#আমার_মনপাখি
#পলি_আনান
#পর্ব -৩
যখনি রাইফা ভাবছে
“দূর আহাদ ভাই সুন্দর হয়েছে তাতে আমার কি,, আমার তো আহাদ ভাইয়ের বন্ধুকে চাই”
তখনি আহাদ গাড়ি থেকে এগিয়ে আসে সবার কাছে,,মিসেস হাবিবা এবং মিসেস ডালিয়াকে পা ছুয়ে সালাম করে।আহাদের আচরন দেখে অবাক হয়ে যায় মিসেস ডালিয়া।তিনি ভেবেছিলেন হয়তো আহাদ বিদেশে থেকে, বিদেশি সংস্কৃতি রপ্ত করবে।দেশের সব সংস্কৃতি ভুলে যাবে।কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে আহাদ সবার সাথে কুশল বিনিময়ে করে।শিহাব ও সবাইকে কুশল বিনিময় করে।আহাদ রাইসাকে জড়িয়ে ধরে।
“কেমন আছ রাইসু বেবি “(রাইসার গালে হাত দিয়ে)
“অনেক ভালো ভাইয়া, তুমি কেমন আছ।
” হুম ভালো, তবে তোকে দেখে অনেক ভালো হয়ে গেছি।
তাদের কথার মাঝে শিহাব বলে উঠলো
“আহাদ ও বুঝি তোর শায়ায়া””
এইটুকু বলতেই আহাদ, শিহাবের দিকে চোখ গরম করে তাকায়। যার ফলে শিহাব আহাদের ইশারা বুঝতে পেরে চুপ হয়ে যায়।
আহাদের চোখের ইশারা কেউ খেয়াল না করলেও রাইসা খেয়াল করে। এমন অবস্থা দেখে রাইসা মুচকি মুচকি হাসছে।
রাইফা ভাবলো এই সুযোগ শিহাবের নাম জানা যাবে,কথা বলা যাবে। আহাদ মায়াভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাইফার দিকে।কিন্তু রাফার তো সেদিকে কোন খেয়াল নেই, সে আছে শিহাবের দিকে তাকিয়ে । রাইফার দৃষ্টি বুঝতে পারে আহাদ।সাথে সাথে তার রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে আসে তার।রাইফার যে ভাবা সেই কাজ, রাইফা যেই শিহাবের দিকে তাকিয়ে কথা বলতে যাবে ঠিক সেই মুহুর্তে আহাদ সবার উদ্দেশ্যে বলে,
“আর কতক্ষন দাড়করিয়ে রাখবে আমাদের, এবার তো ঘরে যেতে দাও”
আহাদের কথা শুনে মিসেস হাবিবা তাড়াতাড়ি করে ঘরে নিয়ে গেলেন সবাইকে ।
রাইফার রাগে নিজের মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে।এতো সুন্দর সু্যোগে থেকেও সে শিহাবের সাথে কথা বলতে পারলোনা।
“কিরে আপু দাঁড়িয়ে আছিস কেন চল”
রাইসার কথায় ধ্যান ভাঙ্গে রাইফার।
“তুই যানা আমি আসছি” (বিরক্ত হয়ে)
রাইসা চলে যায় আর রাইফা ভাবছে কিভাবে শিহাবের সাথে কথা বলা যায়।রাইফা বাড়ির ভিতরে প্রবেশ করতেই।দেখে
সবাই আহাদ আর শিহাবকে নিয়ে ব্যাস্ত।রাইফার এসব দেখে গা জ্বলে উঠলো।
“আসছে এই আহাদ আমার সব ভালোবাসা কেড়ে নিতে দূর ভাল্লাগেনা।অবশ্য একটা ভালো কাজ করেছে আসার সময় ওই হিরোটাকে নিয়ে এসেছে”
রাইফা এই সব ভাবছে মনে মনে, এমন সময় রাইফাকে মিসেস হাবিবা ডাকদিল।
“রাইফা মা এদিকে আয় অনেক কাজ হাতে। মামনিকে একটু সাহায্যে কর””
“আসছি মামনি”
রাইফা কিচেনে চলে যায়।আসার পর থেকে আহাদ রাইফাকে খেয়াল করছে, রাইফার যেন কোন আগ্রহ নেই তার প্রতি,সঙ্গোপনে একটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে আহাদ।
“বাবা আমাদের নিজ নিজ ঘর দেখিয়ে দেও” (সোফা থেকে দাড়াতে দাড়াতে আহাদ)
“হুম তোমরা তোমাদের ঘরে যাও,ফ্রেশ হয়ে নাও,সামাদ তোর ভাইয়াদের ঘর দেখিয়ে দে” (সামাদের উদ্দেশ্যে বলে উঠলো ওয়াহিদ চৌধুরী )
আহাদ উপরে চলে যায় এবং যাওয়ার আগে বলে যেন তাদের জন্য কফি দিয়ে যায়।শিহাবের টা আগে দিতে, শিহাব কফি খেয়ে ফ্রেশ হবে।আহাদের টা পরে দিলেও চলবে।
🍁🍁
এদিকে রাইফা কিচেনে বসে ভাবছে,
“আহাদ ভাইয়ের আবার কি হলো, আমার সাথে একটুও কথা বললো না। দুমাস আগেও তার সাথে মেসেজ এ কথা হয়েছে।কিন্তু দেশে এসে কি হলো?”
এমন সময় রাইফার ফোনে কল আসে। রাইফা ফোনের স্কিনের দিকে তাকিয়ে দেখলো “আশিক” নামটি ভেসে উঠলো।
” দূর এই হতচ্ছাড়া আবার ফোন দিল কেন না কেটে দি”
রাইফা কলটি কেটে দিল। কিন্তু বারবার ফোন এসেই যাচ্ছে। রাইফা বিরক্ত হয়ে ফোনটা রিসিভ করলো
“” এই কি হয়েছে এতো বার ফোন দিচ্ছ কেন ”
“বেবি কি হয়েছে, তুমি আমার ফোন কেটে দিচ্ছ কেন ” (ফোনের ওপর পাশ থেকে আশিক)
“আশিক তোমার সাথে আমার ব্রেকাপ, আজ থেকে তুমি আমার সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করবে না”
এই কথা বলেই রাইফা ফোন কেটে দিল আর নাম্বারটা ব্লক করে দিল।
এমন সময় কিচেন থেকে মিসেস হাবিবা রাইফাকে ডাকলেন। রাইফা কিচেনে যেতেই মিসেস হাবিবা রাইফার হাতে কফি মগটা দিয়ে বললেন,
“যাতো মা আহাদকে কফিটা দিয়ে আয়,আহাদের বন্ধুর কফিটা শেলিকে দিয়ে পাঠিয়েছি তুই আহাদের টা দিয়ে
আয়। ”
মিসেস হাবিবার কথা মোটেই রাইফার পছন্দ হলো না।
“দূর আহাদ ভাইয়ের বন্ধুর কফিটা আমি দিয়ে আসলে কি হতো” (বিড়বিড় করে)
“কি বিড়বিড় করচ্ছিস যানা মা কফিটা দিয়ে আয়”
“আ,,,,,আচ্ছা যাচ্ছি”
রাইফা কফি হাতে আহাদের রুমে প্রবেশ করলো।রাইফা পুরো রুমটায় একবার চোখ বুলিয়ে নিল।কিন্তু রুমে আহাদের দেখা পেলনা।সে বারান্দায় যাওয়ার জন্য পা বাড়াতেই খট করে একটা শব্দ হলো।পেছনে ঘুরে দেখলো আহাদ ওয়াশ রুম থেকে বের হয়েছে।
“একি তুই এখানে”
“আপনার কফি এনেছি আহাদ ভাই”
রাইফার মুখে ভাই শব্দটা শুনে আহাদের মুখের রং পালটে যায়।ভাই শব্দটা যেন এই মুহূর্তে তার কাছে বড্ড বাজে এবং বিরক্ত কর শব্দ। নিজের রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে পাচ্ছেনা আহাদ।ইচ্ছে করছে দুটো চড় রাইফার গালে বসিয়ে দিতে।
“কফি দেওয়া হলে এবার যা” (গম্ভির কন্ঠে)
আহাদের কথা রাইফার পছন্দ হয়নি।সে বিড়বিড় করে বলে “বিরক্ত কর একটা মানুষ,ছোট থেকেই নিজের ইচ্ছা গুলো আন্যর ঘারে চাপাবে,এই দশ বছর শান্তিতে ছিলাম, দূর ভাল্লাগেনা ”
“এই কি বিড়বিড় করছিস তুই” (ভ্রু কুচকে)
“ন্না,,না কিছুনা।
রাইফার অবস্থা দেখে আহাদ মনে মনে বললো,
” তুমি যে আমাকে বকছো তা আমি ভালো করেই বুঝতে পারছি।
“কি হলো দাড়িয়ে আছিস কেন যা এখান থেকে (ধমক দিয়ে আহাদ)
“না এখন যাওয়া যাবে না,এই একটা সুযোগ আহাদ ভাইয়ের থেকে ওনার বন্ধু সম্পর্কে যানা।হয়তো আহাদ ভাই আমার লাইন ক্লিয়ার করতে সাহায্যে করবে।”(মনে মনে)
রাইফা নিজ মনে এইসব ভাবছে কিন্তু তার দিকে যে মুগ্ধ দৃষ্টিতে দুটো চোখ তাকিয়ে আছে তার কোন খেয়াল নেই। এইবার সবচে বড় ভুলটা করে বসলো রাইফা।সে আহাদের একটু সামনে গিয়ে বললো,,
” আহাদ ভাই আমাকে একটা ব্যাপারে সাহায্য করতে পারবেন,প্লিজ করেন না আপনি যা বলবেন আমি তাই করবো।”
“বল কি হেল্প চাই”
“আহাদ ভাই আপনার বন্ধুর সাথে আমার লাইনটা ক্লিয়ার করে দেন না।আমি প্রমিস করছি আপনার প্রেমিকার সাথে আমি আপনার বিয়ে ঠিক করিয়ে দিব।আপনি শুধু আমারটায় সাহায্যে করুন।আপনার বন্ধুটাকে আমার ভিষন পছন্দ হয়েছে।প্লিজ ভাই প্লিজ(উত্তেজিত হয়ে)”
এই একটা কথা আহাদের মনের আগুন, মাথার আগুন সব জ্বালিয়ে দিয়েছে।সে নিজেকে কিছুতে সামলাতে পারছে না।তার মন চাইছে রাইফাকে জিবন্ত কবর দিতে।তবুও নিজের হাত মুষ্টি বদ্ধ করে,দাতে দাত চেপে রাগ নিয়ন্ত্রণ করছে।
“তুই এখান থেকে যা রাইফা,আর যদি এক মিনিট এখানে থাকিস আমি কি করবো নিজেও যানি না” (দুই আঙ্গুল দিয়ে কপাল বুলাতে বুলাতে)
আহাদ এতোটা রেগেছে অথচ রাইফার কোন হেলদোল নেই,সে যাওয়ার আগে বললো,
“আমার কাজে সাহায্যে না করলে আপনি জিবনে আপনার মনের মানুষকে পাবেন না, দেখে নিয়েন।
এই কথা বলে যেই দরজা থেকে বের হবে পেছন থেকে আহাদ তাকে হেচকা টান দিয়ে দেয়ালের সাথে চেপে ধরে। (বাকিটা তো জানেনি)
🍁🍁🍁🍁🍁(বর্তমান)
রাইফা আহাদের কথা গুলো ভাবছে।আহাদ যেন তাকে শান্ত – শিষ্ট ভাবে হুমকি দিয়েছে।তা সে বেশ ভালো করেই বুঝতে পারছে।
” আহাদ ভাই এমন করলো কেন।উনি কখন আমার ভালো দেখতে পারেনা”(আনমনে)
এসব ভাবতে ভাবতে হঠাৎ কারো সাথে ধক্কা খায় রাইফা,
সামনে তাকিয়ে দেখে,,,,৷
#আমার_মনপাখ
#পলি_আনান
#পর্ব ৪
রাইফা কথা গুলো ভাবছে আর আনমনে হাটছে। ঠিক তখনি সে কারো সাথে ধাক্কা খায়।রেগে সামনের মানুষটির দিকে তাকিয়ে দেখে সামাদ দাঁড়িয়ে আছে।হাতে মোবাইল নিয়ে,কারো সাথে সে কথা বলছে।
“এই তুই চোখে দেখিস না।ধাক্কা মারলি কেন।(চোখ গরম করে)
” সরি আপু দেখিনি”(ফোনটা পেছনে লুকিয়ে)
রাইফা খেয়াল করে সামাদ তার ফোনটা পেছনে লুকিয়েছে।তাই সে সুযোগ বুঝে কোপটা মারে।
“আচ্ছা সামাদ তুই কোন ক্লাসে পড়িস”?
” আপু তুমি তো জানো আমি এবার এসএসসি দিব,কেন বলতো”(অবাক হয়ে)
“আচ্ছা, তোর বাবা,মানে আমার ছোট বাবা,আর মামনি যদি যানে তুই এই বয়সে প্রেম করছিস।তাহলে কেমন হবে বলতো।
রাইফার কথা শুনে আহাদ একবার ঢোক গিলে।
” ক,,,,,কে,,, বলেছে আপু আমি প্রেম করি,।মিথ্যা বলো কেন”(কিছুটা সাহস নিয়ে)
“আমি মিথ্যা বলি তাইনা, তুই পাশের বাড়ির প্রেমার সাথে প্রেম করিস আর আমি জানবোনা।
তার থেকেও বড় কথা আমার কাছে প্রমান আছে, তুই তোদের ছাদ থেকে প্রেমাকে ফ্লাইং কিস দিচ্ছিলি,আমি তা ভিডিও করেছি।” ( বাকা হাসি দিয়ে)
রাইফার কথায় এবার পুরোপুরি ভয় পেয়েযায় সামাদ।সে বুঝতে পারছে রাইফা তার কাছ থেকে কিছু চায়।না হলে ফ্লাইং কিস দিয়েছে দুই সাপ্তাহ আগে, এখন কেন কথা তুলছে।
“তুমি কি চাও আপু বলো, আমি সব করবো।শুধু কাউকে কিচ্ছু বলিয়না।”
“এইতো গুড বয় ” আচ্ছা শোন আহাদ ভাইয়ের বন্ধুর নাম কিরে।”
“ও এই ব্যাপার, ওনার নামতো শিহাব।
নাম শুনেই রাইফার মন ভরে যায়।
“আচ্ছা তুই যা এখন,আর শোন কাউকে কিচ্ছু বলবিনা”
“না আপু, কাউকে বলবোনা”
“হুম যা”
সামাদ চলে যায়। রাইফা শিহাবের নামটা টেনে উচ্চারণ করে,,
“শিইইইইইইইইইইইইই হায়ায়ায়া ব”বাহ!নামটা তো কি সুন্দর। রাইফা খুশিতে নাচতে নাচতে সিডি দিয়ে নেমেযায়।
🍁🍁🍁🍁
আহাদ দাড়িয়ে আছে বারান্দায়। এমন সময় কেউ তার দরজা নক করে।আহাদ তাড়াতাড়ি গিয়ে দরজাটা খুলে দেয়।
” কিরে শিহাব তোর আসতে এতক্ষন লাগলো কেন”
“এই তো চলে এসেছি।বল কি বলবি।
আহাদ শিহাবকে কিছু না বলেই বেডের একপাশে বসে কপালে হাত দিয়ে মাথা নিচু করে আছে।আহাদের এমন অবস্থা দেখে শিহাব কিছুটা ঘাবড়ে যায়।শিহাব আহাদের কাছে এগিয়ে আসে।
” আহাদ কি হয়েছে বলনা আমায়,”
“……………………………..(মাথা নিচু করে আছে)
” আরে ভাই বলনা,আগে বল ভাবি কিছু বলেছে”
আহাদ এবার মাথাটা উচু করে তাকায় শিহাবের দিকে।তার চোখগুলো লাল হয়ে আছে।নেএবারি চিকচিক করছে।যেন এখনি টুপ করে চোখের কার্নিশ বেয়ে গড়িয়ে পড়বে নোনা জল।
আহাদের এমন অবস্থা আর দেখেনি শিহাব।বিদেশে থাকাকালিন দুই বন্ধু একসাথে সবসময় থাকতো।শিহাব আহাদকে হাসতে দেখেছে,রাগতে দেখেছে, অভিমান করতে দেখেছে কিন্তু কখনো এমন পরিস্তিতে দেখেনি।
শিহাব জড়িয়ে ধরে আহাদকে।
“কি হয়েছে আহাদ বলনা,কেউ কিছু বলেছে”
“কার অপেক্ষায় ছিলাম আমি শিহাব,কার আপেক্ষায় ছিলাম,তার মনে আমার জন্য বিন্দুমাএ অনুভূতি জমা নেই”(বিড়বিড় করে)
” কি হয়েছে আমায় বল না আহাদ”
“রাইফা আমার কাছে এসেছিল সে বলেছে তোকে নাকি তার পছন্দ হয়েছে।আমি যেন তোদের লাইনটা ঠিক করে দি।এটা কোন কথা,একবার দেখেই সে তোকে পছন্দ করে বসে আছে।আর আমি, আমার অনুভূতির মূল্য আগেও দেয়নি,আর এখন না” (কাপা কাপা কন্ঠে, চুল টানতে টানতে)
শিহাব কিছুক্ষন আহাদের দিকে তাকিয়ে থাকে।শিহাব এবার আহাদকে অবাক করে দিয়ে অট্ট হাসিতে ফেটে পড়ে।পুরো রুম জুড়ে তার হাসির প্রতিধ্বনি সৃষ্টি হচ্ছে।হাসতে হাসতে তার চোখে পানি চলে এসেছে।আহাদ অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে শিহাবের দিকে।
“তুই হাসছিস কেন শিহাব,আমি কি তোকে হাসির কিছু বলেছি”(রেগে)
“তা নয় ত কি আহাদ তুই ভাবলি কি করে রাইফা বল্লেই আমি ওর প্রেমে পড়ে যাবো।আর তোর মতো একটা ছেলে সামান্য একথা শুনেই চোখ, মুখের দশা পালটে পেলেছে।আমি ভাবতেই পারছিনা,তুই আমার আগের বন্ধু।
আবার হাসতে লাগলো শিহাব।
” তুই থামতো শিহাব,কি করতে হবে আমাকে বুদ্ধি দে।আমার মাথা কাজ করছেনা।”
“আচ্ছা শুন তোর শালি মানে রাইসাতো তোর পক্ষেই তাইনা”
“হুম,আরে রাইসা একটু আগে বলেছে তোকে দেখার পর নাকি রাইফা চলমান বিএফ দুইটার সাথে ব্রেকাপ করছে।তুই ভাব তোর প্রতি সে কতটা আসক্ত।”
“আমি কি এতো খারাপ যে আমার কলিজা বন্ধুর হবু বউয়ের দিকে নজর দিব।দেখবি রাইফা একদিন তোর প্রতি সবচে বেশি আসক্ত হবে।তুই চিন্তা করিস না আমি ওর থেকে দূরে দূরে থাকবো।দরকার হলে ইউএস ফিরে যাব।
” শিহাব (ধমক দিয়ে) তুই কি ভেবেছিস আমি তোকে সন্দেহ করছি,আমি ওই পাগল রাইফার কথা ভাবছি,সে তোকে পাওয়ার জন্য যদি পাগলামি শুরু করে দেয়।
“আরে আমারে ধমকাস কা, শুন আমি এমন কথা বলবো দেখবি, সে আমার ছায়া দেখলেও পালাবে।আর ও আমাকে পাওয়ার জন্য পাগলামি করলে তুই ও করতে পারবিনা ওকে পাওয়ার জন্য।ভাই চিল কর,এতো চিন্তা করিসনা।কত বছর পর দেশে আসলাম কই একটু ঘুরবো তানা তুই কি না,,,,,আচ্ছা থাক,,,,,,,,,আর আমরা তিনজন মিলে সব ব্যবস্থা করবো,চিন্তা করিস না”
“হুম,নিচে চল”
🍁🍁🍁🍁
নিচে সোফায় বসে আছে রাইফা।মনের সুখে আপেল খাচ্ছে আর শিহাবকে নিয়ে সপ্ন দেখছে।
“শিহাব ছেলেটা কও সুন্দর। আগেজে কেন ওর দেখা পেলাম না””
এমন সময় আগমন ঘটে রাইসার,।সে দেখে রাইফা কি যেন ভাবছে।
“আপু কি ভাবছো তুমি”?
” শিহাবকে নিয়ে ভাবছি,কি কিউট ছেলেটা”(আনমনে)
“শুন আপু মনের চোখ দিয়ে দেখলে সবাই সুন্দর। আর তোমায় না বলেছি ওর দিকে নজর দিবেনা।ও শুধু আমার”
রাইসার কথায় রেগে যায় রাইফা,,
“এই তোর লজ্জা লাগেনা হবু দুলাভাইর দিকে নজর দিস,আর যদি দেখেছি তবে চোখ দুটো গেলে দিব,,(দাতে দাত চেপে)
তাদের কথার মাঝে চলে আসে আহাদ আর শিহাব,, আহাদ বলে উঠে
” কে কার চোখ গালবে”
কারো কথার শব্দ শুনে পেছনে তাকায় রাইফা,আহাদকে দেখেই ভয়ে একটা ঢোক গিলে।কেননা রাইফার আহাদের দেওয়া শান্ত শিষ্ট হুমকিটি মনে পড়ে গেল।
“দেখনা ভাইয়া আপু আমার চোখ বলেছে গেলে দেবে।(রাইসা আহাদের কাছে গিয়ে)
” কিরে সত্যি বলেছিস(কপাল কুচকে আহাদ)
“ন্না,,,,না মানে ”
“আচ্ছা বাদদেনা আহাদ, এখানে এসেও জামেলা করবি,তার থেকে ভালো আমরা একটু আড্ডা দি”।(শিহাব)
শিহাবকে দেখে রাইফা যেন পাশের সবাইকে ভুলে গেছে,সে নেশা ভরা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।শিহাব আহাদের কানের কাছে গিয়ে ফিসফিস করে বললো।
” তুই এমন কেন আহাদ সবসময় ভয় দেখাস।একটু রোমান্টিক মুডে চলবি,তা না তুই শাসন করছিস।দেখেতো মনে হয় সত্যি সত্যি বড়ভাই ডাফার একটা। ”
শিহাবের কথা শুনে চোখ গরম করে তাকায় আহাদ।
“আচ্ছা আসো আমরা পরিচিত হই।” (শিহাব সোফায় বসতে বসতে)
রাইফা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেল,সে তাড়াতাড়ি সোফায় বসে পড়ল।একে একে আহাদ আর রাইসা ও বসলো।
প্রথমে শিহাব বলে উঠলো,
“আমি কিন্তু সবার সম্পর্কে যানি।আহাদ আমাকে সবার সম্পর্কে বলেছে।কিন্তু আমার সম্পর্কে কেউ কিছু জানোনা রাইট ”
“হুম, তাড়াতাড়ি বলুন না প্লিজ”অপেক্ষা আছি যে (উত্তেজিত হয়ে)
রাইফার এমন আচরণে অবাক হয়ে যায় বাকি তিনজন।রাইফার এমন আচরনে রাগ সামলাতে পারচ্ছেনা আহাদ।শিহাব আহাদকে চোখ দিয়ে ইশারা করে যেন সে মাথা গরম না করে।
শিহাব গলাটা কেশে নিয়ে বলে উঠে,
“আমি শিহাব রহমান।আমার যখন ১০ বছর তখনি আমি ইউএস চলে যাই বাবার সাথে।আমার মা আমি যখন তিন বছর বয়স তখনি মারা যান।আমরা ইউএস সেটেল্ড হয়ে যাই।একদিন কলেজে আহাদের সাথে পরিচয় হয়।তখন থেকেই আমরা একে অপরের বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে যাই।আমার বাবা মারা যান গত তিন বছর আগে।বাবার মৃত্যুতে আমি ভেঙ্গে পড়ি।তখন আমার কলিজার ফ্রেন্ড আহাদ আমাকে সাহায্য করে।আমাকে সাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনে।বাবার ব্যবসার দেখা শুনায় ও আহাদ আমাকে সাহায্যে করে।”
তারপর কিছুটা থামে শিহাব।রাইফা মুদ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শিহাবের দিকে।শিহাব এবার সবাইকে অবাক করে দিয়ে বলে,
“আমি বিয়ে করেছি দুই বছর আগে,আমার বউ এর নাম এনি,আমার সাত মাসের একটা প্রিন্সস মেয়ে আছে যাকে আমি ভিশন ভালোবাসি।
শিহাবের কথায়, আহাদ ৪৪০ ভোল্টের শক খায়,তার মাথায় কিছুই ডুকছে না।রাইফা এই কথা শুনে সোফা থেকে দাঁড়িয়ে বলে
” what “কি বলছেন এসব”
সে যখন বুঝতে পারে সবাই তার দিকে অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।তখন পরিস্তিতি সামাল দিতে বলে,
“না মানে আপনাকে দেখে বুঝা যায় না আরকি”
এবার মাথায় হাত দিয়ে নিচের দিকে তাকিয়ে কিযেন বিড়বিড় করছে।রাইসার কোন হেলদোল নেই সে সাভাবিক। তবে আহাদ এখনো বোকার মতো তাকিয়ে আছে শিহাবের দিকে।
শিহাব বুঝতে পারছে আহাদ তার কথা গুলো বলার কারন বুঝেনি। তাই সে আহাদকে চোখ মারে।এবার শিহাব বলে উঠলো
” আর কিছু জানতে চান,রাইফা”
“ন্না,,না কি আর জানবো আপনি আপনার বউ বাচ্চা নিয়ে শুখি হন”
আর কোন কথা না বলেই রাইফা নিজের বাসায় চলে গেল।এদিকে আহাদ,আর শিহাব হাসতে হাসতে একজনের গায়ের উপর আরেকজন পড়ছে।তাদের হাসির কারন কিছুটা বুঝেছে রাইসা।তবুও আবার প্রশ্ন করে,
“জিজু হাসছো কেন”?
” আরে হাসছি কারন শিহাব বিবাহিত শুনে রাইফা যেন আকাশ থেকে পড়লো।কিন্তু বেচারি জানেনা শিহাব এখনো পিউর সিঙ্গেল। ”
রাইসা এবার অবাক হয়ে যায়, “আপনি বিয়ে করেন নি”
“না তবে শিগ্রই করবো”
বলেই শিহাব রাইসাকে একটা চোখে মারে। রাইসা শিহাবের কাহিনি দেখে অবাক হয়ে যায়।আর শিহাব মুচকি হেসে উপরে চলে যায়।
🍁🍁🍁🍁🍁
এদিকে রাইফা রুমে এসে ওয়াশরুমে গিয়ে মাথায় পানি ঢালছে।রাইসা রাইফার রুমে এসে দেখে রাইফা মাথায় পানি ঢালছে।
“দূর আমি কি করলাম একটা বিবাহিত ছেলেকে পছন্দ করে বসে আছি।”
“আপু আর কত মাথায় পানি ঢালবা।ঠান্ডা লেগে যাবে তো”
রাইফা ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে, বেডে গিয়ে বসে পড়ে।
“রাইসা আমি একটা বিবাহিত ছেলের জন্য, আগের বয়ফ্রেন্ড গুলো ছেড়ে দিলাম,এখন কি করবো বনু,””
রাইসা গিয়ে রাইফার পাশে বসে
” কি আর করবে কপাল চাপড়ায়াও, আমি যাই বুঝলে আমার না অন্নেক কাজ।
রাইসা চলে যায়, রাইফার এদিকে মন চাচ্ছে সব ভেঙ্গে চুড়ে দিতে।
রাগে হনহন করতে করতে বারান্দায় যায় রাইফা।
পাশের বারান্দায় তাকিয়ে দেখে,,,,,,,
চলবে,,,,,,,
(0/