#মিশে_আছো_আমার_অস্তিত্বে❤️
#মেঘ পরী🍀🍀
#Part-১০+১১💞
আজ একমাস হয়েছে আকাশের মা মারা গিয়েছে,,আকাশ নিজেকে অনেকটা সামলে নিয়েছে।মা কে দাফন করার আগে রিনার সাথে অনেকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিল কিন্তু প্রতিবারই রিনার ফোন সুইচ অফ আসছে।তারপর থেকে আকাশ আর রিনাকে ফোন দেয়নি,,কিছুটা চাপা অভিমান আর কিছুটা রাগে জন্যই আকাশ রিনাকে ভুলে যাওয়ার চেষ্টা করছে।এ কয়দিনে তৃষা এক হাতে নিজের সংসার সামলিয়েছে আর আরেক হাতে আকাশকে সামলিয়েছে।আকাশ এখন আর তৃষার সাথে বাজে ব্যবহার করে না,,তৃষাকে এখন একটু হলেও আকাশ পছন্দ করে।এখন তার একটাই স্বপ্ন নিজের বাবার কোম্পানি টাকে আরও উঁচুতে তুলতে হবে তাকে।
সকালে ব্রেকফাস্ট সেরে আকাশ অফিসে চলে গেলে আর তৃষা বাসার কাজে লেগে পড়লো।মাঝে মাঝে মায়ের ফাঁকা রুমের দিকে তাকিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবে মায়ের দেওয়া কথা কি শেষমেষ সে রক্ষা করতে পারবে??তৃষার একটা বিষয়ে বেশ অনেকটাই অবাক সেই দিনের পর থেকে রিনাকে সে আর দেখে নি,, কিন্তু রিনা কোথায় যেতে পারে এটা সে কিছুতেই বুঝতে পারছে না।তার ভাবনায় ছেদ করে ফোনটা শব্দ করে বেজে উঠলো,,ফোনটা রিসিভ করতেই ওপাশ থেকে আকাশ বলে উঠলো-;
-:কি করছো??
-:তেমন কিছু না।আপনি অফিসে পৌঁছে গিয়েছেন??
-:হ্যা এই মাত্র এলাম।শোনো তোমাকে যেটা বলার জন্যে ফোন করেছিলাম।
-:হুম বলুন।
-:আজ আমার ফিরতে একটু লেট হতে পারে।
-:সে কি!!কেন??
-:আমার দুটো মিটিং আছে সেটা ক্লিয়ার করেই বাসায় ফিরবো।
-:ওকে সাবধানে থাকবেন।
-: হুম রাখছি।
-:আচ্ছা।
আকাশের সাথে কথা বলার পর তৃষা যেই ফোনটা রাখতে যাবে তখনই ফোনটা আবার বেজে উঠল।তৃষা ভেবেছে আকাশ হয়তো তাকে আবার ফোন করেছে,,তাই ফোনটা রিসিভ করেনিল।ফোনটা রিসিভ করতেই একজন বলে উঠলো-;
-:তৃষা প্লিজ আমাকে বাঁচা ও..ও আমাকে ম..মেরে ফেলবে।
-:কে??(চিন্তিত গলায়)
-:আ..আমি রিনা।
-:আপু তোমার কি হয়েছে??তোমার গলা এমন লাগছে কেন??তুমি ঠিক আছো তো??
-:না বোন আমি ঠিক নেই প্লিজ আমাকে বাঁচা।(কান্না করে)
-:আপু..আপু তুমি কাঁদছো কেন??আমাকে বলো তোমার কী হয়েছে??
-:তুই এক্ষুনি হোটেল ব্লু ম্যানশান এ চলে আয়।
-:হোটেল ব্লু ম্যানশান!!
-:হ্যা এক্ষুনি,, এক্ষুনি আয় প্লিজ নইলে আমি মরে যাবো।
-:আপু তুমি চিন্তা করো না আমি এক্ষুনি আসছি।
এই বলে তৃষা ফোন কেটে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে হোটেল ব্লু ম্যানশান এর উদ্দেশ্যে বেড়িয়ে পড়লো,, তাড়াহুড়োর চক্করে আকাশকে জানাতেও পারল না।যতই হোক রিনা তার আপন বোন সে যতই তাদের পর ভাবুক না কেন।
হোটেল ব্লু ম্যানশানে গিয়ে রিনাকে কোথাও খুঁজে পেল না,,তৃষা ফোনটা বেড় করে রিনাকে ফোন করলো।
-:আপু তুই কোথায়??
-:এসে গিয়েছিস।
-: হুম।
-:আচ্ছা তুই রুম নাম্বার ২০৭ এ চলে আয় আমি তোর জন্য ওখানে অপেক্ষা করছি কিছুটা চিন্তিত গলায় বলে উঠলো কিন্তু আপু তুমি তো আমার সাথে অন্য কোথায় দেখা করতে পারতে,,এখানে কেন??
-: তৃষা বোন আমার দরকারটা এখানেই তুই প্লিজ সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি চলে আয় নইলে আমি বাঁচবো না।
-: আচ্ছা আপু তুমি চিন্তা করো না আমি এক্ষুনি আসছি।
-:হুম।
এই বলে ফোনটা রেখে তৃষা হোটেলের ম্যানেজারের কাছ থেকে জেনে ২০৭ নম্বর রুমের দিকে হাঁটা দিল।২০৭ নম্বর রুমের সামনে এসে একবার কলিংবেল চাপতেই দরজা খুলে গেল কিন্তু ঘরে ঢুকে দেখল সেখানে রিনা নেই।
তৃষা আশ্চর্য হয়ে গেল কেউ না থাকলে দরজা কী করে খুলে গেল আপনা আপনি?? হঠাৎ দরজা বন্ধ করার আওয়াজে তৃষা পিছনে ঘুরে তাকিয়ে অবাক হয়ে গেল।একটা অচেনা ব্যক্তি কে এই রুমের মধ্যে দেখে তৃষা অনেকটাই অবাক আর তার থেকেও বেশি রেগে গিয়েছে।তাই কিছুটা করা গলায় বলে উঠলো-;
-:এটা কি ধরনের অভদ্রতা??অন্যের রুমে বিনা পারমিশনের কি করে ঢুকে গেলেন আপনি??
লোকটা শয়তানী হাসি দিয়ে বলে উঠলো-;
-:আমি আমার রুমে আছি ম্যাডাম।
তৃষা প্রথমে কিছুটা অবাক হল তারপরে ভাবল হয়তো সে ভুল করে অন্য রুমে ঢুকে পড়েছে,,তাই লোকটাকে উদ্দেশ্য করে বলল-;
-:সরি আমি মনে হয় ভুল করে রুমে ঢুকে পড়েছি।
-:আপনি ঠিক রুমেই ঢুকেছেন ম্যাডাম।
-:মানে!!
-:মানে টা হলো..
এই বলে লোকটা শয়তানি হাসি দিয়ে তৃষার দিকে এগতে লাগলো,,হঠাৎ লোকটাকে নিজের কাছে আসতে দেখে তৃষা কিছুটা ঘাবড়ে গেল,,লোকটার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল-;
-:আপনি আমার দিকে এইভাবে এগিয়ে আসছেন কেন??
লোকটা আবার শয়তানী হাসি দিয়ে বলে উঠলো-;
-:একটু পরেই বুঝতে পারবেন।
তৃষা তাড়াতাড়ি করে পিছনের দিকে ফিরে দরজার দিকে যেতে নিবে ঠিক তখনই লোকটা তৃষার হাত ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল।এবার তৃষা প্রচন্ড রেগে গেল,,নিজের হাত বারবার ছাড়াতে চেষ্টা করেছে,,
-: আমার হাত ধরার সাহস আপনাকে কে দিল??
কিন্তু লোকটা তৃষার কথায় পাত্তা দিল না উল্টে হাত ছাড়ার বদলে জড়িয়ে ধরল তৃষা কে,,এবার তৃষা প্রচন্ড রেগে গেল,,নিজের সমস্ত শক্তি দিয়ে লোকটাকে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে তার গালে ঠাস্ ঠাস্ করে দুটো চড় মারলো,,তারপর বলে উঠলো-;
-:আর এক পা আমার দিকে এগোলে,,আমি আপনার কি অবস্থা করব তা আপনার ধারণারও বাহিরে।আমি কিন্তু পুলিশকে বলতে বাধ্য হব।
এই বলে তৃষা তাড়াতাড়ি করে সেখান থেকে বেরিয়ে গেল।আর সেই লোকটা নিজের গালে হাত রেখে তৃষার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে এক রহস্যময় হাসি দিয়ে বলে উঠলো-;
-:আমার যা কাজ তা হয়েগিয়েছে ম্যাডাম।
এদিকে তৃষা বের হওয়া মাত্র রিনা কে ফোন করল কিন্তু রিনা ফোন ধরার বদলে ফোনটা কেটে দিলো,,তৃষা মনে মনে ভাবছে আপু ফোনটা কেটে দিল কেন??আচ্ছা আমি কোন ভুল করিনি তো এখানে এসে?আপুকে ত আমি কোথাও খুঁজে পেলাম না আর তার ওপর আপু ফোনটাও কেটে দিচ্ছে বারবার।
না না আমার একদম উচিত হয়নি আপুকে বিশ্বাস করে এখানে আশা।আর ওই লোকটাই বা কিভাবে আপুর বলে যাওয়া রুমটাই ছিল?সব কেমন গুলিয়ে যাচ্ছে আমার কিচ্ছু মাথায় আসছে না,,আমাকে এক্ষুনি বাসায় যেতে হবে।এই বলে তৃষা বাসার উদ্দেশ্যে চলে গেল।
#Part-১১💞
বাসায় ফিরে তৃষা আকাশকে বিষয়টা জানাতে চাইলেও আকাশের মনের অবস্থা ভালো নয় দেখে বিষয়টাকে এড়িয়ে গেল।পরেরদিন ছুটি থাকায় আকাশ বাসাতে বসেই অফিসের কাজ করছিল,,তৃষা সকাল সকাল সমস্ত কাজ সেড়ে আকাশের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো।আকাশ তৃষার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল-;
-:কিছু বলবে??
-:হ্যা আসলে,,মানে আমি বলতে চাইছিলাম যে..
তৃষা কে থামিয়ে আকাশ বলে উঠলো-;
-:এত ভণিতা না করে যা বলবে সোজাসুজি বলো।
-:আসলে আমি একটু বাবার সাথে দেখা করতে চাই।
-:ওও কিন্তু আমার তো একটা দরকারি কাজ আছে আমি এখন কী করে যাব তোমার সাথে?
-:না না ঠিক আছে আমি একা চলে যেতে পারবো।
আকাশ কিছুটা ভেবে বলে উঠলো-;
-:আচ্ছা আজ বিকালে গেলে হয় না।তাহলে আমার কাজটা ও হয়ে যায়,,আর আজ রাতে তোমাদের বাসায় থাকাও যাবে।
তৃষা খুশিতে গদগদ হয়ে বলে উঠলো-;
-:তাহলে তো খুবই ভালো হয়।
-:হুম।
বিকালে আকাশ রেডি হয়ে নিচে নেমে তৃষার জন্য অপেক্ষা করছিল,, কিছুক্ষণ পর তৃষা রেডি হয়ে নিচে নামলো।আকাশ তৃষা বাইরে বের হবে ঠিক এমন টাইমে রিনা কোথা থেকে দৌড়ে এসে আকাশকে জড়িয়ে ধরলো।আকাশ প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে বুঝতে পেরে রিনাকে নিজের কাছ থেকে জোর করে ছাড়িয়ে নিজের সামনে দাঁড় করালো,,,রিনার দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-:তোমার সাহস কী করে হয় আমাকে এভাবে জড়িয়ে ধরার??
রিনা কিছুটা অবাক হয়ে বলে উঠলো-;
-:মানে কি আকাশ বেবি??আমি তো সবসময় তোমাকে এইভাবেই জড়িয়ে ধরি।
-:তখন আর এখন এক নয় রিনা,,এখন আমি বিবাহিত তোমার জানা উচিৎ একজন বিবাহিত পুরুষ কে যখন তখন এইভাবে জড়িয়ে ধরা যায় না।
-:ওয়াট!!বিবাহিত তুমি কবে বিবাহিত হলে আকাশ??ও কে তো তুমি ডিভোর্স দিয়ে দেবে কিছু দিন পর।তারপর তো আমরা বিয়ে করবো তাই না বেবি।
এই বলে আকাশকে আবার জড়িয়ে ধরলো,,আকাশ এবার প্রচন্ড রেগে রিনাকে নিজেকে কাছ থেকে ছাড়িয়ে বলে উঠলো-;
-:একদম আমার থেকে দূরে থাকো,,আমার ভাবতেই ঘৃণা করছে যে তোমার মতোন একজন মেয়েকে আমি ভালোবেসে ছিলাম,,ছিঃ
-:আকাশ!!আমার কথাটা একবার শোনো।
-:কী কথা শুনবো??কোথায় ছিলে তুমি যখন আমার মা মারা যায় আর আমি একটু আশ্রয়ের জন্য তোমাকে পাগলের মতোন খুঁজে বের হচ্ছিলাম,,কোথায় ছিলে তুমি যখন আমি তোমাকে ফোন করছিলাম আর তুমি তোমার ফোন সুইচ অফ করে রেখেছিলে।আর এখনই বা কেনো এসেছো এখানে??(রেগে চিৎকার করে)
-:আকাশ তুমি জানতে চাও তো এতদিন আমি কোথায় ছিলাম??তাহলে তুমি তোমার বউয়ের কাছে জিজ্ঞাসা করো যে আমি এতদিন কোথায় ছিলাম।
তৃষা এতক্ষন চুপচাপ সব কিছু দেখছিল এবার সে বলে উঠলো-;
-:কি বলতে চাইছেন আপনি??
-:আমাকে কবে থেকে আপনি বলছিস তৃষা?? নিজের চাচাতো বোনকে কেও আপনি করে বলে?ও আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম তুই তো কখনই আমাকে আপন বোন বলে ভাবিস নি,,আমার আব্বু তোর বাবার সৎ ভাই বলে তুই আর তোর বাবা আমাদের তো সহ্যই করতে পারিস না তৃষা আর তাই তো তুই এই প্ল্যান টা করলি,,তাই না।
-:এসব কি বলছো তুমি আপু??
আকাশ কনফিউজড হয়ে বলল-;
-:এসব কি বলছো তোমারা??
রিনা বলে উঠলো-;
-: আকাশ তৃষা কি তোমাকে কখনো বলেছে যে আমি ওর চাচাতো বোন??
-:না
-:কারণ তুমি আমাকে বারণ করেছিলে আপু আকাশকে সমস্ত বিষয় টা জানাতে।
-:আর কত মিথ্যা কথা বলবি তুই প্লিজ এবার থাম।আকাশ আমি তোমাকে আজ সমস্ত সত্যি কথা বলতে এখানে এসেছি।তৃষা যখন জানতে পারলো আমি তোমার পছন্দের মানুষ তখন ও প্ল্যানটা বানিয়ে ছিলো।আমি ওকে ছোটো থেকেই অনেক ভালোবাসতাম আর ওর সমস্থ কথাও শুনতাম।
যেদিন তোমার মা হসপিটালে ছিলেন আর তুমি গিয়েছিলে ডাক্তারের কেবিনে,,তখন আমি আর তৃষা একসাথেই বসেছিলাম।হঠাৎ ও আমাকে বলে ওঠে আমি যদি তোমার জিবন থেকে না চলে যায় তাহলে সে পুলিশের কাছে তোমার নামে মামলা করবে।আমি কিছুটা ঘাবড়ে গেলেও ওকে জানাই যে আমি তোমাকে আর আন্টিকে এমন পরিস্থিতিতে ফেলে কিছুতেই যেতে পারবো না।তখন ও ভয় দেখায় যে আমি যদি তোমার জীবন থেকে সড়ে না দাঁড়ায় তাহলে ও সুইসাইড করবে। বিশ্বাস করো আকাশ আমি প্রচন্ড ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম কারণ ছোটো বেলা থেকে আমি তৃষাকে প্রচন্ড ভালোবাসতাম,,,তাই ওমন পরিস্থিতি তে কি করবে ভেবে না পেয়ে আমি ওর কথাই মেনে নিয়েছিলাম।ফোন সুইচ অফ করেছিলাম কারণ আমি তোমাকে মিথ্যা বলতে পারতাম না আকাশ।
-:বাহ্ আপু কি চমৎকার মিথ্যে কথাই না বললে।আচ্ছা তোমার কাছে কি প্রমান আছে যে আমি তোমাকে এইসব বলেছি??
-:চুপ করো রিনা তৃষার নামে মিথ্যা কথা বলো না,,এতে ওর কি সার্থ??
-:সার্থ আছে আকাশ,,তৃষা আর ওর বাবা তোমার প্রপার্টি চাই তাই ওরা আমাকে তোমার কাছ থেকে দূরে সড়িয়ে দিতে চাই আর তৃষা ভালোভাবেই জানে আন্টি চলে যাওয়ার পর তুমিই সমস্ত সম্পত্তির মালিক হবে।আর তাছাড়াও ও অন্য একটা ছেলেকে ভালোবাসে।
-:সেটা ও বাসতেই পারে আমিও তোমাকে ভালোবেসে ছিলাম।
-:কিন্তু আকাশ আমাদের সম্পর্কটা পবিত্র।ও তো তোমার অনুপস্থিতে ওর প্রেমিকের সাথে হোটেলে দেখা করতে যায়,, আমার ভাবতেও ঘৃনা করছে যে ও আমার বোন। ছিঃ
-:আপুইইই,,প্লিজ চুপ করো এইভাবে মিথ্যা কথা বলো না।
-:কি প্রমাণ আছে তোমার কাছে,,তৃষাকে এতবড়ো অপবাদ দিচ্ছ কিসের উপর ভিত্তি তে।
রিনা একটা শয়তানি হাসি দিয়ে বলে উঠলো-;
-:আচ্ছা আকাশ তুমি ও কে জিজ্ঞেস করো তো ও কাল হোটেল ব্লু ম্যানশানে গিয়েছিল কি না??
-:না তৃষা কাল কোথাও যায় নি।
-: তুমি ওকে জিজ্ঞাসা করো।
আকাশ তৃষার দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল-;
-: তুমি কাল গিয়েছিলে??
তৃষা আকাশের দিকে তাকিয়ে আমতা আমতা করে বলল-;
-:হ্যা মানে গিয়েছিলাম কিন্তু সেখানে আপুর জন্য গিয়েছিলাম।
-:আর কতো মিথ্যা বলবি তুই?? আকাশ ও কাল হোটেল ব্লু ম্যানশানে গিয়েছিল আমার সাথে দেখা করতে নয় ওর প্রেমিকের সাথে দেখা করতে গিয়েছিল।আসলে আন্টি মারা যাওয়ার পর আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করার অনেক ট্রাই করি কিন্তু তৃষার জন্য তা সম্ভব হচ্ছিল না,,তাই আমি বেশকিছু দিন ধরেই তৃষাকে ফলো করছিলাম কিছু প্রমাণ জোগাড় করার জন্য আর কাল সেই সুযোগ পেয়ও গিয়েছিলাম।আমি জানতাম তুমি আমাকে বিশ্বাস করবে না,,তাই জন্য আমি কিছু নিয়ে এসেছি আশা করি এটা দেখার পর তুমি আর আমাকে মিথ্যাবাদী বলবে না।
এই বলে কিছু ছবি রিনা আকাশের দিকে এগিয়ে দিল,, ছবিগুলো দেখতেই আকাশের মাথা গরম হয়ে গেল নিজের স্ত্রীকে অন্য পুরুষের বুকে দেখে যে কারোর ই মাথা গরম হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক।রিনা প্ল্যান করে কাল ছবিগুলো তুলেছিল আর ওই লোকটা রিনার কথাতেই এমন করেছিল। আকাশ তৃষার দিকে ছবিগুলো ছুড়ে দিয়ে বলে উঠলো-;
-:কী এইসব??
তৃষা ছবিগুলো দেখে নিজের চোখকে বিশ্বাস করতে পারছে না,,আকাশের দিকে তাকিয়ে বলে উঠলো-;
-:আকাশ এগুলো সব মিথ্যে,,রিনাপু আমাকে ফাঁসানোর জন্য এমনটা করেছে,,প্লিজ তুমি বিশ্বাস করো না।
-: ছিঃ তৃষা আমি কোনোদিনও ভাবতে পারিনি তুমি আমার সাথে এমনটা করবে?এতো লোভ তোমাদের,, সামান্য প্রপার্টির লোভে তুমি আর তোমার বাবা এতটা নীচে নামতে পারো??
-:আকাশ প্লিজ আমার বাবাকে লোভি বলবেন না,,আর আমি মিথ্যা কথা বলছি না রিনাপু মিথ্যা বলছে।
-:চুপ করো তৃষা।আমার চোখের সামনে প্রমান আমি সেটাকে বিশ্বাস না করে তোমাকে বিশ্বাস করবো।এক্ষুনি আমার চোখের সামনে থেকে বেরিয়ে যাও তোমার মতোন একজন চরিত্রহীনা মেয়ের আমি মুখ ও দেখতে চায় না।
-:আকাশ!!
-:তৃষা যাও।
-:না আমি কোথাও যাবো না আমি এই বাড়ির বউ,,মা আমাকে এই বাড়ির আর আপনার দায়িত্ব দিয়ে গিয়েছে আমার কাছে।
-:দেখেছো বেবি কেমন মিথ্যা কথা বলছে ও,,এ বাড়িতে থাকার জন্য তোমার মরা মায়ের নামে ও মিথ্যা বলতে একটুও আটকাচ্ছে না,,কেমন অসভ্য মেয়ে।
-:আপু আমি আগে জানতাম তুমি খারাপ কিন্তু আজ এতটা নীচে নেমে যাবে এটা আমি স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি নিজের বোনকে চরিত্রহীনা প্রমান করতে তোমার একটুও বাঁধলো না,,বাজে মেয়ে একটা..
আর কিছু বলতে না দিয়ে আকাশ তৃষাকে ঠাটিয়ে চড় মারলো তারপর বলতে লাগলো-;
-:নো মোর ওয়ার্ডস।বেড়িয়ে যাও এক্ষুনি আমার বাড়ি থেকে নইলে আমি পুলিশ ডেকে তোমাকে আর তোমার বাবাকে জেলে পাঠানোর ব্যবস্থা করবো।আর চিন্তা করো না কিছুদিনের মধ্যেই ডিভোর্স লেটার পাঠিয়ে দেব,,তারপর তুমি না হয় তোমার প্রেমককে বিয়ে করবে।এখন বের হও আমার বাসা থেকে।
এই বলে তৃষার হাত ধরে বাইরে বের করে দিল,,তৃষা হাজার কাকুতি মিনতি উপেক্ষা করে আকাশ তৃষার মুখের সামনে দরজা লাগিয়ে দিল শব্দ করে।
.
.
.
[বাকিটা নেক্সট পর্বে]
.
.
.
“”ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা করবেন।আর দুই পর্বের মধ্যে গল্প শেষ করে দেবো।””