নিশ্চুপ_ভালোবাসা পর্ব ২+৩

গল্পের নামঃ-#নিশ্চুপ_ভালোবাসা💕💕
writer:- ||আইদা ইসলাম কনিকা ||
পর্বঃ০২ + ০৩
সেদিন আধার, মিম আর মারিয়া বাসায় চলে আসে। এসে দেখে আধারের মা রান্না ঘরে রান্না করছে আর আয়রা তার বাবার সাথে কথা বলছে। আধার নিজের রুমে চলে যায় আর তার সাথে মিম,মারিয়াও নিজেদের রুমে গিয়ে তিনজনই ফ্রেশ হয়ে নিচে আসে।তারপর আধার তার বাবার সাথে কিছু সময় কথা বলে ফোনটা রেখে দেয়। আধারের মা রান্না শেষ করে ওদের খেতে ডাকে, ওরা সবাই একসাথে যায়, খাওয়ার সময় আধারের মা বলে

—-তোদের ভার্সিটির প্রথম দিন কেমন কাটলো? মিম কিছু বলতে যাবে তার আগেই আধার বলে

—-মাম্মা ভালোই কেটেছে, যাই হোক খাবারের সময় কোনো কথা না, সবাই নিজের খাবারের মনযোগ দাও।আর মাম্মা তুমিও বস।

তারপর সবাই একসাথে খেতে বসে। খাওয়া শেষে আধার নিজের রুমে চলে যায়, মিম আর মারিয়া অনেক ক্লান্ত তাই তারাও নিজেদের রুমে চলে যায়। আধারদের বাসাটা মুটামুটি বেশ বড়। আধার গিয়ে ঘুম দেয় বিকালের দিকে আধার ঘুম থেকে জেগে হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর একটা বই নিয়ে বসে। বইটির নাম দেয়াল। আধার বইটা পড়ছে। বইটির প্রথম আখ্যানে রয়েছে অবন্তি নামে এক তরুনির। যে ঢাকা শহরে নিজের পিতামহের সাথে থাকে। তার দাদা কিছুটা রক্ষনশীল মানসিকতার। তিনি সব সময় অবন্তিকে নজরদারিতে রাখেন, অবন্তির মায়ের চিঠি লুকিয়ে পড়েন , অবন্তির গৃহ শিক্ষকের উপরেও নজরদারি করেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তারা ঢাকা শহর থেকে পালিয়ে যায়, আশ্রয় নেয় এক পীরের বাসায়। পাকিস্তানি হানাদারদের হাত থাকে অবন্তিকে রক্ষা করতে পীর নিজের ছেলের সাথে অবন্তির বিয়ে দেন…অবন্তির আকস্মিক ভাবে ঘটতে থাকা ঘটনাগুলো মেনে নিতে কিছুটা সমস্যা হয় শুরু হয় জটিলতা। তখনই মিম আর মারিয়া আসে হাতে কফি। রুমে ঢুকে তারা দরজা লাগিয়ে দেয়। আর আধারের দিকে কফির মগটা এগিয়ে দেয় আধার, বইটা রেখে চশমাটা খুলে, কফির মগটা হাতে নিয়ে বলে
—-কারো রুমে আসলে যে নক করতে হয় সেটা কি তোরা জানিসনা? মিম বলে

—-ঐ ছ্যামড়ি চুপ,এখন এইটা বল তখন আদ্রিয়ান ভাইয়াকে কি বললি? আধার ভ্রু-কুচকে বলে

—-তোরা কি করে জানিস উনার নাম আদ্রিয়ান? মারিয়া বলে

—ঐ মৌমাছি না নাম ধরে ডাকলো, আর সবাই আদ্রিয়ান ভাইয়া আসছে বলে সাইড হয়ে দাড়িয়ে ছিল। আধার বলে

—-ওহহহ। মিম বলে

—ওহহ না বলে এটা বল আদ্রিয়ান ভাইয়াকে কি বললি,আর তুই এমন চুপচাপ ছিলি কেনো? কোনো উত্তরই দিলি না ঐ মৌমাছির কথার। আধার বলে

—-সব কথার জবাব দিতে নেই, সময়ই বলে দেয় কে কেমন, আর আদ্রিয়ানকে ধন্যবাদ দিতে গিয়েছিলাম, কিন্তু সে এটিটিউড নিয়ে বলে এটা তার কর্তব্য আমি তাও ধ্যনবাদ দিলে সে বলে এখন যাও মনে হচ্ছিল আমার সাথে কথা বলে আমার উপরে দয়া করছে। মিম মারিয়া একে অপরের দিকে তাকিয়ে বলে

— তাই তুই এভাবে রেগে চলে আসছিলি? আধার বলে

—হুমম, আর তোরা মাম্মা কে কি বলতে যাচ্ছিলি আজকে ভার্সিটিতে কি হয়েছে, কিছু বললে কাচা মরিচ খায়িয়ে সাহারা মরুভূমিতে পাঠাবো। মিম বলে

—আচ্ছা বাবা না বললাম, ওকে তুই পড় আমরা যাই।

আধারা কফির মগে চুমুক দিতে দিতে তার বারান্দার সামনে যায়। সেখান গিয়ে দেখে পরপর ১২ টা বাইক রাইডার বাইক নিয়ে বসে আছে মাথায় হেলমেট, বাইক গুলোর মাঝে ২টা বাইক আধারের চেনা চেনা লাগছে কিন্তু কোথায় দেখেছে মনে পড়ছে না। আধার খেয়াল করে দেখে একটা রাইডার তার বারান্দার দিকেই তাকিয়ে আছে, আধার সেটা দেখে নিজের রুমে চলে যায় আর বই নিয়ে বসে। কিছু সময় পরই সুসু করে বাইকগুলো চলে যাচ্ছে ঠিকই বুঝা যাচ্ছে।

তারপরের দিন সকালে। আধার শাওয়ার নিয়ে চুল মুছতে মুছতে বেরহচ্ছে আর গুন গুন করে গান গাইছে। পরনে তার রেড কালারের একটা শার্ট হাটু নিচ অব্দি সাথে কালো পেন্ট, ভেজা চুলে আধারকে অনেক সুন্দর লাগছে কিন্তু তার মুখে এখনো বাচ্চা বাচ্চা ছাপটা রয়েগেছে। আধার তোয়ালেটা বারান্দায় শুকাতে দিতে যায়। তারপর নিজের রুমে এসে চুলগুলো শুকিয়ে ছেড়ে দেয় আর ঠোঁটে হলাকা লিপজেল লাগিয়ে, রেড কালারের সু জুতা আর তার কালো কালারের ঘরি পরে কলেজ ব্যাগ টা নিয়ে নিচে নামে। মিম বলে

—-আমি তো দূর থেকে ভাবছিলাম আয়রা আসছে, পরে দেখি না আয়রা তো আমার পাশেই বসে আছে। মারিয়া মিম সবাই হেসে দেয়। আধার কিছু বলে না চুপচাপ চেয়ার টেনে বসে পরে, তারপর তিন বান্ধবী বেরিয়ে যায় তাদের ভার্সিটির উদ্দেশ্য আর আধারের মা বাসায় একা থেকে যায় কারণ আয়রাও চলে যায় স্কুলে (সে এবার ক্লাস টেনের পরীক্ষার্থী)। ভার্সিটি দিয়ে ঢুকার সময়। কিছু বখাটে ছেলেদের মাঝে একটা ছেলে বলে

—-পুড়াই লালপরি,। বলেই সবাই হাসাহাসি করে। আধার কিছু বলে না কারণ সে চায় না কোনো ভেজাল হোক। আর ভার্সিটিতে ঢুকার পর একটু এগিয়ে যেতেই দেখে আদ্রিয়ান, আশিক,দিহান আর তাদের বন্ধুরা বসে আছে আর নতুন মানে ফার্স্ট ইয়ারের ইস্টুডেন্ট দের রেগিং করছে। এর মানে আধারের বুঝতে বাকি রইলো না যে তাদেরও রেগিং করা হবে। তারপরও তারা আদ্রিয়ানদের পাশ কাটিয়ে চলে যেতে নিলে দিহান মারিয়ার লম্বা বেনি ধরে টান দেয়। মারিয়া চুলধরে আহ বলে পিছাতে লাগে। দিহানকে চুল ধরতে দেখে বলে

—এটা কোন ধরনের অসভ্যতামি একটু বলবেন। আধার আর মিম ও যায়। দিহান বলে

—-এখানে যে বড় ভাইয়ারা আছে তাদের সালাম না দিয়ে কোথায় যাও? লাইনে দাঁড়াও তোমাদের সাথে বুঝাপড়া আছে। মারিয়া কি কম ফাজিল সে বলে

—-দাঁড়াবো না লাইনে কি করবেন? দিহান বলে

—-তোমার লম্বা চুল গুলো কেঁচি দিয়ে গেছ করে কেটে দিব। মারিয়া বলে

—অহহহ, আপনি তাহলে নাপিত। আদ্রিয়ান পানি খাচ্ছিল আর তার সামনে আশিক দাঁড়িয়ে ছিল মারিয়ার এমন কথা শুনে আদ্রিয়ানের মুখের সব পানি গিয়ে পরে আশিকের গায়ে। আধার আর মিম এমন কাহিনি দেখে না হেসে আর পারলোনা আধারা আর মিম ফিক করে হেসে দিল, আদ্রিয়ান আর আশিক একমনে তাকিয়ে আছে তাদের দিকে, আদ্রয়িন রাগী চোখে আধারের দিকে তাকায় আধার একটু চুপ হলেও আবার হেসে দেয়। আদ্রিয়ান বলে।

—হেই ইউ মিস আধার তুমি আগে আসো তোমার রেগিং আগে করবো। তখনই মৌ মৌছারি মতো তাদের কাছে আসে, এসে বলে

—কি হচ্ছে?। আশিক বলে

—দেখলেই বুঝতে পারবি পক পক বন্ধ কর। দিহান বলে
—না আগে এই মেয়ের, এই তোমার নামকি? আদ্রিয়ান দিহানও আপত্তি করে না মারিয়া বলে

—-মারিয়া। দিহান বলে

—-ওকে তুমি গান গাইবে। মারিয়া বলে

—- ওকে। আর হিরো আলমের বাবু খাইছো গান গাইতে লাগলো

—-তুমি হলে বাবু আমি তোমার হিরো,
করলে তোমায় টেলিফোন বলবে তুমি বাবু খাইছো
ডেটিং এ যখন তুমি আমি যায় তুমি বলো না না না না,
আসতে নাকি দেরি তোমার ভালো লাগে না।
জীবনটা আমার রাখবো যে বাজি তুমি যদি একটি বার বলো,
কোন কথাটি রাখিনি আজীবন বলো
তুমি হলে বাবু আমি তোমার হিরো,
করলে তোমায় টেলিফোন বলবে তুমি বাবু খাইছো,
বাবু খাইছো, বাবু খাইছো, বাবু খাইছো। দিহান বলে

—এই চুপ চুপ, তোমাকে তো আমি পরে দেখে নিব। আর মারিয়ার এমন গান শুনে মৌ চলে যায়। এখন আদ্রিয়ান এসে দাড়ায় আধারের সামনে আর বলে

—তো রেডি তো। আধার বলে

—হুমম। আদ্রিয়ান বলে

—-তোমার এখন। তখনই আধার বলে

—তারপর? আদ্রিয়ান বলে

— সবার সামনে এমন কিছু করতে হবে যার জন্য সবাই ভয়ও পাবে + অবাকও হবে। আধার বলে

—ওকে। কিছু সময় ভাবার পর সে আদ্রিয়ানের কাছ থেকে পানির বোতলটা হাতে নেয়। আর সেটা আদ্রিয়ানের দিকে তাকিয়ে বাকা হাসি দিয়ে ছুড়ে মারে সবাই তো অবাক কিন্তু পানি আদ্রিয়ানের গায়ে লাগে না তা নিচে পরে যায়। আদ্রিয়ান চোখ বন্ধ করে অন্য দিকে মুখ ফিরে নেয়। আর মারিয়া মিম তো ভয়ে শেষ। আদ্রিয়ান চোখ খুলে বলে

—-What the hell। কি করতে যাচ্ছিলে তুমি? আধার পানির বোতল থেকে পানি খেতে খেতে বলে

—আপনি তো বললেন, তো আমি তাই করে দেখালাম,আপানর বন্ধুদের ফেশ দেখেই বুঝা যাচ্ছে তারা অবাকের শীর্ষ পর্যায়ে আর আমার ২ বান্ধবী ভেঝা বিড়াল হয়ে গেছে। তো আমার টাস্ক তো শেষ মি. আদ্রিয়ান। আদ্রিয়ান ওর ফ্রেন্ডদের দিকে তাকিয়ে দেখে হুমম ঠিকই। আদ্রিয়ান বলে

—-গুড বাট। আধার আদ্রিয়ানকে থামিয়ে বলে

—-দেখুন আপনাদের গ্রুপের লিডার আপনিই,আর কালকে আপনার নাম ডাক শুনে এতোটা তো বুঝতে পেরেছি আপনার সাথে লাগার কারো ক্ষমতা বা ইচ্ছে নেই তাই আপনাকেই বেছে নিলাম,আর আপনার নামটা অনেক বড় আদ্রিয়ান। বাট নাইছ নেম। তা এখন আমরা যেতে পারি? সবাই তো অবাক আদ্রিয়ান কিছু না বললেও তার মুখে একটা রহস্যময়ী হাসি ঠিকই আছে।আশিক কিছু সময় পর বলে

—-এই না না, তোমার সাথের মেয়েটা বাকি আছে। মিম বলে

—-আমাকে কি করতে হবে বলবেন , আমি কিন্তু মারিয়ার চেয়ে ভালো গান গাইতে পারি গাইবো নাকি? আশিক বলে

— না সেটা করতে হবে না, তা তোমার নাম কি? মিম বলে

—-আমি মিম। ওকে আমার টাস্ক শেষ। বায় বলেই হাটা দিল। আর আশিক পিছন থেকে বলে

—-নাম তোমার মিম কিন্তু তোমাকে আমি খাওয়াবো কাঁচা ডিম। মিম পিছনে ফিরে একটা ভেংচি কেটে চেলে যায়। আদ্রিয়ানের একটা বন্ধু রাতুল বলে

—-তিনটাই ডেন্ঞ্জারাস মেয়ে। বিশেষ করে আধার যেমন কিউট তেমনি তার ব্যবহার আদ্রিয়ানকে যখন পানি ছুড়ে মারে আমি যতটা না ভয় পেয়েছি তার চেয়ে বেশি অবাক হয়েছি। দিহান বলে

—-আদ্রিয়ান ব্যাপার কি, ঐ মেয়েকে তুই কিছুই বললি না কেনো? আদ্রিয়ান বলে

—-চুপ নাপিত, আর সাবাই মজা করতে লাগে। আধারের জন্য দুইজনের মনে চলছে ২ ধরনের ধারনা

চলবে

মাথা ব্যাথায় মনে হচ্ছে চোখ গুলো বেরিয়ে যাবে। ভুলত্রুটি ক্ষমার চোখে,। আল্লাহ হাফেজ 💕💕

গল্পের নামঃ-#নিশ্চুপ_ভালোবাসা💕
লেখিকাঃ- আইদা ইসলাম কনিকা
পর্বঃ-০৩

দিহান বলে
—এই আদ্রিয়ান তুই কিছু বললি না কেন ঐ মেয়েটাকে? আদ্রিয়ান বলে
—চুপ নাপিত। তারপর সবাই ব্যস্ত হয়ে যায় দিহানের সাথে মজা করতে, কিন্তু ঐদিকে আধারকে নিয়ে দুজনের মনে চলছে দুই ধরনের ধারণা, দুজনের মনে হচ্ছে তাদের মনে বাজাচ্ছে ঘন্টা কিন্তু সেটা কিসের বুঝতে টাইম লাগলো না পাশেই একটা মন্দির ছিলো সেখানকার ঘন্টার আওয়াজ এর মানে তাদের মনের ঘন্টা না।

[বিদ্রঃহিহিহি কেসা লাগা মেরা মাজাক]

আধার আর তার দুই বান্ধবীরা বসে বসে ক্লাস করছিল, তখনই স্যার কে বলে প্রবেশ করে দিহান আর আশিক। আশিকে দেখেই মিম ভেংচি কেটে অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নিল। কিন্তু আধার খুঁজছে আরেকজন কে কিন্তু তার দেখা সে পেলো না। দিহান আর আশিক এসে স্যারকে কিছু বলে তারপর চলে যায়, তার একটু বাদেই স্যার বলতে লাগে

—-ভার্সিটি থেকে টুরে যাওয়া হবে সাজেক। সবাইতো সেই খুশি কিন্তু আধারের তাতে কোন মথা ব্যথা নেই,সে দিব্যি বসে আছে নিজের মতো। একটু পরই তাদের ক্লাস ওভার হয়ে যায়। তাই তারা ঠিক করে লাইব্রেরিতে যাবে, আধার আর তার বান্ধবীরা কথা বলছে আর হাটছে ঠিক তখনই আধার কারো পায়ের সাথে বেজে পরে যেতে চাইলে কেউ তাকে ধরে ফেলে। আধার চোখ মুখ খিচে বন্ধ করে ছিল তারপর ধীরে ধীরে চোখ খুলে দেখে, আদ্রিয়ান তাকে ধরে ফেলেছে। আদ্রিয়ান আধারকে ঠিক ভাবে দাঁড় করিয়ে বলে

—-তুমি মেবি পুষ্টির অভাবে ভুগো তাই যেখানে সেখানে পরে যাও তাই না। আধার বলে

—-ওও আপনি তো অনেক বুদ্ধি মান তা এতো বুদ্ধি কোথায় রেখে ঘুমান বালিশের নিচে, আমি খেয়াল করিনি, কারো পায়ের সাথে বেজে পরে যাচ্ছিলাম, বায়দা ওয়ে ধন্যবাদ। আদ্রিয়ান আঁধারের চশমাটা খুলে হাতে নিয়ে পরিষ্কার করতে করতে বলে

—-চশমা পড়া মেয়েরা কিউট হয় কিন্তু কানা তো আসলে কানাই। বলে আধারকে চশমাটা পরাতে গেলে আধার সেটা নিয়ে বলে

—-হ্যা আমি কানা আর আপনি আমার নানা হইছে খুশি মি.আদ্রিয়ান। বলেই চলে যেতে নিলে দিহান গান ধরে মারিয়াকে দেখে

—–খারুন লো.. তোর লম্বা মাথার কেশ

হিরো আলমের গান শুনাইয়া পাগল করলি দেশ
খাইরুন লো…খারুন লো… তোর লম্বা মাথার কেশ, মারিয়া বলে

—-নাপিত ভাইয়া তা আপনার সমস্যা কি একটু বলবেন,এমন কাকের মতো কাকা করে গান গাইছেন কেন? দিহান একভ্রু নাচিয়ে বলে

—-কিছু না আমার মাইন্ড আমার যা ইচ্ছা তাই গাইবো, কোনো সমস্যা তোমার? থাকলেও আমার কিছু যায় আসে না। মারিয়া একটা হাসি দিয়ে বলে

—-হ্যা ছিল এখন নেই কারণ কিছু সময় আগ পর্যন্ত ভাবতাম যে আপনি সত্যি নাপিত কিনা কিন্তু এতো গুলো মানুষের সামনে আপনি স্বীকার করলেন আপনি নাপিত তাই আমি কনফার্ম হলাম, যাই হোক এটা বলেন চুলকাটার ব্যবসা কেমন চলছে?

দিহান বুঝতেই পারেনি মারিয়া তাকে এমন ভাবে কথার জালে ফেলবে। সবাইতো মুখ চেপে হাসছে। আধারও সেম আর সেই হাসিতে চোখ আঁটকে যায় অনেকের, আধার বলে

—ভাইয়া আজ আসি অন্য কোনো দিন আপনার সেলুনে গিয়ে আপনার সেলুনটাকেও দেখে আসবো সাথে গল্পও করে আসবো। আশিক বলো

—-তোমাকে তো চুপচাপ ভেবেছিলাম এখনতো দেখি তুমি কথার রানি। আধার মুচকি হেসে বললো

—-সবসময় সব কথার জবাব দিতে নেই। তখনই মৌ আসে, এসে বলে

—-কি হচ্ছে এখানে এত ভির কেনো? মিম তো মৌকে সহ্যই করতে পারনে তাই বলে

—-মধু সংগ্রহ হচ্ছে তা আপনি নিবেন,মধু তো মৌমাছির খুব পছন্দের তাই না? সবাই এবার জোরেই হেসে দেয়, মৌ তো রাগে শেষ বলে

—–ইউ ইস্টুপিট সাট আপ। মিম বলে

—-ডাবল সাট আপ, আমাকে আধার পেয়ছন নাকি দশটা শুনে একটা বলবো। মৌতো চুপ আশিক বলে

—-বাহ বাহ বাহ তালিয়া তালিয়া। মৌ আশিকের দিকে রাগী চোখে তাকায় কিন্তু আশিক ডোন্ট কেয়ার ভাব নেয়, যার মানে তার কিছু যায় আসে না।

আদ্রিয়ান পরিস্থিতি ঠান্ডা করার জন্য বলে

—-তোমরা তোমাদের কাজে যাও আর মৌ তুইও যা, বলেই আদ্রিয়ান তার ফ্রেন্ডদের নিয়ে হাটা দিলো। আধার, মারিয়া, মিম লাইব্রেরি থেকে বেড়িয়ে আসে মাত্র তখনই একটা ছেলে আসে আধারের সামনে
ছেলেটা বলে

—-হায় আমি তিয়াস। নিজের হাত বাড়িয়ে দিয়ে কিন্তু আধার বলেই

—-হ্যালো আমি আধার। বলেই হাটা দিলো তিয়াসও ওদের পিছন পিছন আসছে, আধারা নিচে নেমে ভার্সিটির মাঠে চলে যায় কিন্তু তিয়াস পথ ছাড়তে নারাজ। তিয়াস পিছন থেকে ডাক দেয় বলে

—–এই আধার দাঁড়াও। আধারকে ডাকায় সবার নজর এখন তাদের দিকে। আধার বলে

—-জ্বি ভাইয়া বলুন। তিয়াস বলে

—-ভাইয়া বলো কেন? মিম বলে

—-ওকে তিয়াস কাকু,এবার ঠিক আছে? তিয়াস বলে

—-এই আমি তোমাকে কোন এঙ্গেলস থেকে কাকুর মতো লাগী? মারিয়া বলে

—আরে আরে ভুল বলছিস কেন, উনি তো আমাদের দাদু, তা দাদু ভালো আছো,এই বয়সে আমাদের পিছনে পিছনে যেই হাড়ে দৌড় দিয়েছ, ভালোই তো পারো। তিয়াশ খেপে গিয়ে বলে

—-তোমারা ২টাই ইস্টুপিট, পাগল তোমাদের সাথে কথা কেনো বলছি আমি? যাই হোক আধার তোমার নাম্বর টা দেয়া যাবে। আধারের অনেক খারাপ লাগছে তার সামনে তার বান্ধবীদের অপমান করা, সে বলে

—-হুম আমার সেভেন নাম্বার টা অনেক ভালো লাগে। তিয়াশ বলে

—সেটা না, আমি তোমার ফোন নাম্বর টা চেয়েছি

—- হুমমম অবশ্য, আই ফোন এইট প্লাস। তিয়াশ বলে

—-আরে ঐটা না আমি তোমাকে কল করবো কি ভাবে? সেটা বলছি। আধার বলে

—–আমার নাম ধরে। তিয়াশ বলে

—-ওকে ফাইন তোমার ফোনটা দাও আমি আমার নাম্বার দিয়ে দেই। আধার বলে

—-সরি আমি আমার ফিঙ্গার প্রিন্ট ভুলে গেছি বলেই হাটা দেয় আর দাঁড়ায় না। আর তিয়াশ তো বেকুব এর মতো দাড়িয়ে আছে। আর এইসব দেখে রাগ ফুসফুস করছে একজন ( সেটা কে গো? কেউ আইডিয়া করো, কিন্তু যাকে আইডিয়া করবা সে নাও হতে পারে আবার হতেও পারে) আধার মিম আর মিরায় গল্প করতে করতে আসছে, মিম বলে

— কিভাবে কথা ঘুরালি, আর তোর ফিঙ্গার প্রিন্ট তুই ভুলে গিয়েছিস। মারিয়া হাহাহাহা করে হেসেই যাচ্ছে। আধার ভার্সিটি থেকে বেড়িয়ে যাওয়ার সময় খেয়াল করে আদ্রিয়ান ওরা সবাই একসাথে বসে আছে আর গল্প করছে। কিন্তু আধার আর আদ্রিয়ানের চোখে চোখ পরলে, আধার সাথে সাথে চোখ সরিয়ে ফেলে। গেটের বাইরে যেতেই দেখে সেই বখাটে ছেলেরা। আধার কে দেখে তাদের পিছন পিছন হাটতে লাগলো আর গান ধরলো

—-চুমকি চলেছে একা পথে সঙ্গী হলে দোষ কি তাতে? একটা ছেলেতো আধারের ব্যাগ ধরেই টান দেয় আধার এবার রেগে গিয়ে ঘুরে একটা লাগায় চড় ছেলেটা গাল হাত দিয়ে আধারের দিকে রাগী দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে আর আধারকে একটা চড় বসিয়ে দেয় আধার তাল সমলাতে না পেরে নিচে পরে যায় ফলে হাতে ছিলে আর কপালের ভ্রুর দিকে অনেকটা কেটে যায়। মিম রেগে গিয়ে তেড়ে যায় নিজের জুতা হাতে নিয়ে

—-বাসায় মা বোন নাই তো, তাই না জুতার বারি খেলে রাস্তা ঘাটে আর মেয়েদের অসম্মান করবি না। মিমের চিৎকারে কেম্পাসের অনেক স্টুডেন্ট রা বাইরে চলে আসে, আর মারিয়া আধারকে ধরে বসে আছে। আদ্রিয়ান ওরা এসে বলে

—-কি হয়েছে, আধার কে দেখে বলে ওহহ তুমি আবার পরেগেছে? আধার রেগে গিয়ে উঠে দাড়িয়ে বলে

—-আপনি না জেনে কথা বলেন কেন? মেয়েদের যে ভার্সিটি বাইরে হেনস্তা করা হয় সে খবর কি আপনি জানেন না? সকালেও করেছে ইভান এখন তো আমার ব্যাগ ধরে টান দিয়েছে তাই আমি চড় দিয়েছিলাম আর সে সেটা আমাকে রিটার্ন বেক করেছে। ভার্সিটির বড় ভাইনা আপনারা আপনাদের তো এইসব জানা উচিত। ছেলেগুলো তো ভয়ে কাপছে। তখনই তিয়াশ এসে একটা ছেলেকে চড় বসিয়ে দিয়ে বলে

—-কে করেছে এমন? বল আমাকে। আধার বলে

—-ধন্যবাদ। শুনে ছিলাম বাঘের সাথে থাকলে শিয়ালের ও সাহস বেড়ে যায় তা আজ দেখেও নিলাম। বলেই আদ্রিয়ানকে একবার পা থেকে মাথা পর্যান্ত দেখে রাগে মুখ ফিরিয়ে হাটতে লাগলো। আর তিয়াশ বলে

—-এখানে যদি তোদের দেখেছি আবার ভাগ।

ছেলেগুলো দৌড়ে পালায়। আধার আর মিম ওরাও বাসে উঠে চলে যায় রুমাল দিয়ে রক্ত গুলো পরিষ্কার করছিল আধার আর চোখ টলমল করছিল রাগে। বাসায় গিয়ে সোজা নিজের রুমে চলে যায় আর সারাদিনে রুম থেকে বের হয় নি। তার মা খেতে ডাকলে

—-সে বলে তার মাথা ব্যাথা। তাই আর জোর করেনি, মারিয়া আর মিমও কিছু বলেনা নয়তো আধারের মা কান্না কাটি করতে লাগবে, কারণ আধার তার কলিজা।

অপর দিকে গোডাউনে চেয়ারে এক হাত পা বাঁধা অবস্থা বসে আছে সেই ছেলেটি আর আরেক হাত টেবিলে রেখে ছুরি দিয়ে গেম খেলছে একজন। পরনে তার কালো হুডি মুখে মাস্ক সাথে তার আরো অনেকে। ছেলেটা ভয়ে একাকার, কালো মাস্ক পরা ব্যক্তি গেমের গতি বাড়িয়ে দিলো। আর ছেলেটা ভায়ে উমম উমমম করছে। এক পর্যায়ে ছেলেটার হাতে গেথে দিল ছুরিটা সে উমমমমম করে কান্না করছে। মাস্ক পরা ব্যক্তিটা উঠে দাড়িয়ে ইচ্ছে মতো কয়েকটা চড় বসায় আর বলে

—-তুই, আধারের দিকে বাজে নজরে তাকিয়েছিস তোর চোখ আমি তুলে নিব,তুই ওকে এই হাত দিয়ে মেরে ছিলি না? বলেই হাতটা ধরে মুচড়ে ভেঙে দেয়। ছেলেটা ব্যাথায় কাতরাচ্ছে আর চিৎকার করার চেষ্টা করছে আর এইসব দেখে তার সাথে থাকা অন্য সবাই ভয়ে শেষ, কারণ এর আগে তাকে কেউ এইভাবে রাগ তে দেখে নাই। এতেও যেনো সে শান্তি পেলো না, আশেপাশে কিছু খুঁজতে লাগে পরে দেখে একটা বাশ পেয়ে সেটা নিয়ে ইচ্ছে মতো মারে সে সেই ছেলেটাকে। তারপর বলে

—-এই এটাকে সরা আমার সামনে থেকে নয়তো জানে মেরে ফেলবো বলেই পা দিয়ে দেয় আরো কিছু লাথি মারে। একজন এসে তাকে শান্ত করে ছেলেটাকে নিয়ে যায়,আর সে বলে
—আজকের পর যে আধারের দিকে তাকাবে চোখ তুলে মার্বেল খেলবো। বলেই গোডাউন থেকে বেড়িয়ে গেলো।

চলবে

এই শুনো হ্যা তোমাদেরই বলছি, তোমাদের কেই বলছি। এতো না বললা গল্প বড় করতে ঠুস করে শেষ না করে দিতে তাহলে এখন কমেন্ট কর না কেন?….গঠনমূলক কমেন্টের আশা করলাম, আর যারা এমন গল্প পর কিন্তু মন্তব্য করো না তাদের কপালে বউ/জামাই জুটবে না বলে দিলুম।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here