#পথে_হলো_দেরি
#নুশরাত_জেরিন
#পর্বঃ৮
,
,
সকাল সকাল বাড়িতে হৈ-হুল্লোড় শুরু হয়েছে।
শৌখিন আর তার বন্ধু বান্ধব বসে আড্ডা দিচ্ছে ড্রয়িং রুমে।
অনেকদিন তারা জমিয়ে আড্ডা দিতে পারছেনা।শৌখিনও সময় করে উঠতে পারছেনা।
শাম্মির বিয়ের আয়োজন করতে সে একা একা প্রায় হিমসিম খাচ্ছে। সারাদিন রাত এদিকওদিক দৌড়ে বেড়াতে হচ্ছে তাকে।
এরমাঝে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার সময় করে উঠতে পারেনি।
তাই সব বন্ধু বান্ধব শৌখিনের বাড়িতেই এসে হাজির হয়েছে আজ।
সবাই হাসাহাসি মাতামাতি করছে।
এরমাঝে একফাকে চা বানিয়ে রহিমা খালার হাতে করে পাঠিয়েছিলো ইরা।
এখন সে হালকা নাস্তা বানাচ্ছে।
রেহেনা বেগম দিনকে দিন বেশি অসুস্থ হচ্ছেন।
তাকে খাইয়ে ঘরে শুইয়ে রেখে এসেছে ইরা।
এখন কিচেনে রান্না সারছে।
রহিমা খালা দাড়িয়ে দাড়িয়ে ইরার কর্মকালাপ দেখছে।
এতটুকুন মেয়েটা একহাতে সব কাজ কেমন সামলে নিতে পারে।কতোটা যত্নের সাথে আপনমানুষ গুলোর সেবা করতে পারে।
তাকে কিনা হেলায় পায়ে ঠেললো শৌখিন?রহিমা খালার আফসোস হয়।শৌখিনের জন্য আফসোস হয়।মনে হয় তার এই মনোভাব একদিন শৌখিনেরও হবে।
ইরা ততক্ষণে ট্রে তে খাবার সাজায়।
রহিমা খালাকে বলে ড্রয়িং রুমে এগুলো দিয়ে আসতে।
রহিমা খালার হাতে আটেনা।
আরও একটা সাহায্যের হাত প্রয়োজন তার।
এতো খাবার সে একা নিতে পারবেনা।
ইরা ব্যাপারটা বোঝে।
সে নিচে রাখা আরেকটা ট্রে তুলে নেয়।
বলে,
—চলো,আমিও যাচ্ছি।
দুজনে ড্রয়িংরুমে পৌছে সাবধানে সামনের টেবিলে খাবার নামায়।
শৌখিন সেদিকে আড়চোখে তাকিয়ে আবার মুখ ফেরায়।
কালকে তার নিজের মনোভাবের জন্য সে নিজের উপরই রেগে আছে।
তাই সে ইরার কাছ থেকে দুরে দুরে থাকার চেষ্টা করছে।
সবার হাতে হাতে শরবতের গ্লাস তুলে দেওয়ার সময় পাশে বসা একটা ছেলে ইরার হাত চেপে ধরে।
ইরার চোখ বড়বড় হয়।
ছেলেটার নাম নয়ন।শৌখিনের বন্ধু সে।
তার চোখে তখন লোভাতুর দৃষ্টি।
ইরা শুকনো ঢোক গেলে।
হাত ঝটকা দিয়ে ছাড়ায়।
অন্য কাউকে আর সার্ভ না করেই দৌড়ে কিচেনে ঢোকে।
কিচেনের ফ্লোরে ঠাস করে বসে পরে।
চোখ ঠিকরে অশ্রুকনা বের হয়।ভাবে এসব জানোয়ারদের হিংস্র চোখ থেকে মুক্তি পাওয়া কি কখনো হবেনা তার?
চোখমুখ ঠিক করে আবার রান্নার কাজে হাত লাগায়।
এসব নিয়ে ভাবলে তার জিবন চলবেনা।
তাছাড়া ছেলেটা শৌখিনের বন্ধু।
ইরা প্রতিবাদও করতে পারবেনা।আর করলেও বা কি?শৌখিন কি তার পক্ষে থাকবে?সে তো ঠিকই বন্ধুর পক্ষ নেবে।
রান্না বান্না শেষ করে সব কাজ গুছিয়ে ইরা ড্রয়িংরুমের পাশ কাটিয়ে নিজের রুমে ঢোকে।
কিচেনে এতক্ষণ কাজ করার ফলে শরীর ঘেমে গেছে তার।
সে তাড়াতাড়ি জামা নিয়ে ওয়াশরুমে ঢোকে।
বেশকিছুক্ষন ধরে লম্বা শাওয়ার নেয়।
চুলে তোয়ালে পেঁচাতে পেঁচাতে বাইরে বের হয়।
তবে কারও শক্ত হাত সাথে সাথেই কোমড় পেচিয়ে ধরে।
দেয়ালে ঠেসে রাখে তাকে।
ইরা সেদিকে তাকিয়ে চিৎকার করতে চায়।কিন্তু পারেনা।
আরেকটা হাত তার মুখ চেপে ধরে।
ইরা গুঙরে ওঠে।
চোখ বেয়ে অঝোর ধারায় জল নামে।
হাত পা ছুটাছুটি করে।
সামনের মানুষটার বিশ্রী হাসি দেখে শরীর ঘিনঘিন করে ওঠে।মনে ভয় ঢোকে।
কোনমতে মাথা দিয়ে গুতো দেয় সামনের মানুষটাকে।
হাতের বাধন একটু আলগা হতেই সজোরে ধাক্কা মারে।
নয়ন ধাক্কার তোড়ে কিছুটা পিছু হটে তবে পরেনা।নিজেকে সামলে নিয়ে ইরার হাত পিছু থেকে মুচড়ে ধরে সে।
কানের কাছে মুখ নিয়ে দাঁতে দাঁত চেপে বলে,
—কি ভেবেছো সুন্দরী, আমার হাত থেকে পালাবে?
এতোই সোজা?আমার চোখ একবার যার উপর পরে তাকে তো আমার হতেই হয়।
দরজার সামনে থেকে শৌখিনের ভারী কন্ঠ ভেসে আসে।
—তাই নাকি নয়ন?
নয়ন হতভম্ব হয়।সে ভাবেনি এমন মুহূর্তে কেউ এখানে আসতে পারে।
সে তো ওয়াসরুমে যাওয়ার কথা বলে এখানে এসেছিলো।
শৌখিনের চোখের দিকে তাকিয়ে তার গলা শুকিয়ে আসে।
কেমন লাল রক্ত বর্ণ ধারন করেছে চোখদুটো।
সে তাড়াতাড়ি ইরার হাত ছেড়ে দেয়।
ইরা একদৌড়ে শৌখিনের পাশে এসে দাড়ায়।
একহাত খামচে দাড়িয়ে থাকে।
ফুঁপিয়ে ফুপিয়ে কাদে।
একেএকে বাড়ির সবাই সেখানে উপস্থিত হয়।
রিফাত রেগে কয়েকটা কিল ঘুসি মারে নয়নকে।
তবে আর মারতে পারেনা।
অন্যসব বন্ধুরা টেনে থামায়।তারাও ঘৃন্য নজরে নয়নের দিকে তাকায়।তাদের বন্ধু নয়ন,সে কিনা এতোটা নিচে নামতে পারে তারা ভাবতেও পারেনি।
ইরা রেহেনা বেগমের বুকে মাথা রাখে।
কৃতজ্ঞতা দৃষ্টিতে রিফাতের দিকে তাকায়।
নয়নকে মারার জন্য সে রিফাতের উপর কৃতজ্ঞ।
তবে আরেকটু বেশি মারলে হয়তো বেশি খুশি হতো।
ইরার ভয়ার্ত মুখের দিকে তাকিয়ে রিফাত চোখ দিয়ে আশ্বস্ত করে।
ইরা ও প্রতুত্তর করে।
শৌখিনের দিকে আড়চোখে একবার তাকায়।
শৌখিন এখনো আগের জায়গায় কাঠের মতো দাড়িয়ে আছে।
ইরা আশাহত হয়।সে রিফাতের জায়গা শৌখিনকে তার জন্য প্রতিবাদ করবে ভেবেছিলো।
💮💮💮
ইরা গুটিসুটি দিয়ে বসে আছে খাটে।
তার মন ভালোনা আজ।
নয়নের হাত থেকে বাঁচার পরেও তার মনের ভয় কাটছেনা।
কেমন অদ্ভুত লাগছে।
রেহেনা বেগম ইরার মনের অবস্থা বুঝতে পারেন।
তিনি শাম্মিকে ডেকে বলেন,
—ইরাকে একটু স্বাভাবিক করার চেষ্টা করনা শাম্মি।
—কিভাবে করবো?ও তো কারো সাথে কথাও বলছেনা।
কেমন চুপচাপ বসে আছে।হয়তো ভয় পেয়েছে।
রেহেনা বেগম চিন্তিত ভঙ্গিতে মাথা নাড়েন।
বলেন,
—মেয়েটার উপর যা গেলো আজ ভয় তো পাবেই।
তবুও একটু চেষ্টা করে দেখ।
বাইরে ঘুরতে নিয়ে যা।
শাম্মি একটু ভেবে বলে,
—আইসক্রিম খাওয়ার কথা বলে যাই?
—আচ্ছা যা।
💮💮💮💮
রাস্তায় গাড়ির পরিমান প্রচন্ড বেশি।
একের পর এক সাই করে ছুটে চলছে গাড়গুলো।
মানুষজনের পরিমানও বেশি।
এতো মানুষ আজ রাস্তায় কেনো ইরা কিছুতেই ভেবে পাচ্ছেনা।
আজ কি বিচেষ কোনদিন?নাকি ইরারই ভ্রম?
সাতপাঁচ না ভেবে ইরা আইসক্রিম খাওয়ায় মন দিলো।
সে শাম্মির সাথে আইসক্রিম খেতে এসেছে।
প্রথমে যদিও আসতে আপত্তি জানিয়েছিলো কিন্তু শাম্মিই জোর করলো।
তাছাড়া কিছুদিন পর তো ওর বিয়ে হয়ে যাবে তখন কি চাইলেই এমন হুটহাট বেরোতে পারবে ওকে নিয়ে?সেসব কথা ভেবেই ইরা এসেছে।
খাওয়ার একফাকে ইরার চোখ গেলো রাস্তার ওপারে একটা ছেলের দিকে।
ছেলেটার পা থেকে মাথা পর্যন্ত ব্যান্ডেজে মোড়া।
হাটছেও খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
হাত ভাঙা।
রাস্তার ওপাড়ে একটা হাসপাতাল আছে।
সেখান থেকেই বেরোচ্ছে ছেলেটা।
ইরা চোখ তীক্ষ্ণ করলো।
ছেলেটা পেছন ঘুরে ছিলো।এদিকে ঘুরতেই ইরা আঁতকে উঠলো।
ছেলেটা নয়ন।
কিন্তু তার এই অবস্থা কেনো?কে করেছে এমন?,রিফাত?সে তো কয়েকটা মাত্র কিল ঘুসি মেরেছিলো,তাতে কি কারো এমন অবস্থা হয়?
ইরা নিজেকে বোঝালো,যে বদের হাড্ডি ছেলেটা,নিশ্চয় অন্যকোন মেয়ের সাথে বেয়াদবি করতে গিয়ে পিটানি খেয়েছে।
মনে মনে বেশ খুশি হলো ইরা।
ভেতরে প্রশান্তির হাওয়া বইতে লাগলো।
যদিও কারো দুঃখে খুশি হতে হয়না, কিন্তু ইরা এই ছেলেটার দুঃখে নিজেও দুঃখ প্রকাশ করতে পারবেনা।
ওতোটা ভাল সে হতে পারবেনা।
শাম্মি অবাক হয়ে তাকালো ইরার দিকে।
যে মেয়ে এতক্ষণ যাবত মুখ গোমড়া করে বসে ছিলো সে হঠাৎ এতো উচ্ছল হয়ে গেলো কেমন করে?সে খাওয়া বাদ দিয়ে হা করে ইরার দিকে তাকিয়ে থাকলো।
ইরা সেদিকে পাত্তা দিলোনা।সে তার খুশি সেলিব্রেট করবে।
সে খুশিতে লাফাতে লাফাতে সে কামড়ে তার আইসক্রিম শেষ করলো।
আইসক্রিম বিক্রেতাকে বললো,
—আমায় আরো একটা আইসক্রিম দিন প্লিজ।
,
,
,💮💮💮
,
,
রাতে রেহেনা বেগমকে দেখে নিজের রুমে আসে ইরা।
তবে দরজা খুলে রুমে ঢোকেনা আবার বাইরে বেরিয়ে আসে।
রুমের সামনের করিডোর দিয়ে উদ্দেশ্যহীন ভাবে হাটে।
ঘরে শাম্মি তার হবু বরের সাথে ফোনে কথা বলছে।
ইরা গেলে হয়তো তাদের কথা বলায় সমস্যা হবে একথা ভেবেই একটু পরে রুমে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সে।
অন্ধকারে বারান্দাটা কেমন ভুতুড়ে লাগে।
ইরার কিছুটা গা ছমছমে লাগে।
নয়নের ব্যাপারটা মাথায় ঘুরপাক খায়।
তার ছোয়ার কথা ভাবলে গা গুলিয়ে ওঠে।
ইরা সাবধানে পা ফেলে হাটে।
শৌখিনের রুমের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় শব্দ শুনতে পায়।ইরা আমলে নেয়না।
তবে হঠাৎ তার নাম বলতে শুনায় থমকে দাড়ায়।
শৌখিনের মৃদুস্বরে গলা ভেসে আসে।
শৌখিন বলে,
—ইরা এ বাড়িতে থাকলে সমস্যা কোথায় বলোতো?ওর বিয়ে নিয়ে কেনো পরেছো তুমি?
—আরে আমি কি সেকথা বলেছি নাকি?
—তুমি রাগ কেনো করছো?আমি জানিনা কি হয়েছে আমার।
শৌখিনের কথা বলার ভাবে ইরা বোঝে সে ফোনে কথা বলছে।কিন্তু এতো রাতে কার সাথে কথা বলছে শৌখিন?তাও আবার ইরার বিয়ের ব্যাপারে?
কথাটা ঠিকমতো বুঝতেই ইরা আঁতকে ওঠে।
শৌখিন তার বিয়ের কথা ভাবছে? অন্যকারো সাথে?ইরার বুক ভেঙে আসে।
ভেতরের কান্নাগুলো দলা পেকে বুক ভার করে ফেলে।
এতোদিন শৌখিনকে নিয়ে যে ক্ষীন আশা তার মনে লুকিয়ে ছিলো আজ কিনা সেটাও থাকলো না?তার জন্য শৌখিনের মনে সামান্য অনুভূতি অবশিষ্ট থাকলেও শৌখিন কখনো এরকম কথা ভাবতো না।
ইরার শরীর এলিয়ে পরতে চাইলো।মাথাটা ঘুরে উঠতেই সে পেছনে হাত দিয়ে দেয়াল আকড়ে ধরলো।
হাতে লেগে পাশে রাখা ফুলদানি ছিটকে পড়লো।
শৌখিন চেঁচিয়ে উঠলো,
—কে?কে ওখানে?
ইরা যথাসম্ভব চেষ্টা করলো নিজেকে সামাল দেওয়ার।হাত দিয়ে চোখমুখ ঠিক করে বড়বড় নিশ্বাস ছাড়লো।
বললো,
—আমি।
শৌখিন ততক্ষণে দরজা খুলে বাইরে বেরিয়েছে।
ইরাকে অন্ধকারে এভাবে দাড়িয়ে থাকতে দেখে ভ্রু কুঁচকে এলো তার।
বললো,
—এতো রাতে এখানে কি?
ইরা শাম্মির কথাটা সন্তপর্ণে এড়িয়ে গেলো।বোন তার হবু বরের সাথে কথা বলছে আর তাই ইরা ঘরে না গিয়ে বাইরে ঘুরছে একথা শৌখিনকে বলা যায়না।
সে বললো,
—ঘুম আসছিলো না,তাই একটু হাটছিলাম।
শৌখিন প্রতুত্তরে কিছু বললোনা।কিছুক্ষণ উশখুশ করলো।কেমন যেনো অস্থির দেখাচ্ছে তাকে।
ইরা চোখ ছোট করে বোঝার চেষ্টা করলো,শোখিনের হয়েছেটা কি?
না বুঝতে পেরে মনে উকি দেওয়া প্রশ্নটা করেই বসলো।বললো,
—আপনি ঠিক আছেন?
শৌখিন যেনো এমন কথা শোনার জন্যই অপেক্ষা করছিলো।সে তৎক্ষনাৎ এগিয়ে এসে ইরার সামনে দাড়ালো।
বললো,
—নাহ,একদম ঠিক নেই আমি। একদম না।
বলতো এমন কেনো হচ্ছে রে?
ইরা ভ্যাবচেকা খেলো।চোখ বড় করে হাবার মতো তাকালো সে শৌখিনের দিকে।
শৌখিনের উসকোখুসকো এলোমেলো চুল,লাল ক্লান্ত চোখ দেখে তার ভেতরটা ধক করে উঠলো।
সত্যিই মনে হলো শৌখিন ঠিক নেই।নয়তো গোছালো মানুষটার এমন অগোছালো রুপ কেনো?
সে শান্ত গলায় বললো,
—কি হয়েছে আপনার?
—জানিনা।
—মানে?
শৌখিন অস্থিরভাবে পায়চারি করলো।অশান্ত গলায় বললো,
—জানিনা আমার কি হয়েছে,আমি সত্যি জানিনা।
শুধু জানি আমি ঠিক নেই।কিছু তো একটা ঠিক নেই।
কোন অনুভূতি উল্টো কাজ করছে আমার সাথে।আমার বাধ্য মতো চলছে না সে।মন আর মস্তিস্ক দুজন দুজনার বিরোধিতা করছে।
যার কথা ভাবা উচিৎ না তার কথাই ভাবছে।তার জন্য ছটফট করছে।
তাকে কেউ আঘাত করলে ভেতরটা জ্বলেপুরে নিঃশেষ হচ্ছে।
তুই বুঝছিস তো আমার কথা?
ইরা চোখ পিটপিট করে।হাবার মতো ফিচলে হাসে।
সে আসলে কিচ্ছু বোঝেনি।তার মাথার উপর দিয়ে সুড়ুৎ করে কথাগুলে বেরিয়ে গেছে।
তবে এতটুকু বুঝেছে শৌখিন কোন বিষয় নিয়ে আপসেট আছে।
সে শৌখিনকে বলে,
—বুঝলাম আপনার কথা।এখন সবকিছুর সমাধান কি করে হবে জানেন?
—কি করলে?
–ঘুমালে।
ঠান্ডা মাথায় একটা লম্বা ঘুম দিন।দেখবেন সব ঠিক হবে।
শৌখিন বিরক্ত হয়।ঘুমালে কারো সমস্যার সমাধান হয় নাকি?তাছাড়া অশান্ত মনে ঘুম আসে?এই যে শৌখিন এতো এতো অশান্তিতে আছে সেকথা কাউকে বলতেও পারছেনা।
এসব কথা কি কাউকে বলা যায়?মিতালিকেও বলতে পারছেনা।
কি বলবে সে মিতালিকে?যে তোমার সাথে আমার কথা বলতে ইচ্ছে করেনা?তোমাকে নিয়ে ভাবতেও মন চায়না।
মন শুধু ঘুরেফিরে ইরাকে নিয়ে ভাবে?
একথা কি বলা যায়?
শৌখিন যথাসম্ভব নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করে।
বারবার নিজেকে বোঝায়,সে মিতালীকে ঠকাতে পারেনা।সে ভালবাসে তাকে।
ভালবাসা কখনো সময়ের সাথে সাথে ফিকে হয়না।সময়ের সাথে ফিকে তো হয় ভালোলাগা।
তবে কি শৌখিনের ভালবাসা নয়,ভাললাগা ছিলো মিতালী?
,
,
,
চলবে……..