#Marriage_With_Benefits
#Part_9
Writer::Shaanj Nahar Sanjida
.
.
আমি টুলে বসে মোচরা মুচরি করছি তখন ডালিয়া আমার সামনে একটা বক্স রাখলো।
এইটা কি?(আমি কৌতূহল নিয়ে)
খালা তো বললো এইটার মধ্যেই নাকি তোর ড্রেস আছে।(ডালিয়া মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
তো?এইটাকে এখানে কেনো এনেছিস?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
তুই রেডি হবি না?(ডালিয়া আমার দিকে কৌতূহলী দৃষ্টিতে)
আমার মন চাচ্ছে না এখন রেডি হতে!তবুও দে পরে ফেলি এনেছিস যখন!(আমি)
দাড়া।খুলে দেখি এর মধ্যে কি ড্রেস?
বলেই ডালিয়া খুলতে লাগলো।
ডালিয়া যখন বক্স থেকে জামাটা বের করলো তখন আমার চোখ বড় হয়ে গেল।আমি হ্যা করে তাকিয়ে রইলাম।আমি আমার জীবনেও এতো সুন্দর জানা দেখেই নি পড়া তো দূরে থাক।আমি অবাক হয়ে জামার দিকে তাকিয়ে আছি তখনই আমাকে ধাক্কা দিয়ে আমার ধ্যান ভেঙ্গে ডালিয়া বললো,,
কিরে আসু।এতো সুন্দর জামা কি শুধু দেখবেই না পরবি??(ডালিয়া)
আমি আমার বয়সে এই জামার কথা স্বপ্নেও ভাবিনি পড়া তো দূরে থাক।(আমি জামাতে হাত বুলাতে বুলাতে)
আমি জানি তোর মা তোকে কখনও এমন জামা পড়তে দেয় নি!(ডালিয়া আমার পিঠে হাত বুলাতে বুলাতে)
আমি জামার উপর হাত রেখে ভাবছি,,
আমার মা।উনি কখনও আমাকে একটা নতুন জামা কিনে দিতো না।সব সময় আমার বড় বোনের কাপড় আমাকে পড়তে হতো।কিন্তু ও যেই কাপড় পড়তো ওই কাপড় পড়তে আমার রুচিতে বাধতো।আর যখনই মাকে বলতাম তখনই উনি আমাকে মারত,,কথা শুনাতো,,আমাকে খোটা দিতো।আর আজ এক অপরিচিত মানুষ আমাকে আমার স্বপ্নের জামা দিলো।সত্যিই আপনকে কখন পর হলে যায় আর পর কখন আপন হয়ে যায় ভাবা যায় না।সত্যিই মি আর মিসেস খান অনেক ভালো।আর এতো ভালো এই জন্যই তো সব অপরিচিত মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়েছে।
ভাবেই একটা মুচকি হাসি দিলাম।
কিরে কি ভাবছিস?পর ড্রেসটা।
ডালিয়া আমাকে ধাক্কা মেরে কথা গুলো বললো।
ও হ্যা দে।পরি,,
বলেই ড্রেসটা পরলাম।ড্রেসটা আমার ওপর খুব মানিয়েছে।যেনো আমাকে ভেবেই এই ড্রেস বানানো।সাদা গোল জামা অনেক ফোলানো।মাঝে মাঝে ব্লু স্টোন লাগলো।যেনো এই সাদা আকাশে নীল তারা।যদিও এইটা অসম্ভব তবুও এই ড্রেস দেখে আমার মাথায় এইটাই আসছে।আমি ড্রেসটা পড়ে আয়নার সামনে যেতেই আমি যেনো নিজেকে ভুলে গেছি।কি সুন্দর লাগছে আমাকে।নিজেই নিজের প্রশংসা করছি।আমি আয়নাতে নিজেকে পর্যবেক্ষণ করছি তখন ডালিয়া বললো
আসু আসু,,,তোকে সত্যিই পরীদের রানী লাগছে।এতো সুন্দর লাগছে যেনো মনে হচ্ছে কারো নজর না লাগে।
বলেই আমাকে ডালিয়া জড়িয়ে ধরলো।
আমিও ওকে জড়িয়ে ধরে হাসছি।আজ সত্যিই নিজেকে স্পেশাল মনে হচ্ছে।আজ সাইকোলজির ওই কথাটা খুব মনে পড়ছে যেখানে বলে ড্রেসও মানুষের মুডের উপর প্রভাব ফেলে।আজ নিজের মধ্যে দিয়ে টা প্রমাণিত হয়ে গেলো।সত্যিই আমার খুব ভালো লাগছে।মনে হচ্ছে কোনো আপন আমাকে এইটা দিয়েছে।এই সব ভাবতেই মনের মধ্যে একটা খুশি অনুভব করলাম।
ডালিয়া আমাকে ছেড়ে বললো
আজ আমি তোকে সাজিয়ে দিবো।বস
বলেই আমাকে ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসালো।
ডালিয়া আমার কিন্তু কোনো জুয়েলারি নেই।(আমি)
লাগবে ও না।আমি জানি তোর নেই।এই জন্যে আমি আমার গুলো নিয়ে আসছি।যদিও এই গুলো তেমন দামী না।তবুও তোকে খুব মানাবে।আমি জানি তোর সাদা জামা থাকবে তাই আমি তোর জন্য গাজরা এনেছি।যাতে তুই তোর মাথায় লাগাতে পারিস।অবশ্য আমার জন্য কিনতে গিয়ে আমি তোর জন্যও কিনে এনেছি।
আমি পিছন ফিরে ডালিয়াকে জড়িয়ে ধরলাম।আমার আচমকা এই জড়িয়ে ধরার কারণে ও খানিকটা অবাক হলো ।
কি হলো আসু?(ডালিয়া কনফিউজ হয়ে)
থ্যাংকস সব সময় আমার পাশে থাকার জন্য।আমার লাইফে তোর সাথে কাটানো দিন গুলোই আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান।যখন ক্লাসে আমার সাথে কেউ বসত না তুই আমার পাশে বসতি।যখন কেউ আমার সাথে বন্ধুত্ব করতো না তুই করছিস।আমার স্কুলে ড্রেস যখন ছিড়ে যেতো তুই আমাকে নতুন স্কুল ড্রেস বানিয়ে দিয়েছিস।যা বই কিনেছিস আমার জন্যও এক সেট কিনেছিস। এতো কিছু আমার উপর তোর উপকার আমি কি করে শোধ করবো বলতো?
ডালিয়া ও আমাকে জড়িয়ে ধরে বললো
দিলি তো আমাকে পর করে।আমি কি তোর কিছু হই না।তুই শুধু আমার করা জিনিস গুলো মনে রেখেছিস।নিজে কি কি করেছিস আমার জন্য মনে নেই।তুইও আমার জন্য কতো কিছু করেছিস।যখন আমি স্কুলে ট্রান্সফার হই তখন সবাই আমাকে বিরক্ত করে।আমাকে টিজ করতো তখন তো তুই ওদেরকে ভয় দেখিয়ে আমাকে ওদের হাত থেকে বাঁচিয়েছিস।যখন রাস্তার বখাটে গুলো যখন আমাকে বিরক্ত করতো তখন তুই তো আমাকে সাহায্য করেছিস!যখন বাবা কাজের জন্য বিদেশে গেছিলো তখন মা স্টক করে।আর তখন তো কাদতে কাদতে আমার অবস্থা খারাপ হয়ে গেছিলো।তুই না থাকলে আমি মাকে বাচাতেই পারতাম না।আসলে কি বল তো?আমরা না একে অপরের সাথে বাঁধা দুই বোন।
আমি ওর কথা শুনে মুচকি হাসি দিলাম।
চল তো এখন অনেক হয়েছে ইমোশনাল কথা।এখন একটু কাজ হয়ে যাক।
বলেই ডালিয়া আমাকে সাজাতে ব্যস্ত হয়ে পড়লো।
।
।
এসে পড়লাম তাহলে।আচ্ছা জিসান আঙ্কেল আর কলি আন্টি কোথায়!(আভি গাড়ি থেকে নামতে নামতে)
আমাকে তো বলেছে আশ্রমের সামনে এসে মিট করতে।(নিহালও গাড়ি থেকে নেমে)
বাহ।খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে তো।(আভি)
হুম।আঙ্কেল আর আন্টি কোনো কমতি রাখে নি।আসলে উনার মেয়েকে নিয়ে ইভেন্ট বলে কথা।(নিহাল)
আরে মি:আভি চৌধুরী আর মি:নিহাল আহমেদ যে। আপনরা এসে পড়েছেন?(এলাকার এমপি)
আরে এমপি সাহেব ভালো আছেন নাকি?(আভি)
এইতো আছি আলহাদুলিল্লাহ।আপনরা কখন এসেছেন?(এমপি)
এইতো একটু আগেই আসলাম।আপনি?।(নিহাল)
আমরা একটু আগেই আসছি।(এমপি)
আচ্ছা মি আর মিসেস খান কি আসছে?(আভি)
না।উনারা এখনও আসে নি কিন্তু উনাদের এসে পড়ার তো কথা।উনারা এমন সময় তো দিয়েছেন।(এমপি)
এই তো আমরা এসে পড়েছি।আপনাদের মনে হয় একটু বেশিই অপেক্ষা করতে হয়েছে?(জিসান খান – খান গ্রুপ অফ ইন্ডাস্ট্রিজের মালিক)
না না।আঙ্কেল বেশি অপেক্ষা করতে হয় নি।ওইসব ছাড়ো আন্টি কোথায়?(আভি)
এইতো বাবা আমি এই খানে,,,
বলেই গাড়ি থেকে নেমে আসলো কলি।জিসান খানের স্ত্রী।
আভি দৌড়ে গিয়ে কলিকে জড়িয়ে ধরলো।
কেমন আছো আন্টি?তুমি বিদেশ থেকে আসার পর একটু দেখাও করতে পারলাম না।আর তুমি জানাও ও নি যে তুমি এসেছ?(আভি অভিমান করে)
আহারে আমার ছেলেটা বুঝি অভিমান করছে?আসলে জানানোর সময় পাই নি।আসার পরই মেয়েটার জন্ম দিন চলে আসলো আর তাতেই ব্যাস্ত হয়ে পরলাম আর কোথাও নজর দিতেই পারলাম না।এইবারের মতো সরি গ্রহণ কর আর হবে না।(কলি আভি র মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
আচ্ছা আচ্ছা।সরি গৃহীত।(আভি কলিকে ছেড়ে)
বাহ বাহ।সব আদর আভির জন্য আর আমি ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মত বসে থাকবো?(নিহাল ঠোঁট ফুলিয়ে)
আয় আয় তোকেও আদর দেই।
বলেই কলি নিহালকেও জড়িয়ে ধরলো।
মনে হচ্ছে আদরের মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বাই দা ওয়ে আমিও কিন্তু আছি।আমাকে জড়িয়ে ধরলে আমিও মাইন্ড করবো না।(জিসান হাত বাড়িয়ে)
তোমাকে জড়িয়ে ধরে কে,,
আভি আর নিহাল,,জিসানকে খেপানোর জন্য বললো।আর সত্যিই জিসান খেপেও গেলো।
তবে রে
বলেই দুই হাতে আভি আর নিহালের কান টেনে ধরলো জিসান।
আহ্।ছাড়ো আঙ্কেল।তুমিই তো আমাদের বেস্ট আঙ্কেল।
বলেই আভি আর নিহাল জিসানকে জড়িয়ে ধরলো।
হইছে তোমাদের? দেখো এমপি সাহেব দাড়িয়ে আছে অনেকক্ষন ধরে।আর তোমরা ভালোবাসার মেলা লাগিয়ে বসে আছো।(কলি)
নাহ নাহ।থাক।মিসেস:খান। এতো দিন পরে উনাদের দেখা হলো এমন তো করবেই।(এমপি)
আরে এদের এখন না থামালে এরা সারাক্ষণ এমন আজাইরা কথা বলতে থাকবে।(কলি)
হ্যা হ্যা।
এমপি সাহেব এক গাল হেসে।
আসসালামু ওয়ালাইকুম। এমপি সাহেব।কেমন আছেন?
বলেই জিসান হাত বাড়িয়ে দিলো।
উনিও জিসানের হাত ধরে
ওলাইকুম আসসালাম। আলহাদুলিল্লাহ।আপনি?
আমিও আছি আলহাদুলিল্লাহ।নিজের দেশে পা রাখার পর আরো বেশি ভালো আছি।আর এখন আমার দুই ছেলে এসে পড়েছে।এখন আর আমার ভালো থাকা কে আটকায়?(জিসান)
তা যা বলেছেন।(এমপি)
আচ্ছা কথা না বাড়িয়ে আমরা সবাই ভিতরে যাই।অনেকক্ষন হয়ে গেছে।বাচ্চা গুলো অপেক্ষা করে বসে আছে।(কলি)
হ্যা হ্যা।চলো চলো
বলেই সবাই ভিতরে চললো।
।
।
এইদিকে আস্থার আস্থাহীন অবস্থা,,
আস্থা তুই উনাদের মালা দিয়ে বরণ করবি!(খালা)
কেনো উনারা কি বিয়ে করতে আসছে?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
বেশি কথা বলছিস।শুন যা বলছি।তুই এখন স্টোর রুমে গিয়ে ফুলের মালা গুলো এনে উনাদের পরিয়ে বরণ করবি।(খালা আঙ্গুল দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছে)
কয়টা ফুলের মালা পরাতে হবে?(আমি মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
পাঁচটা মালা পড়াবি। মি আর মিসেস খানকে একটা একটা করে দুটো।আর উনাদের সাথে দুইজন ছেলে আসবে তাদের আর এমপি সাহেব কে।বুঝলি?(খালা)
আচ্ছা।আচ্ছা।করছি নো সমস্যা।(আমি)
শোন।(খালা)
কি?
ওদের চিনবি কি করে?যাদের মালা পরাবি?(খালা)
দেখো এমপি মশাইকে আমি চিনি।আর উনার চেলাপেলাও আমার চেনা।আর মি আর মিসেস খান তো দেখতে ভালো মানুষই হবে।তাকে চিনা যাবে।আর বাকি যেই দুইজন তাদের চেনা আহামরি কিছু না।হইছে?(আমি একদমে কথা গুলো বললাম)
আমার মেয়েটা কতো বুদ্ধিমান।সবকিছু সামলে নিস।
বলেই খালা তার বরণের পালা,, আমার মাথায় দিয়ে হাওয়া হয়ে গেল।
আমি আর ডালিয়া স্টোর রুমে গিয়ে মালা গুলো নিলাম। মালা গুলো অনেক বড়ো আর সুন্দর।দেখার মতো।আমি তিনটা আর ডালিয়া দুইটা হাতে নিয়ে বের হলাম।
।
।
গেটে বাচ্চারা ফুল দিয়ে উনাদের বরণ করছে।
ফুল ছিটিয়ে দিচ্ছে।আর হাতে একটা করে লাল গোলাপ দিচ্ছে।দুই পাশে লাইন করে একপাশে ছোটো ছেলেরা আরেক পাশে ছোটো মেয়েরা আসছে আর তাদের মাঝ বরাবর অতিথিরা।কি চমৎকার দৃশ্য!
আমি এই মনোরম দৃশ্য দেখছি।সামনে এক জন ভদ্র লোক আর তার পাশেই একজন ভদ্র মহিলা দেখেই মনে হচ্ছে তারাই মি অ্যান্ড মিসেস খান।দেখে মনটা কেমন যেনো করে চিন করে উঠলো!কিন্তু আমি আর সেদিকে নজর দিলাম না।আমি সবাইকে দেখছিলাম তখনই আমার চোখ গেলো দুটো মার্বেলের মতো বড়ো হয়ে গেলো কারণ আমি যাকে সহ্য করতে পারি না সেই মি:কোবরা আমার সামনে।আমি দুই তিন বার আমার চোখ কচলাতে কচলাতে উনার দিকে তাকালাম।কিন্তু না আমি ভুল দেখছি না।উনি সত্যিই মি:কোবরা।তাই আবার নিশ্চিত হওয়ার জন্য ডালিয়াকে জিজ্ঞেস করলাম,,
ডাইল। ও ডাইল
ডালিয়া হ্যান্ডসাম ছেলে দেখেই সাত আসমানের চলে গেছে।আমি ওকে ধাক্কা দিয়ে বললাম,,
ওই মাইয়া।শুনতে পারছিস আমি কি বলছি!
ও হ্যা হা।বল।
তুই কি ওই সাদা শার্ট পরা আর ব্লু জিন্স প্যান্ট পড়া ছেলেকে দেখতে পারছিস?
হ্যাআআআআআ
একটা টান দিয়ে কথাটা বললো ডালিয়া।
আরে ঠিক করে বলনা।কি ভাবে বলছিস?(আমি কুনই দিয়ে ধাক্কা দিয়ে)
আরে কি বলবো?বলছি তো ওই সাদা শার্ট পরা ছেলেও আমার চোখে পড়েছে আর সাদা পাঞ্জাবি পরা ছেলেও।(নিহাল সাদা পাঞ্জাবি পড়েছে)
শিট।তার মানে এইটা আমার মনের ভুল না।আমি সত্যিই মি: কোবরাকে দেখলাম।উনি এখানে কেনো এসেছেন?আবার আমাকে কিডন্যাপ করতে?নাকি উনাকে এতো জ্বালিয়েছি বলে বদলা নিতে এসেছে?নিহাল বলেছিলো উনি নাকি কাউকে ছাড় দেয় না।আর উনিও বলেছিলো উনাকে আমিই এই প্রথম এতো কথা শুনিয়েছি।তাই বুঝি উনি বদলা নিতে এসেছে?আমি অনেক গল্পে, অনেক নাটক আর ছবিতে দেখেছি।কোনো পাওয়ার ফুল মানুষকে রাগালে তারা এইভাবে বদলা নেয়।উনিও কি এমনই করবে?
না আস্থা না,,এই লোকের প্রতি কোনো আস্থা নেই।এই লোক যা খুশি করতে পারে।ভাগ্য খারাপ না করতে চাইলে ভাগ।
।
।
অন্যদিকে আভি
কি সুন্দর করে বাচ্চারা আমাদের ওয়েলকাম করছে।এদের এই হাসির উপর হাজার কোটি টাকার ডিল কিছুই না।এদের একদম পিচ্ছি পরী লাগছে।যেই ওদের এইভাবে সাজিয়ে দিয়েছে তাকে থ্যাংকস দিয়া দরকার(আস্থা সাজিয়েছে — লেখিকা😒)।
ওদের এই দৃশ্য দেখতে দেখতে আমার চোখ গেলো মালা নিয়ে দাড়িয়ে থাকা দুটি মেয়ের উপর যার মধ্যে একটা দেখে আমার চোখ বের হাওয়ার উপক্রম।
।মিস:পেঁচাল এখানে কি করছে?নিশ্চয়ই আঙ্কেল আর আন্টির অনুষ্ঠান খারাপ করতে আসছে।এই মেয়ে শুধু নামে আস্থা আর কাজে একদম আস্থাহীন।খালি আজ প্রোগ্রামটা খারাপ করুক এর এক দিন কি আমার এক দিন।না না খারাপ করুক মানে?আমার একে আটকাতে হবে যে করেই হোক একে কিছুতেই আঙ্কেল আর আন্টির স্পেশাল দিন খারাপ করতে দিবো না।(আভি আস্থার দিকে রক্ত চক্ষু দিয়ে তাকিয়ে আছে)
আস্থা আড়ালে গিয়ে…
খাইছে। মি:কোবরা আমাকে দেখে ফেলছে।এখন আমাকে পালাতে হবে
যেই ভাবা সেই কাজ।মালা গুলো ডালিয়ার কাছে দিয়ে বললাম,,
দোস্ত বরণের পালা তুই সামলে নিস। বাঁচার পালা আমি সামলাচ্ছি…
বলেই আমি সেখান থেকে মি: ইন্ডিয়া হয়ে গেলাম।
আভি মনোযোগ দিয়ে আস্থাকে খুঁজছে।অবশেষে আস্থার দিকে তাকাতেই আস্থা হাওয়া হয়ে গেছে।
শিট। মেয়েটা পালালো। পালিয়ে যাবে কোথায়?আমিও আসছি।(আভি মনে মনে)
।#Marriage_With_Benefits
#Part_10(Bonus Part)
Writer::Shaanj Nahar Sanjida
.
.
নিহাল।এই নিহাল,,(আভি)
বল।কি হয়েছে?(নিহাল)
মিস:পেঁচাল কে দেখেছিস?(আভি আস্থাকে খুঁজতে খুঁজতে)
আস্থা?আস্থা এইখানে থাকবে কি করে?তোর কি মাথা খারাপ হয়ে গেলো?(নিহাল ভ্রু কুঁচকে)
মিস:পেঁচাল এইখানেই আছে।আমি শিওর।(আভি)
ও এখানে নেই। ও তোর মনের মধ্যে গেঁথে আছে।সত্যিই করে বলতো ওর জন্য আবার কিছু ফিল করার শুধু করেছিস নাকি?(নিহাল)
হ্যা?আমি তো পাবনা থেকে ডিগ্রি প্রাপ্ত পাগল না?যে ওই মেয়ের জন্য ফিল করবো? দুনিয়াতে যদি ও একটাও একটা মেয়ে থাকে তবুও আমি ওর জন্য ফিল করবো না।(আভি)
তাহলে তুই ওর কথা এতো মনে করছিস কেনো?(নিহাল)
আমি ওর কথা মনে করছি না। ও এখানেই আছে।আর আমি ওকে খুঁজে বের করবো। জাস্ট ওয়েট অ্যান্ড ওয়াচ।(আভি)
নিহাল অবুঝ শিশু মতো তাকিয়ে আছে।বেচারার মাথায় কিছু ঢুকছে না।ওর বেস্ট ফ্রেন্ড একটা মেয়ের পিছনে এইভাবে লেগে থাকবে এইটা ওর কল্পনার বাইরে।
।
।
এইদিকে ডালিয়া মালা নিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে। কার গলায় কি পরাবে ও নিজেই কনফিউজ।অবশেষে জিসান আর কলিকে ঠিকভাবে মালা পড়ালো আর আভি কেও।কিন্তু আভির নজর শুধু আস্থার দিকে।আস্থাকে খুঁজে বের করা।এইদিকে নিহালকে যখন মালা পড়াতে যাবে তখন শাড়ীর সাথে পেঁচ লেগে পরে যেতে লাগলো তখনই নিহাল ধরে ফেললো।ডালিয়াকে তাড়াতাড়ি ধরতে গিয়ে নিহালের হাতটা ডালিয়ার পেটে স্পর্শ লাগলো।এই প্রথম কোনো পুরুষের স্পর্শ পেয়ে ডালিয়া কেপে উঠলো।
আর এইটা নিহালও বুঝতে পারলো।পরেই নিহাল ওকে ঠিক মতো দাড়া করিয়ে বললো,
সরি। প্লিজ মাইন্ড করবেন না।আমি শুধু আপনাকে পড়ার হাত থেকে বাঁচাতে ধরেছিলাম। আশা করি আপনার লাগে নি।
জি,,, জ্বি না।
বলেই ডালিয়ার লাল টুকটুকে মুখ নিয়ে সেখানে থেকে চলে আসলো।
এইদিকে নিহাল কিছুই বুঝতে পারলো না।
এখন খাবারের পালা।আস্থা সেই যে গায়েব হয়েছে এখনও ওর নাম গন্ধ নেই।এইদিকে খালা আর ডালিয়া ওকে খুঁজে বের করতেই পারছে না।আর খাবারের সময় পেরিয়ে যাচ্ছে।তাই তারা আস্থাকে রেখেই খাবার দিয়ে দিলো।
সবাই মিলে খাবার খাচ্ছে আর আভির চোখ দুটো শুধু এইদিকে ঐদিকে তাকাচ্ছে।আভির চোখ শুধু আস্থাকে খুঁজছে।
আভি হাব্লার মতো এদিকে ওদিকে না তাকিয়ে খাবারে দিকে মনোযোগ দে!(নিহাল)
তুই জানিস আমি ওই মেয়েকে খুঁজে দম নিবো।ওই মেয়ে এখানেই আছে।(আভি এদিক ওদিক তাকিয়ে)
হায় আল্লাহ।তুমি আমায় এই কোন পাগলের পাল্লায় এনে ফেলেছো।এর মাথা থেকে আস্থার ভুত নামতেই চায় না।(নিহাল খাবার মুখে দিচ্ছে আর এই হতাশা ব্যক্ত করছে)
মেয়েটা কোথায় গায়েব হলো?মিস পেঁচাল তুমি পাতালেও থাকলে সেখান থেকে আমি তোমাকে বের করেই ছাড়বো যে করেই হোক!(আভি মনে মনে)
এইদিকে কলি আপন মনে সব বাচ্চাদের নিজের হাতে খাবার বেড়ে দিচ্ছে।জিসান ও ওকে সাহায্য করছে।মাঝে মাঝে কলির বাচ্চাদের দেখে নিজের মেয়ের কথা মনে পড়ে যাচ্ছে।
আমার মেয়েটা বেঁচে থাকলে আজ আমরা মা মেয়ে এক সাথে খাবার খাওয়াতাম বাচ্চাদের।ভাগ্য এতই খারাপ যে আমার মেয়ে আমার কাজে এসেও চলে গেছে। দোয়া করি মা আল্লাহ তোকে ভালো রাখুক।মা তোকে খুব ভালোবাসি।আর সারাজীবন বাসবো।তুই আমার কলিজার টুকরা।
এইসব ভাবতেই কলির চোখ দিয়ে পানি বের হয়ে আসলো।তাই ও তাড়াতাড়ি পানি মুজে বাচ্চাদের খাবার দিতে ব্যাস্ত হয়ে পড়ল।কিন্তু মন ভারী থাকলে হাতে থাকা তরকারির চামুচ ও ভারী হয়ে যায়।কলি যখন বাচ্চাদের খাবার বেড়ে দিচ্ছিলো তখন ওর হাত থেকে চামুচ পরে যাচ্ছিলো।আর তা জিসান সাথে সাথেই ধরে ফেললো।
কলি।তুমি ঠিক আছো?(জিসান)
আজ মনটা খুব ভারী লাগছে গো।(কলি)
নিজেকে সামলাও।আমাদের মেয়ে কখনও চাইবে না তুমি এত দূর্বল হয়ে যাও।
জিসানের হাত থেকে আভি চামুচ নিয়ে বললো
আঙ্কেল তুমি আন্টিকে সামলাও।আমি দেখছি এই পাশ তা।
কিন্তু তোদের খাবার দাবার?(জিসান)
আঙ্কল।আমাদের খাবার দাবার শেষ।তুমি চিন্তা করো না।আমরা এই দিক সামলে নিতে পারবো।তুমি এখন আন্টিকে সামলাও।(নিহাল)
এইদিকে নিহালের এই উদার দিক দেখে ডালিয়া হাওয়ায় উড়ছে।
হায়।কত্তো ভালো লোক উনি!সবাইকে কতো সুন্দর সাহায্য করছে।দেখতে যেমন সুন্দর মনটাও ঠিক তেমনই সুন্দর।একদম আমার মনের মত।পুরাই পারফেক্ট।এতো দিন কই ছিলেন আপনি?আগে দেখা হলে তো আপনাকে এতো খুঁজতে হতো না আমার।(ডালিয়া মনে মনে)
ডালিয়া কাজ কর।একটা হাওয়া হয়ে গেছে(আস্থা) আরেকজন হাওয়ায় উড়ছে (ডালিয়া)।সব গুলো এক ঘাটের মাঝি।
বলেই খালা আবার কাজে মন দিলো।
ইসস।একটু ভালো করে মানুষটাকে দেখবো তারও সুযোগ নেই। পেয়ার কা দুশমন।
বলেই এক বুক হতাশা নিয়ে ডালিয়া নিজেও কাজে লেগে গেলো।
এইদিকে
কলির চোখের বাঁধ ভেঙ্গে গেলো ও জিসানকে ধরে কান্না করে দিলো।
আমার খুব মনে পড়ছে আমাদের মেয়ের কথা।কি করবো বলো?আমি তো মেনেই নিয়েছি ও আর এই পৃথিবীতে নেই তাহলে কেনো আমার মন আবার ভারী হয়ে যায়?কেনো ভুলতে পারি না আমি ওকে? কেনো?
কলি কান্না করতে থাকে।
এইদিকে জিসান কলিকে ধরে
তুমি তো আমাকে জড়িয়ে ধরে কেদে নিজেকে হাল্কা করতে পারো।আমি কি করবো?আমি তো কাউকে বলতেও পারি না আমার মনের কথা।আমি কাউকে ধরে কাদতেও পারি না।কারণ আমি ভেঙ্গে পরলে তোমাকে সামলাবে কে? মেয়েকে হারিয়ে এখন তুমিই আমার সম্বল।তোমাকে আর হারাতে চাই না।
এইসব ভেবেই আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো জিসান কলিকে।
।
।
এইদিকে
আস্থারানি পালিয়ে ওয়াসরুমে এসে বসে আছে।
হুহ!(মুখ ভেংচি দিয়ে)।আমাকে উনি কখনও খুঁজে পাবে না।উনি জানবেনই না যে আমি লেডিস ওয়াশরুমে এসে বসে আছি।উনার লজ্জা শরম থাকলে উনি কখনও লেডিস ঢুকবে না।
বাহ।আস্থা তুই কতো ইন্টেলিজেন্ট!ভাবতেও অবাক হয়ে যাই।
এইভাবে বেসিনে বসে বসে পা ঝুলাচ্ছি।অন্য দিকে পেটে খুব ক্ষুদা লাগছে।সেই যে মি: কোবরার কাছে থেকে খেয়ে আসলাম তারপর থেকে আর কিছু পেটে পরে নি।সকালে খালা খিচুড়ি খেতে বলছিলো কিন্তু খিচুড়ি আমার একটুও ভালো লাগে না।এখন কি করবো ?কোথায় গিয়ে খাবার খাবো?বাহিরে নিশ্চয়ই মি:কোবরা ফেনা তুলে বসে আছে গেলেই ছোবল দিবে।আর না গেলে ওই ভালো ভালো খাবার গুলোও মিস করবো।বাসায় যখন ভালো খাবার রান্না করা হতো আমাকে সবার শেষে যা সবার খাওয়ার পর বেঁচে যেতো ওই গুলো দিতো।
ভেবেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললাম।
এখন মাথায় কিছুই ঢুকছে না যাবো কি যাবো না!
।
।
কলি অনেক ক্ষন কান্নাকাটি করার পর এখন শান্ত হলো।
জিসান আমি গিয়ে একটু ওয়াশরুমে থেকে ফ্রেশ হয়ে আসি।কান্নাকাটি করার পর একটু হালকা লাগছে।মুখ ধুয়ে আসলে একটু ভালো লাগবে।তুমি এই দিক সামলে নি ও। ছেলেরা (আভি আর নিহাল)ঠিক মত সব কিছু করতে পারছে কি না?ওদের কিন্তু এই সবের অভিজ্ঞতা নেই।
আচ্ছা।তুমি একদম চিন্তা করো না আমি সব দেখছি!আর তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো।(জিসান কলির মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো)
কলি মুচকি হেসে ওয়াশরুমে যাওয়ার জন্য বের হয়ে গেলো।খালাকে জিজ্ঞেস করে ওয়াসরুমের দিক জেনে নিলো।
।
।
ওয়াশরুম
এইদিকে আস্থা পাইচারী করছে।যাবে কি যাবে না! হটাৎ ও কারও আসার শব্দ শুনতে পেলো,,
এইরে মি:কোবরা কি খুঁজতে খুঁজতে এখানেও চলে আসলো?উনার কি লজ্জা শরম বলতে কিছু নেই।উনি কিভাবে আমাকে খুঁজতে ওয়াশ রুমে চলে আসলো।
না এখানে দাড়িয়ে থাকলে চলবে না।আমি বরং টয়লেটে এ ঢুকে পড়ি।
বলেই ঢুকে পড়লাম টয়লেটে।
কি দিন আসলো আস্থা তোর!নিজের বাড়ির মতো জায়গাতেও তোকে লুকিয়ে থাকতে হয়।এই দিনই দেখার বাকি ছিলো।
এইসব মনে মনে ভাবছি তখনই বাহিরে থেকে একটা মহিলার আওয়াজ শুনতে পেলাম।
মি:কোবরা কি মহিলা হয়ে গেলো নাকি?দূর আমার মাথা পুরো গেছে উনি কোনো মহিলাই হবে হয়ত।
বিরবির করে বলেই দরজাটা খুলে বিড়ালের বাচ্চার মত মাথাটা বের করে দেখলাম যে ওইটা কি সত্যি কোনো মহিলা না মি:কোবরা!
কিন্তু ঐখানে সত্যিই একটা মহিলা ছিলো।মহিলাটাকে যেটুকু আমি চিনসি উনি মিসেস:খান।কিন্তু এখানে কি করছেন?দেখে মনে হচ্ছে উনি উনার শাড়ির সাথে পাঞ্জা লড়ছেন।
দূর।কতো দিন পরে শাড়ি পরলাম।কিন্তু এই শাড়ি শুধু খুলেই যাচ্ছে।জিসান ভালো শাড়ি আনতে পারলো না।এই শাড়ি শুধু খুলেই যায়।(কলি শাড়ি ঠিক করতে করতে)
শাড়ির কোনো দোষ নেই।আপনি শাড়ি উল্টো পড়ছেন।(আমি)
আমার কথা শুনে উনি পিছনে ঘুরল।
তুমি,,?(কলি)
আমি এখানেই থাকি।আপনি নিশ্চয়ই মিসেস খান?(আমি)
হুম।কিন্তু তুমি কি করে জানলে আমি শাড়ি ঠিক করে পরে নি?(কলি)
কারণ আমি জানি শাড়ি কি করে পরে!আপনি আমার সাথে চলুন আমি আপনাকে ঠিক করে পরিয়ে দিচ্ছি।
আমি উনার হাত ধরে উনাকে নিয়ে যাচ্ছি রুমে।কিন্তু কেনো জানি আমার স্পর্শ পেয়ে উনি কেপে উঠলো।আমারও মনের মধ্যে সেই আগের মত চিন চিন করে ব্যাথা অনুভব হলো।এই ফিলিং তা কি তা আমার অজানা।কিন্তু উনার হাত ধরে আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে।কতো বছর ধরে এই হাতের অপেক্ষায় ছিলাম আমি।
কে এই মেয়ে?ওর হাত ধরেই আমার শরীরটা কেমন যেনো শিউরে উঠলো।যেনো এই হাতের স্পর্শ আমার চিরো চেনা।খুব শক্ত করে ধরতে মন চাচ্ছে।যেনো হাত একটু ঢিল দিলেই খুব কাছের কিছু দূরে চলে যাবে।
এইসব ভেবেই কলি আস্থার হাত আরো শক্ত করে চেপে ধরলো।
আপনার ভয় হচ্ছে?(আমি হটাৎ উনার হাত চেপে ধরায় প্রশ্নটা করলাম)
নাহ।কেনো?(কলি)
এইযে হাত চেপে ধরলেন!(আমি)
কেনো জানি না তোমার হাত চেপে ধরতে মন চাইলো।(কলি)
যদি তাই হয়।আমিও আরো শক্ত করে আপনার হাত চেপে ধরি।
বলেই উনার হাত চেপে ধরলাম।
।
।
রুমে
আমি উনার শাড়ি ঠিক করে দিলাম।
আচ্ছা।আপনাকে একটা প্রশ্ন করি?যদি কিছু মনে না করেন!(আমি উনার শাড়ি ঠিক করতে করতে)
হুম। করো।(কলি)
আপনি কি শাড়ি পড়তে পারেন না?(আমি)
বিয়ের আগে মা পরিয়ে দিতো আর বিয়ের পর স্বামী।তাই আর শিখার দরকার পড়ে নি।(কলি)
বাহ।আপনাদের মধ্যে তো অনেক ভালোবাসা।(আমি হেসে)
হুম। তা যা বলেছো!
আজ কে আপনাকে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছে?আপনার মা নাকি আপনার স্বামী?(আমি)
আমার মা মারা গেছে অনেক বছর আগে।আর আমার স্বামী আজ ব্যাস্ত ছিলো।তাই আমাকেই পড়তে হয়েছে! অবশ্য যদি মেয়েটা বেঁচে থাকতো তাহলে মা মেয়ে মিলে পড়তাম।(কলি চোখ ছল ছল করছে)
উনার চোখে ছল ছল করা পানি দেখে কেনো জানি আমার হাত আপনাআপনি উনার গালে চলে গেলো।আমার হাত উনার গালে স্পর্শ করতেই উনি আমার দিকে তাকালো তখনই আমি বললাম,,
কারো না কারো কমতি পূরণ করার জন্য আল্লাহ কাউকে না কাউকে পাঠায়।হয়ত কমতি সম্পূর্ণ পূরণ হয় না।কিন্তু কিছু তো হালকা হয়।তেমনি আজ আমি আসলাম আপনার মা আর মেয়ের বদলে আপনাকে শাড়ি পড়াতে। হয়ত আপনার মা আর মেয়ের কমতি টা পূরণ হবে না কিন্তু একটু কষ্ট তো কমবে।
এইসব কথা বলতে বলতে আমার চোখ দিয়ে কখন যে পানি বের হয়ে আসলো আমি বুঝতেই পারিনি।
এই দেখো মেয়ে কান্না করছে!(কলি আস্থার চোখের জল মুছতে মুছতে)
জানি না।তবুও কেনো জানি কান্না পাচ্ছে।(আমি নিজের চোখের জল মুছতে মুছতে)
আমারই ভুল আমিই তোমাকে ইমোশনাল করে দিয়েছি। দেখো আমার জন্য তোমার সাজ নষ্ট হয়ে গেলো। নিশ্চয়ই পারফর্ম করার জন্য সেজে ছিলে?(কলি)
ব্যাপার না।আমি আবার সেজে নিবো।(আমি)
তা বললে কি আর হয়!তুমি আমাকে শাড়ি পরিয়ে দিয়েছো।আমি তোমাকে সাজিয়ে দিবো।
বলেই উনি আমাকে আয়নার সামনে বসিয়ে আপন মনে আমাকে সাজাতে লাগলো।
জানো আমি সব সময় ভাবতাম আমার মেয়েকে এমন ভাবে সাজিয়ে দিবো।আর ও স্টেজ আমার সামনে পারফর্ম করবে।তুমি হয়ত ঠিকই বলেছো আল্লাহ আমাকে তোমার মধ্যমে সেই ইচ্ছা পুরন করার সুযোগ দিচ্ছে।(কলি)
আমারও অনেক ইচ্ছা ছিল।আমার মা আমাকে এমন করে তৈরি করে দিবে।আমরা মা মেয়ে মিলে খুনসুটির মধ্যে দিয়ে সাজবো।কিন্তু আমার ওই ইচ্ছা কখনও পূরণ হলো না।আমি যেই মায়ের কাছে আমি ছিলাম।উনি কখনও আমাকে তৈরি করা তো দূরের কথা আমাকে কোনো জায়গাতে পারফর্মই করতে দিতো না।স্যার কতো বলতো আমাকে যেনো গান গাইতে দেয় কারণ আমার গানের গলা ভালো কিন্তু উনি দিতো না।আমার কোনো জায়গাতে তারিফ হবে ওইটা উনি সহ্য করতে পারতো না।
আমার ভাবনার ছেদ পড়ে মিসেস খানের কথা শুনে।
আচ্ছা তোমার তো নামই জানা হলো না!তোমার নাম কি?(কলি)
আমি আস্থা ইয়াসমিন।ডাক নাম আসু।আর আপনার মিসেস খান?(আমি)
আমি নিহারিকা কলি।ডাকনাম কলি।তুমি আমাকে মিসেস খান না বলে কলি আন্টি বল কেমন?(কলি)
ওকে।আন্টি।(আমি)
আচ্ছা আসু তুমি কি অনাথ আশ্রমে থাকো?আমার জানামতে অনাথ আশ্রমে তো আঠারো বছরের পর কেউ থাকতে পারে না!(কলি)
আমার ফ্যামিলির সম্পর্কে কারোর জানার দরকার নেই।এখন উনাদের সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নেই।আমি অনাথ এইটাই আমার পরিচয়।(আমি মনে মনে)
.
.
চলবে….
।
চলবে,,,
আজ এইটুকু এখন আমি পালাই।😜😜