#তুই_হৃদহরণী – ২৮
আহরারের কথায় গা ঘিনঘিন করছে তুরফার। সব কিছু তার মাথার উপর নিচ দিয়ে যাচ্ছে। কি করবে বুঝতে পারছে না। কোনো পথই তার কাছে নেই। হয় নিজেকে সপে দিতে হবে নয়তো নিজের প্রাণের বান্ধবীর সংসার ভাঙ্গতে হবে। যেটা সে কিছুতেই পারবে না। ভেতরে হাহাকার লাগছে। টলমল চোখ নিয়ে আহরারের দিকে তাকায়। ভাবতে থাকে। কেন এমন করছে এই লোক টা? কি চায় তার কাছে? এত টা নিচ কি করে হলো তিনি?
“বেশি সময় নেই আমার কাছে ১ মিনিট দিলাম যা বলার বলো।”
“….
আহরার ঘড়িতে সময় দেখা শুরু করল। এক মিনিট হওয়ার পর
“তুমি তো দেখি এখনো চুপ। নীরবতা কেই তোমার সম্মতি ধরে নিচ্ছি। আর তুমি অমত কলেও এমন টা হওয়ারই ছিল তোমার সাথে।”
রাগে তুরফার শরীর ফেটে যাচ্ছে। খুব রাগ উঠছে লোকটার উপর। চোখে পানি টলমল করছে। টুপ করে পরার আগে আহরার আঙ্গুল দিয়ে সেটা সরিয়ে নিল। গাম্ভীর্য গলায় বলল,
“আর কিছু সহ্য করতে পারব কি না জানি না তবে তুরের চোখের পানি কিছুতেই সহ্য করতে পারব না।”
হেচকা টানে নিয়ে গেল তুরফা কে। সিঁড়ি দিয়ে নামছে আর এত এত লোক তাদের কে হাত তালি দিয়ে অভ্যর্থনা দিচ্ছে। আহরার সাজানো স্টেজে গিয়ে দাঁড়াল। কোমল চাউনি দিল তুরফার দিকে। তুরফা যেন কোনোটার সাথে কোনোটার মিল খুঁজে পাচ্ছে না। হচ্ছে টা কি তার সাথে? ভেতর কেমন ধড়ফড় করছে। আহরার নিজের পকেট থেকে একটা রিং বের করে নিল। হাটু গেড়ে সেটা সবার সামনে তুরফা কে পরিয়ে নিল। চারিদিকে আলোর ঝিলমিল খেলা আর লোকের কলরব শুনা যাচ্ছে। উঠে গিয়ে তুরফার কানের খুব কাছে মুখ নিয়ে বলল,
“নিজের আমানত নিজের করে নিলাম হৃদহরণী।”
তুরফা চমকে উঠল। যেন এক ঝাটকা খেয়েছে। শরীর অসাড় লাগছে। সেই দিনের কথা মনে হলো। আহরার তাকে বলেছিল সে আহরারের আমানত। আর আজ…. কিছু বুঝতে পারছে না তুরফা। সব কিছু তার কাছে ধোঁয়াশা।
ফিরাত মোনতাহ্ হতভম্ব। কিছু বুঝতে পারল না। একে অপরের দিকে বোকার মতো তাকিয়ে রইল। দুজনের মুখ হা হয়ে আছে।
আহরার আর তুরফা কে অনেকে গিয়ে অভিনন্দন জানাচ্ছে। একটু পরেই বিয়ে হয়ে যাবে। মিডিয়া কে এখনি সামনে আসার সুযোগ দিচ্ছে না গার্ডরা।
মোনতাহ্ আর ফিরাত তাড়াতাড়ি করে ওদের কাছে গেল। অবাক হয়ে মোনতাহ্ তুরফার দুই হাত আঁকড়ে ধরল আনন্দের সাথে। ফিরাত তো হা করেই আছে আহরারের দিকে চেয়ে।
“হাওয়া খেয়ে তো উড়ে যাবি ইয়ার।”
“….
“আরে এই ফিরাত।”
“হ্যাঁ?”
আহরার হাসল।
“আহরার।”
“বল।”
“কি হচ্ছে এসব? আমি তো কিছুই বুঝতে পারছি না। বললি এক করলি আরেক। এই প্রথম তোর কথার সাথে কাজের মিল পেলাম না। কেন? তুই বললি লিনা কে বিয়ে করবি আর তুরফা..”
“ভাগ্যে যা ছিল তাই হলো। কেন তুই খুশি না?”
“আরে না সেটা না। কিন্তু..”
“তবে আর কিসের কিন্তু?”
ফিরাত হেসে আহরার কে জড়িয়ে ধরল। মোনতাহ্ আহরার কে বলল,
“ভাইয়া আজ যেহেতু আপনাদের বিয়ে হয়েই যাবে তুরফা কে শাড়ী পরিয়ে সাজিয়ে আনি একটু?”
মোনতাহ্-র কথায় আহরার তুরফার দিকে তাকাল। বেশ উদ্বিগ্ন আর বিচলিত দেখাচ্ছে তাকে। আহরার স্নিগ্ধ গলায় বলল,
“না মোনতাহ্। নূর কে অবলোকন করার অধিকার শুধুই আমার। আর কারো নয়। তুর কে শুধুই আহরার দেখবে। বাকিদের দেখানোর কোনো প্রয়োজন মনে করি না আমি।”
এক চিলতা হাসল আহরার। তুরফা সাথে সাথে চোখ নামিয়ে নিল লোকটার থেকে। এই লোকের অন্তঃ কোথায়? কোনোই কূলকিনারা পাচ্ছে না সে। সব কিছু যেন তার কাছে অন্ধকার অন্ধকার লাগছে।
সকলের সামনে দুজনের বিয়ে হলো। পবিত্র এক বন্ধনে আবদ্ধ হলো দুটি আত্মা। ‘বিয়ে মানে পবিত্র দেহের মিলন নয়। বিয়ে মানেই পবিত্র দুটি আত্মার মিলন। এই বন্ধনেই দুইটি আত্মা পবিত্র ও বিশুদ্ধ মিলনে একে উপরে আষ্টে থাকে। বিয়ের মতো পবিত্র খুব কিছুই আছে। এক আত্ম তৃপ্ততা পাওয়া যায় এই বন্ধনে। দুটি মানুষের মধুর সম্পর্ক বয়ে আনে। বিয়ে মানে কারো কাছে সুখ কারো কাছে বিষ। বিয়ের সুখ আস্বাদনের প্রক্রিয়াও ভিন্ন হয়। প্রেমিক পুরুষরা তা জানে। বিয়ে তো এক স্নিগ্ধ হাওয়া। গা যতক্ষণ স্নিগ্ধ শীতল হাওয়া দিবে ততক্ষণ এর অনুভূতি উপলব্ধি করা যায়। যদি হাওয়া তিক্ত হয় তবে বুঝে নিতে হবে দুজনের একজনের ভুল। তিক্ততার রেশ কাটিয়ে স্নিগ্ধ হাওয়া ফের বইয়ে দেওয়াই উত্তম। বিয়ে নামক বন্ধনে দুই আত্মার অস্তিত্ব মিলে মিশে এক হয়ে উঠে।’
আহরার হাটু গেড়ে বসে তুরফার দুই হাত নিজের দুই হাতে আবদ্ধ করল। সবার সামনে গভীর চুমু খেলো সেই হাতে। সমস্ত শরীরে হিম শীতল হাওয়া বয়ে গেল আহরারের। তুরফা শিউরে উঠল। শিরায় শিহরন লাগছে। দম আটকে আসবে মনে হচ্ছে। অজানা অদ্ভুত এক শিহরনের আবেশ অনুভবে উড়ছে। মিনিট কয়েক পর আহরার উঠল। তুরফার কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বলল,
“নিজের আমানত কে সম্পদে পরিণত করে নিলাম হৃদহরণী। আজ থেকে তুমি আমার স্ত্রী। পবিত্র এক বন্ধনে আবদ্ধ করেছি তোমাকে নিজের সাথে। আজ থেকে তুমি আহরার চৌধুরীর স্ত্রী মিসেস তুরফা চৌধুরী। তোমার পরিচয় তুমি মিসেস আহরার চৌধুরী।”
রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করার পর যখন তুরফা নিজের রুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে ব্যালকুনিতে দাঁড়িয়ে ছিল। তখন সব কিছু নিয়ে চিন্তার এক জগতে পৌঁছে গেল। হঠাৎ কোনো শব্দে ঘুরে দাঁড়াল। আহরার কে দেখে চমকাল ভীষণ চমকাল তুরফা। ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে আহরারের দিকে। অস্ফুট কন্ঠে প্রশ্ন করল,
“আপনি?”
“….
“আপনি এখানে কি করে?”
“তোমার সাহস কি করে হয় এই ঘরে আসার তুর?”
“আপনি এখানে এলেন কি করে? আমি তো দরজা লক ক..”
“আমি জানতাম এমন কিছুই হবে তাই আরেক টা চাবি আগেই ম্যানেজারের কাছ থেকে আনিয়ে রেখেছি। চলো।”
“ক কোথায়?”
“নিজের স্বামীর ঘরে।”
আহরার হুট করে গিয়ে কোলে তুলল তুরফা কে।
“এত দিন কোনো কিছু করিনি। গায়ে হাত দিতে গেলেও ভেবেছি অনেকবার এখন এসবের কোনো প্রশ্নই আসে না। এখন তুমি আমারই সম্পদ আমার স্ত্রী।”
নিজের রুমে গিয়ে আহরার তুরফা কে কোলে নিয়ে ব্যালকুনির দিকে গেল। সেখানে নামাল কোমল হাতে। আলতো করে গালে হাত দিল। সারা শরীর তুরফার কাঁপছে। আহরার বিমুগ্ধ হয়ে অনেকক্ষণ দেখল তুরফা কে। ভেতরে যে কি তোলপাড় ঝড় হচ্ছে তার সে নিজেও বুঝে উঠতে পারছে না। আচমকা তুরফা কে জড়িয়ে ধরল খুব শক্ত করে। ক্ষণেক্ষণে শক্ত করে জড়িয়ে ধরছে নিজের সাথে। একদম যেন মিশিয়ে নিবে। তুরফা চাইলেও কিছু বলতে পারছে না। সে বুঝল আহরার কাঁদছে। কারণ তার কাঁধটা গরম পানি তে ভিজে যাচ্ছে। কিন্তু কাঁদছে কেন উনি? তুরফার ফাঁপা কষ্ট হচ্ছে বুকের ভেতর। কাঁপা হাতে আহরারের পিঠে হাত রাখল কোমল ভাবে। আহরার একদম মোমের মতো গলে গেল। এবার আরো শক্ত করে তুরফা কে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদছে। তুরফা কিছু বুঝল না ভেতরটা শুধু ধড়ফড় করছে উনার কান্নার আওয়াজে। না পেরে আহরার কে আলতো করে জড়িয়ে ধরল তুরফা। আধ ঘন্টার মতো আহরার ফুঁপিয়ে কেঁদেই গেছে। এত বছরের ভেতরের কষ্ট টা কান্নার মাধ্যমে গলে পরছে। আহরার এতক্ষণ এভাবে কেঁদে খানিক হাপিয়ে গেল। তুরফা খুব কষ্টে তার কাঁধ থেকে আহরার কে তুলল। আহরারের মুখ দেখে তুরফা থমকে গেল। বুকটা ধক করে উঠল তার। গম্ভীর মুখ টা কেঁদে লাল হয়ে আছে। চোখ গুলি ভয়ংকর দেখাচ্ছে। আহরার নাক টেনে জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। তুরফা দ্রুত আহরার কে একটা চেয়ারে বসাল। ভেতর থেকে একটা গ্লাসে পানি নিয়ে এসে আহরার কে দিল। আহরার মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে বারবার। তুরফা বাধ্য হয়েই আহরারের থুতনিতে হাত চেঁপে মুখ ফিরায় নিজের দিকে। পানির গ্লাস টা আহরারের মুখে ধরল। আহরার মায়াভরা চোখ দিয়ে তাকাল তুরফার দিকে। তুরফা ইশারা করল পানিটা খাওয়ার জন্যে। আহরার পানি সব খেয়ে হাফ ছাড়াল। টিটেবিলের উপর পানির গ্লাস টা রেখে তুরফা আহরারের চোখ মুছে দিল নরম হাতে। আহরার তুরফার কোমর জড়িয়ে ধরল দুই হাতে। পেটে মুখ গুঁজে দিয়ে এবার নীরবে কাঁদল। তুরফা বুঝতে পারল না কিসের তিক্ত কষ্টেয় মানুষটা এভাবে কান্না করছে?
“আর কাঁদবেন না আপনার শরীর খারাপ হবে। কান্না থামান।”
“….
“শু শুনছেন?”
“তুরফা আমার অতীত টা কালো। বেদনাদায়ক। খুব কষ্ট দেয় বুকের ভেতর সেটা। আমার জীবন টা কষ্টেই গেছে তুরফা। ভেতরে খুব জ্বালা আমার।”
তুরফার হৃদয় কেঁপে উঠছে ওমন বেদনাদায়ক কথায়। হাহাকার লাগছে।
“তুরফা আমায় একটু শান্তি দিবে প্লিজ? একটু শান্তি? আমার ভেতরের দাবানল টা একটু প্রশমিত করবে তুরফা? নয়তো জ্বলে পুড়েই শেষ হয়ে যাবো আমি। আমার কালো অতীত আমায় নোংরা বানিয়েছিল। কিছু কালো অতীত মানুষ টা ধ্বংস করে দেয়।”
নিজের কাছে নিজেকে তুরফার সবচেয়ে অসহায় মনে হচ্ছে। এত এত প্রশ্ন কোনো উত্তর নেই। প্রশ্নের সাগরে ভাসছে শুধু
উত্তর নৌকা না হয়ে এলে এই সাগর থেকে রেহায় নেই তার। কি কালো অতীত যার কারণে উনি এমন হলো? লিনার বিষয় টা কি? তাকে কেন মোনতাহ্-র বিয়ে ভাঙ্গার কথায় বিয়ে করল? কোন কালো অতীতের কারণে এভাবে কাঁদছে? তুরফার মাথা ব্যথা করছে এখন।
আহরারের ফোনে একটা কল এলো। পকেট থেকে ফোন বের করে নাম্বার দেখল। খুব একটা ভালো লেগেছে এমন নয়। মুখে বিরক্তির ছাপ চলে এসেছে তার। ফোন বন্ধ করে টেবিলের উপর রেখে দিল। বিষয়টা ভাবাল তুরফা কে। কে কল দিল যে ফোন টাই বন্ধ করে দিল। আহরার উঠে গিয়ে টেলিফোন দিয়ে বলল সার্ভেন্ট কে দুই মগ কফি নিয়ে আসতে। আবার চলে গেল তুরফার কাছে। দুজনে চুপচাপ একটু দাঁড়িয়ে থাকল। তুরফা ভয়ে ভয়ে বলল,
“কি হয়েছে আপনার?”
“….
“বললেন না?”
“ঠিক আছি আমি।”
“….
“দাঁড়াও কফি টা নিয়ে আসি।”
দুই হাতে দুই মগ কফি নিয়ে হাজির হলো সে। এক মগ তুরফার দিকে এগিয়ে দিল। তুরফা কফির মগের দিকে তাকিয়ে আহরারের দিকে তাকাল। তারপর বলল,
“আমি কফি খাবো না।”
আহরার শান্ত গলায় বলল,
“এক মগ থেকেই শেয়ার করতে চাও? তাও ভালো। আমার কোনো সমস্যা নেই।”
তুরফা অবাক হলো। কেমন মানুষ উনি? একটু না বেশ অদ্ভুত। একটুক্ষণ আগেও কেঁদে কেটে এক হয়েছে আর এখন.. কি অদ্ভুত।
আহরার চুমুক দিল কফির মগে। মাথা চিনচিন করা ব্যথা টা একটু কমেছে। আজ কেমন নিজেকে খুব হাল্কা লাগছে। চোখ বন্ধ করে নিশ্বাস ছাড়ল। আরেক চুমুক কফি খেয়ে সেটা তুরফার দিকে এগিয়ে দিল।
“আমি খাবো না কফি।”
“ঠিক আছে আজ মেনে নিলাম কোনো জোর করেনি। এরপর থেকে এক কাপ কফি দুজনের হবে।”
তুরফা ভ্রু কুঁচকাল। কি বলতে চায় লোকটা? এক কাপ কফি আবার দুজনের? মানে….
এখন থেকে এই লোকটার সাথে থাকতে হবে তাকে? এক ঘরে এক বিছানায়? ভেবেই তুরফা ভয় পেতে লাগল। কিছু না বলে চুপচাপ ঘরে চলে গেল। একটা চাদর নিয়ে বড় সোফায় গিয়ে গুটিশুটি হয়ে চাদর মুড়িয়ে শুয়ে পরল। এই লোকের সাথে অযথা তর্কে করে লাভ নেই। কোনো কাজে আসবে না। এই ঘরেই থাকতে হবে তাকে। থাকতে যেহেতু হবেই তাহলে চুপ করে থাকাই ভালো। তুরফা মনে মনে দোয়া করছে যেন এখানে না আসে।
আহরার কফি শেষ করে ঘরে এলো। তুরফা কে দেখতে পেল না। এদিক ওদিক তাকিয়ে ঘরের আলো নিভিয়ে দিল। চাদরের ভেতর থেকে তুরফা ঘর অন্ধকার দেখে ভয় পেল খুব। ঘরে মৃদু আলো জ্বলছে। একটা ঘোর লাগানো পরিবেশ। আহরার সোফার সামনে গিয়ে আচম্ভা চাদর সরিয়ে নিল। পাজোকোলে তুরফা কে তুলে নিল। ঘরের মৃদু আলোয় দুজনের মুখ আবছা দেখা যাচ্ছে। তুরফা বিচলিত ও তরাস নয়নে আহরারের দিকে তাকায়। কিন্তু তার চোখে শুধুই ঘোর। মোহভরা দুই নয়ন। ফিসফিসানো কোমল কন্ঠে আহরার বলল,
“আমি তৃষ্ণার্ত তুর। অনেক দিনের তৃষ্ণার্ত। আমার আত্মতৃপ্তি চাই। তুর কে কাছে চাই আমি। তুরের মাঝে নিজের স্বত্বা কে স্থাপন করতে চাই আমি। নিজের অস্তিত্বের সব টা জুরে শুধু তুরকে চাই। শুধু আর কেবল মাত্রই তুর। ভালোবাসি তুর। কোনোদিন কাউকে ভালোবাসা নিবেদন করিনি। কিভাবে করে আমি জানি না। আমি যেমন আমি তেমন ভাবেই ভালোবাসব তোমায়। খুব ভালোবাসি তোমায় তুরফা। তুমি আমার হৃদহরণী। প্রথম দেখায় হৃদয় চুরি করেছো আমার। আমার জীবনের নূর তুমি। ভালোবাসি তোমায় হৃদহরণী।”
মোহময় চোখে তুরফার দিকে চেয়ে আহরার বিছানার দিকে অগ্রসর হলো। চোখে এত মায়া, এত ঘোর যেন এক মায়াময় ঘোর রাজ্য আছে ওতে। একবার ডুব দিলেই তলিয়ে যেতে হবে। তুরফার ভেতরে শিরায় উপশিরায় কেউ কারেন্ট লাগিয়ে দিয়েছে। কেমন অনুভূতি কাজ করছে তুরফা তা জানে না। বোধগম্য লোপ পেয়েছে। জ্ঞান শূন্যে আছে এই মুহূর্তে সে। চাইলেও কিছু বলতে পারছে না। আহরারের কথাই যেন তাকে হিপনোটাইজ করে দিয়েছে। আহরার কিঞ্চিৎ হেসে তুরফা কে বিছানায় আলতো করে রাখল। তুরফার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে দেখল অনেকক্ষণ। আকস্মিক আহরার মুখ বাড়িয়ে তুরফার কপালে গভীর এক চুমু দিল। তুরফা কেঁপে উঠল। চোখ বন্ধ করে কাঁপতে লাগল। আহরার তুরফার দিকে তাকিয়ে দেখল তুরফা চোখ বন্ধ করে আছে। তার ঠোঁট কেঁপে যাচ্ছে। কাঁপা ঠোঁট গুলি আহরার কে একদম টেনে নিয়ে যাচ্ছে। গভীর ভাবে মিশিয়ে নিতে চাইছে। আহরার আজ তুরের মাঝে গভীর ভাবে মিশে যাওয়ার প্রয়াস করছে। আলতো করে আহরার তুরফার অধরে অধর বুলাল।
চলবে…
#সাদিয়া
(খুব তাড়াতাড়ি রহস্য আর আপনাদের প্রশ্নের অবসান ঘটবে। অপেক্ষা করুন শীর্ষ সব কিছু পরিষ্কার হবে।)