The_Terrible lover part 34

#The_Terrible_Lover
#অদ্রিতা_জান্নাত
#পর্ব__৩৪

ঘুমের মধ্যে মাথায় কারো স্পর্শ পেয়ে ধরফরিয়ে উঠে বসলাম আমি ৷ সারা রাত ঘুমাতে পারি নি ভোরের দিকে চোখ লেগে গিয়েছিল ৷ চোখ খুলে দেখি সামনে লিজা বসে আছে ৷ ওকে দেখে বললাম,,,,,,,

কাশফিয়া : ততুমি এখানে?

লিজা : হুম দেখতে এসেছি তোমাকে ৷

কাশফিয়া : আমি এখানে সেটা কে বললো তোমাকে?

লিজা : আমরা তো হাসপাতালে গিয়েছিলাম ৷ তোমার বাবা মা আমাদের এখানে নিয়ে এসেছে ৷ রাস্তার একটা ছেলে তোমার অ্যাকসিডেন্টের খবর আমাদের দিয়েছিল ৷ কোন হাসপাতালে গিয়েছো সেটাও বলেছে ৷ কিন্তু তুমি অসুস্থ অবস্থায় এভাবে নিচে বসে আছো কেন?

কাশফিয়া : ককিছু না ৷ তোমার কাছে ফোন আছে? দিবে একটু?

লিজা : হঠাৎ…

কাশফিয়া : আর কিছু বলো না ৷ আগে দাও প্লিজ ৷

লিজা : আচ্ছা নাও ৷

বলেই আমার দিকে ওর মোবাইলটা এগিয়ে দিল ৷ মোবাইল হাতে নিয়ে আরিহানের নাম্বার ডায়াল করে কল দিলাম ৷ কিন্তু উনি রিসিভ করছেন না ৷ আবার দিলাম তবুও রিসিভ করছেন না অথচ রিং হচ্ছে ৷ কিছুক্ষন ধরে ট্রাই করতে লাগলাম কিন্তু কাজ হলো না ৷ ফোন রেখে দিয়ে লিজাকে বলতে লাগলাম,,,,,

কাশফিয়া : শোনো আমাকে একটু এখান থেকে বের করতে পারবে?

লিজা : মানে?

কাশফিয়া : মানে আমি বাহিরে যাবো কিন্তু এটা যেন আম্মু আব্বু না জানতে পারে ৷

লিজা : কি??

কাশফিয়া : প্লিজ প্লিজ এই একটা হেল্প করো ৷ আব্বু কখনোই বের হতে দিবে না আমাকে এই বাড়ি থেকে ৷ তুমি একটু চেষ্টা করো ৷ আমাকে এখান থেকে বেরিয়ে ওই বাড়িতে যেতে হবে ৷ প্লিজ একটু হেল্প করো ৷

লিজা : আচ্ছা করবো তার আগে আমার একটা কথা তোমার শুনতে হবে ৷

কাশফিয়া : কি?

লিজা : খাবার নিয়ে আসছি আমি খেয়ে নিবে তারপর বের হবে ৷

কাশফিয়া : না না আমাকে বের হতে হবে ৷

লিজা : হুম জানি তাই বলছি আগে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নেও ৷ নাহলে একটুতেই অসুস্থ হয়ে পরবে ৷ পরে যাবে কীভাবে বলো?

কাশফিয়া : আচ্ছা তবে তাড়াতাড়ি ৷

লিজা খাবার আনতে চলে গেল ৷ আমি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে খেয়ে নিলাম ৷ বেলকনিতে গিয়ে দেখি একটা মই রাখা আছে ৷ সেটা দেখে লিজাকে বললাম,,,,

কাশফিয়া : মই? এখানে কীভাবে আর কে রাখলো?

লিজা : তোমার ভাইয়াকে বলেছি আমি এখন যাও ৷

কাশফিয়া : থ্যাঙ্কিউ ৷ শোনো আজ থেকে তোমরা এখানেই থাকবে ওকে? আম্মু আব্বু কিছু বললে আমাকে বলবে ৷ কিন্তু তোমরা এখানেই থাকবে ৷ আমি আসছি ৷ কেউ যেন না জানে একটু সামলিয়ে নিও ৷

লিজা : আচ্ছা যাও ৷

আস্তে আস্তে মই দিয়ে নিচে নেমে গেলাম ৷ নিচে গিয়ে দেখি ভাইয়া মই ধরে দাঁড়িয়ে আছে ৷ আমাকে দেখে ইশারা করে যেতে বললো ৷ আমি হেসে চলে এলাম ৷ রাস্তা ধরে হাঁটছি ৷ আরিহান নিজে তো আমাকে নিলেন না ৷ আমাকে একাই যেতে হবে ৷ কিছুক্ষনের মধ্যেই পৌঁছিয়ে গেলাম ৷ ওখানে গিয়ে কলিং বেল টিপলে কয়েক মিনিট পর আখি এসে দরজা খুললো ৷ আমাকে দেখে ‘ভাবি’ বলে জড়িয়ে ধরলো ৷ কিছুক্ষন পর ছেড়ে দিয়ে বললো,,,,,

আখি : কেমন আছো ভাবি? আসো না ভিতরে এসো ৷

আমি ভিতর যেতে নিলেই আরিহানের মা এসে বললেন,,,,,,,,

— এখানে কি চাই তোমার?

কাশফিয়া : মানে? আমি আসতে পারি না এখানে?

— না পারো না ৷ ছয় বছর আগেই তোমার জন্য এই বাড়ির দরজা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ তুমি আর আসতে পারো না ৷ চলে যাও এখান থেকে ৷

কাশফিয়া : না আমি যাবো না ৷ আমি আমার শ্বশুড় বাড়িতে এসেছি ৷ আমার স্বামীর বাড়িতে এসেছি ৷ আমার মেয়েদের কাছে এসেছি ৷ অধিকার আছে আমার ৷

বলে ভিতরে ঢুকলে আরিহানের মা আমার হাত ধরে তার সামনে নিয়ে বললেন,,,,,,

— বেশি বাড়াবাড়ি করবে না বেরিয়ে যাও এই বাড়ি থেকে ৷

কাশফিয়া : কার কথায় যাবো আমি আপনার কথায়? কখনোই না ৷

— তাহলে কি আরিহানের কথায় যাবে?

কাশফিয়া : উনি এরকমটা কখনোই করবেন বা বলবেন না ৷

— কেন করবো না?

পিছনে ঘুরে তাকালাম আমি ৷ আরিহান সিঁড়ি দিয়ে নামতে নামতে আবার বললেন,,,,,,

আরিহান : কেন করবো না? তুমি পারলে কেন আমি পারবো না? চলে যাও এই বাড়ি থেকে ৷

কাঁপাকাঁপা পায়ে আরিহানের দিকে এগিয়ে গেলাম ৷ কাঁপাকাঁপা গলায় বলতে লাগলাম,,,,,,

কাশফিয়া : চলে যাবো আমি? আআপনি বলছেন এটা? আপনি কি আমার সেই আরিহান যে আমাকে পাগলের মতো ভালোবাসতো ৷ এখন ভালোবাসেন আমাকে? আপনি কি সেই আরিহান যে সব সময় জোর করতো আমাকে ৷ নিজের সাইকো গিরি দেখাতেন আমাকে ৷ আপনি কি আমার সেই আরিহান যে আমাকে সব সময় আগলে রাখতেন নিজের কাছে ৷ এক মূহুর্তও হাত ছাড়তেন না, চোখের আড়ালে যেতে দিতেন না ৷ বলুন না ৷ আপনি আমাকে চলে যেতে বলছেন? কোথায়? এই বাড়ি থেকে নাকি আপনাদের সবার জীবন থেকে ৷ কোনটা? মেরে ফেলুন আমাকে তবুও দূর করে দিবেন না প্লিজ ৷

আরিহান : এক কথা কয় বার বলবো?

কাশফিয়া : কি বলেছেন আপনি? চলে যেতে নাকি মরে যেতে কোনটা? আপনার কাছে রাখিয়েন না আমাকে যদি অসুবিধা হয় ৷ আমার মেয়েদের কাছে রাখুন ৷ ওদের কাছে থাকব আমি ৷ আর নাহলে ওদেরকে নিয়ে চলে যেতে দিন আমায় ৷ আমি ওদের ছাড়া থাকতে পারবো না ৷ ওদেরকে নিয়ে যাবো আমি ৷

বলে ওনার সামনে দিয়ে যেতে নিলেই উনি আমার হাত ধরে টেনে বাড়ির বাহিরে বের করে দিয়ে বললেন,,,,,,,

আরিহান : যাও এখান থেকে গার্ড ডাকতে বাধ্য করো না আমাকে ৷

কাশফিয়া : ডাকুন কে না করেছে? আমি যাবো না ৷ এখানেই থাকবো ৷ যদি এখান থেকেও বের করে দেন তো রাস্তায়ই বসে থাকবো ৷ শুধুমাত্র আপনার অপেক্ষায় ৷ আমি জানি আপনি আসবেন ৷

আরিহান : ভুল জানো ৷

বলে ঠাস করে দরজা লাগিয়ে দিলেন ৷ স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম সেদিকে ৷ অনেক পাল্টে গিয়েছেন এই কয় বছরে উনি ৷ ভাবতেই অবাক লাগছে ৷ কাঁধে কারো স্পর্শে চমকে উঠলাম ৷ পিছনে তাকিয়ে দেখি নিধি দাঁড়িয়ে আছে ৷ ওকে দেখে হেসে বললাম,,,,,,

কাশফিয়া : কেমন আছিস?

নিধি : কত দিন পর দেখলাম তোকে ৷

বলেই আমাকে জড়িয়ে ধরে রইল ৷ কিছুক্ষন পর বললাম,,,,,,

কাশফিয়া : কি রে বললি না যে?

নিধি : আমাদের ছাড়া কি করে থাকলি এতো গুলো বছর? আরিহান ভাইয়া সেই জন্যই তো রেগে আছে তোর উপর ৷ কি হয়েছিল যে তুই আসিস নি?

কাশফিয়া : আমি যদি পারতাম তবে কি আসতাম না? আরিহান তো আমার কোনো কথাই শুনছেন না ৷ কেন ভাবছেন তার থেকে ইচ্ছা করে দূরে চলে গিয়েছি আমি ৷ কি করে বলবো ওনাকে ৷ সুযোগই তো দিচ্ছেন না ৷

নিধি : কি কারণ সেটা আমি জানতে চাইবো না ৷ আমি জানি তুই কখনো ইচ্ছা করে এরকমটা করতে পারিস না ৷ আমি সবসময় তোর সাথে ছিলাম এখনো আছি ৷ চল আমার সাথে ৷

কাশফিয়া : কোথায়?

নিধি : আগে আয় ৷

বলেই নিধি আমাকে বাড়ির পিছনের দিকে নিয়ে গেল ৷ এই বাড়ির পিছনে একটা দরজা আছে ৷ যেটা দিয়ে সবার চোখের আড়ালে বাড়ির ভিতরে যাওয়া যায় ৷ নিধি আমাকে সেখানে নিয়ে ইশারা করে সেটা দেখিয়ে বললো,,,,,,

নিধি : আরিহান ভাইয়া বাড়ি থেকে বের হলে তুই এটা দিয়ে ভিতরে কেয়া, আরিয়ার কাছে চলে যাবি ৷ ঠিক আছে?

কাশফিয়া : উনি কখন বের হবে সেটা বুঝবো কীভাবে?

নিধি : সেই ব্যাপারটা আমি দেখছি ৷ এখন যাই যখন আসবো ইশারা করে বুঝিয়ে দিব তখন ভিতরে চলে যাবি তুই ৷ বুঝেছিস?

কাশফিয়া : হুম ৷

নিধি : তো ওয়েট ৷ আসছি আমি ৷

বলেই নিধি চলে গেলো ৷ আমি ওখানেই দাঁড়িয়ে রইলাম ৷ কিছুক্ষন পর ও এসে ইশারা করে ভিতরে যেতে বললো আমাকে ৷ আমি আস্তে আস্তে ভিতরের দিকে চলে গেলাম ৷ এদিকটায় কেউ না থাকায় কোনো সমস্যা হয় নি ৷ আমি আমাদের রুমের দিকে চলে গেলাম ৷ রুমে গিয়ে দেখি কেয়া আর আরিয়া খাটের উপর বসে কিছু একটা আঁকছে ৷ আমি গিয়ে ওদের পাশে বসলাম ৷ ওরা আমাকে দেখে ‘মাম্মা’ বলে জড়িয়ে ধরলো ৷ মনে হচ্ছে কতদিন পর জড়িয়ে নিলাম ওদের ৷

কিছুক্ষন চুপ থেকে জড়িয়ে ধরে রইল ৷ আমি ওদের মাথায় হাত বুলিয়ে বলতে লাগলাম,,,,,,,,

কাশফিয়া : আমার বেবিরা কি মিস করছিল আমাকে?

কেয়া : হুম মাম্মা তুমি কাল আসো নি কেন? তোমার জন্য ওয়েট করেছি আমরা ৷

কাশফিয়া : এখন তো এসেছি ৷ আর যাবো না ৷ এখন বলো সকালে খেয়েছো তো?

আরিয়া : হুম পাপা খাইয়ে দিয়েছে আমাদের ৷ তুমি আমাদের সঙ্গেই থাকবে কিন্তু ৷ কোত্থাও যেতে দিবো না একদম ৷

কাশফিয়া : আচ্ছা? (হেসে)

পেছন তখন কারো আওয়াজ পেয়ে ওদেরকে ছেড়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি আরিহান দাঁড়িয়ে আছেন ৷ আমাকে তাকিয়ে থাকতে দেখে বললেন,,,,,

আরিহান : কি হলো? আবার এসেছো কেন? আর কীভাবেই বা এলে?

কাশফিয়া : প্রথমত আমি আপনার কাছে নয় আমার মেয়েদের কাছে এসেছি ৷ দ্বিতীয়ত একজন মা তার সন্তানের জন্য সবকিছু করতে পারে ৷ সেখানে একটা বাড়ির ভিতরে ঢোকা কি খুব বেশি কঠিন?

আরিহান : চলে যাও এখান থেকে ৷

কাশফিয়া : যাবো তবে আমি একা নই ৷ কেয়া, আরিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ৷

আরিহান : আমি আমার মেয়েদের তোমার সঙ্গে যেতে দিব না ৷ চলে যাও তুমি ৷

কাশফিয়া : ওরা শুধু আপনার মেয়ে না, আমারও ৷ আমাকে ছাড়া কি ওরা থাকতে পারবে? কাল তো রাখলেন কি হয়েছে? একবারও কি বলে নি আমাকে ওদের কাছে বা ওদেরকে আমার কাছে নিয়ে আসতে? আমি জানি বলেছে ৷ আপনি বললেই যে আমি চলে যাব সেটা কখনোই হবে না ৷

আরিহান আমার হাত ধরে টেনে বসা থেকে দাঁড় করালেন ৷ তারপর নিয়ে যেতে নিলেই কেয়া আর আরিয়া আমার অন্য হাত ধরে আটকিয়ে নিলো ৷ আরিহান ওদের দিকে তাকিয়ে বললেন,,,,,

আরিহান : কি হয়েছে মা? হাত ছাড়ো ৷

ওরা বেড থেকে নেমে আমার হাত থেকে আরিহানের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বললো,,,,

আরিয়া : মাম্মা এখানেই থাকবে আমাদের কাছে ৷

কেয়া : হ্যাঁ পাপা মাম্মাকে নিয়ে যেও না প্লিজ ৷ মাম্মার সঙ্গে থাকবো আমরা ৷ তোমার সঙ্গেও ৷

আরিয়া : হুম আমরা তোমাদের দুইজনের সাথেই থাকবো ৷ প্লিজ কেউ চলে যেও না ৷ পাপা মাম্মা থাক এখানে ৷ আমরা সবাই একসাথে থাকবো ৷ প্লিজ প্লিজ পাপা ৷

কেয়া : হ্যাঁ হ্যাঁ কেউ যাবে না সবার সাথে থাকবো আমরা ৷

আরিহান ওদের দিকে একবার তাকিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন,,,,,

আরিহান : থাকো ৷ শুধু আমার মেয়েদের জন্য ৷

বলেই বাহিরে চলে গেলেন ৷ যে আমাকে কথা বলারই সুযোগ দিচ্ছে না তাকে কি করে বোঝাবো আমি? কেন বুঝতে চাইছেন না উনি?

__________________

রাত ৯ টা বাজে ৷ কেয়া আর আরিয়াকে ঘুম পাড়ানোর চেষ্টা করছি ৷ কিন্তু আজ ওরা ঘুমাচ্ছেই না ৷ এদিকে আমার ঘুম পাচ্ছে অনেক কিন্তু আরিহান এখনো ফিরেন নি ৷ তাই চোখ খোলা রাখার চেষ্টা করছি ৷ হঠাৎ দরজা খোলার আওয়াজ পেলাম ৷ তাকিয়ে দেখি আরিহান এসেছেন ৷ আমাদের দিকে একবার তাকিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেলেন ৷ ফ্রেশ হয়ে এসে একটা বালিশ নিয়ে চলে যেতে নিলেই কেয়া আরিহানকে ধরে বললো,,,,,,,,

কেয়া : কোথায় যাচ্ছো পাপা?

আরিহান : ঘুমাবো না? এখানে জায়গা হবে না তোমরা শুয়ে পরো আমি সোফায় শুচ্ছি ৷

কাশফিয়া : আপনাকে যেতে হবে না ৷ আমিই চলে যাচ্ছি ৷

বলে উঠতে নিলেই কেয়া আমার হাত ধরে বলতে লাগলো,,,,,,,,

আরিয়া : কেউ কোত্থাও যাবে না ৷ এখানে আমরা সবাই শুয়ে পরার পরও জায়গা থেকে যাবে ৷ আর তোমরা বলছো জায়গা নেই ৷ আমরা তোমাদের দুজনের সাথেই শুবো ৷ দুজনেই শুয়ে পরো না!!

কেয়া : হ্যাঁ পাপা প্লিজ প্লিজ ৷

বলেই কেয়া আরিহানের হাত থেকে বালিশটা নিয়ে রেখে দিল ৷ তারপর আরিহানকে টান দিয়ে বসিয়ে দিল ৷ উনি আর কোনো কথা না বলে লাইট অফ করে শুয়ে পরলেন ৷ আরিয়া আমার হাত ঝাকাতে ঝাকাতে আবার বললো,,,,,,,

আরিয়া : কি হলো মাম্মা শুয়ে পরো প্লিজ ৷

ওদেরকে জড়িয়ে ধরে শুয়ে পরলাম আমি ৷

______________

সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে এসে কেয়া আর আরিয়ার পাশে বসলো আরিহান ৷ ওদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিলো কিছুক্ষন ৷ তারপর উঠে কাশফিয়ার কাছে চলে গেল ৷ এখনো গভীর ঘুমে ও ৷ কাশফিয়ার পাশে বসে ওর মাথায়ও হাত বুলিয়ে দিতে লাগল ৷ আর একদৃষ্টিতে চেয়ে রইল ওর দিকে ৷ কত গুলো বছর ওকে না দেখে কাটিয়ে দিয়েছে আরিহান ৷ সব কিছু আজ পুষিয়ে নিচ্ছে ৷ যতক্ষন পর্যন্ত ঘুমাবে কাশফিয়া ততক্ষন পর্যন্তই দেখবে ওকে আরিহান ৷ কাশফিয়ার প্রতি ওর ভালোবাসাটা কমে নি একটুও ৷ আগে যেমন ছিল তেমনই আছে ৷ শুধু নিজের রাগটার জন্যই ও দূরে দূরে থাকছে ৷

গভীরভাবে কাশফিয়ার কপালে একটা চুমু দিল আরিহান ৷ ঘুমের মধ্যেই কেঁপে উঠলো ও ৷ একটু নড়েচড়ে আবার ঘুমিয়ে পরলো ৷ আরিহান হেসে সোফায় বসে পরলো ল্যাপটপ নিয়ে ৷
আমার ঘুম ভাঙ্গলে দেখি আরিয়া আর কেয়া ঘুমাচ্ছে ৷ হেসে ওদের কপালে চুমু দিয়ে উঠে বসলাম ৷ আরিহান কাজ করছেন ৷ আমার দিকে একবার তাকিয়ে কাজে মন দিলেন ৷ আমি উঠে একটা শাড়ি নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেলাম ৷

চুল মুছতে মুছতে বেরিয়ে এসে আয়নার সামনে বসে পরলাম ৷ দুহাতে চুড়ি পরে চোখে কাজল আর কপালে ছোট্ট একটা টিপ দিলাম ৷ তারপর চুল ঝাড়তে ঝাড়তে বেলকনিতে চলে গেলাম ৷ এতক্ষন যে আরিহান আমাকে দেখছিলেন সেটা খুব ভালো করেই জানি আমি ৷ টাওয়ালটা শুকোতে দিয়ে রুমে এসে দেখি আরিহান চোখ বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছেন ৷ হয়তো নিজেকে কন্ট্রোল করছেন ৷ আমি হেসে বেডে গিয়ে বসতেই দেখি কেয়া আরিয়াকে খোচাচ্ছে ৷ সেটা দেখে বললাম,,,,,,,

কাশফিয়া : কি হয়েছে মা? তুমি ওকে তুলছো কেন?

কেয়া : ভালো লাগছে না তাই ৷ ওই ওঠ না ৷

বলেই ওকে ধাক্কা দিতে লাগল ৷ ঘুম থেকে উঠে সব সময় এরকমই করে ও ৷ আরিয়া ঘুমু ঘুমু কন্ঠে কেয়াকে ধাক্কা দিয়ে বললো,,,,,,

আরিয়া : উফ যা সর ৷ মাম্মা যেতে বলো ওকে আরেকটু ঘুমাবো ৷

কেয়া : আর কত ঘুমাবি ওঠ ৷

বলেই ও টেনে তুললো আরিয়াকে ৷ আস্তে আস্তে চোখ খুলে আরিয়া বলতে লাগলো,,,,,,

আরিয়া : মাম্মা ওকে কিছু বলো না ৷ ওর জন্য ঘুমাতে পারলাম না আমি উফ (একটু থেমে) ওয়াও!! মাম্মা তোমাকে তো অনেক সুন্দর লাগছে আজ ৷

বলেই জড়িয়ে ধরলো আমাকে ৷

কাশফিয়া : হয়েছে? এবার ওঠো ৷ কাল তো শুক্রবার ছিল তাই স্কুল বন্ধ ছিল তোমাদের ৷ আজ কিন্তু খোলা ৷ যেতে হবে তো নাকি?

কেয়া : হ্যাঁ কীভাবে যাবো?

পাশে থেকে আরিহান বলে উঠলেন,,,,,,

আরিহান : তোমরা তোমাদের ফুপ্পির কাছে যাও ৷ আমি কাল তোমাদের ড্রেস কিনে এনে তোমাদের ফুপ্পিকে দিয়েছি ৷ যাও এখন আমি আসছি ৷

দুজনেই : আচ্ছা ৷

বলেই ওরা দৌঁড়ে রুমের বাহিরে চলে গেল ৷ আরিহান উঠে ব্যাগের ভিতর ল্যাপটপটা ঢুকিয়ে ব্যাগটা নিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যেতে নিলেন ৷ আমি তাড়াতাড়ি গিয়ে উনি যাওয়ার আগেই ওনার হাত ধরে আটকে দিলাম ৷ আরিহান পিছনে ঘুরে ভ্রু কুচকে তাকিয়ে রইলেন আমার দিকে ৷ আমি উঠে ওনার দিকে এগিয়ে গেলাম ৷ আর না, অনেক হয়েছে ৷ সব শুনতে হবে আজ ওনাকে ৷ সব বলবো আমি আজ ওনাকে ৷ তবুও যদি দূরে সরিয়ে দেন তাহলে আমি আর কখনই আসবো না তার সামনে ৷ চলে যাবো চিরতরে ৷

চলবে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here