তোলপাড় পর্ব ৪৬+৪৭

#তোলপাড়💓
#পর্বঃ৪৬
#শান্তনা_আক্তার(Writer)

(সকলকে ঈদ-উল-আযহার শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক)

-ধন্যবাদ বলতে হবে না। খুব খুশি হলাম জেনে। সব ঠিক হয়ে গেছে এটাই অনেক। আচ্ছা পরে কথা হবে বলে ফোন কেটে দিল রিমি। তারপর পিছনে ফিরতেই ওর বোন রিমলিকে দেখতে পায়। দুজনের চোখাচোখি হতেই রিমলি প্রশ্ন করল, কার সাথে কথা বলছিলি? নিশ্চয়ই আহসান! তাইতো বলি হাসিতে গদগদ করছে কেন।

-দেখ আপু, বেশি বুঝে উল্টো পালটা বলবি না বলে দিলাম। আমি আহসানের সাথে নয়, স্রুতির সাথে কথা বলছিলাম।

-স্রুতির সাথে! কি বলেছে? ওদের মেনে নিয়েছে তো?

-তুই সুযোগ পেলে একগাদা প্রশ্ন করিস ক্যান বলতো? এতো কথা বলতে ভালো লাগে তোর?

-আমি কিছু বললে তুই গরম কড়াইয়ে তেল দেওয়ার মতো ফুটে পড়িস। যাই হোক, স্রুতির পয়েন্টে আয়। কি বলেছে?

– বলেছে কাকু-কাকিমা ওকে আর অনিককে মেনে নিয়েছে। সাথে খুব খুশিও হয়েছে।

-বাহ! বেশ ভালো খবরতো। মন ভালো হয়ে গেল। আগে মেনে নিলে এতটা কষ্ট পেতেন না তারা।

-কথা ঠিক তবে তখন না মেনে নেওয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিলো। এখন মেয়ের জন্য চিন্তা করতে করতে তারা নিজেরাই বিরক্ত। মেনে না নিয়ে উপায় কি বল?

-হুম রাইট। ওদের কথার মাঝে রিমির ফোন বেজে ওঠে। কে ফোন দিলরে রিমি? স্রুতি কি? দে আমার কাছে কথা বলি।

-উফ আপু! স্রুতি নয় আহসান।

-তাই নাকি। কথা বল তাহলে।

-না আমি ওনার ফোন রিসিভ করবো না। কোনোমতেই না।

-কেন? গতকাল আসেনি বলে?

রিমি দাঁত কিরমির করে বলল, না তা না। আমি কথা বলবো না এটাই শেষ কথা।

-হয়তো ব্যস্ত ছিলো। এমন করিস না। দেখ কি বলে।

কয়েকবার রিং বাজা বন্ধ হয়ে গেল।

-যাক ভালো হয়েছে কেটে গেছে।

-তুই ব্যাক কর।

-না করবো না।

-টেনে মারবো এক চড় তারপর ছোট বেলায় যেভাবে মাটিতে গড়াগড়ি করে কান্না করতি, সেই সিনটার পুনরাবৃত্তি ঘটবে।

-আমি কল ব্যাক করছি না বলতে না বলতেই আবার আহসানের কল বেজে ওঠে। রিং বাজা মাত্র রিমলি খপ করে রিমির হাত থেকে ফোনটা কেড়ে রিসিভ করে কানে ফেলল। সাথে স্পিকার অন করে দিল।

– হ্যালো রিমি, তুমি রেগে আছো আমি জানি। কিন্ত বিশ্বাস করো কাল আমি অপারেশন থিয়েটারে ছিলাম। খুবই সিরিয়াস অপারেশন করেছি। ঘটনাটি অকস্মাৎ। আমি তোমার কাছে আসতামই কিন্তু আটকে গেলাম। ওই সিচুয়েশনে আমার অন্য কিছু মাথায় ছিলো না। হ্যালো রিমি! তুমি কি শুনতে পাচ্ছো না? কথা বলছো না কেন? আহসান হ্যালো হ্যালো করে যাচ্ছে। আর এদিকে রিমির পুষে রাখা অগ্নিমূর্তির চাহনি নিমিষেই অনুতপ্তের আভায় পরিনত হয়ে গেল। এবার রিমি নয় রিমলি সেই অগ্নিমূর্তির চাহনি ধারণ করলো। রিমলির রক্তচক্ষু রিমির দিকে তাক করেছে তো করেই রেখেছে। রিমি রিমলির চাহনি দেখে কান ধরে নিঃশব্দে ঠোঁট নাড়িয়ে বলল, সরি। রিমলি কিছু না বলে রিমির হাতে ফোন ধরিয়ে দিল। ইশারা করলো কথা বলার জন্য।

রিমি আমতা আমতা করে বলল, জ, জ, জ্বি বলুন আমি শুনছি।

আহসান রিমির গলা শুনে জীবন ফিরে পেলে৷ বড় একটা শ্বাস ছেড়ে দিয়ে বলল, কথা বলোনি কেন?

-এমনি আসলে আপনি একটার পর একটা কথা বলে যাচ্ছিলেন বলে আমি কি বলবো না বলবো ভেবে পাচ্ছিলাম না।

-ওকে তুমি নিচে নেমে এসো আমি তোমাকে নিয়ে একটা জায়গায় যেতে চাই।

-মানে! এই বিকেলে কোথায় যাব?

-বিকেলে যাবেনা তোকি গভীর রাতে যাবে?

-আমি কি তাই বলেছি? আমি আপনার সাথে কেন যাব?

-বেশি কথা না বলে চুপচাপ নিচে আসো। আমি গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। সময় মাত্র পাঁচ মিনিট৷ যা পড়ে আছো তাতেই চলে আসো।

-কিন্ত,,, আহসান রিমির পুরো কথা শোনার আগেই ফোন কেটে দেয়। যাহ, ফোন কেটে দিলো? রিমলি গিয়ে রিমির মাথায় একটা চাটা মেরে বলল, তোর সমস্যা কিরে ভাই? অতিরিক্ত রাগ অভিমান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ছেলেটা যখন বলেছে তোকে নিয়ে কোথাও যাবে, তাহলে এতো ঢং করার কি আছে?

-আপু আমি কি করবো বুঝতে পারছি না।

-বুঝতে হবে না। তুই যা নইলে এক লাথি দেব ডিরেক্ট বারান্দা ভেদ করে নিচে গিয়ে পড়বি।

-আচ্ছা বাবা যাচ্ছি আমি। তুই আমাকে ছাড়া গোটা দুনিয়ার সাপোর্টার। কিন্তু আমি এই অবস্থাতেই যাবো কি করে?

-হুম গেলে কি হয়েছে? থ্রি পিসটা সুন্দর তো। আর তোকে ওতো সাজগোছ করতে হবে না। আমার ছোট বোনটা এমনিতেই খুব সুন্দর। একদম আমার মতোই।

-তাও ওনার সাথে যাচ্ছি। এভাবে যাই কিভাবে?

-ওরে বাবারে! এতোক্ষণ যাব না, যাব না করছিল। আর এখন এভাবে কি করে যাই? তোর পেটে পেটে এক রুপ, আর দেখাস অন্য রুপ? আজ তুই যদি আহসানকে মনের কথা না বলে বাসায় আসিস না, তাহলে আমি আব্বু আম্মুকে বলে দেব তুই আহসানকে ফিরিয়ে দিচ্ছিস অকারণে।

-এই তুই এটা করিস না। এমনিতেই আম্মু রেগে আছে। যদি এটা শোনে, তাহলে নির্ঘাত গর্দান যাবে।

-তাহলে আমি যা বলছি তাই কর গিয়ে।

-আচ্ছা যাচ্ছি।

-মনে রাখিস আমার কথা। আজ আহসানকে আই লাভ ইউ বলতে ভুলিস না যেন।

-তুইও চল আমাদের সাথে। পরিচিত হবি আহসানের সাথে।

-নো মিস ঢঙি। আমি কারো রোমান্স এ বাঁ পা দিতে চাইনা। তোকে যখন দিতে আসবে তখন আলাপ হয়ে যাবে। এবার যাতো।

রিমি গুটিগুটি পায়ে নিচে নেমে আসলো। আহসান রিমিকে দেখেই বললো, গুড সময়ের মধ্যে চলে এসেছো।

-আমাকে নিয়ে কোথায় যাবেন?

-সেটা গেলেই দেখতে পারবে। কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে গিয়ে বসো। তুমি ভালো করেই জানো আমি সারপ্রাইজ শেয়ার করি না।

-আবার সারপ্রাইজ? কথাটা বলেই রিমি ওর মুখটা কালো করে ফেলল। মন খারাপ হয়ে গেল। আহসান সেটা বেশ ভালো করে বুঝতে পারলো। কিন্তু তবুও কোন কিছু না বলে ড্রাইভিং সিটে গিয়ে বসল। গেট খুলে দিয়ে রিমিকে গাড়িতে ওঠার জন্য ইশারা করলো। রিমি আহসানের পাশের সিটে বসতেই আহসান গাড়ি স্টার্ট দিল।

গাড়ির ব্রেক কষলো বড় একটা পার্কের কাছে গিয়ে। পার্কের বাহিরে সাইনবোর্ডে লেখা ‘লাভার্স পয়েন্ট’ দুপাশে দুটো লাভ সেপও দেওয়া। রিমি লেখাগুলোয় চোখ বুলাতেই অজানা অনুভূতি এসে ওকে ঘিরে ধরলো। রিমি বুঝতে পারলো আহসান আবার ওকে বড়সড় কোন সারপ্রাইজ দিতে চলেছে। কিন্তু সেটা কি তা রিমির জানা নেই। ইতোমধ্যে রিমির বুকে ধুকপুকানির তাল শুরু গিয়েছে। রিমির ভাবনার সুতো কাটে আহসানের কথায়। আহসান বাহিরে নেমে গাড়ির দরজা খুলে রিমিকে বের হতে বলছে। রিমি বের হবে কি আহসান ওর হাত রিমির দিকে বাড়িয়ে দেয়। রিমি ওর কাঁপা কাঁপা হাতটি বাড়িয়ে আহসানের হাতের মধ্যে গুজে দেয়। ওরা পার্কের মধ্যে প্রবেশ করে। কিন্তু পার্কের মধ্যে কোন একটা মানুষ জন নেই। পুরোই নিস্তব্ধ৷ বিন্দু পরিমাণ কোলাহল নেই। পুরো পার্ক আর খোলা আকাশ। রিমি চারপাশের শান্ত পরিবেশ দেখে বিস্মিত হয়ে গেল। রিমি আশ্চর্যান্বিত হয়ে জিজ্ঞেস করলো, এখানে জনমানবশূন্য কেন? এসব জায়গায় তো মানুষের অভাব থাকার কথা না?

-তার মানে তুমি এখানে এসেছো আরও আগে।

-না, একদমই না। আমি কথার কথা বললাম। যেহেতু এটা লাভার্স পয়েন্ট। সেহেতু এখানে লাভার্সদের আনাগোনা থাকবে এটাইতো স্বাভাবিক। এই সামান্য সেন্সটা যেকারোই আছে। একটা ক্লাস সিক্স পড়ুয়া বাচ্চাও জানে। কিন্তু আপনি আমাকে এখানে কেন আনলেন?

-তুমি তো খুব সুন্দর করে বললে এখানে লাভার্সদের আনাগোনা লেগে থাকে। এখানে সকল লাভার্সরা আসে। তাহলে এই অহেতুক প্রশ্নটা করার মানে কি? আশা করি তুমি কিছুটা হলেও আচ করতে পারছো। এনিওয়েস, চলো যাওয়া যাক বলে আহসান সামনের দিকে পা বাড়ালো। রিমিও ভয় ভয় কদম ফেলে আহসানের পিছনে গেল।
#তোলপাড়💓
#পর্বঃ৪৭
#শান্তনা_আক্তার(Writer)

(অ্যাসাইনমেন্ট এর প্যাড়ায় আছি। তাই দেড়ি হবে।)

খোলা আকাশের নিচে বড় একটা লাভ সেপের ছাতা। রংধনুর সাতটা রঙ সেই ছাতায়। সাধারনত লাভ তো লাল রঙের হয় তবে এটা সাতরঙা কেন? ঠিক এই প্রশ্ন টাই রিমি মনে মনে আওড়ে যাচ্ছে। প্রশ্নের ভাবনা কাটিয়ে রিমির নজর কাড়ে ছাতাটার নিচে থাকা টেবিলটি। টেবিলের এক পাশের চেয়ারে একজন বয়স্ক মতো লোক বসে আছে। হুজুরের বেশ তার। কি যেন পড়ছে সে। হাতে তার কাগজ মতো কিছু হবে। রিমি কিছু বুঝে উঠতে পারছে না আহসান ওকে এখানে কেন এনেছে। লাভ ছাতার নিচে একজন হুজুর! এটা যেন ওর কাছে আরও ভাবান্তর। রিমি বিস্মিত হয়ে বলল, আপনি আমাকে এখানে কেন এনেছেন বলবেন? আমি কিছুই বুঝতেছি না। আহসান মুচকি হাসি দিয়ে বলল,

-চলো গিয়ে বসি।

আহসান রিমির হাত টেনে হুজুরের সামনের দুটো চেয়ারে রিমিকে নিয়ে বসে পড়ে। আহসানকে দেখে হুজুর সালাম দিলেন।

– আসসালামু আলাইকুম,ওয়ারহমাতুল্লাহ। আহসান বাবু।

আহসান জবাব দিল,
-ওয়ালাইকুমুস সালাম, ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ। আপনার কোন প্রবলেম হয়নি তো আসতে?

হুজুর সাহেব প্রাণখোলা একটা হাসি দিয়ে বললেন, না কোন সমস্যা হয়নি। আপনারা তৈরি তো?

-জ্বি আপনি শুরু করেন কাজী সাহেব।

কাজী সাহেব নামটা শুনে রিমির চোখ বেরিয়ে আসার উপক্রম। রিমি ওর নাক মুখ ঘুচিয়ে জিজ্ঞেস করল, আপনি কি কাইন্ডলি বলবেন আমরা এখানে কেন এসেছি? কাজী সাহেবকে কেন ডেকেছেন? এখানে কার বিয়েতে এসেছি আমরা? আমরা তিনজন ছাড়া একটা কাক ওতো নেই এখানে।তো কার বিয়ে হবে?

আহসান খুব ইজিলি বলল, আমাদের।

-আমাদের? আমাদের আবার কিসের বিয়ে? আমরা তো অলরেডি স্বামী স্ত্রী।

-হুম তবে আমি চাই আবার আমাদের বিয়ে হোক। প্রথমবার আমি বিয়ের জন্য প্রিপেইড ছিলাম না। আর তুমিও না। আর এখন আমি তোমাকে খুব করে চাই। তাই নতুন ভাবে নিজের করে নিতে চাই। শুরুটা ভালবাসা দিয়ে ভরিয়ে দিতে চাই। যাহাতে আপনাকে শেষ নিঃশ্বাসটাতেও আপন করে পাই।

-আপনি যে কি? আমি,,,,

আহসান ধমকের সুরে বলল,একদম চুপ। কাজী সাহেবের আরও কাজ আছে। আমাদের জন্য বেশ খানিক সময় নষ্ট হয়েছে ওনার। তাই কথা না বলে উনি যা বলে তাই শোনো।

রিমি আর কোন কথা বাড়ালো না। কাজী সাহেব যা বললেন সব অক্ষরে অক্ষরে পালন করল দুজন। বিয়ে পড়িয়ে কাজী সাহেব চলে যান। কাজী সাহেব চলে গেলে আহসান সবুজ ঘাসে হাটু মুড়ে বসে। তারপর বলে, প্রেয়সী! ভালবাসার আরেক নাম জানতাম না ঠিক। তবে তুমি এসে চেনালে সঠিক বেঠিক। কঠিন, পাথরের ন্যায় হৃদয়ে আনলে প্রেমের জোয়ার, সেই জোয়ারে ভেসে আমি হয়েছি দিওয়ানা তোমার। যখনি হেসেছো তুমি, আহসান থেমে গিয়ে আবার বলল, যখনি হেসেছো তুমি, শুরু হয়েছে #তোলপাড়। আশায় আছে এই রাজকুমার, তোমারি মতো এক রাজকন্যার। তুমি যে মিলনসুধা, রূপের পদ্ম ফুল। তোমাকে পাওয়ার নেশায়, আজ মনটা বড়ই আকুল। আর দিওনা ফিরিয়ে আমায়, এটাই শেষ সুযোগ। পাঠকমন্ডলী সবাই চায়, দেখতে আমাদের মিলন হোক।

রিমি পলকহীন চোখে চেয়ে বলল, আপনি আমাকে এতো ভালবাসেন?

-হুম খুব। আমার দু চোখ জুড়ে শুধু তুমি আর তুমি থাকো।

-দু চোখ? ভালবাসার মানুষটি তো হৃদয়ে থাকে।

-হুম, তবে সেটা তো অনুভবে। আমি তো চোখ দিয়ে দেখতে চাই আমার রিমিকে। সারাক্ষণ।অনন্তকাল।

-তাই?

-হুম তাই। হাতটা দাও।

-কেন?

-তুমি কি কিছুই বোঝো না রিমি? আমি চাইছি কারণ এটা প্রপোজ চলছে।আহ! কোন কথা নয়, দাও তো।

রিমি ডান হাতটা বাড়িয়ে দিল। আহসান আলতো করে রিমির হাত ধরে নিয়ে প্রথম ভালবাসার ছোঁয়া এঁকে দিল রিমির হাতে। আহসানের ঠোঁটের স্পর্শে রিমির বুকের ভেতর কম্পন শুরু হয়ে গেল। চট করে হাতটা টেনে নিয়ে আসলো। তাই দেখে আহসান বলল, কি হয়েছে?

রিমি কাঁপা কাঁপা গলায় বলল, বাসায় যাব আমি।

-উহু, যেতে দেব না আজ আমি।

-আপনার কাজ নেই হসপিটালে?

-না, আজ নেই আর। তাইতো আজ পুরো দিন তোমার সাথে কাটানোর প্লান বানালাম। আজ তুমি আর আমি। আমার দিনটা আজ তুমিময় করে রাখতে চাই। আর তোমার দিনটা হবে সম্পূর্ণ আমিময়।

-কি করবেন আপনি?

-আপাতত একটা গিফট এনেছি সেটা পড়িয়ে দেই তারপর পরের ধাপে যাব। এই বলে টেবিলের উপর থাকা অনেকগুলো বক্সের মধ্যে একটা গয়নার বক্স হাতে নিল। তা দেখে রিমির চোখের ভয়টা নিমিষেই রাগে পরিনত হয়ে গেল। ও বলল, খবরদার কোন হিরে অথবা সোনার নেকলেস টেকলেস পড়াবেন বলে দিলাম।

আহসান বাকা হাসলো। তারপর বলল, এটা ওইসব সোনা, হিরের চেয়েও দামি। বলে রজনীগন্ধ্যার গাজরা বের করলো গয়নার বক্স টা থেকে। রিমি তব্দা খেয়ে গেল তা দেখে। আহসান গিয়ে রিমির চুলের খোপায় যত্ন করে গাজরা পড়িয়ে দিল। তারপর আস্তে আস্তে সমস্ত গয়নার বক্স থেকে একে একে সকল ফুলের তৈরি হাড়, কানের দুল, টিকলি ইত্যাদি রিমিকে পড়িয়ে দিতে লাগলো। রিমি হা করে সবটা দেখছে। এতোটায় বিস্মিত যে বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছে রিমি।

পরিশেষে আহসান বলল, পারফেক্ট। একদম ফুলবাগ লাগছে আমার রিমিকে। রিমির চোখ বেয়ে নোনা পানি গড়িয়ে পড়লো। আহসান যে এমন কিছু করবে তা রিমির ভাবনার ও অনেক বাহিরে ছিল। ও গাঢ় গলায় বলল, আপনি কেমন মানুষ বলুন তো?

আহসান রিমির চোখের পানি হাত দিয়ে মুছে দিয়ে বলল, আমি মানুষ না তো। আমি হচ্ছি আমার বউয়ের চোখে আস্ত এক ভ্যাম্পায়ার।

-আপনি কিভাবে জানলেন? কথাটা বলে জিভে কামড় বসায় রিমি।

-বউয়ের মনের কথা পড়তে না পারি, কিন্তু মুখের কথা শুনতে তো পারি। তুমি আমাকে কথায় কথায় ভ্যাম্পায়ার বলতে সেটা খুব স্পষ্ট শুনতে পেতাম। বুঝলে?

-আমি,ইয়ে মানে, হয়েছে কি…

-থাক কি হয়েছে না হয়েছে, আমতা-আমতি, আর শুনছি না। মেইন পয়েন্টে আসি এবার। Do you love me?

রিমির কলিজা ধক করে বারি খায়। চোখ বড় হয়ে আসে।

-এভাবে অক্ষিগোলক দুটোকে কষ্ট না দিয়ে বলে ফেল জলদি। ভালবাসো না আমায়? রিমি তাও কিছু বলছে না।
আহসান এবার বিরক্ত হয়ে বলে,আচ্ছা যাও বলতে হবে না। আমি চলে গেলাম। বলে পিছ ফিলে হাঁটা দিল আহসান। কিছুদূর যেতেই আহসান থমকে গেল রিমির কথায়।

– I love you Ahsan! I really love you…

#চলবে,,
(সরি ফর লেট। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন)
#চলবে,,
(জানেনই আমার অ্যাসাইনমেন্ট চলছে। তাই নিয়মিত গল্পে হাত দেওয়া হয়ে উঠছে না। তাই যখন সময় ও মুড দুটোই আমার কাছে থাকছে, তখনই আমি লিখছি গল্পটা।ভুল ধরিয়ে দেবেন। আস্তে আস্তে শেষের দিকে এগোচ্ছে গল্পটা। এটা এই মাসের মধ্যে শেষ হবে। তারপর আসছে সিজন২ ইনশা আল্লাহ। আপনারা আমার পাশে থেকেন এই আশাই করি। ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here