#চল তবে শূন্যতা ধরে হাঁটি
Zannatul ferdaous zannat
part:11
সকালে হাঁটতে বের হতেই বিহনের সাথে দেখা হয়ে গেলো অন্তির। বেশ কয়েক মাস পর এই লোকটাকে দেখলো। সারাদিন কোথায় থাকে কে জানে? তবে আজ অন্তি কিছু পরিবর্তন দেখলো।
আগের মতো এলোমেলো চুল নেই।
চোখ গুলোও বেশ কোমল দেখাচ্ছে। এতো সকালে কোথা থেকে বাসায় আসছে লোকটা? ভাবনাটা মাথায় আসতেই তড়িৎ গতিতে ঝেড়ে ফেলে রুশ্যকে নিয়ে হাঁটতে চলে গেলো। বিহনকে দেখে যেনো মেয়েটার বিন্দু মাত্র ব্রুক্ষেপ নাই।
আজ মঙ্গলবার বার ক্লাস না থাকলেও অন্তি আর প্রিয়া গেলো এক বান্ধবির জন্মদিনের অনুষ্ঠানে। অন্তির এসব অনুষ্ঠান যদিও ভালো লাগে না। আর বাসা থেকেও এলাও করে না। তবে কাল প্রথম সেমিস্টারের পরীক্ষা শেষ হয়ে যাওয়ায় আর ক্লাস অফ থাকায় আজ অন্তির মা নিজে আগ্রহ করে প্রিয়ার সাথে পাঠালেন। ইউনিভার্সিটির নতুন বান্ধবী।
সুসম্পর্ক বজায় রাখাটা যেমন জরুরি তেমনি অন্তি আজকাল অনেক চটপটে আর স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। ওর এখন আর ঘরকুনো হয়ে থাকাটা শোভা পায় না। আর পরীক্ষার কয়েকদিন এতো এতো পড়ালেখা করেছে যে তাই মিসেস হাসনাত নিজেই চাচ্ছিলেন মেয়েটা একটু এদিক সেদিক ঘুরে আসুক।
দুপুরের টগবগে রোদটা হালকা তাপ কমিয়ে এনেছে সবে। অন্তি,প্রিয়া,মিহি,মাধুর্য সবাই মিলে বেশ আড্ডা দিচ্ছে। এরা চারজন এখন খুব ভালো বান্ধবী হয়ে উঠেছে। আজ মাধুর্যরই জন্মদিন। অন্তি ভেবেছিলো হয়তো আরও অনেকে আসবে। তবে যখন দেখলো ওরা চারজন মাত্র। অন্তির বেশ ভালো লাগছে।
চকলেট কেকটার উপর সুন্দর করে লেখা
“শুভ জন্মদিন আমার আদরের মাধুর্য।”
আর বক্স এর উপর ছোট্ট একটা চিরকুট দেয়া
“মাধুর্য তুমি আমার জীবনের সবথেকে সুন্দর উপহার। আমি চাই তুমি তোমার জীবনের একটি করে বছর পেড়িয়ে যাওয়ার আগেই পরবর্তী বছরের জন্য এমন কিছু করে যাও যা তোমাকে নতুন বছর জুড়ে খুশিতে ঘিরে রাখে। সবার জন্য কিছু করো। অথবা পথ শিশুদের জন্য এমনি কি চাইলে পথ দৌড়ে হাপিয়ে যাওয়া একটা কুকুরকে পানি ও খাওয়াতে পারো। এটা খুব আনন্দের যে তুমি অন্য কারো মুখে হাসি ফোঁটালে।আর আমি তোমার মুখে সেই আত্নতৃপ্তির হাসি দেখতে চাই।”
বিষয়টা অন্তির খুব ভালে লাগলো। কতোটা আদর করে লেখা কথাটা। কেকটা যেহেতু কেউ একজন মাধুর্যের জন্মদিনে উপহার দিয়েছে।
আর কথাটা এতো সুন্দর করে লেখা। লোকটা নিশ্চয় অনেক কাছের কেউ হবে। ভাবতেই অন্তির আগ্রহ বেড়ে গেলো।
শেষমেশ প্রিয়া আর মিহির খোঁচা খুঁচি তে মাধুর্য বললো -কেকটা তার বড় ভাই উপহার দিয়েছে।
এতোদিন জাপান ছিলো। তিনদিন আগে দেশে এসেছে।
প্রিয়া আর মিহি না দেখেই যেনো মাধুর্যের ভাইয়ের উপর হোঁচট খেলো। এতো পড়ালেখা জানা ছেলে কিনা নিজের বোনকে এভাবে কতো সুন্দর সুন্দর কথায় উইশ করছে। প্রিয়ার তো জানাই ছিলোনা যারা বই নিয়ে পড়ে থাকে তারা বই এর বাইরের জগৎ নিয়েও ভাবে।
মিহি খুব বেশি আগ্রহ দেখাতেই মাধুর্য বলতে শুরু করলো তার ভাই সম্পর্কে, “অরুন আহসান।” পাগলাটে স্বভাবের একটা ছেলে। ব্লা ব্লা ব্লা।
হঠাৎই অন্তির চোখ বিশেষ কারো উপর আটকে গেছে। ওদের কারো কথা যেনো এখন আর কানে ঢুকছে না। সৃজনী হায়াত। মানে সৃজা তার দুই টেবিল সামনেই একটা অপরিচিত ছেলের সাথে বসে আছে। খুব ঝগড়া হচ্ছে দেখেই বোঝাযাচ্ছে। সৃজা খুব অস্থির হয়ে হাত মুখ নাড়ছে।
অন্তি চশমাটা খুলে কিছুক্ষন বসে থেকে আবার চশমা পড়লো।
সৃজা মেয়েটাকে অন্তির খুব ভালো লাগে। সরু নাকের ডগায় একটা তিল আছে মেয়েটার। নৌকার মতো বাকানো ঠোঁট। চোখ গুলো টানা টানা না হলেও কাজল পড়লে বেশ লাগে। অন্তি আর কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকলো। তারপর চোখ নামিয়ে প্রিয়ার কাছ থেকে ফোনটা চেয়ে নিয়ে উঠে একটু দূরে যেয়ে আরশানকে কল করলো। যেহেতু আরশানের কথা এখন প্রিয়া ছাড়া আপাদত আর কেউ জানে না ওর বান্ধবিদের মাঝে।
সেদিন অন্তি আরশানদের বাসা থেকে আসার পর হাতে গোনা কয়েক দিন অন্তির সাথে ওর দেখা হয়েছে। তা অবশ্য অন্তির বেঁধে দেয়া সময়েই। রোজ রোজ না হলেও বুধবার করে ক্লাস শেষে অন্তির সাথে একই বাসে যাতায়াত। এটুকুই।
আরশান খেয়াল করছে মেয়েটা কিছুই বলছে না বরং তখন থেকে হাত মোচড়ামুচড়ি করে যাচ্ছে।
চেহারাতেও খুব চিন্তার ভাজ। আরশান নিজেই বললো
-হঠাৎ ডাকলে যে।
অন্তি কোনো জবাবই দিলো না।
আরশানেরও আজ মনটা ভালো নেই। ভেবেছিলো ফাইনাল সেমিস্টারে সিজিপিএ ৪ আসবে। কিন্তু ৩.৯০।এর পর থেকে ছেলেটা পুরোই আশাহত। আর আজ একটা চাকরির ইন্টারভিউ ছিলো। কিন্তু সেখানে যেয়েই বুঝলো আগে থেকেই চাকরির পদ টা কারো জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আরশানের নিজের জন্য সে মুহূর্তে খারাপ লাগে নি। ওর এখন চাকরি না হলেও পরিবারের সাপোর্ট আছে। কিন্তু সেখানে আরও অনেকে ছিলো যাদের মেধা আছে চাকরিটাও দরকার। কিন্তু বর্তমান ব্যাবস্থা ওদের ভাগ্যের বিপক্ষে। সেই রাগটা অবশ্য বাড়ির সবার সাথে ঝেড়ে ফেলেছে। কিন্তু অন্তির এই চুপকরে হেয়ালি ভাব করাটা আরশানকে আরও বিরক্ত করছে।
অন্তিকে চুপ থাকতে দেখে আরশান আবার বললো
-তুমি নিজেই কিন্তু শর্ত জুড়ে দিয়েছিলে অন্তি। হুটহাট দেখা করা যাবে না। দুজনের জন্যই ক্ষতিকর। এই যে একই শহরে আছি দুজন। চাইলেই আমি তোমার সাথে দেখা করতে পারি। সকাল বিকাল সন্ধ্যা তোমার চলার পথে পাশাপাশি হাঁটতে পারি। কিন্তু আমি নিজেও ভেবে দেখেছি এসব করার বয়সটা আর নেই। তোমাকে পেতে গেলে আমাকে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে।
অন্তির কাছে আজ আরশানের গলাটা খুব কাঠ কাঠ লাগছে। আবার মনে মনে খুব খরাপও লাগছে। সৃজার কথাটা কিভাবে বলবে। আর বললেও আরশান কিভাবে নেবে কথাটা। তাছাড়া অন্তি এটাও জানে না ওই ছেলের সাথে সৃজার কি সম্পর্ক।
অন্তির যেনো নিজের উপরই নিজের রাগ উঠে যাচ্ছে। কেনো যে সব কিছু হুট হাট করতে যায়। কিছু করার আগে ঠিক মতে ভাবেও না। এখন কিভাবে কি বলবে ভাবতেও নিজেকে ছোটলোক মনে হচ্ছে।
আরশানের এবার যেনো আরও রাগ উঠে যাচ্ছে। তবুও নিজেকে শান্ত রেখে বললো
-অন্তি সিরিয়াস কিছু? তুমি কি কিছু নিয়ে ভাবছো?
অন্তি এবার কপাকাপা গলায় জবাব দিলো
-সৃজা আপু। উনাকে দেখেছি একটু আগে।
-হ্যা। তো কি হয়েছে? ও কি কিছু বলেছে?
-না।
-তাহলে?
-আসলে উনার সাথে একটা ছেলে বসে ছিলো।
তারপর অন্তি সব বললো। তখন ওদের দেখে মনে হয়েছিলো ওরা ঝগড়া করছে। তাই অন্তি সে বিষয়টাও বললো।
আরশান বেশ কিছুক্ষন চুপ থেকে অন্তির হাতদুটো নিজের হাতের মুঠোয় নিলো। আরশান এতোদিন চায়নি সৃজাকে নিয়ে কোনো প্রশ্ন উঠুক। কিন্তু এখন সে এই প্রশ্নেরই মুখোমুখি। অন্তি মাথা নিচু করে বসে থাকলেও আরশান সামনের দিকে তাকিয়ে শান্ত লেকটাকে দেখছে। বিকালের মৃদু বাতাস। লেকের পাড়ের মিষ্টি পরিবেশটাও বিধঘুটে লাগছে।
আরশান বলতে শুরু করলো
-অন্তি যা বলবো, যা বোঝাতে চাইবো একটু মন দিয়ে শুনো।
-হুম।
-সৃজা আমার কাজিন। একদম কাছের না আবার দূরেরও না। ও আমার থেকে তিন সাড়ে তিন বছরের ছোট।
অন্তি আরশানের মুখের দিকে তাকালো। খুব অসহায় লাগছে চেহারাটা। কিন্তু এসব কেনো অন্তিকে বলছে কারন টা অন্তি বুঝলো না।
-সৃজার যখন পাঁচ কি ছয় বছর তখন হঠাৎ ওর মা বুঝলো ওর বাবা পর নারীতে আসক্ত।
স্বভাবতই সৃজার মা তা মানতে পারলেন না। দিনকে দিন বিষয়টা খারাপ হচ্ছিলো। উনাদের সেপারেশন হয়ে গেলো। আন্টিও একটু একটু করে কেমন জানি হয়ে গেলেন। যদিও এসব কিছুই আমার মনে নেই। মার মুখে শুনেছি।
-তারপর? (অন্তির আগ্রহটা বেড়ে গেলো এবার)
-তারপর ডক্টর নিশ্চিত করলেন যে আন্টি টোটালি মানসিক রোগী। সৃজা ক্লাস ফাইভ এ উঠলো। তখন অবশ্য ওরা ওর নানু বাড়িতেই থাকতে শুরু করেছে। হঠাৎ একদিন আন্টি আত্নহত্যা করে ফেললেন।
অন্তি নির্বাক হয়ে কথা গুলো শুনছে।
-মেয়েটার জীবনে মজা করে হেসে খেলে কাটানোর সময়টাই একদম বাজে ভাবে কাটলো। সৃজার কপালে একটা কাটা দাগ আছে। দাগটা সবার চোখে বাজলেও আমার কেনো যেনো খুব ভালো লাগে দাগটা। কেননা এটা ওর মার দেয়া একটা চিহ্ন। আন্টি বেঁচে থাকতে সৃজাকে কখনও কাছে ঘেসতে দিতেন না। হয়তো আন্টি না বুঝেই আঘাত করে দাগ টা করেছিলেন।
অদ্ভুদ বিষয় কি জানো তার বাবা আর কোনোদিন ওর খোঁজ নেয় নি। কতোটা অমানুষ। নিজের সন্তানের কথাও ভাবলেন না কোনোদিন। বেঁচে আছে নাকি নেই।
এই সবকিছুর পরও মেয়েটা সুখ দেখলো তার মা মারা যাওয়ার পর। একটা সস্থির জীবন। পড়ালেখায় খুব ভালো করতে লাগলো। আমার পরিবারের সাথেও ওর মামাদের সম্পর্ক অনেক ভালো। সেই হিসেবে ওকে ছোট থেকেই আমি চিনি। কখনও ওর জীবনের গল্প শুনে আমার দয়া হয়নি। তবে কেমন জানি অনেক মায়া হতো। এখনো হয়।
অন্তির খুব কান্না পাচ্ছে। দু এক ফুটা চোখ থেকে গড়িয়েও পড়েছে। আরশানের হাতের মুঠোটা আরও শক্ত করে অন্তি ধরলো। সৃজাকে দেখে অন্তি কখনও বুঝেই নি মেয়েটা এতো কষ্ট পেয়ে বড় হয়েছে।
আরশান কিছুক্ষন থেমে আবার বললো
-অন্তি তুমি হয়তো ভাবছো এতো সব বলছি কেনো?আমি আমার জীবনে সৃজার অবস্থানটা তোমার কাছে ক্লিয়ার করতে চাইছি তাই এসব বলছি।
সব কিছু ঠিকঠাক চলছিলো। ওই মেয়ের মাঝে আমি কোনেদিনও আমার জন্য বন্ধুত্ব ছাড়া আর কোনো কিছু দেখি নি। তুমি চলে গেলে। সৃজাও বড় হলো। আমার পরিবার আর ওর পরিবার একটা সহজ সমাধান করলো যে ওকে আমি বিয়ে করবো। ওর জন্য একটা নিরাপদ ভবিষ্যৎ যেমন ওর মামারা খুঁজছিলো তেমনি আমার পরিবার আমাকে নতুন করে গড়ার জন্য এমন একটা মিষ্টি মেয়েকে হাতছাড়া করতে চাইলো না। বিষটা এমন হলো যে তোমার রিপ্লেসমেন্ট হিসেবে ওকে আমার সাথে জড়িয়ে দিলো।
এই সব কিছুও যখন দুজনে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছিলাম সে সময় সৃজার জীবনে “আহির” আসলো। কিভাবে কিভাবে যেনো সৃজা ওকে ভালোবেসে ফেললো। তবে তা দূর থেকেই,একপাক্ষিক।
সবথেকে বড় টুইস্ট কি জানো?ওই ছেলে কথাও বলতে পারে না কানেও শুনে না।
অন্তি সমস্ত শরীরটা ঝাকুনি দিয়ে উঠলো।
আরশান আবার বললো
-সৃজার জীবনে আবার দোটানা শুরু হলো। আমাকে অথবা আহিরকে বেছে নিতে পারছিলো না। একবার পরিবারের চাপে আমার দিকে ঝুকে তো মনের চাপে আহিরের দিকে। আর সৃজা যেদিন থেকে বুঝতে পারলো আহিরও ওকে ভালোবাসে সেদিন থেকে ওর জীবনটা কেমন যেনো হয়ে গেলো।
অন্তি আমি ওকে অনেক হাসতে দেখেছি কিন্তু প্রাণ ছাড়া। ও নিজে জানায় নি আমাকে কিছু। কিন্তু আমি যে জানি ও কেমন করে যেনো বুঝে গেলো। এর পর থেকে আমাদের মাঝে যেনো অঘোষিত চুক্তি হয়ে গেলো।
ও সবাইকে এটা বোঝাতে শুরু করলো ও আমাকে চায়।
বিশেষ করে আমার পরিবারের সামনে। আমাকেও বোঝাতে চেষ্টা করে গেলো। তোমার মতও হওয়ার চেষ্টা করলো বেশ কিছুদিন। আর আমার সেসময় দায়িত্ব হলো ওকে ইগনোর করা। কেননা এখানে সবথেকে মজার বিষয় হলো আমি রাজি না হওয়া পর্যন্ত কিচ্ছু হবে না।যদিও আমি ওকে কখনও বন্ধুর বেশি ভাবি নি।
আমি সবসময় চেয়েছি ও এই দোটানা থেকে বেড়িয়ে আসুক। যেকোনো একটা বেছে নিক।
আহির ওকে ভালোবাসে। কিন্তু সামনের জীবনটা তো অনিশ্চিত। যদিও আমার কাছে মনে হয়না। আহির পড়ালেখা জানা ছেলে। ওর এই অক্ষমতা কিন্তু ওর জীবনে প্রতিবন্ধকতা হয় নি।
আহিরের পরিবার অনেক নাম করা। তবুও সৃজাকে এমন ছেলের হাতে ওর মামারা দিবে না। আর তুমি আমার জীবনে আবার যখন ফিরলে আমি চাই ও ওর জীবনটা গুছিয়ে নেক। আমার জীবনে ওর কোনো অস্তিত্ব রাখতে চাইনা আর।
অন্তি তোমার কাছে কি সৃজাকে খুব এলোমেলো লাগছে?
প্রশ্নটায় অন্তি হ্যা না কিছুই বললো না। সত্যি সৃজাকে ওর কেমন যেনো লাগছে। মেয়েটা দুই নৌকায় পা রাখছে না তো? নাকি সৃজার জীবনের গল্পটাই এমন।সব কিছু পেতে পেতেও হাড়িয়ে ফেলে।
হঠাৎ নিজেকেও এসবের মাঝে কানেক্ট করছে অন্তি। আচ্ছা অন্তি না ফিরলে কি সৃজার জীবনটা আরশান গুছিয়ে দিতো? হয়তো বা!
আরশান অন্তির মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বললো
-ধরো এর মাঝে তোমার জীবনে অন্য ছেলে এসেছে অথবা ধরো তোমার বিয়ে হয়ে গেছে এই কয়েক বছরের মাঝে। তুমি কি আমায় ভুলে যেতে? একদমই ভুলতে না অন্তি। কিন্তু মনেও রাখতে না। তোমার মনের কোথাও আমি থাকতাম তবে সেটা দেখার সুযোগ তোমার হতো না। কেননা তোমার তখন নতুন কাউকে নিয়ে না চাইলেও ভাবতে হতো।
সৃজা যথেষ্ট মেচিউরড। ও মেবি এটাকেই সমাধান ভেবেছিলো। আমি চাই না তুমি ওকে ভুল বুঝো। তাই তোমাকে সহয করে বোঝাতে চাইলাম।
আমার এতো কথা বলার একটাই উদ্দেশ্য তুমি ওকে যেনে পুরোটাই বুঝতে পারো। ওর বাধ্যবাধকতা গুলো জানতে পার।
তবে আমি চাই ও খুব করে যুদ্ধ করুক। সব কিছুর বিরুদ্ধে যেয়ে ও আহিরকে নিজের করে নিক। ওর দু-টানা ভাবটা কেটে উঠুক।
অন্তি এতোক্ষনে কাপা গলায় জবাব দিলো
-আচ্ছা আমি কি সৃজা আপুকে আবার এলোমেলো করলাম? আমার ফিরে আসাটা কি অনুচিত হয়ে গেলো?
আরশান কোনো উত্তর দিলো না। কেনো জানি ইচ্ছে করলো না। শুধু চলে যাওয়ার আগে অন্তির মাথায় হাত বুলিয়ে বললো
-তোমার আসার ছিলো অন্তি। তোমার আসাটা আমাদের দুজনের জন্য জরুরি ছিলো।
বলতে পারো আমাদের অসমাপ্ত সম্পর্ককে পূর্ণতা দেয়ার জন্য।
চলবে….
(জানিনা কেমন হলো। খুব এলোমেলো লিখলাম হয়তো আজ।)