মায়াময়ী আপনি পর্ব ১-১১

#মায়াময়ী_আপনি

#তারিন_জান্নাত
#পার্ট : ০১-১১পর্যন্ত

——
——
— অন্ধকার একটি রুমে অচেতন অবস্থায় বন্ধি হয়ে আছে ইকরা,,আস্তে আস্তে চোখ খুলে তাকিয়ে বুঝার চেষ্টা করছে কোথায় আছে,,উঠতে চায়লেই বুঝতে পারে হাত পা বাধা,,তাই ইকরা আবারও শুয়ে পরে,,, আর বলতে শুরু করে

কেনো করছো এমনটা কেনো,,,

তখনই ইকরা শুনতে পায় পায়ের শব্দ,, কেউ একজন দরজা খুলে ভেতরে এসে আমার পাশে দাড়িয়ে আছে,,

ইকরা : কেনো করছো এমনটা?? প্লিজ আমাকে ছেড়ে দাও,, যেতে দাও আমায়,,,তুমি জানো আজ আমার গায়ে হলুদ,,,প্লিজ যেতে দাও,,,আহান

সেই ইকরার পাশে এসে হাত ও পায়ের বাধঁন খুলে দেয়,,,ইকরা উঠে বসে,,

আহান : আমি আপনাকে আগেই বলেছি সব,,, কেনো এমন করছি,,

ইকরা : আর আমিও তুমাকে অনেকবার বলেছি তুমি যেটা বলছো সম্ভব নয়,,,

আহান : ঠিক আছে থেকে যান এইভাবে আমার কাছে,,কিন্তু মনে রাখবেন আপনি আমার কাছ থেকে কখনো মুক্তি পাবেন না,,,

ইকরা : ( কাঁদছে)

আহান : একটু “”ভালোবাসলেই”” হবে আর কিছু চায় না আমার,,,,

ইকরা : তুমি জানো তুমি বয়সে আমার ছোট,,, তাও কেনো বুঝছো না,,,আমি তোমাকে আমার ভালোবাসা হিসেবে মানতে চায় না,,,না কখনো ভালোবাবো,,(আটকে আসা কন্ঠ),

আহান : আমিও আপনাকে কোথাও যেতে দিবো না,,,
এখন উঠেন আর শাড়িটা চেঞ্জ করেন ফেলেন,,আমি কাপড় বেড় করছি,,,

তারপর আহান আলমারি থেকে একজোড়া থ্রি- পিচ ভের করে দেয়,,,

ইকরা : করবো না চেঞ্জ,,, আমাকে ভালোই ভালোই বাড়িতে দিয়ে আসো,,নাহলে আমি,,,

আহান : আচ্ছা নাহলে একটু আদর দিয়েন,,আমার লজ্জা করছে,,,সব বিয়ের পরের জন্য রেখে দেন,,,

আপনি এখন যাবেন নাকি আমি আপনাকে কোলে করে নিয়ে গিয়ে চেন্জ করে দিবো,,,,

ইকরা : সাথে সাথে দৌড় দিলাম,,এর বিশ্বাস নায়,,,

আহান : (মুচকি হাসছে) জানিনা কিভাবে আপনার ভালোবাসা পাবো,,কিন্তু আমাকে পেতেই হবে,,,আমি যে মায়ায় জড়িয়ে গেছি আপনার,,,,,

আমার “মায়ময়ীর” মায়ায় জড়িয়ে গেছি,,,আপনাকে আবারও আমার মায়ায় জরাতে হবে,,,,( মানি না আমি বয়সের ভেদাভেদ শুধু জানি আপনাকে আমার করবই আমার ভালোবাসা দিয়ে),,,,

তারপর ইকরা ওয়াসরুম থেকেই বেরুতেই আহানের চোখ আটকে যায় ইকরার দিকে,ভেজা চুল থেকে টপটপ পানি পরছে,মুখে হালকা পানি জমে আছে,, বেগুনি রংগের জামাটা তার সাদা গায়ের রংগের সাথে মিলে এক অপূর্ব সুন্দর্য্য সৃষ্টি হয়,,,,

ইকরার এই রুপটা বড্ড টানছে আহানকে তাই

আহান উঠে ইকরার কাছে গেলেই ইকরা এক মগ পানি ছুড়ে মারে আহানের গায়ে তাতে আহান ভিজে একাকার হয়ে যায়,,,

আহান মুচকি হেসে

আহান : আপনার আমাকে খালি গায়ে দেখতে ইচ্ছে করছে বুঝি,, বললেই তো হতো,,,

ইকরা : রাখো তুমার হতো,,,তাড়াতাড়ি আমার জন্য খাবার আনো ক্ষিদা লাগছে,,,

আহান : ওহ সরি! আনছি,,,,

ইকরা : যাক গেছে,,, এবার দরজা বন্ধ করি,,,

ইকরা দরজা বন্ধ করেই পালানোর পথ খুজে বেড়াচ্ছে,,,কিন্তু আহান সেতো কাচা খেলোয়ার না তাই বেলকনির দরজা,,আর জানালা বন্ধ করে রাখে,,,

আহান : কোনো লাভ নেই এখান থেকে কোথাও যেতে পারবেন না,,,

ইকরা : ( হকচকিয়ে) তুমি?? আমিতো।

আহান: আমার এক্সট্রা চাবি আছে,,,,নিন হা করেন আমি খাইয়ে দিচ্ছি,,,

ইকরা : আমার হাত আছে, আমি খেতে পারবো,,,

আহান : (রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে)

ইকরা ভয় পেয়ে যায় কারন আহানের রাগের সাথে সে পুর্বপরিচিত!
তাই আহানে হাত থেকেই খেয়ে নেই তারপর……..

(চলবে)

“মায়াময়ী আপনি”

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট : ০২

ইকরা ঘুমিয়ে আছে আর আহান অপলক ভাবে তাকিয়ে আছে ইকরার ঘুমন্ত মুখের দিকে,,,কতোটা মায়াতে ভরপুর এই মুখকানা তার হিসাব আহান করতে পারবে না,,সে করতেও চায় না,, শুধু চায় এই মুহুর্তটা যেনো এখানেই থমকে থাক,,,

“ভালোবাসি খুব ভালোবাসি আপনাকে।

কথাটা বলেই আহান ইকরার মুখে একটা চুমু দেই,,

তারপর আহান ওয়াসরুমের দিকে চলে যায়,,,

ইকরা এতক্ষণ ঘুমাই নি ঘুমানোর বান করেছিলো আর আহানের বলা কথাগুলো ও শুনতে পায়,,,আর মনে মনে বলতে থাকে….
–” কেনো বুঝতে পারছো না তুমি আহান,,, আমাদের সম্পর্কটা তোমার চাচা মেনে নিবে না,,বরং উনার কথার খেলাপ হলে তোমাকে সবাইকে মরেও ফেলতে পারে,,,আমি আমার জন্য তোমার,,,তোমাদের ক্ষতি হোক চায় না,,আমিও,,,,, তোমাকে ভালোবাসি,,,,,

আমি এখান থেকে বেড় হতে পারলেই হবে,,অনেক দূরে চলে যাবো,,, তারপর কোনো একসময় তুমিও আমাকে ভুলে যাবে,,,,,

ওরনাটা ভালোভাবে গায়ে জড়িয়ে বেড়িরে পরে ইকরা রুম থেকে,,, নিচে নেমে দেখে বাড়িতে কেউ নেই,, ইকরা গেইটের পাশে চলে যায়,,তারপর যেই না গেইট খুলতে যাবে হুট করে আহান এসে গুড়িয়ে ইকরাকে কোলে নিয়ে নেয়,,,ইকরার মনে হলো হাওয়াই বাসছে,,,পরক্ষনে বুঝতে পারলো যে আহান কোলে নিয়েছে,,,তাই রেগে

ইকরা : ওই তুই আমাকে কোলে নিলি কেনো??

আহান : ডায়রেক্ট তুই??

ইকরা : দেখ ভালোই যেতে দে নাহলে,,,

আহান : চুপ করবেন নাকি নিচে ফেলে দিবো,,( হালকা ঝাকানি দিয়ে)

ইকরা সাথে সাথে আহানের গলা জড়িয়ে ধরে,আর আহান ও মুচকি হাসি দেয়,,,,

আহান ইকরাকে রুমে নয়ে দরজাটা লক করে দেয়,,ইকরাকে বিছানায় রাখার সাথে সাথে ইকরা উঠে আহানকে কামছি দিতে থাকে,,,,,

আহান : আপনার এই অব্যাসটা আমার জন্য পারফেক্ট!!

ইকরা : দারা পারফেক্ট বের করছি,,আরো জুড়ে কামছি দিতে লাগে,,,

আহানের ইকরার এই কামছি গুলো বিষন ভালো লাগছে যে,,, উপবোগ করছে বেশ,,,তাই ইকরার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে,,,

ইকরা : হাসছে কেনো তুমিইইইই!!

আহান : ভালোবাসার মানুষের দেওয়া স্পর্শ কার না ভালো লাগবে,,,

ইকরা সাথে সাথে হাত সরিয়ে নিতে চায়লে আহান ইকরার হাতটা ধরে রাখে,,,আহান ইকরার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকে,,

আহান : ( নরম তুলোর মতো হাতগুলা,,)

ইকরা আহানের চোখের দিকে থাকায়,,সাথে সাথে ইকরা চোখ সরিয়ে পেলে,,,আর ভাবতে থাকে

ইকরা : ( এই ছেলের চোখ দুটো ভয়ন্কর সুন্দর,, এই চোখের দিকে থাকালে আমি নিশ্চিত আবার এই ছেলের মায়ায় পরে যাবো,, না না এটা হতে পারে না (মনে মনে)

আমি ঘুমাবো তুমি যাও,,,

আহান : উহু আমি কোথাও যাবো না,, আমি এখানে থাকবো আপনার সাথে,,একি রুমে, একি বেডে,,,

ইকরা : দেখো পাগলামি করে না,,,

আহান : আপনি শুয়ে পড়ুন,,, নাকি আমি এখন অন্য কিছু করবো,,( চোখ টিপ মেরে)

ইকরা সাথে সাথে শুয়ে পড়ে,,,আহান ও ইকরার পাশে শুয়ে পড়ে,,,আর ইকরাকে জড়িয়ে ধরতে চায়লে ইকরা সরে যায়,,,তাই আহান ইকরাকে হ্যাচকা টান দিয়ে বুকের ভিতর নিয়ে শুয়ে পড়ে,,,ইকরা উঠে যেতে চায়লে ইকরাকে টেনে বুকে ফেলে তারপর আহান বলতে শুরু করে

আহান : আপনি যদি আরেকবার উঠার চেষ্টা করেন তাহলে আমি এখন সেটাই করবো,,,যেটা আমাদের বিয়ের পর করা উচিত,,,,

ইকরা ঘাবড়ে যায় আর তাই চুপচাপ শুয়ে পড়ে,,,

আর আহান ইকরার গালে চুমু দেয়,,,বুকে শক্ত করে জড়িয়ে ডুব দেয় অতীতে!!

(( অতীতে))

( চলব)

“মায়াময়ী আপনি ”

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট : ০৩

( অতীত)

ভার্সিটিতে ইকরা তখন অনার্স ৩য় বর্ষে আর আহান তো অন্য কলেজ থেকে এসে নতুন অনার্স ১ম বর্ষে এডমিশন নেই,,,,

তখন বৃষ্টির দিন ছিলো ইকরার বৃষ্টি দেখলেই সাদা কাপড় পরতে মন চায়,,,এতে এক অন্যরখম আনন্দ পেত ইকরা,,,,

সেদিন ও ব্যাতিক্রম নয় বৃষ্টি পড়ছে দেখেয় ইকরা একট সাদা জামা পরে,,,ইকরার তখন একটা বান্ধবি ছিলো মিম,,,,

মিম : ইয়ার আজকেও সাদা জামা পড়লি,,,,তোকে একদম কাধাপরি লাগবে,,,

ইকরা : বেশি বকিস না তো চল,,,নাহলে ভিজে যাবো,,

দুজনে দ্রুতগতিতে ভার্সিটিতে ডুকছিলো,,,তখনি একটা দামি গাড়ি গেইট দিয়ে প্রবেশ করে,,,,

ইকরা মিম গাড়ির দিকে তাকিয়ে ছিলো,,,হঠাৎ গাড়ি তাদের পাশ দিয়ে যেতেই কাধার চিটকা সব ইকরার গায়ে এসে পড়ে,,,তখনি ইকরার মেজাজ সপ্তম আকাশে।

ইকরা : ওইইইই এনাকোন্ডাআআআআআআ!! ( চিল্লিয়ে)

গাড়ি কিছুদুর গিয়ে আবার ব্যাক করে ইকরাদের সামনে দাড়ায়,,,আর গাড়ি থেকে একটা সুন্দর, লম্বা,,
আর হ্যান্ডসাম ছেলে বের হয়ে আসে,,,,,

মিম : ওয়াও,

ইকরা : (রাগে ফুসফুস করছে)

আহান : কি বলেছেন আপনি?? ( বলেই ইকরার দিকে তাকায়,,,,আর সাথে সাথে হাজরো শীতল অনুভুতি নারা দেয় আহানে মাঝে)

কারন ইকরার হালকা ভেজা সাদা জামা,,, পায়ের প্লাজুটা হালকা ভেজা নিচ দিয়ে,,, ঘন চোখের পাপড়ি আর ভ্রু,,,গোলাপি ঠোঁট,,অদ্ভুদ সুন্দর মেয়েটা,, আহান চোখি পেরাতে পারছে না,,,তবুও চোখ পিরিয়ে নেয়,,,

ইকরা : কি বলেছি শুনতে পাননি,,,জুড়েই তো বলেছিলাম।

আহান : শুনেছি তাই জিগ্যেস করছি কি বলছেন??

ইকরা : এনাকন্ডা বলেছি এনাকন্ডা।

আহান : আমাকে কোন এঙ্গেল দিয়ে এনাকন্ডা লাগছে??

ইকরা : সেটা বলতে পারবো না,,,আপনি আমার কাপর নষ্ট করেছেন… দেখেন কাধায় আমার জামাটা শেষ হয়ে গেছে,,, তাই সরি বলেন??

আহান : আশ্চর্য! আমি সরি বলবো কোন দুঃখে??
আর বৃষ্টির দিনে এমনটা হয়,,,এটা স্বাভাবিক,,,

ইকরা : আচ্ছা স্বাভাবিক তাই না,,,ওয়েট!! ( বলেই পাশে নিচে পড়ে থাকা কাধা নিয়ে আহানের গায়ে ছুড়ে মারে,)

আহান : what the কি করেছেন আপনি এটা??

ইকরা : বৃষ্টির দিনে এমনটা হয়,,এটা স্বাভাবিক তাই না,,,( আহানকে কপি করে)

আহান : দেখেনিবো আপনাকে??

ইকরা : এখন একটা পিক তুলে নেন আর সারাদিন সারারাত দেখেন ,বলেই দৌড়ে চলে যায়

আহান : ( আহান রাগ করতে চায়লেই ইকরা হাসিটা দেখেই রাগ নিমিষে উদাও হয়ে যায়)
দেখে তো পিচ্চি মনে হচ্ছে,,

মুচকি হেসে ক্লাসে চলে যায় আহান

( চলবে)

“মায়াময়ী আপনি”

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট : ০৪

মিম : ওই কাধাপরী (জোরে হেসে)

ইকরা : ওই মাথা গরম করিস না,,ফাজিল পোলাটা দেখ আমার ড্রেস নষ্ট করে দিছে,,,বাগ্যিস আমি সবসময় এক্সট্রা ড্রেস কেরি করি নাহলে আমার অবস্থা
কাধা মাখা পেত্নির মতো হতো,,,,

মিম : যায় বলিস ছেলেটা কিন্তু সেই,আমি তো ক্রাসড ,,কোন ডিপার্টমেন্টে কে জানে,,,,
আগে তো দেখি নি,,মনে হয় নতুন,,,,
ইসস তুই ওর শার্টটা ও নষ্ট কর দিলি,,,

ইকরা : ওলে বাবালে!! যা না তো লুংগি আর পান্জাবি কিনে দে,,,,

মিম : আরেহ এতো ড্যাশিং ছেলে পরবে এইসব!! কতো কিউট উপপ!!

ইকরা : দূরররর!!( বলেই চেঞ্জ করতে চলে যায়)

আহান ক্লাসে গিয়ে একটা সিটে ব্যাগ রাখে,,,আর সারা ক্লাসে চোখ বুলিয়ে নেয়,,,

আহান : কই মেয়েটা তো এখানে নেই,,,,

তারপর আহান ওয়াসরুমে যায় কাধা পরিষ্কার করতে,,,
পরিষ্কার হয়ে বের হয়ে কাপড় ঝাকাতে ঝাকাতে সামনের দিকে এগোই,,,, আর ইকরা ও কাপর চেন্জ করে বের হয়ে যেতে যেতে খায় আরেক ধাক্কা,,

পরে যেতে নিলেই আহান ইকরার হাত চট করে ধরে ফেলে আর,,, ইকরাও পরা থেকে বেঁচে যায়,,,

ইকরা : ওই কানা না..( তাকিয়ে দেখে ওই ছেলেটা)আপনি??

আহান : (ইকরাকে আরেক রুপে দেখে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে,,,আহানের হার্ড অনেক জুড়ে বিট করছে,,, কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলে,,,)

ইকরা : এই যে এই ছেলে নতুন নাকি,,,??

আহান : জ্বি হ্যা,,,( থমথম গলায়)

ইকরা : কোন ইয়ার??

আহান : অনার্স ফাস্ট ইয়ার,,,

ইকরা : ওওহহ জুনিয়র ক্লাসে যাও,,,( বলেই চলে যাচ্ছিলো,,,আহানের ডাকে ফিরে তাকায়)

আহান : আব শুনেন,,,! আপনি ?

ইকরা : জেনে কি করবে??,,,

আহান : না মানে,,,,

ইকরা : ক্লাসে যাও,,,( বলেই চলে যায়)

আহান তো ইকরার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে,,,

আহান : আমাকে জুনিয়র বলল,,,তার মানে উনি সিনিয়র …( মন খারাপ করে চলে যায়)

ক্লাস শেষে সবাই চলে যাওয়ার জন্য বেড়িয়ে পরে,,,
আহানও বেড়োই,,,

মিম : ইকু ওই দেখ আমার ক্রাস দাড়া একটু কথা বলে আসি,,,

আহানের কাছে গিয়ে,,,

মিম : হ্যালো মি. ( আহান কিছু না বলে পাশ কাটিয়ে চলে যায়,,)

ইকরা সেটা দেখেইহাসতে থাকে।

মিম : দাড়া তুইই,,বলেই ইকরাকে তাড়া করে আর গেইটের বাইয়ে চলে আসে,,,,

ইকরা তখনো হাসছিলো আর দৌড়াচ্ছিলো,, আর আহান গাড়ির ভেতর থেকে ইকরাকে দেখছিলো,,,

আহান চায়ছে বার বার চোখ সরাতে কিন্তু ওর মন জুড়ে জুড়ে বলছিলো যেনো ইকরাকেই দেখে,,,তাই আহান ও ইকরার হাসিমাখা মুখকানা দেখার লোভ সামলাতে না পেরে তাকিয়ে থাকে,,,হঠাৎ দেখলো ইকরা হোচট খেয়ে পড়ে যেতে গিয়ে নিজেকে সামলে পেলে,,

মিম ও ইকরাকে তাড়ানো বন্ধ করে ইকরাকে ধরে,,,
দুজনে দাড়িয়ে যায়,,,আর রিক্সার জন্য অপেক্কা করতে থাকে,,,আহান হুট করে তার ফোন বের করে আর ইকরার কয়েকটা পিক তুলে নেয়,,,

আহান নিজে ও ভেবে পাচ্ছে না কেনো সে কাজটা করল,,,তারপর রিক্সা আসলে ই ইকরা ও মিম চলে যায়,,,

আহান বাসায় এসেই তার দাদুর রুমে যায়,,,,

আহান : হেই ওলড ম্যান,,,,

দাদু : হেই ইয়াং ম্যান,,, ফার্স্ট ডে কেমন কাটলো??

আহান : সুপার্ব দাদু,,,জানো কি হয়েছে,,,( তারপর ইকরার সাথে ঘটে যাওয়া সব বলে)

দাদু : হা হা,,, মেয়েটা তাহলে অনেক বাচ্চা স্বভাবের নাহলে এমন বাচ্চামি কেউ করে!!!

আহান : (মুচকি হাসি দেয়)

দাদু : শোন তোরর বাবা ফোন দিয়েছিলো,,,

আহান : হুম তো ( গম্ভীর কন্ঠে)

দাদু : বলছে যে,,

আহান : আমি ফ্রেস হতে যাচ্ছি,,,( বলেই চলে যায়)

আহানের দাদু শরীফ চৌধুরি একটা দীর্গশ্বাস চাড়ে

( চলবে)

“মায়াময়ী আপনি”

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট : ০৫

শরীফ সাহেব এসব ভাবতে ভাবতে আবারও ফোনে কল আসে,,,নেম আজাহার দিয়ে,,আজহার হচ্ছে আহানের বাবা,,,

শরীফ : কেনো ফোন দিয়েছিস আবার।

আজহার : বাবা আমি আহানের সাথে কথা বলতে চায়

শরীফ : কেনো???

আজহার : বাবা আমি আহানকে আর তোমাকে এখানে নিয়ে আসতে চায়!!

শরীফ : কিন্তু আমরা যেতে চায় না,,,তোরা তোদের ক্যারিয়ার নিয়ে ভাব,,আমরা ভালোই আছি তোদের ছাড়া,,,

বলেই কল কেটে দেয়,,,

আহান জিমের জন্যে বেড়িয়ে পড়ে,,আসবে একেবারে সন্ধ্যায়,,,

ইকরা বাসায় ডুকে ফ্রেস হয়ে খেয়ে শুয়ে পরে কারন বিকালে ইকরার দুইটা টিউশনি আছে,,,

বিকালে ইকরা বেড়িয়ে পরে টিউশনি তে যাওয়ার জন্য,

বাইরে বৃষ্টি পরছে হালকা ইকরা ভিজে ভিজেই টিউশনিতে যায়,,,সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে আসে,,,

আহানও জিম থেকে ফিরে ফ্রেস হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়ে,,,মোবাইলটা বের করে ইকরার পিকটা দেখতে লাগে,,,

আহান : ( ছবিরির দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে)

শরীফ : উহুম উহুম,,,

আহান : ( তাড়াতাড়ি ফোনটা পাশে রেখে দেয়) কিছু বলবে দাদু,,,???

শরীফ : আরে না,,,দেখছি আমার ইয়াং ম্যানটা কি করছে,

আহান : আচ্ছা ভালো,,,দাদু তুমি আর দিদা কি লাভ মেরেজ করেছিলে??

শরীফ : আর লাভ মেরেজ তখনকার দিনে এসব ছিলো নাকি,,,তোর দিদাকে দেখেই আমার মনে ধরে গিয়েছিলো,,,তাই সোজা বাসায় প্রস্তাব দেয়,,ছেলে ভালো হওয়ায় তারা রাজি হয়ে যায়,,,,

আহান : (দু’গালে হাত দিয়ে শুনছিলো)

শরীফ : আচ্ছা চল ডিনার করবো,, আয়???

আহান : ওকে চলো,,,

ইকরা বাসায় আসার পর থেকেই শুয়ে আছে বিষণ অস্বস্তি লাগছিলো,,,,মাঝরাতে ইকরার জ্বর চলে আসে,,,ইকরার মা নাঈমা বেগম মেয়ের মাথায় জলপাট্টি দিচ্ছিলো,,,

নাঈমা : বারন করেছিলাম না বৃষ্টিতে না ভিজতে,,,দেখ কিভাবে জ্বর বাঁধালি,,

ইকরা : আহহ মা ঝরের দিনে জ্বর হবে এটা স্বাবাবিক!

ইকরার জ্বর সকালের দিকে আরো বেড়ে যায়,,,মিমের কল আসে

মিম : ইকরা বইন কোথায় তুই,,,

নাঈমা : মিম আমি তোমরা আন্টি,,, ইকরার জ্বর এসছে তাই ভার্সিটি যাবে না,,,

মিম : কি বলেন আন্টি আমি আসছি তাহলে,,,

নাঈমা : আরে না মা তুই ভার্সিটি যা,,ক্লাস করা মোস্ট ইমপর্টেন্ট!!

মিম : ওকে আন্টি

মিম ভার্সিটি তে চলে যায়,,,অন্যদিকে আহান আজ আগেই ভার্সিটি চলে আসে,,, রাতে একটু ও ঘুমাতে পারেনি আহান,,, ঘুমাতে গেলেয় ইকরার মুখটা ভেসে উঠতো,,,,তাই ইকরাকে দেখার জন্য আগেই চলে আসে,,,

আহান খেয়াল করলো ওইদিনের মেয়েটা যেটা ওর সাথে নিজ তেকে কথা বলতে চেয়েছিলো,,,

আহান : ( আরে কালকের ওই মেয়েটা কই,,) এই মেয়েটার থেকে জিগ্যেস করবো??? যদি কিছু ভাবে,,,
ভাবলে ভাবুক আমি জানবোই ওই মেয়েটার পরিচয়,,

আহান : আপু শুনছেন???

মিম : আমি ( খুশী হয়ে)

আহান : ইয়েস আপু।

মিম ; জ্বি বলেন??

আহান : আসলে আপনার সাথে কাল যে মেয়েটা ছিলো উনি কই???

মিম : কার কথা বলছেন,? আজব??

আহান : ওই আমাকে কাধা ছুড়ে মেরেছিলো,,,উনি!!

মিম : ওহ ইকরা,,,ও আমার সাথে সেম ক্লাস এন্ড ডিপ..

আহান : ( ওহ তাহলে উনার নাম ইকরা ) হ্যা উনি কোথায়????

মিম : ইকরা আসবে না,,,,

বলার আগেয় ক্লসের দিকে স্যার যাচ্ছিলো তাই সবাইকে ক্লাসে যেতে বলে,,,

আহান ও মিম ও চলে যায়,,

আহান : উপপ উনাকে এক পলক দেখতে পেতাম মনটা শান্তি পেতো,,,কি হচ্ছে এইসব আমার সাথে,,

আজ ২ দিন ইকরা ভার্সিটি যায় নি,,,আহানও মিমের থেকে জিগ্যেস করে কারন মিম বলেছে ইকরার শরীর খারাপ,,,ব্যাস আহানের অস্বস্তি আরো বাড়তে লাগে,,

আজ ইকরা আর মিম,, বিকালে রাস্তায় দাড়িয়ে ছিলো

( চলবে)

“মায়াময়ী আপনি”

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট : ০৬

মিম : ইয়ার আমরা কোথায় যাচ্ছি বলছিস না কেনো??

ইকরা : আরে ফুফি ফোন দিয়েছিলো যাওয়ার জন্য!.তাই তোকেও নিয়ে যাচ্ছি,,,,

মিম : কেনো যেতে বলেছে??

ইকরা : বলেনি!!!

মিম : ওহ,,,,আচ্ছা সোন ওইদিনের ছেলেটা তোর কথা জিগ্যেস করেছিলো।

ইকরা : কোন ছেলে??

মিম : ওই যে সেদিন তোর জামা নষ্ট করে দিয়েছিলো

ইকরা : ওওও,,,, কি বলছিলো,,,

মিম : বার বার তোর কথা জিগ্যেস করছিলো বেশি,,,তুই আসিস নি কেনো???

ইকরা : ও ছেলে কেনো আমার কথা জিগ্যেস করবে??

মিম : আমি কি জানি,,,,,কাল নাহয় জেনে নিস,,,এখন চল,,,

ইকরা আর মিম রিক্সাতে উঠতে যাচ্ছিলো…..

আহান : ইকরাআআ,,,,

ইকরা মিম দুজনে তাকায়,,,আহান দৌড়ে ওদের কাছে আসে,,

আহান : কতক্ষন ধরে আপনাকে ডাকছি,,(ইকরাকে উদ্দ্যেশশ করে)

ইকরা : ডাকছিলে কেনো???

আহান : ইয়ে মানে কেমন আছেন??

ইকরা : জ্বি আলহামদুলিল্লাহ্‌ ভালো,,,তুমি??

আহান : আমিও ( ভালো আর থাকতে দিলেন কই)

মিম : আমাকে কারো চোখেই পরে না।

আহান : কেমন আছেন আপুুুওও??

মিম : ভালো।

ইকরা : আচ্ছা মিমম চল দেরি হয়ে যাচ্ছে,,,

আহান : ইকরা শুনেন,,,

ইকরা : মিমকে যেমন আপু ডেকেছো,,আমাকেও আপু ডাকবে,,,

আহান : ( ডাকতে মন চায় না তো কি করবো ) হুম,,,বলছি আমি ড্রপ করে দেয়,,,

ইকরা : না,, ধন্যবাদ!!চল মিম

ওরা দুজনে চলে যায়,, আহান ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে।

আহান : {{{ যে আহান চৌধুরী সবার সামনে এটিটিউট নিয়ে চলে,,সে আহান ওই আপনার সামনে কথা বলতে কনফিউজড হয়ে যাচ্ছিলো,,,কেনো আপনাকে দেখলে আরো দেখতে মন চায়,,,আমার লাইফ তো আগে এমন ছিলো না,,,বেশি না হলেও কানিকটা গুছালো ছিলাম আমি,,আমার সব এলেমেলো হয়ে গেছে,,,, আচ্ছা আপনার সাথে যদি আমার দেখা না হতো তাহলে তো এমন হতো না,,কিন্তু আপনি আসার পর আমার জীবনটা কেমন পূরপূরে হয়ে উছেছে,,,জানি না আগে কি হবে,,,,শুধু চায় আপনার প্রতি আমার এই অনুভূতি বাড়াতে,,,আর এই অনুভূতির নাম দিতে}}}}

এতোক্ষন এই কথা গুলো আহান গাড়ির সিটা হেলান দিয়ে ভাবছিলো আর মুচকি হাসছিলো,,,তখনই আগমন কলের আর আহানের ধ্যান ভেংগে যায়,,,

আহান : হ্যালো ওল্ড ম্যান!!

দাদু : হ্যালোওও মাই ইয়াং ম্যান কোথায় তুমি,,???

আহান : এইতো লেকের পাড়ে,,,কেনো,???

দাদু : একটু এতিমখানায় যাবো,,,তাই তুকেও যেতে হবে,,,সেখানে আমাদের দাওয়াত আছে,,,!!

আহান : ওকে ওল্ড ম্যান আম কামিন বাই,,,

দাদু : বাই

ইকরা : ফুফি তুমি কি যেনো কথা বলতে চায়ছিলে??

(হাসনা বেগম) ফুফি : হ্যা বলছি যে তোর বাবা যাওয়ার আগে আমাকে তুদের দয়িত্ব দিয়ে গেছে,,,বলতে গেলে তোদের ভালো মন্দ দেখাশোনার দায়িত্ব আমার তাই নই কি??

ইকরা : জ্বি ফুফি,,,

ফুফি : তাই আমি আর তোর ফুফা একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছি,,,,???

ইকরা : কি সিদ্ধান্ত???

ফুফি : ১ মাস পর ফাহাদ আসছে,,,তাই পরের মাসেই তুর আর ফাহাদের বিয়ে দিতে চাচ্ছি,,,কি বলিস??

ইকরা : দেখেন বাবা আপনাকে আমার ও মার দায়িত্ব দিয়েছে ঠিকি,,,সেটা দেখাশুনাতেই সীমাবদ্ধ কারন,,,আমার মা আপনাদের কাছে হাত পাতে নি,,,ইভেন নানুর বাড়িতে ও চলে যায় নি,,,আমার মা শিক্ষিত তাই নিজে চাকরি করেন,,আর আমি নিজেও দুইটা টিউশনি করি,,,মা আমার কোনো অভাব রাখেনি,,,

ফুফি : আমি সেটা বলতে চায় নি,,,

ইকরা : হ্যা জানি,,,কিন্তু এখানে এর মানে এই নই যে আপনারা আপনাদের সিদ্ধান্ত নিজ মন মতন করে নিবেন,,,আমি এখন বিয়ের কথা ভাবতে চায় না,,,

ফুফি : ফাহাদ তোকে অনেক পছন্দ করে তাই,,,

ইকরা : আমি ফাহাদ ভাইয়াকে নিজের ভাইয়ের মতো মানি,,,আমি এখন আসছি,,,,

ফুফি : হুম ( মুখটা মলিন হয়ে যায়)

ইকরা : ( দৌড়ে এসে ফুফিকে জড়িয়ে ধরে)
আমি সরি ফুফি কথাটা এইভাবে বলতে চায় নি,,,প্লিজ রাগ করো না,,,নাহলে আমি এই যাবো আর কখনো আসবো না,,,

ফুফি : ( হেসে দেয়) বুঝেছি আমার ওই পিচ্চি ইকুট অনেক বড় হয়ে গেছে তাই না,,,

ইকরা : উম্মাহ,,ফুফি আসছি তাহলে,,,( চলে যায়)

ফুফি : একটা দীর্ঘশ্বাস চাড়ে আর ভাবতে থাকে

{{ আমার ছেলেটা যে তুকে অনেক ভালোবাসে,,, এখন যদি বলি তুই বিয়েতে না করে দিয়েছিস তাহলে হয়তো আমার ছেলেকে আর দেখতেই পাবো না,,,তাই যা করার তুই আসার পর করতে হবে}}

মিম : ইয়ার তুই উনাকে মানা করে দিলি কেনো??
ফাহাদ ভাইয়াতো অনেক ভালো মানুষ???

ইকরা : হুম বাট আমি উনাকে ভাই মানি,,,

মিম : আচ্ছা আহানকে কেমন লাগে তোর??

ইকরা : ভালো লাগে ( আনমনে বলে ফেলে)

মিম : আচ্ছা তাইতো বলি,,

ইকরা : ( হুস আসে) এ আরে না না এমনি মুখ ফসকে গেছে ইয়াআআর!!!

মিম : হুম হুম মুখ ফসকে কিন্তু সবসময় সত্যিটায় বের হয়,,,জানিস,,,

ইকরা : নাহ

তারপর উভয়ে বাড়িতে চলে যায়,,,,

অনেক্ষন ধরে আহান এতিমখানায় গেস্ট রুমে বসে আছে,,আহানের দাদু ওখানের হ্যাড এর সাথে কথা বলছিলো,,,এই এতিমখানার ওনারর হচ্ছে আহানের দাদু,,,,

আহানের বেশ বিরক্ত লাগছে বসে থাকতে তাই সে বেরুয় একটু বাইরে,,,,

তখনই কয়েকটা মেয়ে আহানকে দেখছে আর দেখছে,,,
এতে আহানের হেজিটেশন আরো বেড়ে যায়,,,

একপর্যায়ে আহান আবার গেস্টরুমে চলে যায়,,,

রাতের খাওয়া দাওয়া সেড়ে,,আহান ও তার দাদু বাড়ি ফিরে যায়,,,

(চলবে)

“মায়াময়ী আপনি”

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট : ০৭

পরেদিন……….

আজকেও আহান আগে চলে এসেছে ভার্সিটিতে,,,ইকরাকে দেখতে পাওয়ায় কিছুটা শান্ত হয় সে,,,

আহান : ( আর কতক্ষন লাগে কে জানে)

রাজিব : কি হয়েছে দোস্ত ইদানিং এতো অন্যমনস্ক দেখায়,,ব্যাপারটা কি???( রাজিব হচ্ছে প্রিন্চিপ্যালের ছেলে)

আহান : আরে নাহ,,,এমনি!!!

রাজিব : আচ্ছা,,, চল ক্লাসে যাই,,,

আহান : আব হ্যা তুই যা আমি আসছি দাদু কল দিবে। ( মিচা কথা)

রাজিব : ওকে আয়,,,( চলে যায়)

আহান গেইটের দিকে তাকিয়ে আছে একটুর জন্য ও সে চোখের পলক ফেলছে না,,,তখনি দেখে ইকরা আসছে,,,একটা লাল রংগের লং কামিজ প্লাজু,আর উরনা,,, আহান তো ইকরাকে দেখে চোখ সরাতে পারছিলো না,,,

আহান : ( কি সুন্দর লাগছে আমার মায়াময়ী কে )

ইকরা আর মিম কথা বলে বলে আসছিলো,,তখনই একটা ছেলে এসে ওদের সামনে দাড়ায়,,,,

ছেলেটা : ইহুম!! কয়দিন ছিলাম না ভার্সিট তে তাই বলে খবর ও নিবি না তোরা আমি এতো খারাপ??( বলেই ইকরাকে জড়িয়ে ধরে আর মিমকেও)

ইকরা : আরে সমস্যা নাই একটু খারাপ হলে,,, কি বলিস মিমি?

মিম : ওই মিমি না মিম বলবি,,আর হ্যা তুই ঠিক বলেছিস,,

আসিফ : কি তারমানে আমি খারাপ,,

ইকরা : এইখানে মানে মানে করার কি আছে,,খারাপরে খারাপ বললাম,,,তাতে কি?

আসিফ : আচ্ছা বাদ দে বিকালে তোরা আমার সাথে যাবি মা দেখা করতে বলছে,,

ইকরা মিম : ওকে যাবো,,,

আসিফ : ওকে রেডি থাকিস চল ক্লাসে,,

আসিফ হচ্ছে ইকরা আর মিম এর ফ্রেন্ড,, এরা ছোট বেলা থেকে একসাথে,,বড় হয়েছে আর পড়াশোনাও করছে,,,তাই ওদের বন্ডিং টা খুব ভালো,,,এতোদিন একটা কাজে বাইরে ছিলো।আসিফ ওদের সিনিয়র!!

আসিফ চলে যাওয়ার পর ইকরা ও মিম ক্লাসে যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই দেখে আহান রেগে মেগে কোথাও যেনো চলে যাচ্ছে ক্লাস না করে,,,

ইকরা : আরে হেই আহান কই যাও,,

মিম : কোথায় যাচ্ছে,,,

আসলে আহান ইকরাকে একটা ছেলের সাথে দেখে তাই ,,আহানের রাগ উঠে যায়,,,

(চলবে)

“মায়াময়ী আপনি”

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট : ০৮

আহান রেগে মেগে বাড়িতে গিয়ে ধারাম করে দরজা বন্ধ করে দেয়,,,আহানের দাদু বেশ বুঝতে পারে আহান রেগে আছে,,,তাই আহানকে শান্ত করার জন্য যায়,,,কারন আহান তার দাদুর সামনে রেগে থাকতে পারে না,,,তাই আহানের রুমে নক করে,,,

দাদু : আহান দরজা খুল!!!

আহান : ( চুপ)

দাদু : দেখ তুই দরজা না খুললে আমি বাড়ি ছেড়ে চলে যাবো দেখেনিস,,,

আহান সাথে সাথে দরজা খুলে দেয়,,আহানের দাদু প্রবেশ করে তার দৃষ্টি আহানের দিকে দেয়,,,দেখে সুন্দর চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে,,রাগার কারনে,,,,

দাদু : রেগে আছিস কেনো???

আহান : ( জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিচ্ছে রাগ কন্ট্রোল করার জন্য)

দাদু : কি হলো বল না!!!

আহান : জানি না কেনো,,,

দাদু : বলবি না,,,আচ্ছা তাহলে আমি…..

আহান : বলছি,,,( সব বলে),,,,আমার খুব রাগ লাগছে দাদু কেনো জানি না,,,

দাদু : বাবাহ!!! আমার ইয়াং ম্যান দেখি প্রেমে পড়েছে,,,

আহান : আরে না দাদু তেমন কিছু না…..

দাদু : চুপ কর তুই,,আমার থেকে বেশি বুঝবি নাকি,,,,

আহান : কিন্তু উনি তো আমার সিনিয়র,,,মানবে না!!

দাদু : চেষ্টা তো কর,,,ক্ষতি কি তাতে??? আর যদি না মানে জোড় করে উঠিয়ে নিয়ে আসবি তারপর বিয়ে করে সংসার করিস,,,

আহান : দাদু তুমি কি আমাকে ভিলেন বানাতে চায়ছো???

দাদু : নারে আমি আমার এই নাতিটার চোখে খাঁটি ভালেবাসা দেখতে পাচ্ছি,,,তাই আমি চায় না তুই কষ্ট পাস,,,তাই!!!

আহান : লাভ ইউ ওল্ড ম্যান,,,,

দাদু : লাভ ইউ টু ইয়াংম্যান,,,,,
,
,
,
,
,
ইকরা : আচ্ছা ওই আহানটা এভাবে রেগে চলে গেলো কেনো??

মিম : আমি জানিনা,,,ওয়ান সেকেন্ড তুর কি হলো?? ওই ছেলেটার কথা জিগ্যেস করছিস,,,,

ইকরা : আরে এমনি,,,আমরা সিনিয়ার না,,,আমাদেরও একটা দায়িত্ব আছে না,,জুনিয়রদের খবরাখবর রাখা,

(জানিনা ছেলেটাকে দেখলে একটা অদ্ভুদ ফিলিংস আসে মনে,,)

আসিফ : কি বলছিস তোরা???

মিম : ওই জু………

ইকরা : আরে আমার জুতা কিনতে শপিং এ যেতে হবে বলছি,,,( এরে বললে আমার সাথে ফাইজলামি করবে)

আসিফ : ওহ,,,,

ক্লাস শেষ হওয়ার পর ইকরা মিম আসিফের বাসায় যায়,,,সেখানে ফ্রেস হয়ে চেন্জ করে খাওয়া দাওয়া সেড়ে নেয় তারা,,বিকালে বাড়ির পাশের বাগানে তারা ক্রিকেট খেলে,,,,

সন্ধ্যা হওয়ার আগে তারা ফ্রেস হয়ে নাস্তা করে,,,, আসিফের অফিসের একটা প্রজেক্টের কারনে চলে যেতে হয়,,,ইকরা মিম ও আসিফের মায়ের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায়,,,

মিম ও মিমের বাসায় চলে যায়,,এখন বাকি ইকরা,,,ইকরার তো সবসময় বাড়ি যাওয়ার জন্য সহজে রিক্সা পায় না,,,আজে তার ব্যতিক্রম নয়,,,

৭ টা বেজে গেছে,,,ইকরা ভয় করছে,,সামনে হেটে যেতেও ভয় করছে,,,কারন সামনে একদম নিরিবিলি,,,
তাই পাশে একটা টেইলার্স এর দোকান আছে,,,, সেখানে দাড়িয়ে আছে,,,

আহান জিম করে গাড়ি করে বাড়ি ফিরছিলো,,, এমন সময় চোখ যায় একটি মেয়ের দিকে,,যাকে আহানের চেনা চেনা লাগছিলো,,,, আহানকে মেয়েটিকে দেখেয় থমকে যায় আহান কারন মেয়েটি ইকরা ছিলো,,,

আহান ভালো করে তাকিয়ে দেখে একটা কাচা হলুদ সিম্পেল গাউন পরেছে,,,আর গলায় গাঢ় পিংক কালারের স্কার্ফ গলায় জুলানো,,,হুয়াইট কালারের ব্যাগ একপাশে জুলিয়ে রেখেছে,,,,
বেশ সুন্দর লাগছিলো ইকরাকে,,,

আহান : কিন্তু উনি এখানে কি করছেন?? ( নেমে ইকরার কাছে যায়) আপনি এখানে কি করছেন???

ইকরা : ( তাকিয়ে দেখে আহান,,ইকরার ভয়টা হালকা কমে এলো) আমি আমি এখানে রিক্সার জন্য!!!

আহান : কোথায় গিয়েছিলেন???

ইকরা : আম আমার ফ্রেন্ডের বাড়িতে!!!!

আহান : কেমন ফ্রেন্ডের বাড়িতে গিয়েছিলেন যে আপনাকে একাই ছেড়ে দিয়েছে???

ইকরা : আসলে ( কি শুরু করেছে ছেলেটা) দেখো তুমি এত প্রশ্ন করছো কেনো,,,??? তুমি তোমার কাজে যাও,,, ( বলেয় হাটতে নেয়)

ইকরা যেতে চায়লে আহান খপ করে ইকরার হাত ধরে ফেলে,,,এতে ইকরা একটু অপ্রস্তুত হয়ে উঠে,,,কারন আহান ওর হাত ধরবে ভাবেনি,,,,

ইকরা : হাত ধরেছ…..

আহান : চলুন আপনাকে ড্রপ করে দি বাসায়???

ইকরা : না লাগবে না,,,

আহান : আমি জিগ্যেস করিনি,,, আমার সাথে চলতে বলেছি,,,,

( বলেই ইকরার হাত ধরে নিয়ে যায় আর গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে,,সিট বেল্ট লাগিয়ে দেয়,,,,,,,এতে আহানের হাত ইকরার কোমর স্পর্স করে,,আর ইকরা হালকা কেপে উঠে,,, আহান সেটা লক্ষ করে )

আহান : ( ম্যাডাম আমার একটু স্পর্সে কেঁপে উঠছেন পরবর্তি কি করবেন )

কথাগুলো ভাবতে ভাবতে ড্রইভিং সিটে বসে গাড়ি স্টার্ট দেয়,,,

অনেক্ষন ধরে গাড়ি ড্রাইভ করছে আহান অথচ ইকরা বাড়ির এড্রেস দেওয়ার পর আর একটা টু শব্দ ও করে নি,,,,

আহানন আরচোখে ইকরাকে দেখছে,,আহানের হার্ড অনেক জোড়ে বিট করছিলো,,, ইকরার ও তাই চুপ করে আছে,,,আহানের দিকে তাকাচ্ছে না,,,

আহান : ( কি আজিব মেয়ে এতক্ষন ধরে ড্রাইভ করছি না আমার দিকে তাকাচ্ছে আর না কথা বলছে মেয়েটা)

তাই আহান মাঝরাস্তায় গাড়ি ব্রেক করে,,, গাড়ি ব্রেক করায় ইকরা আহানের দিকে তাকায়,,,

ইকরা : গাড়ি থামিয়েছো কেনো???

আহান : আপনি আমার দিকে তাকাচ্ছিলেন না কেনো?

ইকরা : মানে ( অবাক হয়ে)

আহান : মানে দেখেন না আমার চোখে কি পড়েছে,,,অনেক চুলকাচ্ছে,,,( চোখ কচলিয়ে কচলিয়ে)

ইকরা : পানি দিয়ে ঝাপটা দাও!!!

আহান : পানি নেই,,,( পানি আছে,,মিসা কথা কইছে)

ইকরা : ওহ,,

আহানের চোখ কচলানোর নাটক টা ইকরা ধরতে পারে নি,,,এভাবে কচলানো দেখে,,,ইকরা মোবাইলে ফ্ল্যাস অন করে,,,আহানের চোখ দেখতে থাকে আর হালকা ফু দিতে থাকে,,,

আর ইকরাকে এতটা কাছে পেয়ে আহানের পাগল হয়ে যাওয়ার মত অবস্থা,,,অনেক কস্টে নিজেকে কন্ট্রোল করে আহান,,,,

ইকরা : কই নেই তো কিছুই পাচ্ছি না,,,

আহান : হয়তো চলে গেছে ,,,( গাড়ি আবার স্টার্ট দেয়)

ইকরা : ( তাজ্জব হয়ে যায়,,ছেলেটা পাগল নাকি)

তারপর ইকরার বাসার সামনে গাড়ি থামায়,,ইকরা বাড়িতে ডুকতে যাবে তখন,,,

আহান : ইকরাআ!!

ইকরা : (ফিরে তাকায়,,) কি???

আহান : আপনার ব্যাগ,,,,

ইকরা ব্যাগ নিতে যায় আবার আহানও ইকরাকে আরেকনজর দেখতে পারে,,,তারপর গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বাড়ি ফিরে যায়,,,,

( চলবে)

🌹মায়াময়ী আপনি 🌹

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট :০৯

ইকরা বাড়ির ভেতরে ডুকতে ডুকতে ভাবছিলো,,,

ইকরা : ( ছেলেটা কি অদ্ভুদ আচরন করে)

ইকরার মা : কিরে মা এতক্ষন হলো যে আজ???

ইকরা : আর বলো না মা রিক্সার জন্য অপেক্ষা করতে করেত লেট হয়ে গেলো,,,শেষে আমাদের ভার্সিটির এক জুনিয়র ছেলে আমাকে রাস্তায় একা দেখে ড্রপ করে দিয়ে গলো,,

মা : সেকি ছেলেটাকে বাড়িতে আসতে বলিস নি??

ইকরা : আরে মা মনে ছিলো না,,,( আমি তো আহানকে একটা থ্যাংকস ও দিলাম না,, কি ভাবছে কে জানে,,,দূর গাড়িতে যখন ছিলাম তখন কেমন ভয় ভয় লাগছিলো আমার)

মা : ইকরা শুনতে পাচ্ছিস আমার কথা??

ইকরা : হ্যা হ্যা বলো কি বলছো??

মা : ছেলেটার নাম কি??

ইকরা : মানে?? তুমি জেনে কি করবে???( ভ্রু কুচকে)

মা : না মানে এমনি,,,আচ্ছা যা ফ্রেস হয়ে নে!!!

ইকরা : ওকেই,,,,
,
,
,
,
,
আহানতো সেই খুশী আজ ইকরাকে কতো কাছ থেকে দেখেছে,,,আর শুয়ে শুয়ে ভাবছিলো

আহান : ( কি সুন্দর লাগছিলো ইকরাকে,,,ভ্রু জুড়া কি সুন্দর,,ঘন ঘন চোখের পাপড়ি,,,গোলাপি ঠোঁট,,,ইসস খুব ইচ্ছে করছিলো একটা…. দূর সব পরের জন্য জমা রেখে দিলাম,)

হঠাৎ আহান তার গিটার নিয়ে ছাদের দিকে পা বাড়ায়,,,

আর একটা গান গাইতে লাগে….

” শুন মেরে হামসাফার,,কিয়া তুজে ইতনিবি
হে হাবার,,,কি তেরে শ্বাস চালতি জিদারর!!

‘বাস রাহুনগি উমরা বার,,,,

কিতনি হাসিন ইয়ে মুলাকাতে হেএএ,,,উনসে বি পিয়ারি

🎶🎶 তেরি বাতে হেএএএএ

আও না হুস মে হাম সাফার!!!

তখনি আহানের দাদু আসে।

দাদু : কি ব্যাপরা ইয়াং ম্যান আজ খুব হ্যাপি???

আহান : অনেক অনেক হ্যাপি।

দাদু : আমাকে একটু বলতো আমিও হ্যাপি হই,,,,

আহান : ওই বুড়ু এখন আমি কিভাবে আমার বউয়ের সাথে রোমেঞ্চ করে আসছি সেটা বলবো???

দাদু : (চোখ বড় বড় করে তাকায়)

আহান : (মোডী নিয়ে তাকায়)

দাদু : যাহ দুষ্টু অনেক পেকে গেছিস,,,,

আহান : (দাঁত দেখিয়ে হাসি দেয়)

তারপর তারা ঘুমাতে চলে যায়,,,

আহানতো বিছানায় শুয়ে ছটপট করছে,,,কোনোমতেই ঘুমাতে পারছে না,,শুধু ইকরার কথা ভাবচ্ছে,,,মায়াবী মুখটায় বেসে আসছিলো,,,তারপর আহান ইকরার পিক নিয়ে দেখতে থাকে,,,তবুও মন বরছে না আহানের,,,

আহান : ( দেখেন না আমি একটু ও ঘুমাতে পারছি না,,আপনাকে দেখতে ইচ্ছে করছে,,,কিন্তু কিভাবে)

আহান কিছু একটা ভাবে,,তারপর গড়িতে তাকিয়ে দেখে ১২ টা উনিশ মিনিট মাত্র,,, আহান বেড়িয়ে পড়ে বাড়ি থেকে,,,,
,
,
,

ইকরা বুকের মধ্যে একটা পুতুল জড়িয়ে ঘুমাচ্ছিলো আহান এক ধ্যানে দেখছে তার মায়াময়ীকে,,যার মায়াতে এই রাতের বেলায় ছোটে আসতে হয় আহানকে,,,,

আহান : এই যে শুনছেন,,, আপনার রুমে আসাটা যে খুব সহজ আমার জন্য,,সেটা আগে জানলে আরো আগে চলে আসতাম আপনাকে দেখতে,,,( ফিসফিয়ে)

আহানের একটা আংগুল ইকারা গাল হালকা স্পর্স করে,,তারপর আস্তে আস্তে পুরো মুখ স্লাইড করতে থাকে,,,এবং নিজের আংগুলে চুমু খায়,,,

আহান : ( খুব ইচ্ছে করছে আপনার গালদুটো চুমুই ভরিয়ে দিতে,,,হ্যা একদিন অবশ্যই দিবো কিন্তু আপনার অজান্তে না,,,আপনার সামনেই,,,, দেখি ততদিন নিজেকে ধরে রাখতে পারি কি না,,,)

বলেই ইকরার হাতের ভাজে হাত গুজে দেয়য়,,অন্য হাত দিয়ে আহান ইকরার কয়েকটা ঘুমন্ত ছবি তুলে নে,,,

আহান : ( আপনার ঘুম তো সেই বার,,নাহলে এতক্ষনে জেগে যেতেন,, যাক ভালোই হলো আমার জন্য,)

আরো কিছুক্ষন থেকে আহান সেখান থেকে বাড়ি ফিরে যায়,,,তারপর ঘুমিয়ে পরে,,,,,

ইকরা তো টেরও পায়নি যে আহান এসে ওকে দেখে চলেও গিয়েছে,,,

পরেরদিন…..

আহান একটা নেবি ব্লু শার্ট আর ব্ল্যাক পেন্ট,হাতে ব্ল্যাক রিচ ওয়াচ,,,,ব্ল্যাক লুফার,,,,যাস্ট ওয়াও,,,

আকস্মিক ভাবে ইকরাও আজ নেবি ব্লু থ্রি-পিচ পরে,,,

ওরা দুজন দুজনকে সেম কালারে দেখে অবাক,,,

আহান এগিয়ে আসে ইকরার সাথে কথা বলতে,,,

ইকরা : থ্যাংকস!!

আহান : ফর হুয়াট???

ইকরা : কাল ড্রপ করে দেওয়ার জন্য,,,,,,

আহান : ওহ ওয়েলকাম ( থ্যাংকস না দিয়ে একটা কিস দিলেই তো পারেন :(,, উফফ আহান কি ভাবছিস পাগলের মতন,,,)

চলেন ক্যান্টিনে যায়,,,

ইকরা : আসলে মিম আসে নি তাই…

আহান : ফোন করেন!!

ইকরা কল দিলেই জানতে পারে মিম আসবে না,,ওর কি একটা সমস্যা,,,

ইকরা : আসবে না।

আহান : ওকে এবার তো চলেন,,,( বলেই হাটতে লাগে,,,সাথে ইকরাও,,,)

আহান আর ইকরা টুকটাক গল্প করছিলো,,,, তখনি কেউ একজন এসে ইকরার চোখ চেপে ধরে,,,,

আহান এটা দেখেয় রেগে যায়,,ইকরাকে কেউ টাচ করুক আহান চায় না,,,

আহান : আপ…..

ফাহাদ : ইকু বুড়ি!!!

ইকরা : (ফাহাদের হাতে হাত রেখে) ফাহাদ ভাইয়া,

ইকরা হাত সরিয়ে উটে দাড়ায়,,,তাকিয়ে দেখে ফুফাতো ভাই ফাহাদ এসেছে,,,তাই জড়িয়ে ধরে,,ইকরা ফাহাদকে নিজের ভাই হিসেবে মানে,,,

ইকরা : হুয়াট এ সারপ্রাইজ ভাইয়া,,বসো ভাইয়া,,,, তুমি না নেক্সট মানথ আসতে,,,,তাহলে….

ফাহাদ : হ্যা তো,,,কিন্তু আয়ুসির রিকুয়েস্ট এ আসতে হলো,,,নাহলে পরে আসতাম,,,,

ইকরা : আচ্ছা,,হুম আয়ুসি আপির বিয়েতেও তো যেতে হবে তাই না,,,

ফাহাদ : হ্যাঁ।

ইকরা এতোই কথায় মগ্ন ছিলো যে সামনে আহানেরর রাগের কারনে চোখ দিয়ে পানি পরছে,,,

ইকরা হঠাৎ সামনে থাকাতেই আহান কে দেখেয় ভয় পেয়ে যায়,,কারন আহানের চোখ দুটো।ভয়ংকর লাল হয়েছে,,,,

ইকরা কিছু বলবে তার আগেই আগান উঠে চলে যায়,,

ইকরার ভেতরটাও খারাপ লাগা শুরু করে,,,

ফাহাদ : ছেলেটা কে??

ইকরা : এইতো আমাদের জুনিয়র স্টুডেন্ট আরকি!

ফাহাদ : আচ্ছা চল বাসায় যায়,,

ইকরা : আসলে আমি সরি ভাইয়া,,, একটা ইমপর্টেন্ট ক্লাস আছে,,তুমি যাও,,,

ফাহাদ : ওকেই।

ইকরা ক্লাসের দিকে যেতে লাগলো,,হঠাৎ কেউ একজন ইকরার হাত ধরে জুড়ে টান মেরে একটা খালি ক্লাসে নিয়ে আসে,,,ইকরা থাকাতেই ভয় পেয়ে যায়,,,

ইকরা : তুমি??

(চলবে)

🌹মায়াময়ী আপনি🌹

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট :১০

ইকরা : তুমিই??

আহান : হ্যা কি হয়েছে??অন্য কেউ ভেবেছিলেন নাকি

ইকরা : কিসব ফাল্তু বকো?? আর আমাকে এভাবে এখানে আনার মানে কি??

আহান : আমার ইচ্ছে ( ইকরার আরো কাছে গিয়ে)

ইকরা : দেখো আমাকে যেতে দাও আমার ক্লাস আছে,,,

আহান : হুম দিবো,,,তার আগে আমাকে একটা হাগ করতে হবে, ,

ইকরা : কিইইই???

আহান : যেটা শুনেছেন সেটাই,,নাউ হাগ মি!!!

ইকরা : তোমাকে আমি ভালো ছেলে মনে করতাম আর তুমি,,,

আহান : আর আমি,,,, বলেন না আমি কি?? একটা হাগ অই তো করতে বললাম,,,তাতে দোষের কি???

ইকরা : দোষের কি মানে?? আমি তোমাকে কেনো হাগ করতে যাবো,,,??

আহান : তাহলে যে একটু আগে ছেলেটিকে জড়িয়ে ধরলেন,,,তখন তো কিছু বলেন নি। (রেগে)

ইকরা : আশ্চর্য উনি তো আমার ভাই….

আহান : আচ্ছা ভাই হলে জরিয়ে ধরতে হবে তাই না,,,( ইকরার দুবাহু জোড়ে চেপে ধরে)

ইকরা : দেখ দেখো তুমি কিন্তু…..

আর বলতে পারে নি আহান খুব জোড়ে ইকরাকে জড়িয়ে ধরে,,,ইকরা আহানের হার্ড বিট শুনতে পাচ্ছিলো স্পস্ট,,,,,এমন ভাবে জড়িয়ে ধরেছে যে ইকরার দম বন্ধ হওয়ার উপক্রম,,,, ইকরা আহানকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেয়,,,এতে আহান প্রচুর রেগে যায় ইকরাকে ধরে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে গলায় মুখ গুজে দেয়,,,,,
আহানের এমন কান্ডে ইকরা তে বরফের মত জমে যায়,,আহান চুপচাপ ইকরার গলায় নাক দিয়ে ঘষা দিচ্ছে,,,তাতে ইকরার পুরো শরীর শিহরিত হয়ে উঠে,,,,

ইকরা : কেনো করছো এমন ( চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পরে)

আহান আস্তে আস্তে গলা থেকে মুখের দিকে এগোয়,,,আর নেশাক্ত কন্ঠে বলে উঠে……

আহান : পরে বুঝবেন কেনো এমন করছি,,,,আর হ্যা ছেলেদের থেকে দূরে দূরে থাকবেন,,,কাউকে জড়িয়ে ধরলে আপনার অবস্থা আমি খুব খারাপ করে ফেলবো মনে থাকে যেনো,,,এটা আমার ওয়ার্নিং!!!!( বলেই কানের ললিতে কামড় দিয়ে আহান চলে যায়)

ইকরা আহান যাওয়ার পর জোড়ে জোড়ে শ্বাস নিতে লাগে,,,মাথায় কিছুই ডুকছে না ইকরার,,,আর ক্লাস না করেই বাড়িতে চলে যায়,,,,

পরেরদিন………

ইকরাকে ফাহাদ ড্রপ করে দেয়,,,ইকরা বারন করলেও ফাহাদ শুনেনি,,,ইকরার মনে শুধু একটায় ভয়,,,আহান যদি আবার কিছু করে,,,সে ভয়ে,,,,

হলো সেটায়,,,আহান চোখ মুখ লাল করেই ইকরার দিকে তাকিয়ে ছিলো,,,

এটা দেখেয় ইকরা দৌড়ে ক্লাসে চলে যায়,,,আহান ইকরার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো,,,,

( চলবে)

🌹মায়াময়ী আপনি🌹

লেখিকা : তারিন জান্নাত
পার্ট : ১১

ইকরা ক্লাস শেষ করে দ্রুত গতিতে বেরিয়ে পরে বাড়ি যাওয়ার উদ্দ্যশ্যে,,,আজ মিম ও আসেনি,,,
ইকরা চোখে আহানের রাগী ফেসটা ভাসছিলো,,,,
কেনো যেনো ইকরার আহানকে ভয় লাগছে,,,,

গেইট দিয়ে বের হতেই একটা ব্ল্যাক কার এসে দাড়ায় ইকরার সামনে,,,তারপর গাড়ি থেকপ আহান নেমে ইকরার দিকে আসে,,,

ইকরা তো আহানকে দেখেয়,,,অন্য দিকে হাটা ধরে,,,

আহান : ওয়েটটট!!! ইকরা ওয়েটটট( ইকরার পেছোনে এসে ইকরার হাত ধরে ফেলে)

ইকরা তো ভয়ে শেষ,,,এই ছেলেটা আজ নাজানি কি করে বসে,,,

আহান : কোথায় যাচ্ছিলেব ওইদিকে?? আপনার বাড়ির রাস্তা তো এইদিকে,,,

ইকরা : ( কিছু না বলে হাত ছারার চেস্টা করছে)

আহান : গাড়িতে উঠুন,,,,,

ইকরা : কার গাড়িতে??

আহান : আমার,,,

ইকরা : তো তোমার গাড়িতে আমি কেনো উঠতে যাবো,,,

আহান : আমি বলছি তাই,,,এখন উঠবেন নাকি আমি অন্য ওয়ে এপ্লায় করবো???

ইকরা তাকিয়ে দেখে ফাহাদ এসেছে গাড়ি থেকে নামছ,,,ইকরা এক ঝাটকায় হাত সরিয়ে,,ফাহাদের কাছে দৌড় দেয়,,,,

আহান ইকরার ঝাটকানিতে হালকা সরে যায়,,,
আর সে সুযোগে ইকরা চলে গেছে,,,আহান তাকিয়ে দেখে ইকরা কালকের ছেলেটার সাথে গাড়ি তে করে চলে যায়,,,,

এটা দেখে আহানের রাগ আরো বেড়ে যায়,,কপালের রগ ফুলে উঠে,,,কি না ভেবেই গাড়িতে বসে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে বাড়ি চলে যায়,,,,

এখন রাত হয়ে গেছে,,আহানও ডিনার ফিনিস করে ফেলে,,,ভার্সিটি থেকে এসেছে এ পর্যন্ত আহানের রাগ একটু ও কমেনি,,,বরং আরও বেড়েছে,,,,

আহান : একবার পাই আপনাকে কাছে,,,আমার কথা না মানার শাস্তি পাবেন আপনি!!!!

অন্যদিকে সবাই আয়ূসির বিয়েতে যাওয়ার জন্য রেডি,,, আয়ূসি হচ্ছে ইকরার বড় আব্বুর মেয়ে,,,ইকরার বড় আপু,,,

তাই তারা সব প্যাকিং করে নেয়,,,কাল সকালে বের হবে,,,
,
,
,
আহানেদর দাদু এসে জানায় কাল সন্ধ্যায় উনার বিজন্যানেস পার্টনারের মেয়ের বিয়ে,,,এবং কাল সন্ধ্যায় গায়ে হলুদ,,,,অনেক রিকুয়েস্ট করেছে যেতে,,,

আহান : হ্যা তোমার যাওয়ার ইচ্ছে হলে যেতে পারো আমি যাবো না,,,,

দাদু : হ্যা হ্যা যেতে হবে না তুকে,,আমি বুড়ো মানুষ একা গিয়ে মরি,,,( চলে যেতে চায়লেই আহান হাত ধরে আটকায়)

আহান : সরি দাদু,,,আসলে মাথা ঠিক ছিলো না,,,আচ্ছা যাবো।

দাদু : আচ্ছা,,,(হেসে)
,
,
,
,
,
ভার্সিটি এসেছে আহান প্রায় ১ ঘন্টা এখনো ইকরা আসে নি,,,ইকরার অপেক্ষা করতে করতে আহান তো হয়রান,,,

আহান : ( ওপপ এখনো আসছে না কেনো)

আহান ছুটি হওয়া পর্যন্ত ওয়েট করে কিন্তু ইকরা আসে নি,,মন খারাপ করে বেড়িয়ে পরে ভার্সিটি থেকে,,,

ইকরাদের বাড়ির সামনে গিয়ে দাড়ায় আহান দেখে দরজায় তালা দেওয়া সাথে সাথে আহানের মাথা ঘুরতে লাগে,,,,

আহান : ইকরা কোথায় চলে গেছেন আপনি???

অজান এসে ভিড় করে আহানের মনে,,ইকরাকে হারানোর ভয়,,,

আহান : আম সরি ইকরা!! সেদিনের বাজে ভিহেবের জন্য,,,আম সরি,,,,

আহান চেয়ারে বসে বসে এগুলা বিরবির করছে,,,তখনি একটা দারোয়ান আসে এবং তিনি জানায়,,,ইকরা ও ইকরার মা বেড়াতে গেছে,,,

তখনি আহান যেনো প্রান ফিরে পায়,,,তারপর বাড়িতে চলে যায়,,,,

সন্ধ্যায়,,,,,,,,,বিয়ে বাড়িতে

আহান একটা হলুদ সেরওয়ানি,,সাদা পায়জামা,,,ব্ল্যাক লোফার,,হাতে রিচ ওয়াচ,,,পুরাই হ্যাডসাম,,,, মেয়েরা তো দেখে ফিদা,,,,

অনেক্ষন হল আহান আর আহানের দাদু এসেছে অনুষ্টানে,,,এখনে মেয়েকে আনা হয়নি পার্লার থেকে,,,,

আকস্মিক ভাবে আহান ফাহাদকে দেখতে পায়,,,তাতে ফাহাদের প্রতি যে রাগটা আছে আহানের সেটা বেড়িয়ে যেতে চায়ছিলো,,কিছু বলতে যাবে আগেয় দেখে হলুদ শাড়ি পড়া একটা মেয়ে চাদনা তলা করে আনা হচ্ছে,,,,,আহান সেদিকে তাকিয়ে থাকে,,,

হঠাৎ আহানের চোখ যায় একটা মেয়ের উপর,,যাকে দেখে আহানের মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠেে

একদিন দেখেনি অথচ মনে হচ্ছে কত বছরের অদেখা,,হ্যা মেয়েটা আর কেউ নয় ইকরা,,,

আহান ভালোভাবে স্ক্যান করে ইকরাকে,,হলুদ লেহেঙ্গা,,,সাদা ফুলের গয়না,,ঠোঁটে গাঢ় গোলাপি লিপিস্টিক, চোখে টানা করে কাজল,,, আহানের মনে হচ্ছে কোনো হলুদ আর সাদা ফুলকে দেখছে একসাথে,,,

আহানের খুব ইচ্ছে করছিলো ইকরাকে একটু ছোয়ে দিবে তার আগেই ফাহাদ ইকরাকে নিয়ে স্টেজে যায়,,,

( চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here