এই রাত তোমার আমার পর্ব ৬

#এই_রাত_তোমার_আমার
#সানজিদা_ইসলাম
#৬ষ্ঠ_পর্ব

(বাবার বাড়ি এসেছি তাই দুই দিনের ছুটি দিলাম নিজেকে)

বাসর ঘরে বসে আছে ফিমা এটাকে বাসর ঘর বললে ভুল হবে । এখানে নেই কোনো ফুলের ছোঁয়া আর নেই কোনো বিশেষত্ব আর না আছে তার পরনে কোনো বেনারসী। একটা মিষ্টি রংএর জামদানি শাড়ি পড়ে আছে সে। গলায় ছোট একটা হার হাতে মোটা মোটা দুটো স্বর্ণের বালা আর নাকের ছোট্ট একটা স্বর্ণের নাকফুল মাথায় খোঁপা করা তাতে রাজনীগন্ধা আর গোলাপের মিশ্রণে একটা মালা গাথা। মুখে প্রসাধনী বলতে আইলাইনার কাজল আর নুড কালারের লিপস্টিক দেয়া।সে বর্তমানে পরিপাটি একটা রুমে বসে আছে তার শাশুড়ি তাকে এখানে থাকতে বলেছে।সে প্রায় দুই ঘণ্টা যাবৎ একই ভাবে বসে আছে আসলে সে বুঝতে পারছেনা তার কি করা উচিৎ?মাহিয়াতের জন্য অপেক্ষা করা উচিত নাকি শুয়ে পড়া উচিত। একবার ভাবছে শুয়ে পড়বে আবার ভাবছে সে এসে তাকে শুয়ে পরতে দেখে যদি রেগে যায়?

সে আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলো তারপর লাগেজ থেকে একটা শাড়ি বের করলো। এগুলো সব তার বর্তমান শাশুড়ি তাকে দিয়েছে আর বলেছে সবসময় শাড়ি পরে থাকতে মাহিয়াত শাড়ি খুব পছন্দ করে। আরো বলেছে তার সামনে বেশি বেশি সেজে গুজে থাকতে সবসময় তার সাথে সাথে থাকতে তাহলে আর ঐ মেয়ের কথা মনে পড়বেনা।আর সে চায়না নুহা আর এই বাড়িতে আসুক। সে ফিমাকেই মাহিয়াতের বউ করে রাখতে চায়।আর তার বিশ্বাস একবার বাচ্চা হলে তার ছেলে আর ফিমাকে ছাড়তে পারবে না তাই ঐ মেয়েই ডিভোর্স দিয়ে দিবে। ঐ মেয়ের যা ঝাঝ এই ঝাঝ নিয়ে সে সতীনের সংসার করবে না।আবার করতেও পারে এই মেয়ের পরিবারই নাকি এমন। এরা নাকি সতীনের সংসার করে অভ্যস্ত।

আরো নানান কথা বলে গেছেন উনি উনার ছেলের ব্যাপারে কিভাবে তাকে ভুলিয়ে রাখা যাবে। কিন্তু সে তো আর জানে না সব সমস্যার সমাধান তার ছেলে আগেই করে রেখেছে।সে শুধু কিছুদিনের মেহমান মাত্র এখন তাকে প্রয়োজন তাই এখানে সসম্মানে রাখা হচ্ছে কিন্তু প্রয়োজন শেষ হলেই তাকে ছুঁড়ে ফেলা হবে।মাহিয়াতের ছোট বোন আসেনি বিয়েতে সে সবার এ সব ন্যাকামো দেখতে পারবে না।




বিয়ে করে ফিমাকে ঘরে রেখেই মাহিয়াত তার বাইক নিয়ে নুহাদের বাড়ি চলে গেলো‌।

নুহা আজ তিনদিন যাবৎ ঠিক মত খাবার খায় না কারো সাথে কথা বলে না। সারাদিন ঘরের দরজা বন্ধ করে বসে থাকে আর মাহিয়াতের নম্বরে একের পর এক কল মেসেজ দিতে থাকে কিন্তু মাহিয়াত রেসপন্স করে না।এই কারণে সে আরো বেশি ডিপ্রেসড হয় যাচ্ছে।

ঘরের দরজা জানালা সব বন্ধ করে লাইট নিভিয়ে সে তার আর মাহিয়াতের সুন্দর সুন্দর মুহূর্তের ছবি গুলো স্ক্রাল করে দেখছিল হঠাৎ স্ক্রিনে কল এলো সেই কাঙ্খিত ফোন কল উত্তেজনায় সে তারাতাড়ি ফোন রিসিভ করে কান্না করে দিলো,

—কান্না কেনো করছো নুহা?

—আমার খুব খারাপ লাগছে মাহি কেনো বলতে পারো?

—সত্যিই তোমার খারাপ লাগছে? আচ্ছা তারাতাড়ি নিচে নেমে এসো তোমার জন্য সারপ্রাইজ আছে হয়তো তুমি খুশি হয়ে যেতে পারো।

—আসছি, বলে নুহা বাইরে বেরিয়ে গেলো মাহয়াত বাইকের উপর ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে।নুহাকে ছুটে তার কাছে আসতে দেখে সে তাকে সাবধান করে দিলো যে আশেপাশে মানুষ আছে কিন্তু সে তার কথাকে উপেক্ষা করে রাস্তায়ই তাকে জড়িয়ে ধরলো।

—কি করছো নুহা আশেপাশে মানুষ আছে আমাদের দেখছে‌ ছাড়ো।

—দেখুক আমার কিছু যায় আসে না।তুমি এ কয়দিন আমার সাথে যোগাযোগ করোনি কেনো? জানো আমি কত কষ্ট পেয়েছি। তুমি এতো পাষাণ হলে কি করে হতে পারলে?তুমি জানো না তোমার সাথে কথা বলা ছাড়া আমি থাকতে পারি পারি না। তুমি খুব খারাপ। খুব।

—কষ্ট তো আমিও পাচ্ছি নুহা কিন্তু তোমার কাছে তো আমার কষ্টের দাম নেই কিন্তু আমার কাছে আছে তাইতো দেখো তোমাকে খুশি করার জন্য তোমার ইচ্ছে পূরণ করে এলাম।আজ আমি বিয়ে করেছি নুহা তুমি খুশি তো?

নুহা সাথে সাথে মাহিয়াতকে ছেড়ে দিলো একটু দূরে দাঁড়ালো তার দিকে তাকিয়ে দেখলো সে আজ একটা গোল্ডেন কালারের পাঞ্জাবি পরেছে কি সুন্দরই না লাগছে তাকে দেখতে।সচারাচর তাকে পায়জামা পাঞ্জাবি পরতে দেখা যায় না। জুম্মার সময়ও টিশার্ট বা শার্ট আর প্যান্ট পরে নামাজে যায়। কিন্তু নুহার কাছে তাকে পাঞ্জাবি পরা অবস্থায় দেখতে খুব পছন্দ করে কিন্তু শত বলেও তাকে তা পরানো যায় না অথচ আজ?আজ তার বিয়ে তাই হয়তো পরেছে নাকি বিয়ে হওয়ার সাথে সাথেই তার পরিবর্তন শুরু হয়ে গেছে?

—কি হলো কি ভাবছো?আর দূরে চলে গেলে কেনো খুশি হওনি?

—তুমি আজ বিয়ে করেছ আমাকে বলনি কেনো?

—কেনো তুমিও আসতে বুঝি?

—না তা না এমনি বললাম।তো এখানে দাঁড়িয়ে আছো কেনো?বাড়ি যাও নতুন বউ অপেক্ষা করছে আর এমনিতেও অনেক রাত হয়ে গিয়েছে।

—হুম যাচ্ছি তো। চিন্তা করলাম তোমাকে একবার বলে যাই।

হুম শুধু শুধু না এসে ফোনে বললেও পারতে।

হ্যা শুধু শুধুই এসেছি। ফোনে বললেও পারতাম কিন্তু কি বলতো এত বড় একটা খুশির খবর ফোনে কিভাবে দেই তাই ভাবলাম সামনাসামনি এসে বলি আর তোমার খুশিটুকু নিজের চোখে দেখে নেই কিন্তু তোমাকে দেখে তো মনে হচ্ছে না তুমি তেমন একটা খুশি হয়েছো।

নুহা ছলছল চোখে মাহিয়াতের দিকে তাকালো তার ভেতরটা যে কেমন করছে তা মাহিয়াত খুব ভাল করেই আন্দাজ করছে তবুও তাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য বারবার এমন করে বলছে তা সে বেশ ভালই বুঝতে পারছে।তাই সেও মুখে হাসির রেখা টেনে বললো,

—খুশি হয়েছি তো খুব খুশি হয়েছি আমার ইচ্ছে পূরণ হতে যচ্ছে কয়েকদিন পর তুমি বাবা হবে আমি মা হবো আমাদের সংসার পরিপূর্ণ হয়ে যাবে। তাহলে আমার থেকে বেশি কে খুশি হবে বলো। আচ্ছা শোনো তুমি বাড়ি চলে যাও ঐ মেয়েকে বেশি অপেক্ষা করিও না।আমি আসি ঠিক আছে।

বলে নুহা মুখ লুকিয়ে চলে যেতে নিলে মাহিয়াত তাকে হাত ধরে আটকে দিল কিন্তু নুহার কেমন জানি লাগলো।মাহিয়াতের ছোঁয়া আজ তার কাছে পরপর লাগছে সে‌ হাত ছোটাতে চাইলে মাহিয়াত নিজেই ছেড়ে দিয়ে বললো,

—হুম যাবো আমাকে তো যেতেই হবে আজ আমার বাসার রাত না? আমার তো আনন্দের দিন।আজ তাহলে আসি বলে বাইক স্টার্ট দিয়ে চলে গেলো আর নুহা নিজের কান্না চেপে রেখে ঘরে চলে গেলো।




ফিমা ওয়াশরুম থেকে ফ্রেস হয়ে কাপড় বদলে নিলো ঘড়ির কাঁটায় দুটো বাজে তার ঘুম আসছে না।আর মাহিয়াতও ঘরে নেই তাই সে তার ঘরের সাথে লাগোয়া বারান্দায় চলে গেলো। সেখানে গিয়ে সে অভিভুত হয়ে গেলো বিশাল বারান্দায় এপার থেকে ওপার পর্যন্ত নানান ধরনের গাছের সমাহার।ছোট ছোট কয়েকটা টব উপর নিচে করে গ্রিলে বেঁধে দেয়া আছে তার থেকে কিছু লতালো গাছ পুরো গ্রিল আবদ্ধ করে রেখেছে জায়গায় জায়গায় লাল ফুল গুলো চাঁদের আলোয় স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।কি সুন্দর সেই দৃশ্য। বারান্দার বা পাশে সাদা একটা দোনলা রাখা আর পুরো বারান্দায় সবুজ ঘাসের মতো কার্পেট বিছানো।হাজার মনখারাপ বিষণ্নতা যেন এক মুহূর্তেই কেটে গেল ফিমার। সে দেয়ালে হেলান দিয়ে নিচে বসে পরল আর চাঁদের দিকে মুখ করে চোখ বন্ধ করে উপভোগ করতে লাগল মৃদু বাতাস।আর রাতের ঘুম সে তো আজ চার বছর যাবত নেই।

মাহিয়াত বাড়ি ফিরে সরাসরি তার বেডরুমে চলে গেলো তার পরনের পাঞ্জাবি খুলে ছুড়ে ফেললো নিচে তারপর বিছানায় শুয়ে ফোনে তার আর নুহার বিয়ের ছবি গুলো দেখতে লাগলো।আজ মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে ফেলেছে সে কিন্তু তার পরেও একবার বলে নি মাহি তুমি যেও না চলো আমরা পালিয়ে যাই বরং নতুন বউ এর কাছে যেতে বলেছে।তাইতো রাগের মাথায় এমন করলো।সেও বুঝুক তার মাহির কষ্ট।

সে যে ফিমা নামক প্রানিকে আজ বিয়ে করছে সে যে তার অপেক্ষায় ছিলো তা তার মাথা থেকে সম্পূর্ণ বেরিয়ে গেছে। এখানে আসার পর একবার খোঁজ পর্যন্ত নেয়নি মেয়েটার তাকে দেখে রাখার দ্বায়ীত্ব তো তারই ছিলো।

অন্যদিকে নিদারুণ যন্ত্রনা নিয়ে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে নুহা। সে ভেবে পায়না কি করে সে নিজে এতো পাষাণ হতে পারল। কি করে মাহিকে বিয়ে দিয়ে দিলো? এখান যে সে আর সহ্য করতে পারছে না।কি হতো যদি মাহির কথা শুনে তার সাথে চলে যেতো? একবার তার কথা শুনতো? আচ্ছা মাহিও কি তার মত কষ্টে আছে নাকি এতক্ষণে নতুন বউ এর ভালোবাসায় মজে আছে?ঐ মেয়েটা যদি তার মিহিকে বশ করে নেয় ছিনিয়ে নেয় তাকে তার কাছ থেকে তখন কি করবে সে? কিভাবে বাঁচবে মাহিকে ছাড়া।

তিন জন মানুষ নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে তিন ধরনের অনুভূতি আর যন্ত্রনা নিয়ে।

সকালে ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় যাওয়া মিহিয়াতের অভ্যাস।এই অভ্যাস অবশ্য নুহাই করিয়েছে।তার বাগান খুব প্রিয় তাই বারান্দাকেই ছোট খাট একটা বাগান বানিয়ে ফেলেছে।রোজ সকাল ভোরে উঠে সে গাছে পানি দেয় আর মাহিয়াতকেও সাথে করে নিয়ে আসে‌ সকালের বাতাস গায়ে লাগানোর জন্য তাহলে নাকি দিন ভালো যায়। সকালটা সুন্দর কিছু দেখে শুরু করলে নাকি মন ভালো থাকে আর তার মতে তার বাগান যে কারো চোখ জুড়িয়ে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট কিন্তু মাহিয়াতের কাছে নুহার বাগানের সুন্দর দৃশ্য থেকে নুহার ঘুম জড়ানো ফোলা ফোলা চোখ বেশি সুন্দর মনে হয়।তার কাছে সকালের বাতাস গায়ে লাগানোর চেয়ে নুহার ভেজা চুলের ছোঁয়া বেশি উপভোগ্য মনে হয়।

মাহিয়াত অভ্যাস বসত বারান্দায় গিয়ে কিছুক্ষণ দাঁড়ালো তারপর প্রণভরে কিছুক্ষণ নিঃশ্বাস নিয়ে চলে যেতে নিলেই বারান্দার এক পাশে এক ঘুমন্ত রমনীর দিকে চোখ পরতেই মনে পরলো গতকাল সে বিয়ে করছে আর মেয়েটাকে এ বাড়িতে নিয়ে এসেছে অথচ একবারও খোঁজ নেয়নি।সে বোধহয় তার জন্য অপেক্ষা করতে করতে এখানেই ঘুমিয়ে পরেছে। মাহিয়াত কাল তার বেডরুমে ছিল আর ফিমাকে বোধহয় গেস্ট রুম দেওয়া হয়েছিল তাই তাকে তার চোখে পরেনি।আসলে মাহিয়াতদের বাড়িতে এই দুই রুমের একটাই কমন বারান্দা তাই বারান্দাটা এতো বড়। মাহিয়ার ধীর পায়ে ফিমার দিকে এগিয়ে গিয়ে তাকে আস্তে করে ডাক দিল,

—ফিমা,ফিমা উঠুন…

দুবার ডাকেই ফিমার ঘুম ছুটে গেলো চোখ খুলে সামনে মাহিয়াতকে দেখে সে তরিঘরি করে উঠতে নিলে ঘাড়ে ব্যথা পেলো। সারারাত বসে ঘুমানোর কারণেই এই সমস্যা হয়েছে।

—আরে আরে আস্তে আপনি এমন তাড়াহুড়া করছেন কেন? আগে বলুন আপনি এখানে কি করছিলেন ঘরে কি ঘুমানোর জায়গা ছিল না?

ফিমা কাচুমাচু হয়ে উত্তর দিলো,
—আসলে ঘুম আসছিলো না তাই বারান্দায় বসে বসে গাছগুলো দেখছিলাম আর কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি খেয়াল করিনি।

—ঠিক আছে উঠুন ঘরে গিয়ে ফ্রেশ হয়নিন কিছুক্ষনের মধ্যেই মা নাস্তার জন্য ডাকবে। আর ঘাড়ের জন্য একটা ঔষধ দিচ্ছি লাগিয়ে নিবেন তাহলেই দেখবেন ঠিক হয়ে গেছে।

—জি।

বলে ফিমা ঘরে চলে গেল। কিছুক্ষণের মধ্যেই সে গোসল করে একেবারে নিচে নামলো। দুজনকে দুই রুম থেকে বের হতে দেখে আজমীন ভ্রু কুঁচকালো। কিন্তু কাউকে কিছু বললো না‌। খাওয়া দাওয়া শেষ করে মাহিয়াত বাইরে চলে গেলো আর ফিমা তার ঘরে।

দেখতে দেখতে কেটে গেলো দুমাস তারা এখন এক ঘরে থাকে। বিয়ের কিছু দিন যেতেই আজমিন মাহিয়াতের সব কাপড়চোপড় আর জিনিসপত্র সীমার ঘরে শিফট করে দেয় তাই একপ্রকার বাধ্য হয়েই এই রুমে থাকা এর মধ্যে ফিমা আর মাহিয়াতের সম্পর্কের কোনো উন্নতি হয়নি।দিনে দুই একবার বার খবরা-খবর নিলেও রাতে একদম চুপ করে থাকে দেরি করে বাড়িতে ফিরে আর সারারাত ছটফট করতে থাকে ঠিক মত ঘুমায় না।ফিমা খেয়াল করছে ইদানিং মাহিয়াতের মেজাজ কেমন জেন খিটখিটে থাকে অকারণেই মাঝে মাঝে জিনিসপত্রের উপর তার রাগ জাহির করে ফিমা আড় চোখে দেখেও কিছু বলে না তার কিছু বলার অধিকার নেই।

ফিমার সারাদিনের বেশিরভাগ সময় কাটে বারান্দায়। রান্না করার জন্য লোক আছে তাই ঝামেলা পোহাতে হয় না মাঝে মাঝে আজমিন এর সাথে গল্প করে। এতে আজমীন খুব খুশি হয়ে যায়।আর তার বেশিরভাগ গল্পই থাকে মাহিয়াত কে নিয়ে তার ব্যাপারে কিছু শোনার ইচ্ছে না থাকা সত্বেও তার মন রক্ষায় হাসি মুখে শুনে যেতে হয়। এছাড়া মাহিয়াতের খাবার গরম করে বেরে দেয়া অফিসে যাওয়ার সময় সবকিছু এগিয়ে দেয়া অফিস থেকে ফিরলে তার প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গুছিয়ে দেওয়ায় তার কাজের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।

ফিমা আর মাহিয়াতের সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন না হলেও নুহা আর মাহিয়াতের সম্পর্কে অনেক পরিবর্তন এসেছে।মাহিয়াত প্রতিদিন তার বাড়িতে যায় তার সাথে কথা বলে তাকে কাছে পেতে চায় কিন্তু সে এক প্রকার তাকে এরিয়ে চলে ভালো ভাবে কথা বলে না ছুঁয়ে দিতে চাইলে রেসপন্স করে না যেনো তাদের সম্পর্কের মধ্যে বিশাল একটা দেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এতে মাহিয়াতের দোষ কোথায় যে তো চায়নি বিয়ে করতে নুহা তাকে ফোর্স করেছে এখন নিজেই তাকে ইগনোর করছে।আর এ সবকিছুর প্রতিক্রিয়া পরছে ফিমার উপর।

বিয়ের পাঁচ মাস পর,
ফিমা বিছানার উপর বসে আছে হাতে তার ছোট একটি সাদা কাঠির মত বস্তু যার স্পষ্ট দুটো লাল দাগ তার গর্ভে কারো অস্তিত্ব জানান দিচ্ছে। কিন্তু সে বুঝতে পারছে না প্রথম মা হওয়ার অনুভূতি পেয়ে তার খুশি হওয়া উচিত নাকি তাকে নয় মাস গর্ভে লালন পালন করে পৃথিবীতে এনে তাকে ছেড়ে যেতে হবে এই দুঃখে কাতর হওয়া উচিত।চোখ বন্ধ করেই ফিমা চলে গেলো দুই মাস আগের দিনগুলোতে…

চলবে…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here