#তোমাতে
লেখনীতে~আগ্নেস মার্টেল
/পর্ব ১৫/
নিসাদের বাড়িতে তিনদিন থাকা হলো না। সকালে ড্রাইভার কাকা এসে বললেন মামী আমাকে বাসায় যেতে বলেছেন এবং কারনটা বিশেষ। আন্টি তা উড়িয়ে দেন। প্রবল আত্মবিশ্বাসে মামীকে কল করেন। আমার নাছোড়বান্দা মামীর সাথে পেরে উঠলেন না। আমি বিস্মিত হলাম। কি নিয়ে মামীর এত উচাটন? এই জরুরি ভিত্তিটা আমার কাছে ধোয়াশা লাগছে। খুজেও কোন কূল কিনারা পাচ্ছি না। ফোন করলাম জিসান ভাইকে। কলটা ব্যস্ত আসল। ছোট্ট এক শ্বাস ফেলে বাসায় আসি। দরজা খোলাই ছিল। মুখোমুখী পরলাম মিশেল আপুর। আপু চিন্তিতমুখে বসে। বলল, “শুধু শুধু আসতে গেলি কেন?”
“মামীই তো বলল।”
আপু বিরক্ত দৃষ্টি সরিয়ে নেয়। ভাবলাম নিত্যকার রুটিন। সেসবকে পাত্তা না দিয়ে মামীকে ডাকতে ডাকতে রান্নাঘরে আসি। মামী আঁচলে হাত মুছে পেছন ফিরেন, একগাল হেসে বলেন, “এলি তাহলে?”
রান্নাঘর জুড়ে এত আয়োজনের আভাস দেখে ভ্রু কুচকে গেল। বললাম, “আজকে কোন অনুষ্ঠান?”
মামী কিছুক্ষণ আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। আমার থুতনি ধরে বললেন, “বাপের ধাত পেয়ে ভারী সুন্দর হয়েছিস তুই! বড় হচ্ছিস এখন ভাগ্য খারাপ না হলে সামনে আরও কত আয়োজন হবে!”
বিস্মিত হলাম, “কি বললে বুঝিনি।”
মামী ফিরে দাঁড়ান। মাছ ভাজায় মন দেন। আমি উৎসুক চোখে রেনু খালার দিকে তাকাই। ভ্রু উঁচিয়ে কারন জিজ্ঞেস করি। খালা মাথা নিচু করে নেন। আশ্চর্য হলাম। মামী আমার দিকে পিছু ফিরে থেকেই বলেন, “আজকে তোকে ইফাজের পরিবার দেখতে আসবে। বিছানার ওপর তোর পছন্দের শাড়ি রেখেছি। একা শাড়ি পড়তে পারিস না? নইলে মিশেলকে বলবি ও পড়িয়ে দিবে!”
বাকরুদ্ধ হয়ে রইলাম অনেকক্ষণ। জবাব না পেয়ে মামী পিছু ফিরেন। বললাম, “মামী আমার আগে মিশেল আপু আছে! এত তাড়াহুড়ো কিসের? গতকালই না ভাইয়ার বিয়ে ঠিক হলো? ভাইয়ার বিয়ে শেষ হলো না, আপুর বিয়ের নামধাম নেই কোথা থেকে আমার বিয়ে নিয়ে এসব উটকো ঝামেলা!?”
“উটকো বলছিস কেন? দেখতে আসা অর্থই কি বিয়ে? ওদের পছন্দ হলে খুব বেশি বাগদান হবে। নইলে মিশেলের আগে তোর বিয়ে হচ্ছে না। এমনি পছন্দ করে রাখা। দোষ কি?”
ত্যক্ত কণ্ঠে বলি, “তোমরাই না বলেছিলে পড়াশোনা শেষ করার আগে কোন বিয়ে নয়?”
“আরে বোকা, ওরা শুধু তোকে দেখে যাবে। পছন্দ হলে হয়ত আংটি পরাবে। ব্যাস এটুকুই। মিশেলের বিয়ের পরই তোর পালা…”
তীব্র রাগে আমার কান্না পেল। সে রাগ প্রকাশ করতে না পারায় সারা শরীর ছটফটিয়ে উঠল। মামীর দিকে একপলক তাকাই। মামীর হাসি দ্রুত মিলিয়ে যায়। হতভম্ব কণ্ঠে বলেন, “ওমা কাঁদছিস কেন? আমরা ভাবলাম ছেলে তোর পছন্দ। ওরা যখন রাতে বলল দেখতে আসবে তোর মামা তাই মানা করেনি!”
আমার সারা শরীর রাগে কাঁপছে। চোখের কোল থেকে এসময় বড় বিন্দুফোটা গাল গড়ায়। দুচোখ থেকেই পরতে থাকে। রোধ হয়ে আসা কণ্ঠে বললাম, “আমি একবারও বলেছি আমি ইফাজকে পছন্দ করি?”
মামী কথা গুলিয়ে ফেললেন। রেনু খালা নিশ্চুপ তাকিয়ে আছেন। মামী বিভ্রান্ত কণ্ঠে বললেন, “গতকাল ইফাজের মা..”
“উনার কথাটাই বড়? আমাকে প্রশ্ন করবে না? ওদের মানা করে দাও! আমার যাকে পছন্দ তার বাগদত্তাই হব। আমার অন্যের বাগ দত্তা হওয়ার বিন্দুমাত্র রুচি নেই!”
বিস্মিত কণ্ঠে, “সে কি! আসতে বলে এমন মুখের ওপর মানা করা যায়? দেখে যাক। পছন্দ হবে না মানা করে দিব।”
চেয়ার ছেড়ে উঠে পরি, “আমি আবারো বলছি অন্যের বাগদত্তা হতে পারব না। একেবারেই না।”
মামীকে বিস্মিত রেখে দ্রুত পায়ে রুমে আসলাম। রাগে খাটের এক কোণে গাট হয়ে বসে রইলাম। বিছানার ওপর রাখা প্রিয় শাড়িটাও কুৎসিত কদাকার ঠেকছে। এমন তিতকুটে বিচ্ছিরি অনুভূতি আমার আজ পর্যন্ত হয়নি। কিছুক্ষণ লম্বা দম নিয়ে সিদ্ধান্ত নিলাম। জিসান ভাইয়ের সাথে কথা বলব। উনি হয়ত কোন পথ বাতলে দিবেন। কল লাগালাম। ফোন বরাবরের মতো ব্যস্ত এল। রাগ কয়েক ধাপ বাড়ল। ঘন্টা পেরনোর পর হয়ত কল ব্যাক করলেন। আবেশি কণ্ঠটা কানে এলে রাগ দমাই। বলি, “আপনি আপনার পরিবারকে বলেননি আমাদের সম্পর্কের কথা?”
তিনি হয়ত প্রশ্নটায় ভড়কালেন। সেই ভড়কানোর ছাপ পরল কণ্ঠে, “হ্যা বলেছি। কেন?”
দাঁতে দাঁত চেপে, “তাহলে কোন সাহসে ওরা আমাকে দেখতে আসবে?”
বিস্মিত কণ্ঠে, “কে দেখতে আসছে? মা তো কিছু বলেনি!”
গর্জে উঠলাম, “আপনার মা এলে আমার কোন সমস্যা ছিল না। আমাদের সম্পর্কের কথা জেনেও আপনার চাচাতো না ফুপাতো কি ভাই হয় সে কেন আসছে আমাকে দেখতে? ওর সেল্ফরেস্পেক্ট নেই? নিজের ভাইয়ের প্রেমিকাকে দেখতে আসে ছিঃ!”
“শান্ত হ। ধীরে বল কার কথা বলছিস।”
“আপনার ভাই একটা..”
বিরক্তি সূচক শব্দে, “মূল কথাটা বল!”
“ইফাজের পরিবার আমাকে দেখতে আসছে! আমার অবাক লাগছে মানুষ এত নিচে কিভাবে নামতে পারে! আমাদের সম্পর্ক জেনেও কেন..”
তিনি ধমকে উঠেন, “ঝুম! না জেনে কথা বলবি না। ইফাজের পরিবার জানে না তোর আমার সম্পর্ক! জানলে হয়ত যেত না!”
“আপনি তাহলে কোন পরিবারকে বললেন?”
“ভালভাবে কথা বল! আমার বাবা-মা জানে। পুরো গুষ্টিকে বলে বেড়ানোর এখনো সময় হয়নি।”
চোখের পানি মুছে কিছুক্ষণ চুপ রইলাম। ধাতস্থ হয়ে তাচ্ছিল্যের সুরে বললাম, “ফাইন আপনার সঠিক সময় আসুক। অপেক্ষা করুন। সঠিক সময় এলে বউয়ের জায়গায় ভাবী ডাকবেন। মন্দ কি?”
“ঝুম!”
“চেঁচাবেন না একদম। এখনো পরিবারকে জানাননি কোন প্রজাতির মানুষ আপনি!”
ক্ষুব্ধ কণ্ঠ এল, “থাপ্পড় চিনিস বেয়াদব? বেশি বড় হয়ে গেছিস, না? চেঁচিয়ে কথা বলা হচ্ছে! তোর আমার রিলেশন কতদিনের? সবোর্চ্চ এক বছর। তবু নিজের বাবা-মা’কে বলেছি! তুই সবে ভার্সিটিতে উঠেছিস। তুই না বলেছিলি তোর পরিবার এখুনি বিয়ে দিবে না! বিয়ে দেবার এত তাড়া আগে বলেনি কেন? মিশেলকে টপকেই বিয়ে দিচ্ছে! আজাইরা পরিবার! কথার কোন ঠিক ঠিকানা নাই! আমার সময়েই যত আপত্তি অন্যের বেলায় ঢেই ঢেই করে রাজি হচ্ছে! তোর বিয়ে অন্যের সাথে ঠিক করলে খুন করে আসব পুরো পরিবারকে!”
বিস্ময়ে বললাম, “আপনি এসব বলছেন? কবে থেকে এমন বেয়াদব হলেন আপনি? বড়দের টেনে..”
কথা শেষ হওয়ার আগেই কল কেটে যায়। স্তব্ধ হয়ে বসে থাকি। একসময় শব্দ করে কাঁদতে থাকি। পাগলদের মতো কখনো চুল টেনে ধরি। আপু এসে এসময় পাশে বসল। অসহায় মুখে তাকালাম। আপুর চোখে পানি দেখে ওকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকি। আপু পিঠে হাত বোলায়। বলে, “এমন ভেটকে ভেটকে কাঁদা বন্ধ কর। ওরা শুধু দেখতে আসবে। পছন্দ হয়েছে কিনা জিজ্ঞেস করলে স্রেফ এড়িয়ে যাবি। সরাসরি তো প্রত্যাখান করতে পারবি না। বাড়ি গেলে পর কল দিয়ে বলে দিবি পছন্দ হয়নি।” কিছুক্ষণ চুপ থেকে, “আরেকটা অপশন আছে। ইফাজের সাথে কথা বলতে দিলে ঐখানেই বলে দিবি তুই শাফিকে ভালবাসিস। ইফাজ নাটকের ভ্যাম্প না যে ভ্যাম্পগিরি করে হলেও তোকে বিয়ে করবে।”
“আমার ভাবতেই অস্বস্তি লাগছে আপু। আমি সং সেজে ওদের সামনে বসব? অসম্ভব! ইফাজ লোকটিকেই আমার বিদঘুটে অসহ্য লাগে!”
আপু এসময় ফিক করে হাসে। বলে, “ওকেই তো জীবনের ফার্স্ট লাভ লেটার দিলি!”
“উঁ আপু!”
“তিয়াসকে বলি বরং। ও কিছু একটা করতে পারবে।”
চোখ মুছে সোজা হয়ে বসি। বলি, “সত্যি?”
“ট্রাই করতে দোষ কি?”
চোখে-মুখে পানি ছিটিয়ে বেরই। নিজেকে স্বাভাবিক করে আপুর সাথে বেরলাম। ভাইয়া রুমে আছে কিনা সেটাও ভাবনার। রুমে উঁকি দেই। ভাইয়া আছে। বলল, “আমি কোন হ্যাল্প করতে পারব না।”
আপুর দিকে তাকাই। আপু বিরক্ত কণ্ঠে বলে, “কথা শুনে নে আগে।”
“বললাম তো পারব না। যা সামনে থেকে যা।”
অসহায় মুখে ভাইয়ার পাশে বসে যাই, “ভাইয়া?”
ভাইয়া কাগজ পত্র ঘাটছিল। মুখ তুলে চায়ল, “আমি কিছু করতে পারব না রে। দুজনই আমার বেস্টফ্রেন্ড!”
নিরুপায় হয়ে গাল ফুলিয়ে বসে রইলাম। বিকেল নাগাদ ওরা সত্যিই এল। চোখ-মুখ শক্ত করে গিয়ে বসলাম। পূর্ণাঙ্গভাবে ওদের কোন প্রশ্নেরই উত্তর দেইনি। ‘হু’, ‘হা’ দিয়ে কাজ চালিয়েছি। নয়ত মাথা নেড়ে। একসময় আমাদের আলাদা কথা বলতে পাঠাল। ইফাজের ঐ পলকহীন দৃষ্টির সামনে অস্বস্তি লাগল। বিরক্তিতে ভ্রু কুচকে এল।
“চোখ-মুখ এমন শক্ত করে রেখেছ কেন? তোমার আমাকে পছন্দ নয়?”
আমি নিরুত্তর ছেলেটার দিকে তাকাই।
#তোমাতে
লেখনীতে~আগ্নেস মার্টেল
/পর্ব ১৬/
একটা মেসেজ জিসান ভাইকে সেন্ড করতে চেয়েছিলাম। করলাম ইফাজকে। মেসেজটা মেসেঞ্জারে পাঠাইনি। তাই আনসেন্ড করা যাচ্ছে না। বিরক্তি আর অস্বস্তিতে চোখ খিচে বসে থাকি। মেসেজটা দেখলে ইফাজ কি ভাববে!? কিছুক্ষণ পর মনে হলো ভাবুক! ভেবে উল্টে থাকুক। তাতে আমার বাপ-দাদা চৌদ্দপুরুষের কিছু যায় আসছে না। বরং একটা সরি মেসেজ পাঠানো যায়। নিরুপায় তাই করলাম। চোখ বুলিয়ে পুরো মেসেজগুলো পড়লাম। তীব্র অস্বস্তি আকড়ে ধরল। ইফাজের সাথে ছোটখাটো কথোপকথন যা হয়েছে সব ফোন থেকে মুছে ফেললাম। হায়! এটা যদি ইফাজের ফোন থেকে মুছতে পারতাম! মেসেজটা ছিল এরকম, “জিসাইন্নার জিসাইন্না! তোর সাথে আমার সীমিত সময়ের ব্রেকাপ!”
সব অস্বস্তি ঝেরে ফেলি। যার মেসেজ তাকে পাঠিয়ে দেই। ফোনটাও অফ করে দেই। এখন বাজছে নয়টা। জানলার থাই গ্লাস আর বারান্দার দরজা শক্ত করে লাগাই। ঠিকমতো লেগেছে কিনা পরিক্ষা করি। নিশ্চিত হয়ে বিছানায় গা এলাই। পৃথিবী ভেসে গেলে ভেসে যাক। এত অস্বস্তি, বিরক্তি, রাগ, জেদে অসহ্য হয়ে গেছি! তীব্র মাথা ব্যাথায় একসময় চোখে ঘুম নামল।
ঘুম ভাঙে ভোর সকালে। চোখ কচলে বসি। বালিশের কাছে ফোন হাতড়াই। অন করি। বিরামহীন নোটিফিকেশন আর মেসেজ আসতে থাকে।
১১:৩০
“ঝুম বারান্দার দরজা খোল”
“আমি জানি ঘুমাসনি”
“ঝুম খারাপ হয়ে যাবে কিন্তু”
১১:৫০
“আচ্ছা যা খুলতে হবে না দরজা তোর বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকব সারারাত”
“এই তোর দয়ামায়া নেই?”
১১:৫৯
“আরে আমি কি করেছি? রাগের মাথায় ঐসব বলা অস্বাভাবিক?”
“আচ্ছা যা সরি। তোর শ্রদ্ধেয় পরিবারকে আর আজাইরা বলব না। দিনরাত ওদের নাম জপে মুখের ফেনা তুলে ফেলব!”
১২:০২
“শালি, মেজাজ খারাপ হয়ে যাচ্ছে!”
“দরজা একবার খুলতে পারি তোকে..!”
“তোর ব্রেকাপ ছুটাচ্ছি দাঁড়া।”
১২:২০
“এত আওয়াজেও ঘুম ভাঙে না? কি ঘুম ঘুমিয়েছিস!”
১২:৩০
“তুই একবার দরজা খুল তো! এখুনি বিয়ে করব।”
“পরিবারকে জানাইনি এটাই সমস্যা? মাঝরাতে বিয়ে করে ঐ পরিবারের সামনেই আগে যাব!”
১২:৫৫
“ধ্যাত! তুই আজাইরা। তোর পরিবার আজাইরা। তোর ফোনও আজাইরা। এত কল করি বারবার নট রিচেবল!”
“তোদের বারান্দাও আজাইরা। এত মশা!”
০২:২০
“খুললি না শেষ পর্যন্ত! তোকে আমি কালকে পাই খুন করব! শালির বোন!”
“খুন হয়েও শান্তি পাবি না। তোকে নিজের রুমে ফরমালিন জারে রাখব! বাই এনি চান্স হঠাৎ হৃৎপিন্ড সচল হলে ফরমালিনে শ্বাস নিবি! গিলবি!”
“বেয়াদব মেয়ে!”
পাশাপাশি মিসড কলের মেসেজ। ছোট্ট এক শ্বাস ফেললাম। লাস্ট মেসেজ এসেছে আধঘন্টা আগে, “ঝুম আমি সিরিয়াস দিনের বেলা তোকে সামনে পাই। তুলে নিয়ে বিয়ে করব! গাঁইগুঁই করবি চড় খাবি! ঘুম হারাম করে দিয়েছিস!”
বারান্দায় এসে বসলাম। আলো ফুটছে সবে। ভোর শীতল হাওয়ারা ছুয়ে ছুয়ে যাচ্ছে। সদ্য ফোটা সকালের স্নিগ্ধতায় আমার রাগ, জেদ উবে গেল। আবিষ্ট হলো মুগ্ধতায়। মেসেজগুলো পড়ে এখন বরং হাসি পাচ্ছে। বারন্দায় আনা চেয়ারে পা উঠিয়ে বসলাম। ফোন লক খুলে গ্যালারিতে যাই। গ্যালারিতে আমার ছবি কম, জিসান ভাইয়ের ছবিতে ভরপুর। উনার জন্য আলাদা দুটো এলবাম আছে। সেখানে কোনটা উনার সজ্ঞানে, কোনটা লুকিয়ে তোলা ছবি। বেশির ভাগ আমাদের কাপল ছবি। উনার গ্যালারিতে যাই। উনি যেদিন পাঞ্জাবি পরেন আমি জোর করে উনার গোল চশমাটা উনাকে পরাই। চশমাটায় উনাকে দারূণ মানায়। সমস্যা সেটা তিনি জানেন না। পরতেও চান না। স্নিগ্ধ সকাল আর প্রিয়ের হাস্যোজ্জ্বল স্নিগ্ধ চেহেরা ঠোঁটে আপনাই হাসি ফোটাল। ছবিগুলো খুটিয়ে খুটিয়ে দেখি আর অধিকারবোধ স্বগর্জনে গর্জায়, “এই পাগলাটে ছেলেটা আমার একান্তই আমার!” এসময় ফোন রিং বেজে উঠল। ত্যক্ত মুখে তাকাই। জিসান ভাইয়ের কল। বিরক্তি মুছে ঠোঁট হাসি ফুটে। কণ্ঠে তবু গাম্ভীর্য এনে বলি, “হ্যালো।”
ওপাশ থেকে দীর্ঘশ্বাসের শব্দ এল। ক্লান্ত কণ্ঠে বললেন, “কাল রাতে জেগে ছিলি?”
“না ঘুমিয়ে গেছিলাম।”
“সত্যি?”
“মিথ্যের কি হলো?”
“কখন উঠলি? ফ্রেশ হয়েছিস?”
“অনেকক্ষণ হলো উঠেছি। উঠেছি যখন অবশ্যই ফ্রেশ হয়েছি!”
বিরক্তি নিয়ে, “এমন রূক্ষ কণ্ঠে কথা বলছিস কেন?”
“কই না তো। আমার স্বাভাবিক কণ্ঠই আজকাল আপনার রূক্ষ মনে হয়।”
“বাই এনি চান্স, সকাল সকাল তুই ঝগড়া করতে চাইছিস?”
“আশ্চর্য আমাকে ঝগরুটে মনে হয় আপনার?”
“ঝুম শুধু শুধু ঝামেলা বাজাচ্ছিস। এখনও ছোট কারনের রেশ ধরে আছিস। ছাড় না ওসব!”
“ছাড়ব কেন? আপনি সরি বলেও একই সময়ে আমায় বকেছেন!”
ওপাশ থেকে ধমক আসে, “কি চাইছিস তুই?”
আত্মা কেঁপে উঠল। চেয়ার থেকে একটু হলে পরে যেতাম। ধাতস্থ হই। বলি, “শাস্তি দিতে চাই। এমন শাস্তি যা আপনি সারাজীবন বইবেন। কাহিল হবেন। তবু ফেলতে পারবেন না।”
“ত্যক্ত হয়ে গেছি তোর বেহুদা পাগলামিতে। বন্ধ কর এসব!”
চোখে পানি এল, বললাম, “ঠিকাছে আর ফোন দিবেন না আমাকে।”
“আমার ঠেকা না। সামান্য একটা বিষয়ে এত কাহিনী! যত্তসব!”
তিনি কল কেটে দেন। আমি গাল ফুলিয়ে বসে থাকি। সময় গড়ায়। তিনি কল করেন না। আশ্চর্য আমি রেগে আছি! তিনি মান ভাঙাবেন না? কল এল না। না কোন মেসেজ। আমি ধীরে ধীরে অস্থির হতে লাগলাম। ভয় জমাট বাধল। তিনি আমাকে ভুলে যাননি তো? একদিনে ভালবাসা কমে গেল? উদভ্রান্ত পাগল পাগল আমি রুমে পায়চারি করি। কখনো রুম থেকে বেরিয়ে আবার রুমে এসে ঢুকি।
সন্ধ্যে নাগাদ আমার অবস্থা হলো ভুতগ্রস্ত। এলোমেলো চুল। এলোমেলো চোখ-মুখের অবস্থা। দীর্ঘ সময়ের কান্নায় চোখের কোল ফুলে। মাথা ব্যাথা করছে। হারানোর ভয় আমাকে চিন্তায় গুমরে মারছে। তিনি বিহীন জীবন ভাবনায় কখনো উঁকি দিচ্ছে। আর আমি গুটিয়ে যাচ্ছি। তিনি বিহীন জীবন লিড করা অসম্ভব! মামীর গলা পেলাম এসময়। রুমের লাইট জ্বলে উঠে।
“একি অবস্থা! জানলা লাগানো হয়নি! আলো না জ্বালাসনি! এমন ভুতের মতো বসে আছিস যে? ঠিক আছিস?”
উত্তর দেই না। মাথা নিচু করে হাতখোপা করতে থাকি। মামী জানলা, দরজা লাগান। উঠে দাঁড়িয়েছি তখন, বললেন, “কি হয়েছে তোর?” কাছে এসে থুতনি উঁচিয়ে, “দেখি। মুখ চোখ এমন লাগছে কেন? অসুস্থ?”
ভারী কণ্ঠে বলি, “মাথাব্যাথা। চোখে-মুখে পানি ছিটিয়ে আসি। সরো।”
মামী সপ্রশ্ন চোখে ছাড়েন। ওয়াশরুমে এসে চোখে-মুখে পানি ছিটাই। মাথা কেমন ঝিমঝিম করছে। ভারী লাগে। বেরিয়ে আসি। মামী তখনো দাঁড়িয়ে, বলেন, “বেশি খারাপ লাগলে সুয়ে থাক। রেনু খাবার দিয়ে যাবে।”
অসম্মতিতে বলি, “এত অসুস্থ না। সবার সাথেই খাব।”
মামী অসন্তুষ্ট হন। দৃষ্টিতে সে ছাপ পরে। বলেন, “বড় হয়ে গেছিস। এখন সমস্যা যাই হোক সব তোদের পার্সোনাল মেটার!”
শেষ বাক্যে হালকা শ্লেষ মিশে ছিল। আমি বিস্মিত হই। মামীর দিকে তাকাই। মামী রুম থেকে চলে যান। ছোট্ট এক শ্বাস ফেললাম। তাতে আক্ষেপ নাকি বিরক্তি কি ছিল সেটা নিজেরই অজানা। ধীর পায়ে ডাইনিং রুমে আসি। তিয়াস ভাইয়ার সাথে চোখাচোখি হয়। ভ্রু কুচকায়, “কি রে, কি হয়েছে?”
থমথমে মুখে বলি, “কিছু না।”
ভাইয়া আর প্রশ্ন করে না। আপুকে ইশারা করে। আপু উত্তর দিতে পারে না। মামা, সাদ ভাইয়া, নানা এসে টেবিল দখল করেন। নানা সামনা সামনি বসেন। কিছুক্ষণ উৎসুক চোখে তাকান। বলেন, “কি হয়েছে নানু?”
সবার দৃষ্টি আমার ওপর পরল। এবার আমি কেঁদে দিলাম। উনারা বিস্মিত হন। মামী, রেনু খালা খাবার বেরে দিচ্ছিলেন। হাত থেমে যায়। ভাইয়া, নানার মিলিত কণ্ঠ আসে, “কি হয়েছে? কাঁদছিস কেন?”
অস্পষ্ট কণ্ঠে বলি, “আমি বিয়ে করব নানা।”
মামী বিস্মিত কন্ঠ, “কি বললি?”
আরো জোরে কাঁদতে কাঁদতে, “আমি বিয়ে করব।”
মামা বিস্ময়ে বলেন, “তোকে গতকাল তোর মামী বারবার জিজ্ঞেস করেছে ঠিক কিনা। তুই তবু অসম্মতি দিয়েছিস। এখন…”
বিরক্তিতে ভারী কণ্ঠে বলি, “আমি বলেছি ওকে বিয়ে করব?”
নানা হাসেন, বলেন, “কাকে করবে তাহলে? এ অসময়ে পাত্র কোথায় খুজব?”
কান্না মুছি। ভয়ে ভয়ে বলি, “তোমাদের শাফিকে বিয়ে করব।”
মামা চমকান। কিন্তু নানার ঠোঁটে হাসি। মশকরা করে বলেন, “শাফি রাজি হবে? নাকি জোর করতে হবে?”
মামী বলেন, “বাবা আপনি হাসছেন?”
“দেখ মা, আমার জীবনে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটছে। হাসি পাবে না? আমি আশ্চর্য হচ্ছিলাম। বিয়ে করতে যে আমার মেয়েকে ভোর রাতে তুলে নিয়ে গেছিল। তার মেয়ে কিভাবে বিয়ে বিমুখী! এটাই হওয়ার নয় কি?”
উপস্থিত সবাই বিস্ময়ে তাকাচ্ছে। আমি আরও জোরে কাঁদতে থাকি। মামী ধমকান, “এই কান্না বন্ধ কর।”
ছোটদের মতো অস্থির হয়ে উঠি। পা দাবড়াই, “আমি বিয়ে করব! আর কিছু জানি না, আমি বিয়ে করব! মানে বিয়ে করব!”
সাদ ভাইয়ার ত্যক্ত কণ্ঠে আসে, “এই তোর বয়স হয়েছে? লজ্জা লাগছে না?”
ভাইয়ার দিকে চোখ রাঙিয়ে তাকাই। ভাইয়া মুখ ভেঙায়। বলে, “বয়স হলে বিয়ে এমনিতেই দিব। চুপচাপ ভাত খা!”
আমি হাত গুটিয়ে নেই। গাল থেকে অনবরত পানি গড়ায়। ভাইয়া এবার কথা পালটায়, “আচ্ছা বাপ করিস। এখন ভাত খা!”
“না আমি আজকেই বিয়ে করব!”
“আশ্চর্য মেয়ে তো! শাফির পরিবারের সাথে কথা বলতে হবে না?”
“তো বলো। আমি বিয়ে করব! বিয়ে করব! বিয়ে করব! আর ঐ জিসান বেটাকেই করব!”
মামী মাথায় মারলেন, “চুপচাপ খেয়ে ওঠ। এটা বাচ্চার বায়না না।”
মাথায় হাত বোলাই। তবু জেদ ধরে থাকি। মামীর মুখ রক্তাভ হয়। কখনো ঠোঁট টিপে অন্যদিকে ফিরেন। তিয়াস ভাইয়া আর আপু ওদিকে মুখ লুকিয়ে হাসছে। এসবে নজর দেয়ার সময় নেই! আমি বিয়ে করব মানে করবই। মামী একসময় ত্যক্ত কন্ঠে মামাকে বলেন, “তাড়াতাড়ি খাওয়া শেষ করে ওপর তলায় যাও তো। সাদ কাজি ডেকে আনুক। তোমার ভাগ্নী যা চাইছে তাই হোক! এত জিদ্দি এ মেয়ে!”
সাদ ভাইয়ার হাত থেমে যায়, “মানে? সত্যিই তোমরা ওকে বিয়ে দিবে? ওর বয়স হয়েছে? এখনো কত পিচ্চি! সবার ছোট হয়ে সবার আগে বিয়ে করে ফেলবে! বিয়ে কি হাতের মোয়া? জেদ ধরল আর হয়ে গেল! যত্তসব। ঢং না করে ভাত খা! এসব বাইপাস কাজকর্ম চলবে না!”
আমি গাল ফুলিয়ে ভাইয়ার দিকে তাকাই। ভাইয়া কঠিনচোখে খেতে ইশারা করে। চোখ সরাই। হাত গুটিয়ে রাখি। আমাকে আজকে মারধর করলেও আমি বিয়ে করব! করব মানে করেই ছাড়ব! মিশেল আপুর কৌতুকপূর্ণ কণ্ঠ আসে, “ওর কি দোষ ভাইয়া? তুমিই দেরিতে বিয়ে করে জ্যাম লাগিয়েছ। এখন অন্য পথ নাই। মেয়ের বয়স কম কি! আঠারো হয়েছে। ডিসেম্বরে উনিশ হবে!”
মামা, নানা খেয়ে যাচ্ছেন। ঠোঁটের কোণায় হাসি। মামী আরেকবার মাথায় মারলেন। আমি চোখ মুছে হাত গুটিয়ে নেই। তিয়াস ভাইয়া বলল, “মিশেল চল আমরাও গণ বিবাহ করি। ঝুম নতুন বাইপাস প্রজেক্টের উদ্যোক্তা হয়েছে আমাদের বড় ভাই-বোন হিসেবে উচিত ওকে সাপোর্ট করা। কি বলিস?”
কিছুক্ষণ নীরবতা। আপু একসময় রুম কাঁপিয়ে জোরে জোরে হাসতে থাকে। শুরু হয় সম্মিলিত হাসি। আমি অসহায় মুখে ওদের দিকে তাকাই। মামী পর্যন্ত ঠোঁট টিপে হাসছে। ওরা হাসি সামলে খেতে বলে। আমি গাট হয়ে বসে থাকি। ওরা এখনো মজা করছে! সিরিয়াসলি? খাব না আজকে আমি। ওরা খাওয়া শেষ করল। আমি তবু বসে রইলাম। নানা নিজের খাওয়া শেষে উঠে আসেন। মাথায় হাত বোলান, “খাও নানু। আমি কালকে কথা বলতে যাব!”
গাল ফোলাই। অসহায় চোখে নানুর দিকে তাকাই, “আমি আজকেই বিয়ে করব।”
কান্না থেমে গেছিল। আবার গড়িয়ে পরতে থাকল। নানা সস্নেহে চোখের পানি মুছে দেন। স্নেহকোমল কণ্ঠে বলেন, “আরে আমার নানাভাই কাঁদছে কেন? তুমি না খেলে আমার খাবার হজম হবে? বুড়ো নানা কষ্ট পাবে না?”
নাক টেনে বলি, “নানা আমি এখনো ছোট নাই।”
“ও তাই তো। আমার নানা বড় হয়ে গেছে। আমি এক্ষুনি তোমার মামাকে নিয়ে তিনতলায় যাচ্ছি। তুমি খাও।”
“সত্যি তো?”
মামা হাসেন, “হ্যা রে বাপ। তুই খা এখন।”
“আমি বিশ্বাস করি না। তোমরা আগে বেরোও পরে বুঝব সত্যি।”
সাদ আর তিয়াস ভাইয়াকে সত্যিই কাজি খুজতে পাঠানো হলো। নানারা গেলেন শাফি ভাইয়ের বাসায়। ভয়ে তীব্র গতিতে বুক ধুকপুক করছে। ভাবলাম নিসাকে ফোন করি। টেনশন মুক্ত হব। সব শুনে নিসার গগনবিদারী চিৎকার। চেঁচিয়ে কিসব বলল। বুঝলাম না। শুধু এটুকু কানে এল, “মা’কে নিয়ে আসছি। আমাকে ছাড়া বিয়ে করবি না খবরদার!” ভেবলা বনে গেলাম।
তখন থেকে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে। আপু, মামী একের পর এক শাড়ি আনছে। গায়ের ওপর রাখছে। একটা হয়ত আপুর পছন্দ হলো। মামীর হয় না। মামীর হলে আপুর হয় না। একটায় রেনু খালার আপত্তি। মাঝখানে ওদের পছন্দের যাতাকলে আমি ছিবড়ে হই। শাড়ি শেষ পর্যন্ত পছন্দ হলো। এবার সাজা। ওদের সাথে নতুন উদ্যোক্তা যুক্ত হয়েছে। নিসা আর আন্টি। মামী শাড়ি পড়ায়। জ্ঞান দেয়। নিসা আর আপু সাজার কারবারে ব্যস্ত। জোরালো আলোচনা চলছে। ত্যক্ত হয়ে বললাম ব্রাইডাল সাজতে হবে না। সাদামাটা বিয়ে। সাজও সাদামাটাই হোক। নিসা কঠিন চোখে তাকায়, “তুই কিছু বুঝিস?”
তীর্যক চোখে নিসার দিকে তাকালাম, “ভাব নিচ্ছিস যেন একশটা বিয়ে করে ফেলেছিস! এক্সপেরিয়েন্স অনেক।”
নিসা ভেবাচেকা খেয়ে যায়। মুহূর্তে রূপ পালটায়। বিজ্ঞের ভাব নেয়, বলে, “দেখেছি। এসবে দেখলেই চলে!”
তখন বাজছে দশটা। খোদা মালুম আমার দুই ভাই কোথা থেকে কাজি জোগাড় করেছে! সাজানো শেষ। নিসা সামনে চোখ বড় বড় করে বসে। দুহাত গালে রাখা। মুহূর্ত পর পর বলছে, “আই কান্ট বিলিভ! তোর বিয়ে হয়ে যাচ্ছে!”
রুমে আর কেউ নেই। বিয়ে ব্যাপারটা যতটা সহজ ভেবেছিলাম দেখছি ততটাই জটিল। এখন আমার ভয় করছে। পেটের ভেতর গুড়্গুড় করছে। মনে হচ্ছে টাইম মেশিনে কিছু সময় পিছিয়ে যাই। পাগলামি জেদটা না ধরি।
বসার ঘরে যখন আনা হলো। জিসান ভাইয়ের দিকে একবার আড়চোখে তাকালাম। তিনি শক্ত হয়ে বসে আছেন। অনুভূতিশূন্য পুতুল যেন। চোখ পিটপিট করে তাকালেন। চোখে মুখের অভিব্যক্তিতে অবিশ্বাস। আশপাশের কণ্ঠ শুনে চমকে আশপাশে তাকাই। এত রাতেও নেহা আপুরা এসে হাজির। জিসান ভাইয়ের কিছু বন্ধু এসেছে। ইফাজও। অবাক হলাম। ও ক্লিষ্ট হাসল। দৃষ্টি ঘুরে আবার জিসান ভাইয়ের ওপর পরে। উনার চোখে তখনও অবিশ্বাস। তিনি একদৃষ্টে তাকিয়ে। কাজি বিয়ে পড়ানো শুরু করেন।
বিয়ে শেষে চারপাশে হৈ হুল্লোড় পরল। নেহা আপু যখন সামনে এল লজ্জায় গুটিয়ে গেলাম। আপু খিলখিলিয়ে হাসে। আমার দু গাল টেনে দেয়, বলে, “কি পিচ্চি শেষমেশ বাইপাস ধরলা! আমার আগেই বিয়ে করে ফেললা! আচ্ছা তুমি আমার বিয়েতে কনেপক্ষ হবা না বর?” বিয়েটা উত্তেজনায়, ভয়ে সম্পূর্ণ মাথার ওপর দিয়ে গেছে। এতো অল্প সময়ে আমাদের বিয়ে হয়ে গেল? চিন্তায় আপুর মশকরা ধরতে পারি না। নিরুত্তর তাকিয়ে থাকি। তিনি সবার দৃষ্টির অগোচরে একসময় হাত চেপে ধরেন। বিস্মিত হয়ে তাকাই।
“তুই সত্যিই আজকে আমার হলি?”
~চলবে
[সত্যিই প্যাচ দিতে পারলে প্যাচ দিয়া উল্টায় দিতাম।