হয়তো তোরই জন্য পর্ব ৮

#হয়তো_তোরই_জন্য
#পার্ট_৭
#নিশাত_জাহান_নিশি

—“আরে ওটা পানের পিচকি না। রক্ত লেগেছে কলারে!”

—-“নিশ্চয়ই ছুরি দিয়ে কিছু কেটেছিস। এজ লাইক আপেল, মাল্টা, পেয়ারা অথবা কোনো বোবা প্রাণী?”

—-“তোর ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। এসবের কিছুই না!”

—-“তাহলে?”

—-“গেইটের কাছে গাড়ি পার্ক করে বাড়ির ভিতর ঢুকছিলাম। হুট করে ছাদ থেকে কিছু এক্টা শার্টের কলারে পড়ল। খেয়াল করে দেখলাম রক্ত। তাড়াতাড়ি চোখ তুলে উপরের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, বিড়াল জাতীয় কোনো এক্টা প্রাণীর গলাকাটা অংশ থেকে টপটপ করে নিচের দিকে রক্ত গড়িয়ে পড়েছে। তার থেকে রক্তের এক্টা ফোঁটা আমার শার্টে এসে পড়েছে।”

—-“বিড়াল তো তোর খুব অপছন্দের প্রাণী তাই না ভাইয়া?”

জাবেদ নাক, মুখ কুচকে বলল,,,,,,

—-“হুম জাস্ট অসহ্যকর। যে জিনিসটাকে ঘৃণা করি সে জিনিসটাই বার বার আমার সামনে এসে পড়ে। খুব বিরক্তিকর!”

জাবেদের শার্টের কলার ছেড়ে জায়ান মলিন হেসে বলল,,,,

—-“ওকে ভাইয়া। তুই আর আকাশ এখন আসতে পারিস।”

জাবেদ তমার দিকে একবার তাকিয়ে দ্রুত পায়ে হেটে রুম থেকে প্রস্থান নিলো। আকাশ ও ছুটল জাবেদের পিছু পিছু। জায়ান তমার পাশে বসে তমার হাত ধরে শান্ত কন্ঠে বলল,,,,,,,

—-“তমা….যতো বড় বিপদ ই আসুক না কেনো নিজেকে যথেষ্ট স্ট্রং রাখতে হবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ব্যাপারে ঘাবড়ে গেলে চলবে না। সামনে আমাদের এর চেয়ে অনেক বড় বড় বিপদ আছে। এর জন্য আমাদের আগাম প্রস্তুতি নিতে হবে। চোখ, কান খোলা রেখে সামনে কদম বাড়াতে হবে। আমাদের প্রতি কদমে কদমে বিপদ ঘুড়ছে। তাই বুঝে শুনে কদম বাড়াতে হবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জিনিস গুলোতে নজর রাখতে হবে। সামনে, পিছনে হাঁটতে হলে ও চারপাশে চোখ বুলিয়ে হাঁটতে হবে। মোট কথা, নিজের ছায়াকে ও বিশ্বাস করা যাবে না। তুই বুঝেছিস তো আমি কি বলতে চাইছি?”

তমা কিছুটা সিরিয়াস হয়ে জায়ানের চোখের দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,

—-“তোমার সম্পূর্ণ কথার মূল মোটিভটাই হলো, নিজের আপন জনদের ও বিশ্বাস করা যাবে না। এজ লাইক তোমার পরিবার, আমার পরিবার, আকাশ ভাইয়ার পরিবার এমনকি তাহাফ ভাইয়ার পরিবার। এম আই রাইট?”

—-“ইয়েস, ইউ আর এ্যাবচুলুইটলি রাইট! যেখানে নিজের ছাঁয়াকে ও বিশ্বাস করা যাবে না সেখানে নিজেদের পরিবার তো খুব দূরের ব্যাপার!”

—-“শাফিন ভাইয়াকে খুঁজতে যাবে না?”

—-“এই শরীর নিয়ে তুই পারবি তো মুভ করতে?”

—-“বেশ পারব। তোমার চিন্তা করতে হবে না। এক্টু আগে বললে না? নিজেকে যথেষ্ট স্ট্রং রাখতে হবে!”

জায়ান মৃদ্যু হেসে তমার গাল টেনে বলল,,,,

—-“দেটস লাইক এ গুড গার্ল। চল তাহলে।”

তমা শোয়া থেকে উঠে বেড থেকে নেমে সোজা দাঁড়িয়ে পড়ল। জায়ান তমার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে কিছু এক্টা ভেবে তমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,

—-“তমু….আমার মনে হয় তোর শাড়িটা চেইন্জ্ঞ করা উচিত। আমরা যে উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হচ্ছি, সে উদ্দেশ্যটা কিন্তু নিতান্ত বিপদ জনক। প্রতি পদে পদে সেখানে বিপদ আছে। বলা যায় না, হয়তো দৌঁড়, ঝাপ ও করা লাগতে পারে। তুই হয়তো শাড়ি পড়ে বেশিক্ষন দৌঁড়াতে পারবি না। তাছাড়া কমফোর্টের ও এক্টা ব্যাপার আছে। তাই বলছি শাড়িটা চেইন্জ্ঞ করে নে।”

তমা মুখটা কালো করে বলল,,,,,,

—-“এই বাড়িতে তো আমার কোনো ড্রেস নেই। তাহলে পড়ব টা কি?”

জায়ান মুচকি হেসে তমাকে ক্রস করে রুম থেকে বের হয়ে ড্রইং রুমে বসে থাকা জয়াকে উদ্দেশ্য করে জোরে চিৎকার দিয়ে বলল,,,,,

—-“জয়া…..তোর এক্টা ড্রেস দিয়ে যা তো। টপস বা সালোয়ার স্যুট।”

জয়া মাথা নাঁড়িয়ে হ্যাঁ জানালো। উপস্থিত সবাই কিছুটা অবাক হলো। তবে কেউ কিছু জানতে চায় নি। ওরা ভেবেছে অন্য কিছু। হাজবেন্ড আর ওয়াইফের মধ্যে যা হয় আর কি। জাবেদ খুব তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে জায়ানের দিকে তাকিয়ে আছে। জায়ান জাবেদের চোখে পাহাড় সমান ক্ষোভ দেখতে পারছে। যে ক্ষোভ জায়ানের মনকে নাঁড়িয়ে দিচ্ছে। নিজের বড় ভাইয়ের প্রতি সন্দেহের জাল বিছিয়ে দিচ্ছে। জায়ানের হিসেব অনুযায়ী তার বড় ভাই ই কার্লপ্রিট। তার বিভিন্ন কারণও আছে। একে তো জাবেদ তমাকে ভালোবাসে, দ্বিতীয়ত জাবেদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি। না চাইতে ও এই দৃষ্টি অনেক কিছু বুঝিয়ে দিচ্ছে। তবে পাকাপোক্ত প্রমাণ ছাড়া জায়ান জাবেদের মুখোমুখি হতে চায় না। ঠিকঠাক কিছু প্রমান লাগবে ওর। প্রমাণ জোগাড় করার জন্য তাকে স্ট্রং কিছু মোটিভ খুঁজতে হবে। সেই মোটিভ খোঁজার উদ্দেশ্যেই জায়ান তমাকে নিয়ে বের হচ্ছে।

প্রায় পাঁচ মিনিট পর জয়া হাতে করে এক্টা কালো সালোয়ার স্যুট নিয়ে জায়ানদের রুমে ঢুকল। জায়ান আর তমা পাশাপাশি বসে আছে। জয়াকে দেখে জায়ান মৃদ্যু হেসে জয়ার হাত থেকে সালোয়ার স্যুটটা নিয়ে বলল,,,,,,,

—-“নিচে যা। আমরা আসছি।”

জয়া মাথা নাঁড়িয়ে সম্মতি জানালো। জয়া রুম থেকে বের হওয়ার সাথে সাথেই জায়ান দরজা আটকে তমার হাতে সালোয়ার স্যুটটা ধরিয়ে দিয়ে বলল,,,,,,

—-“তাড়াতাড়ি চেইন্জ্ঞ করে আয়। সন্ধ্যা হয়ে যাচ্ছে। সময় যতো গড়াবে ততোই আমাদের ঝুঁকি বাড়বে।”

তমা জায়ানের হাত থেকে সালোয়ার স্যুটটা নিয়ে সোজা ওয়াশরুমে ঢুকে গেলো। জায়ান জানালার গ্রীল ধরে দাঁড়িয়ে আছে। মূলত সে মনে মনে কিছু হিসেব কষছে। হিসেব গুলো হলো,,,,,,

—-“প্রথমত…. তমা আকাশকে নাম ধরে কেনো ডাকে? এক হিসেবে আকাশ তমার অনেক বড়, অন্য হিসেবে আকাশ তমার বড় বোনের হাজবেন্ড। তমার নিশ্চয়ই আকাশকে ভাইয়া অথবা জিজু বলে ডাকা উচিত। কিন্তু না, তমা ভাইয়া বা জিজু কিছুই আকাশকে ডাকছে না। উল্টে নাম ধরে ডাকছে। নিশ্চয়ই এর কোনো স্পেসেফিক কারণ আছে। দ্বিতীয়ত, আকাশের দিকে তমার অদ্ভুত চাহনী। এই চাহনীতে অনেক কিছু লুকিয়ে আছে। তমা অনেক কিছুই আমার কাছে গোপন করছে। যার থেকে হয়তো অনেক ক্লু পাওয়া যাবে। তমার থেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে কথা বের করতে হবে। কারণ, ছোট খাটো ব্যাপার গুলোতে অনেক ক্লু লুকিয়ে থাকে। আশে পাশের কাউকেই এখন বিশ্বাস করা যাবে না। তমার সাথে জড়িত নিতান্ত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বিষয় গুলো ও খুব নিঁখুতভাবে বিশ্লেষণ করতে হবে!”

এসব ভাবনা চিন্তার মাঝেই তমা ওয়াশরুমের দরজা খুলে বের হয়ে এলো। জায়ান পিছু ফিরে তমার দিকে তাকালো। তমা আয়নার দিকে তাকিয়ে চুলটা হাত খোঁপা করে নিলো। জায়ান এক দৃষ্টিতে তমার প্রতিচ্ছবির দিকে তাকিয়ে আছে। তমা কিছুটা বিরক্ত নিয়ে রুমের দরজার দিকে অগ্রসর হচ্ছে আর জায়ানকে উদ্দেশ্য করে বলছে,,,,

—-“চলো। অযথা সময় নষ্ট করা ঠিক হবে না।”

জায়ান ঘোর কাটিয়ে তমার পিছু পিছু রুম থেকে বের হয়ে গেলো। দুজনেই নিচ তলায় নেমে উপস্থিত সবার দিকে তাকালো। জায়ান মলিন হেসে সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,

—-“আমরা এক্টু বের হচ্ছি। ফিরতে হয়তো অনেক রাত হবে। অথবা না ও ফিরতে পারি। তোমরা জয়াকে নিয়ে বাড়ি চলে যাও। সাথে তো আকাশ আছেই।”

হুট করে জাবেদ চোখ লাল করে জায়ানের দিকে তেঁড়ে এসে বলল,,,,,,

—-“রাত হবে মানে? কোথায় যাচ্ছিস তোরা?”

জায়ান এক গাল হেসে জাবেদের এলোমেলো চুলটা সেট করে বলল,,,,,

—“কুল ভাইয়া কুল। এতো হাইপার হচ্ছিস কেনো?”

—“এতো বণিতা না করে কোথায় যাচ্ছিস ডিরেক্টলি বল!”

—-“স্যরি রে, বলা যাবে না। তবে এটা বলতে পারি, সিক্রেট এক্টা মিশনে যাচ্ছি। যা কাউকে বলা যায় না।”

কথাগুলো বলেই জায়ান তমার হাত ধরে বাড়ি থেকে বের হয়ে গেলো। জাবেদ তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে জায়ান আর তমার যাওয়ার পথে তাকিয়ে আছে। গেইটের বাইরে বের হয়েই জায়ান তমাকে নিয়ে ওর পার্ক করা গাড়িটায় উঠে গেলো। তমার দিকে একবার তাকিয়ে জায়ান গাড়ি স্টার্ট করে দিলো।

জায়ানের আব্বু, আম্মু আর দেরি না করে জয়া আর আকাশকে নিয়ে বাড়ির দিকে রওনা দিলো। ওদের সাথে জাবেদ ও আছে। তমাল আর ওর আম্মু, আব্বু নিজেদের বাড়ির দিকে রওনা দিলো। এর মাঝেই মাগরিবের আযান পড়ে গেলো। রাত হওয়ার আগেই সবাই চাইছে নিজেদের গন্তব্যে পৌঁছাতে। এক্টু আগের ঘটনাটার জন্য আকাশ বেশ শকড। কেমন থম মেরে গেছে সে। তেমন কথা বার্তা বলছে না। বার বার অন্য মনস্ক হয়ে যাচ্ছে। জয়া ব্যাপারটা নোটিশ করে আকাশকে কাঁধে হাত রেখে বলল,,,,,

—-“আকাশ তুমি কি কোনো কারণে চিন্তিত বা আপসেট?”

জয়ার কথায় আকাশ কিছুটা হকচকিয়ে গেলো। সে আমতা আমতা করে জয়াকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,

—-“আরে না না। আপসেট হতে যাবো কেনো? এক্টু ঘাবড়ে গেছি। হুট হাট করে এমন কিছু হয়ে যাবে বুঝতে পারি নি।”

এর মাঝেই আকাশের নম্বরে এক্টা কল এলো। আকাশ স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে চোখ দুটো বড় বড় করে সাথে সাথেই কলটা কেটে ফোনটা পকেটে পুড়িয়ে নিলো। আকাশকে বেশ চিন্তিত লাগছে। কলটা আসার পর থেকেই ওর শরীর থেকে অঝড়ে ঘাম ঝড়ছে। কিছুতেই এই ঘাম শেষ ফুরাবার নয়।

জাবেদ চোখ, মুখ লাল করে ড্রাইভ করছে। কোনো দিকেই যেনো তার খেয়াল নেই। কিছুটা নেশাখোরদের মতো ড্রাইভিং করছে সে। দিক বেদিক ভুলে। এমন আলু থালু ড্রাইভিং দেখে জাবেদের আম্মু আর আব্বু জাবেদকে উদ্দেশ্য করে কিছুটা উদ্বিগ্ন হয়ে বলল,,,,,,,

—-“কি হয়েছে জাবেদ? গাড়ি নিয়ে এভাবে ঘোড়ার মতো ছুটছিস কেনো?”

জাবেদ দাঁত কিড়মিড় করে বলল,,,,,

—“চিন্তা করো না তোমরা কেউ মরবে না। মরেছি তো আমি। সাত বছর আগেই তোমরা আমাকে মেরে দিয়েছ। এখন শুধু জীবন্ত লাশ হয়ে বেঁচে আছি।”

জাবেদের আব্বু, আম্মু থম মেরে গেছে জাবেদের কথায়। ওরা ঠিক বুঝতে পেরেছে জাবেদ কেনো এমন করছে। জায়ান আর তমাকে একসাথে দেখে ওর সহ্য হচ্ছে না। তাই ক্ষোভে ফেঁটে যাচ্ছে।

অন্যদিকে,,,,,,,,

জায়ান খুব স্পিডে ড্রাইভ করছে। আর কিছুক্ষন পর পর কারো নাম্বারে কল করছে। বাট ঐপাশ থেকে কল তুলছে না। প্রায় দশ থেকে বারোটা কল দেওয়ার পর ঐপাশ থেকে কেউ কলটা তুলে মেয়েলি কন্ঠে বলে উঠল,,,,,,,

—-“অনেক কষ্টে শাফিনের এড্রেস কালেক্ট করেছি। তুই জানিস এর জন্য আমাকে কতো কাঠ, খড় পোড়াতে হয়েছে? সাত বছর আগের ক্রাইম ফাইল চেইক করতে হয়েছে।”

—-“থ্যাংকস সুইটু। মেনি মেনি থ্যাংকস। তুই আমার অনেক বড় এক্টা উপকার করলি। প্লিজ এবার শাফিনের এড্রেসটা বল।”

—-“ম্যাসেজ করে দিচ্ছি। তোর জন্য সুবিধা হবে!”

—“ওকে। বাট কুইকলি।”

—-“ওকে, রাখছি।”

জায়ান কান থেকে ফোনটা সরিয়ে তমার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বলল,,,,

—-“এখনি এক্টা ম্যাসেজ আসবে। ম্যাসেজটা চেইক করে আমাকে তাড়াতাড়ি বল।”

জায়ানের কথা শেষ হতে না হতেই ফোনে টুং টাং ম্যাসেজ চলে এলো। তমা তাড়াতাড়ি ফোনের ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে জায়ানকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,,,,,

—-“পাহাড়তলী গ্রাম, ২৫ নম্বর ওয়ার্ড, হোল্ডিং নংঃ ৩০২.”

জায়ান আর দেরি না করে যেই না পাহাড়তলী গ্রামের উদ্দেশ্যে গাড়ি ঘুড়াতে যাবে এর আগেই এক্টা মিনি মাইক্রো এসে জায়ানের গাড়িকে ধাক্কা মেরে রাস্তার ফুটপাতে ফেলে দিলো। গাড়ির স্টিয়ারিং এর সাথে ধাক্কা খেয়ে জায়ানের কপালটা হালকা কেটে গেছে। গাড়ির দরজার সাথ এডজাস্ট হয়ে তমার হাতের কনুইয়ের দিকটা থেতলে গেছে। ভাগ্য ভালো ছিলো বলে গাড়িটা উল্টে পড়ে নি। জায়ান কপালে হাত দিয়ে তমাকে টাইট করে জড়িয়ে ধরে উদ্বিগ্ন কন্ঠে বলল,,,,,

—-“তুই ঠিক আছিস তো তমা? কোথাও লাগে নি তো?”

তমা কপাল কুচকে মিনমিন করে বলল,,,,,,

—-“আমি ঠিক আছি জায়ান ভাইয়া। কোথাও তেমন এক্টা লাগে নি।”

জায়ান কিছুটা শান্ত হয়ে চোখ, মুখ লাল করে গাড়ি থেকে নেমে চলন্ত গাড়িটার দিকে তাকিয়ে জোরে চিৎকার দিয়ে বলল,,,,,,,,

—“মাদার** হাতের কাছে পেয়ে নেই তোক। পিচ পিচ করে কেটে কুকুরকে খাওয়াবো। জাস্ট কয়েকটা দিন সময় দে আমায়। তুই অব্দি পৌঁছাতে বেশি সময় লাগবে না।”

এর মাঝেই জায়ানের ফোনে আরেকটা ম্যাসেজ আসে। তমা ফোনের স্ক্রীনের দিকে তাকিয়ে দেখল আননোন নাম্বার থেকে ম্যাসেজ এসেছে। ম্যাসেজ অপশনে গিয়ে তমা নাম্বারটাতে প্রেস করে দেখল থ্রেড জাতীয় এক্টা ম্যাসেজ এসেছে। ম্যাসোজটাতে লেখা,,,,,

—-“শাফিন অব্দি পৌঁছাতে পারবি না তুই। এর আগেই শাফিন গুম হয়ে যাবে।”

ম্যাসেজটা পড়ার সাথে সাথেই তমা গাড়ি থেকে বের হয়ে জায়ানের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে উওেজিত কন্ঠে বলে উঠল,,,,,,

—-“জায়ান ভাইয়া….ঐ স্যাডোটা ম্যাসেজ করেছে। আমরা নাকি শাফিন অব্দি পৌঁছাতে পৌঁছাতে স্যাডোটা শাফিনকে গুম করে ফেলবে।”

—-“হোয়াটটটট?”

জায়ান তাড়াতাড়ি ফোনটা হাতে নিয়ে দেখল আসলেই কেউ শাফিনকে মারার হুমকি দিয়েছে। তার মানে শাফিনের লাইফ রিস্কে আছে। হয়তো শাফিন স্যাডোটার ব্যাপারে কিছু জানে তাই লোকটা শাফিনকে মারার হুমকি দিচ্ছে। জায়না কিছুটা চিন্তিত হয়ে তমার দিকে তাকিয়ে বলল,,,,,,,

—-“লোকটা কিভাবে জানল আমরা শাফিনের কাছে যাচ্ছি? এই ব্যাপারে তো আমরা কাউকে কিছু বলি নি!”

তমা মাথায় হাত দিয়ে কপাল কুচকে বলল,,,,,,

—“মাথায় আসছে না।”

জায়ান হুট করে গাড়িতে এক্টা ঘুষি মেরে চোখ মুখ লাল করে বলল,,,,,,,

—“ঐ কুওার বা** নিশ্চয়ই আমার ফোনটা ট্রেক করেছে।”

#চলবে,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here