#হয়তো_তোরই_জন্য (The crazy lover)
#পার্ট_৪
#নিশাত_জাহান_নিশি
—-“প্রায় এক ঘন্টা হলো আকাশ বাড়ি থেকে বের হয়েছে। বাট এখনো ফিরে নি।”
জায়ান কিছুটা অবাক হয়ে বলল,,,,,,
—“আজব! এই রকম কথা তো আমি বাপের জন্মে শুনি নি। নিজের রিসিপশানে নিজেই অনুপস্থিত!”
জায়ানের কথাটা শেষ হওয়ার সাথে সাথেই কেউ একজন এসে জায়ানের কাঁধে হাত রেখে মৃদ্যু হেঁসে বলল,,,,,
—“তুই স্মরণ করলি আর আমি চলে এলাম। দেখেছিস আমাদের মধ্যে কতোটা টান?”
জায়ান লোকটির দিকে তাকিয়ে এক গাল হেসে বলল,,,,,
—-“হেই আকাশ! কোথায় ছিলি এতোক্ষন?”
আকাশ ওর নীল পান্জাবীটা ঝাড়তে ঝাড়তে ডান হাতে থাকা ফুটন্ত লাল গোলাপের তোড়াটা জয়ার হাতে ধরিয়ে দিয়ে নাক, মুখ কুঁচকে জায়ানকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
—-“আর বলিস না, কাল রাতে জয়া খুব বায়না করছিলো ওর জন্য এক তোড়া ফুটন্ত লাল গোলাপ এনে দিতে। তাই এখন নিয়ে এলাম। দুপুর টাইম বলে প্রায় দোকানই অফ ছিলো। যাও এক্টা দোকান ওপেন পেলাম তাও আবার ফুলের প্যাকিজিং করতে করতে অনেকটা সময় লাগিয়ে দিলো। তাই খানিক লেইট হলো ফিরতে।”
জায়ান কিছুটা কৌতুহল নিয়ে আকাশের পান্জাবির ছেড়া কলারটার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,
—-“গিয়েছিস ফুল আনতে অথচ মাঝখান থেকে ছিড়ে আসলি পান্জাবির কলার! কাহিনী কি?”
আকাশ মুখ ফুলিয়ে বলল,,,,,
—-“ফুলের দোকানে গিয়ে এই অর্নথটা হলো। দোকানে অসংখ্য পিলার। পিলারের গাঁয়ে আবার আলপিন ও সেট করা। ভুলবশত আলপিনের ঘাই খেয়ে পান্জাবীর কলারটা ছিঁড়ে গেলো।”
জায়ান মলিন হেসে কিছু বলতে যাবে তার আগেই জয়া মুখ ফুলিয়ে জায়ানকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
—-“এই….কি শুরু করেছিস তুই? আমার বরটা আসার পর থেকেই তুই জেরা করে যাচ্ছিস। টানা সাত বছর পর একে অপরের সাথে দেখা হলো কোথায় দুই বন্ধু মিলে কোলাকুলি করে হাল চাল জিগ্যেস করবি তা না উল্টে অসংখ্য প্রশ্নের ঝুড়ি নিয়ে বসেছিস!”
জায়ান মুচকি হেসে জয়ার নাক টেনে বলল,,,,,
—“ভালোই বর পাগলী হয়েছিস দেখছি! আচ্ছা যা প্রশ্ন বাদ। চল এবার ভেতরে যাই।”
জায়ান কথা গুলো বলেই জয়া আর আকাশের কাঁধে হাত রেখে স্টেইজের দিকে হাঁটা ধরল।
ঐদিকে,,,,,
তমারা প্রায় আকাশদের বাড়ির কাছাকাছি চলে এসেছে। গাড়ির জানালা দিয়ে আসা রোদের আলোয় তমা নাক, মুখ কুঁচকে রেখেছে। খুব অস্বস্তি লাগছে ওর। সারা মুখ জুড়ে ঘাম বেয়ে বেয়ে পড়ছে। রোদের তাপ+টেনশান এই উভয়ের করালগ্রাসে তমা আষ্টেপিষ্টে বন্দী। হাতে থাকা পার্সটার দিকে তমা বার বার তাকাচ্ছে। এই পার্সের ভিতরেই এক্টা ক্লু বন্দী আছে। চাইলেই হয়তো এই ক্লু টাকে কাজে লাগিয়ে অদৃশ্য শত্রু অব্দি পৌঁছে যাওয়া যায়। তমা পার্সটার দিকে তাকিয়ে মনে মনে বিড়বিড় করে বলছে,,,,,
—-“কিভাবে আমি এই গোপন শত্রুকে বের করব? আদৌ কি ক্লু টাকে আমি কাজে লাগাতে পারব? মনে হচ্ছে আমার একার পক্ষে সম্ভব না সেই অদৃশ্য মানুষটাকে খুঁজে বের করা। এই মুহূর্তে আমাকে হেল্প করার জন্য একজন স্ট্রং মানুষ দরকার। যে আমার কথা বিশ্বাস করে শেষ পর্যন্ত আমার পাশে থাকবে।”
তমা আবার কিছুটা আশা নিয়ে বিড়বিড় করে বলল,,,,,
—-“আচ্ছা জায়ান ভাইয়াকে ব্যাপারটা জানালে কেমন হয়? সাইকো টা তো আমার জন্য খুব পাগল। আশা করি আমার বলা সব কথা বিশ্বাস করবে। ভালোবাসলে তো বিশ্বাস ও করতে হয়। নিশ্চয়ই জায়ান ভাইয়া আমাকে বিশ্বাস করবে।”
তমা ফের কিছুটা চিন্তিত হয়ে বলল,,,,,
—“আমার মনে হচ্ছে জায়ান ভাইয়ার থেকে তাহাফ ভাইয়া বেস্ট হবে। তাহাফ ভাইয়া তো বিভিন্ন ছোট খাটো প্রবলেমে আমাকে হেল্প করে! আমার কি উচিত না? তাহাফ ভাইয়াকে এই ব্যাপারে জানানো? হয়তো তাহাফ ভাইয়া জায়ান ভাইয়ার থেকে আমাকে ভালো বুঝবে!”
এসব ভাবনা চিন্তার মাঝেই গাড়ি এসে থেমে গেলো আকাশদের বাড়ির সামনে। সবাই এক এক করে গাড়ি থেকে নেমে গেলো। তমা এখনো ভাবনা চিন্তায় ডুবে আছে। হুট করে কেউ একজন এসে গাড়ির জানালা দিয়ে হাত ঢুকিয়ে তমার কানের কাছে তুড়ি বাজালো। আচমকাই তমা ধরফরিয়ে উঠল। তমা চোখে এক রাশ কৌতুহল নিয়ে লোকটির দিকে তাকালো।
জায়ান মুচকি হেসে তমার দিকে তাকিয়ে আছে। তমা তৎক্ষনাত জায়ানের থেকে মুখ ফিরিয়ে রাগী কন্ঠে জায়ানকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
—-“কি হলো? এভাবে কানের কাছে তুড়ি বাজানোর মানে কি?”
জায়ান মৃদ্যু হেসে বলল,,,,,
—“আমার তমু পাখি গভীর ধ্যানে ছিলো তাই ওর ধ্যানটা ভাঙ্গানোর জন্য এটা এক্টা ছোট্ট টেকনিক ছিলো। সো তমু পাখি এবার কি গাড়ি থেকে নামা হবে?”
তমা মুখটা বাঁকা করে গাড়ির অন্যপাশের দরজা খুলে হম্বিতম্বি হয়ে গাড়ি থেকে নেমে গেইটের ভিতর ঢুকে গেলো। জায়ান পিছনে দু হাত গুজে তমার যাওয়ার পথে তাকিয়ে হাসছে আর বলছে,,,,,
—-“ইস…কতো রাগ আমার বউটার! এই রাগটা যে কবে ভালোবাসায় পরিণত হবে গড নউজ।”
কথাগুলো বলেই জায়ান তমার পিছু পিছু হাঁটা ধরল। স্টেইজের সামনেই দাঁড়িয়ে আছে জায়ানের আম্মু, আব্বু, জয়া, আকাশ। ওদের পাশেই দাঁড়িয়ে আছে তমার আব্বু, আম্মু আর তমাল। উনারা সবাই একজট হয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছে আর হাসাহাসি করছে।
এক্টু দূর থেকে তমাকে দেখেই জায়ানের আম্মু অর্থাৎ মিসেস ফারহানা দৌঁড়ে এসে তমাকে জড়িয়ে ধরে বলল,,,,
—-“কেমন আছো বৌমা? কত্তদিন পর আমার মিষ্টি বৌমাটাকে দেখলাম!”
কথাটা বলেই যেই না মিসেস ফারহানা তমাকে ছেড়ে আশেপাশে তাকাল অমনি উপস্থিত সবাই চোখ লাল করে উনার দিকে তাকাল। জায়ানের দৃষ্টি খুবই তীক্ষ্ণ। উপস্থিত সবার চেয়ে বেশি ভয়ংকর। মিসেস ফারহানা জায়ানের দিকে তাকিয়ে কয়েকটা শুকনো ঢোক গিলে যেই না তমার গালে হাত দিয়ে কিছু বলতে যাবে এর আগেই তমা আশ্চর্যিত দৃষ্টিতে মিসেস ফারহানার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,
—-“বৌমা মানে? এসব তুমি কি বলছ ফুফি? সস্পর্কে আমি তোমার ছোট ভাইয়ের মেয়ে। তুমি আমাকে নাম ধরে না ডেকে বৌমা ডাকলে কেনো? এর সঠিক মানে আমি বুঝলাম না!”
হুট করেই জায়ান তমার হাত টেনে তমাকে সবার থেকে কিছুটা দূরে সরিয়ে এনে তমার কানে ফিসফিসিয়ে বলল,,,,,,
—-“তমা তুই তো জানিস ই আম্মুর মাথায় এক্টু গন্ডগোল আছে। প্লিজ আম্মুর কথায় কান দিস না। মাঝে মাঝে ভুলভাল কথা আম্মুর মুখ দিয়ে বের হয়ে যায়।”
ওদের কথার মাঝখানেই আকাশ আর জয়া হাত ধরাধরি করে তমা আর জায়ানের মাঝখানে এসে উপস্থিত হলো। তমা আকাশকে দেখেই মুখটা কালো করে ফেলল। আকাশের হাতে জয়ার হাত দেখেই তমার চোখ জোড়া ভরে এলো। আকাশ ডেবিল স্মাইল দিয়ে তমার উপর থেকে নিচ পর্যন্ত তাকিয়ে তমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
—“বাঃহ শালী সাহেবা। আপনাকে তো আজ দারুন লাগছে। নিজেকে এই মুহূর্তে বেশ লাকী মনে হচ্ছে। শালী, বউ উভয়ই দেখতে ফাটাফাটি।”
জায়ান চোখ লাল করে আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশ জায়ানের দিকে তাকিয়ে এক চোখ মেরে বলল,,,,,
—“মজা করেছি শালা সাহেব। সিরিয়াসলি নিচ্ছিস কেনো? তমা সম্পর্কে আমার শালী হয় তাই এক্টু আধটু দুষ্টুমি তো করতেই পারি।”
জয়া কিছুটা সিরিয়াস হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,
—-“কে বলেছে ভাইয়া রাগ করেছে? ভাইয়া এক্টু ও রাগ করে নি। শালী হিসেবে মজা করতেই পারো। এখানে দোষের কী?”
জায়ান রাগী ফেইসটাকে হাসির আড়ালে লুকিয়ে যেই না তমার হাত ধরে আকাশকে কিছু বলতে যাবে এর আগেই জায়ানের ফোনটা ক্রিং ক্রিং করে বেজে উঠল। জায়ান তাড়াতাড়ি করে প্যান্টের পকেট থেকে ফোনটা বের করে ফোনের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
—-“আমি এক্টু আসছি। তোরা কথা বল। ইট’স ইমার্জেন্সি কল।”
কথাটা বলেই জায়ান দ্রুত পায়ে হেটে গেইটের বাইরে বের হয়ে গেলো। আকাশ তমাকে হিট লাগানোর জন্য ইচ্ছে করে জয়ার হাত টেনে খুব আহ্লাদ করে জয়ার হাতে চুমো খাচ্ছে। জয়া লজ্জায় মুখটা নিচু করে রেখেছে। ছোট বোনের সামনে কিছু বলতে ও পারছে না সইতে ও পারছে না। তমা চোখের সামনে এসব সহ্য করতে না পেরে কাঁদতে কাঁদতে দৌঁড়ে আকাশদের বাড়ির ভিতর ঢুকে গেলো।
আকাশ তমার যাওয়ার পথে তাকিয়ে ডেবিল স্মাইল দিয়ে মনে মনে বলল,,,,,,
—-“তমা এইবার তুই তৈরি হ। তোর বোনকে কাল নিজের করে নিয়েছি। আস্তে আস্তে তোকে ও আমার বেড পার্টনার বানিয়ে নিবো। বিভিন্ন ভাবে তোকে থ্রেড দিয়ে আমি তোকে বিছানায় টেনে আনব। তুই কিছু বলতে ও পারবি না, সইতে ও পারবি না। কারণ তোর অনেক গোপন ছবি আমার কাছে আছে। তোকে ব্ল্যাকমেইল করার জন্যই লুকিয়ে লুকিয়ে তোর গোপন ছবি খুব সর্তকতার সাথে আমি তুলে নিয়েছি। রিলেশন থাকাকালীন তো গায়ে ও টাচ করতে দিস নি। হাজার বাহানা করে ও তোর গায়ে টাচ করতে পারি নি। এখন না হয় শালী বানিয়ে তোর সব ইজ্জত হাতিয়ে নিবো। শুধু মাএ ঠিকঠাক সুযোগের অপেক্ষা। সুযোগ পেলেই তুই সহ তোর সম্মান লুফে নিবো।”
আকাশ কথা গুলো বলছে আর জয়ার হাতে হাত বুলাচ্ছে। জয়া লজ্জা পেয়ে দৌঁড়ে স্টেইজের সোফায় গিয়ে বসে পড়ল।
তমা দৌঁড়ে বাড়ির ভিতর ঢুকে সোজা সিঁড়ি বেয়ে দুতলায় উঠে গেলো। দুতলাটা পুরো ফাঁকা। বাড়ির সব গেস্টেরা নিচ তলা আর স্টেইজে ভীড় পাকিয়ে আছে। দুতলার স্টোর রুমে ঢুকে তমা দেয়ালের সাথে পিঠ ঠেকিয়ে ঠোঁট উল্টে অঝড়ে কাঁদছে আর এক্টু এক্টু করে নিচের দিকে খসে পড়ছে। ফুফিয়ে ফুফিয়ে কাঁদছে সে। নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারো সাথে দেখলে হয়তো এভাবেই ঢুকরে কাঁদার কথা। তা ও আবার এতোটা গভীর ভাবে। এতোটা অন্তরঙ্গতা দেখে তাড়াহুড়ো করে স্টোর রুমে ঢুকার সময় তমার পার্সটা স্টোর রুমের দরজার বাইরে পড়ে গেছে। সেদিকে তার হুশ নেই। সে আছে তার প্রাক্তনের বিলাসে মগ্ন।
হুট করেই স্টোর রুমের দরজাটা নিজে নিজে বন্ধ হয়ে গেলো। পুরো রুমটা অন্ধকারে ঢেকে গেলো। শুধু জানালার এক্টা পার্ট খোলা আছে। সাথে সাথে রুমটাতে ঐ ভয়ংকর স্যাডোটার উদয় হলো। জানালা দিয়ে আসা রোদের ঝাপসা আলোয় স্যাডোটা স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে।
তমা চোখে মুখে অসংখ্য ভয় নিয়ে এক নাগাড়ে শুকনো ঢোক গিলছে আর বসা থেকে উঠে দাঁড়ানোর প্রানপন চেষ্টা করছে। কিন্তু কিছুতেই লাভ হচ্ছে না। পায়ের উপর ভর দিয়ে দাঁড়ানোর শক্তি পাচ্ছে না সে। পুরো শরীর থরথর করে কাঁপছে। গঙ্গাজলের মতো ঘাম বইছে ওর শরীর থেকে। ঘামে ওর পড়নের শাড়িটা শরীরের সাথে এটাচ হয়ে গেছে।
তমা যতো উঠার চেষ্টা করছে স্যাডোটা ততোই কাছে আসছে। আদৌ এটা স্যাডো নাকি বাস্তবিক রূপ তমা ঠিক ঠাওর করতে পারছে না। স্টোর রুম অপরিত্যক্ত বলে যথেষ্ট আলোর ব্যবস্থা নেই। ঘুটঘুটে অন্ধকারচ্ছন্ন রুমটা। জানালার এক্টা পার্ট খোলা বলে স্যাডাটা দেখা যাচ্ছে না হয় তাও দেখা যেতো না।
তমা নিজেকে এই মুহূর্তে কন্ট্রোল করতে চাইছে। সে এই প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে চাইছে। তাই সে কিছুটা সাহস যুগিয়ে কান খাঁড়া করে শুনছে স্যাডোটার হাঁটার আওয়াজ। যদি সে নিছক স্যাডো হয়ে থাকে তাহলে নিশ্চয়ই হাঁটার আওয়াজ হবে না। যদি সে সত্যি সত্যি বাস্তব মানুষ হয়ে থাকে তবে নিশ্চয়ই লোকটার পায়ের আওয়াজ শোনা যাবে।
তমা কান খাঁড়া করে যেই না চোখ জোড়া বন্ধ করল অমনি কেউ এসে তমার গলা চেঁপে ধরল। তমা নিশ্চিত বুঝতে পেরেছে এই সেই স্যাডো ধারী বাস্তবিক রূপ। কারণ আরো একবার এই লোকটা অন্ধকার রুমে তমার গলা চেঁপে ধরেছিলো। হুট করে লিমা এসে যাওয়াতে লোকটা ব্যালকনি টপকে পালিয়ে গিয়েছিলো। লোকটার বাম হাতের তর্জনী আঙ্গুলে এক্টা রিং জাতীয় কিছু আছে। তমার হাতে বার বার রিং এর ধারালো অংশটা লাগছে।
তমা হাত, পা ছুড়াছুড়ি করছে ঐ লোকটার থেকে নিজেকে বাঁচানোর জন্য বাট বার বারই ব্যর্থ হচ্ছে। তমা যতোই ধস্তাধস্তি করছে নিজেকে ছাড়ানোর জন্য লোকটা ততোই তমার গলা চেঁপে ধরছে। তমা বেশ বুঝতে পারছে আজই ওর শেষ দিন। বেঁচে থাকার আশা ওয়ান পার্সেন্ট ও নেই। ঠোঁট ভেদ করে জিহ্বা বেরিয়ে এসেছে তমার। শরীর দিয়ে ঘামের বন্যা বইছে। বেঁচে থাকার আশা সে হারিয়ে ফেলেছে। তাই তমা ধস্তাধস্তি বন্ধ করে একেবারে শান্ত হয়ে গেছে।
অন্যদিকে,,,,,
জায়ান কথা বলা শেষ করে দৌঁড়ে বাড়ির ভিতর ঢুকে পুরো স্টেইজে চোখ বুলিয়ে তমাকে খুঁজতে লাগল। স্টেইজে আকাশ আর জয়া হাত ধরাধরি করে বসে আছে। রিলেটিভসরা ওদের চারিদিক থেকে ঘিরে রেখেছে। জায়ান দৌঁড়ে গিয়ে কিছুটা উওেজিত হয়ে আকাশ আর জয়াকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,
—-“তমা কোথায়? তমা তো এক্টু আগে তোদের সাথেই ছিলো।”
আকাশ আ করে কিছু বলতে যাবে তার আগেই জয়া বলে উঠল,,,,,
—-“তমাকে তো দেখলাম বাড়ির ভিতর ঢুকতে। দেখ বাড়ির ভিতর কোথায় হয়তো চুপটি করে বসে আছে। ওর তো আবার একা একা থাকার অভ্যাস।”
জায়ান আর এক মুহূর্ত দেরি না করে বাড়ির ভিতর ঢুকে গেলো। পুরো এক তলা জুড়ে গেস্ট গিজগিজ করছে। জায়ান হন্ন হয়ে পুরো এক তলা ঘুটে ফেলল বাট কোথাও তমার টিকি টি ও দেখা গেলো না। জায়ান এবার চোখে মুখে ভয় নিয়ে সিঁড়ি বেয়ে দুতলার দিকে অগ্রসর হলো। স্টোর রুমের কাছাকাছি যেতেই এক্টা বড় ফুলদানির সাথে ধাক্কা খেয়ে জায়ান কিছুটা কন্ট্রোললেস হয়ে নিচে পড়ে গেলো। ফুলদানিটা নিচে পড়েই সাথে সাথে ভেঙ্গে চৌচির হয়ে গেলো। ফুলদানি ভাঙ্গার আওয়াজটা স্টোর রুম অব্দি পৌঁছে গেলো। ব্ল্যাক হুডি পড়া লোকটা কিছুটা হকচকিয়ে তমাকে ছেড়ে হন্তদন্ত হয়ে বাতাসের বেগে রুম থেকে বের হয়ে সোজা তিন তলায় উঠে গেলো।
লোকটা তমাকে ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথেই তমা মাটিতে লুটিয়ে পড়ল। আস্তে আস্তে তমার হাত, পা শীতল হয়ে আসছে। ধীর গতিতে তমা চোখ বন্ধ করে ফেলল।
জায়ান নাক, মুখ কুচকে বসা থেকে উঠে প্যান্টের পিছনের অংশটা হাত দিয়ে ঝাঁড়তে ঝাঁড়তে সামনের দিকে হাঁটছে আর মৃদ্যু চিৎকার দিয়ে বলছে,,,,,
—-“তমামামামামা…..কোথায় তুই? যেখানেই থাকিস প্লিজ বের হয়ে আয়। তোকে নিয়ে এক জায়গায় যাবো। খুব আর্জেন্ট আছে। এই তমামামা…….”
জায়ান চিৎকার করে ডাকছে আর স্টোর রুমটা ক্রস করে সামনের দিকে অগ্রসর হচ্ছে। হুট করেই জায়ান থেমে গিয়ে স্টোর রুমের দরজার দিকে তাকালো। দরজার পাশেই তমার পার্স পড়ে আছে। পার্সটা দেখা মাএই জায়ান দৌঁড়ে স্টোর রুমের দরজার কাছে চলে গেলো।
জায়ান এক্টু নিচু হয়ে তমার পার্সটা হাতে নিয়ে স্টোর রুমের দরজা খুলে রুমটাতে ঢুকে পড়ল।
#চলবে,,,,,,,,,,