মায়াময়ী আপনি পর্ব ২৩-৩১

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ২৩ -৩১ পর্যন্ত

ওরা দুজনেই বাড়ি ফিরে যায়,,, তারপর থেকেই তাদের ভালোবাসা খুনসুটি,,চলতে থাকে,,,,,

এসবের মাঝে তাদের ইয়ার চেন্জ পরীক্ষা এসে যায় এবং শেষ ও হয়ে যায়,,,,

এখন একটা ফ্রি টাইম কাটাচ্ছে ওরা,,,,বিকালে

আহান ইকরাকে কল দেয়,,,ইকরা কল রিসিভ ও করে,,,

আহান : হ্যালো সুইটহার্ট!!!

ইকরা : হুম,,বলো

আহান : আরে কলিজা তো বলেন,,,???

ইকরা : কলিজা,,পিত্তি,,হাড্ডি,, চর্বি,,মাংস 😠😠😠

আহান : আরে রেগে যাচ্ছেন কেনো??? আমি এমনি বলছিলাম,,, আচ্ছা বাদ দিন,,,আপনি রেডি হয়ে থাকেন আমি আসছি নিতে,,,

ইকরা : দরকার নায় আসার,,, আমি কোথাও যাবো না,

আহান : আরে ইকরা কিছু ত বলেন,,, এমন রেগে কথা বলছেন কেনো,,,,, আমি কি করেছি,,,,,

ইকরা : কিছু না,,,,আচ্ছা ভালো থেকো,,দোয়া করি,,,নিজের খেয়াল রেখো আল্লাহ হাফেজ,,,বলেই ফোনটা রেখে দেয়,

ইকরার এমন কথা শুনে আহানের বুকটা মোছড় দিয়ে উঠে,,,,

আহান : ( ইকরা আপনার কি হয়েছে আপনি আগে কখনো এভাবে কথা বলেন নি,,তাহলে আজ??)

আহান সাথে সাথে ইকরাকে আবার কল ব্যাক করলেই ইকরার ফোন সুইচ ওফফ পায়,,,আহানের মাথা ঘুরতে থাকে,,,কোনো কিছু না ভেবেই ইকরার বাড়ি উদ্দেসাশ্যে বেড়িয়ে পড়ে,,,
,
,
,
,
দুপুরের দিকে ইকরা শুয়েছিলো তখনি ইকরার ফোনে আহানের চাচার কল আসে ইকরা দেখতেই চমকে যায়,,সাথে সাথে ভয়ে শরীরে কাটা দিয়ে উঠে,,,ইকরার এতোদিনে মনেই ছিলো না যে আহানকে ছেড়ে চলে যেতে হবে,,,,

কলটা রিসিভ করেই ইকরা জানিয়ে তাদের দেয় যে সে আজি চলে যাবে,,,ইকরা আর রিক্স নিতে চায় না,,,,তাই ইকরা তার মাকে বলে বেড়িয়ে যায় চট্টগ্রামের উদ্দ্যেশ্যে,,,ইকরার মার হাজার বারন ও শুনেনি ইকরা,,,শেষে একপর্যায়ে ইকরার মা রেগে যায়,,,

ইকরা সে তো মনে মনে একটা কথা আওড়াতে থাকে,,

ইকরা : ( মা আহান তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ,আমি যদি আমার জিদ নিয়ে থাকি তাহলে হয়তো ওরা তোমাকে আর আহানকে মেরে ফেলেবে সেটা আমি কখনো মানতে পারবো না,,,এখান থেকে যাওয়ার একটায় কারন আমি যদি এখানে থাকি তাহলে আহানের প্রতি আরো দুর্বল হয়ে পড়বো,,ওর পাগলামি গুলো আমাকে মানতে বাধ্য করবে,,)

ইকরা বাসে বসে বসে কথাগুলো ভাবছিলো,,,আর তখনি আহানকে একটা মেসেজ দিয়ে দেয়,,,
তারপর বাস ছেড়ে দিলে ইকরাও চুপচাপ বাসের সিটে মাথা হেলিয়ে দেয় আর চোখে অজস্র পানির বর্ষন হতে থাকে,,,,
,
,
,
আহান ইকরাদের বাড়িতে গিয়ে দেখে ইকরার মা কান্না করছে,,,

আহান : কি হয়েছে আন্টি আপনি কান্না করছেন কেনো?

ইকরার মা : আহান বাবা তুমি এসেছো,,,দেখোনা ইকরার কি হয়েছে কে জানে,,,আমাকে ছেড়ে চলে গেছে প্লিজ তুমি ওকে খুজে আনো,,,,( কান্নায় ভেংগে পরে)

আহানের তো পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায় ইকরা ছেড়ে চলে গেছে শুনেয়,,,,সোফায় বসে নিজের চুল টানতে লাগে আহান,,,,,, আর চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে,,,

আহান : ( ইকরা আপনি এমনটা করতে পারেন না,,,আপনি আমাকে কথা দিয়েছিলেন আমাকে ছেড়ে কোথাও যাবেন না তাহলে কেনো করলেন এমন টা কেনো?,,,,আমি যে আপনাকে ছাড়া থাকতে পারবে না,,,আমার আপনাকে চায়,,,, যেকোরেই হোক আপনাকে চায়,,,)

বলেই আহান বেড়িয়ে যায় এবং সবার কাছে ফোন করে ইকরার খুঁজ নেয়,,কিন্তু কোথাও ইকরার খুঁজ পায়নি,,,,,
তাই আহান বাসায় ফিরে রাগে নিজের রুমের জিনিস ভাংতে থাকে,,,,আহাদের দাদু বাড়িতে নেয় বলেই আজ আহানকে সামলানো যাচ্ছে না,,,প্রচন্ড ক্ষেপে আছে আহান হয়তো আজ ইকরাকে ফেলে কিছু একটা করে বসত আহান,,,

আহান : ( আপনাকে আমি একবার কাছে পায়,,,আমাকে ন বলে উদাও হয়ে যাওয়ার শাস্তি আপনাকে আমি দিবই,,,,)

প্রায় ২ ঘন্টা পর……….
বাসটা একটা জায়গায় ব্রেক নেয়,,সবাই নাস্তা করার জন্য বেরুয়,,কারন ক্ষুদায় পেট জ্বলছিলো,,,তাই নেমে দোকান থেকে কিছু কিনে নেয়,,,এবং খেয়েও নেয়,,,বাসের ড্রাইভারের কাছে জানতে পারে বাস আরো ৩০ মিনিট পর ছারবে,,,তাই ইকরা আশে পাশে হাটতে থাকে,,,,এবং জায়গাটা ভালোভাবে ঘুরে দেখছে,,,একসময় ইকরা হাটতে হাটতে পথ হারিয়ে ফেলে,,,,,

ইকরা মোবাইলে টাইম দেখে আরো ১৫ মিনিট আছে,,,
পথ খুঁজে গিয়ে আবার ভুল জায়গায় পরে যায়,,,

এমন অন্ধকার রাস্তা তাও আবার একা ভয়ে ইকরার গা চমচম করছিলো,,,,অদ্ভুদ এক ডাক শুনে ভয়ে ইকরা অনেক জোড়ে একটা দৌড় দেয়,,আর তখনি একটা গাড়ি এসে আর ইকরা বেলেন্চ হারিয়ে গাড়ির সাথে একটা ধাক্কা খায়,,,,

ইকরা : আম সরি আহান মা বলেই ইকরা চোখ বন্ধ করে ফেলে,,,,

(চলবে)

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ২৪

পরেরদিন…………..

ইকরার মাথায় অনেক্ষন ধরে মহিলাটি হাত ভুলিয়ে দিচ্ছেন আর…..

মহিলা : ( কি মিস্টি আর মায়াবি মেয়েটা,,,)

ইকরা হালকা হালকা চোখ খুলে তাকায়,,,পাশে দুজন মানুষকে ঝাপসা দেখতে পাচ্ছে,, তাই আবারো চোখ বন্ধ করে ফেলে,,,
আবার কালকের কথা মনে পরতেই তাড়াতাড়ি চোখ খুলে তাকায়,,এবং উঠার চেস্টা করলেই,,মাথায় প্রচন্ড ব্যাথা পায়,,,,

মহিলা : আরে আরে কি করছো মামনি,,,উঠিও না,,,

ইকরা পাশে তাকিয়ে দেখে একজন ভদ্র মহিলা আর পাশে একটা কিউট একটা মেয়ে,,,,বয়স ১৬ নয় ১৭ হবে,,,,

ইকরার কেনো জানি তাদের চেনা চেনা লাগছিলো,,,

ইকরা : আপনারা??? আর আমি এখানে?( আস্তে করে বলে)

মহিলা : কাল আমাদের গাড়ির সামনে ধাক্কা খেয়ে তুমি পরে গিয়েছিলে,,আর আমরা তোমাকে এখানে নিয়ে আসি,,,,,,,আমাদের পরিচয় পরে জানতে পারবে,, আগে ফ্রেশ হয়ে ব্র্যাকপাস্ট করে নাও,,তারপর মেডিসিন নিতে হবে,,,😊😊

ইকরা অবাক হয়ে মহিলাটির দিখে তাকিয়ে আছে,,,

ইকরা : ( আমি একজন অচেনা মানুষের জন্য কতো মমতা,,,) আচ্ছা আমার ব্যাগ……

মেয়েটি : হ্যা আপু আমার কাছেয় আছে?? লাগবে??

ইকরা মাথা নাড়িয়ে হ্যা বুঝায়,,,তখনি মেয়েটি দৌড়ে গিয়ে ব্যাগ নিয়ে আসে,,,

ইকরা একটা থ্রি-পিছ নিয়ে ফ্রেস হয়ে পড়ে নে,,,এবং নাস্তা করে মেডিসিন নিয়ে নেয়,,,,

ইকরা : ( আমতা আমতা করে) আসলে আপনার আমার জন্য যা করেছেন তার জন্য আ……

মহিলা : ছিঃ ছিঃ মামনি এসব কি বলছো???আমি একদমি এসব বলবা না,,,,আর আমি হচ্ছি আসমা চৌধুরী,,,আর ও আমার মেয়ে আহিয়া চৌধুরী,,,,,তুমি??

ইকরা : আমি ইকরা ফেরদৌস,,,,আচ্ছা আন্টি এইটা কোথায়??? মানে জায়গা টার নাম কি???

মিসেস আসমা : তুমি এখন চিটাগাং এ আছো!! তুমি কাল ওতো রাতে ওখানে কিভাবে গিয়েছিলে???

ইকরা : আসলে ( সব বলে )

মিসেস আসমা : আচ্ছা কোথায় যাওয়ার কথা ছিলো
তোমার আমাকে বলো আমি তোমাকে পৌছে দিবো!!!

ইকরা : আসলে আমি মানে আমার এখানে কোনো রিলেটিভ নেয়,,,,আমি এমনি ট্রেভেলিং করতে আসছিলাম🙂,,,,( মিথ্যা বললো আরকি)

আসমা : ওহ কিন্তু তুমি এখন কোথাও যেতে পারবে না সুস্থ না হওয়া অবদি,,,,

ইকরা : আমি যেতে পারবো সমস্যা নায়

আসমা : আরে খবরদার,,তুমি এখন আমার কাছে আছো তাই তোমার সব দায়িত্ব এখন আমার,,,,,,,

ইকরা ও আর জোড়াজেড়ি করেনি কারন এ শরীর নিয়ে সে এমনিও যেতে পারবে না,,,

ইকরা : আচ্ছা,,,

আসমা : ওহ তোমার বাড়ির কথা তো জানা হয়নি,,মানে কোথায় থাকো তুমি???

ইকরা : জ্বি ঢাকা!!

ঢাকা নামটা শুনার সাথে সাথে উনার চোখ মুখ খালো হয়ে যায়,,,মুখে ভঙ্গীটা পাল্টে যায়,,,
তাই উনি নিজে কে স্বাভাবিক করার জন্য,,,

আসমা : আচ্ছা আমি কলেজে যাচ্ছি,,,,, তুমি আহিয়ার সাথে গল্প করো,,,যা প্রয়োজন ওকে বলো কেমন???

বলেই উনি জায়গাটা ত্যাগ করেন,,,বাইরে ভেরিয়ে অতীতের কথা মনে পড়তেই উনার কন্না চলে আসে,,,প্রিয়জনদের হারানো ব্যাথার জখম টা তাজা হয়ে উঠে,,,

আহিয়া : আপু আমি কিন্তু তোমাকে তুমি বলবো,,ঠিক আছে,,,😊😊

ইকরা : আচ্ছা,,,☺☺

আহিয়া : আচ্ছা আপু আপনি স্টাডি করেন??

ইকরা : অনার্স ৩য় বর্ষের পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছি

আহিয়া : কি বলো আপু আমি ভাবলাম আমরা সেম এজের হবো,,,

ইকরা : তাই,,,তুমি???

আহিয়া : আমি ইন্টার ১ম বর্ষের পরীক্ষা শেষ😊😊😊

ইকরা : আচ্ছা,,, তোমরা অনেক ভালো,,,!! এই বাড়িতে আর কউকে দেখছিনা,,,, কেউ নেয়???

আহিয়া : না আপু,,,আমি আর মা থাকি আর কেউ নেয়,,,,( মুখটা ফ্যাকাশে করে)

ইকরা : আর কেউ নেয় মানে!!!??? কেনো??

আহিয়া : আসলে মায়ের কাছ থেকে শুনেছি আমার জন্মের আগে নাকি আমার বাবা আর ভইয়া মারা যায়,,,আর কোনো রিলেটিভ নেয় আমাদের!!

বলেই আহিয়া কান্না করে দেয়,,,

ইকরার ও চোখ দিয়ে পানি আসে তার ও যে বাবা নেয়

ইকরা : প্লিজ বনু কান্নয় করিও না,,,দেখো আল্লাহ যা করে ভালোর জন্য করে,,,জন্ম মৃত্যু এসব আমাদের হাতে নেয়,,,

আহিয়া : হুম,,,,,

তারপর ইকরা আর আহিয়া আরো মজার গল্পে মেতে উঠে,,,,,
,
,
,
,

আহান চিৎ হয় বিছানায় ঘুমাচ্ছে,,,হঠাৎ কেউ একজন আহানের শার্টের বোতাম খুলে।আহানের বুকে হাত ভুলাতে লাগে,,,, আহানের স্পর্শটা ঘুমের। মধ্যেও রাগ আরো বেড়ে যায়,,

আহান চোখ খুলে দেখে আনায়া,,,,

আহান : তুই,,,??? 😠😠😠😠

আনায়া : আহান বেবি কেমন আছো,??

আনায়ার ন্যাকামি কথা শুনেই আহানের রাগ আরো বেড়ে যায়,,কারন ছোটবেলা থেকে এই একটা মেয়েকে আহান সহ্য করতে পারতো না,,,

আহান : টাাসসসসসসসসসসস,,,টাাসসসসসসস!!!
যাহ পাগল কোথাকার,,,এখানে এসে গেছিস আবার পাগলামি করতে 😠😠

আনায়া : কি বলছো বেবি এস…..

আর।বলতে পারে আহান তার আগেই আয়ানাকে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে বের করে দেয়,,,,

আনায়া : আহান?? 😠😠😠

আহান ফ্রেস হয়ে এসে ফোনটা হাতে নেয় আর দেখে ইকরার মেসেজ যেটা কাল দিয়েছিলো আহান খেয়াল করে নি,,,আহান মেসেজটা ওপেন করে পড়ার জন্য

ইকরা :…………….

(চলবে)

আজ দুইটা পার্ট দিলাম কাল কিন্তু দিবো না গল্প,,,😊😊😊,,,সবাই ভালো থাকবেন

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ২৫

ইকরা………..:-

আহান আম সরি,,,আমি তোমাকে কখনো ভাললোবাসিনি,,,যা করেছিলাম সব নাটক,, আমি তোমাকে না কখনো ভালোবেসেছি,,,আর না কখনো ভালোবাসবো,,,,আর আমাকে খু্ঁজার বৃথা চেষ্টা করো না আমি অনেক ভালো আছি থাকবো,,,তুমি অন্য কারো সাথে হ্যাপি থাকো,,,ভালো থেকো!!!
আল্লাহ হাফেজ!!!

ইকরা!!!!!

আহান মেসেজটা পড়েই— ( কি ভাবছেন রাগ করবে)

আহান একটা মুচকি হাসি দিয়ে,,,গ্যলারি তে গিয়ে ইকরার পিক দেখতে থাকে,আর

আহান : ( আপনি যে আমাকে ভালোবাসেন কি ভালোবাসেন না সেটার প্রমান মেসেজ পড়েই পেলাম,,,থ্যাংকস ইকরা আমার কষ্ট টা কমানোর জন্য,,, নাহলে আমি পাগল হয়ে যেতাম আপনার খুঁজে,,কিন্তু আপনাকে দেখতে পাচ্ছি না সেজন্য ও কষ্ট হচ্ছে,,,ইকরা পিকে চুমু দিয়ে,,)

(আমাকে ভালোবাসেন না কথাটা আপনার মুখে বলতে পারবেন না তাই মেসেজে লিখলেন,,,😊😊,,,,
আপনি বরাবরেই আমার সাথে মিথ্যে বলতে পারেন না সামনা সামনি হোক বা ফোনে,,,,কোনো কিন্তু তো নিশ্চয় আছে,,,,, যার জন্য আপনি চলে গেলেন,,কিছু একটা আমার থেকে আড়াল করছেন,কিন্তু কি?? ,,,,,এখন আমি আপনি আসার অপেক্ষায় থাকবো,,,,I am waiting for you my sweetheart ❤❤)

বলেই আহান তার দাদুর রুমে যায় গিয়ে দেখে দাদু চলে এসেছে!!

আহান : কখন আসলা ওল্ডম্যান???

দাদু : রাতে!! ( গম্ভীর মুখে)

আহান : কি হয়েছে দাদু,,,তোমাকে চিন্তিত লাগছে কেনো???

দাদু : আসলে আনাফের বাবা এসেছে তার ওই মেয়ের সাথে তোর বিয়ে দেওয়ার জন্য,,,

আহান : উপপ ওই মেয়েটা যে ছোটবেলায় তেলাপোকা আর টিকটিকি ধরে হাত না ধোয়ে ভাত খেতো ইয়াকক!!!

দাদু : শুন আমি স্ট্রেট মানা করে দিয়েছি,,, বলেছি তুই ইকরাকে ভালোবাসিস!!!

আহান : ভালো করেছো!!!

দাদু : কিন্তু আমাকে হুমকি দিয়ে গেলো এ করবে সে করবে বলে!!!

আহান : আমিও দেখতে চায় কি করতে পারে,,,,আচ্ছা দাদু আমি একটু বাইরে যাচ্ছি ফ্রেন্ডদের সাথে ফিরতে লেট ও হতে পারে,,,,,
,
,
,

ইকরা অনেক্ষন ধরে আহানের পিকটা দেখছিলো,,আর চোখ ভিজে যাচ্ছে,,,,,

ইকরা : ( আম সরি আহান আমাকে ক্ষমা করে দিও প্লিজ আমি জানি তুমি আমার মেসেজটা পড়ে রেগে যাবে আর আমাকে ঘৃনা করবে,,,এটাই আমি চায়,,,আমি কিছুদিন পর আবার চলে যাবো,,,আমাকে আমার ক্লাস কান্টিনিউ করতে হবে,,,, হোক সেটা নিজেকে তোমার থেকে আড়াল করে,)

হঠাৎ আহিয়ার ডাকে ইকরার হুস আছে,,চোখের পানি মুছে ফেলে,,,,

আহিয়া : আপু ছেলেটা কে??(মোবাইল হাতে নিয়ে)

ইকরা : আসলে মানে……

আহিয়া : থাক আপু বলতে হবে না,,,আমি এটা নিশ্চিত যে আপনি এখানে ট্রাবেলিং এর জন্য আসে নি,,,

ইকরা : 😥

আহিয়া : নাও কফি টা শেষ করো,,আমরা বাইরে বেড়াতে যাবো এখানে অনেক সুন্দর পার্ক আছে,,,,!!!

ইকরা : হুম!!!

তারপর তারা দুজনে রেডি হয়ে ঘুরতে বের হয়,,,,

ঘুরাফেরা শেষ করে তারা দুজনে রেস্টোরেন্ট যায় খেতে,,খাওয়ার মাঝখানে হঠাৎ কেউ একজন ইকরাকে ডাক দেয়,,,আর মানুষটাকে দেখেয় ইকরা রেগে যায়

ইকরা : আপনি?? 😠😠

আনাফ : হোল্ড অন প্লিজ!!! আমার কথাটা একটু শুনোন??? আমি আপনাদের সাথে বসতে পারি??

ইকরা : না যান আপনি এখান থেকে আমি কিছু শুনতে চায় না,,,,আপনি যাবেন নাকি আমি তাপ্পর মেরে মাথা ভেংগে দিবো😠😠😠😠

আনাফ : এক্সকিউজ মি!!! ( ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে)

ইকরা : মানে তাপ্পর মেরে গাল ফাটাই দিবো😠😠😠

আনাফ : মিস ইকরা আমার বোনের তরফ থেকে আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি, দেখোন আমি এখানে এসেছি অন্য এক কাজে,,,আপনাকে এখানে দেখে কথা বলার জন্য এসেছি,,,,আমি আপনাকে হেল্প করতে চায়,,,,

ইকরা : কোনো হেল্পের দরকার নেয় আমার,,, চলো আহিয়া,,,( বলেই আহিয়ার হাত ধরে হাটা দেয়)

আনাফ পেছন থেকে……

আনাফ : এভাবে ভিতু হয়ে না থেকে নিজের ভালোবাসার জন্য লড়াই করেন,,,সব নিয়তির উপর ছেড়ে দিন,,,হয়তো জয় আপনারি প্রাপ্য

ইকরা : হুহ নাটক শুরু করছ ভাইবোন মিলে আমার থেকে আমার ভালোবাসা কেড়ে নিয়ে,,,,, নতুন প্ল্যান নিয়ে এসেছে হুহ,,,,

আহিয়া এতক্ষন নিরব দর্শক হয়ে সব দেখছিলো,,,,

আহিয়া : কি হয়েছে আপু,,, লোকটা কে?? কি হয়েছে সব আমার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে,,,

ইকরা : বাসায় চলো সব বলছি,,,,,

একপর্যায়ে তারা বাসায় পৌছয় আহিয়া তো শুরু থেকে শেষ অবদি সব জেনে নিয়েছে,,,

আহিয়া : ওয়াও যাস্ট ফেভ আপু,,,,এই না হলো রিয়েল লাভ,,,,আমার মন ১০০ পার্সেন্ট সিউর যে তোমাদের মিল অবশ্যক,,,,,,😊😊😊

ইকরা : কি জানি……😐😐😐
,
,
,
,
দেখতে দেখতে ইকরা আর আহানের রেজাল্ট চলে আসে,, ইকরা সব খবর আসিফের থেকে নেয়,,,
এবং ক্লাস করতে হবে তাই আহিয়া ও আহিয়ার মার থেকে বিদায় নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পরে,,,,

আহিয়া তো কান্না করে দেয়,,,সাথে আন্টিও আর ইকরাও,,,ইকরা তাদের নাম্বার গুলো কালেক্ট করে নেয়,,

ইকরা বাড়িতে পৌছালেই ইকরার মা তো মেয়েকে বুকে জড়িয়ে চুমু দিতে লাগে,,আর কান্না তো সাথে আছেই

মা : এতোদিন কই ছিলি,,আমাকে মিস করিস নি 😭

ইকরা : আরে মা শশুর বাড়ি গেলে কষ্ট বেশি হবে না,,,তার কারন আমি প্রেক্টিস নিচ্ছি এখন থেকে,,,😁

মা : যাহ পাগলি!!!

পরেরদিন ভার্সিটিতে…….

(চলবে)

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ২৬

ভার্সিটি তে………

মিম আর আসিফ একসাথে বসে আড্ডা দিচ্ছে,, আহান তার ফ্রেন্ডের সাথে আড্ডা দিচ্ছিলো,,,যে যার মতো ব্যাস্ত,,,, তখনি একটা মেয়ে কালো বোরকা কালো হিজাব,,আর কালো নেকাব পরিহিতা মেয়ে ভার্সিটির গেইট দিয়ে এন্ট্রি নেয়,,,,

মিম : এই খালাম্মাটা আবার কে.??🙄🙄🙄

আসিফ : হয় এখন ভার্সিটিতে খালাম্মারাও পড়ালেখা করবে,,,😄😄

আহান তো ভ্রু কোচকে তাকিয়ে আছে হাটার স্টাইলটা কেমন যেনো কার সাথে মিলছে,,,আহান বুঝে উঠতে পারছিলো না,,এসব ভাবতে ভাবতে মেয়েটি প্রিন্চিপ্যাল স্যারের রুমে ডুকে যায়,,,,

কিছুক্ষন পর মেয়েটি বের হয়, এইবার মেয়েটি মিম দের দিকে পা বাড়ায়,,,

আসিফ : মিমি দেখ খালাম্মাটা এইদিকে আসছে😶

মিম : 😠😠,,,,দেখ তোর প্রেমিকার মা আসছে কিনা!!

আসিফ : একটা মাইয়া ও আজ পর্যন্ত পটলো না,,,আর তুই 😐😐😐

মিম : আহারে ব্যর্থতা!!!! 😂😂😂

তখনি বোরকাওয়ালিটা তাদের সামনে এসে দাড়ায়!!!

আহান দূর থেকে কৌতহলের দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,

মেয়েটি : আসসালামু-আলাইকুম

মিম + আসিফ : ওয়ালাইকুম- আসসালাম!!!

আফিফ : খালাম্মা আপনি কেডা???😁

মেয়েট : থাপরাই দাঁত ফেলাই দিবো হারামজাদা😠😠😠,,,,,

মিম আসিফ : 😲😲😲 ইকরাআহ!!!!

ইকরা : ওই চুপ আস্তে,,,আহান এদিকেই তাকিয়ে আছে দেখ,,,,

মিম আর আসিফ তাকিয়ে দেখে সত্যিই আহান ওদের দিকে তাকিয়ে আছে,,,,

ইকরা : শুন আমি যে এখানে আসছি সেটা কাউকে বলবি না খবরদার,,,

মিম : কিন্তু কেনো???

ইকরা : আরে…..

আসিফ : ওই ওই আহান এদিকে আসছে,,,

আহান তাদের সামনে এসে দাড়ালোই ইকরা মিমের পাশে চলে যায়,আর মিমের হাত শক্ত করে ধরে,,,

আহান : হাই আপু ভাইয়া??😊

মিম আসিফ : হ্যালো আহান ☺☺

আহান : উনি কে???

মিম : আব আমার মানে।আমাদের নিউ ফ্রেন্ড☺

আহান : ওওহ,,,,,হ্যালো,,,( ইকরা দিকে তাকিয়ে( নিশ্চুপ!!

আহান : হ্যালো আপনাকে বলছি!!!

ইকরা মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেয়,,,,( আর মিমকে একটা চিমটি দেয়)

মিম : আব আহান আমার বান্ধবি কারো সাথে কথা বলে না,,,

আহান : এতক্ষন তো আপনদের সাথে বলছিলো,,,,

মিম : ওহ হ্যা আমরা ফ্রেন্ড তাই😁😁😁😁,,,,

আহান : ওহ,,আচ্ছা আমি আসছি,,,

এতক্ষন ধরে আহানের হার্টটা খুব জোরে বিট করছিলো,,,

আহান দ্রুত পায়ে গাড়িতে গিয়ে বসে,,একটা
অস্থিরতা কাজ করছিলো আহানের মাঝে,,,,,,

আহান : এরখম অস্থিরতা তো আমার ইকরা সাথে থাকলে হতো,,,কিন্তু ইকরা তো………
উপপ আর কিছু ভাবতে পারছি না,,,

আহান আর দেরি না করে বাড়ি ফিরে যাবে,এমনসময়,,,,,,,,
,
,
, ইকরার মা ফোন দেয় আর জানিয়ে দেয় যে ইকরা ফিরে এসেছে আর ভার্সিটিতে গেছে,,,

( ইকরার মায়ের মতো মা কয়জনের হয় বলেনতো)

আহান আর বাড়ি না গিয়ে ক্লাসে চলে যায় যা করার ছুটির পর করবে,,,কারন বোরকা পড়া মেয়েটি কথা বলে নি তাই আহান সিউর হয়ে যায় ওই ইকরা,,,
,
,
,

ছুটির পর মিম আসিফ ইকরা বেরিয়ে আসে,,,,,, তখনি আহান মিমকে আর আসিফকে একটা মেসেজ পাঠায়,,,, তারা দুজনে দুই বাহানা দিয়ে চলে যায়,,,,ইকরা তো চারপাশে তাকাচ্ছে ভয়ে ভয়ে,,,,

ইকরা সামনে তাকাতেই দেখে আহান দাড়িয়ে আছে……

ইকরা : ( যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়😰)

ইকরা কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলেই আহান ইকরার হাত ধরে ফেলে,,,ইকরা তো ভয়ে কাপাকাপি শুরু করে দেয়,,,,,

আহান ইকরা টেনে রুমে নিয়ে যায়,,,,,আর দরজাটা লক করে দেয়,,,এইবার ইকরা কেঁদে দেওয়ার উপক্রম,,,

আহান ইকরা দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে,,আরেক হাত দিয়ে হিজাপ আর নেকাবটা টেনে খুলে ফেলে,,,,

ইকরা সাথে সাথে চোখ মুখ খিচে ফেলে,,,,আহান তো ইকরাকে দেখতেই ব্যাস্ত,,এতো দিন দেখেনি তাই চোখের তৃষ্ণা মেটাচ্ছে,,,,,,

ইকরা আহানের রেসপন্স না পেয়ে মিটিমিটি চোখ খুলে তাকিয়ে দেখে একজোড়া নেশাক্ত চোখ তার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে,,,,,,

ইকরার চোখ খুলে তাকানো দেখে আহান ইকরা চুলে হাত দিয়ে ক্লিপটা নিয়ে চুল গুলো সব ছেড়ে দেয়,,,,

ইকরার গাল দুটো ধরে কাছে টেনে আনে আহান,,,,

আহান : কোথায় ছিলেন এতোদিন ইকরা??

ইকরা : (চুপ)

আহান : কি হলো বলুন,,,,,আমাকে ছেড়ে কোথায় গিয়েছিলেন??😠

ইকরা : ( ধাক্কা দিয়ে) কেনো বলবো তোমাকে হ্যা কেনো বলবো,,,,কে হও তুমি আমার,,, কেউ না,

আহান : ইকরা আমি আপনাকে ভালোবাসি,,,,, আর আপনিও……

ইকরা : আমি তোমাকে ভালোবাসি না,,, সব নাটক ছিলো,,,আর আমাকে বিরক্ত করবে না বলে দিলাম,,,,

আর হ্যা কাল আমি আর ফাহাদ বিয়ে করছি,,,সো এসব পাগলামি বন্ধ করে দাও,,,,,

আহান ইকরার মুখে বিয়ের কথা শুনেই মেজাজ বিগড়ে যায় তাই ইকরার কাছে গিয়ে ইকরা শক্ত করে ধরে,,,,

আহান : দেখুন ইকরা পাগলামি বন্ধ করুন,,, আপনার বিয়ে করার ইচ্ছে হলে আমাকে বলুন আমি এখনি বিয়ে করে নিবো আপনাকে,,,,প্লিজ এমনটা করবেন না,,,,

ইকরা আহানকে আরেকটা জোরে ধাক্কা দিয়ে কাঁদতে কদঁতে চলে যায়,,,,আর কিছুক্ষন থাকলে সে হয়তো আর নিজেকে শক্ত রাখতে পারবে না,,,,

( চলবে)

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ২৭

আহান : আপনার বিয়ে ঠিকই হবে কিন্তু,,, ওই ফাহাদের সাথে না আমার সাথে ,,,,,,
,
,
,
,
ইকরা একটা হলুদ কালারের শাড়ি,,, ঠোঁটে গোলাপি লিপ্পি,,,চোখে টানা কাজল,,, কোপায় সাদা গোলাপ গুজানো,,,এবং পুরো শরীরে সাদা ফুলের গহনা,,,অসম্ভব সুন্দর লাগছিলো ইকরাকে,,,, কিন্তু এই সৌন্দর্যরুপী কন্যাটি মুখকটাকে আমাবস্যা রাতের আধারের মতো করে রেখেছে,,,,

ইকরা জেদ নিয়ে বিয়েটা করতে চায়লেও ভেতর ভেতর দুমরে মোছড়ে যাচ্ছিলো ইকরার ভিতরটা,,,পাশে মিম আসিফ ও বসা,,,

,
,
ভার্সিটি থেকে এসে ইকরা তার মা কে জোড় করে তার ফুফিকে বিয়ের কথা বলতে বলে,,,ইকরাকে বলতে বললে ইকরা তার মাকে বলতে বলে,,,,

ইকরার মাও সুযোগ খুঁজছিলেন একটা,,,,,, ইকরার মা জানে কি করলে কি হবে,,,,তিনি জামেলা থেকে বাঁচার জন্য ডাইরেক্ট আহানকে ফোন দিয়ে আসতে বলে,,,,

ফাহাদ আর ফাহদের মাকেও ইকরার মা কিছু বলে নি,,
কারন ইকরার মা মনে প্রানে চায়তো আহানই যাতে ইকরার স্বামী হয়,,,তাই বারতি জামেলা করলো না ফাহাদদের বলে,,,( কত্তো ভালা মহিলা😘😘😘)

মিম ইকরার জন্য এক গ্লাস লেবুর শরবত আনে যাতে বেটার ফিল করে,,,হলো উল্টা লেবুর শরবত খেয়ে ইকরা ডাইরেক্ট ঘুম,,,,কারন শরবতে ঘুমের মেডিসিন ছিলো,,,,,

তারপর থেকে যা হয় সব আপনাদের জানা☺

বর্তমান………..

আহান : (ধপাসসসসসসসসস) আহহহ!!!!

ইকরা : 😠😠😠😠

আহান : 🙄🙄🙄🙄 কিহ???

ইকরা : বেলা কয়াটা বাজে?? 😤😤

আহান : আমি কিজানি,,,,আর এইভাবে ধাক্কা দিলেন কেনো??? টাইম জানার থাকলে পাশে মোবাইল ছিলো দেখেননি???

ইকরা : এতো কিছু জানি না,,,, বেলা ১১ টা বাজে,,,এখন আমি না খেয়ে মরতাম নাকি 😠??

আহান : আজব!! ক্ষুদা লাগলে সার্ভেন্টকে ডাক দিলেই তো পারতেন,,,,আমাকে…..

ইকরা : শালা উঠ তুই দরজার চাবি কি আমি আঁচলে বাঁইধা রাখছি,,,,😠

আহান : ওহহ সরি সরি আমি খুলে দিচ্ছি,,,, ( আহান দরজা খুলে দেয় আর একটা সার্ভেন্টকে নাস্তা আনতে বলে ফ্রেস হয়ে চলে যায়)

আহান ফ্রেস হয়ে এসে দেখে ইকরা বসে আছে খাবার নিয়ে,,,

আহান : খাচ্ছেন না কেনো?? এতক্ষন তো তুলকালাম করছিলেন!!!!

ইকরা : আর কিছু না বলে খাওয়াই মন দেয়,,,

আহান ও নাস্তা করে রেডি হতে যায়,,,ইকরা আহানের দিকে তাকিয়ে রেডি হওয়া দেখছে,,,

হুয়াইট শার্ট,,ব্ল্যাক জিন্স,,ব্ল্যাক ওয়াচ,,স্পাইক করা চুল,,,,,এন্ড রিচ ব্ল্যাক লুফার,,,,( 😍😍😘😘😘)

ইকরা : ( এতো সাজে কেন কেজানে,,,আমি তো এইখানে কারে দেখাইবো,,আল্লাহ মালুম)

আহান : কি ভাবছেন???

ইকরা : কোথায় যাচ্ছো??

আহান : ভার্সিটি!!!

ইকরা : ওহ,,বলছি যে……

আহান : হুম শুনছি……

ইকরা : ইয়ে মানে আমিও যাবো ভার্সিটি 😁😁

আহান : হাসি দিয়ে লাভ নায়,,,আপনাকে কোথাও যেতে হবে না,,,এইখানে থাকেন,,,,

ইকরা : আমি যাবো 😠😠

আহান : না😠

ইকরার জোরাজোরিতে শেষে আহান রাজি হয়,, আর একসাথেই ভার্সিটিতে যায়,,,,
,
,
,
,
গার্ড : স্যার,,,আহান স্যারের সাথে ওই ইকরা মেয়েটাকে দেখেছি ভার্সিটিতে ডুকছে,,,

আহানের চাচা : কিহ 😠😠😠😠😠,,,ওই মেয়েটা আবার ফিরে এসেছে,,,

আনায়া : হুয়াট হ্যাপেন্ড আংকেল???

চাচা : ইকরা মেয়েটা আবার ফিরে এসেছে,,,

আনাফের বাবা : কি ঘ্যাড় ত্যারা মেয়েটা😠😠

আনায়া : আম টেলিং ইউ পাপা,,,আমি এবার ওই মেয়েটিকে ছাড়বো না,,আমি ওই শয়তান মেয়েটাকে ছারবো না,,

চাচা : না মামনি,,,আমাদের অন্য কিছু ভাবতে হবে,,,ওই মেয়েটাকে মারলে আহান ক্ষেপে যাবে,,তাতে হিতে বিপরীত হবে,,,তাই অন্য কিছু ভাবতে হবে,,,

আনাফের বাবা : রাইট!!!
,
,
,

২ দিন পর ইকরা ক্লাসে থাকা সময় একটা কল আসে,,, কলটা দেখেই ইকরার মুখে হাসি ফোটে,,,
কল রিসিভ করতেই কান্নার শব্দ……

ইকরা : হেই কান্না করছো কেনো মিষ্টিমনি??

আহিয়া : 😭😭😭

ইকরা : কি হয়ছে বলবা তো???

আহিয়া : মিস ইউ আপু!! তুমি খুব পচা,,😭,,,যাওয়ার পর থেকে একটা কল ও করো নি,,,,

ইকরা : ( এইরে আমার মনেও ছিলো) আম সো সরি মিষ্টিমনি,,,আমি বিজি ছিলাম,,,তাই

আহিয়া : আপু আম্মুকে বলো না ঢাকা যেতে আমি তোমার কাছে যেতে চায়,,প্লিজ আপু😭😭😭

ইকরা : ওকে ওকে ডোন্ট ক্রাই,,,আন্টিকে ফোন দাও,,,

তারপর ইকরা মিসেস আসমার সাথে কথা বলে ঢাকায় আসার জন্য রাজি করাই,,,কালই তারা আসবে,,,
,
,
,
পরেরদিন ভার্সিটি শেষ করে আহানের আগে বেড়িয়ে যায় ক্লাস থেকে, তারপর স্টেশনে চলে যায় আহিয়াদের আনতে,,,

আহিয়াদের নিয়ে আসার পথে কিছু লোক তাদের তিনজনকে একসাথে ধরে নিয়ে যায়,,,

গার্ড : স্যার,,,মেয়েটা সাথে আরো দুজন ছিলো তাদেরকে ও নিয়ে এসেছি,,,, নাহলে সমস্যায় পরতে হতো,,,,

আহানের চাচা : ভালো করেছো এবার। আমি আমার কজ স্টার্ট করি,,,,,

আহান ভার্সিটি তে ইকরাকে না পেয়ে ফোন দিলে ফোন ওফ পায়,,,,,, বাড়িতে ফোন দিলে কেউ ফোন রিসিভ করে না,,,,তাই দ্রুত বাড়িতে পৌছে দেখে…….
,
,
,
,

আহিয়া : আপু লাইফে ফাস্ট এমন এক্সপিরিয়েন্চ হয়েছে,,,বেড়াতে এসে কিডন্যাপ😆

আসমা : চুপ করো,,ভয়ে আমার কলিজা শুকিয়ে গেছে আর তুই মজা নিচ্ছিস,,,,

ইকরা : আম সরি আন্টি,,,এমন কিছু হবে জানলে আমি কখনো আসতে বলতাম না আপনাকে😢

আসমা : আরে না মামনি,,তোমারই বা কি দোষ বলো,আচ্ছা এই কাজ করলো টা কে?? মানে তুমি কি জানো,,,,

ইকরা : আমি ( তখনি আহানের চাচার কথা মনে পড়ে,,,”’উনি তাহলে জানতে।পেরেছেন আমি এসেছি)

সর্বনাশশশশ!!

আহিয়া আসমা : কিহ,,,

ইকরা : আন্টি আমাদের এখান থেকে যেকরেই হোক ভের হতে হবে,,,,নাহলে সব শেষ,,,,

আহিয়া : বের হবো কিভাবে,,???

ইকরা : 🤔🤔,,,,,আইডিয়াআ😀…..ওয়েট,,,

আহিয়া : কি 🙄???

এতক্ষন তারা ফিসফিসিয়ে কথা বলছিলো,,তাদেরকে তিনটা চেয়ারে আলাদা বেঁধে রাখা হয়েছে,,,,,,,আর সেখানে একজন গার্ড দিচ্ছে

ইকরা : হেই মি. হ্যান্ডসাম😍😍

গার্ড : কি ( হালকা খুশী হয়ে)

ইকরা : বলছি আপনি কি বিবাহিত???

গার্ড : না কেনো???

ইকরা : আসলে আমার না আপনার মতো একজন হ্যান্ডসাম এন্ড হট বয়ফ্রেন্ড খুঁজছিলাম,,,😍

গার্ড : সত্যি 😀!!!

ইকরা : হ্যা 😎,,,,😘😘😘

গার্ড : ( লজ্জা পাচ্ছিলো)

ইকরা : আচ্ছা জানেন এখানে কাকে তুলে আনার কথা ছিলো,,,

গার্ড : হ্যা বস বলেছিলো,,ইকরা না নিকরা কি নাম একটা,

ইকরা : 😠,,,,,,কিন্তু আমি তো ইকরা না,,ও ইকরা আহিয়াকে দেখিয়ে,,,,আমাকে কেনো আটকে রাখছো

আহিয়া : 😲,,,

গার্ড : ওহ তো আপনারা,,,???

ইকরা : আমি তো ওনাদের চিনি না,,একসাথে আসছিলাম,,,এসেই ভালো হলো,,, আপনাকে পেয়েছি😍😍,,,,

আহিয়া আসমা : 😢😢😢

ইকরা এক সময় গার্ডটাকে পটিয়ে হাতের পায়ে বাঁধন খুলায়,,,,ইকরা উঠেয় সাথে সাথে গার্ডটিকে একটা লাথি মারে,,এবং চেয়ার দিয়ে পিঠাতে থাকে,,,,,গার্ডটি চেয়ারের পিঠুনি খেয়ে মাটিতে পরে যায়,,,ইকরা তারাতারি আহিয়া ও আসমার বাঁধন খুলে দে,,তারা তিনজনে সবার চোখ এড়িয়ে পালিয়ে যায়,,,,
,
,
,
আহান বাসায় গিয়ে বাসায় অনেক গুলো গার্ড,,,কয়েজম দাদুকে ঘিরে,,কয়েকজন সার্ভেন্টকে,,

সোফায় আহানের চাচা-চাচি,,আনায়া ও তার বাবা বসে আছে,,,,

আহান : আপনারা 😠😠😠😠👽

(চলবে)

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ২৮

আহান : আপনারা😠😠

আনায়ার বাবা : কেনো আমরা আমাদের মেয়ের হবু শশুর বাড়ি এসেছি,,কি বলেন আজহার সাহেব!!

আজহার : হ্যা হ্যা,,,, আহান আনায়া তুকে অনেক ভালোবাসে আর তুই ওকে বিয়ে করবি এখনি!!

আহান : কিহহ,,,, ওই পাগল মেয়েকে???

আনায়া : সাট আপ আহান,,, আম এলসো ফাইন!!😠

আহান : তা নয়তো কি?

আনায়ার বাবা : তুমি আমার মেয়েকে ইনসাল্ট করছো?

আহান : আমি ইকরাকে ভালোবাসি সেটা সবাই জানেন,,,তাহলে প্যাচ করে লাভ নেই,,,

আনায়ার বাবা : আমার মেয়ে কম কিসে?😠

আহান : সব কিছুতেই কম,,,আর ও পাগল,, ওর পাগলামি আমি অনেক দেখেছি,,,,

আনায়া : আহ…..

আজহার : দেখ আহান আনায়ার বাবার প্রচুর ধনি,
,,,তুই ঠকবি না কখনো,,,

দাদু : তো আমাদের কম কিসে যে ওই মেয়ের সাথে বিয়ে দিবো,,,আহানের বাবার যা আছে তা দিয়ে আহানের নাতি নাতনিও আয়েশে জীবন কেটে যেতে পারবে,,,,,,

আজহার : (সেজন্য তো এতো কিছু করা) তবুও….

আহান : আমি আর কোনো কথা শুনতে চায় না আপনারা আসতে পারেন…..
,
,
,
,

আহিয়া : আপু কোনদিকে যাবো কিছুই বুঝতে পারছি না,???

ইকরা : লেট মি সি আহিয়া!!!

আহিয়া : ওকে

তারা বড় রাস্তায় উঠে একটা দোকানে গিয়ে দাড়ায়,,দোখানটি এক মহিলার,,,

আসমা : ইকরা আই থিংক তোমার পুলিশকে ইনফর্ম করা উচিৎ,,মানে তুমি যে বলেছিলে কার যেন বিপদ তাই..

ইকরা : আরে হ্যা আন্টি,,, আমার খেয়াল ছিলো না,,,

ইকরা তাড়াতাড়ি নিজের ফোন বের করে আর আসিফকে ফোন লাগায় ……

আসিফ : হ্যালো ইকরা কোথায় তুই???

ইকরা : পরে বলবো,,, আগে বল আরিফ ভাইয়া কোথায়???

আসিফ : আছে ডিউটিতে!! কেনো???

ইকরা : প্লিজ ভাই এতো প্রশ্ন করিস না,,,,আরিফ ভাইয়াকে বল তার পুলিশ পোর্স নিয়ে আহানদের বাড়িতে যায়,,,আর আমি না আসা পর্যন্ত ওদের আটকে রাখতে,,,গার্ডগুলোকে নিয়ে যেতে,,,,

আসিফ : আরে কে……

বলার আগেই ইকরা কল কেটে দেয়,,,
,
,
,

আনায়ার বাবা : আহান তুমি আনায়া কে বিয়ে না করলে আমি কিন্তু অন্য কিছু করতে বাধ্য হবো,,

আহান : কি করবেন আপনি হ্যা কি করবেন 😠😠

আনায়ার বাবা : আহান তোমার ইকরা কিন্তু আমার।লোকের কাছে আছে,,,আমার একটা ফোন কলে কিন্তু তোমার ইকরার জান ও যেতে পারবে,,,

আহান : কিহ ইকরার আপনার কাছে,, এটা মিথ্যে,,,

আনায়ার বাবা : আজ ভার্সিটি থেকেই কিডন্যাপ করা হয়েছে,,,

আহান : দেখুন আমার ইকরার যাতে কিছু না হয়…

আজহার : আহারে দেখি কে বাঁচায় ওই মেয়েকে,,,,

তখনি একটা কল আসে আজহারের ফোনে….

আজহার : হ্যালো…

গার্ড : স্যার ওই মেয়েটি সহ বাকি দুজন পালিয়েছে,,,

আজহার : হুয়াটটটট!!!! কিভাবে 😠😠

গার্ড : স্যার জানি না আমরা বাইরে ছিলাম,,ভেতরে একজন গার্ড ছিলো তাকে অনেক বাজে ভাবে পেঠানে হয়েছে স্যার,,তারপর তারা পালাই,,,

আজহার : মেয়ে পালিয়েছে সেটা আমাকে শনাতে এসেছো না খুজে,,,, কুইক খুঁজে বের করো নাহলে তোমাদের খবর আছে,,,

গার্ড : স্যার আমরা সবখানে খুঁ…..

আজহার সাহেব রেগে কল কেটে দেয়,,,আহান এতক্ষন ধরে সব শুনে,,,আর একটা স্বস্তির শ্বাস চাড়ে,

আনায়া : এনি থিং রং আংকেল!!!

আজহার : ইয়া…..

তার আগেই অনেকগুলো পুলিশ চলে আসে,,গার্ডদের এবং আনায়া ও তার বাবাকে ধরে নিয়ে যায় আছে শুধু আহানের চাচা-চাচি,,তাও ইকরার কথায় এসপি মি.আরিফ তাদের আটকে রেখেছেন,,,,
,
,
,
আজহার : আরে পুলিশকে ইনফর্ম করলো কে??😠

আরিফ : ইকরাই আমাকে ফোন দিয়ে আসতে বলে,,,আর ইকরা এখানে আসছে,,,,,,

আহান : ওহ তাহলে উনি বলেছেন,,,,
,
,
,

আহিয়া : আপু আমরা এখন কোথায় যবো???

ইকরা : নিয়তির কাছে!!!

আসমা : মানে???

ইকরা : মানে আমাদের সাথে সেটায় হবে যেটা আমাদের ভাগ্যে আছে,,,এই ভাগ্যে কেউ পায় বা কেউ হারায়,,,তাই সব নিয়তির উপর ছেড়ে দিলাম

তারা আর কথা বলে নি,,,ইকরা আসমা আর আহিয়াকে নিয়ে আহানদের বাড়িতে যায়,,,মিসেস আসমা তো বাড়িটা দেখেয় অবাক,,,কারন সেই অতীতের সামনে আজ সেই যেখান থেকে একসময় তাকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়,,,,

ইকরা মিসেস আসমার দৃষ্টি বেশ ভালোভাবে লক্ষ করে,,আহিয়া তো বাড়িটিকে খুটিয়ে খুটিয়ে দেখছে,,,,,

মিসেস আসম : ইকরা এই বাড়িটা…..

ইকরা : ভেতরে চলুন আন্টি,,,

আসমা আর নিজেকে সামলে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে,,,তারা আসতেই,,,

আহানের দাদু,, আহানের চাচা-চাচি,,আর আহান চরম পর্যায়ে অবাক,,,এ কাকে দেখছে এতো বছর পর,,,,

দাদু : আসমা,,,,,

আসমা ও তাদের দেখে অবাক,,তার চায়তেও উনার দৃষ্টি আহানের দিকে।বেশ যাচ্ছিলো,,,,

আসমা : বাবা আপনি…..(দৌড়ে গিয়ে পা ছুয়ে সালাম করে)

আসমা তার আহানের দাদুকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কেঁদে দেয়,,,

আসমা : বাবা আপনি বেঁচে আছেন বাবা আম আমার ছে ছেলে ও কি??( আটকে আসা কন্ঠে)

আহানের দাদু আংগুল দিয়ে আহানের দিকে ইশারা করে দেয়,,,আহানতো নিজের চোখকে বিশ্বাস।করাতে পারছিলো না যে সে তার মাকে দেখছে,,, হ্যা আহান ছোটবেলায় তার মাকে দেখেনি ঠিক কিন্তু তার মায়ের ছবি ছিলো তার কাছে,,,,

মিসেস আসমা দৌড়ে আহানের কাছে গিয়ে জড়িয়ে ধরে,,, সারা মুখে চুমু দিচ্ছিলো,,,কত বছর পর আজ তার শূন্য বুক ভরে উঠে,,,আহানও নিজেকে আর সামলাতে পারে নি এতোবছরের চাপা আর্তনাদ সব বেড়িয়ে আসে,,,সে ও সমান তালে কেঁদে উঠে,,,,

আহিয়া প্রথমে না বুঝলেও যখন বুঝতে পারে দৌড়ে তার মার কাছে গিয়ে আহান কে ভাইয়া বলে জড়িয়ে ধরে,,

আহান : মা ও…..

আসমা : ও তুর বোন আহিয়া,,,,,

আহান সাথে সাথে আহিয়াকে জড়িয়ে ধরে,,আহান কখনো কল্পনা করে নি যে তার একটা বোন ও আছে,,,

দূর থেকে এ দৃশ্য দেখে ইকরার চোখেও পানি চলে আসে,,,নিজেকে বেশ হালকা লাগছে আজ,,,এতোদিনের সব কষ্ট বিফলে যায়নি,,,ইকরার মাও এ দৃশ্য দেখে অবাক…….

দাদু : আসমা তুই এতো বছর বেঁচে আছিস,,,তাহলে এখানে আসিস নি কেনো??? তুর আমাদের কথা মনে পড়ে নি ,,,

আসমা : বাবা আমি এসেছিলাম,,কিন্তু বলেই,,,( আহানের চাচা ও চাচির সামনে যায়,,তারা মাথা নিচু করে আছে,,তারা কখনো ভাবেনি এমন একটা দিন তাদের সামনে আসবে)

আহান : কিন্তু কি মা??? ( উত্তেজিত কন্ঠে)

আসমা : আজহার বলেছিলো তোরা কেউ বেঁচে নেয়,,,তুর দাদু,,তুই আর তুর বাবা তিনজনে মারা গিয়েছিস,,,আর আমাকে অপয়া বলে তাড়িয়ে দেয়,,,

বলেই তিনি কান্না করে দেয় আবারও,,তখনি ইকরা এসে

ইকরা : প্লিজ আন্টি এবার তো আর কান্না করিয়েন না।আপনি তো আপনার ছেলেকে ফিরে পেয়েছেন,,,

আসমা : ইকরা মামনি আমি যদি ভালো করে খুঁজ নিতাম তাহলে এতোটা বছর আমার ছেলেকে কষ্টে কাটাতে হতো না,,,

ইকরা : দেখুন এবার আপনার হাসার সময় কান্নার না,,,
তখনি আহিয়া এসে ইকরাকে জড়িয়ে ধরে,,,,

আহিয়া : আপু তোমার জন্যই আমি আর মা এসব ফিরে পেয়েছি,,,,,,

ইকরা : 😊😊😊

আহান : কিন্তু ইকরা আপনি মা আর বোনের খুঁজ কোথায় ফেলেন,,,,

ইকরা একটা মুচকি হাসি দিয়ে সব বলে,,,,

সবশেষে আহানের সব কষ্ঠ দূর হয়ে যায়,

,(কিন্তু আরেকটু কষ্ট বাকি আছে আহানের,,নেক্সট পার্টে জানতে পারবেন)

(চলবে)

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ২৯

ইকরা : তো এখন সব ঠিক,,,কিন্তু চাচা-চাচি এর শাস্তিটা কি হবে আন্টি???

মিসেস আসমা আহানের চাচাকে দুটো তাপ্পর মারে ,,, আহানের দাদুও

আহান : আপনি আমার চাচা তাই আমি আপনার গায়ে হাত তুলতে পারবো না,,,শুধু একটা কথায় বলবো,,,আপনি আমার পুরো পরিবার টা কে ভেংগে দিলেন,,, তাই আপনার ও কোনোদিন ভালো হবে না,,,সবে তো শুরু……..

আজহার সাহেব আহানের মায়ের পা ধরে কান্না করে দেয়,,,

আজহার : ভাবি আমাকে ক্ষমা করে দিন,,,

আসমা : ক্ষমা?? কখনো না!! আমার এতো বছরের ঘা তুমি শুখাতে পারবে না,,,!!! আমার স্বামী কে আমার কাছে ফেরত দিতে পারবে না তাহলে,,,, কেনো তোমাকে ক্ষমা করবো আমি…….

আমি চায় তুমি শাস্তি পাও কঠোর শাস্তি!!!

আহান : ভাইয়া উনাকে নিয়ে যান,,,( আরিফকে বলে)

ইকরা : আমি আপনাদের একটা ভিডিও দেখাতে চায়!!

দাদু : কিসের???

ইকরা কিছু না বলে সেদিনে রেস্টোরেন্টে ঘটা সব ভিডিও তে দেখায়,,সবাই তো চরম অবাক!!

আহান : এতো কিছু হয়ে গেছে আপনি আমাকে জানানো প্রয়োজন ও মনে করেন নি,,, এই জন্যই কি আপনি আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন,,,,( রেগে)

ইকরা : উপ আহান আমি যদি চলে না যেতাম তাহলে আহিয়া আর আন্টিকে কোথায় পেতাম!!

আহান : আমি চায় উনারা সারাজীবন জেলে পঁচে মরুক 😡😡😠😡😠

তারপর আরিফ আহানের চাচা চাচিকে নিয়ে যায়,,,,
,
,
,

দাদু : কিন্তু ইকরা তুমি কি আগে থেকে জানতে তোমার আন্টিই আহানের মা!!!

ইকরা : ( মুচকি হেসে) আপনাদের ফেমেলি পিকে আন্টির ছবি দেখেছিলাম,,যেটাতে আমি পুরোপুরি আন্টিকে না চিনলেও হালকা হালকা চিনি,,,,,আর বাকিটা আমি এখানে এসেই সিউর হলাম😊

সবাই : ওওওহহ!!!

ইকরা : আচ্ছা আমরা আসি রাত অনেক হয়ে গেছে!!!

আহিয়া : আরেহ!! অসম্ভব!! তুমি আর আন্টি আজ এখানেই থাকবে!!

ইকরা : না না কাল ভার্সিটি আছে!!

আহান : আজকে থেকে যান না ইকরা!🙂

আসমা আর দাদুও একি কথা বলে ইকরাদের যাওয়া আটকায়,,,

আসমা : তাহলে আপনারা এবার অপেক্ষা করুন আমরা রান্নাটা সেরে আসি,,,

আহান : মা তুমি বসো না,,,সার্ভেন্টরা আছে তো!!

আসমা : থাক ওরা,,,,, রান্না আমিই করবো,,তোমরা গল্প করো,,,,😊😊😊

ইকরার মা এবং আহানের মা গল্প জুরে দেয়,,,এবং সাথে রান্নার কাজটাও করছে,
,
,
,

ইকরা আহিয়া আহান ও তার দাদু একসাথে বসে গল্প করছে,,,আহিয়া তার দাদুর সাথে জমে আড্ডা করছে,,

সেই কখন থেকে আহান ইকরাকে ইশারা করছে উপরে যাওয়ার জন্য,,, ইকরা দেখও না দেখার বান করে আহিয়া ও দাদুর গল্প মনোযোগ দিয়ে শুনছে,,,,,

আরো কিছক্ষন হওয়ার পর আহান এবার আর এক মুহূর্ত অপেক্ষা না করে ইকরার হাত ধরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো,,,,

ইকরা : আরে এসব কি শুরু করলা আহান!!! ওদের সামনে…..

আহান কিছু না বলে ইকরাকে নিয়ে নিজের রুমে চলে
যায়,,,এবং দরজা লক করে দেয়,,, এক সেকেন্ড ও দেরি না করে ইকরা ঝাপটে জড়িয়ে ধরে,,,,

ইকরা জড়িয়ে ধরছিলো না দেখে আহান ইকরার হাত নিয়ে নিজের পিঠে রাখে,,,,

আহান : আপনার কি আমাকে জড়িয়ে ধরলে হাতে ফুসকা পরবে,,???

ইকরা : না কেনো বলছো???

আহান : বলছি কারন আপনি আমাকে জড়িয়ে ধরছেন না তাই,,,,এখন একটু টাইটলি জড়িয়ে ধরেন প্লিজ!!!

আহানের কথাটা ইকরা ফেলতে পারে নি তাই জড়িয়ে ধরে,,,,,কিছু্ক্ষন পর ইকরা আহানকে ছেড়ে দিয়ে চলে আসতে চায়লে আহান হাত ধরে ফেলে,,,

আহান : কি হয়েছে আপনার ইকরা,,,আমার সাথে ঠিক মতো কথাও বলছেন না,,আমার কোনো কথায় কি আপনি কষ্ট পেয়েছেন???

ইকরা : আরে না……..

আহিয়া : ভাইয়া আপু তোমরা কি এখানে??? ( চিল্লিয়ে)

ইকরা আহান : 😮😮😮

দুজনে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে,,ইকরা কিছু না বলে সোজা নিচে চলে যায়,,,

আহিয়া : হুম হুম ভাইয়া মাকে বলবে কখন বিয়ে করবে???

আহান : আজ রাতেই বলবো যে আমি ইকরাকে বিয়ে করতে চায়,,এবং বিয়েটা কালই করতে চায়,

আহিয়া : উপপ ভাইয়া আমি তো বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমার ভাইয়ের বিয়ে হবে আর আমার একটা ভাবিও হবে তাও আবার আমি যাকে পছন্দ করি,,,

আহান : ইকরা কি তোকে আমাদের ব্যাপারে আগে বলেছিলো,,,

আহিয়া : আমাদের ওখানে যাওয়ার পরেরদিন বলেছিলো,,!! আমি সেদিন আপুর ফোনে তোমার পিক দেখি,,,আপু তখন কান্না করছিলো,,,ভাইয়া তুমি খুব লাকি আপু তোমাকে খুব ভালোবাসে,,,,

আহান কিছু না বলে একটা মুচকি হাসি দিয়ে নিচে খেতে যায়,,গিয়ে দেখে সবাই খাবার টেবিলে অপেক্ষা করছে,,,,আহান চারপাশে তাকিয়ে দেখে একটায় সিট খালি আছে তাও দাদুর পাশে,,,ইকরার পাশে আহিয়া বসে পরে,,,তাই আহান দাদুর পাশে বসে,,,,,

সবাই খাওয়া দাওয়া শেষে বসে গল্প করছে,,,ইকরার ঘুম পাচ্ছিলো তাই ঘুমাতে চলে যায়,,,সেই ফাঁকে সবাই মিলে কাল বিয়ের আয়োজনের প্ল্যানিং করছে,,,বিয়েটে আহানের জন্য হচ্ছে কারন আহান দেরি করতে চায়ছিলো না,,,,

সবাই সব কিছুর লিস্ট বানিয়ে ফেলে অল্প কিছু মেহমান দাওয়াত দিবে,,,পরে বড় করে রিচেপশন পার্টি থ্রো করবে,,,,,

এতো কিছুর প্ল্যান করছে কিন্তু ইকরাকে কেউ জানায়নি সাপ্ররাইজ দিবে ভেবে,,,,
,
,
,
,

পরেরদিন সকালে আহিয়া এসে ইকরাকে টেনে তুলে ফ্রেস করিয়ে একটা লাল টুকটুকে শাড়ি পরিয়ে দেয়,,অনেক জোর করে,,,,এবং হালকা সাজিয়ে সিম্পলের উপর এক্সপেনসিভ জুয়েলারি পরাই,,,,ইকরা তো হাবলার মতো তাকিয়ে থাকে,,,,,,সব তার মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে,,,,আহিয়া ইকরাকে মাথায় কাপড় দিয়ে নিচে নিয়ে যায়,,,,ইকরা আশেপাশে তাকিয়ে দেখে হালকা ডেকোরেশন আর আহান একটা লাল আর গোল্ডেন মিক্স পান্জাবি পরে বসে আছে,,,

ইকরাকে আহানের পাশে বসিয়ে দেয়,,তখনো।কাজি আসে নি,,,,,,,

ইকরা চারপাশে তাকিয়ে দেখে সবাই উপস্থিত!!!!

ইকরা তখনি দাড়িয়ে জিগ্যেস করে

ইকরা : এখানে কি হচ্ছে আমাকে একটু বলবে কেউ???

ইকরার মা : আজ তোর আর।আহানের বিয়ে 😊!!!

ইকরা : কিহহহহহ??? বিয়ে মানে,,,😡😡 আমাকে কেউ বলেনি কেনো??? 😠😠😠😠

আহান : আরে আপনি এভাবে রেগে যাচ্ছেন কেনো?? আজ আমাদের বিয়ে আপনার খুশী হওয়া উচিৎ না!!

ইকরা : সিরিয়াসলি আহান আমার।খুশী হওয়া উচিৎ?

আহান : হ্যা..কেনো???

ইকরা : কেনো??? আমি তো এ বিয়ে করতে চায়না😠

আহান : মানেহ কি বলছেন ইক…..

ইকরা : মানে খুব সোজা আহান আমি তোমাকে এখন বিয়ে করতে পারবো না!!!!!

বলেই চলে যেতে নিলেই……..

(চলবে)

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ৩০

ইকরা কথাটা বলে চলে যেতে নিলেই আহান ইকরার হাত ধরে ফেলে!!

আহান : কেনো করতে পারবেন বিয়ে??? বলেন কেনো? 😠

ইকরা : দেখো আহান বিয়ে করার জন্য সময় অনেক পরে আছে,,,তার আগে আমি চায় তুমি তোমার স্টাডি কম্পলিট করো,,,,

আহান : আমি স্টাডি বিয়ের পরেও কম্পলিট করতে পারবো,, প্লিজ ইকরা না করবেন না,,,,

ইকরা : দেখো আহান আমি আমার মত তুমাকে জানিয়ে দিয়েছি,,,এখন তুমি যদি না মানো,,,তাহলে আমি আর তোমাকে বিয়েই করবো না,,😠

আহান কথাটা শুনেই ভয় পেয়ে যায়,,সে আর যাই হোক ইকরাকে হারাতে পারবে না,,,

ইকরার মা : দেখ ইকরা তুর ও তো এই বছর অনার্স কম্পলিট হবে তখন তুই কি করবি?? বিয়েটা হয়ে গেলে ই দুজন দুজনের মতো করে সবটা গুছিয়ে নিও!!!

ইকরা : না মা,,,আহান মাস্টার্স করলে আমি একটা জব করবো,,দেন আহানের মাস্টার্স কম্পলিট হলেই…..

ইকরার কথা শুনে আহানের মেজাজ ধরে যায়

আহান : ইম্পসিবল!!! আমি স্টাডি করবো ঠিক,,কিন্তু আপনি কোনো জব করতে পারবেন না,,,ইনপ্যাক্ট আপনার অনার্স শেষ হলে আপনি আর কোথাও যেতেও পারবেন না,,বাড়ির বাইরেও যেতে পারবেন না,,,,আর যদিও দরকার পরে আমি আপনাকে নিয়ে যাবো,,,,,

সবাই : 😳😳😳😳😳

আহান : এভাবে লুক দিয়ে লাভ নেই,,আমি আমার সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছি,,,,আর আপনি যদি রাজি না হন তাহলে আমি এখনি বিয়ে করবো আপনাকে জোর করে হলেও করবো,,,😡😡😡😡😡

ইকরা : ( কি বলে ছেলেটা,,আমাকে বাড়িতে আটকে রাখতে চায়ছে,,, 😡)

ইকরা কিছু বলতে যাবে তার আগেই আহান বলে উঠে

আহান : আমি আর কিছু শুনতে চায় না,,রাজি আছেন কি না???

ইকরা আকাশ খুসুম কল্পনা করতে করতে এক পর্যায়ে রাজি হয়ে যায়,,,

আহান : আহিয়া আমার রুমের বিছানার পাশে ড্রয়ারে একটা প্যাকেট আছে,,,নিয়ে আয় তো!!

আহিয়া আহানের কথা মতো গিয়ে প্যাকেট টা নিয়ে আসে,,আহান প্যাকেট থেকে দুইটা ছোট বাক্স বের করে,,,,বাক্স গুলো আন্টির রিং,,,

আহান দুইটা রিং এনেছিলো বাসর রাতের জন্য,,একটা ইকরাকে পরাবে,,,আরেকটা নিজে পরবে ইকরাকে দিয়ে,,,কিন্তু আহানের সব ভাবনায় ইকরা পানি ডেলে দিয়েছে,,,তাই আহান এখন রিং চেরেমনি টা সেরে ফেলতে চায়,,,

আহান : মা ,, আন্টি মা ( ইকরার মাকে),,, বিয়ে তো হবে না কিন্তু এংগেজমেন্ট হতে তো কোনো আপত্তি নেই তো আপনাদের!!!

তারাও না বলে আহানের কথায় সায় দেয় যাতে ইকরার সাথে এংগেজমেন্ট টা হয়!!

ইকরা তো নিরব দর্শকের মতো শুধু চেয়ে আছে,,,

এরপর আহান আর ইকরার রিং চেরেমনি হয়ে যায়,,,
,
,
,
,

এরপর সবাই মিলে কথা বার্তা হইহুল্লোরে মেতে উঠে,, চুপচাপ শুধু ইকরা ও আহান,,,ইকরার ছটপটানিটা বেড়ে গেছে কারন আহান ওর সাথে কথাও বলছে না আর তাকাচ্ছে ও না,,,

ইকরা আহানের সাথে কথা বলতে চায়লে আহান কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে উপরে চলে যায়,, যেতে যেতে মনে মনে বলতে লাগে…..

আহান : ( কাজটা মোটেও ঠিক করেন নি আপনি ইকরা,,আমাকে কষ্ট দিয়েছেন আপনি আজ,,কি ক্ষতি হতো যদি আজ আমাদের বিয়েটা হয়ে যেতো,,,আপনি জানেন আমি কতো কিছু প্ল্যান করে রেখেছিলাম আমাদের ফার্স্ট নাইটের জন্য,,আপনি সব বেস্তে দিলেন,,,,আপনাকেও এর জন্য কষ্ট পেতে হবে,,,সুদে আসলে উসুল করে নিবো,,,,যাস্ট Wait)

আহান রুমে এসে পান্জাবি টা পাল্টে একটা ব্ল্যাক টি-শার্ট পরে নিচে যায়,,,,

ইকরাও ইকরার মা বাড়ি ফিরে যাওয়ার জন্য রেডি হয়,,,আর আহান ওদের ড্রপ করে দিতে যায়,,,,

ইকরাদের বাড়ি গিয়ে আহান ইকরার মায়ের সাথে কথা বলতে বলতে বাড়ি ভেতরে চলে যায়!!!

ইকরা আহানকে অনেক ট্রাই করে সরি বলার বাট আহান ইকরাকে দেখলেই এড়িয়ে যায়,,ইকরাও আর।কথা না বলে নিজের রুমে চলে যায়,,,,

আহানেরও ইচ্ছে করছিলো ইকরার সাথে কথা বলার,,কিন্তু আহান নিজেকে খুব কষ্টে সামলে নেয়!!!!
,
,
,
,
,
,
,
পরেরদিন ভার্সিটিতে আহান একপাশে বসে ইকরাকে দেখার জন্য অপেক্ষা করছিলো,,,আহান কথা বলবে না ঠিকই কিন্তু ইকরাকে দেখা বন্ধ করবে না,,,

অনেক্ষন পরে আসিফ আর মিম কে আসতে দেখে আহান,, কিন্তু তার চোখ শুধু ইকরাকে খুঁজছে,,,,,
তখনি আহান দেখে ইকরা তাদের পেছনে কার সাথে ফোনে কথা বলে বলে আসছে,,,আহান ইকরাকে দেখেই অবাক কারন আজ ইকরা একটা পিংক স্কার্ট,,পিংক শার্ট,, আর একটা হুয়াইট স্কার্ফ গলায় জোলানো,,,বেশ মার্জিত পোশাক পরেছে ইকরা,,,,

আরো কাছে আসতেই দেখে ইকরা পিংক হালকা লিপ্পি,,,চুল গুলো ছেরে দেওয়া,,এবং একপাশে পিংক কালারের পুতুলের ক্লিপ লাগানো,,,,ইকরাকে একদম কিউট পিচ্ছির মতো লাগছিলো!!!

আহান : ( উপপপ!! কি করেছেন এটা,,এভাবে আসার কি দরকার ছিলো,,,আমার তো নিজেকে সামলানো কষ্টকর,,, না না আমাকে এভাবে দুর্বল হলে চলবে না,,,,আমিও আপনাকে ততটা কষ্ট দিবো যতটা আপনি দিচ্ছেন,,,চোখ মুখ শক্ত করে)

আহান ইকরার সামনে দিয়ে ক্লাসে চলে যায়,,এমন বান করেছে যেমন ইকরাকে চিনেও না,,,ইকরা এবার আহানের কষ্টটা রিয়ালাইজ করছিলো যখন সে নিজেই রেগে গেলে আহানের সাথে কথা বলতো না,,,

ক্লাস ছুটির পর আহান বসে আছে সবার পরে যাওয়ার জন্য,,,কারন ইকরাদের ছুটি হয় আরো ১০ মিনিট পরে!

তাই আহান সবাই যাওয়ার পর বেরিয়ে কিছু দূর যাওয়ার পরেই হঠাৎ কেউ জোড়ে টেনে খালি ক্লাস রুমে ডুকিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়,,,হঠাৎ এমন হওয়ায় আহানের মাথা গুরতে থাকে আগে কখনো এমন হয়নি,,,নিজেকে সামলে সামনের দিকে তাকাতেই দেখে ইকরা ওর দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে,,,,

আহান এবার বুঝতে পারে ওর সাথে কি হয়েছে তাই চুপচাপ অন্য দিকে তাকিয়ে আছে,,,এই মুহুর্তে ইকরার দিকে তাকানোর ক্ষমতা আহানের নেই

ইকরা : আম সরি আহান!! প্লিজ রাগ করে থেকো না,,দেখো আমি কান ধরছি,,,

আহান : (চুপচাপ অন্য দিকে তাকিয়ে আছে)

তাই ইকরা আহানের দুগাল ধরে নিজের দিকে ফিরায়,,আহান সাথে সাথে নিজের চো বন্ধ করে ফেলে,,ইকরা আহানের বুকে কয়েকটা খামছি ও দেয়,,,,এ সময় নিজেকে বড্ড এলোমেলো লাগছে আহানের ইকরার এমন স্পর্শে!!!

ইকরা : আম সরি আহা….

তার আগেই আহান ইকরাকে ধরে জোড়ে দেওয়ালের।সাথে চেপে ধরে,,,,

আহান : আপনার সরি আর আমার মন গলাতে পারবে না,,,হয় আপনি আমাকে আজই বিয়ে করবেন,,নয় তো যতদিন আমার সাথে আপনার বিয়ে হবে না ততদিন এভাবেই থাকেন,,,কিন্তু আমার সাথে কথা বলতে আসবেন না,,আর আমিও আপনার সাথে কথা বলবো না,,,বলেন আজ বিয়ে করবেন আমাকে( ইকরাকে নিজের সাথে মিশিয়ে)

ইকরা চুপ করে আছে কারন সে রাজি হবে না,,,কারন ইকরা চায়না এতো তারাতারি বিয়ে করতে,,,,আহানকে আরো ম্যাচিউর হতে হবে,,,এবং সেটা সম্ভব আরো কয়েক বছর পরে,,,,,

আহান : আমি জানতাম।!! ওকে ফাইন,,, ফাইননন আমিও আপনার সাথে কথা বলবো না আর আজই লাস্ট,,,,( রেগে চিল্লিয়ে)

ইকরা : যাও বলতে হবে না কথা আমি অন্য কারো সা…..

আহান : জান নিয়ে নিবো যদি আমি বাদে করো সাথে
কথা বলেনতো,,,😠😠

ইকরা আহানের রাগী ফেস দেখে ভয় পেয়ে চুপ হয়ে যায়,,,আর তখনি আহান ইকরার গাল ধরে জোরে একটা কামড় বসিয়ে দেয়,,,,এবং ক্লাস থেকে বেরিয়ে
যায়,,,,, ব্যাথায় ইকরার চোখ দিয়ে পানি চলে আসে!!

ইকরা আর না থেকে গালে হাত দিয়ে বাড়ি চলে যায়,,,
,
,
,
,
,
,
,,

সেদিনের পর থেকে আহান আর ইকরা একে অপরের।সাথে কথা বলেনি,,,একি ভার্সিটি হয়েও ইকরা আহানকে আর দেখে নি,,,কিন্তু আহান তার ইকরাকে দেখার কাজ বন্ধ করেনি,,,,আড়াল থেকে ইকরাকে দেখে যাতে ইকরা ওকে না দেখে!!!

ইকরাও আহানকে প্রচন্ড মিস করতো,,আহানকে ফোন দিলে আহান রিসিভ করতো না,,,শুধু আহান প্রতিদিন রাতে একটা করে হুমকি দিতো মেসেজে ইকরাকে!!!!তার কয়েকমাস পর আহান নিজেকে কান্ট্রোল করতে না পেরে ইকরাকে আবারো একটা কামড় দিয়েছিলো গালে,,,ইকরা সেদিন ও আহানকে দেখে নি!!! তার আগেই আহান গায়েব হয়ে যায়

এভাবে কেটে যায় ১ বছর………..১ বছর পর!!!!

এই একবছরে কিছু বদলায় নি,,,, ইকরা ও আহানের সম্পর্ক সেই আগের মতোই!!! ইকরার এবার অনার্স শেষ হয়,,,তাই আয়ূসি বারবার ফোন দিচ্ছিলো ইকরাকে যাওয়ার জন্য,,,,কিন্তু ইকরার মা যেতে দেয়নি,,তিনি সাফ জানিয়ে দেয় আহানের কড়া আদেশ ইকরা যাতে কোথাও যেতে না পারে!!!!

ইকরাও মন খারাপ করে থাকে,,,আহানকে মনে মনে গালি দিতো,,,তার জন্যই ইকরা আজ ঘরবন্ধি!!!

এর ৫ মাস পর আসিফের বড় ভাই আরিফের বিয়ে ঠিক হয়,,,কিন্তু ইকরা মন খারাপ করে থাকে কারন আহান ওকে কোথাও যেতে দিচ্ছে না,,,,

অন্যদিকে আরিফ আর আসিফ অনেক কষ্টে রাজি করাই গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে এবং বিয়ের দিনে যাওয়ার,,,,ইকরা জানতে পেরে তো সেই খুশী কতোদিন এভাবে বাড়িতে থাকবে!!!
,
,
,
,
,
আরিফের মেহেদি অনুষ্টানে আহান ফোন করে ইকরার মাকে জানায় ইকরা যাতে সন্ধ্যায় রেডি হয়ে থাকে বিয়েতে যাওয়ার জন্য!! ইকরার মা অসুস্থ নাহলে উনিও যেতো!!!!
আহান আসবে কথাটা শুনেই ইকরা খুশীতে নাচতে মন চায়ছিলো,,, প্রায় দেড় বছর পর সে আহান কে দেখবে তাই…..

সন্ধ্যায়….

ইকরা একটা ডার্ক গ্রিন কালারের লেহেঙ্গা পরে,,,চুল মাঝখানে সিথী করে একটা টিকলি পরে,,,সাথে বাকি ম্যাচিং জুয়েলারি,,,,ঠোঁটে গাঢ় লাল লিপিস্টিক,,,চোখে গাঢ় টানা কাজল,,,সব মিলে খুব সুন্দর লাগছিলো ইকরাকে,,,,,,,,

কিন্তু ইকরা ভাবছে আহানের তাকে কেমন লাগবে!!!
ভাবতে ভাবতে হঠাৎ গাড়ির হর্ন ভাজতেই ইকরার ধ্যান ভাংগে!!!!

ওর মার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বের হয় ইকরা,,,যত হাটছে ইকরার ধুকপুকানি বেড়ে চলছিলো,,,,

বের হতেই দেখে আহান গাড়ির সাথে টেস দিয়ে দাড়িয়ে মোবাইল টিপছে,,,,,,

সিক্স প্যাক বডি,,আগের চায়তে আরো লম্বা হয়ে গেছে,,,,পরনে হুয়াইট শার্ট,,উপরে ব্ল্যাক ব্লেজার,,, ব্ল্যাক জিন্স,,,,সেম কালার লুফার এন্ড ওয়াচ,,,চুল স্পাইক করা,,সুদর্শন যুবক,, ভয়ংকর হ্যান্ডসাম লাগছিলো আহানকে,,,

ইকরা তো আহানকে দেখেই কনফিউজড!! আহানকি আসলেই ওর ছোট,,,,নাকি ইকরা নিজেই আহানের ছোট,,,এসব ভাবতে ভাবতে ইকরা আহানের।সামনে দাড়ায়,,,,কারো উপস্থিতি টের পেয়ে আহান চোখ তুলে তাকাতেই ইকরাকে দেখে,,,,আহান ইকরা দেখেয় একটা ঝাটকা খায়,,,ইকরাকে এমন সাজে দেখে তো আহানের পাগল পাগল লাগছিলো,এতো সুন্দর লাগছিলো যে আহান চোখ পেরাতে পারছিলো না,,,,তবুও চোখ সরিয়ে নেয়,,কারন এই মুহুর্তটা আহান নিজেকে অনেক কষ্টে সামলাবে!!!!

ইকরা কিছু না বলে আহানের পাশের সিটে বসে পরে,,,আর আহানও বসে যায় ড্রাইভিং সিটে,,,,

অনেক্ষন হলো আহান ড্রাইভ করছে,,,আহানের বেহায়া চোখ গুলো বার বার ইকরার দিকে যাচ্ছিলো,,,,

আহান আর উপায় না পেয়ে মাঝরাস্তায় গাড়ি থামায়!

দুজনে চুপচাপ,,,ইকরাতো ভয়ে কাচুমাচু হয়ে আছে,,,আহানের গাড়ি থামানোটা ইকরাকে কক্সবাজার যাওয়ার আগের মুহুর্তটা মনে পড়ে,,,,,,

দুজনে চাপা অভিমান নিয়ে চুপ করে আছে!! কথা বলতে পারছে না,,,,ইকরা এতোদিন আহানের সাথে কথা না বলায় এক রখম লাগছিলো,,,তাই চুপ করে আছে,,,,

আর আহানতো পারছে না তার #মায়াময়ীকে ঝাপটে জড়িয়ে ধরে আদরে ভরিয়ে দিতে,,,,তবুও নিজেকে সংযত করে,,,আবার গাড়ি চালানোতে মন দেয় আহান!!

অনুষ্ঠানে গিয়ে সবার সাথে কুশল বিনিময় করে তারা,,,আসিফ মিম তো অনেক খুশী তাদের প্রানের বন্ধবীকে পেয়ে,,,,,ইকরা হাসিখুশীতে মেতে উঠে তাদের সাথে…..খাওয়া দাওয়া শেষ..এখন নাচ- গানের পালা,,,

আহানের নজর শুধু ইকরার উপর কি করছে না করছে সব খেয়াল করছে,,,,আহানের একটা কল আসায় একপাশে চলে যায়,,,,

কথা শেষ করে এসে দেখে ইকরা একটা ছেলের সাথে হেসেহেসে কথা বলছে সেটা দেখেয় আহানের রাগ সপ্তম আকাশে!!!

আহান গিয়ে ইকরার পাশে গিয়ে ইকরার কোমড় ধরে কাছে টেনে এনে জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে,,,,

ছেলেটা দেখেয় ভ্রু কোচকে তাকায়,,,,

আহান : মাই পিয়ন্চি !!!( ছেলেটিকে)

ছেলেটি : ওহ😕😕😕

তারপর ছেলেটি চলে যায়,,,ইকরা তো আহানের দিকে একদৃষ্টি তে তাকিয়ে আছে,,,কতদিন পর আহানের।গলার স্বর শুনলো ইকরা,,,,

আহান ইকরার দৃষ্টি উপেক্ষা করে ইকরাকে নিয়ে সবার থেকে বিদায় নিয়ে বেরিয়ে পরে,,,,বাসায় ড্রপ করে দেওয়ার।জন্য,,,,ইকরা দেখছে আহানের চোখ মুখ লাল হয়তো রেগে আছে ,,,,

ইকরা : ( রেগে থাকলে থাকুক তাতে আমার কি হুহ,,,কোথায়।অনুষ্টানে এনজয় করবো তা না,,,সোজা বাসায় নিয়ে যাচ্ছে 😠😠😠)

আহান ইকরাকে বাড়ি পৌছে দিয়ে নিজে বাড়ি চলে যায়,,,,

মাঝরাতে ও আহানের ঘুম আসছিলো না এপাশ ওপাশ করছিলো!!! ইকরার মুখটা ভেসে আসছিলো চোখের সামনে!!! ইকরার ও একি অবস্থা,,,ঘুমাতে পারছেনা
,
,
,
আহান শুয়া থেকে উঠে যায়,,,মোবাইলটা হাতে নিয়ে বেলকানির দিকে যায়,,,

আহান : ( আমার রাতের ঘুম হারাম করে শান্তিতে ঘুমাবেন তাই না,,,,)

বলেই ইকরার ফোনে কল দেয়,,,এতো রাতে অচেনা নাম্বারের কল দেখে ফোন রিসিভ করেনি ইকরা!!
ফোন অনবরত ভেজে চলছে তাই ফোন রিসিভ করে!!

ইকরা : হ্যালো কে বলছেন এতো রাতে???

আহান : ( চুপ করে জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে,,,)

ইকরা : হ্যালোওওও😠

আহান তাও চুপ করে আছে ইকরার ভয়েচ শুনে আহানের হার্ট বিট করতে লাগে,,,,

ইকরা হ্যালো করেই যাচ্ছে,, একসময় ইকরা চুপ হয়ে যায়,,,তাতেই আহানের অস্থিরতা বেড়ে যায় কারন ইকরা ভয়েচটা শুনতে আহানের বেশ ভালো লাগছিলো,,,আর শান্তিও লাগছিলো আহানের,,,একপর্যায়ে ইকরা বলে উঠে………….

ইকরা : আহানননন!!!!!

(চলবে)

🌹#মায়াময়ী_আপনি🌹

#লেখিকা : তারিন জান্নাত
#পার্ট : ৩১

ইকরা : আহাননননন!!

ইকরা ডাকটা শুনেই আহান তরিঘরি করে কল কেটে দেয়!!

ইকরা : আমি জানি আহান তুমিই ফোন দিয়েছো!!

এবার ইকরার আহানের মেসেজ নামক হুমকির অপেক্ষায় আছে!!! হলো ও তাই আহানের মেসেজ আসে,,, ইকরা মেসেজ ওপেন করে দেখে!!!!

আহান :- খুন করে ফেলবো আপনাকে আমি!!! 😡
আমাকে জ্বালাচ্ছেন,,,আমিও জ্বালাবো
আপনাকে,,,,আমার কষ্টটা আপনাকেও
ফিল করতে হবে!!! মাইন্ড ইট 😠😠😠

আহানের মেসেজটা দেখেই ইকরার ঠোঁটে হাসি চলে আসে,,,কারন এই দেড় বছরে আহান শত হুমকি দিয়েছিলো মেসেজের মাধ্যমে!!!

ইকরা : ( তোমার জন্য আমি সব সয্য করতে পারবো আহান,,,,আর বেশিদিন নেই আমিও তোমাকে আপন করে নিবো😊😊) ভাবতে ভাবতে আবার আহানের মেসেজ আসে!!!

আহান :- কাল রেডি হয়ে থাকবেন আমি নিতে আসবো
,

এরপর দুজনে তলিয়ে যায় গভীর ঘুমে,,,
,
,
,
সকালে ঘুম থেকে উঠে আহান ফ্রেস হয়ে নিচে যায় নাস্তা করতে,,,,গিয়ে দেখে আহানের দাদু মা আহিয়া নাস্তার টেবিলে বসে আহানের ওয়েট করছে,,,

আহান : গুড মর্নিং😊

আহিয়া : এতক্ষনে আসলা ভাইয়া আমরা কখন থেকে ওয়েট করছি!!

আহান : স্টার্ট করো সবাই!!!

সবাই নাস্তা করা শুরু করে,,,,

আহানের মা : আহান ইকরাকে একটু নিয়ে আসবি কতদিন দেখি ওকে!!!

আহানের ইকরা কথা শুনতেই মুখটাতে গম্ভীর ভাব নিয়ে আসে!!! আহান কিছু বলবে তার আগে…

আহিয়া : মা কি যে বলো না,,,, ইকরা আপুর বাড়িতে গিয়ে আমরা দেখা করে আসবো!!! বুঝলে!!
আসলে এখানে কেউ চায় না ইকরা আপু এখানে আসুক!!( আহানকে উদ্দেশ্য করে)

আহান ধুম করে উঠে হনহন করে চলে যায়,,এবার ব্যাক করে আহিয়ার সামনে দাড়ায়,,,

আহান : তুইও রেডি থাকিস,,বিয়েতে যাওয়া জন্য!!( বলেই রুমে চলে যায়)

আহিয়া : ওকে!!
,
,
,
,

বেলা ১১ টা বাজে,,,আসিফ ইকরাকে ফোন দিয়ে বলে তাড়াতাড়ি রেডি হতে,,তাই ইকরাও রেডি হয়ে নেয়,,

ইকরা একটা গাঢ় গোলাপি রঙের শাড়ি সাথে কালো ব্লাউজ!! ঠোঁটে গাঢ় গোলাপি লিপিস্টিক!চোখে কাজল !!আজ ইকরা চুল ছেড়ে দেয় নি,,,কোনো সিথী ও করে নি,,,শুুধু কোপা করেছে এবং তাতে গোলাপি রঙের ফুল গুজে দেয়!!! হাতে কালো চুড়ি,,,আজকে তো ইকরাকেম অন্য রখম সুন্দর লাগছে!!!

ইকরা রেডি হয়ে গেইটের পাশে দাড়িয়ে আহানের ওয়েট করছে!! তখনি আহানের গাড়ি এসে দাড়ায় ইকরার সামনে,,,গাড়ি থেকে আহিয়া বের হয়ে ইকরাকে জড়িয়ে ধরে তারপর দুজনে পেছনের সিটে গিয়ে বসে পরে!!!

আহান : আহিয়া আমাকে কি গাড়ির ড্রাইবার মনে হচ্ছে ( দাঁতে দাঁত চেপে)

আহিয়া : কি হয়েছে? ( বিরক্তি ভাব নিয়ে)

আহান : যেকোনো একজন সামনে আসো 😠,,,,

আহিয়া : আপু তুমি যাও!! 😊😊

ইকরা : না,,আমার সামনে বসতে ভালো লাগে না মিষ্টিমনি তুমি যাও🙂(আহানকে রাগাতে কথাটা বলে)

আহিয়া : ভাইয়া আমার আপু সাথে কিছু ইম্পরট্যান্ট কথা আছে,,,সো কেউ সামনে যাচ্ছি না,,,তুমি গাড়ি স্টার্ট দাও,,,
আহানতো রেগে বোম হয়ে যায়,,,সে ডাইরেক্ট না বললেও ইনডাইরেক্টলি চেয়েছিলো ইকরা যাতে ওর পাশে বসে,কিন্তু ইকরা সামনেয় আসলো না,,,তাই আহানকে আয়না দিয়ে ইকরা কে দেখতে হচ্ছে!!!

আহান : (আপনাকে যত দেখি তত দেখতে ইচ্ছে করে ইকরা,,এখন মন চায়ছে একটু ছোয়ে দি,,,কিন্তু দেখেন আজ তাও পারছিনা,,,,তাই আপনাকে দেখে আমার মন টাকে শান্ত করছি,,খুব সুন্দর লাগছে আপনাকে আজ)

ইকরা আর আহিয়া সেই থেকে বকবকানি শুরু করেছে বন্ধ করার নাম নেই,,,তার মাঝে ইকরা খেয়াল করে আহান বার বার আয়নার ভেতর দিয়ে ওর দিকে তাকাচ্ছে!! ইকরার আনইজি ফিল করছে কারন আহিয়া ও সাথে আছে,,,

তাই ইকরা আহিয়াকে বলে আহিয়ার সিটে গিয়ে বসে,,আর আহিয়াকে নিজের সিটে বসায়,,,এটা দেখেই আহানের মেজাজ খারাপ হয়ে যায়,,,

সব কিছু উপেক্ষা করে আহান আহিয়াকে বলে…

আহান : আহিয়া অনেক বলেছিস কথা এবার তুর আপুকে বল এখানে সামনে এসে বসতে!! নাহলে আমি আর বিয়েতে নিয়ে যাবো না,,,

আহিয়া : মুচকি হাসি দেয় ( আমার ভাইটা তো তার।বোনের সামনেও বাদ যাচ্ছে না🙈🙈)

ইকরা বাধ্য হয়ে নাকমুখ ফুলিয়ে সামনে সিটে এসে বসে পরে!!!

ইকরাকে রাগতে দেখে আহানের বেশ মজা লাগছে!!

আহান : ( আমি দেখছিলাম বলে সরে গিয়েছিলেন না দেখেন এখন কেমন লাগে)

ইকরা : ( দেখে নিবো তোমাকে আমি 😠😠)

তারপর তারা কমিউনিটি সেন্টারে পৌছায়,আহান পেছনে আহিয়া আর ইকরা সামনে কথা বলে বলে যাচ্ছে,,,,ইকরা আহিয়া গিয়ে আসিফ আর মিমের সাথে কথা বলতে যায়,,

আহান একপাশে গিয়ে ইকরার ফোনে একটা মেসেজ দেয়,,,

ইকরার ফোনে মেসেজ আসায় ইকরা মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে মেসেজটা আহানের নাম্বার থেকে এসেছে,,

আহান :– ‘ ছেলেদের থেকে দূরে থাকবেন!, আর আমি যাতে না দেখি আপনি কোনো অচেনা ছেলের সাথে কথা বলছেন,,,নাহলে কিন্তু সবার সামনে আপনার গালে কামড় বসাতে আমার একটু ও লজ্জা করবে না,,সো মাইন্ড ইট!!😠😠

আহানের মেসেজটা পড়েই ইকরা চারপাশে চোখ বুলিয়ে আহানকে খুঁজে,,, কিন্তু আহানকে দেখেনি কারন আহান তার এক পরিচিত ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলেছিলো বাইরে,,,,,

ইকরা : ( কি মনে করে নিজেকে এখনো বিয়েই হয়নি তার আগেই এতো অধিকার হুহ ডং 😠)

আসিফ তো সবকিছুর ফাঁকেফাঁকে আহিয়া কে দেখছে,,,কারন এতো বছরে কোনো মেয়ে তার মনে ভালোবাসার ফুল ফোটাতে পারেনি,,,,সেখানে আহিয়া তার মনে ফুলের বাগান বানিয়ে ফেলেছে ভালোবাসার!

আসিফ : ( আর কিছুদিন অপেক্ষা তারপরেই তোমাকে আমার করে ফেলবো😊)
,
,
,
,

বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ হলেয় আহান ইকরাকে বাড়িতে ড্রপ করে দেয়,,,তারপর থেকেই আহানের সাথে আর।ইকরার দেখাও হয়নি,,কথা ও হয়নি,,,কিন্তু মাঝে মাঝে আহান নিজেকে সংযত করতে না পেরে কয়েকটা মেসেজ দেয়,,,কিন্তু ফোন দেয় না,,,ইকরা ফোন দিলে তো রিসিভ ও করেনা,,,,
,
,
,
,

এভাবে আরো ২ বছরের ও বেশি কেটে যায়,,,, এর পরেও আহানের মনের রাগ টা এখনো কমেনি ইকরার প্রতি বরং আরো বেড়েছে,,,,আহান শুধু একটা কথায় বলে,,,কিন্তু এসবে ভিতরে আহান আর ইকরার একে অপরের প্রতি ভালোবাসা একটু ও কমেনি,,,

আহান : ( আমি রেগে আছি তাই আপনার সাথে কথা বলিনি এতো বছর,,, কিন্তু আপনি আমার রাগটাকে ভাঙতে পারতেন ইকরা,,আমিও দেখি আপনি আর কতোদিন আমার সাথে কথা না বলে থাকেন,,,বাট আই প্রমিস আমি যেদিন আপনাকে আমার কাছে সম্পূর্নরুপে পাবো সেদিনই বুঝিয়ে দিবো আমাকে এতোদিন কষ্টে রাখার মজা,,,,বিয়েটা হুক দেন আমার টর্চার স্টার্ট হবে,,,মাই ডিয়ার #মায়াময়ী উডবি #বউ)

আহান রাতে বিছানায় শুয়ে শুয়ে কথা গুলো ভাবছিলো,,,আর ভাবতে ভাবতে ঘুমের দেশে তলিয়ে যায়,,,
,
,
,
,,
,,

কিছুদিন আগে আহানের মাস্টার্স শেষ হয়,,,ব্যাচারি ইকরাকে ঘরে বসিয়ে বুড়ি বানিয়ে ফেলেছে,,,,এই দুবছরে ইকরা শুধু তিনবার বেড়াতে যেতে পেরেছে তাও অনেক কাহিনী করে,,আহান যেতে দিয়েছিলো,,,

আজ শুক্রবার আহান আহানের মা,, আহিয়া দাদু ইকরার বাড়িতে যাচ্ছে,,,সবাই রেডি হয়ে বেরিয়ে পরে ইকরাদের বাড়িতে,,,,,বিয়ের ডেট ফিক্সড করবে

ইকরাকে সে সকাল থেকে মিম জ্বালিয়ে মারছে,,,আহান এমন করবে ওমন করবে ব্লা ব্লা,,,,,,,

ইকরা : ওই চুপ কর তো,,আমি আছি আমার জ্বালায়,,,,এ ছেলেটা আমাকে না জানি বিয়ের পর কেমন জ্বালানি দেয়,,,

মিম : হুম টিট ফর ট্যাট বেবি!! তুই যেমন ওর ম্যাচিউরিটির নাম করে এতো মাস অপেক্ষা করালি,,তাই আহান যা করছে ঠিক করছে,,,,, তুই যা করেছিস তুর সাথেও তাই হবে,,,,

ইকরা : মানে আমি কি করেছি…

মিম : কি করিসনি সেটা বল,,,এতো কিউট একটা ছেলেকে এতো বছর ওয়েট করালি,,,,

ইকরা : তুরা সবাই যদি এমন করিস,,,,,, আমি বলে দিচ্ছি বিয়ের দিনই পালিয়ে যাবো,,,দেখি কে পায় আমাকে,,,,

মিম : এ না না,,,,,, আহানতো পাগল হয়ে যাবে,,,,এরখম করিস না,,,কত্তো ভালোবাসে তুকে,,,,হাইইই!!!😘😘😘

ইকরা : তাইলে মুখ বন্ধ কর,,,

এক সময় ইকরার মা এসে বলে যে আহান রা চলে এসেছে,,,ইকরাও রেডি হয়ে তাদের কাছে যায়,,,,,

মিম আর আহিয়া ইকরাকে আহানের পাশে বসিয়ে দেয়,,,তারপর সবাই আলোচনা করে বিয়ের দিনটা পরের শুক্রবারে ঠিক করে,,,,,,,

আহান : ( এখন শুধু বিয়েটা হবার ফালা,,,আপনি আমার হয়ে যাবেন ইকরা,,,)

ফোনের দিকে তাকিয়ে আহান কথাটা ভাবছিলো,,,,,

তারপর সবাই খাওয়া দাওয়া করে বিয়ের ব্যাপারে ডেকোরেশন সব নিয়ে আলোচনা করছে,,,এবং দুবাড়ির অনুষ্ঠান একসাথে হবে,,,,,,,,,,,,

তাদের বিয়েটা একটা রিসর্টে হবে,,এটা আহান ও আহিয়া চায়ছে তাই,,,,তারপর তারা বিয়ের কেনাকাটা করে রিসর্টের উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পরে,,,,,,

( আপনাদের ও দাওয়াত দিলাম,,আহান ও ইকরার বিয়েতে)
এখন বলেন আহান ইকরার বিয়ে নিয়ে কারা কারা এক্সাইটেড??????? কমেন্টে জানাবেন😊😊😊

(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here