Happily_Married পর্ব ১২+১৩

#Happily_Married❣️
#Part_12
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida


রিয়া, কাদিস না।হিয়া এমনটা ইচ্ছে করে নি।ও নিশ্চয়ই ভুল বুঝছে।(আলেয়া বেগম)

আমি জানি আমার মেয়েটা আমাকে খুব ঘৃনা করছে।(রিয়া বেগম কাদতে কাদতে)

তোর মেয়ে?তার মানে হিয়াকেই তুই ছেড়ে চলে এসেছিলি?(আলেয়া বেগম অবাক হয়ে)

হুম।হিয়া আমার সেই মেয়ে যাকে আমি ছেড়ে চলে এসেছি।কিন্তু আমার যে আর কোনো উপায় ছিল না।(রিয়া বেগম)

কেনো ফুপি?কি এমন হয়েছে যার জন্য তোমার কাছে কোনো উপায় ছিল না!(পিয়াস এসে)

পিয়াস তুমি কখন এলে?(রিয়া)

আমার মনে হচ্ছিলো কোথাও যেনো একটা গন্ডগোল আছে।যখন থেকে তুমি হিয়া আর আলিফের বিয়ের সময় হিমেল আংকেলের ছবি দেখেছো তখন থেকেই তোমাকে কেমন জানি অস্থির লাগছিলো।(পিয়াস ভ্রু কুঁচকে)

রিয়া বেগম চুপ করে আছে।

ফুপি চুপ করে থেকো না।আমি কিন্তু সবই দেখেছি হিয়া তোমাকে দেখে কীভাবে রিয়েক্ট করছে।ওইসব কিন্তু স্বাভাবিক না।(পিয়াস)

পরেই রিয়া বেগম আর উপায়নন্ত না পেয়ে সব কথা খুলে বললো পিয়াসকে।

কিন্তু ফুপি ওদের ছেড়ে আসাই কি তোমার কাছে একটা পথ মনে হয়েছে?(পিয়াস)

তাহলে আর কি করতাম?ও আমাকে সন্দেহ করতো।ভাইয়া মারা যাওয়ার আগে থেকেই কিছু মানুষের কুনজর পড়েছিল কোম্পানিতে।তখন কেউ কারো জান নিতেও পিছু পা হতো না।তোরা তো সবাই জানিস কোম্পানির জন্যই ভাইয়া আর ভাবীকে খুন করা হয়েছিল আর খুনটা ভাইয়ার বিজনেস পার্টনাররা করেছে।তারপর তাকে অ্যাকসিডেন্ট বানিয়ে দেয়া হয়েছে।ওদের কে ধরতে আমাকে একা কাজ করতে হতো।ওরা যদি হিয়ার খোজ পেয়ে যায় তাহলে আমাকে থামাতে হিয়ার ক্ষতি করতে পারতো।তাই আমি চাইলেও হিয়াকে নিজের সাথে কোম্পানিতে নিয়ে যেতে পারতাম না।(রিয়া বেগম)

কিন্তু তুমি হিমেল আঙ্কেলকে বলতে পারতে?(পিয়াস)

হ্যা(তাচ্ছিল্য হাসি দিয়ে)তোর হিমেল আঙ্কেল এইটা কোনো দিন চাইই নি যে আমি কোম্পানিতে যাই।মেয়েদের সফলতা সহ্য করতে পারে কজন পুরুষ?উনাকে আমি এতো করে বললাম আমার সাথে প্লিজ কোম্পানিতে যোগ দাও আমি একা পেরে উঠছি না।উনি দিলো না।উনার নাকি আত্মসম্মানে লাগবে।তাই আমিও উনার কাছ থেকে কোনো সাহায্য নিলাম না।আমারও তো আত্মসম্মানে লাগবে।তাই একটাই সব কিছু সামাল দিয়েছি।(রিয়া বেগম)

এখন বুঝতে পারলাম হিয়া মনি এতো জেদী কেনো?কারণ যার মা বাবাই এতো জেদী।তাদের এক মাত্র মেয়ে তো জেদী হবেই।(পিয়াস মনে মনে)

আমি রাত করে কেনো বাসায় ফিরতাম তা নিয়ে ওর সাথে আমার ঝগড়া হতো।পিয়াস তখন ছোটো। ও রাতে একা থাকতে ভয় পেতো।ভাইয়া ভাবীর পর ওদের টার্গেট ছিলো পিয়াস ওকে এমনি একা ছাড়তে আমার ভয় হতো।যতই হোক ছোটো থেকে ওকে লালন পালন করেছি।তাই রাতে বেশিরভাগ সময়টাই ওকে দেয়ার চেষ্টা করতাম।তোর হিমেল আঙ্কেলকে বলেছিলাম যে চলো আমরা ও বাড়িতে গিয়ে থাকি কিন্তু তাতেও নাকি উনার আত্মসম্মানে লাগবে।(রিয়া বেগম রেগে)

তাহলে আমাকে তোমাদের সাথে নিয়ে রাখতে?(পিয়াস)

কেনো রাখবো?আমারও তো আত্মসম্মান আছে!ও আমার সাথে ও বাড়িতে থাকবে না, ওর আত্মসম্মানে লাগবে বলে আমিও তোকে এই বাড়িতে আনি নি আমার আত্মসম্মানে লাগবে বলে।(রিয়া বেগম)

পিয়াস মাথায় হাত দিয়ে
কেউ কারো থেকে কম না।(মনে মনে)

সেদিন হিয়ার যখন খুব জ্বর ছিলো আমি কিছুই জানতাম না।সেদিনই আমাদের ওই হত্যাকারী গুলোকে ধরার কথা ছিলো।আমি আরেক অফিসার সেখানে as a couple সেই হোটেলে যাই।সেখানে সারারাত খোজার পর ওদের ধরতে পারে তারা।আমিও তাদের সাথেই ছিলাম আমার ভাইকে যারা মেরেছে তাদের আমি নিজের হাতে ধরতে চেয়েছিলাম।এই কারণে আমার ফোনও সাইলেন্ট ছিলো আমি কিছুই বুঝতে পারিনি।যখন ওই হত্যাকারী গুলো ধরা পড়লো।আমি ফোন হাতে নিতেই হিয়ার খবর শুনতে পাই।আমি তখন ছুটে গিয়েছিলাম হসপিটালে।তারপর সব কিছু ঠিকই চলছিলো কিন্তু তারা আমাকে বিভিন্ন ভাবে প্রেসার দিতো কেস তুলে নেয়ার জন্য।এইজন্যই আমার সংসার বরবাদ করতে ওরা আমাকে বিভিন্ন ম্যাসেজ দিতো কল করতো।অনেক নম্বর দিয়ে বিরক্ত করতো,হুমকি দিতো।তোর আঙ্কেল ছিলো অনেক সাদাসিধে আমি উনাকে এইসব কিছু বলে বিরক্ত করতে চাইনি।ভেবেছি ওরা যখন কোর্টে শাস্তি পাবে তখন বলবো।যখন কোর্টে আমি জিতে যাই তখন আমি তাড়াতাড়ি বাসায় চলে আসি তোর আঙ্কেলকে যা যা হয়েছে সব বলার জন্য।কিন্তু তোর আঙ্কেল আমার হাতে ডিভোর্স পেপার ধরিয়ে দিলো।জানতেও চাইলো না কিছু।তাই আমিও বলিনি।উনি যদি ডিভোর্স নিয়ে খুশি থাকে তবে থাকুক।(রিয়া বেগম)

আবারও জেদ!তোমরা বুঝতে পারছো না তোমরা নিজেদের জেদের স্বীকার হয়েছো!একজন জেদ ধরেছে কিছু জিজ্ঞেস করবে না,আরেকজন জেদ ধরেছে কিছু বলবে না!তোমরা বুঝতে পারো নি এই জেদ তোমাদের জীবনকে ধ্বংস করে দিয়েছে।আর তোমাদের এই জেদের স্বীকার শুধু তোমরা না ওই হিয়া মনিও হয়েছে।তোমরা শুধু নিজেদের জেদটাকে দেখলে আর ওইটা আজ তোমাদের এই অবস্থায় এনে দাড় করিয়ে ছাড়লো।শুনে রাখো এইসব যদি হিয়া শুনে তাহলে তোমাদের ওর হাত থেকে কেউ রক্ষা করতে পারবে না।চাকু ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তোমাদের অবস্থা নাজেহাল করে ঝাড়বে ওই মেয়ে।কারণ ওর জীবনের যতো কষ্ট হয়েছে শুধু মাত্র তোমাদের জেদের জন্য।
বলেই পিয়াস বেরিয়ে গেলো।

রিয়া বেগম সেখানে বসে পিয়াসের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলো।


হিয়াদের বাড়িতে
সব শুনলাম বাবা কিন্তু হিয়া এখন কোথায় থাকতে পারবে আপনি জানেন?(আলিফ)

আমাদের পুরনো বাড়িতে হতে পারে!(হিমেল সাহেব)

আচ্ছা তাহলে আমি আসি।
বলেই আলিফ বেরিয়ে আসতে লাগলো তখনই পিয়া বললো,,

ভাইয়া আমিও যাই আপনার সাথে।(পিয়া)

না।তুমি এখানে আংকেলের খেয়াল রাখো।
বলেই আলিফ বের হতে যাবে তখনই দেখলো পিয়াস।

পিয়াস কিছু বলবি?(আলিফ বের হতে হতে)

হিয়াকে যে করেই হোক দুই পক্ষের কথা শুনার জন্য রাজি করা!(পিয়াস)

আমি বুঝতে পারছি।
বলেই আলিফ গাড়িতে উঠে চলে গেলো।

পিয়াস একটা দীর্ঘ শ্বাস ফেললো।


হিমেল সাহেব,পিয়াস আর পিয়া হিয়াদের বাড়িতে বসে আছে।একটু পরেই পিয়া হিয়ার রুমে গিয়ে হিয়াকে ফোন দিলো।দুইবার ফোন বেজে গেলো কেউ ধরলো না।পরেরবার রিং বাজতেই হিয়া ধরলো,,

আমি হেলো বলতেই ওপাশ থেকে কড়া গলায় পিয়া বললো,,

তোকে এখন হাতের কাছে পেলে কষে একটা থাপ্পর মারতম।(পিয়া রেগে)

কেনো?আমি কি করছি!(আমি)

তুই কি করেছিস?তুই ভাইয়ার সাথে ঝগড়া কেনো করেছিস?(পিয়া)

উনি আমাকে কষ্ট দিয়ে কথা বলেছে কেনো?(আমি)

কষ্ট?তুই জানিস কষ্ট কি?দেখ আমি আর আলিফ ভাইয়া হিমেল আংকেলের কাছ থেকে রিয়া আন্টির বেপারে সব শুনেছি।তাই এখন ওইসব বলে কিছু হবে না।(পিয়া)

উনি নাকি আমাকে সহ্য করেছে?এইটার কোনো কথা তোর কাছে হবে?(আমি)

সহ্য করেছেই তো।তুই ভাব এমন একটা দিন গেছে তুই উনার সাথে ভালো করে কথা বলেছিস।উনার জীবনে আসার পর থেকেই একটার পর একটা কান্ড করেই যাচ্ছিস।উনি কোনো দিন কিছু বলেনি।হাসি মুখে সব কিছু সহ্য করেছে।তোর সব ভুল ত্রুটি গুলো উনি ঠিক করে গেছে।কোনো কমপ্লেইন করেনি।আর আজ উনি না জেনে তোর করা কান্ডের উপর একটু কথা শুনিয়েছে বলে তুই এত রেগে আছিস উনার উপর।তাহলে ভাব তুই কি কি করেছিস উনার সাথে?উনি যদি ওইসব ধরতো তাহলে তো তোর কষ্টের সীমা থাকতো না।তুই উনার করা ভুল করে একটা ভুল ক্ষমা করতে পারছিস না,আর উনি তোর ভুলের উপর ভুল ক্ষমা করে আসছে।নিজের জেদ একটু ছাড়।ছেড়ে চোখ খুলে দেখ।না হলে পালাতে পালাতে এতো দূরে পালিয়ে যাবি যে ফিরে আসার কোনো পথ খোলা থাকবে না।আর আলিফ ভাইয়া তোকে ভালোবাসে।অন্তত উনার ভালোবাসার একটু সম্মান করিস।
বলেই পিয়া রাগে ফোনটা কেটে দিলো।

আমি ফ্লোরে ধপ করে বসে পড়লাম।কারণ পিয়ার প্রতিটা কথাই ঠিক।ভুলটা আমারই।আলিফ তো কিছুই জানতো না।না জেনে বলেছে।কিন্তু আমি তো সব জানতাম।আমি ওকে বলতে পারতাম আমার এমন করার কারণ। আলিফকে যদি আমি হারিয়ে ফেলি আমার অনেক কষ্ট হবে।দম বন্ধ হয়ে মরে যাবো আমি।এটা ভালোবাসা নাকি জানি না।


অন্যদিকে
পিয়া হিয়ার রুমে বসে কাদতে লাগলো।তখনই পিয়াস এসে ওর মাথায় হাত বুলাতে লাগলো।পিয়া পিয়াসকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগলো,,

আমি কি ঠিক করেছি হিয়াকে এতগুলো কথা বলে?হিয়া তো এমনিই কতো কিছু ফেস করেছে ।ওর মনে এতো কষ্ট ছিলো।আমি জানতেই পারলাম না।আর এখন আমি ওকে আরো কথা শুনালাম।(পিয়া কাদতে কাদতে)

পিয়াস পিয়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললো,,
তুমি একদম ঠিক করেছ।তোমার এই কথা গুলো শুনে হিয়া মনিকে একটু হলেও ভাবতে হবে ওর আর আলিফের সম্পর্কটা।আর জেদের কারণে কোনো সম্পর্ক শেষ হতে দেয়া যাবে না।বিয়ে এমন একটা সম্পর্ক যাকে কথায় কথায় ভাঙ্গা যায় না।এইটা হিয়াকেও বুঝতে হবে আর ওদের বাবা মাকেও।


অন্যদিকে
আমি হাটু মুড়ে বসে বসে কাদছি।তখনই হিয়া হিয়া বলে ডাকতে ডাকতে রুমে ঢুকলো আলিফ।

আলিফ তাকিয়েই দেখলো হিয়া কাদঁছে।এই প্রথম ওকে কাদতে দেখেছে।কাদলে ওর মুখটা অনেক মায়াবী লাগে,চোখটা অসহায় লাগে।আলিফ তাড়াতাড়ি ফ্লোরে বসে হিয়াকে জড়িয়ে ধরলো।

আলিফ আমাকে জড়িয়ে ধরতেই আমি ওকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলাম

আলিফ তুমি এসেছো?আমি ভেবেছিলাম তুমি আসবে না।তুমি রাগ করে থাকবে।(আমি কাদতে কাদতে)

আমি কি করে আমার চড়ুই পাখির উপর রাগ করে থাকবো?তুমি কাদঁছ কেনো?আমি তো তোমাকে কোনদিন কাদতে দেখিনি।তুমিও তো বলেছো বুঝ হওয়ার পর তুমি কখনও কাদো নি।তাহলে এখন কেনো কাদঁছো?(আলিফ হিয়ার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)

আমি ভেবেছিলাম তুমি আমাকে ছেড়ে চলে যাবে।তাই আপনাআপনি আমার চোখে পানি চলে আসছিল।(আমি চোখ মুছতে মুছতে)

তারমানে আমাকে হারানোর ভয়?(আলিফ খুশি হয়ে)

এতো খুশি হয়ে লাভ নেই।আমি এখনও রেগে আছি।(আমি মুখ ফুলিয়ে)

আচ্ছা তাহলে আমি স,,,
আলিফ কিছু বলতে যাবে তার আগেই আমি ওর মুখ চেপে ধরে বললাম,,
আগে আমি বলবো,,
সরি।

আলিফ মুচকি হেসে আমার কপালে চুমু দিল।


কিছুক্ষণ পর
আলিফ সোফায় বসে আছে আর আমি চুপ করে ওর কোলে শুয়ে আছি।

আমাদের এই পুরনো বাড়ি একতলার।এখানে চারটা রুম আছে।একটা বড়ো বসার ঘর সেখানেই রয়েছে খাবার টেবিল।টেবিলের পাশেই একটা ছোট্ট রুমে রয়েছে রান্নাঘর।কয়েকবছর ধরে এখানে না থাকার কারণে সব জায়গাতে ধুলাবালি জমে আছে।আমি এসে সোফাটা পরিষ্কার করেছি।কেনো জানি ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে এই বাড়িতেই আসতে ইচ্ছে করলো।তাই চলে আসলাম।

হিয়া?(আলিফ মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে)

হুম?(আমি)

দরজা খুললে কি করে?(আলিফ)

খুব রাগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলাম।এখানে এসে দেখি মস্ত বড় এক তালা মারা।তাই রাগে একটা পাথর এনে তালা ভেঙ্গে দেই।(আমি)

তোমার দাড়াই সম্ভব।ভালো যে কারো মাথা ভাঙো নি।(আলিফ হাসতে হাসতে)

আমিও হাসতে লাগলাম,,


কিছুক্ষণ পর
আলিফ?(আমি)

হুম।(আলিফ)

আমি দুই পক্ষের কথা শুনবো।(আমি)

আমারও তাই মনে হয়।(আলিফ)

আজকের রাতটা এখানেই থাকি কালকে যাবো বাড়িতে।তুমি পিয়াস ভাইয়াকে বলবে উনার ফুপিকে যেনো কালকে সকালে আমাদের বাড়িতে নিয়ে আসে।(আমি)

আচ্ছা।এখন ঘুমাও।অনেক রাত হয়েছে।(আলিফ)

হুম।(আমিও গুটিশুটি মেরে আলিফের কোলে কথা রেখে ঘুমিয়ে পড়লাম)

।#Happily_Married❣️
#Part_13
Writer:: Shaanj Nahar Sanjida


সোফায় হিয়া ঘুমিয়ে আছে।আলিফ উঠে দরজায় হেলান দিয়ে দাড়িয়ে আকাশের চাঁদ দেখছে।আজ চাঁদটা খুবই সুন্দর।হয়তো পূর্ণিমা,,হয়তো না আমি শিওর পূর্ণিমা।
কেনো জানি আজ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে।কোনো দিন এইভাবে আকাশ দেখা হয়নি তবে আজ খুব ভালো লাগছে আকাশ দেখতে।হিয়া থাকলে আরো ভালো লাগতো।তবে যাই হোক আজ ওর উপর দিয়ে যা গেলো।মেয়েটা ছোটো থেকে কতো কিছু সহ্য করেছে।ভাবতে পারিনি ওর ওইসব কিছু করার পেছনে এতো বড় কারন হবে।তারউপর এতো বছর পর যার সাথে দেখা হয়েছে তাকে ও সারা জীবন ঘৃনা করে এসেছে।এইভাবে হুট করে দেখা হওয়াতেও ও অনেক ধাক্কা খেয়েছে।তবে যাই হোক দুই পক্ষের কথাটা শুনার জন্য ও নিজে থেকেই বলেছে বলে আমার চিন্তা মুক্ত হয়েছে।হিয়া,আমি জানতে চাই দুজনের কথা শুনে তুমি কি সিদ্ধান্ত নেও!
ভেবেই আলিফ হিয়ার দিকে তাকালো।হিয়া নিষ্পাপ শিশুর মত হাত পা ছড়িয়ে ঘুমাচ্ছে।মাঝে মধ্যে ঠান্ডা লাগছে বলে কাচু মাচু হয়ে যায়।আলিফ নিজের কোটটা হিয়ার উপর জড়িয়ে দিলো।

কিছুক্ষণ পর পিয়াস ফোন করলো তখন মধ্য রাত।

হ্যালো পিয়াস!(আলিফ)

হুম।পেয়েছিস হিয়াকে?(পিয়াস)

হুম।পেয়েছি।(আলিফ হিয়ার দিকে তাকিয়ে)

ও কেমন আছে?(পিয়াস চিন্তিত সুরে)

ভালোই আছে।নিজেকে সামলে নেয়ার শক্তি আছে মেয়েটার।(আলিফ)

হুম।তবে কি রাজি হয়েছে?(পিয়াস)

হুম।রাজি হয়েছে।তোকে বলেছে রিয়া আন্টিকে নিয়ে সকালে ওদের বাড়িতে আসতে।আমিও ওকে নিয়ে ওর বাড়িতে যাবো।হিমেল আঙ্কেলকে এখনও কিছু বলি নি।তবে উনাকে ও বাড়িতে গিয়েই বলবো।(আলিফ)

আচ্ছা।আমি এখন হিমেল আংকেলের বাড়ি থেকে বাসায় আসলাম। ফুপিও আমার সাথে এসেছে।অনেক চিন্তিত মনে হচ্ছে।আমি ভাবতে পারিনি উনি ওভাবে হুট করে হিয়ার সামনে চলে যাবে। অবশ্য উনি তোর আর হিয়ার বিয়ের ছবি দেখে কেমন যেনো রিয়েক্ট করছিলো।তবে ভাবতে পারিনি ওই রিয়েক্ট করার পেছনে এতো বড় একটা কারণ থাকবে।এখন নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে।(পিয়াস মনমরা হয়ে)

তোর আবার নিজেকে অপরাধী কেনো মনে হবে?(আলিফ অবাক হয়ে)

আমার জন্যই ত ফুপি এইসব করেছে।আমিই এক প্রকার কারণ।যার কারণে ফুপি আর হিয়া আলাদা হয়েছে।(পিয়াস)

দেখ পিয়াস সব সময় তুই আমাকে জ্ঞান দিস!কিন্তু এইবার তুই নিজেই এমন জ্ঞানহীন কথা বলছিস।তোর এখানে কোনো দোষ নেই।এইটা উনাদের দোষ।উনারা নিজেদের অহংকার নিয়ে পরে ছিলো।(আলিফ)

হুম।তোর কি মনে হয় হিয়ামনি আমার উপর রেগে থাকবে?(পিয়াস)

ভুলেও না।আমার চড়ুই পাখির স্বভাব বাচ্চামো হলে কি হবে আমার চড়ুই পাখি অনেক জ্ঞানী।বুঝলি?তুই একদম চিন্তা করিস না।এখন একটা ঘুম দে কালকে অনেক কিছুর মুখমুখি হতে হবে,অনেক কিছু সামাল দিতে হবে।(আলিফ)

আচ্ছা।তাহলে রাখি তুইও রেস্ট নে।
বলেই পিয়াস ফোন কেটে দিলো।

এখন শুধু সকাল হওয়ার পালা।(আলিফ মনে মনে আকাশের দিকে তাকিয়ে)


সকালে
ভোরে আমার ঘুম ভাঙলো আলিফের ডাক শুনে।

হিয়া উঠো!সকাল হয়ে গেছে।আমাদের যেতে হবে।(আলিফ)

আমি পিটপিট করে আলিফের তাকিয়ে মুচকি হেসে বললাম,,
আজকে অনেক বড়ো দিন তাই না আলিফ?

হুম।কিন্তু আমি জানি আমার চড়ুই পাখি সব কিছু সামলে নিতে পারবে।
বলেই আলিফ আমার কপালে চুমু দিলো।

আমিও মুচকি হেসে উঠে পড়লাম।


গাড়িতে বসে আছি,,
গাড়ির জানালা দিয়ে বাহিরের দিকে তাকিয়ে আছি।বুকে ধুরফর আওয়াজ করছে।যতই এগুচ্ছি ততই হার্টবিট এতো বেড়ে যাচ্ছে যে বলে বোঝানো সম্ভব না।গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।প্রচুর চিন্তা হচ্ছে।কি হবে এই ভেবে!তারপর একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত করলাম।কিছুই হবে না।এইবার যা করার আমিই করব।


বাড়িতে
আমি ফ্রেশ হয়ে বের হতেই পিয়াস ভাইয়া উনার ফুপিকে নিয়ে আসলো।

ভালো করেছো পিয়াস ভাইয়া উনাকে নিয়ে এসেছো।আপনি(রিয়া)ওই রুমে গিয়ে বসুন আমি আসছি।(আমি)

উনি কিছু না বলে আমার দেখানো রুমে গিয়ে বসলো।

পিয়াস ভাইয়া বসার রুমে সোফায় বসে রইলো উনার পাশেই বসে আছে আলিফ।কিচেনে সবার জন্য নাস্তা বানাচ্ছে পিয়া।আমি সোজা গেলাম বাবার কাছে।


বাবার রুমে
আমি ঢুকেই দেখি উনি খুব চিন্তিত হয়ে পায়চারি করছে।

কি হলো?এমন পায়চারি করছো কেনো?(আমি ভ্রু কুঁচকে)

তুই আমাকে বলিস নি কেনো?ওই মহিলা আসবে?(হিমেল সাহেব রাগে)

তোমরা আমাকে জিজ্ঞেস করে ডিভোর্স নিয়েছো?তোমাদের জিজ্ঞেস করে আমি কাজ করবো!(আমি কড়া গলায়)

বাবা চুপ করে আছে।

ওই রুমে চলো।কথা আছে।
বলেই আমি যেতে লাগলাম তখনই বাবা বলে উঠলো,,

আমার ওর সাথে কোনো কথা নেই।

তোমাদের একে অপরের সাথে কোনো কথা নেই আমি তা ভালো করেই জানি।কিন্তু আমার তোমাদের দুজনের সাথে কথা আছে।এখন কি তুমি যাবে?(আমি রেগে)

বাবা আর কিছু না বলে সোজা হাটতে শুরু করলো রুমের দিকে।

চিল্লাচিল্লি না করলে এদের কথা শুনানো যায় না।
বলেই আমিও গেলাম বাবার সাথে।

রুমে ঢুকতে যাবো তখনই আলিফ বললো,,
হিয়া আমি যাবো তোমার সাথে?

আলিফ চিন্তা করো না।এইটা আমার উপর ছেড়ে দাও।আমার কথা শুনলে কিছুই করবো না।আর না হলে,,জানিনা কি করবো?
বলেই আমি রুমে ঢুকলাম।রুমে ঢুকেই দরজা লাগিয়ে দিলাম।


পিয়া কিচেন থেকে এসে বললো
শুরু হয়ে গেছে বিশ্ব যুদ্ধ?

হুম।(পিয়াস জোরপূর্বক হাসি দিয়ে)

আচ্ছা।তোমরা বসো আমি চা নিয়ে আসছি।
বলেই পিয়া কিচেনে চলে গেলো।

আলিফ রুমের সামনে পায়চারি করছে।

আলিফ চিন্তা করিস না সব ঠিকই হবে!(পিয়াস)

জানি সব ঠিক হবে।কিন্তু হিয়ার রাগ উঠলে না জানি উনাদের কি হাল করে?আর উনাদের কথায় যদি হিয়া আরো কষ্ট পায়?(আলিফ পায়চারি করতে করতে)

কোনোদিন ভাবিনি তুই এমন করে কারো চিন্তা করবি?(পিয়াস বিড়বিড় করে)

কিছু বললি?(আলিফ)

না। শোন হিয়া ঠিক সামলে নিবে।আর যদি না হয় ওর চাকু তো আছেই।(পিয়াস রিলেক্স হয়ে)

কি?হিয়া কি চাকু নিয়ে ভিতরে গেছে?(আলিফ অবাক হয়ে)

এই দেখো তোমাদের চা এসে পড়েছে!(পিয়া চা আনতে আনতে)

Who knows? চিন্তা করে লাভ নেই।এসে বসে বসে চা খা।(পিয়াস চা খেতে খেতে)

তাও ঠিক চিন্তা করে লাভ নেই।চা খাওয়া যাক।
বলেই আলিফও চা খেতে লাগলো।


রুমে
হিমেল সাহেব রিয়া বেগমকে দেখেই অবাক হয়ে গেছে।
আজ কতো বছর পর এই মুখ দেখেছে ঠিক নেই। তবে রোজ এই মুখের স্বপ্নে উনি বিভোর হয়ে থাকতো।এখনও চেহারা থেকে সেই নূর সরেনি।আগের মতই মায়াবী চেহারা।যা দেখে এক দিন মন হারিয়েছিল সে।এখনও আগের মত গোছানো সব।তবে বয়সের ছাপ একটু হলেও মুখে দেখা যাচ্ছে।তবে তা মুখটাকে আরো সুন্দর করে তুলেছে।

অন্যদিকে রিয়া বেগমও যে কত বছর পর এই মুখটা দেখেছে হিসেব নেই।তবে এমন একটা দিন রাত নেই উনি এই মুখটাকে মিস করেনি।এখনও অগোছালো লোকটা,ঘুম থেকে উঠেই চুল আঁচড়ানোর কথা এখনও উনি ভুলে যায়।চোখে চশমা লেগেছে!বয়স শুধু আমাকে না উনাকেও ঘিরে ধরেছে।তবে দেখেই বোঝা যাচ্ছে নিজের একদম খেয়াল রাখে না।অবশ্য রাখবে কি করে জেদ থেকে মুখ ফিরিয়ে অন্যদিকে চোখ দিলি তো খেয়াল রাখবে!

আমি টেবিলে বসে আছি আর আমার এক পাশে বসে আছে বাবা আরেক পাশে পিয়াস ভাইয়ার ফুপি।এই রুমে এসেছি পনেরো মিনিটের বেশি হবে কিন্তু এই পনেরো বছর উনারা অপলক দৃষ্টিতে একে অপরের দিকে তাকিয়ে আছে।যা দেখে আমার কেমন লাগছে আমি বলে বুঝাতে পারবো না।

আমি কাশি দিয়ে বললাম
যদি দেখাদেখির পালা শেষ হয় তাহলে যেই জন্য এই রুমে আসা ওইটা করা যাক।

আমার কথা শুনেই তারা একে অপরের দিকে চাহুনি পরিবর্তন করে মুখ ভেংচিয়ে ঘুরিয়ে নিলো।

আমি একটা দীর্ঘ শ্বাস নিলাম😩

আপনাদের কিছু বলার আছে?
আমার মুখে থেকে এই কথা বের হতে না হতেই বাবা বলে উঠলো।

আমার এই মহিলার সাথে কিছু কথা বলার নেই।(হিমেল সাহেব রেগে)

থাকবে কি করে?তোমার কথা বলার মুখ আছে,হিমেল!(রিয়া বেগম রেগে)

আমার আছে।বলো তোমার নেই।অবশ্য যা করেছো তারপর কারোই কথা বলার সাহস থাকবে না।(হিমেল সাহেব)

তুমি আমাকে করতে বাধ্য করেছো হিমেল!তোমার ইগোর কারণে আমি যেতে বাধ্য হয়েছি।(রিয়া বেগম)

ও এখন আমার দোষ? দেবেই তো এখন আমার দোষ তখনও আমার দোষ ছিল এখনও আমার দোষ।(হিমেল সাহেব)

হ্যা তখনও তোমার দোষ ছিল এখনও তোমারই দোষ।তুমিই আমাকে ডিভোর্স দিয়েছো।আমি না!(রিয়া বেগম)

তাই?ডিভোর্স আমি দিয়ে ছিলাম।কিন্তু সেখানে সাক্ষর তো আর আমি জোর করে নেইনি।আর মেয়ের থেকে দূরে তো তুমি ইচ্ছে করে ছিলে।(হিমেল সাহেব)

তুমি যেখানে আমাকে ডিভোর্স দিয়েছো সেখানে আমার কথা বলার কোনো মানেই হয় না।আর মেয়ের থেকে দূরে আমি ইচ্ছে করে থাকিনি।আমাদের ডিভোর্স এর পরপরই তো তুমি মেয়েকে নিয়ে উধাও হয়ে গেছো।(রিয়া বেগম)

নিজের ভাইয়ের খুনিদের খুঁজে বের করতে পারো অথচ নিজের মেয়ে আর স্বামীকে খুজে বের করতে পারো না।(হিমেল সাহেব)

প্রথমত তুমি আমার স্বামী নও।প্রাক্তন স্বামী।দ্বিতীয়ত তোমার তো বিশ্বাসই হচ্ছিল না যে আমি আমার ভাইদের খুনিদের বের করার জন্য এইসব করছি।(রিয়া বেগম)

কি করে হবে বিশ্বাস?তোমার কথা তো কোনো বাংলা সিনেমাকেও হার বানাবে!(হিমেল সাহেব)

আমি এতক্ষন উনাদের কথা শুনছিলাম।উনাদের কথা শুনে আমার রাগে ফেটে যেতে ইচ্ছে করছে।এতক্ষন ধৈর্য্য ধরে ধরার পরেও আমার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেলো।আমি একটা চাকু টেবিলের মাঝ বরাবর গেঁথে দিলাম,,

তারা দুজনেই আমার দিকে ভয়ে ভয়ে তাকালো,,

আমি তাদের দুজনের দিকে তাকিয়ে বললাম,,
আপনাদের না এক জনের সাথে আরেকজনের কথা বলার কিছুই ছিলনা।এখন দেখি আপনাদের কথা থামছেই না।এখন সবাই চুপ।শুধু আমি কথা বলবো।শুধু আমি।আর আমি যাকে বলবো সেই কথা বলবে,,যাকে প্রশ্ন করবো সেই উত্তর দেবে।is that clear?(আমি দাত চেপে)

ইয়েস ম্যাম।(হিমেল সাহেব আর রিয়া বেগম)

Very good,,(শান্ত হয়ে)আপনি(রিয়া)বলুন আপনার কথা।কেনো আপনি এইসব করছেন?(আমি উনার দিকে তাকিয়ে)

পরেই উনি আমাকে উনার পক্ষের কথা গুলো বললেন।আমি শুনে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলাম।বাবার দিকে তাকিয়ে দেখি উনি নিচের দিকে তাকিয়ে আছে।আবারও একটা দীর্ঘ শ্বাস নিয়ে বললাম,,
বাবা,তোমার কথাগুলো বলো।

পরেই বাবা আমাকে তার কথা গুলো বললো।
আমি তার কথা গুলো শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে আছি।

কি করবো কিছুই বুঝতে পারছিনা?শুধু মাত্র তাদের জিদের জন্য আমার জীবন এমন।
আমি উপর দিকে মাথা তুলে একবার বাবার দিকে একবার পিয়াস ভাইয়ার ফুপির দিকে তাকালাম।

পরেই উঠে তাদের উদ্দেশ্য বললাম,,
আমি এখান থেকে যাচ্ছি।তোমরা এই রুমেই থাকবে,,কি করবে আমি জানি না। তবে হা এক জন আরেক জনের কথা শুনবে,যদি কেউ না শুনে তাহলে জোর করে শোনাও।নিজের মনের কথা বলো,আর যদি কেউ না বলে তাহলে তার মন থেকে কথা গুলো বের করো।আর হা একটা কথা মাথায় রেখো তোমাদের জেদের কারণে তোমাদের জীবন না আমার জীবন খারাপ হয়েছে।আমি এমন একজনে পরিণত হয়েছি যা আমার হওয়ার কথা ছিল না।আর এইসব কিছুর পেছনে দায়ী তোমরা দুজন।আমি কোনো দিন তোমাদের কাউকে ক্ষমা করবো না। তবে যেহেতু তোমরা আমার মা বাবা তাই তোমাদের ঘৃণাও করবো না।আগের হিয়া থাকলে তোমাদের এমন শাস্তি দিতাম তোমরা সারাজীবনের জন্য মনে রাখতে কিন্তু এখন আমি তা করবো না।কারণ যার সাথে বিয়ে হয়েছে তার সাথে থেকে এইটুকু শিখেছি যে সবাইকে একটা সুযোগ দেয়া উচিত।তাই আমিও তোমাদের একটা সুযোগ দেবো।এই সুযোগে তোমরা নিজেদের মধ্যে যা কিছু আছে সব কিছু ঠিক করো।আর না হয় তোমরা দুজনই আমাকে হারাবে!(আমি একদমে)

হিয়াকে হারানোর কথা শুনে দুজনই চমকে উঠলো।

এইবার যদি পালাই এমন জায়গায় যাবো। কেউ খুঁজে পাবে না।আরেকটা কথা।যতদিন না পর্যন্ত তোমাদের মধ্যে সব কিছু ঠিক হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত তোমরা কেউ আমার সাথে কোনো যোগাযোগ করবে না।আগে স্বামী স্ত্রী হয়ে উঠো তারপর না হয় বাবা মা।
বলেই রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।


রুম থেকে বের হতেই রুমটা বাহিরে থেকে লক করে দিলাম।

কি হলো হিয়া?তুমি রুম বাহিরে থেকে লক করলে কেনো?(আলিফ অবাক হয়ে)

কিছুক্ষণ এভাবে উনাদের ভিতরে থাকতে দাও।আগে উনাদের নিজেদের মধ্যেকার সম্পর্ক ঠিক করুক।তারপর আমার সাথে উনাদের আমাদের সম্পর্ক নিয়ে কথা হবে।
বলেই সোফায় বসলাম।

আলিফও আমার পাশে বসলো।

পিয়া এক কাপ চা দে তো।তাদের কথা শুনে আমার মাথা ব্যাথা শুরু করছে।দুজনই এক রকম জেদী।(আমি)

একদম তোর মত।
বলেই পিয়া চা নিয়ে আসলো।

বলতে খারাপ লাগছে তবে তুই একদম ঠিক বলছিস আজ পিয়া।উনারা একদম আমার মত।(আমি চা খেতে খেতে)

উনারা তোমার মত না তুমি উনাদের মত।(পিয়াস হাসতে হাসতে)

ওই একই হলো।তবে যাই হোক।এখন আমি বুঝতে পারছি।(আমি)

কিহ?(আলিফ)

আমার এই পালিয়ে যাওয়ার অভ্যাস কোথা থেকে আসলো?আমার বাবা মা পালিয়ে বিয়ে করছে,,তারাও নিজেদের পরিস্থিতি থেকে পালায়,,নিজের কথা গুলো থেকে পালায়।(আমি হতাশ হয়ে)

আজ আমি তোমার সাথে এক মত।(আলিফ মজা নিয়ে)

আলিফের কথা শুনে সবাই হেসে উঠলো।

নাও নাও।সবাই মজা নাও।কি আর করার?(হতাশ হয়ে)পিয়া কি রান্না করেছিস?খুব খিদে পেয়েছে কিছুই খায়নি কাল দুপুর থেকে(আমি)

আমিও খায়নি।(আলিফ)

আরে কি বলছিস আমিও তো কালকে দুপুর থেকে কিছু খাইনি!পিয়া তাড়াতাড়ি কিছু একটা বানিয়ে দাও।(পিয়াস)

হ্যা আমি তো এই বাড়ির বাবুর্চি না?(পিয়া কড়া গলায়)

আমরা সবাই পিয়ার কোথায় ভয় পেয়ে গেলাম।

এতো রেগে যাচ্ছিস কেনো?আমি তো রান্না করতে পারি না তুই জানিসই!(আমি ঠোঁট ফুলিয়ে)

জানি জানি।সবার রান্না আমাকেই করতে হয়।
বলেই পিয়া রাগে গজগজ করতে করতে রান্নাঘরে গেলো।

যাই আমি গিয়ে ওকে সাহায্য করি।
বলেই পিয়াস ভাইয়া উঠলো।

তুমি রান্না করতে পারো।(আমি অবাক হয়ে)

হুম।বিভিন্ন জায়গায় ট্রেকিং করার সময় আমিই তো রান্না করি।আর আলিফও তো রান্না করতে পারে!(পিয়াস)

আমি আলিফের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে।

আলিফ হা বোধক মাথা নেড়ে।

এখানে আমিই অকর্মার ঢেঁকি।(আমি হতাশ হয়ে)

পরেই পিয়াস ভাইয়া হাসতে হাসতে রান্না ঘরে গেলো পিয়াকে সাহায্য করতে।

আমি আলিফের কাছকাছি গিয়ে ফিসফিস করে বললাম,,
ওরা দুজন কেমন ক্লোজ ক্লোজ মনে হচ্ছে না?

হুম।মনে হচ্ছে শীগ্রই আরেকটা বিয়ে খাবো।(আলিফও ফিস ফিস করে)

পরেই আমরা দুজনই দুজনকে দিকে তাকিয়ে হেসে দিলাম।


চলবে,,,,
চলবে,,,
একদিন পর পর দেয়া হবে প্রতি পার্ট।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here