#The_Terrible_Lover
#অদ্রিতা_জান্নাত
#পর্ব__১৮
ঘুমের মধ্যেই গরম স্পর্শ অনুভব করতে পারছি ৷ কিন্তু চোখ খুলতে পারছি না ৷ ঘুমের রেশটা এখনো কাটে নি ৷ তবুও ঘুমের মধ্যে অস্বস্তি অনুভব হচ্ছে ৷ নিভু নিভু চোখে চোখ খুলে তাকালাম ৷ তাকানোর সাথে সাথে একটা ঘুমন্ত চেহারায় চোখ আটকে গেলো ৷ ঘুমন্ত অবস্থায় পুরো চেহারায় একটা মায়া জুড়িয়ে গিয়েছে ৷ কে বলবে এই লোকটা এত রাগী, এতোটা জেদী ৷ দেখে মনে হচ্ছে নিষ্পাপ প্রাণ ৷
এতোটাই কাছে আমি ওনার, যে ওনার গরম নিঃশ্বাস আমার উপর পরছে ৷ এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি আরিহানের ঘুমন্ত চেহারার দিকে ৷ আরেকটু এগিয়ে গেলাম আমি ৷ যখন বুঝতে পারলাম তখন দূরে সরে এলাম ৷ কিন্তু উনি ওনার হাত ধরে ঝাপটে ধরে আছে আমাকে ৷ হাত সরিয়ে উঠতে গেলে আবারও ঝাপটিয়ে ধরে ঘুমন্ত গলায় বললেন,,,,
আরিহান : আরেকটু ঘুমোতে দাও কাশফুল ৷
চোখ বন্ধ করেই বললেন তাই আমার রিয়্যাকশান হয়তো দেখতে পায়নি ৷ হাত ঝাটা দিয়ে সরিয়ে নিচে নেমে গেলাম ৷ উনি হাতরে খুঁজতে লাগলেন.. হয়তো আমাকে ৷ নিচে তাকিয়ে দেখি কোলবালিশটা পরে আছে ৷ সেটা হাতে নিয়ে ওনার উপর ছুড়ে মারলাম ৷ আরিহান কোলবালিশটা ধরে ওটাতে মুখ গুজে শুয়ে রইলেন ৷ একটুপর কোলবালিশটা সরিয়ে আমার দিকে তাকালেন ৷
হয়তো কোলবালিশটাকে আমি ভেবেছিলেন ৷ তবে সেটা হওয়ার নয় ৷ ঘোর লাগা গলায় বললেন,,,,
আরিহান : উঠে পরলে কেন?
কাশফিয়া : আপনি কেন কোলবালিশ ফেলে আমার কাছে এসেছিলেন?
আরিহান : কখন, কোথায়, কীভাবে?
কাশফিয়া : একদম নাটক করবেন না ৷ আপনাকে বলেছিলাম আমার কাছে আসতে না ৷ আর আপনি সারারাত জড়িয়ে ধরে ছিলেন আমাকে!!
আরিহান : তাইতো বলি কাল রাতের ঘুমটা এতো ভালো হলো কি করে?
কাশফিয়া : আমি কি আপনার সঙ্গে মজা করছি?
আরিহান : সেটা তো তুমি জানো ৷ আমার এতো সুন্দর ঘুমটা ভাঙ্গলে কেন?
কাশফিয়া : এক বালতি ঠান্ডা পানি এনে ঢালতে মন চাচ্ছিল আমার ৷ কিন্তু আমি তো ভালো তাই এসব করি নি ৷
ড্রয়ার থেকে একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম ৷ শাওয়ার নিয়ে বেরিয়ে দেখি আরিহান বেডে বসে ফোন টিপছেন ৷ আমাকে দেখে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন ৷ আমি চুল ঝাড়তে ঝাড়তে বেলকনিতে চলে গেলাম ৷ ভালো ভাবে মুছে টাওয়ালটা শুকোতে দিলাম ৷ পিছনে ঘুরতেই পরে যেতে নিলাম তবুও সামলে নিলাম নিজেকে ৷ হঠাৎ করে এভাবে আরিহানকে আমার পিছনে দেখে প্রথমে ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম ৷ কিন্তু আরিহানের চোখে একটা ঘোর দেখতে পাচ্ছি আমি ৷ উনি আমার দিকে আগাতে লাগলেন ৷
এই বাড়ির মধ্যে বেলকনি গুলোর রেলিং বেশি বড় নয় ৷ কোমড় পর্যন্ত হবে ৷ আমি পিছাতে পিছাতে হঠাৎ পরে যেতে নিলাম ৷ আরিহান তার হাত দিয়ে আগলে নিলেন ৷ আমাকে পিছনে ঘুরিয়ে চুলে মুখ গুজে দিলেন ৷ আমি ঠায় দাঁড়িয়ে রইলাম ৷ হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাচ্ছে ৷ কোনো কথাই মুখ দিয়ে বের হচ্ছে না ৷ জমে গেছি পুরো৷
কিছুক্ষনপর আরিহান পেছনের চুল গুলো হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়ে কানের কাছে ফিসফিস করে বললেন,,,,
আরিহান : পাগল হয়ে যাবো আমি কাশফুল ৷ তোমার এই রূপে তুমি আমাকে শেষ করে দিচ্ছো পুরো ৷ কন্ট্রোললেস হয়ে যাচ্ছি আমি ৷ প্লিজ এভাবে আমার সামনে এসো না অন্তত ৷ আমি তোমার সাথে জোর করতে চাচ্ছি না ৷
এটা বলেই ছেড়ে দিলেন আমাকে ৷ আমি চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়ে রইলাম কিছুক্ষন ৷ পিছনে ঘুরে দেখি আরিহান নেই ৷ ধীর পায়ে রুমে গিয়ে বিছানায় বসে পরলাম ৷ কি করবো আমি এখন? সায়ানের ব্যাপারটা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলতে পারছি না আমি ৷ হ্যাঁ বিয়ে হয়ে গেছে আমার ৷ অন্য কাউকে নিয়ে ভাবাও পাপ হবে ৷ কিন্তু এতোটাই কি সহজ ভুলে যাওয়া? সায়ান অন্যায় করেছে ঠিক ৷ কিন্তু আমাকে তো ভালোবাসে এটা মিথ্যা না ৷
পাশে তাকিয়ে দেখি নিধি বসে আছে ৷ কখন আসলো টেরও পাই নি ৷ আমার হাতে হাত রেখে ও বললো,,,,
নিধি : কি হয়েছে?
কাশফিয়া : কিছু না ৷
নিধি : তোকে আমি ছোট থেকেই চিনি ৷ সায়ান ভাইয়াকে নিয়ে ভাবছিস তুই?
আমি কিছু বললাম না ৷ চুপ করে রইলাম ৷
নিধি : কেন ভাবছিস ওই ছেলেটাকে নিয়ে? আসল সত্যি জেনেও ভালোবাসবি তুই?
কাশফিয়া : সত্যি মিথ্যা দিয়ে ভালোবাসা হয় না ৷ হ্যাঁ ও অন্যায় কাজের সাথে জড়িত ৷ কিন্তু ও তো বলেইছে যে ও বাধ্য হয়ে করছে এগুলা ৷
নিধি : আবার বিশ্বাস করছিস ওকে? এই কয়েকদিনে এসেছে একবারো তোর কাছে?
কাশফিয়া : ছাড় এসব নিচে চল ৷
নিধি : হুম চল ৷
______________
ব্রেকফাস্ট টেবিলে সবাই বসে আছি ৷ আরিহানের বাবা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলছেন আর হাসাহাসি করছেন ৷ লোকটা সহজেই সবার সাথে মিশে যায় ৷ বেশ প্রাণোচ্ছল ৷ কথার মাঝেই আরিহানের বাবাকে একবার আঙ্কেল বলেছিলাম ৷ তার জন্য ওনার হাসি থামেই না ৷ স্পষ্ট বলে দিয়েছেন বাবা বলে ডাকতে ৷ আমি শুধু মাথা নাড়িয়ে যাচ্ছি ৷
বেশ কিছুক্ষন ধরে আরিহানের ফোনে অনবরত কল আসছে ৷ কিন্তু উনি রিসিভ করছেন না বরং প্রত্যেকটা কল কেটে দিচ্ছেন ৷ কার কল যে এতবার কল আসছে ৷ চোখ মুখ শক্ত করে খাবার ছেড়ে উঠে উপরে চলে গেলেন ৷ তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম ৷ আর আরিহানের বাবা বলতে লাগলেন,,,,,
— দূরে গিয়েও এই মহিলা আমার ছেলেটাকে শান্তি দিলো না ৷
কাশফিয়া : কার কথা বলছেন বাবা?
— কার আবার তোমার শ্বাশুড়ি মা ৷
কথাটা শুনে কিছুক্ষন বসে রইলাম ৷ তারপর চেয়ার ছেড়ে উপরে চলে এলাম ৷ দরজার বাহিরে দাঁড়িয়ে আরিহানের গলা শুনতে পাই ৷ ফোনের ওপাশের জনকে বলছেন,,,,,,
আরিহান : আপনি আমার লাইফে নাক গলানোর কে? কতবার বলেছি ডিস্টার্ব করবেন না ৷ তবুও এক কাজ বারবার করেন ৷ লজ্জা করে না ৷ (একটু থেমে) কে আপনি হ্যাঁ? কীসের অধিকার দেখাতে আসছেন? আপনাকে বলেছিনা ফোন করবেন না আমায় ৷ তবুও নির্লজ্জের মতো সবসময় একি কাজ করেন? আপনি….
আর কিছু বলার আগেই ওনার হাত থেকে ফোনটা নিয়ে গেলাম ৷ সেটা দেখে উনি বললেন,,,,
আরিহান : ফোনটা নিলে কেন? কি হয়েছে?
আমি ফোনটা কানে দিয়ে বললাম,,,,
কাশফিয়া : চুপ করুন আপনি ৷
ফোনের ওপাশ থেকে একটা মহিলা বলছেন,,,,,
— আরিহান ঠিক ভাবে কথা বল ৷ তোকে কতবার বোঝাবো আমি তোর মা ৷ মায়ের সাথে কীভাবে কথা বলে জানিস না তুই?
কাশফিয়া : না জানে না ৷ কি বলুন তো ৷ আপনি নিজেই তো আরিহানকে আচার ব্যবহার শিখান নি ৷ সেখানে আপনার সাথে কি করে কথা বলতে হয় সেটা আরিহান কীভাবে জানবে? আর নিজেকে মা বলে দাবি করছেন? নিজের দায়িত্ব পূরণ করেছেন কিছু?
— এই মেয়ে কে তুমি? আরিহানের ফোন তোমার কাছে কেন? আর তোমার থেকে আমার দায়িত্ব, কর্তব্য শিখতে হবে? তোমার সাহস তো কম না ৷ (ধমকের সুরে)
কাশফিয়া : Exactly শ্বাশুড়ি মা ৷ আসলে আপনার বউমার অতিরিক্ত সাহস রয়েছে বুঝেছেন?
— হোয়াট দা হেল! তুমি আমাকে শ্বাশুড়ি মা কেন বলছো? (রেগে)
কাশফিয়া : শ্বাশুড়ি মাকে শ্বাশুড়ি মা বলবো না তো কি চাচী, খালা এগুলা বলবো?
— এই তুমি কিন্তু বাড়াবাড়ি করছো ৷ আরিহানের কাছে ফোনটা দাও ৷
কাশফিয়া : বাড়াবাড়ির কি দেখলেন শ্বাশুড়ি মা? আভি তো বাহুত কুছ বাকি হে!!
— আজিব? কে তুমি?
কাশফিয়া : আপনার একমাত্র বউমা আর আপনার একমাত্র ছেলের একমাত্র বউ আমি শ্বাশুড়ি মা ৷
— কিইইই? বউ…মানেটা কি?
কাশফিয়া : এমা আপনি বউ মানে জানেন না? আপনি যেমন আমার শ্বশুড়ের বউ তেমনি আমি আপনার ছেলের বউ ৷ নাকি আরো প্র্যাকটিক্যালি বোঝাতে হবে?
— হোয়াট ননসেন্স? তোমাকে কে বিয়ে দিয়েছে ৷ আমার ছেলেকে জোড় করে বিয়ে করেছো কেন তুমি? তোমাকে তো আমি… (রেগে)
কাশফিয়া : কি করবেন? মেরে ফেলবেন ৷ বাট আফসুস সেটা হয়তো পারবেন না আপনি ৷ আপনার ছেলে ঠিক আমাকে বাঁচিয়ে নিবে ৷ এখন আপনি তাড়াতাড়ি বিডিতে ব্যাক করুন তো ৷
— সেটা তো করবোই ৷ তোমাকে তো আমার ছেলের জীবন থেকে সরাতে হবে নাকি?
কাশফিয়া : আরে শ্বাশুড়িমা সেসব কথা ছাড়ুন তো ৷ কুইক বিডিতে ফিরে আসুন ৷ আপনার বাড়ি, আপনার স্বামী, আপনার ছেলে, বউমার কাছে ৷ তারপর আবার আপনার নাতি নাতনি, নাতি নাতনির নাতি নাতনিকে দেখতে হবে তো নাকি ৷ চলে আসুন তো ৷
— আসবো আসবো ৷ তোমাকে সরাতে আসবো ৷ আমার ছেলের লাইফে তোমার কোনো জায়গা নেই ৷ বুঝেছো?? (ধমক দিয়ে)
কাশফিয়া : পারবেন না আর জায়গা আছে নাকি নেই সেটা আপনার ছেলেই বুঝবে ৷
— অনেক কনফিডেন্স দেখছি ৷
কাশফিয়া : হুম আপনার ছেলের বউ এতোটাই সস্তা নাকি?
— ওভার কনফিডেন্স ভালো না ৷ যেটার ফল খারাপ হবে ৷
কাশফিয়া : বিশ্বাস আছে আমার ৷
— রাবিশশশ!!! (রেগে)
ফোন কেটে দিলেন ৷ ফোনের দিকে তাকিয়ে বললাম,,,,
কাশফিয়া : মা যেমন ছেলে তেমন ৷ দুটোই করলা মার্কা৷
পিছনে ঘুরে দেখি আরিহান হা করে ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছেন আমার দিকে ৷ তাকে দেখে তার হাতে ফোনটা ধরিয়ে দিয়ে বললাম,,,,
কাশফিয়া : নিন আপনার ফোন ৷ আর মুখটা বন্ধ করুন৷
আরিহান : কি বললে এগুলা তুমি?
কাশফিয়া : যেটা শুনেছেন সেটাই বলেছি ৷
বলে পাশ কেটে চলে যেতে গেলে আমার হাত ধরে সামনে নিয়ে এসে বললেন,,,,,
আরিহান : ভালোবাসো আমাকে?
কাশফিয়া : এএএরকম কিছু ববলেছি নাকি?
আরিহান : তাহলে কিসের এতো বিশ্বাস আমার উপর?
কাশফিয়া : অআমি সবাইকেই বিশ্বাস করি ৷
আরিহান : তাই নাকি? (বলেই আগাতে লাগলেন)
কাশফিয়া : হ্যাঁ ৷ (পিছাতে পিছাতে)
আরিহান : আমাকে স্বামী হিসেবে মেনে নিয়েছো তাই না?
কাশফিয়া : আআমি ককখন বললাম ৷
আরিহান : ওই মহিলাকে তো বললে আমি তোমার স্বামী ৷ ওই মহিলা তোমার শ্বাশুড়ি মা ৷ সব মিথ্যা?
কাশফিয়া : আ…আব…বলছিলাম কি আমি ঘুরতে যাবো ৷ নিয়ে যাবেন আমাকে? যাই রেডি হয়ে নি ৷
আবার চলে যেতে নিবো উনি আমার হাত ধরে দেয়ালে চেপে ধরে বললেন,,,,,
আরিহান : কথা কেন এড়িয়ে যাচ্ছো কাশফুল? বলো আমায় ৷ উত্তর দাও আমায় ৷
কাশফিয়া : ওওই সব কথা এমনি বলেছি ৷
আরিহান : রিয়্যালী? এমনি বলেছো? তারপর আবার কি যেন বলেছিলে?
কাশফিয়া : ককি?
আরিহান : উম…ওই মহিলাটিকে এটা বলেছিলে না? ‘আপনার নাতি নাতনি, নাতি নাতনির নাতি নাতনিকে দেখতে হবে তো নাকি?’
নিজের কথায় নিজেই ফেসে গেলাম ৷ কে বলেছিল ওসব বলতে? ধুরর ৷ আমাকে চুপ থাকতে দেখে আরিহান আবার বললেন,,,,
আরিহান : কি হলো? বলো? ওই মহিলাটি যদি এসে দেখে তার নাতি নাতনির কোনো ব্যবস্থাই হয় নি ৷ ভালো হবে বলো?
কাশফিয়া : ওওওটা ককথার কথা ছিলো ৷ সিরিয়াসলি বলি নি আমি ৷
আরিহান : আমি তো সিরিয়াসলি নিয়েছি ৷
কাশফিয়া : দেখুন আপনাকে বলেছি ঘুরতে যাবো আমি ৷ আর আপনি এসব কি বিষয় নিয়ে কথা বলছেন? ছাড়ুন আমাকে ৷
আরিহান : উহু ৷
কাশফিয়া : দেখুন ভালো হচ্ছে না কিন্তু ছাড়ুন…
উনি আমার মুখে ফু দিয়ে সামনে থাকা চুল গুলো সরিয়ে দিলেন ৷ চোখ বন্ধ করে নিলাম আমি ৷ কোমড় চেপে তার সাথে মিশিয়ে দিলেন ৷ হাত দিয়ে থুতনি ধরে মুখটা উচু করে ধরলেন ৷ আমি এখনো চোখ বন্ধ করে রয়েছি হঠাৎ কানে ভেসে এলো,,,,,
— এই আরিহান শোন…(একটু থেমে) সরি সরি তোরা কন্টিনিউ কর ৷ আমি কিন্তু কিছু দেখিনি ৷ (বলেই পিছনে ঘুরল)
জয় ভাইয়ার কথা শুনে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম আরিহানকে ৷ আরিহান এক পলক আমার দিকে তাকিয়ে দাঁতে দাত চেপে জয় ভাইয়াকে বললেন,,,,
আরিহান : কিছু দেখিস নি মানে কি? কিছু করেছি যে তুই দেখবি? স্বামী স্ত্রীর রুমে দরজা নক করে ঢুকতে হয় জানিস না ৷
জয় : আরে ইয়ার ৷ তুই জানিস না দরজা লক করে রোমান্স করতে হয় ৷ দোষ আমার হয়ে গেলো এখন ৷
আরিহান : তুই যাবি নাকি…
জয় : যাচ্ছি যাচ্ছি তোরা কন্টিনিউ কর ৷ কাজ শেষে নিচে আসিস ৷ কিন্তু তাড়াতাড়ি ৷
আরিহান : তোর কথায় সব হবে নাকি? যা ভাগ এখান থেকে ৷
জয় ভাইয়া দ্রুত রুম থেকে বেরিয়ে গেলেন ৷ এই দুই বন্ধুর লজ্জা শরম কিছুই নেই দেখছি ৷ নিচের দিকে তাকিয়ে আছি আমি ৷ আরিহান আমার কাছে এসে বললেন,,,,,
আরিহান : রেডি হয়ে থেকো ৷
আরিহানের দিকে ভ্রু কুচকে তাকালাম ৷ আমার গালে হাত দিয়ে বললেন,,,,
আরিহান : ঘুরতে নিয়ে যাবো তাই ৷
আমি মাথা নেড়ে ‘আচ্ছা’ বললাম ৷ আমার কপালে ঠোঁট ছুঁয়ে বেরিয়ে গেলেন আরিহান ৷ তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম ৷ এই লোকটা কখন কি করে কিছুই বোঝা যায় না ৷ ভাবতেই অবাক লাগে যে উনি আমার স্বামী ৷
____________________
একটা পার্কের সাইডের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি আমি আর আরিহান ৷ পাশাপাশি দুজন কথা বলে বলে হাঁটছি ৷ হাঁটতে হাঁটতে মেইন রাস্তায় চলে এলাম আমরা ৷ রাস্তার ওই পাড়ে তাকাতেই দেখি একটা আইসক্রিম স্টল ৷ সেটা দেখে আমি আরিহানকে বললাম,,,,
কাশফিয়া : আইসক্রিম খাবো ৷ চলুন না ৷
আরিহান : এখন কোথা থেকে আইসক্রিম খাবে আবার?
কাশফিয়া : ওই যে দেখুন ৷ ওখানেই আছে চলুন না ৷
আরিহান : অনেক ভীর সেখানে ৷
কাশফিয়া : তো? প্লিজ প্লিজ চলুন না ৷
আরিহান : আচ্ছা তুমি এখানে দাঁড়াও নিয়ে আসছি আমি ৷
কাশফিয়া : কেন? এখানে কেন দাঁড়াবো? আমিও যাবো ৷
আরিহান : ওখানে অনেক ভীর হারিয়ে ফেলবো তোমাকে ৷ আর কত লোক আছে দেখেছো? ঘেষাঘেষি, ধাক্কাধাক্কি ৷ তুমি এখানে থাকো ৷ আমি না আসা পর্যন্ত কোত্থাও যাবে না একদম ৷
কাশফিয়া : আচ্ছা তবে তাড়াতাড়ি আর সাবধানে আসবেন ৷
আরিহান ‘হুম’ বলেই ওই পারে চলে গেলেন ৷ আমি আশেপাশে তাকিয়ে দেখতে লাগলাম ৷
হঠাৎ সামনে এসে একটা গাড়ি থামলো ৷ আর গাড়ির ভিতরে থাকা একটা লোক আমার হাত ধরে টেনে গাড়ির ভিতরে বসিয়ে দিলো ৷ আমি চিৎকার দিলেও কেউ এলো না ৷ কারণ এপাশটায় তেমন কোনো মানুষ নেই ৷
ড্রাইভিং সিটের দিকে চোখ পরতেই অবাক হয়ে গেলাম৷
চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,