতার মেসেজটি ভাসচ্ছে আর ওই ছবি গুলো।।ইয়ামিনা যায়নি বলে আমিরও আজ অফিসে যাওয়া বাদ দিয়েছে শুধু তার মিষ্টিপাখির সাথে একান্ত সময় কাটবে বলে কিন্তু সে আশা নিরাশ ইয়ামিনা তার সামনে ধরা দিলে তো ওই যে রুম থেকে বের হয়েছে আসার নামগন্ধই নেই।।

_____ভাবি তুমি এসময়ে রান্না ঘরে আর এত সকাল গোছল করেছো যে।
আরুশি কন্ঠ পেয়ে ইয়ামিনা পিছন ফিরে তাকায়।ইয়ামিনা একটা মলিন হাসি দিয়ে বলে…
_____আরু তুমি এখানে কিছু লাগবে আমাকে বলতে।

___জগে পানি শেষ হয়ে গিয়েছিল তা নিতে এসেছিলাম কিন্তু ভাবি তুমি আবার এই শীতে এত সক্কাল সক্কাল গছল করেছো ব্যাপার কি বলোতো।

___এমনি শরীরটা ভালো লাগছিলো না তাই তুমি দাও জগটা আমি পানি ভরে দিচ্ছি।
____না না ভাবি আমি পারবো করে নিতে।তোমার কোনো হেল্প লাগবে কিনা সেটা বলো। তখন ধরে এত কিছু রান্না করছো কে খাবে এত খাবার।
____এমনি ইচ্ছে হলো রান্না করলাম। আরু তুমি ভাবি আর ভাইয়াকে ডেকে দাও। আমি ড্রাইং টেবিলে খাবার সার্ভ করছি।
আচ্ছা ভাবি বলে আরুশি চলে যায়।



এদিকে আমিরের অবস্থা বেহাল। প্রচন্ড রাগ লাগছে। এখন রাগের সাথে অভিমানও জমা হয়েছে কখন ধরে ইয়ামিনার জন্য বসে আছে কিন্তু না আসছে না।আমির বুঝতে পারছে না ইয়ামিনা এমন কেন করছে। ইয়ামিনাকে অনেক বার ডেকেছে কিন্তু ইয়ামিনা আসে নি। আমির না পেরে রুম থেকে বের হয়।
এদিকে জাফরা ভাবি জাবির আরুশি কেউ ড্রাইং টেবিলে আসে নি এখনও। ইয়ামিনা সব গোছগাছ করে খাবার সার্ভ করছে। আমির ইয়ামিনার পিছনে এসে দাড়ায় গম্ভীর কন্ঠে বলে.. আমার খাবার রুমে নিয়ে আসো রুমে খাবো।। কাম ফাস্ট!!
বলে আমির গট গট করে রুমে চলে যায়৷ ইয়ামিনার এমনই কিছু একটা আভাস পেয়েছিল। এখন জানে রুমে গেলে কি হবে…
.
.
.
.
চলবে….🌸

গল্প কেমন হচ্ছে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন নাহলে বুঝবো কি করে গল্প ভালো হচ্ছে নাকি খারাপ। নেক্সট নাইস না বলে কিছু গঠনমুকল কমেন্ট করুন এতে লেখার উৎসাহ বাড়বে।

হেপি রিডিং🙂

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here