নিশীথচিত্র পর্ব ১৪+১৫

‘নিশীথচিত্র’ (১৪)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে

__________

–জ্বর বারছে আপনার। খাবার খেয়ে ঔষধ না খেলে হবে কিভাবে?

— পরে খাবো

রিনি চোখ গরম দিয়ে বললো

— এখনই খাবেন।

দিহান অনুনয়ের গলায় বললো
— ইচ্ছে করছে না তো রিনি

–আপনি শুধু গিলবেন ইচ্ছে করতে হবে না।

রিনির গলার শক্ত কন্ঠস্বরেই দিহান পরাজিত হলো।রিনিই দিহানের মুখে ঠেলে ঠুলে খাইয়ে দিলো তবে সবটা খাওয়াতে পারলো না।দিহান অবাক হয়ে তাকিয়ে রিনিকে দেখছিলো শুধু।শরীর অসুস্থ না থাকলে মায়াবতীর হাতে পুরো টাই খেতো সে। ক্ষুধা মিটে গেলেও বুঝি মায়াবতীর হাতে খাওয়ার সাধ মিটতো না।রিনির ওই চোখ নামক পদ্মপুকুরে দিন দিন কি সে আরও বেশি ডুবছে?বাঁচার কি উপায়ই আর রইলোই না?অবশ্য দিহানের মনে হয় সে আর বাচতে চায় ও না।তবুও আবেগে গা ভাসিয়ে অকৃতজ্ঞের মতো কাজ অন্তত করবে না।

রিনি ঔষধ খাইয়ে দিয়ে বললো।

–যান বিছানায় গিয়ে শুয়ে পরুন।ও হ্যা কি কি লিখবো দেখিয়ে দিন।

দিহান করলোও তাই। এই ঘাড়ত্যাড়ার সাথে যুদ্ধে নামার ইচ্ছা আর শারিরীক শক্তি কোনোটাই নেই। বরং শরীর টাও বিছানা বিছানাই করছে।

বিছানায় শুয়েও শান্তি নেই।রিনি বিছানায় দিহানের পাশে বসে দিহানের পেটের উপর একটা বালিশ রাখলো।দিহান চমকে উঠলো

— কেমন পাগলামি হচ্ছে রিনি? পেটের উপর বালিশ কেন রাখছো? বাই এনি চান্স তুমি কি কোথাও শুনেছো পেটের উপর বালিশ রাখলে জ্বর কমে যায়?হেসেই বললো কথাটা তবে জ্বরের তাপে দিহানের হাসতেও কষ্ট হচ্ছে।

রিনি সাভাবিক ভাবেই উত্তর দিলো “না”

–তাহলে?

— আমি আপনার পেটের উপর বালিশ রেখে টেবিল বানালাম। লিখবো এবার

— এভাবে?

— হু

দিহান ভিরমি খেলো।কিছু বলারও আর ইচ্ছা জাগলো না।মাথায় আকশ্মিক ভার ব্যাপার টা আরও স্পষ্ট টের পাচ্ছে সে। তার মাথা আর শায় দিলো তর্কাতর্কিতে যেতে।রিনি তার কাজ চালিয়ে গেলো।আর দিহান চোখ বন্ধ করে ভালোলাগার অনুভূতি কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে পরলো।রিনি ডাকলো

— দিহান ভাই

— হুম বলো

— আপনাকে কখন যেতে হবে?

— এই এগারোটার দিকে গেলেই হলো।

— আজ যেতে হবে না।

— তাহলে এসাইনমেন্ট জমা দেবো কিভাবে?

— সাগর ভাই আছে না? উনি নিয়ে যাবে একটু কষ্ট করে।একজনের টা অন্যজন জমা দিলে হয় না?

— ঝামেলার ব্যাপার রিনি। সমস্যা নেই আমি পারবো।ঔষধ তো খেয়েছিই।

— উহু পারবেন না।রিনি মাথায় হাত দিয়ে জ্বর টা চেক করতে করতে বললো”দিহান ভাই জ্বর টা বাড়ছে।এবার আমি কি করবো?” অস্থির কন্ঠেই বললো শেষ কথাটা রিনি।

–এতো অস্থিরতার কি আছে?জ্বর সাভাবিক ব্যাপার সবার হয়।এমন ভাবে ভয় পাচ্ছো যেনো ক্যান্সার ধরা পরছে।

দিহান মাথার উপর এক হাত দিয়ে চোখ বন্ধ অবস্থায় কথা টা বললো।রিনির যেনো ধাক্কা লাগলো একটা। প্রিয় জনের বিষয় এসব কথা গুলো মস্তিষ্ক আর মন কেউ ই মানতে চায় না।রিনির চক্ষুদ্বয় থেকে বড় বৃষ্টির ফোটার ন্যায় অশ্রু বেড়িয়ে এলো।সে হু হু করি কেদে উঠলো।দিহান চকিতে চোখ খোলে।রিনির চোখের পানির ব্যাখ্যা বুঝতে পেরে রিনির মাথায় হাত বুলায়।রিনি দিহানের পেটের উপর রাখা বালিশে মুখ গোজে।দিহান ভেবেই পায় না এই পিচ্চিকে নিয়ে কি করবে সে।

— রিনি ফোন টা আনো তো টেবিল থেকে।

রিনি বিনাবাক্যে ফোনটা এনে দিহানের হাতে দিয়ে পূর্বাবস্থায় বসেই নাক টানতে টানতে লিখতে শুরু করে।বার বার হাত দিয়ে চোখ মুছছে।দিহান স্মিত হাসে।

— রিনি আমার ধারণা ছিলো শহরের মেয়েরা অনেক ম্যাচিউর আর স্মার্ট হয় অল্পেই।গ্রামের থেকে শহরের চলাচল জীবন ব্যবস্থা কঠিন কিনা। গ্রামে যা ঘটে বছরে একবার এখানে তা অহরহ।তোমার বান্ধবীগুলোও কি তোমার মতো বোকা?সব কিছু মানিয়ে নিতে শিখতে হবে। আবেগের প্রায়োরিটি এতো দেয়া যাবে না যা তোমার ব্যক্তিত্বই নষ্ট করে দিবে। বুঝেছো? সাধারণ মুখের কথায় কেদে ভাসালে বাস্তবতার সাথে যুদ্ধ করবে কিভাবে?

রিনি কোনো কথা বলে না। দিহান ফোন লাগায় সাগরকে

— দোস্ত জ্বর এসছে।ভার্সিটি যাওয়া অসম্ভব। পাশে আছে একজন ফ্যাচ কাদুনি। সে ভাবছে বাইরে বের হলে আমি প্রেগন্যান্ট মহিলাদের মতো ঘুরিয়ে পরবো।অবশ্য শরীর খারাপই হচ্ছে পরতেও পারি।এসাইনমেন্ট টা ভার্সিটি যাবার পথে নিয়ে যাবি একটু? ফোন দিলেই রাস্তায় বের হবোনে।

ওপাশ থেকে বললো শোনা গেলো না।

–আচ্ছা দোস্ত রাখি।আসিস সময় মতো

রিনি শেষ কথা দারা বুঝতে পারলো সাগর ভাই আসবে। রিনি নিজের অবস্থানে থেকে না নড়েই দিহানের মুখের দিকে কিছুটা ঝুকলো।দিহান ভ্রুযুগলের ইশারায় জিজ্ঞেস করলো “কি?”

রিনি আস্তে করে মাথা নাড়িয়ে জানালো “কিছু না”।

দিহান রিনির মুখ বরাবর ফু দিলো। রিনি অবাধ্য চুলগুলো উড়ে গিয়েও পূর্বের অবস্থানে আবার ফিরে এলো,চোখ দুটো বন্ধ হয়ে এলো। ।দিহান দুইহাতে চুলগুলো নিয়ে কানের পিছনে গুজে দিলো।গালে দুই হাত রেখে বেশ খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলো তারপর পূর্বের ন্যায় নিজের কপালে এক হাত রেখে চক্ষুজোড়া বন্ধ করলো।চোখ বন্ধ করেই বললো

— “রিনি ভালোবাসা মানে যে শুধুই পাওয়া বা অর্জন করা এইটুক জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ থেকো না ভালোবাসার আর এক নাম কিন্তু স্যাক্রিফাইসও ।রিনি পজিটিভনেস ভালো তবে নেগেটিভনেসও মাঝে মাঝে খুব প্রয়োজন হয়। কঠিন আঘাত মেনে নিতে সহজ করে দেয়। যেমন ধরো তুমি একটা বিষয়ে খুব পসিটিভ নেগেটিভ ধারণা মাথায়ই আনো নি বা আনতে দাও নি কখনোই সেই বিষয়টাই যখন নেগেটিভ রেজাল্ট বয়ে আনবে তুমি একদমই মানতে পারবে না খুব খুব খুব ভেঙে পরবে। অনেকে বাঁচতেই ভুলে যায়।কিন্তু তুমি যদি আগে থেকেই খুব বিশ্বাস না রেখে ভাবো যে হ্যা যেকোনো সময় নেগেটিভ রেজাল্টও আসতে পারে আর সত্যিই যদি নেগেটিভ রেজাল্টই আসে তাহলে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে।কষ্ট পাবে কিন্তু এতোটা নয় যে তোমার জীবন থেমে যাবে । এই লজিকটা জীবনের অনেক ক্ষেত্রেই কাজে দেয়।মাথায় রেখো।

রিনি সোজা হয়ে বসলো দিহানের এতো কথা কানে গেলেও নিজের মধ্যে ধারণ করার সময় কই?দিহান যে তার কানের পিছনে চুল গুজে দিয়েছে এই নিয়ে মগ্ন হয়েই সে ব্যাকুল।

____________

দিহানের ফোন বাজছে।রিনি এসাইনমেন্ট লেখা বেশ কিছুক্ষণ আগেই সমাপ্তি টেনেছে।সে দাদির কাছে গিয়েছিলো দিহানের জ্বরের খবর জানাতে।সেখানে বসেই বেশ খানিকক্ষণ কথা বলছিলো।দিহানের ফোনের শব্দ পেয়ে ছুটে গেলো একটাই চিন্তা দিহান ভাই শব্দে না উঠে যাক।

নাহ উঠে নি চোখ বন্ধ করেই বেঘোরে ঘুমাচ্ছে।ফোনটা কেটে গিয়ে আবারো বেজে উঠেছে। রিনি তৎক্ষনাৎ রিসিভ করলো।সাগর জানালো সে গেটের বাইরেই অপেক্ষা করছে। রিনি গুছিয়েই রেখেছিলো।এসাইনমেন্ট টা নিয়ে দৌড় দিয়েও থেমে গেলো।তারপর মাথায় ওরনা ভালো মতো আটকে নিলো শরীরের যতটুকু ঢাকার সে বেশ সুন্দর করেই ঢেকে হাটা দিলো।

দুই তিনবার ফোনের বিশ্রি শব্দে দিহানের ঘুমটাও হালকা হয়ে এসেছিলো মাথার ভারে ফোন রিসিভ করার ইচ্ছাই জাগে নি।রিনির কাজগুলো সে দেখলো বড্ড খুশিও হলো আবার ঘুমে তলিয়েও গেলো। রিনি গেট খুলে বাইরে তাকিয়ে দেখে সাগর বাইরে দাঁড়িয়ে গেটের মুখেই তাকিয়ে আছে।

— এই পিচ্চি বার্ড কেমন আছো?

— আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া।আপনি?

— আমিও আলহামদুলিল্লাহ।

— তবে আমি কিন্তু একদমই পিচ্চি না ভাইয়া।

— মানতে পারছি না।দিহান তোমার ব্যাখ্যা আমাদের কাছে এমন ভাবে দেয় যেনো তুমি ওর মেয়ের বয়সী। সে হিসেবে আমি তো ভালোই বলছি।

রিনি মুখটা ছোট করে ফেলে।

— দিহান ভাই তো কানা দেখেও দেখে না কিছু।

— তুমি পিচ্চি থেকে বড় হয়ে যাও,তারপর সময় আসুক, তোমার বুঝ ব্যবস্থা বারুক দেখবে তখন দিহান নিজেই বুঝে যাবে আর এই পিচ্চি বার্ড সামনে রেখে কানা হয়ে থাকবে না।

সাগর মজার ছলেই রিনিকে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করলো।
রিনি ফোস করে শ্বাস ছেড়ে বললো

— সাগর ভাই আমার তো মনে হয় আমার নাতি পুতি হয়ে গেলেও সে আমাকে বড়ো ভাববে না। তখনও বলবে রিনি নাতি পুতি হয়ে গেছে বলেই যে তুমি বড় হয়ে গেছো এমনটা ভুলেও ভেবো না।তুমি এখনও বাচ্চাই আছো।

সাগর হেসে লুটুপুটি খেলো।দিহান ঠিকই বলে রিনি আবেগে ভাসছে।অল্পেই কতো মান অভিমান অভিযোগ তার।তবে দিহানের অন্যত্রও একটা ভয় আছে।

সাগর বললো

— বাস্তবতায় পা রাখবে যেদিন আশা করি সেদিন বড় হয়ে যাবে দিহানের কাছে।থেমে আবার বললো যাই হোক খাচ্ছো তো ঠিকঠাক?

রিনি মাথা চুলকানোর মতো করলো শুধু।আসলেই রিনি খায় নি।এসাইনমেন্ট লিখতে লিখতে খাওয়া তুঙ্গে উঠেছে আর ঝালের সমস্যাও আছে।দাদিকে লেখার এক ফাকে খাবার টা দিয়ে এসেছিলো।

খাতা উল্টে পাল্টে দেখতে দেখতে বললো
— খেয়ে নিও। এসাইনমেন্টের শেষ দিকে অনেকটা দিহানের হাতের লেখা না।তুমি লিখেছো তাই না?লিখতে লিখতেই হয়তো ভুলে গেছো।এক্সাম নাকি পরশু? যাও খাও তারপর পড়তে বসো।যাও যাও।

সাগর হাতের ঘড়ির দিকে তাকিয়ে হাটা শুরু করলো।

রিনি ঘরে এসে খেয়ে নিয়ে দিহানের রুমে বসেই জোর লাগিয়ে পড়তে শুরু করলো৷ খেয়াল এলো দিহানের জ্বর টা পরেছে কিনা চেক করা হয় নি।চকিতে দিহানের পাশে বসে হাত দিয়ে চেক করতে গিয়েও করলো না।দিহানের ডার্ক রেড ওষ্ঠের দিকে তাকিয়ে রইলো।এরপর তার ভয়ংকর ইচ্ছা জাগলো।ইচ্ছে হলো ওষ্ঠ ছুয়িয়ে পরিমাপ করবে জ্বর টা।কপালে ওষ্ঠ হালকা ছুয়য়ে চেক করলেও গালে আর ওভাবে চেক করার সাহস হচ্ছে না। ওষ্ঠ ছোয়ানোর কারনে বেশিই গরম মনে হলো বলে রিনির ধারণা। হাত দিয়ে চেক করলে এতোটা উত্তাপ অনুভূত হতো না।কপোলে( গালে) ওষ্ঠ ছোয়ানোর ঠিক আগ মুহুর্তে দিহান অসুস্থ কন্ঠে বললো

— রান্না করবে কে? দাদি না খেয়ে থাকবে?

রিনি ছিটকে দূরে সরে গেলো।আমতা আমতা করে বললো
— খালা এসেছে বেশ কিছুক্ষণ। সেই রান্না করবে

— কোন খালা

— আরে কেয়া খালা যে রান্না করে আর কি।

— ও আচ্ছা।
জ্বর বাড়ার কারনে বার বার কথা জড়িয়ে যাচ্ছে।।রিনি বিনা বাক্য ব্যয়ে মাথা টেপা শুরু করলো। দিহানের মুখভঙ্গিতে প্রকাশ পাচ্ছে তার ভালো লাগছে।কিন্তু তারপরই বলে উঠলো

— যাও পড়ো রিনি।

রিনি টেবিল বইটা এনে বিছানায় ঠেস দিয়ে পা ছড়িয়ে বসলো দিহানের মাথার কাছে। পায়ের উপর বই রেখে হালকা আওয়াজে বই থেকে বাক্য উচ্চারণ করে জানান দিলো সে পরছে। আর অন্য হাতে মাথা টিপে দিচ্ছে।দিহান আর কিছু বললো না।বলতে ইচ্ছাও হলো না । এভাবেই তার ভীষণ ভালো লাগছে।

____________

আজানের ধ্বনি কানে ভেসে আসতেই রিনি গোসল সেরে দাদির রুমে এলো।

— রিনি পোলাডার জ্বর ডা কি নামছে?

— নাহ দাদি কি করি বলোতো?

— মাথায় পানি দিয়া গতর মুছায়াইয়া দেওন গেলে ভালো ওইতো।।

রিনি তাই করলো।রুমে এসে দিহানের শরীরের অবস্থা বোঝার চেষ্টা করলো।নাহ জ্বর ছাড়ার নাম নিবে বলে মনে হচ্ছে না ।

রিনি দিহানের মাথা টেনে খাটের একদম পাশে রাখলো।মাথার নিচে বড়ো মোটা পলিথিন দিয়ে দিলো যাতে শোয়া অবস্থায় মাথায় পানি দেয়া যায় আর বিছানাও না ভেজে।দুইটা বালতি এনে একটা নিচে দিয়ে রাখলো যাতে পানি টা বালতি তে পরে অন্য বালতিটায় বাথরুম দিয়ে পানি ভরে ভরে এনে মগ দিয়ে মাথায় ঢালছে।দিহানের শরীর বার বার কেঁপে কঁপে রিনির কেন জানি না ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।

সে জানে জ্বর টা খুব সাধারণ রোগ।আবহাওয়া পরিবর্তনের কারনে হওয়াটা সাভাবিক তবুও তার দিহান ভাইয়ের কেন হতে হবে???

দাদির কথা মতো শরীর মুছাবে কিভাবে এটা ভাবনার বিষয়। রিনির মনে হলো এটা ভারী লজ্জার বিষয়ও বটে। কিভাবে করবে সেটাই চিন্তার।ভাবতে ভাবতে দিহানের মাথা মুখ গামছা দিয়ে মুছিয়ে দিলো।পানি পাল্টে আর আধ বালতি নিয়ে এলো। পূর্বের জায়গায় মাথা দিয়ে শুয়িয়ে দিলো।বিছানার পাশে বসে ভয়ে ভয়ে শার্টের বোতাম হাত দিয়েও বার বার ফিরে আসছে হাতটা।খুব সাহস করে একটা বোতাম খুলতেই দিহান চোখ মেলে তাকালো।আস্তে করে বললো

— কি হচ্ছে এগুলো?

রিনি হকচকিয়ে ওঠে
— দিহান ভাই আপনি যেমন ভাবছেন তা না।দাদি বললো গা মুছিয়ে দিলে জ্বরটা কমতে পারে।

— লাগবে না তুমি যাও।

— লাগবে দিহান ভাই।আপনি একটু শার্টের বোতামগুলো খুলে দিন।তাহলেই আর কি

— তুমি খোলো আমার ওতো ইচ্ছা নেই আমি তো না বলেইছি।এখন তোমার তবুও যদি মনে চায় গা মোছানোর তাহলে মোছাও।তবে ঘুমন্ত কোনো মনুষ্যের উপর আক্রমন করতে হয় না রিনি, তা হোক চোখ দিয়ে বা ছুরি ।

রিনি লজ্জায় রক্তিম রূপ ধারণ করলো।দিহান চোখ বন্ধ করে ফেললো আবার।নইলে রিনি আরও লজ্জায় পরবে।রিনি ধীরে ধীরে শার্টের বোতামগুলো খুলে শরীর থেকে জামাটা সরিয়ে ফেললো।মেদ হীন ফরসা টান টান শরীর। রিনি ঝিম মেরে গেলো।খালি গায়ে দেখে নি এমন নয় দূর থেকে দেখেছে তবে এতো কাছ থেকে কখনও না তাও আবার নিজে জামা খুলে এভাবে কখনোই হয় নি। চোখ বন্ধ করে বললো

–হাত টা একটু জাগান শরীর থেকে জামা টা বের করবো।

দিহানই অনেকটা সাহায্য করলো রিনিকে। রিনি নতুন বউ এর মতো বেশ দায়িত্ব নিয়ে গা মুছে দিচ্ছে।আবার লজ্জার সূর্য ডোবার সময়ে আকাশের রক্তিম রুপ টা ধারণ করছে। লজ্জায় হাত পা কাপছে তবুও প্রাণপণে চেষ্টা চালাচ্ছে গা মোছার। তবে মনে মনে ভাবলো সে অসাধ্য সাধন করে ফেলেছে।

রিনি বুঝতে না পারে এমন ভাবে চোখ দুটো খুলে রেখেছে দিহান। রিনির মুখ খানাই দেখবে সে। রিনির লজ্জা পাওয়া মুখ দিহানের বুকে ঝড় তুলে দেয়।দিহানের মনে হয় রিনির মতো লজ্জা কেউ পেতে পারবে না কেউ না।

রিনি ট্রাউজার হাটু পর্যন্ত তুললো খুব কাপা কাপা হাতে লোমশ পা দুটো মুছে দিলো।ভেজা পা টাই যেনো তার অধিক পছন্দ হয়ে গেলো।নখ গুলোও কি সুন্দর করে কাটা।বেশ শৌখিন মানুষটা, রিনি নিজের কথা ভাবতেই বুঝলো সে কতটা ছন্নছাড়া ।

— আর কতো মুছবে রিনি ঠান্ডা লাগছে আমার।

রিনির ভাবনায় ছেদ পরলো।তরিঘরি করে শুকনো গামছাটা দিয়ে শরীর মুছিয়ে দিহানের গায়ে অন্য একটা টি শার্ট দিয়ে দিলো

— পাজামাটাও পাল্টে দেয়া উচিত। কথা বলে রিনি নিজেই জিহ্বা কাটলো । না মানে আপনার নেয়া উচিত। মাথা নিচু করে সরি বললো ভুল বাক্যের জন্য।

— মানসম্মান বাকি টুকু আমার নিজের করে রাখতে দাও রিনি।তুমি দেখছি সব কিছু নিয়ে টানাটানি করছো।

রিনি ভারী লজ্জা পেলো।লজ্জায় তার নাক আরও লাল হয়ে এলো।

— তবে এই অসুস্থ শরীরে নিজে পারবো বলে মনে হয় না।লুঙ্গি আর ওখান থেকে সাদা ট্রাউজার টা আনো তো

রিনি আনতেই দিহান রিনির হাত ধরে উঠে দাঁড়িয়ে বলে

— আমার দিকে তাকাবা না।ওদিকে মুখ করো ফাস্ট।একা একা দাঁড়ানোর জোর পাচ্ছি না বলে হেল্প নিচ্ছি।

রিনির বলতে ইচ্ছা করলো “না তাকাবো না। আমি আপনার দিকেই তাকিয়ে থাকবো।”

— অবশ্য তাকাতে পারো আমি পুরুষ মানুষ তো লজ্জা তো নারীর ভূষন সেখানে তোমারই লজ্জা নেই।আমার আর…..

এবার রিনি অন্য দিকে ফিরলো।এটা কেমন অপমান হলো? অসুস্থ কথা বলতে পারে না তারমধ্যে বললে আবার ছাড়েও না।

— রেজাল্ট খারাপ করলে এসব সেবা দিয়ে দিহান ভুলবে না মনে থাকে জানো।

রিনি আর কথা বাড়ায় না এ এক বিশাল হুমকি তার কাছে।দুপুরের খাওয়া শেষ করে দিহানকে খাওয়াইয়ে দাদির খাবার দিয়ে এসে পড়তে বসে।সে আজ আর চেয়ার ছাড়ছে না।

চলবে,’নিশীথচিত্র'(১৫)
ইসরাত আয়রা ইচ্ছে

__________

গোধূলি বেলারও সমাপ্তি ঘটিয়ে যখন সন্ধ্যা তখন বৃষ্টির বেগ টা তুমুল গতিতে বেড়ে গেল। বিকাল থেকেই হালকা হালকা বৃষ্টির তোরজোর চলছিলো।রিনির হাত পা সেই থেকে নিশপিশ করছে বৃষ্টিবিলাশ করার জন্য।সন্ধ্যার বৃষ্টিতে কখনও ভেজাই হয়ে ওঠে নি মায়ের কড়া শাসনে। আজ মা নেই বাধাও নেই আর এই সু্যোগটা রিনি ছাড়তে চাচ্ছে না।দৌড়ে রুম থেকে বেড়িয়ে যেতে নিয়েও থেমে গেলো।তার মনে হলো শাড়ি পরলে মন্দ হয় না।

পরীক্ষা নিয়ে আপাতত সে চিন্তিত নয় সিলেবাসের অনেকটাই কমপ্লিট হাতে যা সময় আছে তা যথেষ্ট ভাবতে ভাবতেই শাড়ি বের করলো।সাদা ব্লাউজ, লাল শাড়ি নিয়ে দ্রুত পড়তে শুরু করলো।যেহেতু শাড়ি পরিধানে সে একদমই পটু না তবে সেদিনের পর থেকে সে মাঝে মাঝে শাড়ি পরা টা প্রাকটিস করতো যার ফলে আজ মোটামুটি ভালো হয়েছে বলা চলে তবুও রিনি সন্তুষ্ট হতে পারছে না।অল্পেই কেন সে সব শিখতে পারে না এই নিয়েও একচোট আফসোসও লাগলো তার।কপালে টিপ কাজল আর ঠোঁটে হালকা লিপ্সটিক দিয়ে দৌড়ে চলে ছাদে।

দিহানের জ্বরটা আগের দিন রাতেই নিয়ন্ত্রণে এসেছিলো। বর্তমানে জ্বর নেই বলা চলে তবে দুর্বলতা বিদ্যমান।
দিহান রুম থেকে বের হচ্ছিলো এক জগ পানি নেয়ার উদ্দেশ্যে। থমকে গেলো মুহুর্তটায়।শাড়ি পরা চঞ্চল তরুণীর বেশামাল ছুটে যাওয়া দেখে।যতক্ষণ তরুণীর চিহ্ন দেখা গেছে ততক্ষণ তাকিয়ে ছিলো।দিহানের মনে বার বার প্রশ্ন জাগছে ওটা সত্যিই রিনি তো?
দৌড়ে যেতে নিয়েও সে তার গতি বাড়াতে পারলো না তার মনে হলো সে আটকে গেছে, চলা ভুলে গেছে। ধীর পায়েই যেতে লাগলো।

মোটা মোটা বৃষ্টির ফোটা রিনির শরীর ছুয়ে দিচ্ছিলো কিন্তু ছাদের দরজায় একহাত ঠেকিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেটার মনে হচ্ছিলো তার মন ভিজিছে দিচ্ছে এই মরণ বৃষ্টি খুব।

ঘনঘটা মেঘের বিদ্যুৎ চমকানিতে রিনি খানিকটা কেপে উঠছে দরজার দিকে তার নজর নেই মোটেই। যদি থাকতো তাহলে একজোড়া স্থির চোখ আজ কতোটা অস্থির হয়ে গেছে তা বুঝতে পারতো।

হঠাৎ পিছনে তাকিয়ে দিহানকে দরজায় দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেলো রিনি।কিছুটা অপ্রস্তুতও হয়ে পরলো।বেশি অপ্রস্তুত করছে দিহানের চোখজোড়া।সিক্ত ঠোঁট দুটো কাপতে কাপতে দিহানের নাম উচ্চারণ করতেই দিহানের হুশ ফেরে।রিনির সামনে নিজেকে একদমই দুর্বল করতে চায় না সে।

–দিহান ভাই এখানে

— উড়নচণ্ডীর এই ভোর সন্ধ্যায় দৌড় দেখে ভাবলাম জীন ভূতের আছর লেগেছি কিনা তাই দেখতে এলাম।

— এ কেমন কথা?

— সন্ধ্যায় মানুষ শাড়ি পরে বৃষ্টিবিলাশ করে এটা কেমন কথা?দেখেছো কাউকে রাতের বেলায় বৃষ্টিতে ভেজা।

— তাই বলে আমি ভিজতে পারবো না?আর এখন তো সন্ধ্যা রাত কই?

— না পারবা না।কথা বাড়ায় না নিচে চলো।

রিনি এগিয়ে এলো দিহানের দিকে লাইটের আলোতে রিনি এখন দিহানের কাছে আরও স্পষ্ট। দিহানের মনে হলো এতোক্ষণ অন্ধকারে ছিলো সেটাই ভালো ছিলো।শুধু শুধু চোখ জ্বালা টাই বাড়বে পালানোই বুঝি ভালো।দিহান চোখ বন্ধ করে বললো
— আমি নিচে যাচ্ছি চলে এসো। আমার যেনো ডাকতে আসতে না হয় আর।

রিনি দিহানের কলার টেনে ধরলো।স্থিরভাবে চোখে চোখ রেখে বললো

–যেতে পারবেন না।

দিহান ভ্রুদয় কুঞ্চিত করে রিনির দিকে তাকালো।চোখে কঠোরতা ধরে রাখার আপ্রান চেষ্টা করেও বার বার ব্যর্থ সে।

রিনি দিহানের ঘাড় দুহাতে জড়িয়ে শরীরের ভর ছেড়ে দিলো।রিনির সান্নিধ্যে এসে দিহান আরও বেশি অচল হয়ে পরছে তবুও নিজেকে ধরে রাখার আপ্রান চেষ্টা থামিয়ে নেই।সে কঠোর চোখে রিনির দিকে তাকালো।রিনি তা দেখেও আদুরে গলায় বললো

–আমার কতো সপ্ন আপনার সাথে বৃষ্টিবিলাশ করার।আমি ভিজবো আপনি পিছন থেকে এসে জড়িয়ে ধরবেন। তারপর খুব ভালোবাসাবাসি করবেন।কিন্তু দেখেন তেমন কিছুই হচ্ছে না।

— হবেও না বলে জোর করে রিনির হাত ঘাড় থেকে ছাড়িয়ে দিলো।

— কেন হবে না? ওহ আপনি তো আবার ফার্মের মুরগী। বৃষ্টির ফোটা গায় লাগলেই জ্বর।

কথা বলতে বলতে রিনি দরজার ভিতরের এসে দেয়ালে এক পা হালকা উঠিয়ে হেলান দিলো।দিহান কথা বাড়ায় না চলে যেতে নেয়।বিরবির করে বলতে থাকে যত খুশি ভেজো। রিনি হাত দিয়ে পথ আটকায়।

— কি হলো কথা বলেন।

দিহান রিনির দিকে না তাকিয়ে বলে

— অন্য ছাদে মানুষ থাকতে পারে আর যদি তোমায় একটা ছেলের সাথে দেখে কি হবে ভাবো?

— এই অন্ধকারে দেখবে?

— অবয়ব তো বোঝা যাবে নাকি?বিদ্যুৎ চমকানিতে দেখতেও পারে

— তার মানে ভয় পাচ্ছেন?ভিতু ছেলে আপনি

রিনি ফিক করে হেসে উঠলো।দিহানের রাগ ওঠে রিনির খুব কাছে এগিয়ে চোখের দিকে তাকিয়ে বলে

— ছেলেদের এসব ভয়ও লাগে না লজ্জাও কম।যে কোনো কিছুই করতে পারে তারা কিন্তু সু্যোগ পেয়েও যে ছেড়ে দেয় তাহলে বুঝবে সেসব ছেলে নিতান্তই সংযত রাখে নিজেদের।

— আমি তো রাখতে বলি নি।

— পাগল হয়ে যাবো আমি।দিহান আবার চলে যেতে নেয়

— দাড়ান না দিহান ভাই।

দিহান দাঁড়িয়ে পরে সিড়ির রেলিং এর সাথে ঠেস দিয়ে রিনির দিকে মুখ হয়ে দাড়ায়।
— থাকলাম তারপর?

— আমি ভিজবো আপনি দেখবেন।

— তোমার লজ্জাটা বড়ই অদ্ভুত রিনি। দিহান দীর্ঘশ্বাস ছাড়ে।

— দেখবেন না?

— আমি তাকিয়ে থাকতে পারছি না।

— ঝলসে যাচ্ছেন?

— কিছুটা।

— আমাকে দেখে?

— হ্যা

উত্তর গুলো রিনির মন ছোয়া হয়েও রিনি দেখলো দিহানের চোখ মুখ কাঠ কাঠ হয়ে আছে।

— তাহলে এমন মুখ করে কেন বলছেন?

— নইলে তুমি ঝলসে যাবে

— সংযতচিত্ত দেখছি তাহলে?

— হুম

— কিন্তু কেন?

— রিনি তোমার ড্রেস, কালার কম্বিনেশনে আমি মুগ্ধ।

— কেন?

— এটাও বুঝছো না?

— না

— তুমি বৃষ্টির মধ্যে ভিজতে এলে সাদা ব্লাউজ আর ফিনফিনে লাল শাড়ি তে।সাদা ব্লাউজের ব্যাখ্যা না হয় নাই বা দিলাম। শাড়ি ভিজে তোমার তনুর(দেহ) বিশেষ বিশেষ স্থান আমায় আমন্ত্রণ, নিমন্ত্রণ, হাতছানি সব দিচ্ছে।তুমি ঘুরে ঘুরে বৃষ্টিবিলাশ করবে আর তোমার অনাবৃত পৃষ্ঠদেশ(পিঠ) দেখবো? শাড়ি পরেছো পিঠ টাও ঢাকো নি কেন ভালোভাবে?

রিনি চোখ পিটপিট করে তাকিয়ে বললো
— আপনিই তো দেখছেন এই রাতে অন্য কে ই বা দেখবে? আর লজ্জা লাগলেও আপনার সামনে আমি একদম লজ্জা পেতে চাই না।

এ কথাটাও রিনি বেশ লজ্জা নিয়েই বললো।

দিহান চট করে রিনির সামনে এসে স্পর্শকাতর স্থানের দিকে হাত বাড়াতে গেলে আকস্মিকতায় রিনি ছিটকে দূরে সরে যায়।

— কি হলো সরে গেলে যে? দিহান ভাইয়ের কিছুই তেই লজ্জা পেতে নেই।তোমার কি মনে হয় দিহান ভাই ফেরেশতা? তার মানুষের মতো চাহিদা নেই?

দিহান টেনে রিনিকে নিজের সাথে মিশিয়ে পিঠে এলোমেলো হাতের খেলা শুরু করে।রিনি ছাড়াতে চেষ্টা করলেও কাজ হচ্ছে না।সে বুঝতে পারলো দিহান রেগে গেছে।
“ব্যাথা পাচ্ছি “বলে দিহানকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে।রিনির গলা দিহানকে শান্ত করে তবে এই মেয়েকে সোজা করতেই হবে তার।

রিনির মুখ উঠিয়ে ভেজা চুলগুলো কানের পিছনে গুজে দিয়ে বলে ।

— তুমি যতটা সহজ ভাবো সব কিছু ততটা সহজ না।লজ্জা পেতে চাই না বললেই হয় না বুঝতে পেরেছো আজ?এরকম করে বিপদ ডেকো না আর।আমার জায়গায় অন্য কেউ হলে অনেক বিপদ হয়ে যেতো তোমার।একটা ছোট্ট বোকা পাখি তুমি রিনি। দিহান স্মিত হাসে রিনিকে সাভাবিক করতে।

— কিছু করতাম না ভয় নেই।তোমাকে বুঝাতে চেয়েছি মাত্র যে বিষয় টা সহজ ভাবলেও সহজে নিতে পারতে না তুমি।তবে আমার প্রক্রিয়া ভিন্ন হলে গলেও যেতে৷ তোমাকে নিয়ে আমি বড্ড দিধাদ্বন্দ্বে আছি রিনি।

দিহান দীর্ঘশ্বাস ছাড়লো।
দিহান জানে আজ রিনিকে ভালোবাসা দিয়ে কাছে ডাকলে সে পিছু পা হতো না। তাই ই ভয় দেয়ার চেষ্টা করে রিনির মগজে ঢুকানোর চেষ্টা করেছে যে বিষয় টা সহজ না।এবার রিনির মাথা এটা নিলে হয় ।

রিনি দিহানের দিকে তাকিয়ে গাল ফুলিয়ে কথা শুনছে।

— অভিমান হয়েছে?

রিনি দিহানের বুকে মুখ গুজে হ্যা সূচক মাথা নাড়ায়।

— রাগ হয় নি আমার উপর?

বেশ কিছুক্ষণ সময় নিয়ে না ভারী আওয়াজে না বলে ওঠে।

— তাহলে তো হবে না রাগ হতে হবে।তারপর বলতে হবে কে এই দিহান?আজ থেকে আর তার কথা ভাববোই না।

রিনি দিহানের বুকে কামড় বসিয়ে দেয়।কারণ এটা সে মানতে নারাজ।

— উহ আচ্ছা বাবা লাগবে না। অনেক ভেবো তুমি।আর কামড়ায় না।উহুরেঃ

তবুও ছাড়াছাড়ির নাম নেই দেখে দিহান জোর করেই দুহাত রিনির মুখ তুলে নিজের দিকে ফেরায়।একদৃষ্টিতে কিছুক্ষণ রিনির মুখপানে তাকিয়ে কপাল থেকে টিপ টা তুলে নেয়।

— তুমি অনেক সুন্দর রিনি। টিপেও তুমি সুন্দর টিপ ছাড়াও তুমি সুন্দর তবে টিপ আমার ভালো লাগে না তাই তুলে নিলাম।

রিনিকে ছাড়িয়ে ছাদের দরজা লাগিয়ে দেয়। রিনির হাত ধরে নিচে নামতে নামতে বলে

— বই খাতা আর আদা চা নিয়ে আমার রুমে চলে আসবে ২০ মিনিটের মধ্যে।

এরপর বিড়বিড়িয়ে বলে

— দিলে তো ভিজিয়ে আবার জ্বর না আসলেই হলো।

এরপরই তাড়াহুড়ো করে রিনিকে ছেড়েই আগে আগে নেমে গেলো।

_____________

মুনির রেহানা মেয়ে রিমিকে নিয়ে এগারোটার দিকেই চলে এসেছে।রিনির আজ ২য় পরীক্ষা চলছে। সে একটার দিকে ফিরেই বোনকে পেয়ে খুব জোরে জড়িয়ে ধরে রইলো কিছুক্ষণ।

— বোন বাবুটা কি নড়ে?

— ধুর এতো তাড়াতাড়ি নড়ে নাকি?

এর মধ্যেই একটা গলা ভেসে আসে রিনির কানে

— কেমন আছো রিনিরিনি?

রিনি চমকে পিছনে তাকায়

চলবে,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here