#ডার্ক ডায়মন্ড
#আফরিন ইভা
#০৯
_________
অবয়বটা ছাঁদের কিনারায় দু-হাত বাড়িয়ে
আছে।
চাঁদের বুড়ির দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে হাসছে
আর বলছে দেখেছো বুড়ি মা আমার প্রিন্সেস আসতে চলেছে খুব শীঘ্রই।
ভাবছি ওকে নিয়ে তোমার ওখানে যাবো। চিন্তা করোনা এখুনি নয়, কিন্তু আর বেশি দূরে নয়
অবয়ব টার চোখে মুখে আজ রাশি রাশি হাসি, মনে অফুরন্ত আশা, প্রাণে আছে ভালোবাসা। কিছুক্ষণের মধ্যে অদৃশ্য অবয়বটা মিলিয়ে গেলো।
” মীরা অপরাধী চোখে মা-বাবার দিকে তাকিয়ে আছে। ”
মীরা সবাইকে সবকিছু খুলে বললো, মীরার সকল দায়িত্ব ওঁরা নিবে। প্রিন্সিপাল স্যার সবকিছু ঠিক করে রেখেছেন।
– মা-বাবা কে কোনো কথা বলতে না দেখে
ইরা মীরাকে জড়িয়ে ধরে বললো, বোন কি বলছিস এসব?
তুই ইংল্যান্ড কেনো যাবি, এতদূর গিয়ে আমাদের ছেড়ে কিভাবে থাকবি?
আজ পর্যন্ত একরাত্রিও কোথাও গিয়ে একা একা থাকিস নি, আর তুই আমাদের ছেড়ে কিভাবে থাকবি?
-বোনের কথায় মীরার চোখ ভিজে আসলো, মীরা ভাবতে পারছে না চোখের জল কিভাবে লুকিয়ে রাখবে।
মীরা বহুকষ্টে নিজেকে সামলে মনকে শক্ত করে বোনকে জড়িয়ে ধরে বললো, চিন্তা করিসনা আপু, তোর বোন এখন কিছুটা হলেও বড়ো হয়েছে, সবকিছু নিশ্চয়ই সামলে নিতে পারবে।
মীরা মায়ের আঁচল জড়িয়ে মাকে আদুরে স্বরে ডেকে উঠলো।
– জাহানারা বেগম মীরার দিকে এক নজর তাকিয়ে চোখ ফিরিয়ে নিলো।
– মীরা বুঝতে পেরেছে মা বড্ড বেশি কষ্ট পাচ্ছে, বুকের চাপা কষ্ট অভিমানের রূপ নিয়েছে।
মীরা মায়ের বুক জড়িয়ে ধরে হু হু করে কেঁদে ফেললো।
– জাহানারা বেগম নিজেকে আর আঁটকে রাখতে পারেনি মেয়ে কে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো, তোকে কোথাও যেতে হবে না বুঝলি?
তুই এখানেই থাকবি, আমার এই বুকেই তোকে আমি আগলে রাখবো।
– মীরা মায়ের কান্না সহ্য করতে পারছেনা, মীরার মনও চাইছে না, কিছুতেই আপনজনদের ছেড়ে দূরদেশে পাড়ি জমাতে।
ইরার দিকে এক নজর তাকিয়ে মনে মনে বললো, নিজের জন্য না হোক ইরা আপুর জন্য চলে আমাকে যেতেই হবে।
ইরা আপু আর রুদ্র ভাইয়ের মাঝখানে আমি কাটা হয়ে দাঁড়াতে চাইনা।
– স্ত্রী আর মেয়ের কান্না দেখে শফিক সাহেব ( মীরার বাবা) বলে উঠলেন জাহানারা তুমি কি এখনো পুরনো যুগে পরে আছো, আমার মেয়ে ভার্সিটির সেরা স্টুডেন্ট তাই তো চান্স পেয়েছে।
” মীরা বাবার মুখপানে তাকিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কেঁদে ফেললো।
– শফিক সাহেব মীরার মাথায় পরম যত্নে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো, জানিস মা আমারও খুব ইচ্ছে ছিলো, আমার মেয়েরা খুব বড়ো হবে, তোরা আমার মুখ উজ্জ্বল আলোতে ভরিয়ে দিবি।
– মীরা বাবার চোখে চোখ রেখে তাকিয়ে দেখলো বাবার মুখে খুশি যেনো জ্বলজ্বল করছে। বাবার খুশিতে আজ মীরাও খুশি।
– শফিক সাহেব মীরার গালে আলতো করে হাত রেখে বললো তুই ভেবেছিস বাবা হয়ে আমি তোকে যেতে দেবোনা?
তা কখনো নয়, আমি চায় মেয়েরাও বাঁচুক সুন্দর ভাবেই এ পৃথিবীতে জীবন যাপন করুক।
মেয়েরা কেনো বদ্ধ ঘরে বদ্ধ রুমে আবদ্ধ রাখবে নিজেকে?
আমার মীরাও যাবে ইংল্যান্ডে, পড়াশোনা করে দেশের সম্মান, মা -বাবার সম্মান বাড়াবে।
“জাহানারা বেগম এগিয়ে এসে মীরার হাত নিজের হাতে নিয়ে বললো, মীরা আমিও চাই তুই অনেক বড়ো হ,কিন্তু…..
কিছু বলবার আগেই শফিক সাহেব জাহানারা বেগম কে থামিয়ে নিজে কথা কেড়ে নিয়ে বললো, জাহানারা এতো চিন্তা করোনা তো, আমার মীরা ভিনদেশে গিয়েও নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবে আমাদের দেওয়া শিক্ষায়।
‘ বাবার কথা শুনে মীরার বুক টা আজ গর্বে যেনো গর্বিত।
মীরা নিজের জীবন সার্থক মনে করছে এরকম ফ্যামিলির শিক্ষায় নিজেকে গড়ে তুলেছে বলে।
মীরা আজ ভালোবেসে মা-বাবা দুজনকেই জড়িয়ে ধরলো।
-ইরা সামনে এসে বললো, আমি কি করেছি, আমাকে বাদ রাখলি কেনো?
” মীরা ইরার দিকে তাকিয়ে কান্না স্বরে হাসি ফুটিয়ে বোনকে জড়িয়ে ধরলো।
.
.
.
দু’দিন পর প্রিন্সিপাল ফোন দিয়ে বললো, মীরা সব কিছু কমপ্লিট, সামনের সপ্তাহে তোমার ফ্লাইট।
” মীরা ফোন ধরে একদম নিস্তব্ধ হয়ে রইলো।
মীরা কিছুতেই কিছু ভাবতে পারছে না, কি বলবে স্যার কে।”
” মীরার নিস্তব্ধতা বুঝতে পেরে স্যার নিজ থেকেই ফোনে বললেন, মীরা তুমি ঠিক আছো?”
– স্যারের কথায় মীরার হুঁশ ফিরলো।
নিরবতা ভেঙে নিজের মনকে শক্ত রেখে বললো, হ্যাঁ স্যার আমি একদম প্রস্তুত।
আপনি যেভাবে বলেছেন ঠিক ওভাবেই হবে।
মীরা স্যার কে সালাম দিয়ে ফোন রাখলো।
-মীরা ক্লান্ত মনে একটু বসলো।
বসে বসে স্যারের বলা কথাগুলো নিয়ে ভাবছে। মীরার গরম লাগছে ভীষণ গরম ঘেমে একদম একাকার।
– হঠাৎ কারো কথা মীরার কানে গিয়ে বাজতে লাগলো।
” মীরা ঘাড় ঘুরিয়ে তাকিয়ে দেখলো, রুদ্র ভাই এসেছে।
রুদ্র ভাইয়ের চুলগুলো কেমন উসকোখুসকো লাগছে, মুখের চামড়া একদম ফ্যাকাসে হয়ে কালচে হয়ে আছে।”
“রুদ্র ভাইকে দেখে মীরার বুকের চিনচিনে ব্যথা টা বড্ড বেশি কষ্ট দিতে লাগলো।
রুদ্র ভাইয়ের এমন অবস্থা দেখে মীরার বুক টা ছিঁড়ে যাচ্ছে। মীরা রুদ্র ভাই বলে যে-ই ডেকে উঠলো ”
” রুদ্র ভাই থামিয়ে দিয়ে মীরা কে বললো, তুই ভেবেছিস আমি এসেছি তোকে অভিনন্দন জানাতে?”
– মীরা মনে মনে খুব হাসলো আর বললো, রুদ্র ভাই আমি কেনো তা মনে করতে যাবো।
আপনি কেনই বা আমাকে অভিনন্দন করতে আসবেন।
আমি চলে গেলে যে আপনিই বেশি প্রবলেমে পড়বেন সেটা আমি খুব ভালো করেই জানি।
আমি চলে গেলে অপমান টা যে আর কাউকেই করতে পারবেন না।
– রুদ্র কপালের শিরা দাঁড় করিয়ে চোখ লাল করে মীরাকে বললো, তা তুই না-কি বিদেশ চলে যাচ্ছিস?
” মীরা রুদ্রের দিকে না তাকিয়ে জবাব দিলো হ্যাঁ।”
– রুদ্র আবার বলতে লাগলো তা কেনো যাচ্ছিস তোর রূপ যৌবন দেখিয়ে লোক বুলাতে, না-কি দেশের জনসংখ্যা বাড়াতে।
– রুদ্রের বলা কথাগুলো শুনে মীরার কান লাল হয়ে গেলো।
মীরা চায় না যাওয়ার আগে রুদ্রকে কষ্ট দিয়ে কথা বলতে।
তাই নিজেকে সংযত রেখেই বললো রুদ্র ভাই আমি চাই বাকি পড়াশোনা টা ওখানে গিয়েই শেষ করতে।
– রুদ্র মীরার কাছে খুব কাছাকাছি এসে দাঁড়ালো।
” রুদ্র কে এতটা কাছাকাছি আসতে দেখে মীরার দম বন্ধ হয়ে আসছে। মীরা দু কদম
পিছিয়ে চোখ বন্ধ করে দাঁড়ালো।”
– রুদ্র ভাই অট্টহাসি তে ফেটে পরলেন।
মীরা তুই কি রাতে ঘুমাস না বলতো, এভাবে ঘোড়ার মতো দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘুমাচ্ছিস নাকি?
তুই সারাজীবন বোকা রয়ে গেলি।
– মীরা চোখ খুলে রুদ্র ভাইয়ের দিকে তাকালো, মনে মনে মীরাও নিজেকে নিয়ে বিদ্রুপ হাসি হাসছে , রুদ্র ভাই আপনি সত্যিই বলেছেন আমি আসলেই বোকা। বোকা না হলে কি আমি আর আপনাকে ভালো বাসতাম। বোকা না হলে কি আর সারাজীবন আপনার দেওয়া কষ্টগুলো মাথা পেতে নিতাম।
রুদ্র ভাই সত্যি আমি বোকা, শুধু বোকা নয় মহা বোকা।
মীরা রুদ্র ভাইয়ের যাওয়ার পানে তাকিয়ে রইলো। বুক ফেটে আর্তনাদ আসছে, মন আজ উথাল পাথাল করছে, ঝড় বয়ে যাচ্ছে, মন আজ কঠিন ব্যাথায় জর্জরিত।
রুদ্র ভাই কে না বলা কথাগুলো আজ যেনো বড্ড বেশি পোড়াচ্ছে মীরা কে।
“গভীর রাত নেমে এসেছে, চারদিকে কালো ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে গেছে।
মীরার চোখে আজ কোনো ঘুম নেই, অশান্ত মন আজ বড্ড বেশি উদাসীন।
মীরার কষ্ট হচ্ছে ভাবতে দু’দিন পর মীরা কে সব ছেড়ে আপনজনদের ছেড়ে চলে যেতে হবে অচেনা অজানা দেশ ইংল্যান্ডে।
বারান্দার প্রিয় চেয়ারটায় কিছুক্ষণ হাত বুলিয়ে বসলো, মীরা ভাবছে আজ এই ঘুটঘুটে অন্ধকারের মতো মীরার মনটাও বড্ড বেশি অন্ধকার।
কোথাও একটুও সুখের পরশ পর্যন্ত নেই।
রুদ্র ভাই কে সেই ছোট থেকেই প্রিয় মানুষের আসনে বসিয়েছে মীরা কিন্তু সেই রুদ্র ভাইও আজ তাঁর নয় ।
সব ভাবনা চিন্তা গুলো মীরার মাথায় আজ গিজগিজ করছে।
মাথাটা বড্ড বেশি ধরে এসেছে।
মীরা আর পারছে না ভাবতে।
শুয়ে পরলো খাটে গিয়ে, হালকা ঠান্ডা লাগছে, শীত শীত লাগছে তা-ই গায়ের উপর কাঁথাটা টেনে নিলো।
” এভাবে দু’দিন কেটে গেলো মীরার। দেখতে দেখতে সময় চলে এলো। রাত ১২ টায় মীরার ফ্লাইট। মীরা আজ দু-চোখ দিয়ে কারো দিকে তাকাতে পর্যন্ত পারছেনা বার-বার চোখ ভিজে আসছে।
বুক ফেটে শুধু কান্না আসছে। সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে কিভাবে পাড়ি দিবে দূর দেশে তাই বড্ড ভাবাচ্ছে।
দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা নেমে আসলো।
মীরা ভাবলো রুদ্র ভাইয়ের আম্মার কাছ থেকে বিদায় নিতে হবে এখুনি।
মীরা তাই রুদ্র ভাইয়ের ফ্ল্যাটে গেলো।
রুদ্র ভাইয়ের আম্মা মীরাকে কে দেখে জড়িয়ে ধরলো।
মীরা প্রায় কেঁদে দিলো।
আন্টি মীরার গালে হাত রেখে আদুরে স্বরে বললো, ” বোকা মেয়ে কাঁদিস কেন আমরা সবাই জানি মীরা অনেক সাহসী, এমন কিছু নেই যে যা মীরা পারবে না। ”
হয়তো তোর একটু কষ্ট হবে কিন্তু দেখিস ঠিক মানিয়ে নিতে পারবি।
” আন্টির দিকে তাকিয়ে মীরার বড্ড বেশি কষ্ট হচ্ছে।
এক বুক আশা নিয়ে ছোটবেলা থেকেই মীরা স্বপ্ন দেখতো এই আন্টিকে মীরা মা বলে ডাকবে বলে।
কিন্তু তা আর হলো না মীরার।
স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে গেলো কখনো পূরণ হলো না আর।
মীরা বেশ কিছুক্ষণ আন্টির দিকে তাকিয়ে মা বলে ডাকলো।
যা আন্টি শুনলো না কিন্তু মীরার হৃদয়ে আলাদা এক স্পর্শ এসে দোলা দিলো।
মীরা অজান্তেই আন্টি কে জড়িয়ে ধরলো।
– হঠাৎ মীরার চোখ এক কোণে গিয়ে আঁটকে গেলো।মীরা দেখলো রুদ্র ভাই দাঁড়িয়ে আছে।
রুদ্র ভাই কে দেখে মীরা এগিয়ে গেলো।
মীরা যাওয়ার আগে একটা শেষ ইচ্ছে পূরণ করতে চায়।
মীরা তাকিয়ে দেখলো রুদ্র ভাই তাঁর প্যান্টের পকেটে হাত রেখে দাঁড়িয়ে আছে।
মীরা রুদ্র ভাইয়ের কাছে গিয়ে রুদ্র ভাই বলে ডেকে উঠলো।
রুদ্র গম্ভীরমুখে তাকিয়ে আছে মুখে কিছু বললো না।
– মীরা রুদ্রের দিকে তাকিয়ে বললো, রুদ্র ভাই আপনি কি আজ আমাকে এয়ারপোর্টে এগিয়ে দিয়ে আসবেন?
” রুদ্র সব নীরবতা ভেঙে বললো, কেনো তোর কি মনে হয় আমার খেয়ে দেয়ে আর কোনো কাজ নেই যে, ধেইধেই করে যাবো তোকে এগিয়ে দিয়ে আসতে, আসবার সময় তোকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে কাঁদতে পুরো পৃথিবী ডুবিয়ে দেবো কান্নার সাগরে ।”
– রুদ্র ভাইয়ের কথা শুনে মীরার চোখ ভিজে উঠলো। কষ্টে বুক টা ফেটে যাচ্ছে।
মীরা খুব করেই জানতো রুদ্র ভাই মীরা কে সহ্য করতে পারে না কিন্তু শেষ আশা টাও যে এভাবে অপূর্ণ থেকে যাবে কখনো কল্পনাটুকু পর্যন্ত করেনি।
মীরা ভেজা চোখ নিয়ে নিজের ফ্ল্যাটে চলে আসলো।
মীরা নিজের রুমে গিয়ে জামাকাপড় গোছাচ্ছে আর এক হাত দিয়ে একটু পর পর চোখের জল মুছছে।
জাহানারা বেগম মীরার রুমে এসে মীরাকে
জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো।
-মীরা মনে মনে নিজেকে শক্ত রেখে বললো, মা কেঁদো না আমি তো আর সারাজীবনের জন্য চলে যাচ্ছি না, কয়েক বছর বলেই তো কথা।
” জাহানারা বেগম মীরার কপালে আলতো করে চুমু খেয়ে বললো মা’কে সবসময় ফোন দিবি তো, কখনো ভুলে যাবি না তো?
” মীরা মাকে জড়িয়ে ধরে বললো কি যে বলো মা, সন্তান কি কখনো মা’কে ভুলে যেতে পারে?
” মীরা মায়ের হাতে কিছু একটা দেখে চমকে উঠলো।
মায়ের হাতে খুব সুন্দর একটা শাড়ি, যেটা মীরার বাবা গত বিবাহবার্ষিকী গিফট করেছিলো।
মীরা মা’কে বললো, মা তোমার হাতে বাবার দেওয়া শাড়িটা কেনো?
– জাহানারা বেগম চোখের জল শাড়িটার আঁচল দিয়ে মুছে নিলো।
মীরার হাতে শাড়িটা দিয়ে বললো এই শাড়িতে তোর জন্য চোখের জল মিশিয়ে দিলাম, কখনো তুই আমাকে ভুলে গেলেও এই শাড়িটা তোকে মনে করিয়ে দেবে এই মা’কে।
” মায়ের কথা শুনে মীরা আর নিজেকে আঁটকে রাখতে পারেনি হু হু করে কেঁদে উঠলো।
মা আমি সত্যি যাবো না তুমি এতটা অবুঝ হলে। তুমি কেনো ভাবছো আমি তোমাকে ভুলে যাবো। আমি বড্ড ভালোবাসি আমার মা’কে বাবাকে।
– জাহানারা বেগম নিজের মনকে শক্ত করে বললো ঠিক আছে এই নিয়ে আমি আর কিছুই বলবো না । তুই গোছগাছ করে রেডি হয়ে নিচে নাম তোর বাবা অপেক্ষা করছে বলে উনি চলে গেলেন।
– মীরা ঘড়িতে তাকিয়ে দেখলো হাতে খুব একটা সময় নেই, তারাতাড়ি এয়ারপোর্ট পৌঁছাতে হবে।
মীরা ব্যাগ নিয়ে নিচে নামলো।
ইরা মীরা কে জড়িয়ে ধরে বেশ কিছুক্ষণ কাঁদলো।
-মীরা সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে গাড়ির সামনে গিয়ে পেছন ফিরে এক নজর তাকালো।
তাকিয়ে দেখলো মা ও ইরা ফুপিয়ে ফুপিয়ে
কাঁদছে। বাবা মীরার আগে গিয়ে গাড়িতে বসে আছে।
হয়তো বাবা গুলো খুব একটা চোখের জল দেখায় না কিন্তু ভেতরে ভেতরে ঠিকই কাঁদে।
মীরা রুদ্রের ফ্ল্যাটের দিকে এক নজর তাকালো, অজান্তেই দু’ফোটা চোখের জল গড়িয়ে পরলো। মীরা লুকিয়ে তা মুছে ফেললো।
– মীরার চোখের জল দেখে কেউ একজন দূরে দাঁড়িয়ে নিজের চোখের জল মুছে ফেললো।
মীরা এটাই তোমার শেষ কান্না, আমি তো আছি তোমার হৃদয়মাঝে।
খুব শীঘ্রই দেখা হচ্ছে আমাদের।
প্রিন্সেস
” ডু ইউ নো ইউ আর মা’ই ডার্ক ডায়মন্ড। ”
চলবে,—–