আবছায়া
writer::প্রিয়া
২৩
সমুদ্রসৈকত থেকে ফেরার পর অরিত্রির মন খুব খারাপ।দীপকের কথা বারবার মনে হচ্ছে ভুল কিছু তো বলেনি।
একবার কি আবেগের সাথে এ নিয়ে কথা বলবে সাহস পাচ্ছে না।
রুম বেলকনিতে পায়চারি করছে, আবেগ ম্যাগাজিনের বই দেখছে আর অরিত্রির দিকে আড়চোখে তাকাচ্ছে।
‘স্টপ অরিত্রি।
অরিত্রি থেমে যায়।
‘কি হচ্ছে এক্সসারসাইজ করছিস না কি।
-না।
‘তাহলে কি হচ্ছে।শান্ত হয়ে বস তোর সাথে কথা আছে।
-আমার ও তোকে কিছু বলার আছে।
‘তাহলে তুই বল কি বলবি।
-না আগে তুই বল।
‘দেখ আমাদের এভাবে একরুমে থাকা ঠিক হচ্ছে না।
-আমি তোকে এটাই বলতে চেয়েছিলাম।
‘তোকে কি করে বলি।
-বল কি বলবি।
‘চল আমরা বিয়ে করে ফেলি।
অরিত্রি মুহূর্তে লজ্জায় লাল হয়ে গেলো।মাথা নাড়িয়ে চলে গেলো।
অচেনা জায়গায় কি করে সব ম্যানেজ করবে চিন্তায় পড়ে যায় আবেগ।
রুমের কলিংবেল বেজে উঠতেই আবেগ দরজা খুলে দেয়। হোটেলের বয় ছেলেটা দাঁড়িয়ে আছে।
-স্যার কিছু লাগবে।
“একটু ভিতরে আসবেন কথা ছিলো।
ছেলেটা রুমের ভিতর এসে বসতেই আবেগ ওর সামনে গিয়ে বসলো
-আমার একটা উপকার করবেন প্লিজ।
‘বলুন স্যার কি করতে পারি।
-এখানে কাজী অফিস কোথায়।
আমরা দুজন পালিয়ে এসেছি বিয়ে করতে চাই।
ছেলেটা কিছুক্ষণ ভেবে কাজী অফিসের ঠিকানা দিলো।
আবেগ ওর হাতে কিছু টাকা গুজে দিলো।পরের দিন ওদের বিয়ের সাক্ষী হওয়ার জন্য।
**ইনায়ার অস্থিরতা বেড়েই চলছে ওর বাবা আর বোন রিলিজ পেয়ে বাসায় এসেছে হাসপাতাল থেকে।
আইজানকে বারবার রিকুয়েষ্ট করছে ওকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আইজান ভাবছে ইনায়া যাওয়ার পর সবাই অনেক রাগ করবে তাই ইনায়া কে নিয়ে যাওয়া ঠিক হবে না।
ইনায়ার জেদের কাছে শেষপর্যন্ত হার মেনে যায় আইজান।
তাই ইনায়াকে নিয়ে ঈদের বাড়ির উদ্দেশ্যে গাড়িতে উঠে।
বাসার সামনে আসতে দারোয়ান বাসায় যেতে নিষেধ করে ইনায়া কারো কথা না শুনে বাসায় ভিতর চলে যায়।
মেইন দরজা খুলে ঢুকতেই সামনে এসে দাঁড়ায় ইকরাম।
-কোথায় যাচ্ছিস।
‘আমি বাবার সাথে দেখা করবো।
-বাবা তোর সাথে দেখা করবেন না।
‘ভাইয়া তুই আমার সাথে এমন করতে পারিস না।
-তোর জন্য বারবার সমাজের কাছে আমাদের ছোট হতে হচ্ছে৷ বাবা আনায়া মরতে বসেছিলো আবার কি ক্ষতি করতে এসেছিস।
‘ভাইয়া আমি তোর সাথে অযথা তর্ক করতে চাই না।আমি ভিতরে যাবো বাবাকে দেখবো।
বাহিরে হল্লগোল শুনে ইনায়ার বাবা রুম থেকে ড্রইংরুমে আসলেন।ইনায়কে দেখে বললেন।
-তুমি কেনো এসেছো।
‘বাবা তুমি ঠিক আছো তোমার শরীর কেমন আছে বাবা।
-আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।এবার তুমি যেতে পারো।
‘বাবা তুমি,তোমরা এরকম করছো কেনো।আমি কি ইচ্ছে করে এসব করেছি।
-তুমি ইচ্ছে করে করোনি তবে তোমার বেস্টফ্রেন্ড সম্পর্কে না জেনে কিভাবে পারলে নিজের বোনের জীবন নষ্ট করলি।
‘বাবা আমি জানতাম আনায়া,আবেগ দুজন দুজনকে ভালোবাসে।
হুট করে আনায়া ছুটে আসে।
-ছিঃ আপু তুই নিজেকে বাঁচানোর জন্য আমার উপর দোষ দিচ্ছিস।আমি তোর কথায় রাজী হয়েছিলাম ভেবেছিলাম তুই তোর বোনের জন্য পারফেক্ট কিছু নিয়ে এসেছিস।
শেষে তুই কি না ছোট্রবেলার মতো সেই আমার সাথেই হিংসে করলি।
আমার সব শেষ করে দিলি আপু শেষ করে দিলি।
আনায়ার কথা শুনে ইনায়ার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।কত সহজে মিথ্যে কথা বলে দিলো।
ইনায়ার বাবা আবার বললেন।
-তুমি আসতে পারো আমি এবং আমার পরিবার তোমাকে ত্যাগ করলাম।আমাদের এখন থেকে একটা মেয়ে সেটা আনায়া।
‘ঠিক আছে বাবা সব দোষ যখন আমার তাহলে আজ থেকে এই মুখ তোমাদের দেখাবো না।
চলো আইজান।
ইনায়া আইজানকে নিয়ে চলে গেলো কেউ ওকে থামালো না।
গাড়িতে চুপচাপ বসে আছে ইনায়া কাঁদছে না পাথরের মতোই বসে আছে।
আইজান ওকে বিরক্ত করেনি।বাসায় ফিরে সবকিছু আগের মতোই স্বাভাবিক নিয়মে চলছে। ইনায়া মেনে নিয়েছে সব তবে অরিত্রি আর আবেগকে ঠিক জবাব দিতে হবে।
**অরিত্রি আর আবেগ প্রথমে মৌলভীর কাছে গিয়ে কালেমা পড়ে অরিত্রি মুসলমান হলো।পরে ওরা কাজী অফিসে গিয়ে বিয়ে সম্পন্ন করে।
হোটেলে ফিরতে প্রায় রাত হয়ে যায়।রুমে এসে দেখে দীপক বাসরঘর সাজাচ্ছে
দীপককে দেখে অরিত্রি আবেগ দুজনেই চমকে যায়।
দীপক আপনমনে কাজ শেষ করে ওদের দুজনের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়।
-নতুন জীবনের জন্য শুভকামনা। অরিত্রি অনেক সুখে থেকে আর সুখী রেখো নিজের ভালোবাসাকে।
আবেগ পুরোনো সব স্মৃতি ভুলে নতুন মানুষটাকে ভালোবেসে আগলে রেখো।
আমি আসি অল দ্যা বেস্ট।
দীপক চলে যেতেই অরিত্রি ফুল দিয়ে সাজানো খাটের উপর মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসলো।
আবেগ অরিত্রির ঘোমটা খুলতেই অরিত্রি নিচে নেমে আবেগকে সালাম করলো।
এবার দুজনেই চুপ আবেগ একা পায়ের আঙুল দিয়ে অন্য পায়ের আঙুল মোচড়াচ্ছে আন ইজি লাগলে আবেগ এরকম করে থাকে।
-আচ্ছা অরিত্রি আমি কি তোকে তুমি বলবো।
‘না আমি তোমার তুই হয়ে থাকতে চাই।
*তাহলে তুই আমায় তুমি বলছিস কেনো।
-আরে বোকা তুমি আমার স্বামী হয়ে গেছো ফ্রেন্ড না।
‘ওহ আচ্ছা।
আবেগ আবার পায়ের দিকে মনোযোগ দিলো ভালো করে পা দিয়ে পা কে মোচড় দিচ্ছে।
অরিত্রি এবার জোরে হাসি দিলো।
-কি ভয় করছে।
‘ভয়, লজ্জা নাকি সংকোচ বুঝতে পারছি না।
-আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধর সব কেটে যাবে।
অরিত্রি আবেগের বুকে মাথা রাখলো।কাঁপা কাঁপা হাতে আবেগ ওকে জড়িয়ে ধরলো।
অরিত্রি আবেগের ঠোঁটে নিজের ঠোঁট ডুবালে।দুটো আত্মার মিলনে পূর্ণতা পেলো ওদের ভালোবাসা।
*ফজরের আযান শুনে ঘুম থেকে উঠে ইনায়া।নামাজ শেষ করে বারান্দায় যায়।
অনেক প্রশ্ন কোনো কিছুর উত্তর খুঁজে পাচ্ছে না একমাত্র আবেগ অরিত্রি পারবে সব খটকার সমাধান করতে।
আইজানের ফোনে মেসেজ টোন বেজে উঠলো। প্রথমে গুরুত্ব না দিলে ও দু বার টোন বাজার পর রুমে গিয়ে ফোন হাতে নিলো।
ঝুমকো ভয়েস মেসেজ পাঠিয়েছে। ওপেন করে ইনায়া শুনতে পেলো।
-বস রমিজ ত্যাড়ামি করতেছে বলতেছে মালটারে অন্যখানে দিয়ে দিবো।মহল্লার অনেক পোলার বদনজর পড়তেছে বস আর কতদিন আমি সামলাইয়া রাখমু।
বস এক্ষাণ মাল বস একদম কচি। আজ সন্ধ্যার পর আপনি আসবেন আমি রমিজরে কইয়া দিছি। আপনারে আসতেই হইবো বস।
ফোন রেখে ইনায়া ভাবছে ঝুমকো সত্যি কি গাড়ি কে মাল বলছে না কি অন্য কিছু।
আজ আইজানের পিছন পিছন যেতেই হবে না হলে আমি অন্ধকারেই থাকবো।
আবছায়া
writer::প্রিয়া
২৪
অরিত্রি ঘুমঘুম চোখে তাকিয়ে দেখে আবেগ ওকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে রেখেছে।
স্বপ্ন মনে হচ্ছে ওর কাছে সবকিছু। আবেগের কাছ থেকে নিজেকে ছাড়িয়ে ওর কপালে চুমু দিয়ে শাওয়ার করতে গেলো।
ফ্রেশ হয়ে এসে দেখে আবেগ উঠে গেছে।
-গুড মর্নিং। ঘুম শেষ।
‘হুম।
-ফ্রেশ হয়ে আসো আমি নাস্তা দিতে বলছি।
আবেগ ফ্রেশ হতে চলে গেলো। অরিত্রি ফোন করে নাস্তা দিয়ে যাওয়ার জন্য বললো।
আবেগ বাইরে এসে দেখে আয়নার সামনে বসে গুণগুণ করে গান গাচ্ছে অরিত্রি।
আবেগ খাটে বসতেই অরিত্রি ওর দিকে ওর মুখোমুখি বসলো।
-আচ্ছা আবেগ আমি একটা বিষয় বুঝতে পারছি না।
‘কি বিষয়।
-তুমি তো ইনায়াকে পাগলের মতো ভালোবাসতে ওর কথায় আনায়াকে বিয়ে করতে চাইলে একরাতের ভিতর হুট করে কি এমন হলো যে সবকিছু পাল্টে গেলো।
‘সেসব কথা থাক।
-প্লিজ আবেগ প্লিজ বলো।
‘আচ্ছা তাহলে শুনো।
সন্ধ্যের পর বাসায় বসে গান শুনছিলাম এমন সময় মা এসে বললেন তোর এক ফ্রেন্ড আসছে তোর সাথে কথা বলার জন্য।
বাইরে এসে দেখি দীপক বসে আছে।
ওকে দেখে অবাক হলাম।
ঠান্ডা মাথায় আমাকে ছাদে যেতে বললো।
আমি ওর পিছন পিছন ছাদে গেলাম।
প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট টান দিতে দিতে বললো।
-মশাই আমি বড় অবুঝ তাই খাঁটি স্বর্ণ চিনলেন না।
‘কি বলতে চাইছো।
– আপনাকে সঠিক রাস্তা চিনাতে এসেছি।
আপনি কি জানেন অরিত্রি আপনাকে পাগলের মতো ভালোবাসে।
‘হোয়াট ননসেন্স।
-১মিনিট আমি প্রোভ করে দিচ্ছি।
তখন দীপক তোমায় ফোন দিলো।তুমি রিসিভ করে ওকে ঝাড়ি দিলে আচ্ছামতো।
ও যখন বললো আমার বিয়ের কথা।
তখনি তুমি অবুঝ বাচ্চাদের মতো কেঁদে দিলে।
দীপক ফোন রেখে আমার দিকে তাকালো।
-কি ভাই বুঝতে পারছেন।
‘কখনো বলে নি তো।
-এজন্যই তো বললাম আপনি অবুঝ।সবকিছু বলে দিতে হয়না বুঝে নিতে হয়।
দেখুন আপনি ইনায়াকে না পেয়ে কষ্ট পাচ্ছেন একবার কি ভেবেছেন আপনাকে না পেলে অরিত্রি ঠিক একইভাবে কষ্ট পাবে।
যে মেয়েটা আপনার সব খারাপ সময়ে আপনার পাশে ছিলো তাকে এভাবে কষ্ট দিবেন।বিবেকের কাছে কি উত্তর দিবেন।
‘আমার কি করণীয়।
আমি ইনায়াকে ভালোবাসি।
-আপনি কিন্তু আনায়াকে বিয়ে করছেন ইনায়াকে না।তাই আনায়ার জায়গা অরিত্রিকে দিন ও ঠিক একদিন আপনার ভালোবাসা আদায় করে নিবে।
‘আমি পারবো না।
-যদি অরিত্রি সহ্য করতে না পেরে মারা যায়।যাতনা সহ্য করতে পারবেন তো।
‘না।
-তাহলে যান আসল মানুষটাকে তার প্রাপ্য জায়গা দিন।
ইনায়া অন্যকারো ঘর অন্যকারো সম্পত্তি। তাই ওর আশা বাদ দিন ওকে কখনোই আর পাবার আশা নেই আপনার। যে আছে তাকে আগলে বেঁচে থাকুন।
ইনায়াকে মনের কথা বলতে পারেননি এটা আপনার ব্যর্থতা আবার যদি পুনরাবৃত্তি করেন অরিত্রি ও হারিয়ে যাবে।তখন আপনি সাগরে শুধু ভাসতেই থাকবেন কূল পাবেন না।
‘আমার কি করা উচিত।
-আপাতত অরিত্রি কে ম্যানেজ করা পালিয়ে যান।
‘কোথায় যাবো।
-আমি সব ঠিকঠাক করে রাখবো রাতে আমাকে জানিয়ে দিও
আবেগ বললো ব্যাস এবার শুনলে তো সব কাহিনী। অরিত্রি কেঁপে উঠলো দীপক এতোকিছু কেনো করলো।
-তুই হয়তো ভাবছিস দীপক এতোকিছু কেনো করলো।দীপক তোকে খুব ভালোবাসে রে।
‘দীপককে আমি সবসময়ই বখাটে, উগ্র টাইপের ভেবে এসেছি।
আবেগ তুমি শুধু দীপকের কথায় এতো বড় ডিসিশন নিলে।
-তুই আমার জন্য কষ্ট পাবি এটা কি করে হয় তুই আমার জন্য এতোকিছু করলি।
-তুমি কি আমায় করুণা করলে।
‘তুই এইভাবে কেনো নিচ্ছিস।তুই তো জানিস আমি ইনায়াকে পাগলের মতো ভালোবাসি।তোকে ভালোবাসতে আমার সময় লাগবে প্লিজ আমাকে কিছুদিন সময় দে।
-তাহলে কাল রাতে আমাকে কেনো কাছে টানলে। দেহের প্রতি এতো লোভ।
“স্টপ অরিত্রি তুই আমার বৈধ স্ত্রী আমি শুধু তোকে প্রাপ্য অধিকার দিয়েছি।
প্লিজ শান্ত হো।
অরিত্রি কান্না করছে আবেগ ওকে জড়িয়ে ধরে আবেগের বুকেই কান্না করে যাচ্ছে অরিত্রি।
**ইনায়ার বাবা চুপচাপ বারান্দায় বসে আছেন।পিছন থেকে ইনায়ার মা কাঁধে হাত রাখেন।
-জানো ইনায়ার মা আমার মেয়েটাকে আমি খুব কষ্ট দিয়ে দিয়েছি।
‘কেনো দিলে এতো কষ্ট তুমি তো জানো আমাদের এই মেয়ে শুধু বয়সে বড় হয়েছে বুদ্ধিতে না।বড্ড আবেগী মেয়ে তোমার বাবা বলতে পাগল।
-ছোটবেলায় আমি যখন বাইরে থেকে আসতাম সব ছেড়ে ছুটে আসতো জলের গ্লাস নিয়ে।
ক্লান্তিতে যখন বিছানায় গা এগিয়ে দিতাম।মেয়ে আমার কচি কচি হাত দিয়ে চুল টেনে দিতো আমি ঘুমিয়ে যেতাম।
‘কেঁদো না নিজেই তো মেয়েকে তাড়িয়ে দিলে।
-বাস্তবতা শিখানোর জন্য এরকম করেছি।আমি জানি আনায়া আবেগকে ভালোবাসতো। কিন্তু আনায়া কত সহজে ইনায়াকে মিথ্যাবাদী প্রমাণ করে দিলো। ইনায়া প্রতিবাদ পর্যন্ত করতে পারলো না।
ইনায়াকে সামনে অনেক বড় বড় ঝড় সামলাতে হবে।তাই আগে থেকে ওর প্রস্তুত থাকতে হবে।
‘কি বলছো গো আমাদের মেয়েটা পারবে না কিছুতেই পারবে না।
-পারবে, কাল আমি মেয়ের ভিতর জেদ দেখেছি।
ইনায়ার বাবা,মা কাঁদছেন।
দুজনেই আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করছে মেয়ের জন্য।
**আইজানের ফোনে আরেকটা মেসেজ আসলো ইনায়া সেটা সীন করেনি আইজান বুঝে যাবে তাই।
ইনায়া ফ্রেশ হয়ে নাস্তা বানিয়ে সবাইকে খেতে ডাকে।সবাই নাস্তা খেয়ে যে যার মতো কাজে যায়।
ইনায়া রান্না করছে আর ভাবছে আইজানকে সন্দেহ করা কি ঠিক হবে।
না সন্দেহ যখন হয়েছে এর সমাধান প্রয়োজন।
দুপুরে খেয়েদেয়ে আইজান বেড়িয়ে যায়।ইনায়া কাজ শেষ করে ফুফির কাজ থেকে পারমিশন নেই। বান্ধুবির সাথে দেখা করবে বলে।
বস্তির আশেপাশে হাটাহাটি কথা করছে বোরকা পড়ে।
সন্ধ্যের কিছুক্ষণ আগে আইজান বস্তিতে আসে। বাসা থেকে যে শার্ট পড়েছিলো সেটা চেঞ্জ করা।
আইজান একটা ঘরে ঢুকলো।বস্তির অন্যসব ঘর থেকে এইঘর ভি,আই,পি।
ইনায়া ছোট একটা বাচ্চাকে জিজ্ঞাসা করলো ঘরটা কার বাচ্চা বললো ঝুমকোর।
কিছুক্ষণ পর ঝুমকো বাইরে এসে একটা লোকের সাথে কথা বলে আবার ভিতরে যায়।
লোকটা ১৬ কি ১৭বছরের একটা কিশোরী মেয়েকে নিয়ে ঝুমকোর ঘরে যায়।
ইনায়ার বুকের ভিতর ধপাস ধপাস শব্দ হচ্ছে।কি হবে ভাবছে সব বিশ্বাস কি জলে গেলো।
ঝুমকো আর ওই লোক দুজনেই বাইরে চলে আসে।লোকটাকে ঝুমকো এক বান্ডেল টাকা দিয়ে অন্য একটা ঘরে চলে যায়।
আঁধার মেনে এসেছে তাই ইনায়া ঝুমকোর ঘরের জানালার কাছে যায় কেউ ওকে দেখছে না।
আইজানের কথা স্পষ্ট শোনা যাচ্ছে।
-ঝুমকো যেমন বলেছিলো তার চাইতে তুমি আরো বেশি সুন্দর।
‘স্যার আমারে যাইতে দেন রমিজ কাজ দিবো কইয়া নিয়া আইছে বাপ মার কাছ থাইকা।
-তোমার কাজ করতে হবে কেনো আমি তোমাকে রাণী বানিয়ে রাখবো। আজ থেকে তুমি শুধু আমার। ইশ হাতটা তো ধরতে দাও।
খুব কোমল হাত তোমার আমার গাল স্পর্শ করবে প্লিজ।
মেয়েটা এবার কান্না করে দেয়।ইনায়ার মাথা ঘুরতে থাকে।
না চুপ থাকলে মেয়েটার ক্ষতি হয়ে যাবে তাই ইনায়া দরজায় ধাক্কা দিতে শুরু করে।
-ঝুমকো যা কাজ শেষ হলে আমি আসছি।
ইনায়া থামেনা ধাক্কা দিতেই থাকে । বাধ্য হয়ে আইজান দরজা খুলে দেয়
চলবে
চলবে