#Marriage_With_Benefits
#Part_43
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
রাইসা তুলির গলা টিপে ধরে
তুমি নিজের ইচ্ছে আভির কাছে ধরা দিয়েছো। ভেবেছো আমি জানি না?তোমার এক একটা স্টেপ আমার জানা।তবে তোমার এই দুঃসাহসের জন্য তোমাকে ক্ষমা করলাম।কারণ এই কারণে আভি আর আস্থার মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হলো।দেখি এই দূরত্ব বিশ্বাসের ভিত্তিকে হারাতে পারে কি না?
রাইসা তুলির গলা ছেড়ে দিয়ে।
তুলি কাশতে কাশতে
আপনি আমাকে মেরে ফেলতে চাইছেন?
আভি যদি আমার প্ল্যানের কিছু জানতে পারে তাহলে এইটার থেকে আরো বড়ো কিছু তোমার সাথে হবে।
বলেই রাইসা তুলির গাল টিপে ধরলো।
বুঝতে পেরেছো?(রাইসা)
হুম।হুম।আমি আভিকে কিছু বলবো না।(তুলি ভয়ে ভয়ে)
নাও।গেট লস্ট।(রাইসা)
কি ভয়ানক মহিলা রে বাবা!এর থেকে দূরে থাকাই ভালো।এর থেকে বাঁচতে হলে আগে আভিকে বশ করতে হবে।(তুলি মনে মনে)
খুব ভালো আভি।কিন্তু এই ডিভোর্সটা কি নাটক না আসল তাই খোঁজে বের করতে হবে।আর দেখি কতো দিন ডিভোর্সের নাটক চলে।(রাইশা মনে মনে)
।
।
আজ এক মাস পার হয়ে গেল আমি আর আভি আলাদা থাকি।আমার বেবিটাও ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে।ডক্টর জয় বলছেন ওর গ্রোথ নাকি ভালোই হয়েছে।আমি খান বাড়িতেই থাকি কলি মা আর জিসান বাবার সাথে।মা অনেক ক্ষেপে গিয়েছিলো আভি আমাকে ডিভোর্স দিয়েছে বলে।এখন তারাই আমার আর আমার বেবির খেয়াল রাখে।তারা কাউকে কিছু জানায়নি আমার বাচ্চার ব্যাপারে আমিই না করেছি।আমি এখনও চৌধূরী বাড়ির কাউকে মা হওয়ার ব্যাপারে কিছু জানাই নি।জানি না এই কথাটা লুকিয়ে আমি ঠিক করছি না ভুল?কিন্তু মনে হয় ওরা জানলেই আমি আমার বাচ্চাটাকে হারিয়ে ফেলবো।আভিকে হারিয়ে ফেলেছি বাচ্চাটাকে হারাতে চাই না।এই এক মাস আমি কারো সাথে দেখাও করি নি।নিজের রুম থেকেই বের হই না আমি।মাঝে মাঝে খুব ভোরে একটু বাগানে হাটি।হাটাহাটি করা নাকি বেবির জন্য ভালো।কিন্তু সূর্য উঠার আগেই রুমের ভিতরে চলে আসি।আয়ুশ,,আরশি,,নিহাল ভাইয়া,,ডালিয়া,,রোহান চাচু,,দাদু,,আরিফ,,মিস সাবিনা আর মাঝে মধ্যে ঈশানি চাচীও এসেছিলো।কিন্তু আমিই কারো সাথে দেখা করি নি।উনারাও আমাকে জোর করেনি দেখা করার জন্য।এখন কলেজেও খুলে ফেলেছে কিন্তু আমি কলেজেও যায়নি।ভাবছি কলেজে ড্রপ করবো।নিজেকে একটা রুমে বন্ধী করে ফেলেছি।মুখে হাসি না থাকলেও এখন জোর করে হাসতে হয় আমায় শুধু মাত্র কাছের মানুষ গুলোর জন্য।না খেতে চাইলেও খেতে হয় শুধু মাত্র বাচ্চাটার জন্য মনে হচ্ছে নিজের জন্য বাঁচাই শেষ করে দিয়েছি আমি।তবুও মনের কোণে একটু আশা ছিলো যে আভি এইসব হয়তো ইচ্ছে করে করছে না।আমার মন এখনও চায় ওকে বিশ্বাস করতে কিন্তু ধীরে এই বিশ্বাসও নিস্তেজ হয়ে পড়ছে।এক সপ্তাহ আগে আভি এসেছিল ভেবেছিলাম আমি কেমন আছি দেখতে এসেছে কিন্তু না উনি এসেছিলো উনার আর তুলির এনগেজমেন্ট এর কার্ড দিতে।আমার কথা একবারও জিজ্ঞেস করেনি।বাবার সাথে একটা রুমে গিয়ে কথা বললো।জানি না কি কথা?।আর আমিও বাবাকে জিজ্ঞেস করি নি।মা আভির সাথে একটা কথাও বলেনি।
আজ ওদের এনগেজমেন্ট আমি ঠিক করেছি যাবো।হয়তো আভিকে মুভ অন করতে দেখলে নিজেও মুভ অন করার শক্তি পাবো।কিন্তু এইখানে বাঁধ সাজলো মা।উনি নিজেও যাবে না আর বাবা তো ওই বাড়িতে পা রাখবেই না।আর আমাকেও যেতে দিবে না।তাই অনেক কষ্ট করে আমি আর বাবা রাজি করলাম।কিন্তু এখন বলছে আমাকে একা যেতে দিবে না।তাই উপায় না পেয়ে ডক্টর জয়কে সাথে নিয়ে নিলাম।ডক্টর জয় আমার জন্য ঢিলাঢালা গোল জামা নিয়ে এসেছে।যাতে আমি প্রেগনেন্ট যে তা কেউ না বুঝতে না পারে।
।
।
অবশেষে
আমি আর ডক্টর জয় বের হলাম চৌধূরী বাড়িতে বাড়িতে যাবো বলে।
আস্থা তোমাকে খুব সুন্দর লাগছে।(জয়)
আপনার পছন্দ অনেক ভালো।খুব সুন্দর একটা গোল জামা বেছে এনেছেন।(আমি মুচকি হেসে)
সত্যিই আমার পছন্দের তুলনা হয় না (জয় বিড়বিড় করে)
কিছু বললেন ডক্টর জয়?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
না কিছু না।
বলেই ডক্টর জয় গাড়ি চালাতে মনোযোগ দিলো।
।
।
কি হয়েছে তোমার?(কলি রেগে)
কি হবে?(জিসান কনফিউজ হয়ে)
আমি আসুকে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য আমাকে কেনো ফোর্স করলে?(কলি রেগে)
জিসান একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেলে। ড্রয়ের থেকে একটা কাগজ বের করে কলির কাছে দিলো।
কলি কাগজটা হাতে নিয়ে দেখে কাদতে কাদতে বসে পড়লো।
আস্থা,,,আস্থা আমার মেয়ে।(কলি কাদতে কাদতে)
হুম।আসু আমাদের সেই মেয়ে।আমাদের মেয়ে মারা যায় নি। বেচেঁ আছে আর সে হলো আসু।(জিসান কলিকে জড়িয়ে ধরে)
কিন্তু তুমি জানতে পারলে কি করে যে আসুই আমাদের সেই মেয়ে?(কলি কৌতূহল নিয়ে)
আমাকে আভি বলছে।(জিসান)
আভি কি করে জানে?(কলি অবাক হয়ে)
যখন আভি ওর আর তুলির এনগেজমেন্ট কার্ড দিতে এসেছিলো তখন,,,,
।
।
অতীত
কি হলো?তোমার সাথে আমার একা কোনো কথা নেই।তুমি কি চাও এখন?আমার মেয়ের মন ভেঙ্গে তোমার শান্ত হয় নি।(জিসান রাগে)
যদি বলি তোমার মেয়ে বেচেঁ আছে?তাহলে কি তুমি এখনও রেগে থাকবে আমার উপর আঙ্কেল?(আভি)
কি যা তা বলছো?আমার মরা মেয়েকে নিয়ে।ওকে আমি নিজের হাতে কবর দিয়েছি।আর তুমি তাকে টানছ?(জিসান চিৎকার করে)
তোমার মেয়ে বেচেঁ আছে ও মারা যায়নি আঙ্কেল।আর সেই মেয়েই আস্থা।(আভি চিৎকার করে)
কি?কি বললে তুমি?আস্থা আমার সেই মরা মেয়ে?(জিসান অবাক হয়ে)
হ্যা।আস্থাকে যেদিন ওর পালিত বাবা মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচায় সেদিনই তোমার মেয়ে মারা যায়।আর যেই হসপিটাল থেকে আস্থাকে আনা হয় সেই হসপিটালে সেইদিন মাত্র পাঁচটা বাচ্চা হয়েছিল।যার মধ্যে শুধু তোমারই মেয়ে ছিলো।আর তোমার মেয়েই মারা যায়।তাহলে কি করে আস্থার বাবা ওই হসপিটাল থেকে মেয়ে বাচ্চা আনে।যদি সেখানে একটা মেয়ে বাচ্চা হয়ে থাকে আর তা মৃত্যু।তার মানে নিশ্চয়ই তোমার মেয়েকেই উনি এনে বাঁচিয়েছেন।কারণ তোমার মেয়ে ছাড়া ওই হসপিটালে কোনো মেয়ে বাচ্চা ছিলো না।(আভি)
কিন্তু আমাকে তো আমার মেয়ের লাশ দেখানো হয়েছিলো।(জিসান কাদতে কাদতে)
ও অন্য হসপিটাল থেকে এনে তোমার কোলে দেয়া হয়েছিল।যাতে তুমি ভাবো তোমার মেয়ে মারা গেছে।এই নাও আস্থা আর তোমার DNA test পেপার।(আভি)
তাহলে আস্থার পালিত বাবা আস্থাকে কি করে পায়?(জিসান পেপারটা হাতে নিয়ে)
পরেই আভি জিসানকে আস্থার মাটিতে কবর,,কবর খুলে উদ্ধার করার কথা সব খুলে বলে।
এতো ভয়ানক কাজ।তাও একটা নবজাতক বাচ্চার সাথে কে করতে পারে?(জিসান অবাক হয়ে)
রাইসা!(আভি)
কি?রাইশা এইসব করছে?শুধু মাত্র বদলা নিতে?(জিসান রাগে)
হ্যা।রাইসাই করেছে।আমি রাইসার ছবি দেখিয়েছি আস্থার পালিত বাবাকে আর উনিই বলেছেন রাইসাই নাকি ডক্টরকে টাকা দিয়েছে।আর উনিই নাকি আস্থাকে মাটিতে পুঁতে ফেলেছিলো।আজ আমি কার্ড দেয়ার বাহানা করে তোমার কাছে এসেছি যাতে রাইসা সন্দেহ না করে।(আভি)
আমি ওকে খুন করে ফেলবো।ওর কারণে আমার মেয়ে এতো বছর কষ্ট করেছে।ওর কারণে আমার মেয়ে বেচেঁ থেকেও আমাদের কাছ থেকে দূরে ছিলো।ওকে তো মেরে ফেলা উচিত।ওর কারণে আমি আর কলি কতো কষ্ট করেছি।(জিসান রাগে)
আঙ্কেল শান্ত হও।এখনও ওর বিরুদ্ধে আমাদের কাছে যথেষ্ট প্রমাণ নেই।ওকে শাস্তি দিতে গেলে আমাদের আরো প্রমাণ দরকার হবে।(আভি)
দরকার নেই আমার কোনো প্রমাণের।ওকে আমি নিজের হাতে শাস্তি দিবো।(জিসান)
ওকে মেরে নিজের হাত নষ্ট করবে কেনো?ওকে আমরা এক সাথে মিলে শান্তি দিবো।কিন্তু তা আইন অনুযায়ী।(আভি)
তুই যা ভালো মনে করিস কর।(জিসান শান্ত হয়ে)
পরেই আভি ওর সব পরিকল্পনা জিসানকে বললো।আর জিসানও ওর সাথে রাজি হয়ে গেলো।
আমি তোর সাথে আছি।(জিসান)
আস্থার খেয়াল রেখো।আমি ওকে অনেক ভালোবাসি।ওর নিরাপত্তা এখন তোমার হাতে।(আভি)
।
।
বর্তমান
এই পেপারটা হলো আসুর DNA test পেপার।(কলি কাদতে কাদতে)
হুম।(জিসান)
আমি এখন সবাইকে বলবো দেখো আমার মেয়ে জীবিত।(কলি খুশি হয়ে)
না।ভুলেও না।ভুলেও এটা করতে যেও না।(জিসান কলিকে আটকিয়ে)
কেনো?(কলি অবাক হয়ে)
কারণ আমাদের মেয়ে হওয়ার কারণে আস্থাকে জন্মের পরই মেরে ফেলতে চেয়েছিলো রাইসা।এখন যদি ও জানতে পারে আস্থা আমাদের মেয়ে আর ও মারা যায় নি।তাহলে ওকে আবার মারার চেষ্টা করতে পারে।তখন সফল না হতে পারে যদি এখন সফল হয়ে যায়!আর এখন তো আস্থা আভির স্ত্রীও আর ওর গর্ভে আভির সন্তানও আছে।ভাবতে পারছো কি হবে?(জিসান)
না না।আমি কাউকে বলবনা।কিন্তু তুমি কি আভিকে বলেছো ও বাবা হতে চলেছে?(কলি)
নাহ।আস্থাকে আমি কথা দিয়েছি।কথার খেলাপ করতে পারবো না।(জিসান)
তাও ঠিক।আস্থাই জানালে ভালো।আচ্ছা আস্থা জানে আমরাই ওর বাবা মা?
নাহ।আভি না করছে জানাতে।আস্থা জানলে জিজ্ঞেস করবে আমরা কি করে জানলাম আর যদি বলি আভি বলেছে তখন ও বুঝে যাবে আভি নাটক করছে।পড়ে ও যেই জেদী মেয়ে নিজেই নেমে পড়বে রাইসার বিরুদ্ধে।আর এই অবস্থায় ওকে এই সব না জানানোই ভালো।ভালো হবে সব কিছু ঠিক হলেই ওকে জানানো।(জিসান)
সব কিছু ঠিক হওয়ার চিন্তা করতে করতে সব কিছু না আবার বেঠিক হয়ে যায়।সব কিছু আবার এলোমেলো হয়ে যায়।(কলি চিন্তিত হয়ে)
তুমি চিন্তা করো না।এমন কিছুই হবে না(জিসান কলিকে জড়িয়ে ধরে)
যাই হোক না কেনো।আভি আর ওর পরিবারের কারণে আমার মেয়ের এতো কষ্ট।এই জন্য ওদের কিছুতেই ক্ষমা করবো না আমি।যদি একটা সুযোগও পাই আভি আর আস্থাকে আলাদা করার আমি সেই সুযোগ হাত ছাড়া করবো না।আমার মেয়েকে আর কষ্ট পেতে দিবো না।(কলি মনে মনে)
।
।
আমরা পৌঁছে গেলাম এনগেজমেন্টের জন্য।
আমি গাড়ি থেকে নামবো তখনই ডক্টর জয় আমাকে সাহায্য করলো এইটা আনার দূর থেকে কেউ খুব ভালো করে খেয়াল করছে।
খুব ভালো আসুমনি।এক মাসেই এতো ফাস্ট তুমি?ওকে কি বলবো আমার বউটাই এতো মিষ্টি মাছি তো ভনভন করবেই।একবার এইসব শেষ হতে দাও।তোমাকে এমন ভাবে বেধে রাখবো তুমি আমাকে ছেড়ে যেতেই পারবে না।তবে এই একমাস তোমাকে অনেক মিস করেছি।রোজ সকাল সন্ধ্যায় তোমার বাড়ির নিচে দাড়িয়ে থাকতাম শুধু তোমাকে একটু দেখার জন্য কিন্তু কপাল আমার এতই খারাপ ছিল তোমার একটু দেখাও পেতাম না।বেলকনিতে তাকিয়ে থাকবে তুমি একটু আসবে কিন্তু তুমি তাও আসতে না।রোজ তোমার কলেজেও যেতাম কিন্তু সেখানে জানতে পড়লাম তুমি নাকি আর কলেজে পড়বে না।তবে এখন এক মাস পরে দেখে মনে হচ্ছে তুমি একটু মোটা হয়ে গেছো।চোখে মুখে শুকনো ভাব।নিরস হয়ে গেছে মুখটা।হয়তো অনেক চিন্তায় আছো তুমি।আর কয়েকটা দিন পরেই চিন্তা শেষ।
আভি একাধারে আস্থাকে দেখছে।আস্থা সবার সাথে কথা বলছে মুখে শুকনো হাসি।
ভাবী।তোমাকে কতদিন পড়ে দেখলাম।কেমন আছো?
বলেই আরশি আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
আলহাদুলিল্লাহ।তুমি কেমন আছো?(আমি জোরপূর্বক হাসি)
তোকে ছাড়া ভালো থাকা যায়।আসু(দাদু)
দাদু।কেমন আছো?(আমি)
তোমাকে ছাড়া কেউই ভালো নেই।আস্থা ম্যাম।(আরিফ)
আমিও যে ভালো নেই।(আমি)
ভাবী।আমি তোমাদের বাসায় চলে আসি।আমার একটুও ভালো লাগে না এই বাড়িতে।(আয়ুশ)
আমিও যাবো তোর সাথে ভাই।এখানে থাকতে আমারও ভালো লাগে না।(আরশি)
সাথে এই বুড়ো কেও নিয়ে যাস!(দাদু)
স্যারের সাথে আমি ফ্রী।(আরিফ হাত তুলে)
আমি এইবার ফিক করে হেসে দিলাম।
সত্যিই তোমাদের খুব মিস করছি।(আমি)
আমরাও তোমার এই হাসি মুখ খুব মিস করছি।(আয়ুশ)
আচ্ছা নিহাল ভাইয়া আসে নি?(আমি)
না।নিহাল আভি ভাইয়ার সাথে সম্পর্ক শেষ করে ফেলেছে।(আয়ুশ)
আমি আর এই ব্যাপারে কিছু বললাম না। সবার সাথে কথা বলতে বলতে আভি আর আমার চোখে চোখ পড়ে যায়।
দাদু আমি গিয়ে কাপল দের শুভেচ্ছা জানিয়ে আসি।(আমি)
যা।আমার তো এদের দেখতেই মন চায় না।(দাদু বিরক্ত হয়ে)
পরেই আমি আর ডক্টর জয় গেলাম আভি আর তুলির কাছে।
আমাকে ডক্টর জয় ধরে নিয়ে যাচ্ছে।
আস্থা কেমন আছো?(তুলি)
আলহাদুলিল্লাহ।অনেক সুখেই আছি।(আমি মুচকি হেসে)
তা তো দেখতেই পারছি!(তুলি)
হুম। ব্যয় দা ওয়ে। congratulations মি: আভি চৌধূরী।
আমি হাত বাড়িয়ে।
Thank you।
বলেই আভি আমার সাথে হাত মিলালো।ভাবতেই অবাক লাগে নিজের ভালোবাসার মানুষকে অন্য কারো হাওয়ার জন্য শুভেচ্ছা দিচ্ছি আমি।
ইন্টারেস্টিং।(হাতে ড্রিংকস নিয়ে রাইসা আভি আর আস্থার দিকে তাকিয়ে আছে)
তোমাকেও তুলি।(আমি)
ধন্যবাদ। তোমাকেও congratulation।(তুলি)
কেনো?(আমি অবাক হয়ে)
কারণ তুমি আর উনি(ডক্টর জয়)।কবে করছো?(তুলি)
খুব শীঘ্রই।আমাদের চার হাতও এক হবে।(আমি)
আভি হাত মুষ্ঠি বদ্ধ করে ফেললো।আস্থা তুমি শুধু আমার।(আভি মনে মনে)
আস্থা চলো অন্য দিকে গিয়ে বসা যাক।(ডক্টর জয়)
চলো।
বলেই ডক্টর জয়ের হাত ধরে আমি চলে গেলাম।
আর তা আভিকে অনেক রাগিয়ে তোলে।
লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলম্যান।আজ আপনাদের এখানে আসার অনেক অনেক ধন্যবাদ।আমার আর আমার ভালোবাসার মানুষের এনগেজমেন্ট আর একটু পরেই শুরু হবে তার আগে আমার প্রাক্তন স্ত্রীর মুখে একা গান হয়ে যাক। ও অনেক সুন্দর গান গায় তাই না আস্থা।(আভি)
আস্থা তোমার সাথে আমার সম্পর্ক কি সবাই জানুক।তুমি আমার স্ত্রী ছিলে।যে কেউ চাইলে তোমার আর আমার মধ্যে আসতে পারবে না(জয়কে উদ্দেশ্য করে আভি মনে মনে)
আস্থা উঠে এসে আভির কানের কাছে ফিসফিস করে বললো
স্ত্রী থেকে প্রাক্তন স্ত্রী হয়ে গেলাম একটা মনে করিয়ে দেয়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ মি আভি।
আমার চোখ ছল ছল করছে।
আর তা দেখে আভি অবাক হয়ে গেলো
আস্থা।আমি,,,
আমি গান গাইবো।চিন্তা করবেন না।(আমি)
শিট।মাথা গরম করে আমি আস্থাকে কষ্ট দিয়ে ফেললাম।ওকে এতো বড় কথা বলে ফেললাম।(আভি অনুতপ্ত হয়ে)
।
।#Marriage_With_Benefits
#Part_44
Writer::Sanjida Nahar Shaanj
.
.
(তুমি আমার এমনই একজন……
যারে এক জনমে ভালোবেসে
ভরবে না এই মন।)
আমি এক বুক কষ্ট নিয়ে গান গাইতে শুরু করলাম।ওদের জন্য না হোক নিজের সন্তানের জন্য হলেও আমায় খুশি থাকতে হবে।
আমি গান গাইতে গাইতে আভির খুব কাছে চলে গেলাম।ওর চোখে চোখ রেখে গাইতে শুরু করলাম
(এক জনমের ভালোবাসা….
এক জনমের কাছে আসা….
এক জনমের ভালোবাসা
এক জনমের কাছে আসা
একটি চোখের পলক পড়তেই লাগে যতক্ষণ)
সত্যি সত্যি চোখের পলকেই আমাদের সম্পর্ক তৈরি হলো।আর এক পলকেই তা ভেঙ্গে গুড়িয়ে গেলো।এখন শুধু চোখের পলকে পড়তেই জল গড়িয়ে পড়ে আর ভেসে উঠে ভালোবেসে কাটানো সেই মুহূর্ত গুলো।সত্যিই কি ওইসব নাটক ছিলো আভি?মন বলে তোমাকে বিশ্বাস করি কিন্তু চোখ বলে,,দেখেও কি বিশ্বাস করবি?
আমি আভির থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম।
(তুমি আমার এমনই একজন
যাকে এক জনমে ভালোবেসে
ভরবে না এই মন।)
সবাই গানের তালে নাচতে শুরু করলো।আভি আর তুলি আমার সামনে নাচছে।আমার চোখ যেনো এইসব দেখার জন্যই স্থির হয়ে গেছে।এইসব দরকার আমার না হলে আমি পারবো না মুভ অন করতে।আমি আভি দিকে তাকিয়ে কথাগুলো ভাবছি তখনই ডক্টর জয় আমার দিকে নিজের হাত বাড়িয়ে দিলো।আমিও উনার হাত ধরে নাচতে শুরু করলাম।নিজেকে জোকার থেকে আর কিছু মনে হচ্ছে না।নিজের প্রাক্তন এর এনগেজমেন্টে গান গাইছি নাচছি।এই সব ভাবতেই গলা ধরে আসলো।
কি হলো আসু গাও?(জয় ফিসফিস করে)
আমি মুচকি হেসে আবার গাইতে শুরু করলাম
(ভালোবাসার সাগর তুমি,,,,,,
ভালোবাসার সাগর তুমি
বুকে অথৈ জল
তবুও পিপাসাতে আখি,,,,,,,
তবুও পিপাসাতে আখি
হয় যে ছল ছল,,,হয় রে ছল ছল)
গানের কলি গুলো বলতেই বুকে যেনো কষ্ট গুলো ডলা পাকিয়ে বসলো।কান্নার স্রোত যেনো চোখ আটকাতেই পারছে না।আজ সব কষ্ট বৃষ্টির মতো ঝরবে।
(তোমার মিলনে বুঝি গো জীবন
বিরহে মরণ
তুমি আমার এমনই একজন
যাকে এক জনমে ভালোবেসে
ভরবে না এই মন)
আমার চোখ দিয়ে পানি অবিরাম পড়ছে।আর তা আভি চোখকে ফাঁকি দিতে পারলো না।ওর দিকে তাকিয়েই আমি কান্না করছি।কিন্তু আফসোস ওর কাছে আমার কান্নার কোনো মূল্য নেই।
বাহ!মনে হচ্ছে আভি সত্যিই সত্যিই এই মেয়েটাকে ভুলে গেছে।না হলে এতো কান্না করার পরেও আভি চুপ।ভালোবাসা থাকলে এমন তো করতো না আভি।আমি শুধু শুধু চিন্তা করছি।(রাইশা মনে মনে)
(প্রাণের প্রদীপ হয়ে তুমি,,,,,,
প্রাণের প্রদীপ হয়ে তুমি
জলছো নিশিদিন
কোন মোহরে শোধ হবে গো,,,,,
কোন মোহরে শোধ হবে গো
এতো বড়ো ঋণ,,,
এতো বড়ো ঋণ)
আমি সরি আস্থা।আমার হাত পা বাধা।আমি চাইলেও এখন তোমার চোখের জল মুছতে পারবো না।আমি তোমার কাছে যথেষ্ট ঋণী।তুমি আমার জীবনে আলো হয়ে এসেছো।আমি সেই আলো নিভতে দিবো না।তোমাকে সুরক্ষিত রাখতে যদি যদি তোমাকে আর আমাকে কষ্ট পেতে হয় তাতেও আমি রাজি।কিন্তু তোমাকে হারাতে রাজি না।(আভি অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে)
(আমার ভালোবাসার ফুলে তোমার ভরাবো চরণ,,
ভরাবো চরণ)
(তুমি আমার এমনিই একজন,,,,,,,
যারে এক জনমে ভালোবেসে
ভরবে না এই মন
এক জনমের ভালোবাসা,,
এক জনমের কাছে আসা
একটি চোখের পলক পড়তেই লাগে যতক্ষণ।
তুমি আমার এমনি একজন যাকে
এক জনমে ভালোবেসে
ভরবে না এই মন)
(আমার আম্মুর খুব পছন্দের একটা গান😜– লিখিকা)
অনেক কষ্ট করে গানটা শেষ করলাম।
ভাবী তুমি ঠিক আছো?(আয়ুশ)
হুম।এতো ক্ষন খারাপ ছিলাম এখন ঠিক আছি।(আমি চোখ মুখ মুছে)
এখন আভি আর তুলির আংটি বদল হবে।আমিও দেখতে চাই আভি কি করে তুমি আমি থাকা সত্ত্বেও অন্যকে আংটি পরাও।আর যদি পড়াতে পারো তাহলে এই সম্পর্ক শুরুর সাথে সাথে আমার আর তোমার সম্পর্কটিও শেষ হয়ে যাবে।যেটুকু বিশ্বাস ছিল তোমার উপর সেটুকুও ভেঙ্গে যাবে।
আমার বিশ্বাস ছিলো যে আভি তুলিকে আংটি না পরিয়ে আমার কাছে ফিরে আসবে কিন্তু না ও আমার বিশ্বাস ভেঙ্গে তুলিকে আংটি পড়ালো।
আমি একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললাম।আমার অবাস্তব স্বপ্ন থেকে যেনো জেগে উঠলাম।
ডক্টর জয়।চলুন আমার আর ভালো লাগছে না।(আমি জয়ের হাত ধরে)
আস্থা তুমি ঠিক আছো?(জয় মনমরা হয়ে)
আমি একদম ঠিক আছি।বরং এখন অনেক ভালো আছি।চলুন জয়।(আমি মুচকি হেসে)
ঠিক আছে চলো।
বলেই ডক্টর জয় আর আমি চলে আসলাম।বাকিদের না বলেই।
অন্যদিকে আভি এনগেজমেন্ট শেষ করে সবাইকে বিদায় দিয়ে নিজের রুমে এসে আস্থার ছবি নিয়ে কান্না করতে শুরু করলো।
আস্থা। আই অ্যাম সরি।আমি তোমার চোখের জল মুছতে পারি নি।যখন তুমি ডক্টর জয়ের হাত ধরেছিলে তখন আমার খুব রাগ হয়েছিলো আমি সহ্য করতে পারি নি।যখন তোমার কথা চিন্তা করি তুমি কি করে আমার আর তুলির আংটি বদল দেখলে।আমি তোমাকে প্রাক্তন বলে ছিলাম যাতে তুমি রাগে এনগেজমেন্ট থেকে চলে যাও কিন্তু তুমি এত জেদী,,গেলে না।একটা জিনিসের শেষ দেখেই ছাড়ো তুমি আর তোমার এই স্বভাবের কারণেই আমি তোমাকে বিপদে ফেলতে চাইনি।তুমি জানো আমারও তোমার তোমার অনেক কষ্ট হয়েছে।তোমাকে কতো দিন জড়িয়ে ধরি না আমি।আমি যে আর পারছি না আস্থা প্লিজ যতো দিনটা সব ঠিক হচ্ছে ততদিন তুমি আমার কাছ থেকে দূরে থাকো।আমি তোমাকে আর কষ্ট দিতে পারবো না।
।
।
আস্থা।তুমি ঠিক আছো?(জয়)
আমার আবার কি হবে আমি একদম ঠিক আছি!(আমি ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে)
না মানে তোমার কষ্ট হচ্ছে না?(জয়)
আপনিই তো বলেছেন আমার কষ্ট,,চিন্তা বাচ্চার ক্ষতি করবে।তাহলে কেনো আমি জেনে শুনে কষ্ট পেয়ে বাচ্চার ক্ষতি করবো?(আমি)
জয় চুপ করে আছে।আস্থাকে যেনো অন্য রকম লাগছে।
গাড়ি ঘুরান তো আমি অনাথ আশ্রমে যাবো।(আমি)
কিন্তু এত রাতে?তোমার তো রেস্ট নিতে হবে।(জয়)
আমি এতটাও দুবর্ল না ডক্টর জয় আর আমার বাচ্চাও এতো দূর্বল না।আপনি চিন্তা করবেন না।(আমি)
আচ্ছা।
পরেই আমি আর ডক্টর জয় মিলে অনাথ আশ্রমে গেলাম।
।
।
অনাথ আশ্রমে
কতো দিন পর তুই আসলি?আভি কই?(খালা)
নেই।আভি নেই চলে গেছে।এখন রুমে যাই।তারপর কথা বলি।(আমি খালাকে রাগ দেখিয়ে রুমে চলে গেলাম)
তুমি কে?(খালা জয়কে ইশারা করে)
আমার হবু বর।(আমি রুমে থেকে চিৎকার করে)
জয় আমার কথা শুনে কাশতে শুরু করলো।
তোমার(জয়)আবার কি হলো?(খালা)
আমার কথা হজম হইনি তো কাশতে শুরু করলো।(আমি রুম থেকে চিৎকার করে)
এই মেয়ের মাথা খারাপ হয়ে গেছে।ওই মেয়ে কি হয়েছে তোর? কি আবোলতাবোল বলছিস?(খালা ভ্রু কুঁচকে কোমরে হাত দিয়ে)
রিনা খান।ক্ষুদা লাগছে।যা আছে নিয়ে আসো।আর যদি কিছু না থাকে তাহলে বানিয়ে নিয়ে আসো।(আমি আসন পেতে বসে)
রাবেয়া কিছু খাবার নিয়ে আয় তো।কি হয়েছে ওর দেখি?(খালা)
।
।
আমি খাবার খাচ্ছি।আর খালা আমার দিকে অবাক চোখে তাকিয়ে দেখছে।
কি হয়েছে?কাউকে কি খেতে দেখো নি কখনো?(আমি মুখে খাবার দিয়ে)
দেখেছি।কিন্তু তোর মত রাক্ষসীর হয়ে খেতে দেখি নি।(খালা)
আমি চুপ করে আছি।
বলতো কি হয়েছে?(খালা আমার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)
পরেই আমি আভির সব কথা খালাকে বললাম।
খালা শুনে খুব রেগে যায়।
আমি ওকে ছাড়বো না।আমার মেয়েকে ধোঁকা দেয়া।(খালা)
রিনা খান কুল।ওর চ্যাপ্টার ক্লোজ।আমি এখন মুভ অন করতে চাই।তাই ওর বেপারে কিছু জিজ্ঞেস করবে না।(আমি)
আচ্ছা।যা ভালো মনে করিস।(খালা)
এই মেয়েকে বুঝাই দায়।একটু আগে কান্না করতে করতে চোখ মুখ ফুলিয়ে ফেলেছে।আর এখন এখানে মুভ অন করবে বলে ভাষণ দিচ্ছে।কি করে এই মেয়ে নিজেই জানে না?(জয় মনে মনে)
।
।
খেতে খেতে আমার নজর গেলো দেয়ালে টাঙ্গানো একটা ছবির দিকে।
ওইটা কে?(আমি অবাক হয়ে)
ওইটা আমি।(খালা ভ্রু কুঁচকে)
আমি জানি ওইটা রিনা খান।কিন্তু তোমার সাথে ওইটা কে?(আমি ভ্রু কুঁচকে)
ওইটা হচ্ছে আমাদের এই অনাথ আশ্রমের হেড।উনার তত্ত্বাবধানে দেশের সব অনাথ আশ্রম চলে।এক মাস আগে একটা অনুষ্ঠানে উনার সাথে আমার দেখা হয় আর এইটা তারই ছবি।(খালা)
আমি ছবিটাকে গভীর ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। কোথায় যেনো এই মহিলাকে দেখেছি??খুব পরিচিত লাগছে।খুব ইম্পর্ট্যান্ট মহিলা।কিন্তু মনে পড়ছে না।(আমি ছবির দিকে গভীর ভাবে তাকিয়ে আছি)
কিরে? তুই মিস সুমাইয়ার ছবির দিকে তাকিয়ে কি ভাবছিস?(খালা আমার দিকে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছে)
এক মিনিট কি বললে তুমি?কে উনি?উনার নাম কি?(আমি অবাক হয়ে)
মিস সুমাইয়া।(খালা অবাক হয়ে)
আমার শাশুড়ি মা।(আমি খুশি হয়ে)
কি?(খালা প্রচন্ড অবাক হয়ে)
হ্যা।উনিই আভির মা। মানে আমার শাশুড়ি মা। ইয়েস।
বলেই খালাকে নিয়ে ঘুরতে থাকি।
আস্থা আস্তে।(জয়)
ওকে ওকে।খালা কোথায় যেনো বলেছিলে উনি থাকে?(আমি)
উনি আবাদত গাজীপুর।উনার কোয়াটারে থাকে।(খালা)
আমাকে ঠিকানাটা দাও।আমি এক্ষুনি উনাকে আনতে যাবো।শাশুড়ি আজ আপনাকে পাইছি।
বলেই হিহি করে হেসে দিলাম।
এই মেয়ে পাগল হয়ে গেছে।(জয়,,খালা,,রাবেয়া এক সাথে)
।
।
তুমি শিওর তো এতো রাতে আভির মাকে খুঁজতে যাবে।(জয় ড্রাইভ করতে করতে)
কেনো জানি মনে হচ্ছে।উনিই পারবে আভি আর আমার সম্পর্ক ঠিক করতে।(আমি অনেক আশা নিয়ে)
তোমার এখনও মনে হয় আভি আর তোমার সম্পর্ক ঠিক হবে?(জয় অবাক হয়ে)
আমি শেষ চেষ্টা পর্যন্ত করবো আভিকে ফিরে পাবার।যতক্ষণ না পর্যন্ত দেয়ালে পিঠ ঠেকে ততক্ষণ পর্যন্ত চেষ্টা করবো।(আমি)
তাহলে তুমি পিছনে রেস্ট নেও।আমি পৌঁছে তোমাকে ডাক দিবো।(জয়)
ওকে ডক্টর জয়।(আমি)
ডক্টর জয় গাড়ি থামালো আমি গিয়ে পিছনে শুয়ে পড়লাম।
ডক্টর জয়?(আমি)
হুম?(জয়)
থ্যাঙ্ক ইউ।(আমি)
ডক্টর জয় মুচকি হাসি দিলো।
।
।
আস্থা আস্থা।(ডক্টর জয়)
হুম।(আমি চোখ কচলাতে কচলাতে)
আমরা এসে পড়েছি।(জয়)
ও।তাহলে যাওয়া যাক।
বলেই আমি গাড়ি থেকে নেমে পড়লাম।
ডক্টর বলেছেন ভিতরে যাবো কি করে?ভিতরে যদি দারোয়ান থাকে?(আমি ফিসফিস করে)
গিয়ে দেখি।অ্যাড্রেস তো এই বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলার।(জয়)
হুম।(আমি)
পরেই গিয়ে দারোয়ান পরে পরে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে।
দেখো।এরজন্য আমরা ভয় পাচ্ছিলাম।আর এ এখানে পড়ে পড়ে ঘুমাচ্ছে।দিবো একটা কানের নিচে।(আমি)
আস্থা চলো।ভালোই হয়েছে ঘুমিয়েছে।(জয়)
আসছি!
বলেই আমি আর জয় দুতলায় উঠলাম।
কলিং বেলে টিপ মারলাম।
বুকের ধুপুকানি বেড়েই চলেছে।উনাকে। কি বলবো?আমি আপনার ছেলে বউ না প্রাক্তন স্ত্রী।কি করে শুরু করবো?কোথা থেকে শুরু করবো?উনি কি আমার সাথে যেতে রাজি হবে?অনেক প্রশ্ন যার উত্তর এখন আমার অজানা।
হঠাৎ একটা মহিলা দরজা খুললো।আমি উনাকে দেখে অবাক।সত্যিই উনি আমার শাশুড়ি মা।সুমাইয়া চৌধূরী।আদিব চৌধুরীর স্ত্রী আর আভির মা।
কি হয়েছে?কে তোমরা?এতো রাতে কি চাও?(সুমু ভ্রু কুঁচকে)
পায়ে লাগো শাশু মা।
বলেই পা ছুঁতে যাবো তখনই উনি বলে উঠলো।
কি কি করছো?এতো রাতে কি পা ছুঁতে এসেছো?(সুমু অবাক হয়ে)
না।শাশুড়ি মা আপনাকে নিতে এসেছি।(আমি এক গাল হেসে)
কি?আমাকে নিতে?কোথায় নিতে?আর কে তুমি?কে তোমার শাশুড়ি মা?(সুমু বিরক্ত হয়ে)
ভিতরে গিয়ে কথা বলি।(আমি)
।
।
ভিতরে শান্তি বিরাজ করছে।আমি পটপট করে সব বলে দিলাম।মা সব কিছু খুব মনোযোগ সহকারে শুনলো।
আস্থা।তুমি যা বলছো আমি শুনলাম।কিন্তু আমি তোমার কোনো সাহায্য করতে পারবো না।(সুমু)
কিন্তু কেনো?আপনি গেলেই তো আভি ওর দাদুকে ভুল বুঝবে না।আরো ওই তুলিকে বিয়ে করবে না।(আমি)
তোমার কি মনে হয়?তুলিকে যদি ও বিয়ে না করে তাহলে ও তোমার কাছে ফিরে আসবে?আমি আভিকে চিনি।ও যা করছে ভেবে চিনতে করে ছোটো বেলা থেকেই এখনও ভেবে চিনতেই করছে।তুমি বা আমি কখনই ওকে আটকাতে পারবো না যতক্ষণ না পর্যন্ত ও নিজে থামছে।(সুমু)
আমি মার কথা গুলো শুনলাম। উনিই ঠিকই বলেছেন।আভি এমনি এমনি কিছু করার মানুষ না।ও যেহেতু তুলিকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেহেতু ও ছাড়া ওর সিদ্ধান্ত কেউ পাল্টাতে পারবে না।(আমি মনে মনে)
কিন্তু মা আভিকে না আটকাতে পারেন।ওই বাড়িতে ফিরে চলুন সবাই আপনাকে মিস করছে।(আমি)
ওই বাড়ি থেকে আমাকে কি বলে বের করে দেয়া হয়ে ছিলো জানো?আমি চরিত্রহীনা।আমার নাকি চরিত্র এতো খারাপ এক জনে নাকি আমার পোষে না।আর এই অপবাদ গুলো কে দিয়েছে জানো? আমারই ভালোবাসার মানুষ আদিব।(সুমু মা কান্না করতে লাগলো)
আমি চুপ করে আছি।
এখন বলো কেনো আমি সেই বাড়িতে যাবো যেই বাড়িতে আমি যার হাত ধরে গিয়েছি সেই আমাকে এই অপবাদ দিয়েছে?তুমিই বলো তুমি যেতে যদি আভি তোমাকে চরিত্রহীন বলতো।(সুমু মা)
আমি চুপ করে আছি আমার মুখে কোনো কথা নেই।আভি আর আমার মধ্যে যতো ঝগড়াই হোক না কেনো আভি কখনও আমার চরিত্র নিয়ে কথা বলেনি।আমাকে তুলির জন্য ছেড়ে দিয়েছে তবুও আমার চরিত্র নিয়ে একটাও কথা বলেনি। আয়ুশকে নিয়ে ঘটনার সময়ও ও আমায় বিশ্বাস করছে।(আমি মনে মনে)
আমি যাবো না আস্থা।আর তোমার কাছে আমার এই অনুরোধ তুমি কাউকে আমার কথা বলবে না।কথা দাও আমায়!(সুমু)
।
।
চলবে,,,,
চলবে,,,,
আর তিন চার পর্বেই শেষ করে দিবো।🤗