#গল্প:#পবিত্রতার_ছোঁয়া
#পর্ব :#9
#লেখিকা:#জাবিন_মাছুরা [ছদ্মনাম]
||
মিহু রানী,,,,
রাফি ভাইয়া,,,
রাফি:কেমন আছিস? মিহু রানী,,,
[আমি ভাইয়াকে দেখে একটু অবাক হলাম। ভাইয়া তো বলে নি যে সে আজকে আসবে। রাফি ভাইয়া আমার বড় মামার ছেলে। ভাইয়া অনার্স থার্ড ইয়ারে পরে। ছোটবেলা থেকেই ভাইয়া আমাকে মিহু রানী বলে ডাকে। ভাইয়া মিহু রানী ডাকটা আমার অতো একটা ভালো লাগে না। ভাইয়া সবসময় আমার সাথে গায়ে পড়ে কথা বলে, আমাকে অনেক বিরক্ত করে।]
আমি :ভালো। তুমি কেমন আছো?
রাফি : ভালো। আমাকে দেখে খুশি হোস নি?
আমি : হয়েছি তো। ভাইয়া আমি এখন পড়ছিতো পড়ে কথা বলি।
রাফি : ওহহ।আমি তো খেয়াল করনি। সরি রে,,,
এমন সময় আম্মু এলো,,,
আম্মু : রাফি তুই এসে ফ্রেস না হয়েই মিহুর রুমে কেন এসেছিস?
রাফি : ফুপি আমি তো মিহুকে অনেক দিন ধরে দেখিনি তাই ওর রুমে আগে না এসে পড়লাম না,,
আম্মু : ওহহ।শোন, ও হচ্ছে তাহসিন,, মিহুর শিক্ষক ।
রাফি : হ্যালো, ভাইয়া,,, কেমন আছেন?
তাহসিন :ভালো। আপনি?
রাফি :ভালো।
স্যার রাফি ভাইয়ার সাথে বিরক্তি নিয়ে কথা বলছেন। [লেখিকা:#জাবিন_মাছুরা]
রাফি : ফুপি,,
আম্মু :হ্যাঁ বল,,
রাফি: আজকে যেহেতু আমি এসেছি তাই মিহুর স্যারকে আর পড়তে হবে না। এখন মিহুকে ছুটি দিয়ে দিক,,
আমি ভাইয়ার কথা শুনে স্যারের দিকে তাকালাম। স্যার আমার দিকে অগ্নি দৃষ্টি নিক্ষেপ করলের। আমি বুঝতে পারলাম না সে আমার দিকে কেন এমন করে তাকালেন। মনে হলো যে, কেউ এখানে না থাকলে, স্যার আমাকে গিলে ফেলতেন। আমি সাথে সাথে চোখ সরিয়ে নিলাম।
আম্মু : ঠিক আছে ।তাহসিন মিহুকে আর পড়তে হবে না।
তাহসিন : ওকে,,,
আম্মু : রাফি ফ্রেস হতে যা। আর মিহু নিচে যা আমাকে হেল্প করবি।
আমি : ঠিক আছে,, যাচ্ছি।
আম্মু : তাহসিন তুমিও নিচে চলো, খাবার খেতে।
তাহসিন : কিন্তু,,,
আম্মু : না করতে পারবে না। মায়ের কথা শুনতে হয়। এসো,,
তাহসিন : ঠিক আছে,, আসছি,,
আম্মু নিচে চলে গেল। ভাইয়া ও নিচে চলে গেল। আমি ও যাওয়া জন্যে উঠে দাঁড়ালাম।
আমি : স্যার চলুন,,,
স্যার কিছু না বলে টেবিলে ঠাসস করে একটা লাথি দিয়ে চলে গেল। আমি ভাবতে লাগলাম, স্যার হঠাৎ কেন রাগলেন। ভাইয়া আসার পর থেকেই কেমন যেন রেগে যাচ্ছেন।
||
রাফি : ফুপি মিহুকে ছেলে টিচার দিয়েছ কেন?
আম্মু :নিশ্চুপ,,,, [#লেখিকা :#জাবিন_মাছুরা]
রাফি : তাও আবার ওর ঘরে যেয়ে কেন পড়ায়?
আম্মু : নিশ্চুপ,,,,,
রাফি : কথা বলছো না কেন?
আম্মু রাফি ভাইয়ার ওপর চোখ গরম করলেন। কারন স্যার তখন সিরি দিয়ে নামছিলেন।
আম্মু : তাহসিন,,,
স্যার : জী আন্টি,
আম্মু : আজকে থেকে যাও,,
স্যার : না আন্টি,,, মা একটু অসুস্থ তো তাই থাকতে পারবো না।
আম্মু : ওহহ।আমি তো ভুলেই গিয়েছিলাম। ঠিক আছে।
||
আম্মু সবাইকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে আর আমারা খাচ্ছি।
রাফি : মিহু রানী.,,,তোর পড়ালেখা কেমন চলছে?
আমি : ভালো,,,
রাফি :যানেন তাহসিন ভাই,,,
স্যার :বলেন। শুনছি,,,
রাফি : যখন মিহু ছোট ছিল। তখন ও চকলেট খেতে অনেক ভালোবাসতো।
স্যার :ওহহ,,
রাফি : আমি যখনি ওর সাথে দেখা করতাম তখনই ওকে চকলেট দিতাম। চকলেট পেয়ে আমাকে খুশি হয়ে চুমু দিত। যে কয়টা চকলেট দিতাম সেই কয়েটা চুমু দিত।
স্যার :তাই,,, [দাঁতে দাঁত চেপে]
রাফি : হুম,, আমি তাই ভাবি সেই মিহু রানী এখন কত বড়ো হয় গিয়েছে। এখন আমাকে দেখলেই লজ্জা পাই।
আমি ভাইয়ার কথা শুনে খুব বিরক্ত বোধ করলাম। আমি আর খেতে পারছি লজ্জা লাগছে। স্যার কি ভাবছেন।
রাফি : ভাই কালকে মিহুর ছুটি দিন। কালকে ওকে নিয়ে একটু ঘুরতে যাব।
তাহসিন :নিশ্চুপ,,,
আমি: না ভাইয়া,,, আমার সামনে পরীক্ষা।
রাফি :না বললে হবে না।
আমি কিছু না বলে স্যারের দিকে আর চোখে তাকালাম। সে যে রেগে হাতের মুষ্ঠি বন্ধ করে খাচ্ছে তা আমার বুঝতে বাকি রইলো না। স্যার যে এতো রাগছে কেন তা আমি বুঝতে পারলাম না। সে কি তাহলে জেলাস।সে তো আমাকে দেখতেই পারে না। এমন সময়ে আম্মু তরকারি নিয়ে এলো,,
রাফি : ফুপি কালকে বিকেলে মিহু কে নিয়ে একটু ঘুরতে যাবো। তাই কালকে মিহুকে ছুটি দিতে বলো।
আম্মু : ঠিক আছে যাবি।কিন্তু শুধু তোরা দুজন যাবি না সাথে তাহসিন ও যাবে।
রাফি : কিন্তু,,,
আম্মু :হ্যাঁ। তাহসিন গেলে যাবি ও না গেলে যাবি না
রাফি : ঠিক আছে,, [মন খারাপ করে]
আম্মু : তাহসিন যেতে পারবে তো?
স্যার : হ্যাঁ পারবো,,,
আমি : আমি যাব না,,,
রাফি : যাবি তুই,,,
আমি: তমাকেও সাথে করে নিয়ে যাব। তমা না গেলে আমি যাব না।
আম্মু : একদম ভালো বুদ্ধি। তমাকে ফোন দিস।
রাফি : আমি বুঝতে পারলাম না ফুপি সবকিছুর মধ্যে এই ছেলেটাকে কেন ঢুকয়ে। [মনে মনে]
আমি কোন মতে কষ্ট করে খাওয়া শেষ করলাম। খাওয়ার মধ্যে টের পাচ্ছিলাম ভাইয়া কেমন করে যেন আমার দিকে তাকিয়ে ছিল। কিন্তু ভালো করে বুঝতে পারছি স্যার আমার ওপর অনেক রেগে আছে। আল্লাহই জানে কালকে আমার অবস্থা কী হবে। আমার কপালে যে দঃখ আছে তা ভালোই বুঝতে পারছি।
রাফি : মিহু তোর চুল কী আরো বড়ো হয়েছে?
আমি :নিশ্চুপ,,,
আমার কেন যেন মনে হচ্ছে রাফি ভাইয়া স্যারকে শুনিয়ে শুনিয়ে বলছে।।
আমি :না ভাইয়া,,
|
তাহসিন :আন্টি আমি তাহলে আসি।[ আমার দিকে একপলক তাকিয়ে]
আম্মু : বাইরে তো গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। যেতে পারবে তো?
তাহসিন : হ্যাঁ আন্টি পারবো।
স্যার চলে গেলেন। আমি আমার ঘরে চলে এলাম। কিছুখন পর রাফি ভাইয়া এসে হাজির। আমাকে একটার পর একটা প্রশ্ন করছেন। আর আমি শুধু উত্তর দিচ্ছি।
আমি : ভাইয়া আমার অনেক ঘুম পাচ্ছে।
রাফি : ঘুমো,,,
আমি: তুমি চলে যাও, আমি ঘুমাবো,,,
রাফি : ওকে [মন খারাপ করে চলে গেল]
আমিও কিছুখন পর দরজা বন্ধ করে শুয়ে পড়লাম। আর ভাবতে লাগলাম স্যার এতো রেগে গেলেন কেন। কালকে কি সে আমাকে বকবেন।সকালে তো তমাকেও ফোন দিতে হবে। এখন দিলে তো ভালো হতো। আমি চোখ বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করলেই শুধু স্যারের রাগী মুখটি ভেসে ওঠছে। সে যদি হাসে তাহলে কেমন লাগবে। আমি তো কখনো তার হাসি দেখি নি। আমি তার ককথা ভাবতে ভাবতে ঘুমের রাজ্যে পারি দিলাম।
||
হঠাৎ ঘুমের মধ্যে মনে হচ্ছে কেউ আমার দিকে তাকিয়ে আছে। কিন্তু অতিরিক্ত ঘুমের জন্যে চোখের পাতা খুলতে পারছি না। কেউ আমার খুবই কাছে,,,,,,,,,
(#চলবে কি?)