#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ২৩
[ আগের পর্ব ২৩ দিছিলাম ওইটা ইডিট করে ২২ লিখে দিয়েছি। এইটা ২৩ পার্ট নতুন তাই কেউ আবার আগের পার্ট বাইবেন না। ]
খুশিতে আরুশির চোখে জল পরছে। বাবা নরছে চেয়ে আছে আমার দিকে এটা দেখতেই খুশিতে নাচতে মন চাইছে আরুশির। কতো কথা বলে যাচ্ছে বাবা কিছু বলতে পারছে না কিন্তু চোখ দিয়ে নোনা জল পরে যাচ্ছে। এর অর্থ আমার জানা নেই।
রাইয়্যান ডাক্তার এর কাছে গেছে ডাক্তার বলছে আগের অনেক সুস্থ উনি। খুব তারাতারা আর ও সুফল হবে তাদের বিশ্বাস। এটা শুনে রাইয়্যান ও খুব খুশি।
আরুশির কাছে এসে এসে ওকে সব বলে সব শুনে আরুশি লাফিয়ে উঠে।
বাসার এসে মামাকে কল করে।
— আসসালামু আলাইকুম মামা, কেমন আছো?
–ভালো আমি । তুই কেমন আছিস?
–মামা আমি তো খুব ভালো আছি।
–এতো ভালো কেন কোন বিশেষ কারণে আছে নাকি?
–হুম মামা তুমি শুনলে তুমি ও খুশি হব অনেক।
–কি খবর তারাতারি দে।
–মামা আববু ভালো হয়ে গেছে জানো, ডাক্তার বলেছে আর কিছু দিনের মাঝেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে।
–ভালো হয়ে গেছে মানে [ একটু ভয় পেয়ে]
–আরুশির মামার কথাটা ভালো লাগলো না এভাবে বলল যেন ভালো হয়ে তার বিপদ হয়েছে। কথায় তেমন খুশির আভাস পেলাম না।…. ভালো হয়েছে মানে জিগ্গেস করছো তুমি খুশি হও নি।
–নিজেকে স্বাভাবিক করে। হুম খুব খুশি হয়েছি তো। তোর আববু কথা বলেছে তোল সাথে কি বলেছে আমাকে নিয়ে কিছু বলেছে কী?
–না মামা [ মনটা খারাপ করে ] আববু কথা বলতে পারেনি। হাত নারিয়েছে একটু আর তাকিয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে ছিলো জানো আর কি যেন বলতে চেয়েছে। কিন্তু কথা এখন ও বলতে পারেনা। কিন্তু তুমি টেনশন করো না ডাক্তার বলেছে খুব তারাতারি কথা ও বলবে আববু। আর তোমার নামে কি বলবে মামা। কী যেন বলছিলে?
–কই কিছু না তো।
— আচ্ছা।
মামার পরে মামির সাথে কথা বলে ফোন রেখে দিলো আরুশি।
আজ মনটা খুব ভালো ওর ও চাইছে রাইয়্যানের সাথে গল্প করতে করা যেতেই পারে কাল এক্মাম নাই।
যেই ভাবা সেই কাজ।
সোজা রাইয়্যানের রুমের কাছে গেল। দরজায় দাড়িয়ে ভাবছে ঢুকবো কিনা। ঘরিতে দশটার মতো বাজে কি যেন ভেবে সিড়ি বেয়ে নিচে নেমে আসে।
রান্না ঘরে ঢুকে কফি করতে লাগে। দুইকাপ কফি করে হাসি মুখ করে সিড়ি বেয়ে উপরে উঠে রাইয়্যানের রুমে ঢুকে।
রাইয়্যান ল্যাপটপের কি যেন করছিলো দরজা খুলে কাউকে ডুকতে দেখে মাথা তুলে তাকায়। আরুকে দেখে ভ্রু কুচকে তাকায়। এখানে কি করছে হাতে কফি। এক্মাম শুরুর পর তো আর আসে নি এই রুমে আজ হঠাৎ।
আরুশি রাইয়্যানের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে কফির মগ এগিয়ে ধরে।
–আরু তুমি এখানে কেন পড়া বাদ দিয়ে।
–এখন পরতে মন চাইছে না একটু ও তাই ভাবলাম আপনার সাথে গল্প করি। তাই চলে এলাম।
রাইয়্যান আরুশির দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে রইল,,
— কি হলো এভাবে তাকিয়ে আছেন কেন?
–রাইয়্যান কিছু বলল না এক দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকিয়ে রইল,,,
এতক্ষণ নিজেকে বোরিং ফিল করছিল এমন কিছু ও চাইছিলো আরুশি আশায় ভালো লাগছে । আরুশি কে ডাকত কিন্তু ওর পরীক্ষা দেখে আর ডাকা হয়নি । ল্যাপটপ নিয়ে বসে ছিল বোরিং লাগছিল হঠাৎই আরুশির কথায় অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়েছে।
এই সময় একদমই ওকে আশা করেনি।আরোশী গল্প করার কথা বলাতেও খুশি লেগেছে কিন্তু তবুও সাথে সাথে রাজি হচ্ছে না কারণ আরশির পরীক্ষা আছে এটা ভেবে ওড না করবে ভাবে।
— আর ও তোমার না এক্সাম আছে? পড়া বাদ দিয়ে কিসের গল্প যাও ভালো করে পড়ো। আজকে গল্প করতে হবে না তোমার এক্সাম শেষ হোক তারপরে ভালো করে গল্প করব।
–আরে আসেন না আমার পড়া হয়েছে আর বেশি বাকি নাই। কালকে তাছাড়া তো পরীক্ষা নেই আজকে না পড়লেও চলবে কালকে সারা দিন আছে রাত আছে এখন একটু গল্প করি আমার না খুব ভালো লাগতাছে আব্বু সুস্থ হচ্ছে। কবে আমার সাথে কথা বলবে এইসব ভেবে একদম পড়ায় মন বসছে না । একদম মন বসতেছে না আপনার সাথে গল্প করতে মন চাইতেছে।
–আমি কিন্তু পড়ালেখা নিয়ে গাফিলতি একদম পছন্দ করি না । আমি তোমার সাথে ঝগড়াঝাটি যাই করি গল্প আড্ডা মাস্তি এসবের মাঝে লেখাপড়ায় গাফিলতি একদম টলারেট করবো না। তুমি খুশি আছো ভালো এটা ভেবে আরো ভালো করে পড়ো যাও।
— আরোশী মুখটা মলিন করে ফেলল একদম কান্না কান্না ভাব করে আছে। ওর ভালো মুডটাই নষ্ট করছে। কঠিন দৃষ্টিতে তাকিয়ে রাইয়্যান কে বলল,,,
–আপনি যাবেন কিনা তাই বলেন।নিজের যখন ইচ্ছে তখন তো জোর করে নিয়ে যান আর এখন আমি সেধে সেধে যেতে চাইছি এখন যেতে চাইছেন না মুখের উপরে না করে দিচ্ছেন এটা কিন্তু একদম ঠিক না নেক্সট আবার আমাকে যখন বলবেনআমি কিন্তু যাব না আজকে আপনি আমার সাথে না গেলে।
–আমি তোমার ভালোর জন্য বলছি আর তুমি সেটা বুঝতে পারতেছ না ।
রাইয়্যান আর সে দিকে তাকিয়ে আছে মুখটা একবার কান্না কান্না ভাব করে আবার কঠিন করে বোঝা যায় না মেয়েটাকে। কিন্তু এত করে বলছেন না পারা যাচ্ছে না তাই উঠে দাঁড়ালো।
–আচ্ছা চলো যাই। কিন্তু বেশিক্ষণ থাকবো না এসে আবার পড়তে বসবা।
–আমার পড়া নিয়ে আপনাকে এত ভাবতে হবে না আমি নিজের পড়া নিয়ে নিজেই ভাবতে পারি। আপনাকে যেতে হবে না এত জোর করে আমি কাউকে নিতে চাই না আমি একাই ছাদে একাই যাবো। কাউকে লাগবে না আর কোনদিন আপনাকে ডাক দিতে আসবে না।
বলে আরো পিছন ফিরে দরজার দিকে এগোতে লাগে,
রাইয়্যান এটা দেখে তাড়াতাড়ি পাঁচালী ওর হাত ধরে ফেলে,
–আরে আরে রাগ করছ কেন যাব তো বললাম তোমার ভালোর জন্যই তো আমি যেতে চাইছিলাম না ওকে আর ভালো চাইবো না চলো যাই।
–দরকার নাই আমার আমি যাবইনা আজকে ছাড়েন।
–বাপরে আমার বউটার কি রাখো।
–আরুশি রাগী দৃষ্টিতে তাকানো ,,,
একদম আমাকে বলবেন না আমি আপনার বউ না ওকে ছোটবেলায় কিসের একটা পুতুল বিয়ে হয়েছে সেটা কি ভেবে বউ বলে কেউ।
–রাইয়্যান দৃষ্টি কঠিন করে কিছু বলতে যাবে,,
তার আগে আরুশি বলে ওঠে সরি সরি কানে হাত দিয়ে আরুশির মনে ছিল না যে এটা বললে রাইয়্যান রেগে যাবে বা কষ্ট পাবে আর জেনে বুঝে রাইয়্যানকে কষ্ট দিতে চায় না। যতটুকু ওর নিজের মাকে খুব ভালোবাসে রাইয়্যান ও তার মাকে ততটুকুই ভালোবাসে তাই তার প্রতি ভালবাসাটা ও বুঝে তাই ও তার দেওয়া কথা টা কে খুব রেসপেক্ট করে।
হয়তো এই বিয়েটা কেউ মেনে নিত কিন্তু রাইয়্যান তো অন্য একজনকে ভালোবাসে তাকে রেখে আমাকে নিয়ে কখনোই সুখী হতে পারবে না । সারা জীবন কষ্ট পাবে একজনকে ভালোবেসে আরেকজনের সাথে ঘর বাধলে কখনো সুখে থাকবে না কখনো। রাইয়্যানকে নিজের ফ্রেন্ড মনে করে আর একজন ফ্রেন্ড হয়ে কথা ভাববে এটা তার দায়িত্ব।
রায়ানের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর মুখে হাসি হয়তো কানে ধরার টা নিয়ে হাসছে এখনও কানে ধরে আছে আর বেশি তাই তাড়াতাড়ি হাত ছাড়িয়ে নিল।
আরোশী রাগ করে চলে যেতে চাইছিল করে কিন্তু রাইয়্যানের সাথে পেরে উঠেনি ও জোর করেই ছাদে নিয়ে এসেছে অন্ধকারে হালকা ঠান্ডা হাওয়া বইছে চারপাশে আরুশি ছাদে এসে চোখ বন্ধ করে সেই বাতাস নিচ্ছে খুব ভালো লাগছে মনটা ফুরফুরে লাগছে বাবা কে পেয়েছে এখন বাবা অনেকটা সুস্থ হয়ে গেছে খুব তাড়াতাড়ি কথা বলতে পারবে ডাক্তার বলেছে। এসব ভাবতে আরো ভালো লাগছে কিন্তু একটা কথা এখনো মাথায় আসছে না বাবা এতদিন কেন খোঁজ নিলোনা কোথায় ছিল বাবা এই দুই বছর কোথায় ছিল রাস্তায় কি করছিল এই অ্যাক্সিডেন্টটা কেন হল নানা প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে এর একমাত্র উত্তর দিতে পারবে বাবা। আর যে পর্যন্ত বাবা কথা না বলতে পারবে ততক্ষণ এই কোন উত্তরই আমি পাব না বাবাকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে হবে তাহলে আমার সব প্রশ্নের উত্তর আমি পাবো।
— গল্প করবে বলে নিয়ে আসলে এখন নিজেই চুপ করে আছো আমি যে তোমার সাথে আছি সেটা কি খেয়াল আছে তোমার আরু।
আরুশী চোখ খোলে রাইয়্যানের দিকে তাকাল রাইয়্যান এক দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে আছে এভাবে তাকিয়ে আছে যে আরু লজ্জা পেয়ে গেল। মাথা নিচু করে আছে ইদানিং রাইয়্যানের তাকানোটা অন্যরকম অনুভূতি জন্ম দেয় এই দৃষ্টি অন্যরকম লাগে লজ্জা লাগে অনেকঅন্য রকম একটা অনুভূতি হয় যা আগে হতো না।
— ও গড আরু তুমি আমায় দেখে লজ্জা পাচ্ছো লজ্জা পেলে তোমাকে কিন্তু বেশ লাগে মারাত্মক সুন্দর লাগে মন চায়।
বলেই বুকে হাত দিল আমি এটা দেখে আরো লজ্জা পেলাম তারপর আবার রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললাম,, কি বললেন?
ভয় পাওয়ার মতো করে বললো,,, কই কিছু বলি নাই তো।গল্প কি করবা না কিভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে তুমি লজ্জা পাবা আর আমি ।
আমি ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি কিন্তু আর কিছু বলল না শুধু বললো চলো
“দোলনাটাই বসি আমার পা ব্যথা করছে যা গল্প করার বসেই করবো দাঁড়িয়ে থাকতে পারবো না”
বলেই সোজা দোলনায় কোনায় বসে পরলো,,
আমি আর কিছু বললাম না নিজেও গিয়ে আরেক পাশে বসে পড়লাম। কি কথা বলব ভাবছি এদিকে রাইয়্যানো ভাবছে কি বলবে আমি ভাবছি কি বলে কথা শুরু করা যায় গল্প করার জন্য নিয়ে আসলাম এখন কি গল্প করবো ভেবে পাচ্ছিনা।
–আরু ,
আরু ও এখনই কথা বলতে চাইছিল, তার আগেই রাইয়্যানের কথা শুনে ওর দিকে ফিরে তাকাল তাড়াতাড়ি একসাথে যে দুজন কথা হতে যাচ্ছিল ।
–আমি ও এখন আর কথা। বলতে চাইছিলাম।
–ও তাহলে বললে না কেন
–আপনি বলবেন তাই বলি নাই।
বলে হা হা করে হেসে উঠে আরু,
আবার বলে ওঠে জানেন আমি আজ কত খুশিতে নাচতে ইচ্ছে হচ্ছে আব্বু তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাবে বলেন তাই না। আব্বুর সাথে আমার অনেক অনেক কথা জমে আছে।তার সব আব্বু কথা বলতে পারলেই শেয়ার করতে পারব তার সাথে। আচ্ছা বলেন তো আপনি আব্বু আমাকে ভালোবাসে না আমার জন্য কি একটুও তার মন কেমন করে নি এতদিন সে তার মেয়ের সাথে যোগাযোগ না করে কিভাবে থেকেছে? তার কি একটু আমার কথা মনে পড়েনি আমি কীভাবে আছি কি করছি না করছি ভালো আছি নাকি । কেন খোঁজ নিলো না কেন?
রাইয়্যান কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা একদৃষ্টিতে আরুশির দিকে তাকিয়ে আছে চোখের পানি চিকচিক করছে কষ্টের অভিমানে সত্যি আঙ্কেল কেন খোঁজ নিলো না কেন সেই থেকে দূরে থাকলে তার খোঁজ নেওয়া উচিত ছিল । কিভাবে আছে ভালো আছে তো একজনের ভরসায় কিভাবে মেয়েকে রেখে যেতে পারল।
কিছুতো একটা ঘাপলা আছে যা আঙ্কেল সুস্থ হলেই বলতে পারবে।
আরু ওর কথায় চিন্তার জগত থেকে বেরিয়ে এলো,,
–কি হলো কিছু বলছেন না যে?
–চিন্তা করো না আরো আঙ্কেলকে সুস্থ হয়ে যাবে দেখো।ডাক্তার কি বলেছে তোমার মনে নাই আঙ্কেল আগের থেকে অনেকটা বেটার আছে এখন তাকে ছেড়ে খুব তাড়াতাড়ি কথা বলতে পারবে উঠে দাঁড়াবে হাঁটবে সবকিছু করবে একদম টেনশন করবে না তোমার সাথে কথা বলবে আর সবকিছুর উত্তর দিবে।কোথায় ছিল কেন তোমার খোঁজ নেই হয়তো বানিয়েছে তুমি জানো না তোমার সামনে আসেনি দূরে থেকে তোমার খোঁজ নিয়েছেন এমন তো হতে পারে বল।
আরো ভাবছি সত্যিই তো এটা তো ভেবে দেখিনি শাশুড়ি টা আমার মাথায় আসে সব সময় বাবাকে নিয়ে রং তাই আমি ভেবেছি বাবা হয়তো আমার আড়ালে আমার খোঁজ নিয়েছে কত ভালোবাসো আমাকে হঠাৎ চলে যাওয়া বাবা অন্যরকম হয়ে যায় পাগল পাগল হয়ে যায় তারপর তো মামার বাসায় রেখেছেন।
আর ওর মনটা আবার পরিবর্তন হয়ে গেল সত্যি আমার খোঁজ নিয়েছে এসব না ভেবে বাবাকে নিয়ে অযথা ভুল মন্তব্য করে গেছি আমি আর মামাতো বারবার বলত বাবা-মার খোঁজ নেয় না বাবা মাকে ভালোবাসে না সে আমাকে ফেলে রেখে চলে গেছে আমার সাথে সাথে আমাকেও আর তার প্রয়োজন নেই সেসব আমিতো ভেবেছি মাথা আউলা ঝাউলা লাগছে।
হঠাৎ ধাক্কা খেয়ে বাস্তবে ফিরে এলাম রাইয়্যান আমাকে ধাক্কা দিয়েছে আমি তাকাতেই বলে ,,
ওসব চিন্তা করো না প্লিজ এত চিন্তা করো না। আজকে না তোমার মনটা ভালো এইসব চিন্তা করে মুডটা নষ্ট করো না তুমি আমার সাথে গল্প করবে বলে এসেছে ভালো ভালো গল্প করো। ঝগড়া করতে পারো আমি কিছু মনে করব না। তুমি যা ঝগড়াটে কিন্তু আজকে একটু ঝগড়া করছো না ।
বলেই কেমন করে যেন তাকাল আমি রেগে ওর দিকে তাকালাম আমাকে ঝগড়াটে বলল তারপর শুরু হল এক দফা ঝগড়া । ঝগড়া শেষে আবার ঝগড়া মিটিয়ে আমরা ভালোভাবে কথাও বললাম কিছু সময়।অনেকটা সময় ছাদে কাটালাম তারপর নিচে এসে কিছু সময় বইয়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম কিছুক্ষণ তারপর দিলাম এক ঘুম।
এভাবে চলতে লাগল সময় পরপর পরীক্ষাগুলো ভালোই হলো পড়া আর হালকা আব্বুকে দেখতে যাবা আস্তে আস্তে হচ্ছে ডাক্তার বলছে কিন্তু কথা এখনও ভুলতে পারিনি।এর মাঝে মামা মামীরা দেখতে এলো আব্বু আব্বু কেমন যেন করে আমার দিকে তাকিয়ে কি যেন বলতে চাইলাম আর দিলে কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না মামা যে কেমন ভীতুও একটা হয়েছিল সব আমার মাথার উপর দিয়ে গেল। পরপর পরীক্ষাগুলো রাইয়্যান আমার সাথেই গিয়েছি। এর মাঝে সোনালীর জেনে গেছে আমার সবকিছু অনেক ভালো একটা মেয়ে ও আমি সব কিছু বলে দিয়েছি যে রাইয়্যান দের বাসায় আমি থাকি ওতো ধরেছে রাইয়্যান আমাকে ভালোবাসে না হলে নাকি এত কেয়ারিং করত না । নিয়ে যায় ঠিক সময় মত আমার নাকি খুব কেয়ার করে ভালোবাসে আমি ওকে বলে দিয়েছি সে আমাকে ভালোবাসে না অন্য জনকে ভালোবাসে ।
তবুও সে মানতে নারাজ হে বলে আমি সিওর সে তাকে ভালোবাসে।তোর বুঝার ভুল আমি বলেছিনা আমাকে শুধুমাত্র দয়ার খাতিরে এতটাই কেয়ারিং কবে আর বিয়ে সেটা মেনে নিয়েছি শুধু সে তার মাকে কথা দিয়েছিল এজন্য একটা দায় বদ্ধতা কাজ করছে তার মধ্যে আমি চাইনা কারো দায়বদ্ধতা হয়ে তার জীবনে থাকতে।আমি চাই এমন একজন যে শুধু আমারটা আমাকেই ভালোবাসবে হ্যা আমি গরিব হতে পারি আমার কিছু নেই কিন্তু আমি এমন একজন মানুষ চাই তার মনে শুধু আমার বাস থাকবে আর কারো নয়।
আজ আমার লাস্ট পরীক্ষা রায়ান বলেছে আজকে নাকি আমাকে একটা কি একটা সারপ্রাইজ দিবে তাও পরীক্ষা শেষে আমি কিছু বলিনি শুধু শুনেছি প্রতিদিন আমাকে নিয়ে যায় তাই আজকে রেডি হয়ে তার রুমে গেলাম আর সে এখনো বের হয়নি।রুমে গিয়ে দেখি তানিশা হয়েছে দুজনে কি যেন কথা বলছে আমাকে দেখে থেমে গেল তানিশা আপু আমার দিকে তাকিয়ে হাসি উপহার দিলো যা দেখে আমার চোখ দুটো বড় বড় হয়ে কেন এই ফাস্ট আমি তার হাসি দেখলাম তাও আবার আমার দিকে তাকিয়ে যেন সব সময় জানি কেমন আছে তা কিভাবে আমার দিকে তাকে তার তাকে আবার অন্যরকম সে আমাকে দেখেই বললো,
–হাই আরোশী কেমন আছো পরীক্ষার জিতে যাবে বুঝি একদম রেডি হয়ে এসেছ ।
আমি মাথা নাড়ি হ্যাঁ । রাইয়্যানের দিকে তাকিয়ে দেখি সে এখনো রেডি হয়নি হয়তো বা হচ্ছিল কিন্তু এখন তার ভাগ্য বই দেখে মনে হচ্ছে সে রেডিও হবে না।
–ভাল আছি আপু আপনি কেমন আছেন অনেকদিন পর এলেন আপনার সাথে অনেকদিন পর দেখা হল এখনতো আসেনি না বেশি!
–হ্যাগো অনেক বিজি থাকি তো আর আগে আসার যে কারণটা ছিলো এখন তার সেই কারণটা নাই তাই আসা হয় না হয়তোবা আর আসা হবে না এটাই শেষ।
আমি তার কথা শুনে অবাক হয়ে তাকালাম এভাবে বলো কেন আর আসা হবে না মানে কি?
সে আমার হাত ধরে বলল,,
কিছু না তোমরা ভালো থেকো । রাইয়্যান তাহলে আমি আসি।তুইতো আরুশিকে নিয়ে পরীক্ষা দিতে নিয়ে যাবি। আমার সাথে যেতে পারবে না মনে হয় যেতে হবে না আমি একা যেতে পারবো তোরা যা আর ভালো থাকিস আর আরুশি তুমি ভালো থেকো।
বলে চলে যেতে লাগলো আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি হঠাত রাইয়্যান উঠে দাঁড়িয়েছে বলে ডেকে বললো,, আমি কি বলছি আমি যেতে পারব না তুই এত বেশী বুঝিস কেনো আরু তুমি একাই চলে যাও প্লীজ আমারটা তানিশার সাথে একটা কাজে যেতে হবে।
তানিশা বলল ,,
আরে কি বলছিস তুই আরুশি সাথেই যা।
আমি বললাম না আপু আমি যেতে পারবো আপনারা যান সমস্যা নাই।
আমার খুব খারাপ লাগছিল রায়ান এ কথাটা শুনে আমি একা যেতে বলল সে না বলছিলাম কি কি সারপ্রাইজ দেবে।কেন খারাপ লাগছিল আবার ভাবছি মনকে বলছি তানিশা আপুকই সে ভালবাসে তার সাথে তো সে যাবে আমার সাথে কেন যাবে আমি বুঝতে পারছি না আমার কেন খারাপ লাগছে।
সারাটা রাস্তা একটা বিষয় নিয়েই কলেজের গেটের সামনে আসতেই সোনালী সাথে দেখা আমাকে দেখে দৌড়ে আমার কাছে এসে দাঁড়ায় তারপর আশেপাশে কাউকে খুজতে থাকে ।
–আরে আরে তোর হ্যান্ডসামটা কই।
আমার কেন জানি খুব রাগ হচ্ছিল আমি ওর হাত ছাড়ে বললাম,,
–জানি না ছাড় তো সব সময় খালি ওর কথা কেন আমি তোর ফ্রেন্ড নাকি সেতোর ফ্রেন্ড।
–সেটা শুনে রেগে যাচ্ছিস কেনো আমার তারসাথে কথা আছে বলনা কোথায় !
–আমি জানিনা সে কোথায় থাকবে যাবে না যাবে আমি কিভাবে জানবো যে তার ভালোবাসা মানুষের সাথে আছে আমার কাছে তার কথা একদম জিজ্ঞেস করবিনা।
বলি হাত ছাড়িয়ে ক্লাসে ঢুকে গেলাম এদিকে সোনালী হা হয়ে তাকিয়ে আছে আমার দিকে ও বুঝতে পারছেন আমি এতটা রেগে যাচ্ছি কেন আমি নিজেও বুঝতে পারছি না আমি আমার কেন রাগ হচ্ছে তো এত কেন রাগ হচ্ছে প্রচন্ড রাগ হচ্ছে সবকিছু অসহ্য লাগছে।
কিছুক্ষণ পর নিজের মাথাটা ঠান্ডা করে নাও হতে পারে। ছুটির পর সে আসলো আমাকে নিতে এখনো তো সত্যি খুব ব্যস্ত আসেনি। পরীক্ষা শেষে দাঁড়িয়ে আশেপাশে চৌপল আছি কোথাও আছে কিনা কিন্তু না কোথাও নেই কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম সোনালী চলে গেছে আমি একা অপেক্ষা করলাম কিন্তু নাহলে বাড়ি ফিরতে মন খারাপ লাগছে জানতাম এরকম কিছুই হবে তানিশা আপু আপুকে তিনি ভালোবাসে।
বাসায় না ফিরে সোজা বাবা সেখানে চলে গেলাম।
#আমার_তুমি❤
#লেখিকাঃ-তানজিনা আক্তার মিষ্টি ❤
#পর্ব:- ২৪
রাইয়্যান আরুশির কলেজ এসে দাঁড়িয়ে আছে। তানিশার সাথে একটা কাজে গিয়েছিল সেখান থেকে আসতে লেট হয়ে গেছে ওর ইচ্ছে ছিল আরুশিকে সারপ্রাইজ করে দেবে কিন্তু আরুশি তো নেই সাথে পুরো কলেজ খালি অনেকটা লেট হয়ে গেছে বোঝা যাচ্ছে। গাড়ি থেকে নেমে চারপাশে তাকিয়ে দেখছি আমার জন্য অপেক্ষা করছে কিনা। অপেক্ষা করবে কেনো আমি বলিনি আমি আসবো সারপ্রাইজ দেবো ভাবছিলাম তখন বলে দিলে ভালো হতো একা একা চলে গেল বাসায়।
মনটা খারাপ করে গাড়িতে উঠে বসে পড়লাম কি আর করাই বাসায় ফিরে যায় দেখি ম্যাডাম কি করে?
গাড়ি এসে থামল গেটের ভেতরে গাড়ি পার্ক করে নেমে ভেতরে ঢুকতে যাবে হঠাৎ চোখ পরল ফুলের বাগানে আরুশির গোলাপ অনেক পছন্দ ।আচ্ছা গোলাপ দিলে কেমন হয় যেই ভাবা সেই কাজ সোজা বাগানে ঢুকে পড়লো একটা গোলাপ ছেড়ে আবার ফিরে আসতে লাগল একদিন এই ফুলের জন্য আরুকে বকেছিলাম। কিন্তু ও জানেনা এই ফুল গাছের চারার কারো ধরার সাহস নাই।
ফুলটা নিয়ে আসছিল আশেপাশের সবাই মানে সার্ভেন্ট গার্ডরা হা করে তাকিয়ে আছে ফুলের দিকে লজ্জা লজ্জা লাগছে এভাবে তাকিয়ে থাকার কি আছে মনে হচ্ছে আমি কোনো এলিয়েন। ফুল নিয়ে ভিতরে ঢুকে দেখি জেসমিন আসছে আর মায়ের সাথে কথা বলছে। সোফায় বসে আমার হাতে ফুল দেখে দুজনে কথা অফ করে আমার দিকে হা করে থাকে রইল না এমন অদ্ভুত করে তাকানো মানে আমি বুঝতে পারছিনা। আমি কি এলিয়ন এমন ভাবে তাকানোর কি আছে সামান্য একটা ফুল এনেছি তার জন্য ।
জেসমিন আমাকে জিজ্ঞেস করল ,,
–কি ভাই আপনার হাতে ফুল কেন এই ফুলটা কার জন্য এনেছেন?
জেসমিনের কথা শুনে চলার গতি থামালো কিন্তু পিছনে ফিরলো না ।
ওইভাবে থেকে ই একটা কথা বলেই সোজা গটগট করে সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে গেল। জেসমিন ওর মা হা করে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে। হঠাৎ চিৎকার শুনে দুজনে উঠে দাঁড়ালো একে অপরের মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। চিৎকার করছে কেন কি হল আবার জেসমিন আজকে এসেছে ওদের সবার সাথে দেখা করতে এদিকে আরু টাও নাই ওর জন্য অপেক্ষা করছে আসলে দেখা করে চলে যাবে।
মানে সোজা ওপরে চলে গেল রায়ান আরুশি নাম বলে ডাকছে মানি যেতেই রাইয়্যান বলে উঠলো,,
—আরু কই ?
—-আরুশি তো এখন ও আসে নাই।
–আসে নাই মানে কী? ওর তো চলে আসার কথা। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল,,,,
—–দেখো কত বাজে সাড়ে তিন টা ! এক্সাম তো দুইটাই শেষ হয়েছে এখনো বাসায় এসে পৌছায় নাই । আমিতো ওর কলেজে গিয়েছিলাম ওকে তো পেলাম না এমনকি পুড় কলেজ ফাঁকা ছিল তাহলে কোথায় গেল আরু ।
—-আমি কি করে জানবো বল?? কোন বিপদ হলো নাতো!
—বিপদের কথা শুনতে চিন্তিত হয়ে পড়লাম ,,,
সত্যিই তো বিপদ হতে পারে। কি করবো ভেবে পাচ্ছিনা হঠাৎ ফোনের কথা মনে পরল ।
একটা ফোন করি ফোন করার কথা তো মনেই ছিল না।
ওর কাছে এখন ফোন আছে এটাই ভুলে গিয়েছিলাম।
তাড়াতাড়ি ফোন বের করল,,,, আর ওর নাম্বারে ডায়াল করল কিন্তু একই নাম্বার বন্ধ বলছে কেন ??
নাম্বার বন্ধ বলছে এটা দেখিতো রাইয়্যান আরো চিন্তিত হয়ে পড়ল,,
কোনো কিছু না ভেবেই সোজা বাইরে বেরোতে লাগলো এখনই আরুশিকে খুঁজতে যেতে হবে গাড়ি দরজা খুলে ভিতরে ঢুকবে এমন সময় দেখে কেউ গেটের ভিতরে ঢুকেছে।
সে দিকে তাকিয়ে মনে হয় জান ফিরে পেল আরো ভিতরে ঢুকছি কোথায় ছিল এত সময় লাগলো কেন আসতে । দৌড়ে আর ওর সামনে গিয়ে দাঁড়ালো,,,
—-কোথায় ছিলে এত সময় আসতে এত লেট হল কেন??
—বাবার সাথে দেখা করে বাসায় ফিরে আসে আরু।
গেট দিয়ে ঢুকতেই কেউ দৌড়ে সামনে এসে দাঁড়ায় ।
রাইয়্যান কঠিন মুখ করে তাকিয়ে আছে ওর দিকে ও বুঝতে পারছে রাগ করার কারণটা এভাবে হসপিটালে চলে গেছিল সবাই তো চিন্তা করবে।
—আরো কিছু বলছে না দেখে রাইয়্যান আবার বলে উঠল,,,,,
——- কি হলো কিছু বলছো না কেন আমি তোমাকে কিছু জিজ্ঞেস করছি?? কথা কি কানে যাচ্ছে না কোথায় ছিলে এত সময় 1 ঘন্টা কোথায় ছিলে তুমি? কত চিন্তা করছিলাম জানো তোমার কোনো আক্কেল জ্ঞান নেই এভাবে না বলে কোথায় চলে গেছিলে। ফোন দিছিলাম ফোন ধরোনা কেন? ফোনটা দিয়েছে কেন, সাথে নিয়ে শুধু ঘুরার জন্য । ফোনটা যদি দরকারে কাজেই না লাগে সাথে রাখার কি দরকার?
তোমার ফোন অফ কেন হা করে তাকিয়ে থাকবে না একদম আমার কিন্তু প্রচন্ড রাগ হচ্ছে।
আরোশী কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা তখন রেগে মেগে হসপিটালে চলে গিয়েছিল কিন্তু যখন বোঝে যে সবাই চিন্তা করবে তখন তাড়াতাড়ি করে বাসায় চলে আসে। এটুকু সময় যে রাইয়্যান ওর জন্য এতোটা ব্যস্ত হয়ে পড়বে ওভাবি নি ।
আবার ফোন দিয়েছে বলে কিন্তু আমিতো ফোনটা বাজতেই শুনলাম না ব্যাগে থেকে বের করে ছোট পার্স থেকে ফোনটা বের করে দেখে হ্যাঁ সত্যি অনেকবার ফোন দিয়েছে ।কিন্তু ফোনটা সাইলেন্ট ছিল এজন্য আমি শব্দ শুনি নি।
আসলে আমি এতটা কেয়ারলেস কেন?
—-সরি আসলে ফোনটা ফোনটা সাইলেন্ট ছিল তা আমি রিংটোন শুনিনি।
সাথী সাথী চিৎকার করে বলল,
—— ফাইজলামি পেয়েছো তুমি আমার সাথে সাইলেন্ট ছিল মানে কি ? ফোন সাইলেন্ট কেন করবে তুমি সবসময় যতবার তোমাকে ফোন দিয়েছি কোন দরকারে। কখনো ফোন ধরতে পারো না তোমার জন্য যে কারও চিন্তা হয় সেটা কি তুমি বুঝতে পারো না নাকি সবাইকে চিন্তিত রাখতে তোমার ভালো লাগে।
চিৎকার করে কথাগুলো বলল যা শুনে আমি কেঁপে উঠলাম মাথা নিচু করে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছি মাথা উঁচু করতে পারছিনা একদমই ।
আমাকে অনেক গুলো কথা শুনিয়ে দিল তারপর হঠাৎ পরিবেশ ঠান্ডা কেউ কোন কথা বলছি না পায়ের শব্দে সামনে তাকিয়ে দেখি রাইয়্যান হেঁটে চলে যাচ্ছে। আমিও তার পেছনে হাঁটতে লাগলাম সোজা নিজের রুমে চলে গেল । আমি দরজা দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই দেখি জেসমিন আপু এসেছে মনটা একদম ভালো নেই। তবুও তাকে দেখে একটা শুকনো হাসি উপহার দিলাম আপু আমাকে দেখেই ছুটে এসে জড়িয়ে ধরল।
–আরুশি তোর আসতে এত দেরি হলো কেন??
—আপু আমি একটা আব্বুর কাছে গেছিলাম। খুব মন কেমন করছিল তাই পরীক্ষা দিয়ে সোজা আব্বুর কাছে গিয়েছিলাম।
—এদিকে তো রাইয়্যান পাগল প্রায় চিৎকার চেচামেচি করলো,,,,
এসে তোকে খুঁজে না পেয়ে পাগল হয়ে আবার ছুটে বেরিয়ে গেল আবার দেখলাম মুখটা গম্ভীর করে উপরে চলে গেল।
কোথাও গেলে একটু বলে যাস সবাই তো চিন্তা করে। আর সবচেয়ে বড় কথা রাইয়্যান চিন্তা করে অনেক খুব ভালোবাসি তো।
আপুর শেষে কথাটা শুনে আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল ভালোবাসা মানে।
আমি জিজ্ঞেস করেই ফেললাম,,,,
— কি বলছে আপু?
—যা সত্যি তাই বলছি ও তোকে খুব ভালোবাসে।
—-আমি কিছু বলবো আপুর ফোন বেজে উঠল,,
আপু ফোন নিয়ে কথা বলতে বলতে বাগানে চলে গেল। ভাইয়া ফোন দিয়েছে মনে হয় আমি কিছুক্ষণ দাড়ালাম আসতেছেনা দেখি উপরে চলে গেলাম একটু পর জিজ্ঞেস করি।
গোসল করতে বাথরুমে গিয়েছে বারবার একটা কথা মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে ভালোবাসে মানে আপু এই কথা কেন বলল,,,,,,,,,,
—রাইয়্যান কি আমাকে ভালোবাসে এটাই কি বলছিল?
ধুর এসব কি ভাবছে আমি নিজের কানে শুনেছি তানিশা আপুকে ভালবাসি একটা সময় আমি ভাবতাম হয়তো আমাকে ভালোবেসে আমার প্রতি তার কেয়ারিং। এসব দেখে আমারও মনে হয়েছিল কিন্তু আমার ধারণা ভুল তার ঐসব কেয়ারিং এর জন্য আমার মনে একটা অনুভূতি তৈরি হচ্ছিল।
সবই আমার কাছে ক্লিয়ার তবুও ভুল ভাবি।
আপু হয়তো ফ্রেন্ড হিসাবে ভালোবাসে সেটা বোঝাতে চাইছেন একজন বন্ধু আরেকজন বন্ধুর জন্য চিন্তা করবে । এটা তো স্বাভাবিক ব্যাপার।
গোছল শেষ করে বাইরে আসলাম।
চারদিকে আপুকে খুঁজছি ,,,
চাচিকে পেলাম তাকে জিজ্ঞেস করলাম,,,,,
—– আপু কোথায়?
চাচি বললো ,,আপকে চলে গেছে ভাইয়া নিতে আসছিল আমার জন্য অপেক্ষা করতে চাইছিল। কথা হয়েছে বলে চাচী ই নাকি চলে যেতে বলেছে।
” এখন চলে যা পরে আবার এসে কথা বলি স।”
রুমে এসে বসলাম,, নিচে থেকে খেয়ে এসেছি।
ঘুম পাচ্ছে খুব ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখি সাড়ে চার টা বাজে।
খাটে শুয়ে চোখ বন্ধ করে রইলাম । কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়লাম। আযানের শব্দের ঘুম ছুটে গেল। উঠে বসলাম এতো সময় ঘুমালাম।
নামাজ পড়ে নিলাম।
আন্কেলের রুমে গিয়ে ঘুরে আসলাম।
রাইয়্যানের রুমে যেতে চেয়েও কেন যেতে মন চায়লো না আমার ওপর রেগে আছে অনেক গেলে কিভাবে রিঅ্যাক্ট করবে তাই ভেবে আর গেলাম না।
রুমে এসে খাটে বসলাম।
আজকে পড়া নেই কি করবো ভাবছি?
হঠাৎ টেবিলের উপর চোখ পরল কিছু একটা দেখে চমকে দাঁড়িয়ে পরলাম,,, এখানে কি করে এলো এটা। আরশির সোজা টেবিলের সামনে গিয়ে দাঁড়াল বিষ্ময়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। গোলাপ এখানে কি করছে এটা তো দেখেই বুঝা যাচ্ছে বাগানে থেকে ছেরা হয়েছে।কে ছিরলো আমার রুমে এটা কি করছে ?এটা রাইয়্যান দেখলে তো আমাকে মেরে ফেলবে একবার ছিরেছিলাম বলে কত কিছুই না করলো।
পরে অবশ্য বলেছে এইসব ইচ্ছে করে করেছেন কিন্তু তবুও ফুল গাছে কাউকে হাত দিতে দেখি না সবাই রাইয়্যানকে প্রচন্ড ভয় পায়। কে ছিরলো ফুল বাসার কারো সাহস নেই । ফুল গাছে গিয়ে ফুল ছিরার।
আর ছিরলেও আমার রুমে কেন।
ধুর এসব ভেবে আর কাজ নাই ।
অনেক সুন্দর ফুলটা , ফুল নিয়ে খাটের উপর বসলো এত কিছু না ভেবে নিজের মনটাকে বলছে,,,
যেভাবে আসুক তোর পছন্দের ফুলিই তো তোর কাছে এসেছি।
চারদিন পর,,,,,,,,,,,,,
এই চার দিন আমার সাথে কথা বলেনি রাইয়্যান একটা ইগনোর ভাব নিয়ে চলে।আমি প্রথমে কথা বলতে চাইলেও এখন আমি বলতে চাইনা। দরকার কি কথা বলার???
সোফায় বসে আছি আঙ্কেলের সাথে কথা বলছি ।
একটু পরেই আমাদের সামনে রাইয়্যান এসে বসলো।
সামনে সোফায় বসে একমনে কী যেন করছে ফোনে!!
কলিংবেল বেজে উঠলো,, চাচি রান্না করছে এজন্য আমি উঠে দাঁড়ালাম দরজা খুলে দেখি হাসিমুখে দাঁড়িয়ে আছে। তানিশা আপু আমাকে দেখে একটা সুইট হাসি উপহার দিলো খুব সুন্দর লাগছে দেখতে পরনে সাদা গ্রাউন খুব গর্জাস না।
—হাই কেমন আছো?
—ভালো আপু; আপনি কেমন আছেন?
—এইতো আলহামদুলিল্লাহ ভালো”
—রাইয়্যান বাসায় আছে?
আমি হুম বলে দরজা থেকে সরে দাঁড়ালাম তাকে ভেতরে আসতে বললাম,,,,
আমিও তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম ,
এবার রাইয়্যান কথা বলল,,, আমার দিকে তাকিয়ে বলল, কফি আনতে এই কয়দিন একদিন ও কথা বলেনি আজকে নিজে থেকে কথা বলল , আমি কিছু না বলে রান্না করে চলে গেলাম।
কপি করে এসে দেখলাম আপু কিসে যেন কার্ড বের করে দিচ্ছে আঙ্কেলকে ।আঙ্কেল হাসিমুখে কথা বলছে রাইয়্যান পাশে দাঁড়িয়ে আছে। হঠাৎ আপু আঙ্কেল কে সালাম করল,,,,
সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে আঙ্কেল তো চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে। আমিওআপুকে দেখে কখনোই মনে হয়নি তিনি কাউকে পায়ে ধরে সালাম করতে পারে । আজকে সেটা ভুল প্রমানিত হলো আমাকে দেখে আপু আমার সামনে এসে দাড়ালো আমার হাতদুটো ধরে একটু দুরে নিয়ে গেল তারপর যা বললো ,,,তার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না। আপু আমাকে জড়িয়ে ধরেছে তার চোখে যে পানি আমার বুঝতে একটুও দেরী হলো না হ্যাঁ চোখে দেখিনি কিন্তু সেই পানি আমার কাঁধে পড়ছে।কফিটা টেবিলের উপর রেখে ছিলাম রাইয়্যান হাতে নিয়েছে আ।পু আমাকে ছেড়ে এসে রাইয়্যানের সামনে দাঁড়িয়ে “ভালো থাকিস” বলেই বেরিয়ে গেল। আমি পেছন থেকে কফি খেতে বললাম ,,,
কিন্তু আপু আর কিছুই বলল না সোজা চলে গেল। রাইয়্যান কফি নিয়ে উপরে চলে গেল তার আগে একবার আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। আমার চোখে অনুশোচনা । আজকে বুঝতে পারলাম আসলে আমার বুঝার ক্ষমতা নাই আমি ঠিক টাকে ভুল আর ভুলটা কে ঠিক ভেবে বসে থাকি।
আনন্দ হচ্ছে অনেক আজকে আমার সবচেয়ে বড় আনন্দে দিন এমন একটা কথা আমি এতদিন পরে বুঝলাম। কতটা কষ্ট দিয়েছি ভাবছি একটু বোঝার চেষ্টা করিনি।
রাইয়্যান আমার প্রতি প্রচণ্ড রেগে আছে । তার রাগ কিভাবে ভাঙাবো ভাবছি যেভাবে হোক আমার তো তার রাগ ভাঙ্গাতে হবে।
চলবে,❤️
চলবে