Marriage_With_Benefits part 45+46

#Marriage_With_Benefits
#Part_45
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আমি আপনাকে কথা দিচ্ছি যতক্ষণ না পর্যন্ত আপনি নিজে থেকে আসবেন আমি কাউকে কিছু বলবো না।(আমি)

তুমি সত্যি ভালো।আমার আভির কপাল করে তোমার মত বউ পেয়েছে।(সুমু মা আমার মাথায় হাত বুলিয়ে)

তাহলে মা আমরা আসি।(আমি মুচকি হেসে)

হুম।(সুমু)

আমি যাওয়ার আগে সুমু মাকে বললাম
মা।আদি বাবা আপনি আসার পরই অ্যাকসিডেন্ট করে এখন সে বিছানায়।
বলেই চলে আসলাম।

আদি বিছানায়?আমি কি করবো?অতীত গুলো এতো দিন পর আমার জীবনে আবার হানা দিলো।আবার আমাকে দুবিধায় ফেলে দিলো।আমি কোথায় যাবো?কি করবো?কিছুই বুঝতে পারছি না!আমি কি আবার ফিরে যাবো?ফিরে গিয়ে কি বলবো?এতো বছর অভিমান করে কাটিয়ে দিয়েছি।এখন কি করবো?বাকি অর্ধেক জীবন কি এইভাবে একা কাটাবো নাকি।আবার জীবন শুরু করবো সবাইকে নিয়ে।আমি কিছুই বুঝতে পারছিনা।
বলেই সুমু কান্না করতে লাগলো।


গাড়িতে
আস্থা তুমি এখন কি করবে?উনি তো আসলো না।এখন তোমার আর আভির সম্পর্ক?(জয়)

কিছুই করার নেই।আমি উনাকে জোর করতে পারি না।উনি উনার জায়গাতে ঠিক।এতো অপমানে অভিমান হওয়ারই কথা।ক্ষমা না করারই কথা।আর যেহেতু উনি এতো বছর অভিমান নিয়ে কাটিয়েছে।সেহেতু এতো তাড়াতাড়ি অভিমান ভেঙ্গে,,সব কিছু ভুলে আসা উনার পক্ষে সম্ভব না।আমরা মানুষ অনুভূতি আমাদের মধ্যে রয়েছে।আর সেই অনুভূতির অভিমানটা কাটিয়ে উঠতে তার একটু সময় লাগবে।আমি নিজের সম্পর্ক বাঁচাতে উনাকে জোর করতে পারি না।(আমি)

তাই ঠিক।(জয়)

আমি আর ডক্টর জয় চুপ করে আছি।ডক্টর জয় গাড়ি চালাচ্ছে।আমাকে বলেছে ঘুমাতে কিন্তু এখন আমার ঘুম পাচ্ছে না।ভোর হতে চললো।হটাৎ ডক্টর জয়ের ফোন বেজে উঠলো।
আস্থা একটু ফোনটা রিসিভ করতে হবে।হতে পারে কোনো রুগী।(জয়)

প্লিজ।কোনো সমস্যা নেই আমার।(আমি)

ডক্টর জয় গাড়ি দার করিয়ে ফোনটা রিসিভ করলো।

উনি কথা বলতেই উনার চেহারার রং যেনো পাল্টে গেল।উনি বারবার আমাকে আড় চোখে দেখছে।কিন্তু কেনো জানি আমার বিষয়টা ভালো ঠেকছে না।
ঠিক আছে…আমি ওকে আসছি।
বলেই ডক্টর জয় ফোনটা কেটে দিলো।

ডক্টর জয়।কি হলো?আপনাকে খুব চিন্তিত লাগছে মনে হচ্ছে।(আমি চিন্তিত হয়ে)

আস্থা।মনে রাখবে বেশি হাইপার হলে বেবির ক্ষতি হতে পারে।(জয়)

আমি জানি কিন্তু হঠাৎ আমাকে আপনি এইসব বলছেন কেনো?(আমি কৌতূহল নিয়ে)

আমার সাথে গেলেই দেখতে পারবে।
বলেই ডক্টর জয় একটা হসপিটালের সামনে এসে গাড়ি দাড় করালো।এতো ক্ষন প্রায় সকাল সাড়ে আটটা বাজে।আমি গাড়ি থেকে নামতেই দেখি মা,,বাবা,,আভি,,আয়ুশ,,নিহাল ভাইয়া,,দাদু,,আর আরিফ দাড়িয়ে আছে।আর সাথে আছে পুলিশ অফিসারও।কিন্তু সবাইকে এক সাথে দেখে আমার বিষয়টি ভালো ঠেকলো না।
কি হলো সবাই এক সাথে এখানে কেনো?কি হয়েছে?(আমি সন্দেহর দৃষ্টিতে)

আস্থা।শান্ত হও।(আভি খুব শান্ত গলায়)

আরে শান্ত হবো মানে?কেনো শান্ত হবো।আর তুমি এখানে কি করছো?তোমার না কাল রাতে এনগেজমেন্ট ছিলো।হবু বউ রাগ করবে তোমার।(আমি নিজেও জানি না আমি কি আবোলতাবোল বলছি)

আস্থা। চল তোকে নিয়ে যাই।(জিসান)

বাবা।কোথায় নিয়ে যাবে?(আমি অবাক হয়ে)

পরেই মা আর বাবা কিছু না বলেই আমাকে নিয়ে হসপিটালের মর্গে নিয়ে গেলো।
আমার হাত পা কাপছে,,,
মা বাবা। আ আ আমাকে মর্গে কেনো এনেছো?(আমি ভয়ে ভয়ে)

তোকে দেখাতে।(মা)

আমি মর্গে কি দেখবো?(আমি ভয়ে)

পরেই বাবা আমার সামনে থেকে একটা লাশের ওপর থেকে কাপড় সরিয়ে দিলো।
আমি ওমনি থপ করে নিচে বসে পড়লাম।
আস্থা।নিজেকে সামলাও।
বলেই পিছন থেকে আভি আমাকে ধরে ফেললো।

আভি কি হয়েছে বাবার(পালিত বাবা)?(আমি)

বাবা।কাল রাতে ছাদ থেকে পড়ে গেছে।(আভি মাথা নিচু করে)

ছাদ থেকে পড়ে গেছে।বাবা কি বাচ্চা নাকি?ছাদ থেকে পড়ে যাবে?আর রাতে কেনো উনি ছাদে উঠতে যাবে?(আমি আভিকে জোরে ধাক্কা দিয়ে দূরে সরিয়ে চিৎকার করে বলতে লাগলাম)

আস্থা।প্লিজ শান্ত হও।বাবা আর নেই।(আভি)

চুপ একদম চুপ।তুমি কে বলার আমার বাবা নেই?বাবা,,বাবা কই তুমি?তোমার ছোটো আস্থাকে রেখেই চলে গেলে।আমি তোমাকে রক্ষা করতে পারলাম না বাবা।আমি আমার কথা রাখতে পারলাম না বাবা।আমায় ক্ষমা করো বাবা।আমাকে ক্ষমা করো।(আমি বাবাকে ধরে কাদতে কাদতে)

আস্থা।
বলেই আভি আমার কাছে আসতে লাগলো।

একদম ছুবে না আমায়।দূরে যাও।বেরিয়ে যাও এখান থেকে।(আমি রাগে)

আভি আর কিছু বললো না।বেরিয়ে গেলো।আমি সেখানেই দাড়িয়ে রইলাম।


এক মাস পর
সেদিন বাবার সাথে আমার আর চৌধূরী বাড়ির সব সম্পর্ক কবরে দিয়ে আসলাম আমি।ওই বাড়ির সবার সম্পর্ক ঠিক করতে করতে আমার নিজের সম্পর্ক গুলো আমি হারিয়ে ফেলেছি।আর যার জন্য এইসব সেই আমার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করলো।এখন আমার আর চৌধূরী বাড়ির মধ্যে কোনো সম্পর্ক নেই।সব আমি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে দিয়েছি।তবুও আজ আবার যাবো কিন্তু কোনো সম্পর্কের দোহাই দিয়ে না।বরং কিছু হিসেব বরাবর করতে।আজ আর নিজের মা হওয়া লুকাবো না।একজন মেয়ে হয়ে নিজের বাবার খুনিকে ধরতে যাবো।
আস্থা।অফিসার এসে পড়েছে।(কলি)

হুম।আসছি মা।
বলেই নিচে নেমে আসলাম।

আস্থা তুই শিওর তো তুই যা করতে চাইছিস তা ঠিক?(কলি মাথায় হাত বুলিয়ে)

চিন্তা করো না মা।আমি এখন ওই বাড়ির বউ না আমার বাবার মেয়ে হয়ে যাচ্ছি।(আমি কঠোর কন্ঠে)

আস্থা চলো।(জয়)

পরেই আমি,, ডক্টর জয়,, অফিসার আর সাথে কিছু পুলিশ বেরিয়ে পড়লাম চৌধূরী বাড়ির উদ্দেশ্য।

আস্থাকে আভির প্ল্যান সম্পর্কে জানিয়ে দেই।(জিসান)

না।ভুলেও না।রাইশা কতো ভয়ঙ্কর দেখেছো না।ও কি করে আসুর পালিত বাবাকে মেরে ফেললো।এখন যদি ও আমার আসুকেও মেরে ফেলে।(কলি ভয়ে ভয়ে)

কিন্তু আসুর মনে যে আভির জন্য ঘৃণা সৃষ্টি হচ্ছে তা?(জিসান চিন্তিত হয়ে)

হচ্ছে যখন হতে দাও।আমি চাই আস্থা আরোও ঘৃণা করুক আভিকে।ওদের মধ্যে যতো ঘৃণা থাকবে।আভি আর আস্থা তত দূরে থাকবে।(কলি)

তুমি কি কোনোভাবে আভি আর আস্থাকে আলাদা করতে চাও?(জিসান অবাক হয়ে)

হ্যা।আমি চাই আভি আর আস্থা আলাদা হোক।আস্থা যতো আভির কাছে থাকবে তত ওর কষ্ট বাড়বে।(কলি)

কলি আমি তোমার চিন্তা বুঝতে পারছি।কিন্তু আভি আর আস্থাকে আলাদা করার তো কোনো দরকার নেই।(জিসান কলিকে বুঝাতে বুঝাতে)

আমি তোমাকে আগেও বলেছি যদি একটা সুযোগও আমি পাই ওদের আলাদা করার আমি তা হাত ছাড়া করবো না।আর তুমিও বলেছো যদি কখনো এমন মনে হয় আভির সাথে আস্থা সুরক্ষিত না তাহলে তুমি আমার সাথেই থাকবে।মনে আছে?(কলি)

হ্যা।মনে আছে।আমি সত্যিই তখন তোমার সাথেই থাকবো।(জিসান)


গাড়িতে
আমি জোর করে বাবার ডেথ টাকে ইনভেস্টিগেশন করাচ্ছি।আমি জানি বাবার মৃত্যু কখনই একটা অ্যাকসিডেন্ট হতে পারে না।কিন্তু এতে বাঁধ সাধে আভি।আভি অনেক বার চেষ্টা করেছে আমি যেনো বাবার মৃত্য নিয়ে ঘাটাঘাটি না করি ওইটা নাকি একটা অ্যাকসিডেন্ট।আর এইটাই আমাকে মেনে নিতে হবে। কিন্তু বাবার মারা যাওয়াটা আমার কাছে মোটেও একটা অ্যাকসিডেন্ট মনে হয় না।তার উপর এখন আভির আমাকে সাপোর্ট দেয়ার কথা।কিন্তু ও তাও দিচ্ছে না।আজ আমার আভিকে অনেক প্রয়োজন কিন্তু আভি নেই আমার পাশে।অবশ্য ওকে আমার পাশে চাওয়াই ভুল।এখন তো ও তুলির সাথে থাকবে।কিন্তু আমিও দেখি কতক্ষন তুমি ওই তুলিকে বাঁচাতে পারো।আমার কাছে তুলির বিরুদ্ধে প্রমাণ আছে সেদিন তুলি বাবার বিল্ডিংয়ে গিয়ে ছিলো।আর তুলির সাথে বাবার মৃত্যুর সম্পর্ক আছে।তা একবার তুলিকে ধরলেই আসল সত্য বের হবে।


চৌধূরী বাড়িতে
আস্থা?আস্থা কি প্রেগনেন্ট?(আভি অবাক হয়ে)

কি হলো মি:আভি?খুব অবাক হলেন মনে হচ্ছে।(আমি)

তুমি প্রেগনেন্ট?(আভি খুশি হয়ে)

বলতে পারেন।আপনার ওই খেলার একটা গুটি আমার পেটে।(আমি কঠিন গলায়)

আস্থা এইসব কি বলছো তুমি?এইটা আমার বাচ্চা।(আভি আমার দিকে হাত বাড়িয়ে)

আমি আভির হাত হেচকা দিয়ে সরিয়ে
শুনে খারাপ লাগলেও সত্যিই।এইটা শুধু আমার বাচ্চা।ভুলেও একে নিজের খেলায় বাঁধতে যাবেন না। মি আভি চৌধূরী।

আস্থা।খুব ভালো করেই আমায় ঘৃণা করতে শুরু করেছে।আমাকে একটি বারও বললো না যে ও মা হতে চলেছে আর আমি বাবা।আস্থা আমি যা করছি তোমার ভালোর জন্যই করছি।তোমাকে বাবার ইনভেস্টিগেশন করতে মানা করেছি কারণ এতে রাইশা জেনে যাবে তুমিই সেই মেয়ে রাইশা যাকে মারতে গিয়েও মারতে পারে নি বাবার জন্য।ওইদিন রাইসা বাবার কাছে গিয়েছিলো শুধু এইটা জানতে যে তুমি কোথায়?যখন বাবা বলার জন্য মানা করে দেয়।তখন ও বাবাকে মারার হুমকি দেয়।বাবার যখন বলে না তখন তাকে ছাদ থেকে ফেলে দেয়।আর রাইসার সাথে ছিলো সেই কেয়ারটেকার।দুজনে মিলে বাবাকে হত্যা করেছে।কিন্তু এখন সেই কেয়ার টেকার মিশিং ওকে খুঁজার চেষ্টাই করছি আমি।কিন্তু তুমি ইচ্ছে করে নেমে পড়লে বাবার খুনিকে ধরতে।বাবা তোমাকে বাঁচাতে নিজের জীবন দিয়ে দিলো আর সেই তুমি এখন রাইসার কাছে ইচ্ছে করে ধরা দিচ্ছ।আর শুধু মাত্র তোমার এই স্বভাবের জন্য আমি তোমার কাছে সব কিছু লুকালাম।নিজের জন্য ঘৃণা জাগালাম।আর সেই তুমি বারবার রাইসার কাছে ইচ্ছে করে ধরা দেও।আমি যতো চাই রাইসা থেকে তোমাকে দূরে রাখতে তুমি তত রাইসার কাছে চলে আসো।(আভি আস্থার দিকে তাকিয়ে কথা গুলো ভাবছে)

মি:আভি চৌধূরী।আপনার হবু স্ত্রীকে ডাকুন।(আমি)

ততক্ষনে বাড়ির সবাই এসে পড়েছে।আরশি ভাবী বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরতে যাবে তখনই আয়ুশ ওকে মানা করে।দাদু আর আরিফও চুপ করে আছে।সবাই বুঝতে পেরেছে আমি সবার উপর ক্ষিপ্ত আর তা না হলে মা হবার ব্যাপার কাউকে জানালাম না কেনো?

ওকে কেনো ডাকবো?(আভি ভ্রু কুঁচকে)

আপনার প্রেমিকা আমার বাবার হত্যাকারী।(আমি)

তুলি আস্থার বাবার হত্যাকারী? ইন্টারেস্টিং ব্যাপার।কে আস্থার বাবা?(রাইশা উপরে দাড়িয়ে দাড়িয়ে সব শুনছে)

কি যা তা বলছো?তুলি কেনো তোমার বাবাকে মারতে যাবে?অফিসার ওকে নিয়ে যান(আভি তাড়া দিয়ে)

আস্থা প্লিজ যাও।আর কিছুদিন পর তুমি সব জানতে পারবে।(আভি মনে মনে)

কেনো যাবো আমি?তোমার প্রেমিকা আমার বাবাকে মেরেছে।(আমি)

কোনো প্রমাণ আছে?(আভি)

সিসিটিভি ফুটেজ।এক মাস আগে যেইদিন আমার আমার বাবা খুন হয় আপনার প্রেমিকা সেখানে গিয়েছিলো।আর কোনো না কোনো ভাবে আমার মৃত্যুর সাথে আপনার প্রেমিকার হাত আছে।(আমি আভির সামনে দাড়িয়ে ওর চোখে চোখ রেখে)

এক মাস আগে? বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি ফুটেজ?তার মানে এই মেয়ে কোনো ভাবে সেই মেয়ে তো না যাকে আমি খুঁজছি?(রাইশা মনে মনে)

একটা সিসিটিভি ফুটেজ কোনো ভাবেই প্রমাণ করতে পারে না যে তুলি খুনি। জাস্ট গেট আউট।(আভি চিৎকার করে)

একদম চিৎকার করবে না।তুলিকে নিচে ডাকো।নাহলে তুলিকে পুলিশ দিয়ে নিচে টেনে নিয়ে আসবো।(আমি)

তোমার সাহস তো কম না।আমার বাড়িতে দাড়িয়ে তুমি আমারই হবু বউকে টেনে আনবে বলবো।(আভি দাত চেপে চেপে)

অফিসার।আপনি আপনার কাজ করুন।(আমি আভির দিকে তাকিয়ে)

পরেই অফিসার গেলো তুলিকে নিয়ে আর সাথে গেলো মহিলা পুলিশ।

আস্থা বেশি বেশি করে ফেলছো।(আভি রাগে)

তোমার এই দুই দিনের প্রেমিকার জন্য কষ্ট হচ্ছে।আর উনি আমার বাবা ছিলো।যদিও পালিত বাবা।কিন্তু উনাকে বুঝার পর থেকেই বাবা বলে জেনে এসেছি।তুমি কিছুতেই তোমার প্রেমিকাকে বাঁচাতে পারবে না।
এই কথা বলতেই আভি আমার গালে একটা চড় মেরে বসলো।

আমি গালে হাত দিকে অবাক হয়ে আভির দিকে তাকিয়ে আছি।আভি আজ তুলির জন্য আমার গায়ে হাত তুললো।

পরেই আমার বাহু ধরে টেনে নিয়ে
তোকে বলছি না চুপ করতে।কথা কানে যায় না তোর।চুপ একদম চুপ এক্ষুনি বেরিয়ে যা আমার বাড়ি থেকে(আভি রাগে)

আমি যাবো না।(আমিও রাগে)

আস্থা।রাইশা এখানেই আছে।আর তুমি নিজের মুখে বলে দিলে ওকে সব।এখন তো তোমাকে ছাড়বে না।শেষ আমার সব প্ল্যান শেষ।(আভি মনে মনে)

সব গুলো ইডিয়েট।তারমানে কলি আর জিসানের মেয়ে আস্থা।বাহ!মেঘ না চাইতেই জল।ভালো।
বলেই রাইসা নিজের রুমে চলে গেলো।

আভি যেনো কাকে ফোন দিলো।কিছুক্ষণ পর পুলিশ অফিসার যখন তুলিকে যখন নিয়ে যাবে তখনই উনার ফোনে ফোন আসে।আর সাথে সাথেই অফিসার তুলিকে ছেড়ে দিলো।তুলি গিয়ে আভিকে জড়িয়ে ধরে নেকা কান্না করতে শুরু করে দিলো।

অফিসার।আপনি ওকে ছেড়ে দিলেন কেনো?(আমি অবাক হয়ে)

আমার স্যার ফোন দিয়েছে।বলেছে এইটা অ্যাকসিডেন্ট কেস।এইটা নিয়ে যাতে আর ঘাটাঘাটি না করি।সরি মিস আস্থা আমরা আর কিছু করতে পারবো না।
বলেই পুলিশ গুলো চলে গেলো।

কি হলো তুমি দাড়িয়ে আছো কেনো?দেখছো না আমার হবু স্ত্রী তোমাকে সহ্য করতে পারছে না(আভি বিরক্ত হয়ে)

আমি পাগলের মতো হাসতে শুরু করলাম,,,
আভি।আমার বাবা তখন মরে নি এখন মারা গেছে।তুমি মেরেছো আজ নিজের হাতে তার হত্যাকারীকে বাঁচিয়ে।আর সাথে সাথে আমাদের সম্পর্ক যেটুকু বেচেঁ ছিলো তাই মেরে ফেলেছো তুমি।আভি একটা কথা রাখবে আমার,,,,তোমার বেনিফিটস্ স্ত্রী হিসেবে।আমি মারা গেলে আমার লাশও দেখবে না।
বলেই ডক্টর জয়কে নিয়ে কাদতে কাদতে বেরিয়ে আসলাম।

আস্থা।(আভি করুণ স্বরে)


আপনি এই জন্য আমাকে ওই বিল্ডিংয়ে যেতে বলেছিলেন।যাতে আপনি খুন করলে দোষ আমার উপর চাপে?(তুলি রেগে)

তোমার আর কোনো উপায় আছে আমার কথা শুনা ছাড়া!(রাইশা নিজের রুমের সোফায় বসে বসে)

আপনি,,,!আপনার কারণে আভি আমাকে সন্দেহ করেছে।আমি তো ওকে বলেছি আমি এক ফ্রেন্ডের বাড়ি গিয়েছিলাম।পড়ে একটু শান্ত হয়েছে।(তুলি)

হা হা(শয়তানী হাসি দিয়ে)।তোমার কি মনে হয় আভি এতটাই বোকা।আভি ইচ্ছে করে আস্থাকে এই বাড়ি থেকে দূরে রেখেছে যাতে আস্থা আমার নজর থেকে দূরে থাকে।আর আমি যাতে টের না পাই আস্থা কলি আর জিসানের মেয়ে।(রাইসা)

কি আস্থা কলি আর জিসানের মেয়ে?কিন্তু কলি আর জিসান তো রাইসাকে দত্তক নিয়েছে।(ঈশানি)

রাইসা ওর হাতের কাছে থাকা পানির গ্লাস ঈশানির কপাল বরাবর ছুঁড়ে মারে।আর তা গিয়ে সোজা ঈশানির মাথায় লাগে।

আহহ!আমাকে কেনো মারলে?(ঈশানি কপালে হাত দিয়ে)

তুই আমাকে আগে বলিস নি কেনো?কলি আর জিসান আস্থাকে দত্তক নিয়েছে।(রাইশা ভয়ানক ভাবে)

আমি ভেবেছিলাম।এইটা একটা সাধারণ ব্যাপার।(ঈশানি অবাক হয়ে)

তোমাকে এই বাড়িতে বিয়ে করিয়ে এনেছি।যাতে তুমি আমাকে সব খবর দাও।সাধারণ কি না অসাধারণ তা আমি ঠিক করবো!(রাইসা)

ঈশানি চুপ করে আছে।

এখানে না দাড়িয়ে বেরিয়ে যাও।(রাইসা)

পরেই ঈশানি বেরিয়ে গেলো।

তোমাকে(তুলি) কি আলাদা ইনভিটেশন দিতে হবে।দূর হও আমার চোখের সামনে থেকে।(রাইসা)

পরেই তুলিও বেরিয়ে গেলো।


সেদিন যখন আভিকে ফলো করলাম তখনই জানতে পারলাম।কলি আর জিসানের মেয়ে জীবিত।আর সে মেয়েকে একমাত্র ওই লোকটা(পালিত বাবা)আর আভি জানে।কিন্তু আভি কিছুতেই বলবে না।তাই ওই লোকটার কাছে গেলাম। ওই লোকটা মরে গেলো কিন্তু কিছু বলে গেলো না।থাক সমস্যা নেই এখন তো আমি জানি আস্থা সেই মেয়ে।
বলেই রাইসা শয়তানী হাসি দিলো।


রুমে এসে আভি কাউকে ফোন দিলো।
আমাকে আর কত দিন অপেক্ষা করতে হবে?(আভি ফোনে)

স্যার।আমরা যথা সম্ভব চেষ্টা করছি।কিন্তু রাইসা অনেক চালাক।ওর বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় করা কঠিন।একটু সময় লাগবে।

সময়ই আমার কাছে নেই।যা করার তাডাতাড়ি করো।
বলেই আভি ফোনটা কেটে দিলো।

রাইসা জেনে গেছে আস্থার কথা এখন কি হবে?জিসান আঙ্কেল তো আস্থাকে প্রোটেক্ট করবে বলেছে।তবুও রাইসাকে ধরা না পর্যন্ত কিছু করা সম্ভব না।(আভি চিন্তায় মাথায় হাত দিয়ে বসে আছে)
।#Marriage_With_Benefits
#Part_46
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
কয়েক মাস পর
আজ কয়েক দিন হলো আমার বাচ্চা নয় মাসে পা দিলো।এখন হাঁটা চলা খুব কষ্ট হয়ে উঠছে।ডক্টর বলেছেন যমজ বাচ্চা।আর বাচ্চাগুলোর গ্রোথ খুব ভালো হয়েছে।তবে তাদের জন্য আমি একটুতেই ক্লান্ত হয়ে যাই।এতো দিন বাড়ির বাহিরেই যাই নি।যা চেক আপ করার বাসায় করা হয়েছে।আজ ডেলিভারির কথা আর বাকি কিছু চেক আপ করার জন্য এসেছি।সাথে মা বাবা,,দুজন বডিগার্ড আর হসপিটালে তো ডক্টর জয় আছেই।


আভি রাইসার বিরুদ্ধে সব প্রমাণ জোগাড় হয়ে গেছে।এখন শুধু ওকে ধরার পালা।কিন্তু ওকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।মনে হচ্ছে ও বড়ো কিছু করার প্লানিং করছে।(নিহাল)

তুই আর আয়ুশ ওকে খুঁজে বের কর আমি আস্থার কাছে যাচ্ছি।যা করার আজই কর কিছু দিন পরেই আস্থার ডেলিভারি।আমি আর তর সইতে পারছি না। ও আজ হসপিটালে যাবে।সাথে তুলিকেও
নিয়ে যাচ্ছি যাতে ও পালাতে না পারে।(আভি)

ঠিক আছে।ভাই ভাবীর খেয়াল রাখিস(আয়ুশ আভির কাধে হাত রেখে)

হুম।তোরাও।
বলেই আভি বেরিয়ে গেলো সাথে তুলিকেও নিয়ে গেলো।


আমি চেক আপ করিয়ে নিচে নামলাম বাসায় যাবো বলে।বাবা ফোন দিয়ে ড্রাইভারকে গাড়ি আনতে বলেছে।আমি,,মা আর বাবা গাড়ির জন্য দাড়িয়ে আছি।তখনই দেখি আভি আর তুলি।

কেমন আছো আস্থা?(তুলি)

কেমন আছি তা তোমাকে প্রয়োজন মনে করছি না বলার।(আমি বিরক্ত হয়ে)

আমি আর আভি বিয়ে করে ফেলেছি(তুলি)

তো?(আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)

আমি এখন প্রেগনেন্ট।(তুলি)

Congratulations। তো?(আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)

তোমার কিছু ফিল হচ্ছে না।(তুলি অবাক হয়ে)

আমি তুলি সামনে দাঁড়িয়ে
কি ফিল করাতে চাও?আমার মধ্যে কোনো অনুভূতি থাকলে তো অনুভব করবো।

আমি আর তুলি দাড়িয়ে তর্ক করছি।আভি গেছে মা আর বাবার সাথে কথা বলতে ততক্ষনে একটা গাড়িতে কয়েকটা গুন্ডা এসে আমাকে আর তুলিকে ধরে ফেললো।ওরা নাকি পাশের ব্যাংক লুট করে এসেছে।পিছনে পুলিশ ধাওয়া করছে।এর থেকে বাঁচার জন্য আমাকে আর তুলিকে ধরেছে।যাতে আমাদের বন্দী করে পুলিশের হাত থেকে বাঁচাতে পারে।
তুলি চিৎকার করে উঠলো।আমি অবাক।আমি নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছি।কিন্তু পারছি না।

এই ছাড় ওদের!(আভি)

আস্থা।(কলি যেতে নিলেই জিসান আটকে)

এই কেউ আসলেই।এদের মেরে ফেলবো।এই বডিগার্ড পিছনে যা।আর এই হিরো পিছনে যা।(গুন্ডা গুলো)

কিন্তু বডিগার্ড গুলো কথা না শুনে আমাদের বাঁচানোর জন্য এগুতেই ওদের উপর গুলি করে দিলো।

যাবি কিনা পিছনে বল?(গুন্ডা)

দেখ।ভালোয় ভালোয় ওদের ছেড়ে দে(আভি রেগে)

তোর খুব চিন্তা ওদের নিয়ে তাই না।এক কাজ কর তোকে একটা অপশন দেই।এদের মধ্যে যেকোনো একজনকে আমি ছেড়ে দিবো।আর সে যে হবে তা তুই সিদ্ধান্ত নিবি।(গুন্ডা)

ছাড় বলছি ওদের না হলে তোর অবস্থা খারাপ হয়ে যাবে।আমার দুইজনকেই চাই।
বলেই আভি এগুতে নিলেই ওরা তুলির গলায় চাকু দিয়ে আঁচড় মারে।

আহহ।(তুলি)

আভি।আভি যেও না।ওরা আস্থাকে কিছু করে ফেললে।(জিসান)

কিন্তু আঙ্কেল কিছু না করলেও ওরা ক্ষতি করে ফেলবে।(আভি রাগে)

আপনার আমার মেয়েটাকে ছেড়ে দিন(কলি কান্না করতে করতে)

আমি তো বলছি যেই ছেলে যাকে ছাড়তে বলবে আমি তাকেই ছাড়বো।(গুন্ডা)

সত্যিই আমি যাকে বলবো তাকেই ছাড়বি।(আভি)

হুম।বলেই দেখ।(গুন্ডা)

আস্থাকে ছেড়ে দে।আমি চাই আস্থাকে ছাড়।(আভি)

আস্থা কে?(গুন্ডা)

এই যে।(আমি)

আভি তুমি তুলিকে বাঁচাতে আমার নাম নিয়েছো তাই না?আমি জানি।কিন্তু অন্তত আমার বাচ্চাগুলোর কথা ভাবতে।(আমি হতাশ চোখের পলক ফেলে)

গুন্ডা মুচকি হাসি দিয়ে।
সরি বস।তুই এই মেয়েকে বেছে নিয়েছিস তার মানে এই মেয়ে অনেক স্পেশাল।আমদের বাঁচার জন্য এই মেয়েই লাগবে।
বলেই তুলিকে আভির কাছে ধাক্কা দিয়ে আমাকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গেলো।
আভি।আমি জানতাম তুমি আমাকে বাঁচাতে আস্থার নাম নিয়েছো।(তুলি আভি কে জড়িয়ে ধরে)

কি তুমি তুলিকে বাঁচাতে আস্থার নাম নিয়েছো যাতে ওরা ওকে নিয়ে চলে যায়?এতো জঘন্য তুমি আভি?(কলি কাদতে কাদতে)

আভি হেচ্কা মেরে তুলিকে সরিয়ে
যা বলার পড়ে বলেন।এখন আস্থাকে বাঁচাতে হবে বলেই আভি যেতে নিলো।ততক্ষনে গুন্ডাদের গাড়ি কিছু দূর যেতেই গাড়ি ব্রেক ফেল করে উল্টে গেলো।

রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছি। মুখের বিভিন্ন জায়গাতে জ্বালা করছে হয়তো কেটে গেছে। পেটে ধিরে ধিরে প্রচন্ড ব্যাথা করতে শুরু করছে।যথা সম্ভব বাচ্চাদের বাঁচানোর চেষ্টা করছি। পেটে তেমন লাগে নি।কিন্তু মাথায় মনে হয় কেউ বোম মেরে দিয়েছে।খুব ব্যাথা করছে মাথা।আর খুব নিঃশক্তি হয়ে যাচ্ছে শরীরটা।শুধু মনের জোরে টিকে আছি।আর তা আসছে আমার বাচ্চাগুলো থেকে।খোদা ওদের পৃথিবীতে আনার পর যেনো আমাকে নেয় শুধু এই দোয়া টুকু করছি।তবে
আমি এই টুকু বুঝতে পারছি আমার দিন শেষ।খুব কষ্ট হচ্ছে আমার কিন্তু তার থেকে বেশি ভয় হচ্ছে। সবার কথা গুলো শুনে যা বুঝলাম গুন্ডাগুলো সেখানেই মারা গেছে।শুধু আমিই বেচেঁ আছি।ঐযে বলে রাখে আল্লাহ মারে কে?কে জানতো ওই ভয়ানক অ্যাকসিডেন্টে কি করে বেচেঁ থাকবো?।হয়তো যতক্ষণ পর্যন্ত বাচ্চাগুলো আসছে ততক্ষণ পর্যন্ত আমি এই পৃথিবীর অতিথি।

।আভি আমাকে কোলে করে নিয়ে অ্যাকসিডেন্ট স্পট থেকে হসপিটালে নিয়ে গেল।হসপিটাল কাছেই হওয়ায় ভালোই হয়েছে।কিন্তু যখন আভি আমাকে কোলে করে নিয়ে যাচ্ছিলো আমি ওর চোখে আবার সেই হারানোর ভয় দেখতে পেলাম।আমাকে হারানোর ভয় নাকি বাচ্চাদের আর নাকি আমাদের সবারই?কিন্তু ও কেনো ভয় পাবে?ওর সাথে তুলির বিয়ে হয়েছে।ওদের বাচ্চাও হবে।আমার আর আমার বাচ্চাদের কি দরকার ওর?নাকি বেনিফিটস্ স্ত্রী বলে দয়া দেখাচ্ছে?কিন্তু শেষ মুহূর্ত ভালোবাসার মানুষের সাথে থাকার সুখই আলাদা।

আভি?(আমি আস্তে আস্তে)

চুপ।বেশি কথা বলো তুমি?(আভি কাদতে কাদতে আমাকে নিয়ে হসপিটালে দৌড়াচ্ছে)

তুমি কাদঁছো কেনো?(আমি ওর গালে হাত রেখে)

এখন কি তোমার কথা বলাটা খুব জরুরী?(আভি কাদতে কাদতে)

আভি?একটা কথা রাখবে?(আমি কাদতে কাদতে)

তুমি সুস্থ হয়ে উঠ সব কথা রাখবো।(আভি)

আমার বাচ্চাদের কখনও আমার চেহারা দেখিও না।ওদের কখনও বলবে না আমি কেমন ছিলাম?(আমি মুচকি হেসে)

আভি আমাকে হসপিটালের বেডে শুইয়ে
মানে?(অবাক হয়ে)

মানে!ওদের কখনও বলবে না আমি কেমন ছিলাম,,দেখতে কেমন ছিলাম?ওরা জানলে ওদের আমার জন্য আফসোস হবে।আমি চাইনা আমার বাচ্চা আফসোস করুক।যেমন সব সময় আমি করতাম।আফসোস খুব খারাপ।মানুষকে সব সময় নিরাশ করে তুলে।আর আমি মারা গেলে আমার বাচ্চারা কখনই যাতে আমাকে নিরাশ হয়ে মনে না করে।এর চেয়ে ভালো যাতে ওরা আমার সম্পর্কে না জানে?(আমি হাসি মুখে)

কি যা তা বলছো?তুমি মারা যাবে মানে?তুমি কিছুতেই মরবে না। এখনও অনেক কিছু আছে আমরা এক সাথে করবো।আমাদের সন্তানের খেয়াল রাখবো এক সাথে।আমি ওদের একা সামলাতে পারবো না।তুমি না থাকলে ওরা বেপরোয়া হয়ে উঠবে।(আভি আমার হাত ধরে কাদতে কাদতে)

আমি এখনও হাসছি।ওর কথা গুলো যেনো আমার অনুভূতি গুলোকে নাড়া দিতে পারছে না।এখনও আভির করা বিশ্বাসঘতকতা ভুলতে পারছি না।ডক্টর জয় আমাকে নিয়ে অপরেশন থিয়েটারে ঢুকলো।কিন্তু আভি সেই আগের মত কান্না করছে।আমার জ্ঞান থাকার সময় ডক্টর জয়কে রিকোয়েস্ট করেছি সে যেনো আমার বাচ্চাদের বাঁচায়।উনিও কাদতে কাদতে আমাকে প্রমিজ করে আমার বাচ্চাদের বাঁচাবেন।আমিও হাসি মুখে পৃথিবীকে বিদায় জানানোর জন্য চোখ বুজে নিলাম।চোখ বুঝতেই আভির সেই হাসি মাখা মুখ দেখলাম।কি হাস্যকর না?ওই বিশ্বাসঘাতকের চেহারাই মৃত্যুর সময় দেখলাম।


অপারেশন থিয়েটারের বাহিরে
কলি কান্না করছে।জিসানও কলির কান্না থামানোর বদলে নিজে কান্না করছে।
আভি তখনই কাউকে ফোন দিলো
নিহাল।তুলি,,ঈশানি,,আর রাইসাকে যেখান থেকে পারিস ধরে নিয়ে আয়।(আভি রক্ত চক্ষু দিয়ে)

আভি।আস্থা কেমন আছে?(নিহাল কৌতূহল হয়ে)

তোকে যেটুকু করতে বলছি কর।(আভি রাগে)

আচ্ছা।
বলেই নিহাল ফোন কেটে দিলো।

আভি অপরেশন থিয়েটারের দিকে তাকিয়ে
আস্থা।চলো একসাথে এই যুদ্ধ করি।আর জিতে আসি।আমাদের সন্তানের জন্য।
বলেই আভি চোখ মুখ মুছে রাইসার কাছে চলে গেলো।


অন্ধকার রুমে
আভি।এখন কি করবে?আস্থা তো আর নেই।আমি আমার বদলা নিতে পেরেছি এখন মেরে ফেলো আমার কোনো দুঃখ নেই।(রাইশা পাগলের মতো হাসতে হাসতে)

তারমানে ওই গুন্ডা গুলো তোমার ছিলো?(আভি শান্ত গলায়)

হ্যা।ওই গুন্ডা গুলো আমার পাঠানো ছিলো।ব্যাংক লুট তো একটা বাহানা ছিলো।যাতে ওর মার্ডার ধামাচাপা দেয়া যায়।ঠিক যেমন ওই ড্রাইভার জানতো না কে মরবে?আর ওই চোর জানতো না ও মারা যাবে।ঠিক তেমন ওই গুন্ডা গুলোও জানতো না।যখন ওরা গাড়ি স্টার্ট দিবে তখন গাড়ি ব্রেক ফেল করবে আর ওরাও মারা যাবে আর সাথে আস্থাও।আর কেউ বুঝতেও পারবে না।এইটা একটা মার্ডার।সবাই ভাববে অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে।তুমি যদি আস্থার জায়গাতে তুলিকেও বেছে নিতে মরতো আস্থাই।কিন্তু এতো নাটক কেনো জানো।কারণ বেচারা আস্থা মরার আগেও জানতে পারলো না।তুমি ওকে বাঁচানোর জন্য এইসব করেছো।ও তো মরতে মরতেও তোমাকে ভুল বুঝে গেলো।
বলেই হা হা করে হাসতে শুরু করলো রাইসা।

বলা শেষ হয়ে গেছে তোমার?(আভি শান্ত)

মানে?(রাইশা অবাক হয়ে)

আয়ুশ রেকর্ড হয়েছে?(আভি)

জ্বি।ভাই সব রেকর্ড হয়েছে।(আয়ুশ ঈশানির দিকে তাকিয়ে)

ঈশানি অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে।

এই রেকর্ডার দিয়ে কি হবে?(রাইশা চিন্তিত হয়ে)

তোমাকে জেলের ভাত খাওয়ানো হবে!(নিহাল)

রাইসা আবার হাসতে শুরু করলো
কি আমাকে?জেলের ভাত?পারবে না।আমাকে আটকাতে পারবে না তোমরা।আমি ঠিক ছাড়া পেয়ে যাবো।(রাইসা)

কি বলছে তোমাকে জেলে দিবো?(আভি অনুভূতিহীন চোখে)

মা,,, মানে?(রাইশা কিছুটা ভয় পেয়ে)

মানে,,,?(আভি দাড়িয়ে) মানে তোমাকে আমি নিজের হাতে মারব।তোমার বিরুদ্ধে এখন সব প্রমাণ আমার হাতে।তুমি যে আস্থার পালিত বাবাকে মেরেছো তোমার সাথে যে কেয়ারটেকার ছিলো সে এখন আমাদের হাতেই আর সে তোমার মার্ডারের ভিডিও করেছে।শুধু মাত্র ওই ভিডিওটার জন্য এতো দিন চুপ করে ছিলাম।কিন্তু এখন এতো প্রমাণ পেয়েও তোমাকে পুলিশে দিবো না।কারণ তোকে আমি নিজের হাতে মারবো(আভি নিজের রক্ত চক্ষু দিয়ে তাকিয়ে)

আভি,,? (নিহাল অবাক হয়ে)

ভাই,,?(আয়ুশ অবাক হয়ে)

কি তোরা এতো অবাক হচ্ছিস কেনো?তুই জানিস আমি ভেবেছিলাম আমি ওকে আইন অনুযায়ী শাস্তি দিবো।এই জন্য কি না করছি আমি!আস্থার মনের নিজের জন্য ঘৃণা বাড়িয়ে দিলাম,,ওর সামনে তুলিকে আপন করার নাটক করলাম,,ওকে এত কষ্ট দিলাম যে ও আমাকে বাবা হবার এতো বড় খুশির খবর আমাকে দিলো না।ওই মেয়েকে বাঁচাতে আমি এতো কিছু করলাম আর আজ মেয়েটাকে শেষ পর্যন্ত বাঁচাতে পারলাম না।আর সব চেয়ে বড় কথা কি জানিস! ও এখনও ভাবছে যাকে ও এতো ভালোবাসে সেই ওর মৃত্যুর সাথে লড়াই করার কারণ।যখন ওর আমাকে দরকার ছিলো আমি কিছু করতে পারি নি।ওর সাথে থাকতে পারি নি।শুধু মাত্র রাইসার জন্য।(আভির চোখ থেকে পানি পড়ছে আর সেই চোখেই বেরিয়ে আসছে বদলা নেওয়ার নেশা)

আভি তুই যা করেছিস সবই তো আস্থার জন্য।আর তোর পরিবারের জন্য(নিহাল আভির কাধে হাত রেখে)

কিন্তু কি বলতো?যখন জানতে পারলাম যে সব কিছুর পিছনে রাইসা তখনই আমার ওকে মেরে ফেলা উচিত ছিল।যদি ওকে তখনই মেরে ফেলতাম তাহলে আর আস্থার এতো কষ্ট হয় না(আভি চেয়ারে বসে)

ভাই।তুমি তো চেয়েছিলে ওকে আইন অনুযায়ী শাস্তি দিতে কিন্তু কে জানতো এরমধ্যে এইসব হয়ে যাবে?(আয়ুশ)

আভি।এখন তাহলে কি করবি?(নিহাল)

আভি একটা বন্দুক নিয়ে রাইসার কপাল বরাবর ঠেকালো
ভাবছিলাম আমার উপর করা সকল অন্যয়ের কারণে তোমাকে জেলে দিয়ে একটা সুযোগ দিবো ভালো হওয়ার কিন্তু তুমি সেই সুযোগ হাত ছাড়া করেছো।বোধ হয় আমি একটু বেশীই ভালো ছিলাম তোমার প্রতি।ভালো থেকে ফুপি।

আ,,আভি(রাইসা আর কিছু বলার আগেই আভি রাইসার কপালে গুলি চালিয়ে দিলো)

রাইসা মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
আভি হাঁটু গেড়ে নিচে থপ করে বসে পড়লো।
আস্থা।সরি তোমাকে রক্ষা করতে পারলাম না।

ভাই এদের(ঈশানি আর তুলি) কি হবে?(আয়ুশ)

আমি পুলিশের কাছে ধরা দিবো আর সব শিকার করে নিবো।আর যদি তোমরা চাও তাহলে আমাকেও মেরে ফেলতে পারো।আমি কিছু বলবো না।কারণ আমি আমার কাজে অনুতপ্ত।(ঈশানি মাথা নিচু করে)

চাচীকে পুলিশের হাতে তুলে দে।(আভি শান্ত গলায়)

আয়ুশ ওর মাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার জন্য নিয়ে যাচ্ছে তখনই ঈশানি আভির দিকে ফিরে বললো
রাইসা কথায় কেউ জানবে না। পুলিশ জানবে রাইসা পালিয়ে গেছে।

থ্যাঙ্ক ইউ চাচী(আভি)

ঈশানি আর কিছু বললো না।চলে গেলো।

আর এর(তুলি) কি করবি?(নিহাল)

একে পাগলা গারতে পাঠা।আর সেখান থেকে যাতে না আসতে পারে।(আভি)

আভি আমি তোমার বাচ্চার মা হতে চলেছি।(তুলি কাদতে কাদতে)

আমি জানি তুই কার বাচ্চার মা হতে চলেছিস।(আভি তুলির গাল চেপে ধরলো)

মানে?(তুলি ভয়ে ভয়ে)

অন্যর পাপ আমার ঘাড়ে চাপাবি?আর বুঝবো না ভাবলি কি করে?একে নিয়ে যা আমার সামনে থেকে(আভি)

পরেই তুলিকে মেন্টাল হসপিটালে পাঠিয়ে দেয়া হয়।


হসিপটালে
জিসান আঙ্কেল,,আসু কোথায়?(আভি দৌড়ে এসে)

আভির সাথে,,দাদু,,আরিফ,,আরশি,,আয়ুশ,,রোহান,,মিস সাবিনা,,ডালিয়া,,নিহাল সবাই এসেছে।সবাই এখন সব কিছু জেনে গেছে।এখন শুধু আস্থার ঠিক হওয়ার পালা।আস্থা ঠিক হলেই সব ঠিক হয়ে যাবে।কিন্তু আভি জিসানের কাছে গিয়ে আস্থার কথা জিজ্ঞেস করতেই জিসান চুপ হয়ে বসে পরলো।


চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here