#তাহারেই_পড়ে_মনে
পর্ব নয়
এবারে বোধহয় অন্য পরীক্ষা দেওয়ার সময় হলো মিষ্টির। পড়ায় মন দিতে ভুল হলো, রাতের ঘুম নামতেও চোখের আলস্য লাগলো, ক্ষিধেতেষ্টাবোধও ওকে ফাঁকি দিতে চেষ্টা করলো। নোটকপিগুলোতে প্রিন্সের নাম লিখে ভরিয়ে ফেললো, এলোমেলো চিন্তায় পাগলপারা হলো! ক্লাসের শেষে, লাইব্রেরিতে ঢোকার মুখে, বেরোতে বেরোতে কিংবা হলের গেইটে প্রিন্সের অপেক্ষায় চোখ কাতর হলো। শুধু মনে হতে লাগলো এই মনে হয় প্রিন্স সামনে এসে দাঁড়াবে, হঠাৎ করে পেছন থেকে হাত ধরে বসবে কিংবা দূর থেকে ডাকবে এসে! ইদের ছুটিতে বাড়িতে গিয়েও মন আনচান করতে লাগলো – এই বোধহয় প্রিন্স এসে দাঁড়ালো রাস্তার মাঝে কোথাও। মিষ্টিকে দেখতে না পেয়ে রেগে যাবে খুব, ওতো আর বলে আসতে পারেনি!
মনের ভিতর যতটা দ্বিধা ছিলো, যা কিছু সংশয় সব ধুয়ে গেলো গোপন কান্নার জলে। অবিন্যস্ত, অবুঝ, অভদ্র, অশালীন ছেলেটাকে মনপ্রাণ দেওয়া হয়ে গেছে তা আজ মনপ্রাণ দিয়েই বুঝলো মিষ্টি।
নিজের উপরে নিজেরই খুব রাগ হতে রাগলো। সব মানুষের যে ওরই মতো নিয়মতান্ত্রিক, বুঝদার, ধৈর্যশীল হতে হবে এমন কোনো কথা আছে! আক্ষরিক অর্থেই ও কাটা মুরগির কতো তড়পাতে লাগলো।
ছোট পকেট আয়না ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখলো কতক্ষণ – গড়পড়তা সাধারণ চেহারা, আলাদা করে চোখে পড়ে না, চটক নেই অতিরিক্ত, সাজের বাহুল্য নেই, পোশাকেও অতি সাধারণ, শিক্ষা ছাড়া উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া কোনো সম্পদ নেই – কেন ভালোবাসে ওকে প্রিন্স? ওই ছেলের রাণি হতে তো রাজ্যসহ রাজকন্যারা প্রস্তুত আছে!
আর মিষ্টিই বা কেন চায় প্রিন্সকে? না আছে মিষ্টির সাথে মানানসই শিক্ষাগত যোগ্যতা, না আছে কোনো এম্বিশন! মিষ্টির জন্য কোনো এক ভদ্র, সুশিক্ষিত, মার্জিত, ক্যারিয়ালিস্ট কাউকেই মনোনিত করবে ওর বাবা মা!
বহুদিনের অদর্শনে আজকে মিষ্টির মনের এইদিকটা পরিষ্কার হয়ে গেলো। ভালোবাসা কোনো শর্তের মুখাপেক্ষী হয় না, গজফিতায় মেপে আর ক্যালকুলেটরের বোতাম চেপে চেপে প্রেম হয় না। আজকে ও নিশ্চিত বুঝলো – জীবনে ওর ওই দুষ্ট প্রিন্সকেই চাই! কিন্তু সেই বান্দা কই? তার তো খবর নেই! সেইযে ওকে কাঁদিয়ে চলে গেলো, আর মনে করবে না বলে হুমকি দিয়ে গেলো – আর তো এলো না! মিষ্টি ভেবে রেখেছিলো রাগ পড়ে গেলেই চলে আসবে। খুব বেশি অপমান করে ফেলেছে কি মিষ্টি – ভালোবাসার চাইতে আত্মসম্মানবোধ কি বড় হয়ে গেলো প্রিন্সের কাছে? যোগ্যতার প্রশ্ন টেনে এনে অনেক বেশি কষ্ট দিয়েছে ও প্রিন্সকে?
অনেক বেশি আনপ্রেডিক্টেবল ছেলেটা। কিছু উল্টোপাল্টা করে বসেনিতো? ভুলে যায়নিতো মিষ্টিকে? আসলেই যদি মিষ্টিকে ভুলে যায়, যদি অনেক দূরে সরে যায় – এসব খেয়ালেই বিপর্যস্ত হলো ও! কি হতো একটা মোবাইল থাকলে? জাফরিনও কিনে দিতে চেয়েছে – প্রায় সবার হাতে হাতেই ফোন আছে এখন। পড়াশুনোয় বিঘ্ন হবে বলেই সেই প্রস্তাব নাকচ করেছে ও নিজেই। নিজের পাকামোতে আজ নিজেরই চুল ছিঁড়তে ইচ্ছে হচ্ছে! হলে উঠেছে দুদিন ও। প্রথমদিন থেকেই দেখে আসছে রুমমেট বড় আপুরা কি সুন্দর ফোন কানে নিয়ে রাত পার করছে আবার পড়াশুনায়ও সমানভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। মিষ্টি কেন এতোটা ভাবে – এতো কঠোর আত্মসংযম কি ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়? যদি প্রিন্সই হারিয়ে যায় তবে সেই সোনালি ভবিষ্যৎ ওর কি কাজে লাগবে?
আর পারলো না মিষ্টি। এক তুমূল বর্ষার রাতে রুমমেটের মোবাইল দিয়ে ফোন করলো প্রিন্সকে। নাম্বার তো মুখস্থই ছিলো কিন্তু দুশ্চিন্তা এসে ভর করলো – নাম্বার ঠিক আছে তো, পাওয়া যাবে তো, ধরবে তো ফোনটা? কথা বলবে মিষ্টির সাথে নাকি এড়িয়ে যাবে? এতোদিন কেন আসেনি প্রিন্স, নাকি এসেছে – ও টের পায়নি! এতোদিন কিভাবে থাকছে ওকে না দেখে? ক্রিং করে ডায়ালটোন বাজে আর পাল্লা দিয়ে উত্তেজনা বাড়ে ওর – একবার রিং পড়ে, দুবার রিং পড়ে, তিন চার পাঁচ – কেউ ফোন ধরলো না।
আবার রিং দিলো মিষ্টি, ওর প্রাণটা গলাপর্যন্ত এসে ঠেকলো কিন্তু সব এক্সাইটমেন্ট নিস্তেজ করে প্রিন্স ফোন ধরলো না।
মোবাইলটা ফেরত দিয়ে বই টেনে নিয়ে বসলো মিষ্টি। মনে মনে প্রিন্সকে গালি দিতে থাকলো – কি হতো মিষ্টির নিস্তরঙ্গ জীবনে এমন উত্তাল ঝড় হয়ে না আসলে – এমন টালমাটাল হতো না ও কখনোই। বাড়ি বয়ে এসে এইভাবে মনের ভিতর পাকাপোক্ত জায়গা করে না বসলে কি ক্ষতি হতো? আর এলোই যদি এমন কেন করে – কেন মিষ্টির কথা শোনে না, না বলা কথাগুলো কেন বুঝে নেয় না?
সামনে খুলে রাখা বইয়ের কালো অক্ষরগুলো পড়েই থাকলো, ওর চোখে ভাসতে লাগলো একসাথে কাটানো সময়গুলোর প্রতিটা মূহুর্ত। মাঝেমাঝেই সেইসব স্মৃতি নাড়তেচাড়তে বড় সুখ হয়! আবার নিজের ভুলের দায়ে অনুশোচনায়ও পোড়ে মিষ্টি!
ও যখন এমন পুড়ছে ক্রমাগতই তখনই ফোনটা এলো।
প্রিন্সের অবস্থাও তথৈবচ! রাগ করে মিষ্টিকে বলে এসেছে, আর ভাববে না ওর কথা, কিন্তু মুখের কথা মন কি শোনে? দিবানিশি ওর ধ্যানেই তো মগ্ন থাকে। রাত কাটে ছাদের তারা গুণে গুণে, দিনের বেলায় ঘরে গুম হয়ে পড়ে থাকে নইলে বাইক নিয়ে আকাশ, বাতাস, দিগন্ত ছুটে চলে! ভাইবেরাদররা তাদের প্রিয় ভাইয়ের এমন কাঙালিপনা দেখে অস্থির হয়ে যায়, ওদের বুদ্ধিতে আসে না কি এমন এক মেয়ে মিষ্টি, তার জন্য প্রিন্সের এমন হাভাতেপনা! সম্ভব- অসম্ভব নানা উপায় বাতলে দেয় ওরা – কখনো রঙিন বোতলের ইঙ্গিত করে কখনোবা অন্য নারীকে ওর কল্পনায় এনে দিতে চায়। কখনোবা মিষ্টিকেই এনে দেওয়ার উপায় করে দেয় – সে ধরে আনুক বা বেঁধে! সেইসব সদোপায়গুলো মাথায় নাড়াচাড়া করে প্রিন্স, নানাভাবে ভেবে দেখে কোনটাতে কেমন ফলাফল আসবে কিন্তু বলাবাহুল্য কোনোটাই প্রিন্সের মনে ধরে না, ও সেইরকমই উদাস ঘুরে বেড়ায়!
মিষ্টিকে বড়রকম একটা শিক্ষা দিতে ওর খুব ইচ্ছে করে, মনে হয় সামনে গিয়ে ঠাঁটিয়ে একটা চড় মেরে বেহুঁশ করে দিতে, কিন্তু ওর সামনে গেলেই তো ওর অদ্ভুত ব্যক্তিত্বের সামনে কেঁচো হয়ে যায় প্রিন্স, ঠুনকো পড়ে যায় সব আত্মাভিমান। কথা ভুলে যায়, আবোলতাবোল কাজ করে বসে। ওই স্নিগ্ধ মুখের পেছনে কতখানি কাঠিন্য আশ্রয় করে ভেবেই অবাক হয় ও। ‘একটুখানি মেয়ে, তার কি কঠিন মন।’ একে টলাবে কিভাবে ভেবেই সারা হয় ও!
এরকম হাজার রকম উপায় মাথায় নিয়ে রাগে গজগজ করতে করতে ও মায়ের কাছে যায়। সাবিহা তখন দুপুরের খাবার খেয়ে ডিভানে আধাশোয়া হয়ে টিভির রিমোট হাতে নিয়ে বসেছে। চোখ টিভির দিকে কিন্তু আসলে পরামর্শসভা বসেছে। আশেপাশের নিম্নবিত্তের মানুষগুলোর শালিসিপ্রধানের দায়িত্ব যেমন সাবিহার তেমনি তাদের সাংসারিক ঝুট-ঝামেলায় নানারকম পরামর্শ দেওয়াও ওর সারাদিনের বড় একটা কাজ বটে! এইসব সুপরামর্শ মতান্তরে কুবুদ্ধি দিতে দিতেই বউ-ঝিদের দিয়ে ফুটফরমাশ খাটিয়ে নেয় সাবিহা ওদের দিয়ে তাও বিনা মজুরিতেই। প্রিন্স গিয়েই মায়ের কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো। সব সন্তানের জন্যই মায়ের কোল বড় শান্তির আশ্রয়!
‘কিরে তোর পোলার বউ বলে আবার চইলে গেছে? তোর পোলা কি মাইজ্ঞা নাকি বউ রাখতে জানে না!’ যার উদ্দেশ্য বললো সে নেহায়েতই গ্রাম্য দরিদ্র মহিলা। ছেলের প্রতি কটুক্তি শুনে একেবারে হাউমাউ করে উঠলো ছেলের বউয়ের নানা বদনামে। পেটের কথা টান মেরে বের করে নিতে জুড়ি নেই সাবিহার। রূপোর পানের বাটা থেকে এক খিলি পান করে মুখে নিয়ে বেশ আয়েশ করে চিবোতে চিবোতে রায় দিয়ে দিলো ‘পোলারে আবার বিয়ে করায় দে। মাইয়া মানুষ এক সোজা মাইরে আর এক সোজা সতিনে! বরভাগ হইলে দেখবি একদম কাঠির মতো সোজা হয়ে গেছে, যেমনে চালাবি তখন তেমনি চলবে।’
দরিদ্র পরিবারে বহুবিবাহ আরেকটি ক্ষুধার্ত মুখ বাড়াবে বৈ নয়, তাই পরামর্শ নিতে আসা মহিলার এই বুদ্ধিটা হয়তো খুব একটা মনে ধরলো না কিন্তু প্রিন্সের মাথায় বুদ্ধিটা জোরে কিক করে গেলো। এতোদিনে মিষ্টিকে টাইট দেওয়ার একটা যুৎসই বুদ্ধি পাওয়া গেছে। হুম, বিয়েই করবে ও, দেখিয়ে দেবে মিষ্টিকে। প্রিন্সের পাশে অন্য কাউকে দেখে মিষ্টি কেমন জ্বলবে আর ছটফট করবে ভেবেই রোমাঞ্চিত হলো ও। এইভাবেই দেমাগির অহংকার চুর্ণ হবে! যেমন ইচ্ছে তেমন নাচানো ওকে, এবার বন্ধ হবে! এইটেই বেশ হবে! মোটাবুদ্ধির ভারে পরিণাম না ভেবেই দুম করে মাকে বলে বসলো ‘পরের ছেলের বউয়ের এতো খবর নেও, নিজের ছেলেকে বিয়ে দিবা না?’
‘ও, বাপ, সত্যি কথা বললা তুমি? বিয়ে করবা তুমি? আমি তো কতদিন ধরে বলতেছি, তুমিইতো রাজি হওনা। সত্যি করে বলো বাপ, মায়ের সাথে ইয়ার্কি করে না। মানিক আমার, বিয়ে করবা তুমি? মেয়ে দেখি আমি?’ আহ্লাদে গদগদ হয়ে গেলো সাবিহা!
‘হুম, বললামই তো। করবো বিয়ে। বিয়ে করাই লাগবে।’ মায়ের আঁচলে ভালো করে মুখ ঢেকে নিলো প্রিন্স।
‘বাপ, সত্যি করে বলো, পছন্দ আছে তোমার কোনো, নাকি আমি ঘটক লাগাবো।’
‘না মা, আমি কাউরে পছন্দ করি না। কাউকে ভালোবাসি না। আমাকেও কেউ চায়না।’ বুকের ভেতর থেকে উঠে আসা কষ্টটাকে চাপা দিয়ে বললেও মায়ের কাছে তা সম্মতিসূচক বাক্যই মনে হলো।
সাজসাজ রব পড়ে গেলো বিশাল বাড়িটাতে। ঘটক লাগিয়ে সারাদেশে নাড়াচাড়া লাগিয়ে দিলো সাবিহা – ছেলের জন্য তার মনের মতো বউ চাই! মানি ঘরের গুনি মেয়ে চাই – রূপে সেরা বউ চাই!
এহেনও কাজে প্রিন্সের সাঙ্গপাঙ্গরা তব্দা খেয়ে গেলো কিন্তু ভাইর সব কাজেই তো তাদের সায় আছে পুরোপুরি! ভাই দিন বললে আকাশের তারাগুলোকেও তারা চোখে দেখবে না, আর সূর্যের প্রখর আলোর নীচে বসেও যদি প্রিন্স বলে এখন রাত তবে ওরাও মাথা নেড়ে আস্তে আস্তে বলবে ‘এখন আসলেই রাত – হ্যাজাক বাতি জ্বালানোতেই এতো আলো।’ তাই নির্বিঘ্নে মেয়ে দেখার কাজ চলতে লাগলো। জিনিয়ার কাছেও খবর পৌঁছে গেলো। প্রিন্সকে প্রশ্ন করলে ও অম্লানবদনে বলে দিলো ‘মিষ্টি মরে গেছে।’
হাজার হাজার মেয়ে দেখে অবশেষে বাড়ির কাছেই রূপে,গুনে, টাকার ভারে সর্বেসর্বা মেয়ে পাওয়া গেলো। ডিঘটির জমিদারের উত্তরপুরুষ, তিনপ্রজন্ম চেয়ারম্যান, বেশ ধনী আর প্রভাবশালী পরিবারের মেয়ে জাহানারা, ডাকনাম তুলি। ক্লাস নাইনে পড়ে, সুন্দরী হওয়াতে বিয়ে দেওয়ার জন্যই ব্যস্ত অভিভাবকেরা। নানারকম খোঁজখবর নিয়ে, নানাভাবে যাচাই-বাছাই করে শান্তি পেলো সাবিহা। বেশ মেয়ে – কোনো রটনা নেই তেমনি শান্তস্বভাবা। বেশ বউ হবে প্রিন্সের। প্রিন্সকে ছবিও দিলেন মেয়ের – হাজার হোক যে বিয়ে করবে তারও তো একটা মতামত আছে! প্রিন্স ভালোভাবে দেখলো ও না ছবিটা, হ্যাঁবোধক জবাব দিয়ে দিলো। ওর বিয়ে করাটা জরুরি, কাকে বিয়ে করছে সেটা জরুরি না। এবারে মিষ্টি বুঝবে, কত ভুল করেছে ও। ভিষণ আনন্দ হলো ওর। মনে মনে হাজারবার ‘তুলি’ নামটা আওড়ালো, কিন্তু তুলি কখন মিষ্টি হয়ে গেছে টের পেতে পেতেই টনক নড়লো ওর! মিষ্টি ছাড়া অন্য কোনো ললনা ওর কল্পনাতেও আসে না। আজ কতদিন মিষ্টিকে দেখে না ও, কানের কাছে মিষ্টির হাসির শব্দ বাজতে থাকলো! মিষ্টি হাসছে, ঘুরছে, বই পড়ছে সব যেন চোখের সামনে ঘটতে থাকলো, এমনকী ওর চুলের ঘ্রাণও স্পষ্ট পেলো যেনো, প্রিন্স!
শুভবোধটির উদয় হলো, কিন্তু খাদের কিনারায় এসে। প্রিন্সের মা যখন নতুন বৌকে আংটি পরাতে যাওয়ার জন্য একেবারে হাতিঘোড়াসমারোহে প্রস্তুত সেইদিন বিকেলে আর উপায় খুঁজে না পেয়ে পালালো প্রিন্স। সাবিহা হতবুদ্ধি হলো কিন্তু সামলে নিলো – বিয়ের আগে ছেলেমেয়ের মেলামেশা তাদের পরিবারে রেওয়াজ নেই ঘোষণা করে ছেলের মাই হবুবধুকে আংটি পরিয়ে বিয়ের দিনক্ষণ পাকা করে এলো!
রাতে প্রিন্স সিদ্ধান্ত নিলো মিষ্টির সাথে এবার একটা দফারফা করতেই হবে। দফারফা আবার কি, মিষ্টিকে শুনতেই হবে প্রিন্সের কথা, আর কোনো বগিচগি চলবে না। এবারে যা বলবে প্রিন্স তাই শুনতে হবে মিষ্টিকে। সেইসময়ে অপরিচিত নাম্বার ফোন আসে ওর মোবাইলে। মিষ্টি ফোন করতে পারে মনেপ্রাণে চাইলেও ভাবেনি কখনো সত্যিই ফোনটা মিষ্টি করেছে। একটু বাদে রিংব্যাক করলো প্রিন্স নাম্বারটাতে।
এবারে মিষ্টি ধরলো। প্রিন্সের গলা শুনেই অভিমানে কন্ঠরোধ হলো ওর। গলা দিয়ে শব্দ এলো না, কেঁদে ফেললো একদম শব্দ করে। ‘প্রিন্সভাই আমি মরে যাচ্ছি! একেবারে মরে যাচ্ছি! প্লিজ একবার আসো।’ বহুকষ্টে হেঁচকি তুলে তুলে বললো ও।
অনির্বচনীয় আনন্দে ভাসলো প্রিন্স। ফিসফিস করেই বললো ‘তুই মরে যা, মিষ্টি।’
চলবে….
আইজ্যা সবার কমেন্ট চাই!