Marriage_With_Benefits part 41+42

#Marriage_With_Benefits
#Part_41(#Villain_Special_2)
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
ঈশানি অনেক আহ্লাদ নিয়ে রাইসাকে জড়িয়ে ধরলো।

চোরে চোরে মাসতুতো ভাই শুনতাম এখন দেখি ননদ আর ভাবী।(আরিফ)

মিস সাবিনা আরিফকে ধাক্কা দিয়ে চুপ হয়ে বললো।

আমি আরিফের সাথে এক মত উনারা যে এক ঘাটের মাঝি তা আমার বুঝা হয়ে গেছে।

রাইসা সোফাতে বসে আছে।দাদু,রোহান চাচু,ঈশানি চাচী আর আমিও বসে আছি।মিস সাবিনা গেছে সকালের নাস্তার ব্যবস্থা করতে।আরিফ দাড়িয়ে আছে।

ওকে তো চিনলাম না?(রাইশা আমাকে ইশারা করে)

ও হচ্ছে।আমাদের আভির স্ত্রী।এই বাড়ির বড়ো নাতবৌ।(দাদু)

ওহ।আভি বড়ো হয়ে গেছে আর ওর বিয়ে হয়ে গেছে আর আমি জানিও না।(রাইসা)

জানতে হলে আত্মীয় স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে হয়।তোর মত না হটাৎ উধাও হয়ে যাওয়া।(রোহান)

এখন আর হবো না ভাইয়া।এখন যা করার সবার সামনে থেকে করবো।(রাইশা)

কেনো জানি আমার রাইসা ফুপির এই কথাটা খুব একটা ভালো লাগলো না।(আমি মনে মনে)

তা আমাদের আভি কোথায়?(রাইশা আমাকে উদ্দেশ্য করে)

ও ব্যবসার কাজে বাহিরে গেছে।এক মাস হলো।(আমি)

ব্যবসা কাজেই গেছে নাকি অন্য কাজে গেছে?খেয়াল রেখেছো?(রাইশা)

মানে?(আমি ভ্রু কুঁচকে)

না মানে!এখনকার ছেলে মেয়েরা তো যেই হয়েছে।বলে এক করে আরেক এই জন্য বললাম।(রাইশা এক গাল হেসে)

আমার আভির উপর ভরসা আছে। ও কখনই এমন করবে করবে না।(আমি)

বাহ।ভালো তো ভালোবাসে যদি বিশ্বাস না থাকে তাহলে কি আর হয়।আমিও তো কাউকে ছোটো বেলা থেকে ভালবাসতাম।কিন্তু এতো ভালোবাসার পরও তাকে নিজের কাছে বাঁধতে পারলাম না।(রাইশা কথা গুলো বলার সময় আমি উনার চোখের দিকে ভয়ঙ্কর রাগ আর জিদ দেখতে পেলাম)

ঈশানি উনার কাধে হাত রাখতেই উনি যেনো উনার রাগের ঘোর থেকে বেড়িয়ে আসলো।একদম স্বাভাবিক ভাবেই আবার বলতে শুরু করলো,,
থাক বাদ দাও।ওইসব কথা।এখন রোহান ভাইয়া,, তোমার কয়টা ছেলে মেয়ে?

আমার এক ছেলে এক মেয়ে।ছেলেটা বাহিরে গেছে আর মেয়ে কোচিং এ গেছে।(রোহান)

ও তাহলে তো সুখের সংসার।তা বড়ো ভাবী কোথায়?(রাইশা)

পরেই উনাকে আভি মা বাবার বিচ্ছেদের কথা বললো ঈশানি।

ও তাহলে তো খুব খারাপ হলো।এই জন্যই বলছিলাম তোমাকে একটু সাবধানে থেকো আভিকে নিয়ে!পড়ে না দেখা গেলো আদি ভাইয়া আর সুমু ভাবীর মতো তোমাদেরও আলাদা হয়ে যেতে হয়।আভি তো ওদেরই সন্তান(রাইশা)

আমি রাইসার কথা শুনে কিছু বলতে যাবো তার আগেই দাদু বলে উঠলো

কি যা তা বলছিস?আভি আর আস্থা একে অপরকে ভালোবাসে।ওরা আলাদা হবে কেনো?(দাদু রাগ নিয়ে)

আদি আর সুমুও তো একে অপরকে ভালোবাসত।(রাইশা)

আমাদের মধ্যে বিশ্বাস আছে।আভি আর আমি আলাদা হবো না।(আমি মুচকি হাসি দিয়ে)

তাহলে তো ভালোই।এমন ভালোবাসা থাকলে বুঝি আলাদা হওয়া যায়(রাইশা আমার দিকে তাকিয়ে রহস্যময়ী হাসি দিয়ে)

আমি এখনও উনার হাসির কারণ বুঝলাম না।চুপ করে রইলাম।
কিছুক্ষণ পর মিস সাবিনা এসে বললো খাবার তৈরি।সবাইকে খাবারের টেবিলে যেতে বললো।আমরা সবাই দাড়ালাম খাবারের টেবিলে যাবো বলে কিন্তু পরেই রাইশা ফুপি এসে আমার কানে কানে বললো,,,
বাকি সম্পর্ক ঠিক করতে করতে নিজের সম্পর্ক নাকি আবার নষ্ট হয়ে যায়
বলেই উনি চলে গেলো।

আমি সেখানেই দাড়িয়ে রইলাম।উনি কি বলে গেলো আমাকে?এমনি আমি আমার সম্পর্ক নিয়ে খুব চিন্তিত এখন উনি এসে আমার চিন্তা আরোও বাড়িয়ে দিলো।কিন্তু আস্থা চিন্তা করলে চলবে না।যেটা যেভাবে চলছে চলতে দেয়াই ভালো।

আস্থা আসো।খাবে(মিস সাবিনা)

আসছি মিস সাবিনা।
বলেই গিয়ে খাবারের টেবিলে বসলাম।খাবার খেয়ে নিজের রুমে গেলাম।বেবি আসার পর থেকেই শরীর খুব ক্লান্ত লাগে।


অন্যদিকে
রাইসা আদির রুমে গিয়ে দেখলো আদি হুইলচেয়ারে বসে আছে।
ভাই।আমার আদরের আদি ভাইয়া।(রাইশা আদির পাশে বসে)শুনেছি তুই নাকি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছিস?আমি তো চাই না তুই সুস্থ হয়ে উঠ।আমি চাই তুই আরো কষ্ট কর।(আদির গাল চেপে ধরে)।কি দরকার ছিল ওইদিন জিসানকে বিয়ের আসর থেকে পালাতে সাহায্য করার?আমি তো জিসাকে কতো ভালবাসতাম তুই জানতি।তাহলে কেনো ওকে পালাতে দিলি? হ্যাঁ আমি মানছি আমি জিসানকে ব্ল্যাকমেইল করেছি কলিকে কিডন্যাপ করে।তো কি হয়েছে? ও তো রাজি হয়েছিলো আমাকে বিয়ে করতে।তবুও কেনো তুই ওকে সাহায্য করতে গেলি।আমি তো তোর বোন ছিলাম তাই না?আসলে কি তুই আমাকে কখনও নিজের বোন ভাবিস নি।তুই কি?চাচাও আমাকে নিজের মেয়ে ভাবে নি।যদি ভাবতো তাহলে ওই কলির বেস্টফ্রেন্ড সুমুকে এই চৌধূরী বাড়ির বউ হিসেবে মেনে নিত না।সুমুই ছিলো কলি আর জিসানের মিলের কারণ।ঠিক যেমন কলি ছিলো তোর আর সুমুর এক হাওয়ার কারণ।তোরা তো একে অপরের সাহায্য করে নিজের ভালোবাসা পেয়ে গেলি।শুধু আমিই পেলাম না আমার জিসানকে।কিন্তু কি বলতো আমাকে এতো কষ্ট ওই দুই বান্ধবী দিয়েছে আমি কি আর ওদের শান্তিতে থাকতে দিবো?দেই নি।তোকেও শান্তিতে থাকতে দেইনি।তোর বেস্টফ্রেন্ড জিসান আর কলিকেও দেইনি।আর তোর ছেলে আভিকেও থাকতে দিবো না।
রাইসার এই কথা শুনে আদির হাত পা রাগে থরথর করে কাপছে।
বাহ!হুইলচেয়ারে থাকা সত্ত্বেও কি সুন্দর রাগ দেখাচ্ছে।কিন্তু কি বলতো এখন রাগ দেখিয়ে কি হবে?তুই তো জানিস তোর আর সুমুর মধ্যে বিষের বীজ আমি বুনেছি।তোকে যে সুমুর নোংরা কাজের ভিডিওটা পাঠিয়েছি ওইটা নকল ছিলো।বেচারা সুমু চিৎকার করে কাদতে কাদতে তোকে বললো ওই ভিডিওতে ও ছিলো না ওকে একটু বিশ্বাস করতে কিন্তু তুই করলি না।এইটা তোদের ভালোবাসা?তুই ওকে বিশ্বাসই করতে পারলি না।যদি করতো তাহলে তুই আর সুমু আলাদা হতি না।এতে কিন্তু আমি কিছু করিনি তুই আবার আমাকে দোষ দিস না।কারণ বিশ্বাসের ভিত্তি তোদের নরম ছিলো।আর তাতে আমি একটু সন্দেহর আগুন ধরিয়ে দিলাম।আর তোদের সম্পর্ক ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেলো।

রাইসার কথা শুনে আদি কাদঁছে।সত্যিই সেদিন যদি ও ভালোবাসার মানুষকে একটু ভরসা করতো তাহলে আজ তাকে এই হুইলচেয়ারে বসে থাকতে হয় না।সব চেয়ে বড় কথা তার ভালোবাসার মানুষ থেকে আলাদা হতে হয় না।তাদের ছেলেটারও এমন কষ্ট হয় না।সব শুধু বিশ্বাসের কারণের।

আরে আরে।তুই এইটুকুতেই কাদছিস?(শয়তানী হাসি দিয়ে)তোকে তো আরো অনেক কিছুই বলি নি আমি এখনও।তোর অ্যাকসিডেন্ট আমার কৃতিত্ব (গর্ব করে)।আভির মনে চাচাকে(দাদু) নিয়ে ঘৃণার বীজ আমি বপন করেছি।আর সব চেয়ে বড় কথা আভির জীবনে তুলি নামের মেয়েটাকে আমিই এনেছি।আর তুই জানিস আমি তুলিকে ব্যবহার করে এখন আভি আর আস্থার সম্পর্ক খারাপ করবো।যেমন করে আমি তোর আর সুমুর করেছি।কিন্তু তোর বৌমা অনেক চালাক তোর ছেলেকে অনেক বিশ্বাস করে।তোর ছেলেও তোর বৌমাকে অনেক ভালোবাসে।কিন্তু কি বলতো দুইজনের মধ্যে যদি তৃতীয় ব্যাক্তি আসে তাহলে তো যতই বিশ্বাস আর ভালোবাসা থাকুক তা শেষ হয়ে যায়।তোর ছেলে আর তোর বৌমারও হবে।কিন্তু আমার একটু কষ্ট হবে।ওদের হনিমুনেও ছোট্ট একটা নমুনা দিয়েছিলাম। খুব ভালো করেই সামলে নিয়েছিলো তোর বৌমা আর তোর ছেলে।তবে আর কতো দিন।
ও হ্যাঁ এইসব তো তুই জানতি তবুও রিপিট করলাম।এখন রিপিট করি যেগুলো তুই জানিস না।আর তা হলো গিয়ে জিসান আর কলির মেয়ে এমনি এমনি মরেনি।ওকে আমি নিজের হাতে(হাত গুলো দেখিয়ে)এই হাত গুলো দিয়ে জেন্ত কবর দিয়ে এসেছি।ওদের অনেক প্রত্যাশিত সন্তান যখন ওদের কাছে থাকবে না,,যখন সন্তানের লাশ থাকবে তখন ওরা বুঝবে ভালোবাসা আর প্রত্যাশিত মানুষ হারালে কেমন লাগে!আসলে কি বলতো তুই হয়তো ভাবছিস?এতো গুলো জীবন নষ্ট করে,,নরক বানিয়ে আমার কি লাভ হয়েছে?শান্তি পেয়েছি আমি।তোদের জীবনকে নরক বানিয়ে শান্তি পেয়েছি আমি।আমাকে ধোঁকা দেয়া না!এখন সব গুলোর জীবন আমি জাহান্নাম বানিয়ে দিবো।আজ এইটুকু থাক।বাকি গুলো না হয় পরেই তোলা থাক।আর তুই সুস্থ হো।আমি দিলাম তোকে সুস্থ হওয়ার সুযোগ।কিন্তু যে তোকে সুস্থ করার দায়িত্ব নিয়েছে সে সুস্থ থাকবে তো??

রাইসার এই কথা শুনে আদির চোখে ভয়ের ছাপ স্পষ্ট দেখা গেলো।

আরে শুধু ওয়ার্নিং এ ভয় পেয়ে গেলি।পুরো ষড়যন্ত্র তো আবি বাকি হ্যায় মেরি ভাই।
বলেই হাসতে হাসতে রাইশা বেরিয়ে গেলো।


আমি বিকালে রুমে বসে টিভি দেখছি।এখন কি করতে ভালো লাগে কি করতে ভালো লাগে না।তাই বুঝতে পারি না।আমি বসে বসে চ্যানেল চেঞ্জ করছি তখনই দাদু দরজায় টোকা দিলো।
আসুমনি?(দাদু)

আরে দাদু আসুন।আপনি আসবেন তা আবার জিজ্ঞেস করতে হয়।(আমি ভালো করে বসে)

আরে এতো বিনয়ী হতে হবে না।এখন শুনো তোমার সাথে কিছু কথা ছিলো।(দাদু চিন্তিত হয়ে)

কি হয়েছে দাদু আপনাকে অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে?(আমি চিন্তিত হয়ে)

আস্থা।আমার মনে হয় এই বাড়িতে যা কিছু অশুভ ঘটছে সব কিছুর পিছনে রাইসা আছে।(দাদু)

কেনো?আপনার কেনো এটা মনে হয়?(আমি অবাক হয়ে)

কারণ রাইসা যতই মুখে হাসি নিয়ে থাকুক না কেনো ভিতর ভিতর ও আমাকে ওর মা বাবার মৃত্যুর কারণ ভাবে।(দাদু)

কেনো?(আমি)

ওর মা বাবার মৃত্যু একটা অ্যাকসিডেন্ট।কিন্তু অনেক বছর পর্যন্ত ও আমাকে এর জন্য দায়ী করেছে। পরে ও বুঝে গেছে আমি এর পিছনে ছিলাম না।ওইটা সত্যিই একটা অ্যাকসিডেন্ট।এখন কেনো জানি ওর হঠাৎ ফিরে আসা আমার ভালো ঠেকছে না।(দাদু চিন্তিত হয়ে)

আপনি একদম চিন্তা করবেন না।আমি,,আপনি,,আভি,,আয়ুশ,,আর আরশি মিলে সব ঠিক সামলে নিবো।(আমি মুচকি হাসি দিয়ে)

একটা হাসি দিয়ে সব সমস্যা কি করে সমলাস বলতো?(দাদু আমার মাথায় হাত বুলিয়ে)

এই ভাবে
বলেই এক গাল হাসি দিলাম।


দাদু নিজের রুমে চলে গেলো।কিন্তু এখন চিন্তা আমার মাথা থেকে কখন যাবে?বেবি তোর মা না টেনশন করতে চায় না কিন্তু কি বলতো?তোদের বাবার পরিবারটা এমন শুধু টেনশন আর টেনশন।আচ্ছা চল আজ টেনশনকে সাইডে রেখে তোর বাবাকে একটা ফোন দেয়া যাক।যদি এই ফোনটা ধরে,,,
ফোন বাজতেই আভি ফোনটা ধরে ফেললো।
হ্যালো।(আভি)

বাহ!আজ প্রথম রিং বাজার সাথে সাথেই ধরলে?(আমি)

কি হয়েছে বল?না হলে কেটে দিচ্ছি।(আভি)

আরে,,,এতো কিসের রাগ তোমার?(আমি অবাক হয়ে)

রাগ না।কিসের জন্য ফোন করেছো বলো?(আভি)

আমিও মুখ ভেংচি দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম
কবে আসবে?

আজ রাতের ফ্লাইটে আসবো।(আভি)

কিহ!(আমি বিছানায় দাড়িয়ে উঠলাম)

এতে এতো এক্সসাইটেড হাওয়ার কি আছে?আমি আজ রাতেই আসছি।কাল সকালেই দেশে।(আভি)

আমি এক্সসাইটেড হয়ে কিছু বলতে যাবো তার আগেই ফোনের ওপাশ থেকে কে যেন মেয়েলি কন্ঠে ডাক দিলো
আভি,,

আসছি(আভি মেয়েটাকে উত্তর দিলো)।এই শুনো আমি এখন রাখছি।
বলেই আভি ফোনটা কেটে দিলো।

আভি একবারও জিজ্ঞেস করলো না আমি কেমন আছি।আর ওর সাথে মেয়েটা কে ছিলো?এতো মিষ্টি করে ডাক দিলো যাই হোক।আসুক কান ধরে জিজ্ঞেস করবো কে ছিলো?আর আমাকে এতো দিন অবহেলা করার শাস্তিও পাবে।মা আর বেবি মিলে শাস্তি দিবো।ওকে বেবি?

সারা রাত আমার এক্সাইটমেন্ট এর কারণে ঘুম হলো না।আরশি আর আয়ুশ তো সেই খুশি ওদের ভাইয়া আসবে বলে।


সকালে
আসু বস।আভি আসলে বাসায়ই আসবে।(রোহান)

চাচু এখনও আসলো না কেনো?(আমি দরজার সামনে পায়চারি করতে করতে)

আমি তো বলেছিলাম গিয়ে নিয়ে আসি তুমিই তো দিলে না।(আয়ুশ)

তোমার ভাই কি আমাকে বলেছে কখন তার ফ্লাইট ল্যান্ড হবে?তাহলে তুমি কখন যাবা আর গিয়ে নিয়ে আসবে?(আমি)

তাও ঠিক!(আয়ুশ)

কিন্তু তুমি তো বসো ভাবী(আরশি)

না।দেখি আসে কি না?(আমি)

আজকালের ছেলে মেয়ে বিচ্ছেদে যেনো তাদের সহ্যই হয় না(দাদু)

সাজান সাজান তেরি দুলহান তুজকো পুকারে আ জা। আকে মেরি হাতো মে মেহেন্দি তুহি রাচা যা।(আরিফ গান গাইতে আর নাচতে শুরু করলো)

আমরা সবাই হাসছি উনার গান আর নাচ দেখে তখনই একটা গাড়ি এসে গেটের সামনে থামলো।
আমি হাসি মুখে তাকিয়ে আছি আমার সাজান সত্যি আসছে
গাড়িতে আভি নামলো।আমার কলিজা যেনো শান্ত হয়ে গেলো এতো দিন পর ভালোবাসার মানুষকে রেখে। ব্ল্যাক শার্ট আর ব্লু জিন্স প্যান্ট পড়ে একদম হিরো লাগছে আমার বর টাকে।কিন্তু আস্থা ওর সুন্দর চেহারাতে ফিদা হলে চলবে না।উনাকে তো উনার শাস্তি পেতেই হবে রোমান্টিক শাস্তি।বেবি দেখ তোর বাবা।আমি আর আমার বেবি আভিকে তখনই আভির পিছন থেকে একটা মেয়ে বেরিয়ে আসলো।

আর তা দেখে পিছন থেকে আয়ুশ বলে উঠলো তুলি।আমি এই নামটা শুনে পিছনে তাকাতেই দেখি সবাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।আর সবার মুখেই ভয়ের ছাপ।তারমানে যে মেয়েটা আভির সাথে গাড়ি থেকে নামলো সে তুলি।আমি আবার সামনের দিকে তাকালাম।আর যা দেখলাম তাতে আমার পায়ের তলার মাটি সরে গেছে।আভি আর তুলি একে অপরের হাত ধরে হাসতে হাসতে আসছে।তাহলে কি এইখানেই শেষ আমার আর আভির সম্পর্ক??

।#Marriage_With_Benefits
#Part_42(#Bonus_Part)💛🖤
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আমি সোফায় বসে আছি।মনটা পাথরের মতো ভারী হয়ে উঠেছে।ভাবতে পারিনি বেচেঁ থাকতে ভালোবাসার মানুষকে অন্যর হতে দেখতে হবে।কিন্তু আজব ওইটাও এখন আমার কপালেই ছিলো।যার জন্য এতো প্রতীক্ষা সেই আজ মন ভেঙ্গে দিলো। প্রতীক্ষার অবসান হলো মন ভেঙ্গে।

আভি তোর মাথা খারাপ হয়ে গেছে?তুই কি বলছিস তুই আস্থাকে ডিভোর্স দিতে চাস?(নিহাল)

কি অদ্ভুত তাই না!নিহাল ভাইয়া আমাদের বিয়েতেও ছিলো আর নিহাল ভাইয়া আমাদের ডিভোর্সেও আছে!উনি আমাদের মধ্যে সব কিছুর সাক্ষী হয়।এইটার আবার বাদ পড়বে কেনো?

তুই কি বাংলা কথা বুঝিস না?আমাদের বিয়ে তো জাস্ট একটা কন্ট্রাক্ট আর সেটা তোর থেকে ভালো তো কেউ জানে না!(আভি)

আভি কি বলছিস তুই?তুই তো আস্থাকে ভালোবাসিস।(নিহাল অবাক হয়ে)

ভালোবাসতাম।এখন বাসি না।যেহেতু আমার জীবনে তুলি এসে পড়েছে আস্থাকে আমায় কি দরকার?(আভি)

দরকার?তারমানে আস্থা তোর প্রয়োজন ছিল প্রিয়জন না?(নিহাল চোখ ছলছল করছে)

হ্যা।ও আমার প্রয়োজন ছিলো।আর প্রয়োজন ছিলো বলেই তো marriage with benefits কন্ট্রাক্ট করে ছিলাম।না হলে কি আর করতাম!
এইটা বলতেই আভির গালে কষে একটা চড় পড়লো।আর সেই চড় আর কেউনা দাদু মারলো।

তোর সব কিছু আমি মেনে নিয়েছিলাম।ভেবেছিলাম যা করছিস তা ছেলে মানুষি।কিন্তু না তুই যা করছিস তা হচ্ছে অমানুষিক কাজ।আমার উপরের রাগের কারণ আমি বুঝতে পারছি কিন্তু ওই মেয়েটা কি দোষ করছে?কেনো ওর মন নিয়ে খেলা করছিস তুই?(দাদু চিৎকার করে)

একদম চিৎকার করবেন না আরমান চৌধূরী।মন ভাঙার কথা বলছেন না?আপনার তখন মন ভাঙার কথা মনে পড়ে নি যখন কৌশল করে আস্থাকে আমার বউ বানিয়েছিলেন?যখন ষড়যন্ত্র করে আমার জীবন থেকে তুলিকে সরিয়েছিলেন?আমি আগে থেকেই জানতাম আস্থাকে আপনি এনেছেন আমার জন্য।আর তাই আমিও শুধু আপনার সাথে একটু তাল মিলালাম।(আভি)

দাদু যেনো আভির কথা শুনে আমার মত পাথর হয়ে গেছে।দাদু পরে যেতে নিলেই আরিফ তাকে ধরে ফেললো।

আভি এইসব কি বলছিস তুই?(নিহাল ভাইয়া অবাক হয়ে)

কেনো?বুঝতে পারছিস না?তুই তো আমার সাইডে হয়েও উনার হয়ে কাজ করেছিস!বন্ধু আমার হয়ে উনার কাজ করতে তোর বিবেকে বাধে নি।তুই কি করে পারলি নিজের বন্ধুকে ধোঁকা দিতে?(আভি দাত চেপে চেপে)

যা করেছি।তোর ভালোর জন্যই করেছি।এই শাকচুন্নি(তুলি) এর হাত থেকে বাঁচানোর জন্য যদি আমাকে আরো মিথ্যে বলতে হয় তাহলে আমি করবো।সব হয়েছে তোর(তুলি) জন্য,,,তুই যদি না থাকতি আভির জীবনে তাহলে আর কিছুই হয় না।
বলেই নিহাল ভাইয়া তুলির কাছে এগুতে থাকে তখনই তুলি গিয়ে আভির পিছনে লুকায়।

কি হলো ওর পিছনে লুকাচ্ছিস কেনো?বের হ আজ তোর একদিন কি আমার একদিন।(নিহাল ভাইয়া তুলিকে টানতে শুরু করলো)

ছাড়ো।আভি ওকে বলো আমার লাগছে।
বলেই তুলি নেকা কান্না করতে শুরু করলো।ওমনি আভি গিয়ে নিহাল ভাইয়াকে ঘুষি মারলো।

তুই আমাকে মারলি?(নিহাল ভাইয়া অবাক হয়ে)

তুই আমার সাথে যা করেছিস তার জন্য তোকে খুন করে ফেলা উচিত।তোর সাহস কি করে হয় আমার ভালোবাসার মানুষকে কষ্ট দেওয়ার।(আভির রাগে মাথার রগ ফুলে যাচ্ছে)

আমি এতো ক্ষন ধরে সব কিছু দেখছিলাম,,সবার কথা শুনছিলাম।আভিকে দেখে কেনো জানি অবাক হচ্ছি না।মনে কোনো অনুভুতি হচ্ছে না।মনেই হচ্ছে না মানুষ আমি।নিজেকে পুতুল মনে হচ্ছে যার যেমন মন চাচ্ছে আমাকে নিয়ে খেলছে পরেই দূরে ফেলে দিচ্ছে।নিহাল ভাইয়ার গায়ে হাত তুলার পরেই নিহাল ভাইয়া আবার আভিকে মারতে আসে।ওদের মধ্যে মারপিট চলছে আয়ুশ আর রোহান চাচু মিলে আটকাতে চেষ্টা করছে।কিন্তু দুজনের শরীরেই অনেক শক্তি ওদের থামানো যাচ্ছে না।

অনেক হয়েছে!(আমি সোফা থেকে দাড়িয়ে)

আস্থা।(নিহাল)

আমি আভির সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম
ডিভোর্স পেপারটা দাও।(আমি)

আভি কিছু না বলেই ডিভোর্স পেপারটা আমার হাতে ধরিয়ে দিলো।

ভাবী তুমি এতে সাইন করবে?(আয়ুশ অবাক হয়ে)

আয়ুশ মানুষ সম্পর্ক তৈরি করে ভালো থাকার জন্য।আর যেই সম্পর্কের ভিত্তিই হয় একটা কন্ট্রাক্ট তা কি করে ঝড় তুফাতে টিকতে পারে?(আমি শুকনো হাসি দিয়ে)

আমি পেপারটা সাইন করে আভির দিকে এগিয়ে দিলাম।
সবাই আমাকে নিয়ে পুতুল খেললো।যার জন্মই পুতুল খেলায় হয়েছে তার জীবন নিয়ে তো সবাই পুতুল খেলবেই।কিন্তু বিশ্বাস করো আমি জানতাম না তুমিও আমাকে নিয়ে খেলবে।যদি জানতাম আমিও তোমার সাথে খেলতাম।তবে কি বলতো ভালোই হয়েছে কেউ জানায় নি তারা আমাকে নিয়ে খেলছে যদি জানাতো তাহলে সবার জন্য আমার ভালোবাসাও একটা খেল হতো।কিন্তু এখানে কেউ বলতে পারবে তাদের জন্য আমার ভালোবাসা কোনো নাটক ছিলো।এই পরিবারের প্রতি করা সকল কিছু আমার একটা নাটক ছিলো।আর এইটাই হলো আমার প্রাপ্তি।আমি হাসি মুখে তোমাকে মুক্ত করে দিলাম।

আভি শুধু আমার দিকে তাকিয়ে আছে।আগে থাকলে এই চোখের ভাষা আমি পরে ফেলতাম কিন্তু এখন এই চোখের ভাষা পড়া তো দূরে থাক তাকাতেই আমার ঘৃণা করছে।

এই ডিভোর্সের একটা কপি খান মেনশনে পাঠিয়ে দিবেন। মি আভি চৌধূরী(আমি)

আমি দাদুর কাছে গেলাম।
মাফ করে দে দিদিভাই।ভাবতে পারি নি ওর মনে এতো বিষ থাকবে(বলেই দাদু আমার হাত ধরে কান্না করছে।কিন্তু আমার কোনো কান্না পাচ্ছে না।ভালোই লাগছে এই বেনিফিটস্ বিয়েটা ভেঙ্গে গেলো)

দাদু একটা কথা রাখবে?(আমি)

কি কথা?(দাদু)

আভি আর তুলিকে এই বাড়ি থেকে বের করবে না।(আমি)

কি বলছিস!ওদের কখনও এই বাড়িতে আমি রাখবো না।বের করে দিবো।(দাদু রাগে)

আমি দাদুর পাশে বসে
বিয়েতে আমাকে কোনো উপহার দেও নি।এখন ডিভোর্সে এইটাই চাই।ওদের এই বাড়িতে তোমাদের সাথেই থাকতে দাও।(আমি)

তুই যা চাস।
বলেই দাদু একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো।

আমি বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালাম তখনই আভি বলে উঠলো
তুমি চাইলে এই বাড়িতে থাকতে পারো।

না। মি:আভি চৌধূরী।এইটুকু উপকার আপনি না করলেও চলবে।
বলেই বাড়ি থেকে বেরুতে নিবো তখনই সামনে পড়লো ডক্টর জয়।

ডক্টর জয়?(আমি অবাক হয়ে)

চলো আস্থা।একদম ঠিক সিদ্বান্ত নিয়েছো।এখানে থাকার আর কোনো দরকার নেই তোমার।
বলেই ডক্টর জয় আমার হাত ধরে নিয়ে চলে আসলো।এই বাড়িতে ঢুকার সময়ও আমি খালি হাতে ছিলাম কিন্তু এখন আমার হাতে কতো গুলো সম্পর্ক আছে।আমি পিছনে তাকাতেই দেখি আরশি কাদতে কাদতে আয়ুশ এর বুকে মুখ লুকালো।

আয়ুশও কান্না করছে এই প্রথম ওকে কান্না করতে দেখছি।আরিফও কান্না করছে যেই মানুষকে সব সময় হাসতে দেখছি সেই মানুষও আজ কান্না করছে আমার জন্য।এতেই বুঝা যায় আমি তাদের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ!মিস সাবিনা,, যাকে আমি কখনো না কাদতে দেখছি না কখনও হাসতে দেখছি আজ সেও আমার জন্য কান্না করছে এইটাই আমার প্রাপ্তি।রোহান চাচু আর দাদুও কাদঁছে।আশ্চর্য ব্যাপার হলো ঈশানির চাচীর মুখেও হাসি নেই।উনার তো খুশি হওয়ার কথা কিন্তু উনিও মনমরা।তবে রাইশা ফুপিকে খুব খুশিই লাগছে উনি হয়তো মনে মনে ভাবছে উনি সফল হতে পেরেছে।তুলির মুখেও হাসি।
ভালোবাসার মানুষটিকে দেখে এখন কিছুই বলতে পারছি না।উনি খুশি না বেজার।খুশিই তো হবার কথা ছিলো।


গাড়িতে বসে আছি
আভি আর তুলিকে একা থাকতে দেয়া ভালো হবে না।তাই দাদুকে বুঝিয়ে ওদের চৌধূরী বাড়িতে রাখছি।এখানে আভির ক্ষতি করতে তুলি একশো বার ভাববে।কেনো জানি মনে হচ্ছে আভি ওইসব ইচ্ছে করে করছে না!ওর উপর কেনো জানি বিশ্বাস রাখতে এখনও মন বলছে।এইটাই হয়তো ওর জন্য আমার ভালোবাসা।মন এখনও মানতে চাইছে না।আভি কেনো এইসব করছো তুমি?আমি আজ তোমাকে বাবা হওয়ার খুশির সংবাদ দিতাম কিন্তু যেখানে নিজেরই ভবিষ্যত অনিশ্চিত সেখানে সেই ছোট্ট জানটার দোহাই দিয়ে তোমাকে বেধে রাখার চেষ্টা করাই বৃথা।আমি চাইনা আমার সন্তান কারো বেনিফিটস্ হোক।আর তা যদি হয় আমাদের সম্পর্কের তা তো কখনোই আমি হতে দিবো না।দরকার হলে ওর অস্তিত্ব তোমার কাছ থেকে লুকিয়ে রাখবো।আমাদের সম্পর্কের টানাপোড়নে আমাদের সন্তানকে আসতে দিবো না।আমি কখনই ওর ছেলেবেলা আমার বা তোমার মত হতে দিবো না।ওদের ছেলেবেলা হবে অনেক হাসি খুশি।
ভাবতেই পেটে হাত দিলাম।

আস্থা তুমি কিছু চিন্তা করো না।সব ঠিক হয়ে যাবে।(জয়)

আমি চিন্তা করছি না ডক্টর জয়।এইটা আমার বেবির জন্য ঠিক না।(আমি জানালা দিয়ে বাহিরে তাকিয়ে)

আমি যে রকম ভেবেছিলাম তুমি তার থেকে স্ট্রং তুমি আস্থা।তোমার জায়গাতে অন্য কোনো মানুষ থাকলে হয়তো এতো ক্ষন অনেক কিছু করে ফেলতো।(জয় মনে মনে)


চৌধূরী মেনশনে
তোর সাথে আমার বন্ধুত্ত্ব শেষ করে দিলাম আমি।
বলেই নিহাল বেরিয়ে গেলো।

ভাইয়া তোর থেকে আমি এইটা আশা করিনি।
বলেই আরশি কাদতে কাদতে উপরে চলে গেলো।

আরিফ আমাকে ধর।আমি উপরে গিয়ে একটু বিশ্রাম নিতে চাই।আমার ভালো লাগছে না।
পরেই আরিফ দাদুকে বিশ্রাম নিতে নিয়ে গেলো।

আয়ুশ রাগে বেরিয়ে গেলো।

তুলি তুমি রুমে যাও।আমি গিয়ে একটু বাবাকে দেখে আছি।(আভি)

ওকে।বেবি।
বলেই তুলি আভিকে রেখে রুমে চলে গেলো।


মিস সাবিনা আদিকে ঔষুধ খাওয়াচ্ছিল।
মিস সাবিনা বাবার খবর কেমন?(আভি)

ভালো।আস্থা ওর কথা রেখেছে ও বলেছিলো আদি স্যারকে সুস্থ করে দিবে।ও ওর কথা রেখেছে আদি কিছুদিন পরেই সুস্থ হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।(মিস সাবিনা দাত চেপে চেপে)

তা তো ভালোই।ধন্যবাদ মিস সাবিনা বাবার খেয়াল রাখার জন্য।(আভি)

আমার এতো যোগ্যতা নেই আভি স্যার আপনার কাছ থেকে ধন্যবাদ নিবো।(মিস সাবিনা)

আপনি রেগে আছেন?(আভি)

আমি এই বাড়ির কাজের লোক।কাজের লোক হয়ে মালিকের উপর রেগে থাকবো ততটা যোগ্যতাও আমার নেই।
বলেই মিস সাবিনা চলে গেলো।

আভি আদির কাছে যেতেই আদি চোখ বুজে নিলো।সে আভির মুখও দেখতে চায় না।আভি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে সেখানে থেকে চলে আসলো।


রুমে
আভি বেলকনিতে দাড়িয়ে আছে।এই বেলকনিতে আস্থা প্রায় সময়ই দাড়িয়ে থাকতো আর ও এসে পিছন থেকে জড়িয়ে ধরত।কতবার বকা খেয়েছে আস্থা থেকে খালি গায়ে ঘুরার জন্য।
আজ সেই সব কথা মনে পড়ছে।যাকে নিজের থেকে বেশি ভালোবাসি সে মানুষকে নিজের হাতে দূরে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি।শুধু মাত্র যাতে সে সুরক্ষিত থাকে।আমাকে ক্ষমা করো আস্থা।আমি সব সত্য জেনে গেছি যে দাদু কিছুই করেনি যা করেছে সব রাইসা ফুপি করেছে।আমি অযথাই দাদুকে ভুল বুঝেছিলাম।কিন্তু বিশ্বাস কোরো সত্যি কথা জানার পরও আমার কিছু করার ছিল না।আমার হাতে যে প্রমাণ নেই।এখন আমাকে প্রমাণ জোগাড় করতে হবে।আর এই জন্য তুলিকে দরকার ওর মুখে থেকে কৌশলে আমাকে সত্যিই বের করতে হবে যাতে রাইসা ফুপি টের না পায়।না হলে উনি আমার শেষ আশা তুলি ওকেও মেরে ফেলবে যেভাবে উনি ওই ড্রাইবার আর চোরটাকে মেরেছিলো।তুলির মৃত্যুতে আমার আফসোস নেই কিন্তু ও মরলে আমি একটা সাক্ষী হারিয়ে ফেলবো।অনেক কিছুই তুলি জানে ফুপির বেপারে আর তা আগে আমায় জোগাড় করতে হবে আর সেইটাই হবে ফুপির বিরুদ্ধে আমার প্রমাণ।আর এই জন্য তোমাকে আর আমাকে আলাদা থাকতে হবে।কারণ ফুপি যেই ভয়ানক মানুষ উনি আমাকে থামানোর জন্য তোমাকে মারতেও পিছ পা হবে না।আর এখন উনি যেহেতু এই বাড়িতে সেহেতু তোমাকে মেরে ফেলা উনার কাছে পানির মত সহজ।আমি তোমাকে হারাতে পারবো না।তুমি যথেষ্ট করেছো একা লড়াই এখন আমাকে করতে দাও।আমি তোমাকে এইসব বলতেও পারবো না।বললে তুমি নিজে থেকে আমাকে সাহায্য করতে আসবে আর আমি মানা করলেও নিজে থেকে কিছু করতে চাইবে আর তা যদি ফুপি জানে তাহলে উনি তোমাকে যদি কিছু করে ফেলে তাহলে কি হবে?না না আমি এইটা কিছুতেই হতে দিবো না।দরকার নেই আমার তোমার সাহায্য।পড়ে যদি আমায় তোমাকে হারাতে হয়। আমার যা হওয়ার হক কিন্তু তোমার কিছু হতে দিতে পারবো না।আর এই জন্য আমার যা করার করবো।দরকার হলে তোমার মনে আমার জন্য ঘৃণা বাড়িয়ে দিবো।কারণ ফুপির রাগ আমার আর আমার পরিবারের প্রতি।আর তোমাকে সেই রাগের ভাগীদার হতে আমি কিছুতেই দিবো না।এই সব কিছু শেষ হলে দরকার পড়লে আবার তোমাকে আমার ভালোবাসার মায়ার বাঁধবো তবুও এখন তোমার দূরে থাকায় শ্রেয়।
আভি বেলকনিতে দাড়িয়ে কথা গুলো ভাবছে তখনই
পিছন থেকে তুলি জড়িয়ে ধরলো
কি ভাবছো বেবি?ওই মেয়ের কথা।(তুলি)

বেবি ও এতো ইম্পর্ট্যান্ট না।যে আমি ওর কথা ভেবে আমাদের ইম্পর্ট্যান্ট সময় বরবাদ করবো।আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।তুমি রেস্ট নাও।আমি গেস্ট রুম তৈরি করতে বলেছিলাম।এতক্ষণে বোধ হয় হয়ে গেছে।তুমি গিয়ে রেস্ট নাও।
বলেই আভি তুলিকে ছাড়িয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলো।


আসতে পারি?(তুলি)

তুমি?এখন?এখানে কি করছো?(রাইসা ভ্রু কুঁচকে)

এমনি!দেখলেন আভি আমাকে কতো ভালোবাসে!(তুলি বিছানায় বসতে বসতে)

ভালোবাসা?তোমার কি মনে হয় একটা কাগজের টুকরার উপর সাইন করে দিয়েছে বলে আভি আর আস্থার সম্পর্ক শেষ?(রাইশা বেলকনি থেকে উঠে এসে তুলির সামনে দাঁড়িয়ে)

মানে?(তুলি ভয়ে ভয়ে)
.
.
চলবে,,,,
চলবে,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here