হৃদয়ের সম্পর্ক পর্ব ৫

#হৃদয়ের_সম্পর্ক (পর্ব ০৫)
#গল্পের_পাখি (শেফা)
·
·
·
শেষ রাতে আমিও ওখানে আধ শোয়া হয়ে ঘুমিয়ে পরলাম। ঘুমের মাঝেই মনে হলো কারোর গরম নিঃশ্বাস আমার মুখের উপর পরছে। এতো ঘুম লাগছে যে চোখ দুটোও জোর করে খুলতে পারছি না। আর চোখ খুলে দেখতেও ইচ্ছা করছে না। নিজের মতো করে আয়াতকে কোলের মধ্যে টেনে নিয়ে আরোও আরাম করে শুয়ে পরলাম। আর তার গরম নিঃশ্বাস আমার উপর পরতেই থাকলো। পরুকগ্গা, আমি ঘুমাবো।
.
সকাল সাত টার দিকে ঘুম থেকে উঠলাম। আয়াতের জ্বর এখন অনেকটা কম। কিন্তু বিছানায় আরিয়ানকে দেখলাম না। দরজা যেমন খোলা ছিল তেমনই আছে। ফ্রেশ হয়ে আম্মুর কাছে শুনলাম ভোরের কিছুক্ষন পরে আরিয়ান চলে গেছে। আয়াতকে ঘুম থেকে তুলে ফ্রেশ করে নাস্তা খাওয়ায়ে ওষুধ খাওয়ালাম। আমার কোলে বসে বুকে মাথা রেখে চুপ করে শুয়ে আছে। কিছুই বলছে না। মুখটা একদম মলিন হয়ে আছে। ওর হয়তো খুব মাথা ব্যাথা করছে। লাল চা করে এনে চামচে করে খাওয়াতে লাগলাম। ওকে এতো কষ্ট পেতে দেখে আমার খুব কান্না পাচ্ছে। ওর বদলে এই অসুস্থতা আল্লাহ্ আমায় দিতে পারলো না !
.
গাড়ির হর্ণের আওয়াজে বাইরে তাকিয়ে দেখলাম আরিয়ান তার পুলিশ ইউনিফর্ম পরে আসছে। ভেতরে এসে বললো, “পাখি তোমার কাপড় চোপড় গুছিয়ে নাও। আয়াত যতদিন না সুস্থ হচ্ছে ততদিন আমার তুমি আমার বাড়িতে থাকবে।” কথাটা শুনে আহাম্মক হয়ে গেলাম। আর আম্মু তো ওকে এভাবে দেখে খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেল। সে আমার আম্মুর দিকে তাকিয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে বললো,

—আন্টি আমি পাখিকে নিয়ে যাচ্ছি । এতে কি আপনার আপত্তি আছে ?

—না বাবা আমার কোনো আপত্তি নাই। আর তাছাড়া আয়াত আমার নাতির মতো। ওর এই অবস্থায় পাখির উচিৎ ওর কাছে থেকে ওকে সুস্থ করে তোলা।

—অনেক ধন্যবাদ।
.
আমার দিকে তাকিয়ে আরিয়ান ধমক দিয়ে বললো “কি হলো দাড়িয়ে আছো কেন ? আমাকে ডিউটিতে যেতে হবে। মা ফোন দিয়ে মাথা খারাপ করে দিচ্ছে। তোমাকে নিয়ে জলদি যেতে বলছে। হ্যারি আপ পাখি।”
আমার আম্মুও জলদি করে তৈরী হতে বলছে।
.
আশ্চর্য,,,, আমার আম্মুর অনুমতি নিলো। আর আমাকে একবার জিজ্ঞেসও করলো না। উল্টো ধমকাচ্ছে। আমার উপর যেন আমার কোনো অধিকারই নেই। যাকে একদম বিশ্ব কবির ভাষায় বলে “অনধিকারচর্চা”
.
.
আরিয়ানদের বাড়িতে পৌঁছে গাড়ি থেকে নেমে আরিয়ান আমার ল্যাগেজ হাতে নিয়ে আর আমি আয়াতকে কোলে নিয়ে বাড়িতে ঢুকলাম। ঢুকেই দেখলাম কালকে পার্কের সোনালী চুলের ওই মেয়েটা আর একটা মহিলা, ফাহমিদা আন্টির সাথে রেগে রেগে কি নিয়ে জানি তর্ক করছে। মেয়েটাকে দেখেই আরিয়ান রেগে লাল হয়ে গেল। কাল বিকালের থেকেও ভয়ংকর দেখাচ্ছে ওকে। দৌড়ে ফাহমিদা আন্টির সামনে গিয়ে চিল্লাইয়ে বললো,
— ওরা আমার বাড়িতে কিসের জন্য পা রেখেছে মা ?
আন্টি কিছু বলার আগেই মেয়েটা তেড়ে এসে আরিয়ানকে বললো,
— আমি দেখতে এসেছি আমার ছেলে ওর সৎ মায়ের কাছে ঠিক কতটা ভালো আছে ?
— আল্লাহর রহমতে আমরা অনেক ভালো আর সুখে আছি। আমাদের জন্য তোমার কোনে চিন্তা করতে হবে না। আর আমার ছেলেকে নিয়ে তো একদম না। (আগের মতোই রেগে)
— সেই টা না হয় তোমার বউ এর সাথেই বুুঝে নেয়।
— সার্ট আপ, এন্ড গেট লস্ট রাইট নাউ…(চিৎকার করে)
.
আমি মনে মনে বললাম, এটা তাহলে আয়াতের মা মিরা। কিন্তু ও তো ভুল ভাবছে। না আমি আরিয়ানের বউ আর না আয়াতের সৎ মা। আমি তোহ আয়াতের কেয়ার টেকার। আর এরা মিরাকে সত্যিটা বলছে না কেন ? ওকে আমার সত্যিটা জানানো দরকার। এটা ভেবে আমি মিরার এগিয়ে গেলাম। তারপর বললাম,

— মিরা আমি আয়াতের…….
এইটুকু বলতেই মিরা ঠাসসসসস করে আমার গালের উপর একটা জোরে থাপ্পড় মারল। থাপ্পড়টা খেয়ে আমার মাথা ভনভন করতে লাগলো। মুখের মধ্যে নোনতা কিছু অনুভূত হলো। হয়তো গালের ভেতরে হালকা কেটে রক্ত বের হচ্ছে। আমার কোলে আয়াত ছিলো। ওকে নিয়ে আমি পরে যেতে লাগলাম। কোনো মতে নিজেকে সামলে নিয়ে দাঁড় হলাম। এদিকে আমাকে থাপ্পড় মারা দেখে আরিয়ান, আংকেল আর আন্টির যেন গায়ে আগুন ধরে গেল। ওরা সবাই মিরার উপর প্রচন্ড রেগে গেল। আরিয়ান তো মিরার গায়ে হাত তুলতে গিয়েও আমার দিকে তাকিয়ে হাত নামিয়ে নিলো। কোনো নারীর গায়ে হাত তোলা হয়তো তার ব্যাক্তিত্বের মধ্যে পরে না। কিন্তু আমাকে মারা দেখে হয়তো তাও ভুলতে বসেছিল। আর ফাহমিদা আন্টি তো আরও এক ধাপ এগিয়ে। মিরাকে একটা থাপ্পড় মেরে সে শোধ নিয়েই নিলো। আপাততঃ আমার মাথার মধ্যে কিছু ঢুকছে না। আয়াতও এতোক্ষনে কান্না করা শুরু করে দিয়েছে। বাড়ির কাজের মহিলাটা আমার হাত ধরে উপরে আয়াতের রুমে নিয়ে গেল।
.
রুমে এসে আয়াতের কান্না থামাতে ব্যস্ত হয়ে পরলাম। কিন্তু রুমে থেকেও আমি নিচের কাল বৈশাখী ঝড়ের আভাস পাচ্ছিলাম। কিছুক্ষন পর হঠাৎ করে মনে হলো মিরাকে তো আসল কথাটা বলায় হলো না যে আমি আরিয়ানের বউ না। আয়াতের কান্না থামিয়ে দিয়েছি এতোক্ষনে। ওকে কোলে নিয়েই আবার রুমের বাইরে বের হলাম। নিচে তাকিয়ে দেখলাম মিরার হাত ধরে ঐ মহিলাটা বের হয়ে যাচ্ছে বাড়ি থেকে । উনি সম্ভবত মিরার মা। কিন্তু ওরা যাওয়ার পরও আরিয়ানে চিল্লানো থামেনি। সে মাথা গরম করে আন্টিকে বলেই যাচ্ছে, “কেন ওরা এ বাড়িতে ঢুকলো।” আর আন্টিও সমানে বলে যাচ্ছে, ” আমার বাবা এতো রাগ করে না, একটু শান্ত হও, আমি জানতাম না ওরা ভেতরে এসে এমন কান্ড ঘটাবে।” আংকেলও মাথাই হাত দিয়ে সোফায় বসে আছেন। হয়তো তিনিও তার ছেলের জীবনে এতো অশান্তি মেনে নিতে পারছে না।
.
আস্তে আস্তে আমি নিচে নামলাম। আমাকে দেখে যেন কাল বৈশাখের ঐ ঝড় থেমে গিয়ে, চৈত্রের সুভাষিত বাতাস বইতে লাগলো। সব কিছু একদম ঠান্ডা। আরিয়ান রেগে নাক মুখ ফুলিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল। আমি বাড়ির ভেতর থেকে ওকে দেখতে পাচ্ছিলাম। সে গিয়েই তার গাড়ির চাকায় ধ্রিম করে একটা লাত্থি মারলো। তারপর তার বাম হাতের দুই আঙ্গুল কপালে ঠেকিয়ে চার পাঁচ সেকেন্ড চোখ বন্ধ করে ওখানে দাড়িয়ে থাকলো। অতঃপর গাড়ি নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেল।
.
এদিকে আন্টি হন্তদন্ত হয়ে আমার কাছে এসে আমার যে গালে মিরা থাপ্পড় মেরেছে সেই গালে হাত বুলাতে লাগলো। কাজের মহিলা গুলোকে বললো “জলদি বরফ নিয়ে আসতে।” আর আংকেল আমার কাছে এসে আমার এক হাত তার দু’হাতের মুঠোর মধ্যে নিয়ে বলতে লাগলো, “আমাদের ক্ষমা করে দাও মা, আমরা বুঝতে পারিনি যে মিরা এমনটা করবে। ওকে এই কাজের উপযুক্ত শাস্তি আমরা দিয়েই ছাড়বো। ”
.
.
দুপুরের পর আয়াতের শরীর আবার বেশি গরম হতে লাগলো। আমি আরিয়ানকে ফোন করে বললাম, কোনো শিশু বিশেষজ্ঞ ডক্টরকে বাড়িতে আনতে। আরিয়ান ডক্টর আনলে সে আয়াতকে চেইক আপ করে কিছু ওষুধ দিলো আর বললো ভয়ের কিছু নেই জ্বর আস্তে আস্তে কমে যাবে। পুরোপুরি সুস্থ হতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে।
আরিয়ান আয়াতের সাথে কিছু সময় কাটিয়ে আবার চলে গেল। বিকালের দিকে আন্টি আমার কাছে আসলেন। আয়াত তখন ঘুমে। তিনি এসে আমার হাত ধরে রুমের লাগোয়া বারান্দায় নিয়ে গেলেন। বারান্দায় বেতের সোফায় আমাকে বসিয়ে দিয়ে নিজেও আমার পাশে বসলেন। তারপর আমাকে বললেন,
.
— তোমার সাথে কিছু কথা আছে মা।
—জ্বি আন্টি আমারও আপনাকে কিছু বলার আছে। আপনারা সবাই মিরার কাছে আমার পরিচয় গোপন করলেন কেন ? আমি যে আয়াতের কেয়ার টেকার ছারা আর কিছুই না কেন এই কথাটা ওকে বললেন না ?
— আরিয়ান কেন কথাটা গোপন করলো তা আমি জানি না। কিন্তু আমি কথাটা মিরাকে ইচ্ছা করেই বলিনি।
— কেন ? (অনেক অবাক হয়ে আর একটু রেগে বললাম আমি)
— মা তুমি হয়তো জানো না, কিন্তু আমার ছেলের জীবনের এই পরিনতির জন্য একমাত্র আমিই দ্বায়ী।
— মানে ? (অবাকের উপর অবাক হচ্ছি আমি)
— মিরার মা আমার জীবনে একমাত্র বান্ধবী ছিল। বলতে গেলে বেস্ট ফ্রেন্ড। তার বিয়ে হয়েছিলো আমেরিকার এক ফরেনারের সাথে। আর আমার বিয়ে হয় তোমার আংকেলের সাথে। প্রায় অনেক গুলো বছর আমাদের দেখা হয় না। মিরা বড় হলে ওরা এদেশে আসে। আমার বান্ধবীকে পেয়ে এতোই মরিয়া হয়ে উঠেছিলাম যে আমাদের বন্ধুত্বকে আত্মীয়তার সম্পর্কে জরানোর জন্য আমরা আমাদের ছেলে মেয়েদের বিয়ে ঠিক করি। তখন সবে আমার ছেলের পঁচিশ বছর বয়স। কেবল পুলিশের চাকরিতে জয়েন করেছিল। বিয়ের কথা জানার পর ওরা দুজন না তোহ অমত করেছিলো আর না মত দিয়েছিলো।
তারপর এক বড় দীর্ঘ শ্বাস নিলেন। আবার বলতে শুরু করলেন,
—আমার ভালো লাগার কথা ভেবে হয়তো আরিয়ান আমাকে কিছু বললো না বিয়ের বিষয়ে। কিন্তু বিয়ের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সবার মাঝে একটা ভালো লাগার যে কৌতুহল থাকে তা আরিয়ানের মাঝে দেখিনি। ওদের বিয়ের পর সব ভালোই হচ্ছিলো, কিন্তু মিরার ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা বলা, যখন তখন হুটহাট একা একা বেড়াতে যাওয়া, তার অহংকারী স্বভাব আমাকে বেশ ভাবাতো। হয়তো এগুলো আরিয়ান ও লক্ষ করতো। এবং এরপর থেকে প্রায়ই ওদের মাঝে তুমূল ঝগড়া হতো। বিয়ের ছয় মাস পর আমরা জানতে পারি যে মিরার বেবি হবে। সবাই আমরা খুব খুশি হই। আরিয়ানও অনেক খুশি হয়। কিন্তু মিরার উগ্র চলাফেরা তখনও বন্ধ হয়নি। তার তিন চার মাস পর আরিয়ান একদম সহ্যই করতে পারতো না মিরাকে। আমার মনে হয় তখন, আরিয়ান হয়তো মিরার অন্য কারোর সাথে সম্পর্কের কথা জানতে পারে। কিন্তু আমাকে এই কথা জানাই নাই, আমি কষ্ট পাবো তাই হয়তো বলতো না। তারপর বেবি হওয়ার কয় এক দিন পরই মিরা নিজেই আমাদের বিষয়টা জানায়। এবং ঐ নির্দয় মেয়ে ওর সদ্য জন্ম দেওয়া সন্তানকে রেখে চলে যায়। আর আমার ছেলেকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। বিশ্বাস করো মা, সেই দিন নিজেকে খুব বড় অপরাধী মনে হচ্ছিলো। পাপী মনে হয়েছে নিজেকে। আমার সামান্য ভুলের জন্য আরিয়ানের পুরো জীবন টা আমি শেষ করে দিলাম।
.
তার কথা খুব মন দিয়ে শুনলাম। কিন্তু কিছুই বলতে পারলাম না। খেয়াল করে দেখলাম আন্টি কাঁদছে। তবে আমার উত্তর তখনও পেলাম না। আন্টি আবারও নিজে থেকে বলতে লাগলো,
.
আমিই আয়াতকে আগলে রাখি। কিন্তু মা ছাড়া একটা বাচ্চাকে বাঁচানো খুব কঠিন। আরিয়ানও ধীরে ধীরে কেমন কঠিন হতে থাকে। আয়াতের সাথে থাকা বাদে অন্য কোনো সময় সে হাসতো না। আমি কখনও ওকে মন খারাপ হতেও দেখিনি। ও যেন ওর চারপাশে এক অদৃশ্য দেওয়াল তুলে রাখলো। এতো গুলো বছরে মিরা কখনও একবার ফোন করেও জিজ্ঞেস করেনি আয়াত কেমন আছে। আর আমার ফ্রেন্ডের সাথেও সব সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। কিন্তু আজ হঠাৎ বাড়িতে এমন কান্ড ঘটালো কেন আমি জানি না।
তারপর আন্টি কান্না ভরা চোখে আমার দিকে তাকিয়ে, আমার দুই কাঁধে হাত রেখে বললেন,
— মা আমি তোমার কাছে অনুরোধ করছি, আমার ছেলেকে তুমি স্বাভাবিক করে দাও। আমি দেখেছি, তুমি আসার পর থেকে আমার ছেলে আমার সাথে জিদ করে, রাগ করে। তুমি পারবে মা ওকে আবার হাসাতে, তোমার ভালোবাসা দিয়ে। আমার ছেলেটাকে একটু বাঁচাও মা। আমি অনুরোধ করছি। আমার ছেলেটাকে বিয়ে করো মা। দয়া করো একটু। আমি মা হয়ে আমার ছেলের জন্য তোমাকে ভিক্ষা চাইছি।
.
.
তার কথা শুনে আমি কোনো কিছুই ভাবতে পারছি না। সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে গেছি আমি। এ কি চাচ্ছে আন্টি আমার কাছে,,, যা দেওয়া কখনও সম্ভব না।
.
আন্টি আমার কপালে একটা চুমু খেয়ে চলে গেলেন। আমি ওখানে বসে মনে মনে আন্টিকে বললাম,,, আমার নিজের জীবনই তো অন্ধকার, আপনার ছেলের জীবন কিভাবে আলোকিত করবো। আমি হয়তো আয়াতের মা হতে পারবো, কিন্তু কখনও আরিয়ানের স্ত্রী হতে পারবো না।
.
কারন আমার জীবনেও একজন ছিল। প্রেমের বিষাক্ত বিষ সোনার পেয়ালায় করে সে আমার সামনে ধরেছিল। সেই বিষ আমার গলা দিয়ে নেমে পুরো শরীরে শিরায় শিরায় নির্দ্বিধায় ঘুরে ঘুরে বেরাচ্ছে। আমার দ্বারা দ্বিতীয় বার আর সেই বিষ পান করা সম্ভব না।
.
আয়াতের কান্নায় আমার ধ্যান ভাঙ্গলো। ওর কাছে যেতেই আমাকে জড়িয়ে ধরলো। আমিও ওর সারা মুখে চুমু খেয়ে ওকে শান্ত করতে লাগলাম। ও কান্না জড়িত কন্ঠে থেমে থেমে আমাকে বলতে লাগলো,
— পাখি… সকালেল ঐ… আন্তি তা কি… আমাল মাম্মাম ?
আমি ভাবতে শুরু করলাম নির্দয় ঐ মেয়ের কথা। সদ্য জন্ম দেওয়া সন্তানকে ফেলে সে কিভাবে যেতে পারে ? একটা দিনও কি ওর আয়াতকে দেখতে মন বললো না ? মায়ের মমতা ছাড়া না জানি কত তড়পেছে আমার কলিজাটা। ওই নির্দয় মেয়ে কখনো আমার কলিজার মা হতে পারে না।
আয়াত আবারও গলা জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো,
— বলো না… পাখি… ওতা কি… ওতা কি আমাল মাম্মাম ?
আমিও আমার হৃদয়ে ঘৃণার আগুন জালিয়ে উত্তর দিলাম,
— নাহ্,,, ওটা তোমার মাম্মাম না সোনা।
·
·
·
চলবে…………………..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here