#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা_মালিহা_খান❤️
#পর্ব-৩০(ভালবাসা দিবসের বিশেষ পর্ব)
ভার্সিটির পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত পরশু।টানা পনেরদিনের পরীক্ষা শেষে বেশ ক্লান্ত মায়া।এই কয়দিন রোজ তাকে ভার্সিটি নিয়ে গিয়েছে আরিয়ান।সকালের অফিস বাদ দিয়ে তিনঘন্টা বসে থেকে তাকে বাসায় নামিয়ে দিয়ে বিকেলবেলা অফিসে গিয়েছে।ফিরতো রাতের বেলা।তবে শত ব্যস্ততার পরেও মায়াকে রোজ রাতে বুকে নিয়ে ঘুমাতে ভুলেনি।ক্লান্ত শরীরে বাসায় ফিরে সর্ব প্রথম মায়ার কপালে উষ্ণ স্পর্শ দিতে একদিনও দেরি হয়নি।
আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেকে বিছানায় একা অবস্থায় পেলো মায়া।প্রতিদিন আরিয়ানের বুকেই ঘুম ভাঙে তার।সে যতক্ষন না উঠে ততক্ষণ আরিয়ানের ঘুম ভেঙে গেলেও ও উঠে না।তবে আজকে কই গেলো?
গায়ের কম্বল সরিয়ে উঠে বসলো মায়া।রুম অন্ধকার করা।সে উঠে গিয়ে পর্দা সরিয়ে দিলো।অনেকটা বেলা হয়ে গিয়েছে।কাল রাতে খুব মাথা ব্যাথা করছিলো।আরিয়ান বেশ রাত পর্যন্ত মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছে।শেষে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছে মনে নেই।
আড়মোড়া ভেঙে কাবার্ড খুললো সে।ভালো লাগছেনা।শাওয়ার নিলে হয়তো একটু ফ্রেশ লাগবে।জামাকাপড় নেয়ার উদ্দেশ্য কাবার্ড খুলতেই ভ্রু সংকুচিত হয়ে এলো তার।কাবার্ডের একটা কর্ণারে শাড়ি রাখা,সাথে কাঁচের চুরি,কানের দুল,গলার লকেট,সাজগোজের প্রসাধনীসহ সম্পূর্ণ তৈরি হতে মেয়েদের যা যা লাগে সেসব রাখা আছে।কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে শাড়িটা হাতে নিল মায়া।বেশ সুন্দর!লাল শাড়িতে লাল সুতা আর স্টোনের কাজ করা তবে কেমন যেন ঝিকমিক করছে শাড়িটা।আলোর রিফলেক্ট পরলে একেবারেই ছোট ছোট পাথর গুলা জলজল করছে।মুখে প্রশস্ত হাসি ফুটে উঠলো মায়ার।এতসব কিছু কিনলো কখন আরিয়ান আর এখানে রাখলোই বা কখন।শাড়ির ভাঁজ খুলতেই একটা একটা কাগজ নিচে পরে গেল।মায়া শাড়িটা একহাতে ধরে দ্রুত ঝুকে গিয়ে কাগজটা উঠালো।কাগজটা চোখের সামনে মেলতেই চোখ আটকে গেলো লেখা গুলোর মধ্যে,
আমার মায়াবতী,
তোমাকে প্রিয় বলে সম্মোধন করছিনা কারণ তুমি আমার প্রিয়র থেকেও অনেক বেশি কিছু।”প্রিয়” নামক ছোট্ট একটা শব্দে তোমাকে বিশ্লেষণ করার যৌক্তিকতা আমি খুঁজে পাইনি।তোমাকে”আমার”বলতেই শান্তি লাগে।তুমি শুধুই আমার।সম্পূর্ণই আমার।
সে যাই হোক,জিনিস গুলা খুব শখ করে কিনেছি আমি।এসব কখনোই কিনা হয়নি এই প্রথমবার কিনেছি,জানি তোমার পছন্দ নাও হতে পারে তবুও তোমাকে এগুলা পরতে হবে।এক ঘন্টার জন্য হলেও পরতে হবে।শুধু আমি একনজর মনভরে দেখবো তারপর না হয় খুলে ফেলো সব।
আর যদি একদমি পরতে ইচ্ছে না হয় তবে পরোনা।তোমার উপর রাগ করার স্বাধ্যি নেই আমার।তবে কষ্ট পাবো।সেই কষ্ট লাঘব করার জন্যও আবার সেই তোমাকেই লাগবে।তাই বলছি,পারলে আমার ইচ্ছেটা রেখো।আমার দেয়া রুপে নিজেকে সাজিও।
বি:দ্র:জিনিসগুলো তোমাকে সামনাসামনিই দিতে চেয়েছিলাম।কিন্তু দেয়া হলোনা।অফিসে খুব জরুরি একটা কাজের জন্য বেরিয়ে পরতে হলো।ভেবেছিলাম তোমার ঘুম ভাঙিয়ে তারপর দিব।কিন্তু কি হলো জানো?পাক্কা পঁচিশমিনিট সময় নিয়েও তোমার ঘুমন্ত শরীরে একটা টোঁকা পর্যন্ত দিতে পারলাম না।যদি তুমি জেগে যাও অথচ আমি কিন্তু তোমাকে জাগানোর চেষ্টাই করছিলাম।কি অদ্ভুত তাইনা?
নিশ্চয় ভাবছো,আমি এতো কাব্যিক হলাম কবে?কাবার্ডের বামপাশের ড্রয়ারটা খুলে দেখ।উওর পেয়ে যাবে।
ইতি তোমার,
“আপনি”
এতক্ষণ মন্ত্রমুগ্ধের মতো চিঠিটা পরলেও শেষে এসে হেসে ফেললো মায়া।আরিয়ান নিজেকে “আপনি”বলে সম্মোধন করেছে কারণ আজ পর্যন্ত আরিয়ানকে সে “আপনি”ব্যাতিত অন্যকোনো নামে ডাকেনি।নাম ধরেতো কখনোই না।মুখে প্রশস্ত হাসি টেনে চিঠিটা স্বযত্নে ভাঁজ করলো মায়া।পুনরায় কাবার্ডের রেখে দিল।শাড়িটা রেখে বাকি জিনিস গুলা দেখতেই সবচেয়ে বেশি অবাক হলো ব্লাউজ দেখে।শাড়ির সাথে ম্যাচ করা লাল ব্লাউজ তাও আবার একদম ওর মাপ মতো।
চিঠির লাস্টের কথাটা মনে পরতেই তড়িঘড়ি করে বামপাশের ড্রয়ারটা খুললো সে।সাথে সাথেই কতকগুলো মুড়ানো কাগজ তার পায়ের কাছে গড়িয়ে পরলো।হতভম্ব হয়ে চেয়ে রইলো মায়া।প্রায় বিশ পচিশটা মুড়ানো কাগজ দিয়ে ড্রয়ের ভরা।মানে আরিয়ান কতবার যে চিঠি লিখেছে আর কেটেছে সেটারই হিসাব।পুনরায় একচোট হেসে নিয়ে কাগজগুলো আবারো ড্রয়েরে ঢুকিয়ে রাখে মায়া।
অত:পর একটা থ্রিপিস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে যায়।
গোসল শেষে চুল শুকাচ্ছে তখনই দরজায় নক করার শব্দ হলো।ইতির কন্ঠ শোনা যাচ্ছে,
—“ম্যাম,আপনি উঠেছেন?”
—“হ্যাঁ ইতি।আসো।
দরজা খুলে প্রবেশ করলো ইতি।তার হাতে খাবারের প্লেট।মায়া তোয়ালেটা কোনোরকম মাথায় পেঁচাতেই
ইতি বললো,
—“আমি চুল মুছে দেই ম্যাম।আপনি খান।স্যার আপনাকে সময়মতো খাইয়ে দিতে বলেছে।”
মায়া মৃদু হেসে বিছানায় বসলো।ইতি মায়ার হাতে প্লেট দিয়ে তার পিছে বসে আস্তে আস্তে মাথা মুছতে লাগলো।
—“আপনি কত লাকি ম্যাম!”
—“কেনো?”
—“এই যে আরিয়ান স্যার আপনাকে এত ভালোবাসেন।কারো ভালোবাসা পাওয়া অনেক সৌভাগ্যর ব্যাপার।”
মায়া লাজুক হেসে মুখে খাবার তুলে নিল।হঠাৎ কিছু একটা মনে পরতেই সে বললো,
—“তুমি শাড়ি পরাতে পারো ইতি?”
ইতি খানিকটা ঝুকে সন্ধিহান কন্ঠে বললো,
—“জি পারি।কিন্তু হঠাৎ এই প্রশ্ন?”
—“না কিছুনা।চুল মুছো।”
________________
রাত ৯টা
মায়ার হাতে লাল কাঁচের চুরি,স্টোনের লাল কানের দুল,গলায় একটা ছোট্ট লকেট।চোখে শুধু কাজল দেয়া আর গাঢ় লাল লিপস্টিক।যদিও লিপস্টিকটা একটু কেমন যেন লাগছে মায়ার।কখনো এতো গাঢ় কালার লাগায়নি সে।সুন্দর তবে মনে হচ্ছে আরিয়ানের পছন্দ হবেনা।
এখন শুধু শাড়িটা সম্পূর্ণ পরা বাকি।পায়ের কাছে বসে কুচি ঠিক করছে ইতি।তার মুখে দুষ্টু হাসি।একটু পরপরই মায়াকে এটা ওটা বলে চেতাচ্ছে সে।
কুচি গুঁজে দিয়ে আঁচলটা জড়িয়ে দিতেই একদম তৈরি হয়ে গেলো মায়া।
ইতি তার চুলগুলো আঁচরে দিতে দিতে বললো,
—“আরিয়ান স্যারতো এমনিতেই আপনাকে চোখে হারায়।আজকে যে কি হবে?”বলেই ঠোঁট বাকিয়ে হাসলো।
মায়া চোখগুলো ছোট ছোট করে বললো,
—“তুমি মনে হচ্ছে খুব এক্সপেরিয়েন্সড।”
ইতি জিভ কেটে বললো,
—“ধ্যাত্,কিসব বলছেন?”
—“আর তুমি যে আমাকে এতক্ষণ ধরে চেতাচ্ছ?”
ইতি বোকা হেসে আর কিছু বলেনা।মায়ার চুলগুলো আচড়ে দিয়ে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।মায়া একবার ঘড়িতে তাকায়।নয়টা বেজে বিশ মিনিট।সাড়ে নয়টা বা দশটার মধ্যই অফিস থেকে ফিরে আরিয়ান।
মায়া ব্যালকনিতে গিয়ে দাড়ায়।এখান থেকে বাড়ির মেইন গেট সম্পূর্ণ দেখা যায়।আরিয়ানের গাড়ি ঢুকলে এখান থেকেই দেখতে পারবে।
বেশ খানিকটা সময় পার হয়ে গেলেও আরিয়ানের দেখা নেই।মায়া অধৈর্যভাবে কিছুক্ষন পায়চারি করে।ঘড়ির কাঁটা দশটা ছুইছুই।ক্লান্ত একটা নি:শ্বাস ফেলে ব্যালকনির এককোণে রাখা দোলনায় বসে পরে সে।উদ্বেগ নিয়ে সদর দরজার দিকে চেয়ে থাকে।আরো অনেকক্ষন পার হয়ে যায়।আরিয়ান ফেরেনা।
॥
॥
পৌনে এগারোটার দিকে বাড়িতে ফিরে আরিয়ান।গাড়ি থেকেই দেখতে পায় নিজের রুমের লাইট অফ ব্যালকনিও অন্ধকার।একটা দীর্ঘ:শ্বাস ছাড়ে আরিয়ান।মায়া মনেহয় ঘুমিয়ে পরেছে।দ্রুত বেরিয়ে পরণের ব্লেজার খুলতে খুলতে সিঁড়ি দিয়ে উপরে উঠতে থাকে।রুমে ঢুকে বুঝতে পারে সেখানে কেউ নেই।লাইট বন্ধ।মায়া কি তাহলে ওয়াশরুমে?ব্লেজারটা বিছানায় রেখে লাইট জ্বালায় আরিয়ান।ওয়াশরুমের দরজায় টোঁকা দিয়ে বলে,”মায়া?তুমি ভেতরে?”
উওর আসেনা।দরজার লক ঘুরাতেই খুলে যায় সেটা।নাহ্ ভেতরে নেই মায়া।তবে?ব্যালকনির দরজাও আটকানো।রোজ তো রুমেই থাকে।তবে কি মায়া তার দেয়া জিনিসগুলো দেখে রাগ করলো?মুহুর্তেই নিজের উপর বিরক্তি ছেঁয়ে গেল আরিয়ানের।শুধু শুধু কেন যে ওসব করতে গেলো?তার বোঝা উচিত ছিল মেয়েটা এখনো খুব ছোট।”চাপা কষ্ট নিয়ে তার পাশের রুমের দিকে পা বাড়ালো।সেখানেও মায়াকে না পেয়ে কপালে চিন্তার ভাঁজ স্পষ্ট হয়ে উঠলো তার।দ্রুত নিজের রুমে এসে ব্যালকনির দিকে পা বাড়ালো।মায়া বাগানে থাকলে ওখান থেকে দেখা যাবে।
ব্যালকনির কাঁচের দরজা খুলতেই থমকে গেলো আরিয়ান।গোল দোলনায় পা ভাজ করে গুটিশুটি হয়ে ঘুমোচ্ছে মায়া।পরণের শাড়ির আচঁল কাঁধ থেকে পড়ে গেছে।দু হাত কোলের উপর রেখে ঘাড় কাত করে ঘুমিয়ে গিয়েছে সে।
আরিয়ান বেশ কিছুক্ষন সময় মায়ার দিকে মুগ্ধ নয়নে চেয়ে থাকলো।মেয়েটাকি আজ তার জালে তাকেই জব্দ করবে?তাকে পাগল করার প্রতিজ্ঞা করে সাঁজতে বসেছিলো মনে হয়।ঠোঁট কামড়ে মায়ার কাছে এগিয়ে যায় সে।মায়াকে শাড়ি পরলে এতোটা সুন্দর লাগবে আগে জানলে জীবনেও শাড়ি কিনতোনা সে।
মায়ার দিকে ঝুকে গিয়ে তার আচঁলটা কাঁধে উঠিয়ে দেয় আরিয়ান।তার জন্য অপেক্ষাময়ী এক অতি আবেদনময়ী রমনী মায়া।আরিয়ান তার দু গালে হাত রেখে কপালে গভীরভাবে ঠোঁট ছোঁয়ায়।
গালে ঠান্ডা হাতের স্পর্শে আর কপালে চিরচেনা অধরের ছোঁয়ায় ঘুমাচ্ছন্ন তন্দ্রা কেটে যায় মায়ার।পিটপিট করে তাকাতেই বুঝে আরিয়ানের চিবুক তার চোখের সামনে।আরিয়ান তখনো তার কপালে ঠোঁট ছুইয়ে রেখেছে।মায়া ঘুম ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলে,
—“আপনি সত্যিই এসেছেন?নাকি আমি স্বপ্ন দেখছি?”
আরিয়ান চুম্বনরত অবস্থাতেই হেসে ফেলে।ঠোঁট সরিয়ে বলে,
—“সত্যিই এসেছি ঘুমন্ত পরি।”
মায়া নড়েচড়ে উঠে।হাত নাড়ানোয় কাঁচের চুড়ি তে শব্দ হয়।ঘাড় ঠি ক করে সোজা হয়ে বসে চোখ কলাতেই নিলেই আরিয়ান তার হাত ধরে ফেলে বলে,”কাজল ছড়িয়ে যাবে”।
মায়ার ততক্ষনে হুঁশ হয় সে যে সেজেগুজে বসে আছে।লজ্জা লাগলেও মুখে প্রকাশ করেনা।দৃষ্টি নিচে নামিয়ে বলে
—“এত দেরি করলেন কেন?”
আরিয়ান তার দোলনার দু পাশে হাত রেখে আছে।মায়ার কথায় একহাত দিয়ে আবারো মায়ার পরে যাওয়া আচঁল ঠি ক করে দিয়ে বলে,
—“তুমি কি জানো তোমাকে কতটা সুন্দর লাগছে?”
মায়া মুদ্রিত নয়নে আরিয়ানের দিকে তাকায়।মুখের চুলগুলো কানের পিছে গুঁজে দিয়ে চুপ করে থাকে।আরিয়ান উঠে দাড়ায়।ঘরের লাইট নিভিয়ে দরজা লক করে আসে।ব্যালকনির হলুদ বাতিতে লাল শাড়ি পরিহিত মায়াকে দেখে আরো একবার হৃদপিন্ডটা লাফিয়ে উঠে তার।ততক্ষনে উঠে দাড়িয়েছে মায়া।
আরিয়ান মৃদু হেসে তার কাছে যেয়ে দাড়ায়।পকেট হাতরে একটা বক্স বের করে।বক্সটা খুলে কিছু একটা বের করে মায়ার সামনে একহাঁটু গেড়ে বসে যায়।নিজের হাত বাড়িয়ে মায়াকে ইশারা করে।মায়া জিজ্ঞাসু নয়নে
তাকিয়ে আরিয়ানের হাতের উপর হাত রাখে।আরিয়ান একটা সাদা পাথরের জলজল করা আংটি মায়ার অনামিকা আঙ্গুলে পরিয়ে দিতে দিতে বলে,
—“আমার মায়াবতীর জন্য ছোট্ট একটা ভালোবাসার প্রতীক।”বলে হাতের উল্টো পিঠে ঠোঁট ছোঁয়ায় আরিয়ান।
মায়া বিস্মিত নয়নে হাতের দিকে তাকিয়ে থাকে।খুশিতে কান্না পাচ্ছে তার।আরিয়ান উঠে দাড়িয়ে মায়াকে বুকে জড়িয়ে নেয়।ধীর কন্ঠে বলে,
—“এটার জন্যই দেরি হচ্ছিল মায়াবতী।অর্ডার দিয়ে ছিলাম এক সাইজের ওরা বানিয়েছিলো এক সাইজ বেশি।এখন আংটি কাটিয়ে সাইজ মতো করে আনলাম।ভেবেছিলাম তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো।কিন্তু এতরাতে আর বাইরে বের হতে ইচ্ছে করছেনা।তোমার উপর চাপ হয়ে যাবে।”
মায়া কিছু উওর দেয়না।আরিয়ানের বুক থেকে মাথা সরাতে ইচ্ছে করছেনা।দু হাত দিয়ে আলতো করে আরিয়ানের পিঠ আকড়ে ধরে।আরিয়ান তার পিঠে হাত বুলিয়ে দিতেই হাল্কা ফুঁপিয়ে উঠে মায়া।
—“আরে কাঁদছো কেন?কাজল নষ্ট হয়ে যাবে মায়া।”
মায়া চুপ হয়ে যায়।আরিয়ান তাকে বাহু ধরে ছাড়ায়।মায়ার শাড়ি আবারো এলোমেলো হয়ে গেছে।এবার না পেরে আচঁল কাঁধে উঠিয়ে নেয় মায়া।শাড়ির ফাঁক দিয়ে মসৃন কোমড় দৃশ্যমান হয়ে উঠে।আরিয়ান ঠোঁট কামড়ে সেদিকে তাকিয়ে বলে,
—“আমাকে কি মারার প্ল্যান করেছো আজ?”
—“মানে?”
আরিয়ান মায়ার উন্মুক্ত কোমড়ে হাত গলিয়ে দেয়।শীতল স্পর্শে কেঁপে উঠে মায়া।আরিয়ান একহাত বাড়িয়ে ব্যালকনির লাইট নিভিয়ে দেয়।মায়াকে রেলিং এর সাথে হেলান দিয়ে কাঁধের আচঁল সরিয়ে সেখানে মুখ ডুবিয়ে দেয়।মায়া চোখ বন্ধ করে ফেলে।উষ্ণ আবেগে তাকে ভরিয়ে দিতে থাকে আরিয়ান।
নিজের তৃষ্ণা মিটিয়ে মুখ উঠিয়ে ফেলে।জোরে জোরে শ্বাস নিয়ে মায়াকে ছেড়ে দাড়ায়।
চাঁদের ক্ষীণ আলো এসে পরেছে ব্যালকনিতে।মায়া তখনো চোখ বন্ধ করে রেখেছে।আরিয়ান শার্টের উপরের দুটো বোতাম খুলে দোলনায় বসে।মায়ার হাত টেনে তার কোলে বসায়।প্রচন্ড লজ্জায় নিয়েই আরিয়ান কাঁধে মাথা রাখে মায়া।আরিয়ান মোহনীয় কন্ঠে বলে,
—“আকাশের দিকে তাকিয়ে দেখ মায়াবতী,এই এত বিশাল কালো আঁধারে ঢাকা আকাশে সবচেয়ে উজ্জল যে তারাটা দেখতে পাচ্ছো না?সেটা হচ্ছে সন্ধ্যাতারা।তেমনি আমার অন্ধকার জীবনের সেই একমাত্র সন্ধ্যাতারাটা হচ্ছে তুমি।”
—“আকাশের সন্ধ্যাতারাটা আমি হলে আপনি কি জানেন?আপনি হলেন ওইযে ওই চাঁদটা।যে কিনা প্রতিনিয়ত আমার জীবনে আলো ছড়াচ্ছেন।”
আরিয়ান ঠোঁটে প্রশস্ত হাসি টেনে বলে,
—“আংটি পছন্দ হয়েছে?”
—“খুব বেশি”।
আরিয়ান তার চুলে নাক ঘষে।চুল থেকে শ্যাম্পুর ঘ্রাণ আসছে।নেশা ধরে যাচ্ছে আরিয়ানের।চুলে নাক ডুবানো অবস্থাতেই মায়া জড়তা নিয়ে বলে,
—“আপনি আমাকে আদর করেননা কেন?”
—“আমি আদর করিনা?আমি চুমু খেলেইতো তুমি লজ্জায় শেষ হয়ে যাও।তারপরও রোজ নিয়ম করে কয়বার চুমু দেই বলতো?”
মায়া মাথা নুইয়েই বলে,
—“আমি এই আদরের কথা বলিনি।যেটার কথা বলছি সেটা আপনি বুঝতে পারছেন,আমি জানি।”
আরিয়ান তার চুল থেকে নাক সরিয়ে অন্যদিকে তাকিয়ে গম্ভীর কন্ঠে বলে,
—“তুমি এখনো ছোট মায়া।”
—“আমি ছোট না।আমার আদর লাগবে”
—“পাগলামি করোনা।”
মায়া হুট করেই আরিয়ানের গলা জড়িয়ে ধরে মুখ তার দিকে ঘুড়িয়ে ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে দেয়…
#আঁধার_ভিড়ে_সন্ধ্যাতারা❤️
#লেখিকা_মালিহা_খান❤️
#পর্ব-৩১[মাঝখানে নতুন করে একটু অংশ যুক্ত করা হয়েছে।যাদের আগের পর্ব নিয়ে সমস্যা ছিলো আশাকরি সেটা আর থাকবেনা]
মায়ার এহেন আচরণে চমকে উঠে আরিয়ান।মনটা “ধক” করে উঠে।মায়া এমন করলে সে কিভাবে নিজেকে নিয়ন্ত্রন করবে?
মায়া তার উপর সম্পুর্ণ ভর দিয়ে হেলে পরেছে।আরিয়ান মনে মনে হাসে।মেয়েটা ঠোঁটে চুমু খাচ্ছে নাকি শুধু ঠোঁট ঠেকিয়ে রেখেছে বুঝতে পারছেনা।এই প্রথম নিজে থেকে তার এতটা কাছে এসেছে মায়া,সে ফিরিয়ে দিবে কিকরে?
আরিয়ান মায়ার একহাত তার ঘাড় থেকে সরিয়ে মাথার পিছের দিকের চুলে রাখে।সাথে সাথে শক্ত করে তার চুলগুলো আকড়ে ধরে মায়া।মায়ার কোমড় টেনে নিজের সাথে ঘনিষ্টভাবে লেপ্টে নেয় আরিয়ান।
দোলনায় মাথা ঠেকে যায়।সে অবস্থাতেই গভীর চুম্বনে লিপ্ত হয় সে।
মিনিট পাঁচেক পরই হাপিয়ে উঠে মায়া।সে সরে যেতে গেলেও আরিয়ান তাকে ছাড়েনা।জাপটে ধরে রাখে।আরো কিছুক্ষন অতিবাহিত হতেই প্রচন্ড অস্থির হয়ে উঠে মায়া।মুখ দিয়ে”উম্”জাতীয় শব্দ করতেই তার ঠোঁট ছেড়ে দেয় আরিয়ান।আরিয়ানের কাঁধে কপাল ঠেকিয়ে জোরে জোরে শ্বাস নেয় মায়া।আরিয়ান তার চুলের ভাঁজে হাত বুলিয়ে দিয়ে বলে,
—“পানি খাবে?বেশি খারাপ লাগছে?”
মায়া উওর দেয়না।ক্লান্ত ভঙ্গিতে আরিয়ানের কাঁধে মাথা ঠেকিয়ে রাখে।আরিয়ান দুষ্টু কন্ঠে বলে,
—“এটুকুতেই ক্লান্ত হয়ে গেলে।আবার বলছো তোমার আরো আদর চাই।”কিছুটা থামে আরিয়ান।
তারপর সিরিয়াস হয়ে আবার বলতে শুরু করে,”মায়া,তোমার বয়স কম,এট এনি চান্স তুমি যদি কনসিভ করে ফেলো তুমি জানো সেটা কতটা রিস্কি হবে তোমার জন্য?তোমার বয়স বিশ গড়িয়ে একুশে পরবে মাত্র।আই নো,এই বয়সেও মেয়েরা কনসিভ করে।
বাট তুমি নিজের দিকে তাকিয়ে দেখো,আমি হানড্রেড পার্সেন্ট শিওর যে তোমার ওজন আন্ডারওয়েট।
আমি ডক্টর না তবুও এতটুকু জানি যে,তোমার প্রেগন্যান্সিতে অনেক কমপ্লিকেশন থাকবে।এখন কতশত মেয়েরা মারা যাচ্ছে অল্পবয়সে বাচ্চা জন্ম দিতে গিয়ে।সো আই কান্ট টেক দ্যাট রিস্ক।আমি তোমাকে হারাতে পারবোনা মায়াবতী।”
মায়া মনোযোগ দিয়ে আরিয়ানের কথাগুলো শুনছিলো।সবটা শোনার পর মনটা যারপরনাই খারাপ হয়ে এলো তার।আরিয়ানের প্রত্যেকটা কথা যুক্তিপূর্ণ।তবে আরিয়ান যে এতদূর পর্যন্ত ভেবে ফেলেছে এটা ভেবে ভালোও লাগলো।
তবুও মন খারাপের আভাস তার কন্ঠেও ছেঁয়ে যায়।আরিয়ানের গলায় মুখ লুকিয়ে বিষন্ন কন্ঠে সে বলে,
—“আমার কিছু হবেনা।আপনি আছেন তো।”
—“তুমি বুঝতে পারছোনা মায়া।”
—“আমি বুঝতে চাচ্ছিনা।…আচ্ছা,আপনার কি আমাকে আদর করতে ইচ্ছে হয়না?”
মায়া এবার ছলছল নয়নে কাঁদোকাঁদো চেহারা নিয়ে তার দিকে তাকায়।আরিয়ান দীর্ঘ:শ্বাস ছাড়ে।কাকে এতক্ষন ধরে বুঝালো সে।মেয়েটা মনে হয় নিজের মধ্য নেই আজ।এমনিই মায়াকে এই রুপে দেখে ক্ষণে ক্ষনে শ্বাস আটকে আসছে।বহুকষ্টে নিজেকে ধরে রেখেছে তার উপর মায়ার এই আবদার।
কিছুক্ষণ ভাবে আরিয়ান।মায়া এখনও তার দিকে উওরের আশায় চেয়ে আছে।
আরিয়ান গম্ভীর কন্ঠে বলে,
—“আমাদের ইসলামিক নীতিতে বিয়ে হয়নি মায়া।কাবিননামায় সাইন করে রেজিস্ট্রি হয়েছে।,,,তুমিই বলো এটা কি উচিত হবে?”
মায়া দুবার পিটপিট করে চোখের পলক ফেলে।ব্যাপারটা বুঝে আসতেই ঠোঁটের কোঁণে মৃদু হাসির রেখা টেনে সে চট করে বলে,
—“তাহলে চলেন,এখন বিয়ে করে ফেলি।”
আরিয়ান নির্বিকার দৃষ্টিতে তাকায়।পকেট থেকে ফোন বের করে সময় দেখে বলে,
—“রাত বাজে বারোটা দশ।এখন বিয়ে করবে তুমি?”
—“হ্যাঁ,তো?”
আরিয়ান ছোট্ট একটা শ্বাস ফেলে মায়াকে কোল থেকে সরিয়ে উঠে দাড়ায়।এই মেয়েকে আর বুঝিয়ে লাভ নেই।মায়ার উপর সে রাগ ও দেখাতে পারেনা।তাই আর কোন উপায় নেই একে সামাল দেয়ার।
কিন্তু এই রাতের বেলা কাজি পাওয়াটাই ঝামেলা।
মাথায় একরাশ চিন্তা নিয়েই আরিয়ান মায়ার হাত ধরে রুমে এনে বিছানায় বসিয়ে দিয়ে বলে,
—“একটু বসো।আমি আসছি।”
মায়া মাথা দুলিয়ে সাঁয় দিতেই আরিয়ান বেরিয়ে যায়।প্রায় আধাঘন্টা বাদে ফিরে আসে।সাথে তন্ময়,ইতি,কাজি,আর আরেকটা লোক সে হয়তো কাজির সাথে এসেছে।কাজির চোখ ঘুমে ঢুলুঢুলু অবস্থা।
বোঝাই যাচ্ছে গভীর ঘুম থেকে তুলে নিয়ে আসা হয়েছে তাকে।মায়া ঠোঁট চেপে হাসে।
আরিয়ান ক্লান্ত ভঙ্গিতে তাকায় মায়ার হাসি দেখে।তাকে এত হয়রানি করিয়ে মেয়েটা এখন হাসছে।
তিনবার কবুল বলে বিয়ে হয়ে যায় আরিয়ান-মায়ার।বিয়ের সাক্ষী থাকে ইতি,তন্ময় আর কাজির সাথে আসা লোকটা।বিয়ের সব নিয়ম শেষ।কাজিকে এতরাতে ডেকে এনেছে সেজন্য তার পাওনার চেয়ে একটু বেশি টাকা দিয়ে দেয় আরিয়ান।উনি হাসিমুখে বিদায় নেয়।আরিয়ান ফিরে আসতেই তন্ময় ইতি মুচকি হেসে রুম থেকে বেরিয়ে যায়।
আরিয়ান অগোছালো ভাবে হেসে দরজা আটকে দেয়।কাবার্ড থেকে বিয়ের জন্য ধার্য করা মোহরানার টাকা বের করে মায়ার হাতে দিয়ে বলে,
—“নাও।শান্তি হয়েছে?এখন তুমি সম্পূর্ণরুপে আমার।”
মায়া টাকাগুলো পাশে রাখে।আরিয়ানকে বলে,
—“এখনতো আর কোন বাঁধা নেই।”
আরিয়ান হাসে।মায়ার দু গালে হাত রেখে বলে,
—“আর ইউ শিওর?”
উওরে লাজুক হেসে আরিয়ানের বাহুতে মুখ লুকায় মায়া।মায়ার সম্মতি বুঝতে পেরে হাসে আরিয়ান।এমনটা নয় যে সে মায়াকে কাছে পেতে চাইছিলো না।বরং এতক্ষন নিজের সাথে প্রবল যুদ্ধ করে মায়ার কথা ভেবে নিজেকে সামলে রেখেছিলো।কিন্তু এখন আর সম্ভব নয়।মায়া যখন তার অধিকার চাইছে তখন তার আর মানা করার স্বাধ্যি নেই।
মায়াকে পাঁজাকোলা করে কোলে তুলে নিল আরিয়ান।মায়া তার গলা জড়িয়ে ধরতেই কাঁচের চুড়িতে রিনঝিন আওয়াজ করে উঠলো।সেই আওয়াজটাও যেন তাদের ভালবাসার পূর্ণতা পাওয়ার আগাম শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।
আরিয়ান তাকে বিছানার মাঝখানে এনে বসিয়ে দেয়।চুড়ি কানেরদুল গুলো খুব সন্তর্পণে খুলে রাখে।
আরিয়ান নিজের শার্টের বোতাম খুলতে খুলতে ঘরের আলো নিভিয়ে দিয়ে আসে।
ব্যালকনির পর্দা খোলা।ঘরে আসা ক্ষীন চাঁদের আলোয় ভীষণ মোহনীয় লাগছে মায়াকে।
আরিয়ান ধীরপায়ে এগিয়ে যায়।মায়াকে শুইয়ে দিয়ে শাড়ির আচঁল ফেলে দেয়।ব্লাউজের হুক খুলতেই আরিয়ানকে দু’হাতে খামছে ধরে মায়া।অত:পর দুজন হারিয়ে যায় ভালবাসার এক অন্য জগতে।এতদিনের
বহু আকাঙ্ক্ষিত মুহুর্তে ডুব দেয় দুজনে।মিলে মিশে একাকার হয়ে যায় তাদের সত্তা,অস্তিত্ব।
________________
সকালে মুখের উপর আলো পরতেই চোখমুখ কুঁচকে এলো আরিয়ানের।চোখ খুলে সর্বপ্রথম মুখের উপর ছড়িয়ে পরা মায়ার চুলগুলো সরায় সে।তার গলার সাইডে মাথা গুঁজে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন মায়া।আরিয়ানের একহাত মায়ার উন্মুক্ত পিঠে।কম্বল সরে গেছে উপর থেকে।আরিয়ান একটু উঠে গলা অবধি কম্বল টেনে নেয়।ফ্লোরে পরে আছে মায়ার শাড়ি।
কালরাতের কথা মনে পরতেই তৃপ্তির হাসি ফুটে উঠে আরিয়ানের ঠোঁটে।কি সুন্দর স্নিগ্ধ ছিল প্রতিটি সেকেন্ড।
মায়ার কথাগুলো মনে পরতেই আরো হাসি পায় তার।মেয়েটা যে কি করলো কাল।আরিয়ান কখনোই ভাবেনি মায়া নিজ থেকে তাকে এসব বলবে।মায়ার লজ্জামিশ্রিত কন্ঠের আধো আধো আবদারগুলো কানে বাঁজছে এখনো।
আজ সে ও তার অনুভূতিগুলো পরিপূর্ণ রুপে পুরিপূর্ণতা পেলো।
খানিক বাদেই নড়েচড়ে উঠলো মায়া।যখন বুঝলো সে আরিয়ানের উপরে ভর দিয়ে আছে তৎক্ষনাত ছিঁটকে সরে যেতে নিলেই আরিয়ান তাকে আঁকড়ে ধরে ফেলল।শ্বাস আটকে আরিয়ানের দিকে চাইলে মায়া।
পরপরই প্রচন্ড লজ্জায় চোখ নামিয়ে ফেললো।আরিয়ানের ঠোঁটের কোঁণে দুষ্টু হাসি।
হঠাৎ উল্টে গিয়ে মায়াকে নিচে নিয়ে তার উপরে ঝুঁকে পরলো সে।মায়া সিটিয়ে গেলো।বুক পর্যন্ত কম্বল টেনে শক্ত হাতে ধরে রাখলো।আরিয়ান তার অপরপাশে একহাত রাখলো।মূলত মায়া যাতে উঠে যেতে না পারে সে ব্যবস্থাই করলো।একআঙ্গুল দিয়ে মায়ার কপাল থেকে গালে স্লাইড করতে করতে বললো,
—“কি হয়েছিলো আপনার কালরাতে?এতটা ডেস্পারেট্ হয়ে গিয়েছিলেন কেন?হুম?”
মায়া বেশ বুঝতে পারছে আরিয়ান ইচ্ছা করে তাকে লজ্জায় ফেলছে।ঠোঁট কামড়ে অন্যদিকে তাকিয়ে থাকে সে।কালরাতের নিজের বলা কথা গুলো মনে করলে তার নিজেরই লজ্জা লাগছে আরিয়ানকে আর কি বলবে?
আরিয়ান আবার বলে,
—“নিজের ভয়ংকর সুন্দর রুপ দিয়ে তো ভালোই ঘায়েল করলেন আমাকে।এখন লজ্জা মাখা চাহনী দিয়ে কি পুরোপুরি শেষ করে দিবেন?”
—“ধ্যাত্,সরেনতো।”
—“কেন?কেন?এখন লজ্জা লাগছে তাইনা?কালতো খুব আদর আদর করছিলেন।”
মায়া আরিয়ানের বুকে মৃদু ধাক্কা দিয়ে বলে,
—“সরেননা।শুধু শুধু লজ্জা দিচ্ছেন কেন?”
আরিয়ান মুখ নামিয়ে তার গালে চুমু খায়।উপর থেকে সরে গিয়ে বলে,
—“যাও শাওয়ার নিয়ে আসো।”
মায়া দ্রুত ফ্লোর থেকে শাড়ি উঠিয়ে গায়ে পেচিয়ে নিলো।আরিয়ান পাশে থেকে ফোন হাতে নিয়ে কিছু একটা করছে।ততক্ষনে মায়া নিজের জামাকাপড় নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গিয়েছে।
বেশ কিছুক্ষন পর বেরিয়ে এলো মায়া।তার পরণে হাল্কা গোলাপী রংয়ের থ্রিপিস।গোসলের পর স্নিগ্ধতা যেন আরো বেরে গেছে।আরিয়ান তখন শরীরে টাওয়াল পেচিয়ে বিছানার চাদর চেন্জ করছে।তার মাঝেই ধপ করে বিছানায় বসে পরলো মায়া।আরিয়ানকে কাজ তখন শেষ।পুরাতন চাদরটা লন্ড্রি বিনে রেখে দিয়ে সে এগিয়ে গিয়ে মায়ার কাঁধে হাত রেখে বললো,
—“শরীর খারাপ লাগছে?”
মায়া দু চোখ বন্ধ করে রেখেছে।মাথা ব্যাথা করছে,দূর্বল দূর্বল লাগছে তার।আরিয়ানকে বলতেই সে একটু পানি খাইয়ে দিয়ে বালিশে সুইয়ে দিলো মায়াকে।চুল আগে থেকেই মুছে বেরিয়েছে তাই চুল মোছার ঝামেলা নেই।আরিয়ান তার শরীরে কম্বল টেনে দিয়ে বললো,
—“চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকো,আমি শাওয়ার নিয়ে এসে কিছু খাইয়ে দিচ্ছি তোমাকে।বলেছিলাম জেদ করোনা।আমার কথাতো শুনলেনা।এখন শরীর খারাপ করলোনা?।”
মায়া গোমরা মুখে আরিয়ানের দিকে তাকাতেই সে বলে,
—“চুপ করে শুয়ে থাকো।আমি এলে,তারপর উঠবে”।
আরিয়ান শাওয়ার নিতে চলে যায়।বিছানায় চুপটি করে শুয়ে থাকে মায়া।বাস্তবিকই তার প্রচন্ড দূর্বল লাগছে।
তবে অন্যরকম একটা ভালোও লাগছে।কেমন যেন লজ্জা লজ্জা একটা মিশ্র অনুভুতি….
~চলবে~
[আসসালামু আলাইকুম।গতকাল এত এত কমেন্টের মাঝে হাতে গোনা দুই একজন ওদের বিয়ের বিষয়টা নিয়ে আপত্তি করেছিলো।তবুও সেটা যৌক্তিক হওয়ায় আগের পর্বটা আমি ডিলিট করে দিয়েছি।
আসলে আমি অতটা খেয়াল করিনি এই ব্যাপারটা।যখন ওদের বিয়ে হয়েছিলো তখনই আমার ক্লিয়ার করে লেখা উচিত ছিলো।আমি লেখিনি এটা আমার ভুল।যাই হোক,এখন একদম পরিষ্কার করে সব লেখে দিয়েছি।কারো আর কোন প্রব্লেম থাকার কথা না।
আর যেহেতু গল্পটা ইসলামিক থিম নিয়ে লেখা না।তাই ইসলামিক বিষয়গুলো তেমনভাবে নেই এখানে।
আগের পার্টে সবাই অনেক ভালো ভালো কমেন্ট করেছিলেন।আশা করছি এই পর্বেও করবেন❤️]
~চলবে~
[পর্বটা অনেক বড়।প্রায় ১৬০০+ শব্দে লিখেছি।সবাইকে ভালবাসা দিবসের শুভেচ্ছা❤️সবার ভালবাসাময় মন্তব্য চাই❤️]