#এই_রাত_তোমার_আমার
#সানজিদা_ইসলাম
#৫ম_পর্ব
ড্রইং রুমের সবাই চুপচাপ বসে আছে লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে নুহার বাবাই আগে কথা বলল,
—এগুলো কি শুনছি আমি মাহিয়াত বাবা? তুমি নাকি তোমার মায়ের কথায় একটা বাচ্চার জন্য আরেকটা বিয়ে করতে যাচ্ছো?
যদিও এমন প্রশ্নে করা তার উচিত না বা তাকে সাজে না কিন্তু মেয়ে জন্য এতটুকু করাই যায়।
— জী তবে আপনার কথাটা পুরোপুরি সত্য না বাবা। আমার বাচ্চা হোক বা না হোক এতে আমার কিছু যায় আসে না। বাচ্চা আল্লাহর দান আল্লাহ চাইলে আমরা বাবা মা হতে পারব আর এছাড়াও পৃথিবীতে এমন অনেক দম্পতি আছে যারা সন্তান ছাড়াও জীবন যাপন করছে দরকার হলে আমরা বাচ্চা অ্যাডপ্ট করব এতেও আমার কোনো আপত্তি নেই। যদিও আমার মায়ের আছে কিন্তু তার এই অন্যায় আবদার আমি মানবো না আসল সমস্যা নুহাকে নিয়ে সে আমাকে বিয়ে না করলে ডিভোর্স দেয়ার হুমকি দিচ্ছে তাকে আমি কোনো ভাবেই বোঝাতে পারছি না এখন আপনারাই আমার শেষ ভরসা আপনারা প্লিজ ওকে বোঝান। আমার সাথে ফিরে যেতে বলুন।
এবার তার বাবা নুহাকে প্রশ্ন করল,
—নুহা এগুলো কোন ধরনের অসভ্যতা? নিজের স্বামীকে কেউ এইসব কথা বলে?আর তুমি কেমন মেয়ে যে সন্তানের জন্য নিজের স্বামীকে বিয়ে দিতে যাচ্ছো?এর পরিণাম সম্পর্কে কি তোমার বিন্দু মাত্র ধারণা আছে?আর মাহিয়াত তো ঠিক কথাই বলছে হাজার হাজার নিঃসন্তান দম্পতি আছে তারা কি সংসার করছে না তারা কি নিজের স্বামীকে এমন বিয়ে করিয়ে দিচ্ছে? তোমার বাচ্চার দরকার হলে দত্তক না হাজার হাজার এতিম বাচ্চা আছে পৃথিবীতে তাদের মধ্য থেকে একজনকে আপন করে নাও। এ ধরনের পাগলামী ছেড়ে দাও মাহিয়াতের কথা শুনো তার সাথে বাড়িতে ফিরে যাও।
—বাবা জীবনটা আমার আমাকে ডিসিশন নিতে দাও আমি কি করব না করব? আর পরিণামের কথা বলছো তো? তুমি বলতে চাইছো আমার অনুপস্থিতিতে সে তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে ভালোবেসে ফেলবে তারপর আমাকে ছেড়ে দেবে এটাই বোঝাতে চাইছ তো?তাহলে মনে করো এটাই আমার ভালোবাসার পরিক্ষা। আমার অনুপস্থিতিতে সে যদি তা দ্বিতীয় স্ত্রীকে ভালোবেসে ফেলে তাহলে মনে করব আমার জন্য তার মনে কখনই কোন জায়গা ছিল না তাই আমাকে ছেড়ে দিয়েছে।এতো আমার জন্যই ভালো। আর এমনেও আমার অত ধৈর্য নেই যে বড় মার ভালোবাসা বিহীন সংসারে দিনের-পর-দিন পড়ে থাকবো। মানুষের অন্যয় অবহেলা সহ্য করবো।তাই আমি উলটো মাহিকে মুক্তি দিয়ে দেবো। আর যদি আমার অনুপস্থিতিতেও সে শুধু আমাকে ভালোবেসে যায় তাহলে মনে করব আমার ভালোবাসা সত্যি। তার সাথে আমি নির্দ্বিধায় আমার সারা জীবন কাটিয়ে দেবো। আর এমনিতেও ওদের বিয়েটা একটা চুক্তি মাত্র। একবার বাচ্চা হয়ে গেলে সব ঠিক হয়ে যাবে।ঐ মেয়েকে মাহি ডিভোর্স দিয়ে দেবে। আমার শাশুড়ি মার ছেলের বংশ নির্বংশ হয়ে যাওয়া থেকে বেঁচে যাবে।সে নাতি বা নাতনি পাবে আমি আর মাহি বাবা মা হবো।আর যেখানে বড় মা এতগুলো বছর নিজের স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রীকে চোখের সামনে সহ্য করে এসেছে সেখানে আমি মাত্র একবছর সহ্য করতে পারবো না?
এবার মিসেস নয়ন তেতে উঠল,
—নুহা বড্ড বাড়াবাড়ি করছ তুমি।যা বোঝো না তা নিয়ে কথা বলবে না। তুমি কিসের সাথে কি মিলাচ্ছো বার বার? কোথায় তুমি আর কোথায় ও? নুহার বাবা তুমি মাহিয়াতের মায়ের কাছে ফোন লাগাও আমি কথা বলব মেয়ের সাথে বসে বসে তো আর পাগলামি করলে চলবে না।আমি তাকে জিজ্ঞেস করবো সে কিভাবে একটা স্ত্রী থাকা অবস্থায় তার ছেলেকে আবার বিয়ে দেয় দরকার হলে আমি পুলিশে যাব।
—খবরদার মা তুমি ওনাকে ফোন করবে না আর না কিছু বলবে।আর মাহি আমি আমার সিদ্ধান্ত আগেই তোমাকে জানিয়ে দিয়েছি এবার ভেবে দেখো তুমি কি করবে?যদি আমাকে নিয়ে তোমাদের এত সমস্যা হয় তাহলে আমি ঘর থেকে বেরিয়ে যাচ্ছি।
মাহিয়াত গম্ভীর হয়েবলল,
—কোথাও বের হতে হবেনা তোমাকে শুধু এতটুকু বল এটাই তোমার শেষ কথা।
—হ্যা।
—ঠিক আছে আমি বিয়ে করবো।আর আমার ভালোবাসার প্রমাণও করবো কিন্তু তুমিও একটা ভয়াবহ পরিমাণের জন্য প্রস্তুত হও। বিয়ে নামক এই ঝড়ে তুমি সব লন্ডভন্ড করে দিচ্ছ নুহা। আজ তুমি তা টের পাবেনা কিন্তু একদিন সময় হলে ঠিক বুঝতে পারবে তুমি কত বড় ভুল করেছো।আসি থাকো তুমি তোমার জেদ নিয়ে।
বলে মাহিয়াত আর দাড়ালোনা বাড়ির বাইরে চলে গেলো পিছন থেকে নুহা তাকে অসংখ্যবার ডাকলো কিন্তু সে তা কর্ণপাত করলো না নুহার পেছনে পেছনে তার বড় মাও গেলো। এতে যেনো নুহার মা নয়নের মাথায় আগুন ধরে গেলো, তার মনে হতে লাগলো এ সব কিছুর জন্য সে দায়ী। তার জন্য তার স্বামী তার সামনে থেকেও দূরে তার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত তার মেয়ের আস্তে আস্তে তার থেকে দূরে সরে যাচ্ছে শুধুমাত্র তার কারণে।আর তার মেয়ের সংসার ভাঙ্গার কারণে সেই দায়ী।
নুহা কাঁদতে কাঁদতে দরজায় বসে বললো তার বড় মা আমেনা তাকে ধরে রাখলো,
—এগুলো কি ধরনের পাগলামী নুহা?শুধু শুধু কেন ছেলেটাকে কষ্ট দিলে?নিজেও কষ্ট পাচ্ছ।তোমার কোন ধারনা নেই তুমি কত বড় ভুল করতে যাচ্ছো।মুখে তো বলেই দিয়েছো আরেকটা বিয়ে করতে কিন্তু সহ্য করতে পারবে তো এই মরণ জ্বালা?আমি জ্বলেছি আমি জানি এখনো সময় আছে সবকিছু মিটমাট করে নাও।
—চুপ কর তুমি,সব তোমার কারণে হয়েছে। তোমার তো খুশি হওয়া উচিত তোমার অভিশাপ কাজে লেগেছে।এমন কিছুই তো তুমি চাইছিলে এতো কাল। আর এখন বসে বসে ওকে সান্ত্বনা দেয়ার নাটক করছো?চালবাজ মহিলা ইচ্ছে করে আমাদের ঘাড়ের উপর পড়ে আছো এতো বছর ধরে। কেনো চলে গেলেনা সেদিন? তোমার সামান্য তম আত্মসম্মান বোধ নেই যে স্বামী আরেকটা বিয়ে করেছে মানে তার সাথে সংসার করতে চায় না।কিন্তু তারপরেও বোঝা হয়ে তার ঘাড়ে ঝুলে রইলে আমাদের সুখের সংসারটাকে তচনচ করার জন্য।প্রথমে আমার স্বামীকে বশ করলে তার পর আমার ছেলেকে কানপড়া দিতে শুরু করলে তাইতো তোমার থেকে মাসির দরদ তার কাছে বেশি তারপর এখন আমার দুই মেয়েকেও ছাড়লে না তাদেরও আমার বিরুদ্ধে করে দিলে। আর আজ আমার মেয়ের সংসারে ঝড় বইছে আর তুমি তাকে সান্তনা দিয়ে নিজের পক্ষে করে নিতে চাও? চলে গেলেনা কেনো তুমি…ঠাসসস
এতক্ষণ নিজের মধ্যে এত বছরের যত রাগ ছিলো তা আমেনার উপর ঝাড়ছিল নয়ন কিন্তু আর বেশিদূর আগাতে পারল না তার আগেই আনোয়ার সাহেব তার গালে থাপ্পড় লাগিয়ে দিল। মিসেস নয়ন আবাক চোখে তার দিকে তাকাল আর দরজার পাশেই এতক্ষণ তাদের সবকিছু দেখছিল মিসেস আমেনার বড় ছেলে আরাফ। সে কোনো কথা না বলে মাকে টেনে ঘরে নিয়ে গেলো আর তার আর তার মায়ের কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আর কাপড় নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে বেরিয়ে পড়ল। আজকে আমেনা আর কিছু বললো না সত্যি সত্যিই নিজেকে এই বাড়ির ঝামেলা মনে হচ্ছে। সত্যিই তো বলেছে নয়ন সে যদি সেদিন বাবার সাথে চলে যেতো তাহলে তারা সুখে সংসার করতে পারতো।
তাদের ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে আসতে দেখে আনোয়ার সাহেব উদ্বিগ্ন হয়ে তাদের সামনে গেল,
—একি তোমার হাতে এতো ব্যাগ কেনো? কোথায় যাচ্ছো তোমরা আরাফ?
—আমরা এখান থেকে চলে যাচ্ছি।যা আমাদের অনেক আগেই করা উচিত ছিল কিন্তু আমার মা তো নির্বোধ এতদিন হাজার বার বুঝিয়েছি তাকে এই বাড়িতে তুমি বোঝা ছাড়া কিছু নও।তোমার কোন দাম নেই এখানে কিন্তু সে বুঝেও না বুঝার মত পড়ে রয়েছে মিথ্যা একটা সম্পর্কের জের ধরে।অনেক সহ্য করেছি আপনাদের স্বামী স্ত্রীর নাটক কিন্তু আর না আজ আপনার স্ত্রী যা করলো তার পরেও আমি আমার মাকে এক মুহূর্তের জন্যও এ বাড়িতে রাখবো না। আল্লাহ হাফেজ দোয়া করবেন এটাই যেন আমাদের শেষ দেখা হয়।
আনোয়ার সাহেব করুন চোখে আমেনার নির্জীব চোখের দিকে তাকাল,
—এমন কথা বলে না বাবা।যা হয়েছে ভুলে যাও।আমি তো নয়নকে শাস্তি দিয়েছি। সংসারে এমন হয়ই তাই বলে তোমরা বাড়ি ছেড়ে চলে যাবে এটা কেমন কথা?এটা তো তোমাদেরও বাড়ি।জেদ করে না বাবা মাকে নিয়ে ঘরে যাও।কি হলো আমেনা ছেলেকে কিছু বলো নাকি তুমিও আমাকে ছেড়ে চলে যেতে চাও?
—আমি আপনার সাথে ছিলামই কবে নুহার বাবা যে ছেড়ে যাওয়ার কথা হচ্ছে।আমি তো আমার ভূবনে বাস করতাম মনে মনে সংসার পাততাম আমার ছেলে মেয়েরাই ছিলো আমার সব।আর আজকে আমাকে অপবাদ দেয়া হচ্ছে আমি তাদেরকে তাদের মায়ের বিরুদ্ধে নিয়ে যাচ্ছি।এত বছর অনেক কিছু সহ্য করেছি কখনো গায়ে মাখিনি কিন্তু আমার উপর এমন অভিযোগ আমি সহ্য করবো না। তার থেকে আমার চলে যাওয়া ভালো।
—আয় আরাফ বলে বেরিয়ে যেতে নিয়ে আবার নয়নের সামনে দাঁড়ালো।সে এখনো গালে হাত দিয়ে বিস্ময় নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে যেন বিশ্বাস করতে পারছে না তাকে তার স্বামী মেরেছে,
—একটা কথা কি জানো নায়ন বাবা-মায়েরা সন্তানকে কখনোই অভিশাপ দেয় না তারা শুধু ভালবাসতে জানেন বিনিময়ে কিছুই চায়না আমি নুহা নুহাশ আর আয়রাকে নিজের সন্তানের মত দেখেছি ভালোবেসেছি। কখনো সৎ সন্তান মনে করিনি বা তোমার নামে তাদের বিষিয়েও দেই নি।তারা যথেষ্ট বড় হয়েছে ভালো খারাপ ন্যায় অন্যায় বোঝে।আর কি জেনো বলছিলে কেড়ে নেওয়ার কথা।কেড়ে নেওয়ার কথাই যদি হয় তাহলে তুমি আমার কাছ থেকে আমার স্বামী আমার সংসার আমার সুখ আনন্দ এতগুলো বছর সবকিছু কেড়ে নিয়েছো আমি না। যাও এতদিন অপ্রয়োজনে নিজের মনে করে আগলে রেখেছি আজ সবকিছু তোমাকে দান করে গেলাম এই স্বামী-সংসার সব তোমাকে দিয়ে গেলাম আমি কখনোই এখানে আর কোনো দাবি নিয়ে আসবো না। অনেক বছর তোমার সাথে থেকেছি অনেক জ্বালিয়েছি তার জন্য মাফ করে দিও। আল্লাহ হাফেজ।
বলে আরাফের হাত ধরে বেরিয়ে পড়লো সংসার নামক এই মায়াজাল থেকে। আনোয়ার সাহেব স্তব্ধ হয়ে তাদের যাওয়ার পানে তাকিয়ে আছে।আজ সত্যিকার অর্থে তার ভালোবাসাকে হারালো। এমনটা তো আরো আগেই হওয়ার কথা ছিল সে জানত কিন্তু সে মেনে নিতে পারছে না।আর তাদের আটকাতেও পারছে না কোন অধিকারে আটকাবে তাদের? তাদের প্রতি কোনো দ্বায়ীত্ব আদোও তিনি পালন করেছেন?চোখ বন্ধ করে সে অতীতে ফিরে গেলো মনে পড়ে গেলো তাদের বিয়ের দিনের কথা লাল টুকটুকে শাড়ি পড়ে নিজের থেকে অর্ধেক বয়সের একটা মেয়ে ফুলের বিছানায় বসে আছে তখনি তার রুপে মুগ্ধ হয়েছিলো সে তারপর আস্তে আস্তে তার সংসারি হয়ে উঠা বাচ্চার মা হওয়া নিজের ব্যস্ততার মধ্যে দিয়েই সবচেয়ে বড় ভুল করলো সে।নয়নকে বিয়ে করা আমেনার সাথে বিচ্ছেদ নয়নের সাথে সংসার আমেনার শূন্যতা তাকে কাছে না পাওয়ার হাহাকার ছেলেমেয়েদের দ্বায়ীত্ব।না পাওয়ার বেদনা আর আজ সত্যিকার অর্থেই বিচ্ছেদ। অজান্তেই তার চোখের কর্ণিশ বেয়ে দুফোঁটা অশ্রু ঝরে পড়লো।
নুয়া দরজার পাশ থেকে উঠে এসে নয়নকে বললো,
—হয়েছে শান্তি তোমার? এবার এই পুরো সংসারের মালিক তুমি থাকো তা নিয়ে।বলে উপরে ঘরে চলে গেলো আনোয়ার সাহেব চলে গেলো আমেনার ঘরের দিকে যদি তার ছোঁয়ার কোনো জিনিস থাকে নিজের কাছে স্বজত্নে রেখে দেবে।যেমন চুরি করে রেখে দিয়েছে তার ব্যবহিত শাড়ি গুলো।যেগুলোতে তার ঘামের গন্ধ মিশে আছে।যা সে এতগুলো বছর যাবৎ সবসময় নিজের পাশে নিয়ে শুয়েছে।আর আমেনার অস্তিত্বকে অনুভব করেছে।
নয়ন মূর্তির ন্যায় আরো কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে রইল তারপর ঘরে গিয়ে নিজেকে শান্ত করে নুহার শাশুড়ি কে ফোন করলো।প্রথমে মাহিয়াতকে বিয়ে না দেয়ার অনুরোধ করলো কিন্তু তাতে কাজ হলো না তাই তাকে কেস মামলার হুমকি দিলো তাতেও কাজ হলো না উল্টো তাকে আর তার স্বামীকে জরিয়ে তাদের বিয়েকে জরিয়ে আরো অপমান করে দিলো। নুহাকে তার পছন্দ না করার একটাই কারণ তার বাবা দুটো বিয়ে করেছে আর দুই স্ত্রী নিয়ে একই বাড়িতে থাকে ওই বাড়ির সন্তানেরা আর কতটুকুই বা ভালো হবে? তিনি নুহাকে ফিরতে নিষেধ করে দিলো।নয়ন ফোন রেখে দিলো তাকে বুঝিয়ে কি লাভ যেখানে নিজের মেয়েকেই বোঝাতে পারছে না।সে চেষ্টা করেছে বাকিটা আল্লাহর হাতে।সে যা করে নিশ্চই সবার মঙ্গলের জন্য করে।
মিসেস আজমীন(মাহিয়াতের মা) নুহার মায়ের সাথে তর্ক করলেও ভিতরে ভিতরে খুব ভয় পেয়ে গেছেন। সত্যি যদি পুলিশে খবর দেয় বা বেশি দেরি করলে যদি নুহার মত পাল্টে যায় তাহলে হাজার চেষ্টা করেও মাহিয়াতকে বিয়ে দিতে পারবে না। তাই যা করার তাড়াতাড়ি করতে হবে সে ফিমার মাকে ফোন দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব বিয়ের আয়োজন করতে বলল।আর ব্যাপারটা ফিমার মায়ের কাছে মেঘ না চাইতে জল এর মত হয়ে গেল। দুদিনের মাথায় তাদের বিয়ের দিন ঠিক হলো মাহিয়াতও জেদের মাথায় বিয়ের জন্য রাজি হয়ে গেল। সে এই দুই দিন নুহার সাথে কোনো যোগাযোগ করেনি।নুহা হাজার বার চেষ্টা করছে আর ফিমা সে তো হুকুমের গোলাম মাত্র।
ফিমার ভাইকে তার বিয়ের কথা জানিয়েছে কিন্তু সব সঠিক তথ্য দেয় নি। এমনিতে সে খুব খুশি হয়েছে কিন্তু হঠাৎ বিয়ে হওয়ার কারণে সে ছুটি পায়নি। কিন্তু কথা দিয়েছে খুব দ্রত বাড়িতে ফিরে ফিমার সাথে দেখা করবে।
কথা অনুযায়ী ফিমা আর মাহিয়াতের বিয়ে ঘরোয়া ভাবে হয়ে গেলো।কিছু মানুষ হাফ ছেড়ে বাঁচলেও এই সম্পর্কের কারণে কিছু মানুষের নিশ্বাস আটকে আসতে শুরু করলো। বিদায়ের সময় ফিমার চোখ থেকে এক ফোঁটা জলও গড়ায়নি। একদম পুতুলের মত চলে এসেছে ফাহি অনেক কান্না করেছে।সে বারবার নিজেকে দোষারোপ করছে।
।
।
।
বাসর ঘরে বসে আছে ফিমা…
চলবে…