Marriage_With_Benefits part 39+40

#Marriage_With_Benefits
#Part_39(#Surprise_part_2)
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
আয়ুশ এর চিৎকার শুনে আমি কল্পনার জগৎ থেকে বের হলাম।

তোমরা কেউ জানো না। নার্স কোথায় গেছে?(আয়ুশ)

না।স্যার।উনি কখন আমাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে চলে গেছে আমরা জানি না।(সিকিউরিটি মাথা নিচু করে)

আয়ুশ কি হয়েছে?(আমি সিড়ি দিয়ে নামতে নামতে)

নার্স কোথায় যেনো চলে গেছে!আর এরা জানেও না।(আয়ুশ)

তারমানে কি ওই লোক জেনে গেছে আমরা ওর ব্যাপারে খোঁজ নিচ্ছি এই জন্য উনি নার্সকে আগে থেকেই সরিয়ে ফেলতে চায়।(আমি মনে মনে)

ভাবী কি ভাবছো?(আয়ুশ)

না।কিছু না।খোঁজ নিয়ে দেখো কোথায় আছে?যদি ও পালিয়ে থাকে তাহলে কেউ তো ওকে সাহায্য করেছে এই বাড়ি থেকে পালাতে আর সে এই বাড়ির একজন।(আমি)

এই বাড়ির কিন্তু কে?(আয়ুশ)

দেখি।রহস্য তো খুলবেই।(আমি সোফায় বসে)

আয়ুশও এসে আমার পাশে বসলো।

চিন্তা করো না।সব ঠিক হয়ে যাবে।(আমি আয়ুশ এর কাধে হাত রেখে)

আয়ুশকে তো বলে দিলাম সব ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু নিজেকে কি করে বুঝাবো?ওইটা কোনো গলির গুন্ডা মাস্তান না।উনি হচ্ছে মাস্টার মাইন্ড।আমি তো তার প্ল্যানিং এর কাছে কিছুই না।উনি সব সময় এক স্টেপ আগে আমার থেকে।আভি কোথায় তুমি?আমার খুব ভয় হচ্ছে!কি হবে?তুমি থাকলে এই মাস্টার মাইন্ডকে ঠিকই ধরতে পারতে।তাড়াতাড়ি আসো।


সন্ধ্যায়
আমি আজ সারাদিন আভির ফোনে কল করে যাচ্ছি কিন্তু আভি ফোন ধরছেই না।অন্যদিকে আমার চিন্তা বেড়েই যাচ্ছে।অবশেষে একটা ম্যাসেজ আসলো আর তাতে লিখা
ডোন্ট ডিস্টার্ব মি।এখন ওর উপর আমার খুব রাগ হচ্ছে মন চাচ্ছে আস্ত চিবিয়ে খাই।আসুক আমিও এমন ব্যস্ততা দেখাবো তখন বুঝবে।(আমি মনে মনে)

আমি বাবার রুমে যাওয়ার জন্য নিচে নামলাম তখনই কিছু পুলিশ আসলো।
মিস:আস্থা।আপনার সাথে একটু কথা আছে।(অফিসার)

অফিসারটি কাল রাতে আরশিকে বাঁচাতে আমাদের সাহায্য করছিলো বলে আমাকে ভালো করে চিনে।

জ্বি।বলুন।(আমি অবাক হয়ে)

আপনি কি এই মেয়েকে চিনেন?
অফিসার আমাকে একটা মেয়ের ছবি দেখিয়ে বললো।

কি হয়েছে উনার?উনি আমাদের বাসায় নার্স হিসেবে নিয়োজিত ছিল।আমার শশুরের দেখাশুনা করার জন্য।(আমি)

উনি অ্যাকসিডেন্ট করেছেন।উনাকে একটা ট্রাক পিষে দিয়েছে।(অফিসার)

আমি কথা শুনতেই চোখ বন্ধ করে ফেললাম।
ওইটা কি অ্যাকসিডেন্ট ছিলো?(আমি)

দেখে তো অ্যাকসিডেন্ট মনে হচ্ছে।কিন্তু আমরা সম্পূর্ণ তদন্ত করবো।(অফিসার)

প্লিজ।(আমি)

আপনাকেও আমাদের সাহায্য করতে হবে।(অফিসার)

অব্যশই।
পরেই অফিসার আমাকে কিছু প্রশ্ন করলো আমি তার উত্তর দিলাম।পরেই উনারা চলে গেলো।আমি উনাদের নার্সের বেপারে আমি যেগুলো জানি সেগুলো বললাম না।কারণ একটা মানুষের ব্যাপারে বেয়ানি ভাবে খোজ নেওয়ার কারণে আমরাও ফাঁসতে পারি।তাই চুপ করে থাকাই ভালো মনে করলাম।আমি সোফায় বসে গভীর চিন্তায় মগ্ন তখনই আয়ুশ বাহিরের কোথা থেকে আসলো।

ভাবী।পুলিশ কেনো এসেছিলো?(আয়ুশ)

নার্সকে কে যেনো মেরে ফেলেছে।(আমি নিচের দিকে তাকিয়ে শান্ত গলায়)

কিহ!কেউ ওকে মেরে ফেলেছে আর তুমি এখনও শান্ত হয়ে বসে আছো?(আয়ুশ)

তো কি করবো এখন?আমার মাথায় কিছুই ঢুকছে না আয়ুশ।মাথা পুরাই ফাঁকা হয়ে গেছে।
বলেই উপরে তাকাতেই দেখি আয়ুশ এর পাশে একজন দাড়িয়ে আছে।অনেক হ্যান্ডসাম,,চেহারা দেখার মতো।কিন্তু কে উনি?উনাকে তো আগে দেখি নাই।(আমি মনে মনে)

আয়ুশ।উনি কে?(আমি লোকটার দিকে ইশারা করে)

ও উনাকে আনতেই গিয়েছিলাম।উনি ডক্টর জয়।জিসান আংকেলের কাজ ছিলো তাই উনি বললেন আমি যেনো এসে ডক্টর জয়কে নিয়ে যাই।(আয়ুশ)

ওহ।আপনি তাহলে ডক্টর জয়। আসসালামু আলাইকুম।কেমন আছেন?(আমি দাড়িয়ে)

ওলাইকুম আসসালাম। আলহাদুলিল্লাহ আপনি?(জয়)

আলহাদুলিল্লাহ।আসতে কোনো সমস্যা হয়নি তো আপনার?(আমি)

নাহ।তেমন কোনো সমস্যা হয় নি।(জয়)

মিস সাবিনা।সার্ভেন্ট দের বলে একটু খাবারের ব্যবস্থা করে দেন।প্লিজ।(আমি)

এতো বেস্ত হবেন না প্লিজ।(জয়)

আরে ব্যাপার না।(আমি)

আসলে আমি আগে পেশেন্টকে দেখতে চাই।(জয়)

আসুন।
বলেই আমি উনাকে নিয়ে বাবার রুমে যাই।আমাদের সাথে আয়ুশও যায়।

ডক্টর জয় বাবাকে পর্যবেক্ষণ করে দেখলো।
উনার শরীর তো অবশ না।উনার শরীর রেসপন্স করছে কিন্তু উনি উনার শরীর নড়াচড়া করতে পারছে না।এইটাই ভাববার বিষয়।(জয়)

ডক্টর জয় বাবাকে এই ওষুধ খাওয়ানো হচ্ছিলো।(আমি ঔষুধ দের কৌটাটা এগিয়ে দিলাম)

এই ঔষুধ খাওয়ালে তো পনেরো দিনের মধ্যে উনার সুস্থ হওয়ার কথা।(জয়)

কিন্তু উনাকে এই ঔষুধের কৌটাতে ক্যাপসুল খাওয়ানো হচ্ছিলো।(আমি ক্যাপসুল ভর্তি কৌটা দিয়ে)

আমি ল্যাবে কি টেস্ট করিয়ে দেখি এইটা কিসের ক্যাপসুল!আপনি বরং উনাকে এই পিলটাই খাওয়ান।হতে পারে এই ঔষুধ পনেরো দিনের মধ্যে রেসপন্স করছে না।কিন্তু এই ওষুধ খাওয়ালে উনি সুস্থ হবে যদিও দেরিতে।(জয়)

দেরিতে কেনো হবে?(আয়ুশ)

কারণ এই ক্যাপসুলটি উনার শরীরের অনেক ক্ষতি করেছে।এখন সেটা রিকোভার হওয়ার পর এই পিলটা কাজ করবে।এই জন্য লেট হতে পারে।(জয়)

আচ্ছা। যাই হোক।বাবা সুস্থ হয়ে উঠলেই আমার জন্য অনেক।(আমি)

আচ্ছা।তাহলে আমি এসে নিয়মিত উনাকে দেখে যাবো।(জয়)

থ্যাঙ্ক ইউ।ডক্টর জয়।(আমি)

এইটা আমার কাজ।
বলেই জয় একটা মুচকি হাসি দিলো।

চলুন।আজ রাতে খাবার খেয়ে তারপর যাবেন।(আমি)

না না।থাক এতো কষ্ট করতে হবে না।(জয়)

কিসের কষ্ট? চলুন।(আয়ুশ জয়ের হাত ধরে)

আমরা হাসতে হাসতে বের হতেই সামনে পরলো ঈশানি চাচী
কে ও?(ঈশানি)

বাবার ডক্টর।(আমি)

তুমি আদির ডক্টর চেঞ্জ করছো কাউকে জিজ্ঞেস করেছিলে?(ঈশানি রাগী গলায়)

আমি যখন বাবাকে এখানে এনেছি তখনই কাউকে জিজ্ঞেস করি নি।আর এখন করবো ভাবলেন কি করে?(আমি)

তুমি কিন্তু বেশি বড় বার বাড়ছ।(ঈশানি)

এইটা আমি আমার প্রশংসা হিসেবে গ্রহণ করলাম।(আমি)

মম।ভাবীর সব কিছুতে খুদ ধরা বন্ধ করো।ডক্টর জয় চলুন।ভাবী চলো।(আয়ুশ)

পরেই আমরা ঈশানি চাচীকে সাইডে রেখে খাওয়া দাওয়া শেষ করলাম।আয়ুশ গেছে ডক্টর জয়কে দিয়ে আসতে।আর আমি গেলাম দাদুর কাছে।

দাদু।আসতে পারি(আমি)

আস্থা আসো বসো।তো হটাৎ আমার রুমে যে?(দাদু)

আমি বাবার ডক্টর চেঞ্জ করছি বলে আপনি রাগ করেননি তো?(আমি বসতে বসতে)

না রাগ করবো কেনো?তুমি বুদ্ধিমতী মেয়ে আমি জানি তুমি যা করবে ভালোর জন্যই করবে।তোমার প্রতি আমার পূর্ণ বিশ্বাস আছে।(দাদু)

দাদু।আমি কিছু জানতে চাই।(আমি)

কি জানতে চাও?(দাদু ভ্রু কুঁচকে)

আপনি কি চান?আপনি দেখাচ্ছেন এক আর আপনি হচ্ছেন আরেক।আপনার মনে কি আছে আমি তা জানতে চাই দাদু!(আমি)

দাদু একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে বলতে শুরু করলো
আমি জানতাম।তুমি একদিন না একদিন ঠিক এইটা লক্ষ্য করে আমাকে প্রশ্ন করবে।আর সেই দিন আমি সব কিছু তোমাকে বলবো।

তাহলে এখন বলুন।আমি জানতে চাই।(আমি কৌতূহল নিয়ে)

পরেই দাদু তার পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের বিয়ে আর সব কিছু আমাকে খুলে বললো।

ঘড়ির কাঁটা বারোটা ছুঁতে চললো।আমি এখনও দাদুর রুমে বসে আছি।মুখে কোনো কথা নেই কারো।এক গভীর নিস্তব্ধতা বিরাজ করছে পুরো রুমটাতে।ভাবতেই অবাক লাগে এতো কিছু দাদু করেছে।জীবন যে সারপ্রাইজে ভরপুর তা আমি সেইদিন বুঝতে পারলাম।অবশেষে নিরবতা ভেঙ্গে দাদুকে বললাম
তাহলে এখন আভি যদি জানতে পারে তাহলে তো আমাকে ঘৃণা করবে তাই না।(আমি)

দাদু আমার মাথায় হাত দিয়ে বললো
আভি খুব ভেবে চিন্তে কাজ করে। ও কখনোই অযথা তোমাকে ঘৃণা করবে না।

আপনি কত সুন্দর করে ওকে বুঝেন।তাহলে নিজের মনের কথা ওকে বলেন না কেনো?(আমি ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে)

কিছু সত্য বলতে যদি দেরি হয়ে যায় তাহলে তা মিথ্যার সমানই হয়ে যায়।আমার সত্য গুলো আভির কাছে মিথ্যার সমান এখন।(দাদু)

তুলি,,,,(গলা কাপতে লাগলো)ওকে আভি খুব ভালোবাসত?আমার থেকেও বেশি?এখন যদি তুলি ওর জীবনে ফিরে আসে আমি কি ওর অতীত হয়ে যাবো?(কথা গুলো বলতে গিয়ে আমার গলা ধরে আসলো)

তুমি ওর অতীত না ওর বর্তমান আর ভবিষ্যত।অতীত যদি কেউ হয়ে থাকে তবে সেটা তুলি।আমি আভিকে তুলিকে ভালোবাসতে দেখছি।আর আমি ওকে তোমাকেও ভালোবাসতে দেখেছি।কিন্তু যে ভাবে ও তোমাকে ভালোবাসে সে ভাবে ও কখনও তুলিকে ভালোবাসে নি।কারণ ও যদি তুলিকে সেভাবে ভালোবাসত তাহলে তুলিকে ও আটকাতে পারত ওকে রক্ষা করতে পারতো যেভাবে ও তোমাকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করে।(দাদু)

কিন্তু দাদু তুলিকে ও ভালোবাসত।আর সেটা তো ভুলার না।আর ও এটা আমার কাছ থেকে লুকিয়েছে।(আমি স্থির হয়ে)

এখন যদি তুমি ভাবো ও তোমাকে ঠকানোর জন্য লুকিয়েছে তাহলে তুমি কষ্ট পাবে।আর তুমি যদি ভাবো ও তোমাকে হারানোর ভয়ে লুকিয়েছে সেইটাও হয়।এখন তুমিই বলো তুমি কি ভাববে?(দাদু)

আমি জানি আভি আমাকে অনেক ভালোবাসে। ও কখনও আমাকে ঠকাবে না।এইটা আমার বিশ্বাস(আমি)

এইটা হলো গিয়ে স্পিরিট।যাও এখন গিয়ে ঘুমাও।অনেক দেরি হয়ে যাচ্ছে।(দাদু)

শুভ রাত্রি দাদু।
বলেই আমি উঠে বাহিরে চলে গেলাম।

আল্লাহ।ছেলেমেয়ে দুটোকে রক্ষা করো।(দাদু মনে মনে)


আমি রুমে বসে আছি।আরশি ঘুমাচ্ছে।আমি দাদুর কথা গুলো ভাবছি
এই জন্যই উনি আমাকে টাই বাঁধার কারণে বকে ছিলো।থাক বেপার না তুলি উনার প্রাক্তন আমিই আভির সব।আভি আমাকে ভালোবাসে,,শুধু আমাকে।আভি কি সত্যিই আমাকে ভালোবাসে?নাকি এই marriage with benefits এর মত ও আমাকেও নিজের বেনিফিটস্ ভাবে?
এইসব কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়লাম খেয়ালই করিনি।
সকাল আযানের আওয়াজ শুনে ঘুম ভাঙলো।আমি আর আরশি মিলে নামাজ পড়ে নিলাম।আজও মনটা ভার।এই কয়দিন আভির সাথে ভালোকরে কথা হলো না।নামাজের মোনাজাত করার সময় কেদে উঠলাম।আমি আবার বাবাকে নিয়ে বাগানে গেলাম সেখানে কালকের মতো সবাই খেলছে।খেলার পালা শেষ করে খাবারের পালা শেষ করলাম।বাবাকে ঔষুধ খাওয়ানোর দায়িত্ব এইবার আমি আর মিস সাবিনা নিলাম।আমি না থাকলেও এইবার মিস সাবিনাই বাবার ঔষুধ খাওয়াবে।


সকাল সকাল বাবার(পালিত) ফ্ল্যাটে গেলাম।
বাবাকে ডিসচার্জ করে আমি ফ্ল্যাটে নিয়ে আসি।আভি এই ফ্ল্যাটটা আমাকে দেয় যাতে আমি বাবাকে এখানে এনে রাখতে পারি।বাবা আর উনার দেখাশুনা করার জন্য কেয়ারটেকার থাকে।আমার পালিত মা আর বোন মাঝে মাঝে আসে বাবার সাথে দেখা করতে কিন্তু বাবা তাদের এখনও মাফ করেনি আমার উপর করা অত্যাচারের কারণে।তবে আমিও ওদের মাফ করিনি।

বাবা। ও বাবা তুমি রেডি হয়েছো তো?(আমি)

আমি রেডি শুধু তোর জন্য অপেক্ষা করেছিলাম।চল যাওয়া যাক।(বাবা)

চলো।
বলেই আমি আর বাবা হসপিটালের উদ্দেশ্য গেলাম।

বাবা তুমি চেক আপ কমপ্লিট করো আমি আসছি।(আমি)

আচ্ছা।তাড়াতাড়ি আসিস।আর সাবধানে থাকিস!(বাবা)

বাবা।আমি বাচ্চা না।(আমি)

আমার কাছে তুই সেই ছোট্ট আস্থাই থাকবি।
বলেই বাবা মাথায় হাত দিলো।

আমি মুচকি হেসে বাহিরে চলে আসলাম।
বাবাকে জানলে চলবে না।আমি ইদানিং অসুস্থ বোধ করছি।এমনি উনি একটা অসুখ থেকে বের হয়েছে।পরে অযথাই চিন্তা করবে।তার থেকে বরং আমি একা একা গিয়েই ডক্টর দেখিয়ে আসি বাবার চেক আপ হতে হতে।
আমি ডক্টর দেখতে যাবো তখনই পিছন থেকে কেউ যেনো ডাক দিলো
আস্থা।

আমি পিছন ফিরে তাকাতেই দেখি ডক্টর জয়
আরে ডক্টর জয় আপনি?

হুম।আমি এখানে কিছু দিনের জন্য জয়েন করছি।(জয়)

ব্যাস্ত মানুষদের বেকার থাকতে ভালো লাগে না।তা আপনাকে দেখেই বুঝা যায়।(আমি হাসতে হাসতে)

তা যা বলেছেন।আপনি এখানে কেনো?(জয়)

আমার বাবাকে চেক আপ করাতে নিয়ে আসছি (আমি)

কিহ!জিসান আংকেলের কিছু হয়েছে?(জয় চিন্তিত হয়ে)

নাহ নাহ।আমার পালিত বাবার রেগুলার চেক আপ করার জন্য।(আমি উনাকে আশ্বস্ত করে)

ও আচ্ছা।তাহলে আমরা কি এখানে না দাড়িয়ে থেকে কোথাও বসে কথা বলতে পারি।এক কাপ গরম চা বা কফি খেতে খেতে।(জয়)

অফারটা খারাপ না।চলুন।
বলেই আমি আর জয় যেতে নিবো।তখনই চোখের সামনে অন্ধকার হয়ে গেলো চারপাশটা কেমন যেন ঘুরিয়ে পড়লো।আমি তাল সামলাতে না পেরে পরে গেলাম।তারপর কি হলো কিছুই আমার মনে নেই।আমি চোখ খুলতেই দেখি আমি হসপিটালের একটা কেবিনে শুয়ে আছি।পাশেই ডক্টর জয় কিছু কাগজ নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
ডক্টর জয়।(আমি কাপা কাপা কন্ঠে)

আস্থা তুমি উঠো না।রেস্ট নাও।(জয়)

কেনো কি হয়েছে?সিরিয়াস কিছু হয়েছে?(আমি চিন্তিত হয়ে)

আস্থা তুমি মা হতে চলেছ।তুমি তিন মাসের প্রেগনেন্ট।(জয়)

আমি পেটে হাত দিয়ে বললাম
আমি মা হতে চলেছি।আমার বেবি হবে।আমাকে মা মা বলে ডাকবে।
কথা গুলো বলার সময় আমার চোখ ছলছল করে উঠলো।

আস্থা।একটা সমস্যা হয়েছে।(জয়)

কি সমস্যা? আমার বেবি ঠিক আছে তো?(আমি)

।#Marriage_With_Benefits
#Part_40(#Villain_Special_1)
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
বেবি ঠিক আছে কিন্তু ভবিষতে ঠিক থাকবে কিনা জানি না।(জয়)

কেনো?ভবিষতে থাকবে না কেনো?(আমি অবাক হয়ে)

দেখো।এখন পর্যন্ত বেবির গ্রোথ ঠিক মত হচ্ছে।কিন্তু তোমার মেন্টাল হেলথ কিন্তু বেশি ভালো না।এমন হলে তোমার বেবির ক্ষতি হতে পারে।(জয়)

তাহলে এখন কি করবো আমি?(আমি চিন্তিত হয়ে)

তোমাকে যথা সম্ভব হাসি খুশি থাকতে হবে চিন্তা করা একদম যাবে না।ঠিক মত খাবার খেতে হবে আর ঘুমাতে হবে।তোমার শরীর ইদানিং খারাপ যাচ্ছিলো কারণ তুমি ঠিক মত খাওয়া দাওয়া করতে না আর বিশ্রামও নিতে না।আর খুব চিন্তিত ছিলে।যদিও এইটা এখন পর্যন্ত বেবিকে ইফেক্ট করতে পারি নি।কিন্তু আর কিছু দিন গেলে ঠিকই করতো।(জয়)

আচ্ছা।ডক্টর জয় এখন আমি ঠিক মত সব কিছু করবো।(আমি)

গুড।(জয়)

ডক্টর জয়।আমার একটা রিকোয়েস্ট ছিলো আপনার রাখতেই হবে।(আমি)

কি রিকোয়েস্ট?(জয়)

আমার মা হাওয়ার কথা আপনি কাউকে বলবেন না প্লিজ।এমনকি কলি মা আর জিসান বাবাকেও না।(আমি)

কেনো?এইটা তো খুশির খবর!(জয় অবাক হয়ে)

আমি জানি ডক্টর জয় এইটা খুশির খবর।কিন্তু আমি চাই এই খবর আমার স্বামী আভি জানুক সবার আগে।(আমি)

খুব ভালোবাসো তাই না তোমার স্বামীকে?(জয়)

অনেক।(আমি)

আচ্ছা।বলবো না।
বলেই ডক্টর জয় আমার মাথায় হাত বুলালো।


এক মাস পর
আমি দুপুরে বিছানায় আধ শোয়া অবস্থায় আছি।
পেটে হাত বুলাতে বুলাতে বলতে লাগলাম
জানিস বেবি।আজ এক মাস পূর্ণ হলো আমি জানলাম যে তুই আমার দেহে আসলি।আর সাথে সাথে চার মাস পূর্ণ হলো আমাদের একসাথে।কিন্তু এই বাড়ির কেউ এখনও কিছু জানে না তোর অস্তিত্ব সম্পর্কে।ডক্টর জয় আমি না করাতে কাউকে জানায় নি।আর আমিও কাউকে জানাইনি।জানিস তোর বাবাকে যখনই ফোন দিয়েছি তখনই আমি বেস্ত আছি পরে ফোন দিবো বলে কেটে দিলো।কিন্তু পরে আর ফোনই দেয় না।এইবার আসুক তুই আমার আমি মিলে ইচ্ছামত বকা দিয়ে দিবো।আর এইবার থেকে যখন তোর বাবা ব্যবসার কাজে বাহিরে যাবে আমি আর তুইও সাথে যাবো।ঠিক আছে?তবে কি জানিস ভালোই হলো তোর বাবাকে আমি ফোনে বা ম্যাসেজ করে কিছু বলি নি।তাহলে উনার চোখে মুখের বাবা হবার খুশিটা দেখতে পারবো না।আমি চাই আমার সামনে উনাকে এই খুশির খবর দিতে তারপর উনার মুখের হাবভাবটা দেখবো।খুব মজা হবে না।তুইও কিন্তু দেখবি।

আমি আমার লক্ষী সোনার সাথে কথা বলছিলাম তখনই নিচে থেকে আওয়াজ আসতে শুরু করলো।আওয়াজ বললে ভুল হবে চিৎকার
আমি নামতেই দেখতে পেলাম।আয়ুশ চিৎকার করছে আরিফ আর আরশি নাচছে।
আহা কি আনন্দ আকাশে বাতাসে।(আরশি)

আহা কি আনন্দ চৌধূরী মেনশন এ।(আরিফ)

কি হলো?আরিফ আর আরশি এইভাবে নাচছে কেনো পাগলের মতো করে?(আমি অবাক হয়ে)

ভাবী।ওগো আমার ভাবী তোমার কাজ সফল হলো।(আয়ুশ আমাকে নিয়ে ঘুরতে ঘুরতে)

আরে আরে থামি যা।থামি যা।কি হয়েছে তা আগে বলো?(আমি আয়ুশকে থামিয়ে কারণ ও তো আর জানে না ও চাচু হতে চলেছে)

বড়ো বাবা।নিজের হাতের আঙ্গুল,,পায়ের পাতা আর চোখের পাপড়ি নাড়াতে পারে।(আয়ুশ)

কিহ!চলো আমি গিয়ে দেখি।
বলেই আয়ুশ,আর বাকি সবাইকে নিয়ে আমি রুমে ঢুকলাম।

বাবা আপনি নাকি হাতের আঙ্গুল,,পায়ের পাতা চোখের পাপড়ি নাড়াতে পারছেন?(আমার চোখ ছলছল করছে)

বাবা আমার দিকে তাকিয়ে চোখের পলক ফেললো।সাথে ঠোঁটে হালকা হাসি দিলো।

ভাবী।হাসিটা আগে ছিলো না।এখন হাসিটা দিলো।(আয়ুশ এক্সসাইটেড হয়ে)

সত্যিই।বাবা আমি অনেক খুশি।আপনি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠছেন এর থেকে বড় আর কিছুই হতে পারে না।(আমি খুশিতে কান্না করতে করতে)

ডক্টর জয়কে খবর দাও।উনি এসে দেখে যাক।আর শুনো এই খবর যেনো কেউ আভি কে না জানায়?(আমি চোখের জল মুছতে মুছতে)

কিন্তু কেনো ভাবী?(আরশি অবাক হয়ে)

আমি জানি।আমি জানি বলি?(আরিফ এক্সসাইটেড হয়ে)

কি জানো তুমি আরিফ আঙ্কেল?(আরশি সন্দেহর)

আভি স্যারকে সারপ্রাইজ দিয়ার জন্য।তাই না আস্থা ম্যাম?(আরিফ হাত বের করে হাসতে হাসতে)

একদম ঠিক।অনেক গুলো সারপ্রাইজ দিবো ওকে?(আমি অন্যমনস্ক হয়ে)

অনেক গুলো সারপ্রাইজ মানে?(আয়ুশ ভ্রু কুঁচকে)

না কিছু না।(আমি জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)

ডক্টর জয় এসেছে।
বাহিরে থেকে মিস সাবিনা বললো।

এতো তাড়াতাড়ি ডক্টর জয়?(আমি অবাক হয়ে)

মিস সাবিনা আগে থেকেই ফোন করে দিয়েছে।(আরশি)

ও তাই বলো।(আমি)

পরেই ডক্টর জয় এসে বাবার চেক আপ করলো।বাবা নাকি খুব শীঘ্রই ঠিক হয়ে যাবে।

আমি আর ডক্টর জয় বাগানে হাঁটছি
এখনও তুমি কাউকে কিছু বলোনি?(জয়)

না।এখনও বলি নি(আমি)

কিন্তু কিছু দিন পরে তো সবাই জানতে পারবে।(জয়)

আমি চাই আভি আগে জানুক।(আমি বাগানে হাঁটতে হাঁটতে)

উনার সাথে কি তোমার এখনও কথা হয় নি?(জয়)

আমি ডক্টর জয়ের কথা শুনে দাড়িয়ে পড়লাম।কথা? ও যাওয়ার পর কেমন যেনো হয়ে গেছে কথা তো দূরের কথা একটা ম্যাসেজ ও দেয় না আমায়।(আমি মনে মনে)

কি হলো আস্থা?দাড়িয়ে পড়লে যে।(জয়)

কিছু না।হাঁটতে ভালো লাগছে না (আমি)

আচ্ছা।তাহলে তুমি ভিতরে যাও।আমি আজ আসি।(জয়)

ওকে ডক্টর জয় খোদা হাফেজ।
বলেই আমি বাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়লাম।

জয় হাত বাড়িয়ে
যদি তোমাকে আটকে রাখার কোনো উপায় থাকতো আস্থা!(মনে মনে)


তুমি কি করছ?এই দিকে আদি সুস্থ হয়ে যাচ্ছে।(ঈশানি)

কিহ!(অবাক হয়ে)

হ্যা।এখনও কি তুমি বিদেশে বসে থাকবে?আমি তোমাকে আগেও বলেছি আস্থা আদির ডক্টর চেঞ্জ করেছে।কিন্তু তুমি কিছু করলে না।নার্সকে আমি সবার আড়াল থেকে আমি বাড়ি থেকে বের করলাম।না হলে এখন তোমার মাস্টার প্ল্যানের বারোটা বেজে যেত।(ঈশানি রাগ দেখিয়ে)

বেশি পাকামো করো না।আমি আজ রাতের ফ্লাইটেই আসছি।কাল সকালেই আমি চৌধূরী বাড়িতে পা রাখবো।

আচ্ছা।এসো।(ঈশানি)


রাতে খাওয়া দাওয়া শেষ করে আমি বেলকনিতে দাড়িয়ে আছি।আজও মনে কোনো শান্তি নেই।আভিকে অনেক গুলো ফোন করেছি কোনো রিপ্লাই নেই।কিন্তু মনমরা হলে চলবে না।আমার বাচ্চাটার ক্ষতি হবে আর কিছু না।টেনশন করে লাভ নেই।টেনশনে কিছু হবে না শুধু আমার বাচ্চাটার ক্ষতি ছাড়া।এর থেকে ভালো এইসব মাথা থেকে বের করে দেই।ভেবেই বেলকনিতে থেকে নিজের রুমে যাবো বলতেই পা বাড়ালাম।আর সাথে সাথেই পিছন থেকে বিদ্যুৎ চমকানোর আওয়াজ শুনতে পেলাম।পিছনে ফিরে বেলকনিতে আবার যেতেই দেখি পুরো আকাশ অন্ধকার হয়ে গেছে।বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে।মনে হয় ঝড় আসবে।আমার চোখ যেনো সেই ঝড় আচ্ছন্ন আকাশেই স্থির হয়ে গেল।আমার শরীরে বিন্দু মাত্র শক্তি নেই।

ভাবী কি হলো?এইভাবে দাড়িয়ে আছো কেনো?ঝড় আসবে। বেলকনির দরজা লাগিয়ে দেই।তুমি গিয়ে শুয়ে পড়(আরশি)

আমি স্থির দাড়িয়ে আছি।

ভাবী!(আরশি আমাকে ধাক্কা দিয়ে)

হ্যা।কিছু বলবে?(আমি)

বললাম।তুমি গিয়ে শুয়ে পড়।আমি বেলকনির দরজা লাগিয়ে আসছি।(আরশি)

হুম।
পরেই আমি চাদর মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়লাম।আভি আমার ভয় করছে।


সকালে আজ আমি বাবাকে নিয়ে পুকুর পাড়ে বসি আছি।আজ আরশির কোচিং আছে তাই আসে নি।আয়ুশএরও কি যেনো কাজ পড়েছে।দাদুও আসে নি।শুধু আমি আর বাবা একা।
বাবা।আপনি দাদু হতে চলেছেন।আমি না এই কথা কাউকে বলি নি।শুধু মাত্র আভিকে আগে বলবো বলে।কিন্তু আভি কেমন যেনো করছে?আমি বুঝতেই পারছি না। ও কি চাইছে?আমি আভিকে অনেক ভালোবাসি।
বলেই বাবার পায়ের কাছে বসে কাদতে শুরু করলাম।তখনই বাবা তার কাপা কাপা হাত আমার মাথায় রাখলো।আমি উনার দিকে তাকাতেই উনার চোখ যেনো বলছে সব ঠিক হয়ে যাবে আস্থা রাখ আস্থা।

আমি মুচকি হাসি দিয়ে বাবাকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকলাম।
বাড়িতে সবাই কাজে ব্যাস্ত।কিন্তু যাওয়ার আগে তো সব ঠিক ছিলো হটাৎ কি হলো?দাদু খুব চিন্তিত মুখ নিয়ে সোফায় বসে আছে।আরিফ গোমড়া মুখ করে পায়চারি করছে।মিস সাবিনা দাড়িয়ে আছে উনার মুখ ও ফ্যাকাসে দেখাচ্ছে।রোহান চাচুও আজ অফিসে যায়নি।উনিও দাদুর পাশে বসে আছে।কিন্তু আশ্চর্য ব্যাপার হলো ঈশানি চাচী খুব ফুর্তিতে আছে।উনি নিজে থেকে সার্ভেন্টদের ইনস্ট্রাকশন দিচ্ছে।কেমন যেনো লাগছে ব্যাপারটা।
আমি গিয়েই মিস সাবিনাকে জিজ্ঞেস করলাম।
মিস সাবিনা কেউ কি আসছে?(আমি)

মশিবত আসছে!(মিস সাবিনা)

দেখেই বুঝা যাচ্ছে।সে আসবে সে কেমন মানুষ হবে!তার সমাদর যখন ঈশানি চাচী করছে তখন সে তার থেকে ডবল হবে।(আমি মনে মনে)

মশিবতটা কে শুনি?(আমি)

আমার ছোটো ভাইয়ের মেয়ে রাইশা!(দাদু নিরাশ হয়ে)

কিহ!(আমি অবাক হয়ে)

হুম।আরমান স্যারের ছোটো ভাই আর ভাবী মারা যাওয়ার পর রাইসাকে আরমান স্যারই পালছে।কিন্তু ওইটা হয়েছে আরেকটা অমানুষ।জিসান খানের বিয়ের পর উনি হটাৎ বিদেশে চলে যায়।এখন এতো বছর পর উনি এসেছেন কেনো কে জানে?(আরিফ চিন্তিত হয়ে)

বাবার বিয়ের পর?বাবার সাথে রাইসার কি সম্পর্ক?(আমি মনে মনে)

রাইশা উনি তো আমাদের ফুপ্পি হয়!উনার সাথে জিসান খানের সম্পর্ক কি?(আমি কৌতূহল নিয়ে)

রাইসা ছোটো বেলা থেকেই জিসানকে ভালোবাসত।জিসান আর রাইশা বিদেশ থেকে এক সাথে পড়াশুনা করেছে।কিন্তু জিসান কখনোই রাইসাকে ওই নজরে দেখেনি।রাইসাকে ও ওর বন্ধুর মত ভাবতো।রাইশা,,আদি আর জিসান ছিলো বন্ধু।যখন জিসান দেশে আসে তখন কলিকে ভালোবেসে ফেলে পরেই সোহেল(জিসানের বাবা) বিয়ের বিপক্ষে কথা বললে ওরা পালিয়ে বিয়ে করে নেয়।কিন্তু এইটা রাইসার খুব লাগে।রাইশা ছোটো বেলা থেকেই খুব জেদী ছিলো যেটা ওর সেটা ওরই থাকবে আর যদি ওইটা ওর না হয় তাহলে ও তা নষ্ট করে দিবে।আর না হয় তাকে শান্তিতে থাকতে দিবে না,,যতক্ষণ না পর্যন্ত রাইশা তার জীবন নরক করছে।রাইশা আরো ক্ষেপে যায় যখন জিসান আর রাইসার বিয়ের দিন জিসান কলিকে নিয়ে পালিয়ে যায়।তখন রাইসা ব্যাপারটাকে খুব স্বাভাবিক ভাবেই নিয়ে ছিলো।আর তাই ছিলো আমার ভয়ের কারণ।ও কোনো প্রকারের রিয়েক্ট করা ছাড়াই আমাদের না জানিয়ে বিদেশ চলে যায়।আর এতো দিন আমরা জানতাম না যে ও বেচেঁ আছে না মরে গেছে আজ সকালে আমার কাছে একটা ফোন আসে যে রাইশা আজ সকালে আমাদের বাড়িতে আসছে।(দাদু)

এই জন্যই তাহলে বাবা এই বাড়িতে আসতে চাইছে না।আর এই জন্যই বাবা আর এই বাড়ির সম্পর্ক এতো খারাপ।আমি তো শুনেছি কলি মা আর সুমাইয়া মা দুইজন বেস্ট ফ্রেন্ড ছিল।আদি বাবা আর সুমু মার ও বিয়ে পালিয়ে।আমার বাবা মা আর আভির বাবা মা।চার জনের কেউই শান্তিতে নেই।এতে কি কোনো ভাবে রাইশা ফুপির হাত আছে।মহিলার কথা শুনে তো মনে হচ্ছে উনি অনেক ভয়ঙ্কর। যাই হোক আসলেই দেখা যাবে।আমি যা ভাবছি তা তো নাও হতে পারে তাই না।
আমার কল্পনার ছেদ পড়ে ঈশানি চাচীর ডাক শুনে।

তোমরা কি মুখ গোমড়া করে বসে থাকবে?বাড়ির মেয়ে এতো বছর পর বাড়ি ফিরছে(ঈশানি)

যাওয়ার আগে একে(ঈশানি) নিয়ে গেলো না কেনো?আমার জান তো বাঁচতো।(রোহান বিড়বিড় করে)

কিছু বললে?(ঈশানি ভ্রু কুঁচকে)

কই কিছু না তো।(রোহান জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)

আমরা রোহান চাচু আর ঈশানির ঝগড়া দেখছি তখনই বাহিরে একটা বড় গাড়ি এসে গেটের সামনে থামলো।

আমরা সবাই গেটের সামনে যেতেই দেখলাম খুব সুন্দর একটা মহিলা গাড়ি থেকে নামলো।পরনে সিল্ক সাদা রঙের শাড়ি। চুল গুলো ঘন কালো।চেহারাতে যেনো বয়সের কোনো ছাপ পড়েনি।খুব গুছানো একটা মহিলা।দেখলে কেউই বলবে না উনি এতো রাগী বা জেদী একটা মহিলা।আমি শুধু অবাক হয়ে উনার তাকিয়ে আছি।উনি আমার দিকে তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিলো।আমি উনার হাসির কারণ খুঁজে পেলাম না।

আসসালমুআলাইকুম।চাচু।কেমন আছো?(রাইশা মুচকি হেসে দাদুকে বললো)

অলাইকুম আসসালাম। আলহাদুলিল্লাহ তুই কেমন আছিস?(দাদু)

যেমন তোমরা থাকতে বাধ্য করেছো।(রাইসা)

আমরা কাউকে বাধ্য করিনি।কেউ যদি নিজেই জিদ ধরে নিজের ক্ষতির কারণ হয় তাহলে আমাদের কিছু করার নেই।(দাদু)

থাক না।অতীত কথা।সবাইকে তো সময়ই তার কর্মের ফল দেয়।তাই না?তাহলে সময়ের উপরই ছেড়ে দেই।এখন ভিতরে আসতে বলবে না?(রাইশা মুচকি হেসে)

কখনও কি তোর আসতে অনুমতি লাগবে?এই বাড়ির তো তোরও (দাদু)

কিন্তু এই বাড়ির মানুষ গুলো আমার না।(রাইশা বিড়বিড় করে)

কিছু বললি?(দাদু)

নাহ।চলো ভিতরে যাই।
বলেই রাইশা চৌধুরী বাড়িতে পা রাখলো।


চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here