#তুমি_নামক_ব্যাধি
#মুন্নি_আরা_সাফিয়া
#পর্ব_২১(অন্তিম)
বাসার সামনে গাড়ি থামতেই অবাক হয়ে গেলাম।পুরো বাসা লাইটিং করা।সাদা আর সোনালী কালারের আলোতে চারিদিক ঝলমল করছে।আমি তো মাত্র গতকাল এখান থেকে গেছি।আজ সবেমাত্র দুপুর হয়েছে।এর মধ্যে এসব করলো কে?আর কেনই বা করলো?মনে রাজ্যের প্রশ্ন নিয়ে অনির্বান ভাইয়া আর ভাবীর দিকে তাকাতেই তারা মুচকি হাসলো।ভাইয়া বলল,
—‘আমায় জিজ্ঞেস করো না।কিচ্ছুটি বলতে পারবো না।ভিতরে চলো।’
বলেই ভাইয়া আমাদের নিয়ে ভেতরে যাওয়ার জন্য পা বাড়াল।কলিং বেলে চাপতেই আছে ভাইয়া।কিন্তু খোলার নাম গন্ধ নেই।কি যে হচ্ছে তা বোঝার ক্ষমতা নেই। টানা পাঁচ মিনিট পর দরজা খুলেই একসঙ্গে সবাই বলে উঠলো,
—‘সারপ্রাইজ!’
সারপ্রাইজ টা কাকে দিচ্ছে তা বোঝার জন্য ভাইয়ার পেছন থেকে উঁকি মেড়ে সামনে তাকিয়েই স্তব্ধ হয়ে গেলাম।নড়চড়ের সমস্ত শক্তি হারিয়ে ফেলেছি।কারণ আমার সামনে পুরো ফ্যামিলি দাঁড়িয়ে আছে। আমার মা বাবা,আমান,ভাইয়া, ভাবী,তিহাম ভাইয়ার মা,বাবা,তুহিন,তিথি আর তিথির বর দ্বীন ভাইয়া।
আমি একদম চুপ করে আছি।কিভাবে রিয়েক্ট করবো তা বুঝে উঠতে পারছি না।তিথি হাত ধরে টেনে নিয়ে ভেতরে সোফায় বসালো।প্রায় সঙ্গে সঙ্গে আমার হুশ ফিরলো।সবাইকে জড়িয়ে ধরে কান্না করে দিলাম।এখন আমি আমার ইমোশন অতি সহজে প্রকাশ করতে পারি।আমাকে সবার সামনে কাঁদতে দেখে হয়তো সবার বুকের ভার নেমে গেল। কারণ এই কয়েক মাসে আমি নিজের অজান্তেই অনেকটা চেঞ্জ হয়েছি যার পুরোটা পজিটিভ।
ধীরে সুস্থে সবার কুশলাদি জিজ্ঞেসের পর পরই জানতে পারলাম কেন হুট করে সবাই চলে এসেছে।বিয়ে, হ্যাঁ আমার বিয়ে। তিহাম ভাইয়ার সাথে। তাও নাকি আজকে।
পাশ ফিরে সিঁড়ির দিকে তাকাতেই দেখি বিউটিশিয়ানরা অলরেডি এসে গেছে। সব ঘরোয়া পদ্ধতিতে হবে।আর দেশে ব্যাক করার পরে ধুমধাম করে রিসিপশন হবে।এটা নাকি তাদের সারপ্রাইজের অংশ ছিল। তাই আমাকে না জানিয়ে সব আয়োজন করা হয়েছে।ব্যাপারটা হজম করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হলেও মেনে নিলাম।আর তো উপায় দেখছি না।
আড়চোখে তিহাম ভাইয়ার দিকে নজর পড়তেই দেখি তার মুখ লক্ষ ভোল্টের মতো জ্বলছে।তার মুখ জ্বলার যথোপযুক্ত কারণ আছে। আমি ভয়ে ঢোক গিললাম।
তিথিকে সাথে নিয়ে বসে আছি এক কোণে।বাইরের মানুষ না থাকলেও আমাদের তিন ফ্যামিলি মিলে বাসা ভরে গেছে প্রায়।তিথির ডান হাতটা নিজের হাতের ভাঁজে নিলাম।আমার ভেতরের অনেক বড় অংশ জুড়ে মেয়েটা আছে। তিথি মুচকি হেসে বলল,
—‘দিয়ানা,জানিস।একটা বড় সুখবর আছে। কিন্তু কাউকে বলিনি।এমনকি দ্বীনকেউ না।হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সবার আগে তোকে বলবো।তুই প্রস্তুত?’
কৌতূহল নিয়ে প্রশ্ন করলাম,
—‘সিরিয়াস কিছু? ‘
—‘এই মুহূর্তে কাউকে বলবি না কিন্তু। ‘
মাথা নাড়লাম। তিথি আমার কানে কানে যা বললো তা শুনে আমি হাজার ভোল্টের শক খেয়েছি মনে হচ্ছে। তিথি মা হতে চলেছে? বিশ্বাসই হচ্ছে না!খুশি তে ওকে জড়িয়ে ধরলাম।ও বলল,
—‘আজ রাতে দ্বীনকে বলবো।ও যে কি পরিমাণ খুশি হবে তা ধারণার বাইরে। ‘
________________
নিঃশব্দে বিয়েটা মিটে গেলো।শুধু মাত্র কবুল বলার সময় কেন জানি বার বার দম বন্ধ হয়ে আসছিল। মনে হচ্ছিল আমাকে শূলে চড়ালেও এত ভারী শব্দ মুখ থেকে বের হবে না।তবুও অনেক কষ্টে কিভাবে কিভাবে যেনো বের হয়ে গেল।
তিহাম ভাইয়ার রুমে বসে আছি।ঘরটা এমনিতেই ভয়ানক সুন্দর। আর আজ সাদা আর নীল গোলাপের কম্বিনেশনে দূর্দান্ত করে সাজানো হয়েছে। কিন্তু আমার ভালো লাগছে না।গায়ে তেমন ভারী সাজ না।তবুও অসহ্য লাগছে।
এর যথেষ্ট কারণ আছে। দুপুরের দিকে একটু কান্না করেছি।ব্যস!মাথার দানব ভাঙচুর শুরু করেছে। তাছাড়া প্রচন্ড ক্ষুধা লেগেছে। সন্ধ্যায় খেতে বলল,তখন না করলাম।কিন্তু এখন মাথা ব্যথার সাথে পাল্লা দিয়ে পেটে নাড়িভুড়ি জট পাকিয়ে যাচ্ছে। সবকিছু অসহ্য লাগছে।
দরজায় খুটখুট আওয়াজে চোখ তুলে তাকালাম।তিহাম ভাইয়া দাঁড়িয়ে আছে। আমার দিকে তাকিয়ে একগুচ্ছ হাসি ছুঁড়ে দিল।কিন্তু আমার সবকিছুতে বিরক্ত লাগছে।অনেক কষ্টে নিজেও একটু হাসার চেষ্টা করলাম।তিহাম ভাইয়া এগিয়ে এসে বলল,
—‘মাথায় ঘোমটা কই?ঘোমটা দিয়ে বসে থাকতে হয়,জানো না?তাছাড়া সালাম করবে না?’
আমি জোর করে বললাম,
—‘আমার প্রচন্ড ক্ষুধা লাগছে।ভাত খাবো,গরুর মাংস দিয়ে। এক্ষুনি! ‘
তিহাম ভাইয়া ঘর কাঁপিয়ে হাসা শুরু করলো।ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে আছি আমি।আমি তো তার কাছে মদ কিংবা বিড়ি,সিগারেট চাইনি।এত হাসার কি আছে। সামান্য তো ভাতই চেয়েছি।তিহাম ভাইয়া হাসতে হাসতে বেরিয়ে গেল।
কিছুক্ষন পর খাবার নিয়ে হাজির হলো।বলল,
—‘তুমি বালিশে হেলান দিয়ে বসো।আমি খাইয়ে দিচ্ছি। মাথা ব্যথা করছে নিশ্চয়ই! চুপচাপ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়বে।’
মাথা নাড়লাম শুধু। কথা বলার মতো অবস্থা নেই। মাথার মধ্যে পেরেক ঠুকে দেয়া শুরু হয়ে গেছে। দ্রুত খেয়ে নিলাম।সাথে মেডিসিন খাইয়ে দিল। পানি খেয়ে বালিশে মাথা রেখে গুটিশুটি হয়ে শুয়ে পড়লাম।তিহাম ভাইয়া প্লেট সরিয়ে আমার পাশে বসল।আমি হালকা চোখ খুলে বললাম
—‘স্যরি,আমি অসুস্থ হয়ে পড়লাম।আপনাকে সময় দিতে পারলাম না।’
তিহাম ভাইয়া কড়া গলায় বললো,
—‘ঠাডিয়ে এক চড় দিবো।একদম চুপ।ঘুমানোর চেষ্টা করো।মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছি। ‘
তিহাম ভাইয়া মাথায় হাত দিতেই আমি মাথাটা সরিয়ে নিলাম।বললাম,
—‘মাথায় হাত দিবেন না।আমার লজ্জা লাগছে।’
—‘হা হা।কিন্তু আমি তো এর আগে প্রায় প্রত্যেক রাত মাথায় হাত ভুলিয়ে ঘুম পারিয়েছি।আজ তো লিগালি সেই অধিকার পেলাম।তাহলে লজ্জা পাওয়ার কি আছে! ‘
—‘জানি না।আমার লজ্জা লাগছে। সো,আমায় প্লিজ কোনো ধরনের ছোঁয়ার চেষ্টা করবেন না।’
তিহাম ভাইয়া চুপচাপ আমার পাশের বালিশে শুয়ে পড়লো।আমি চোখ বন্ধ করতেই হুট করে আমায় একটানে নিজের বুকের উপর নিয়ে বলল,
—-‘নো মোর টক।চুপচাপ ঘুমিয়ে পড়ো।’
বলেই মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়া শুরু করলো।একবার মাথাটা উঁচু করে ওনার মুখটা দেখলাম।ইশ!কি সুন্দর দেখতে।ভাবতেই পারছি না এই ছেলেটা এখন সম্পূর্ণ রূপে আমার। মুচকি হেসে ঘুমিয়ে পড়লাম।
________________
প্রচন্ড জল তৃষ্ণা পেয়েছে। কিন্তু উঠে খাওয়ার মুড নেই।এই মুহূর্তে ঘুম ভেঙে উঠে এক গ্লাস পানি খাওয়া পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিনতর কাজ মনে হচ্ছে। কিন্তু গলা তো অলরেডি মরুভূমির চেয়ে রুক্ষ হয়ে গেছে। বাধ্য হয়ে উঠতে নিতেই বাঁধা পড়লো।
ঘুমজড়ানো চোখে মুখ তুলে দেখি তিহাম ভাইয়া আমায় জড়িয়ে গভীর ঘুমে।সঙ্গে সঙ্গে চমকে উঠলাম। উনি আমার রুমে কি করছে!পরমুহূর্তে মনে পড়ল আমি নিজেই তো ওনার রুমে।সন্ধ্যায় না আমাদের বিয়ে হলো।আস্তে করে ওনার মুখে হাত বুলিয়ে দিলাম।কি নিষ্পাপ চেহারা!
লাইটের আলোয় বেশ কিছু্ক্ষণ তাকিয়ে থেকে ওনার বাঁধন থেকে নিজেকে ক্ষণিক সময়ের জন্য মুক্ত করে মোবাইলে সময় দেখলাম।২ টা বেজে ৪১ মিনিট।উঠে পানি খেয়ে ওয়াশরুমে গেলাম।একেবারে শাওয়ার নিয়ে তিহাম ভাইয়ার দেয়া সাদা সিল্কের শাড়িটা পড়লাম।মাথায় টাওয়াল পেঁচিয়ে বের হয়ে তিহাম ভাইয়াকে ডাকা শুরু করলাম।
কিন্তু উনি কিছুতেই উঠছেন না।ঠান্ডা হাতটা ওনার কপালে রাখতেই চোখ মেলে তাকালো।বললাম,
—‘উঠুন।ফ্রেশ হয়ে আসুন এখন।আপনি তো পাঞ্জাবি এখনো খুলেননি।’
—‘তুমি খুলতে দিলে কই!এই,তোমার মাথা ব্যথা কমেছে?এখন একটু বেটার লাগছে?এত ভোরে উঠেছ কেন?সকাল হয়ে গেছে?’
—‘আমি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ। আর সকাল হতে এখনো ঢের দেরি।।আপনি এখন প্লিজ উঠুন।ড্রেস চেঞ্জ করে আসুন।’
বলেই টেনে উঠিয়ে ওয়াশরুমে পাঠালাম।ড্রেসিং টেবিলের সামনে বসে আছি চুপচাপ। বেশ কিছুক্ষণ পর তিহাম ভাইয়া ট্রাউজার আর হোয়াইট গেঞ্জি পড়ে বের হলো মাথা মুছতে মুছতে। আমার দিকে তাকিয়েই অবাক হয়ে গেল।এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। আমি হেসে দিলাম। কারণ আমি যে ওনার দেয়া শাড়ি পড়েছি তা উনি মাত্র খেয়াল করলেন।এগিয়ে এসে আমার সামনের হাঁটু গেড়ে বসলো।আমি মাথা নিচু করে বললাম,
—-‘আপনি না বলেছিলেন, আজকের রাতে আমায় নিজ হাতে সাজাবেন?সেইজন্য বসে আছি।’
তিহাম ভাইয়া আমার মুখটা একটু উঁচু করে নরম গলায় বলল,
—‘পিচ্চি, আমার চোখের দিকে তাকাও। তুমি তো বলেছিলে আজকের রাত থেকে আমায় তুমি করে বলবে,নাম ধরে ডাকবে।এই তার নমুনা?’
—‘লজ্জা লাগে আমার বললাম তো।’
তিহাম ভাইয়া হেসে দিল।তারপর ড্রেসিং টেবিলের উপর থেকে সব জিনিস নিয়ে সাজানো শুরু করলো।চোখে কাজল পড়িয়ে দিল।কপালে কালো টিপ, ঠোঁটে মেরুন কালারের লিপস্টিক দিল।ওনার প্রতিটা স্পর্শে আমি কেঁপে কেঁপে উঠছি।কিন্তু উনি কেমন নির্বিকার,ঠোঁটের কোণে বেহায়ার মতো হাসি নিয়ে তাকিয়ে আছে। আমি ভ্রু কুঁচকে তাকাতেই বললো,
—‘দেখছো, আমি কিছু করার আগেই তুমি ভয়ে কাঁপা-কাঁপি শুরু করেছো।এখন আমি কিভাবে মুভ অন করবো?’
—-‘একদম চুপ।আইছে!মাঝরাতে শাওয়ার নিয়েছি তাই শীত শীত করছে।নাথিং এলস্।’
—‘হা হা।আমিও কিন্তু শাওয়ার নিয়েছি।’
বেহায়া ছেলে একটা!রাগ করে উঠে যেতে নিতেই হাত চেপে ধরলো।মাথার চুল ঠিক করে তার ঘ্রাণ নিল।ওয়ারড্রোবের কাছে গিয়ে একটা বড় বক্স এনে সামনে রাখলো।কৌতূহল নিয়ে তাকাতেই খুলল।একটা হোয়াইট নেকলেস,এয়াররিং আর রিং।সবগুলো একে একে পড়িয়ে ঘোর লাগা দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো।আমার কেমন অস্বস্তি লাগছে।হাত ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে বললাম,
—‘আমি এখন আপনাকে সালাম করবো।চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকুন!’
উনি বাঁধা দিলেন।বললেন,
—‘ওসব করতে হয় না।জানো না?’
—‘আমি আজকের রাতে করবো।আপনি আমার মাথায় হাত রেখে দুয়া করবেন।তাও উচ্চস্বরে। আমার কান অবধি পৌঁছায় যেনো।যাই বলুন না কেন সাথে যেনো এই কথাটি থাকে।”তোমার বিবাহিত জীবন ভালোবাসাময় হোক।”প্লিজ।’
ওনার চোখের দিকে তাকাতেই আর বাঁধা দিলেন না।আমি মাথায় কাপড় টেনে পায়ে হাত দিয়ে নিচু স্বরে বললাম,
—‘আসসালামু আলাইকুম তিহাম!ভালোবাসি তোমায়।’
উনি চমকে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। তার পর আমার মাথায় আস্তে করে হাত রেখে চোখ বন্ধ করে বিড়বিড় করলেন।একটু পর জোরে বলল,
—‘তোমার বিবাহিত জীবন ভালোবাসাময় হোক পিচ্চি। আমিও আমার এই পিচ্চিটাকে নিজের সম্পূর্ণটা দিয়ে ভালোবাসি।’
তারপর আমাকে দাঁড় করিয়ে বুকে জড়িয়ে নিলেন।পকেট থেকে একটা নীল গোলাপ বের করে কানে গুঁজে দিলেন।কপালে আলতো করে ঠোঁট ছুঁইয়ে কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো,
—-‘ক্যান আই মুভ অন?’
মুখটা উচু করে ওনার ঠোঁটে হালকা করে ঠোঁট ছুঁইয়ে লজ্জায় ওনার বুকে মুখ লুকালাম।উনি আমায় কোলে করে বেডের দিকে এগিয়ে গেলেন।
_______________
জোসনা রাত।চারিদিকে চাঁদের আলো নৃত্য করছে।ছাদের উপর তিহামের কাঁধে মাথা রেখে বসে আছি।আমার ডান হাতটা ওর হাতের ভাঁজে। তিহাম গুনগুন করে বললো,
কুঞ্জবিথীতে চাঁদের আলো
পড়েছে মনের উঠোন জুড়ে,
বেখেয়ালি ভাবনার সাথে রেখেছি তোমায়
ভালোবাসার ছন্দহীন চাদরে মুড়ে।।
আমি মুচকি হেসে ওর দিকে তাকাতেই কপালে ঠোঁট ছোঁয়ালো।বলল,
—‘আর ইউ রেডি?নিস্তব্ধপুরী আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে।’
মাথা নাড়লাম। হুট করেই বললাম,
—-‘আমি তোমাকে……………আই লাভ ইউ! ‘
তিহাম ফিক করে হেসে দিল।বাম হাত দিয়ে জড়িয়ে বলল,
—-‘আমিও তোমাকে…………আই লাভ ইউ টু!’
এরপর দুজনে নিরবে,নিভৃতে, হাত ধরে,ফাগুন হাওয়ার রঙে রাঙানো,বকুল ফুলের গন্ধে মাতাল করা নিস্তব্ধপুরীতে প্রবেশ শুরু করলাম।
*সমাপ্ত*
ফাইনালি শেষ হলো।দিয়ানা, তিহাম ওরা এখন আমাদের চক্ষুর অলক্ষ্যে প্রেমময় সংসার করে যাক।
একটা জিনিস বলে রাখি।আমার গল্পে কোনো ভিলেন নেই। সব চরিত্র ইতিবাচক। ইচ্ছে করেই দেইনি।বাস্তব জীবনে তো সবাই অহর্নিশি কষ্ট পেয়েই যাচ্ছে। মানুষের কল্পনাতে না হয় পজিটিভ কিছু হোক।তাছাড়া, প্রখ্যাত নোবেল বিজয়ী জন স্টেইনবেক ১৯৫২ সালে তার নোবেল পুরষ্কার আনতে গিয়ে বক্তব্যে বলেছিলেন,
“আমি মনে করি যে লেখক মানুষের নিঁখুত ও ত্রুটিহীন হয়ে উঠবার সম্ভাবনায় আস্থা স্থাপন করেননা, সাহিত্যের প্রতি তার কোনো আনুগত্য নেই। সাহিত্য সদস্য হওয়ার তার কোনো যোগ্যতা নেই। ”
তাঁর এই মহান কথাটি আমি বাস্তব জীবনেও প্রয়োগ করি।আমি ইতিবাচক চরিত্রে বিশ্বাসী।হোক সেটা গল্পে বা বাস্তব জীবনে।
যাই হোক,দিয়ানা তিহামসহ ওদের পুরো পরিবারকে বিদায় জানিয়ে শেষ করলাম।অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাদের।কৃতজ্ঞ সবার কাছে। ভালোবাসা রইলো সবার প্রতি।🥰💙💙
নতুন গল্প নিয়ে ফিরবো খুব শীঘ্রই!সে পর্যন্ত দোয়া ও ভালোবাসা সবার প্রতি!স্টে সেফ!”সাথে ভূত নাইট” সবাইকে! 🐸