#কাছে_দূরে 🍁🥀
#moumita_meher
#পর্ব___৩৯
—-‘ স্যার, হীরের ঘর তো একদম ঠিকাছে! সেখানে সন্দেহজনক আমরা কিছুই পায়নি।’
আভিকের কথা শুনে চোয়াল শক্ত হয়ে এলো সাবাবের। চাপা আক্রোশে তার ভেতরটায় ঝড় শুরু হলো। মনি যে এবার বড় চালাকি করেই প্ল্যান করবে সেটা তার মাথায় আগে থেকেই ছিলো। কিন্তু প্ল্যান টা কি করলো?
তরী হীরের পাশ থেকে উঠে আসলো। আভিকের উদ্দেশ্যে সিরিয়াস ভঙ্গিতে বলল,
—-‘ কিছু পায়নি বললে চলবে না আভিক। কিছু তো একটা পেতেই হবে। আমার মনে হচ্ছে হীরের শরীরে কেমিক্যাল দেওয়া হয়েছে। দেখছো না, ক্রমশই ফ্যাকাশে রূপ ধারন করছে হীরের শরীর।’
সাবাব ধপ করে বসে পড়লো হীরের পাশে। হীরের ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া মুখ খানার দিকে তাকিয়ে দু’হাতে মুখ ঢাকল। তার মাথা কাজ করছেনা। হীরকে ইমিডিয়েট হসপিটালাইজড করা উচিৎ কিন্তু সে সেটাও করতে পারছেনা। তার হাত পা বাঁধা। সাবাবের অবস্থা দেখে সবাই মুখ চাওয়াচাওয়ি করছে। তরী দ্রুত পায়ে এগিয়ে গেলো সাবাবের দিকে। তার পাশে বসে কাঁধে হাত রেখে সান্ত্বনা দিয়ে বলল,
—-‘ ভেঙে পড়া চলবেনা সাবাব। হীরকে আমরা এখন হসপিটালাইজড করতে পারবো না ঠিকই কিন্তু বাড়িতে ডক্টর তো নিয়ে আসতেই পারি। ইভান, মাহদী তোমরা দুজন দ্রুত চলে যাও। মেডিসিন বিশেষজ্ঞ যেকোনো একজন ডক্টরকে ধরে নিয়ে এসো। হীরের চিকিৎসা এই মুহুর্তে খুবই প্রয়োজন। অন্যথা হিতে বিপরীত হতে সময় লাগবেনা। গো ফাস্ট।’
—-‘ ইয়েস ম্যাম।’
ইভান এবং মাহদী ছুটলো মধ্যরাতে ডক্টর খুঁজতে। তরী কিরন এবং আভিককে পুনরায় পাঠালো হীরের রুমে। তারাও তরীর আদেশে পূনরায় গেলো হীরের রুমের তল্লাশি করতে।
—-‘ সাবাব?’
তরীর ডাকে সাবাব মুখ তুলল। মাথা নীচু করেই জবাব দিলো,
—-‘ আমি এখনি মনির খুন করবো তরী। এক্ষনি।’
রাগে শরীরের রক্ত টগবগ করছে সাবাবের। সেটা তরী বেশ ভালোভাবেই উপলব্ধি করতে পারছে। সাবাব চাইলেই বিনা জিজ্ঞাসাবাদে মনির খুন করতে পারে। সেটা কোনো অসম্ভব ব্যাপার হবেনা সাবাবের কাছে। কিন্তু তাতে কি হবে? সব রহস্য তো রহস্যেই ডুবে থাকবে। কোনো কিছুই যে আর সামনে আসবে না। হীরও জানবেনা। কেউ জানবেনা সেই রহস্য।
—-‘ রিলাক্স সাবাব। এই মুহুর্তে এতোটা হাইপার হওয়া একদম ঠিক হবেনা তা আর কেউ না জানলেও তুমি তো জানো বলো? খুন তো তুমি যেকোনো ভাবে করতে পারো। কিন্তু তোমার তো প্রয়োজন রহস্যের সমাধান। সেটাই যদি জানতে না পারলে তাহলে আজ তোমার এই জীবনের কি মূল্য থাকবে বলো তো? তুমি চাইলেই সবাইকে এক নিমিষে শেষ করতে পারো। কিন্তু আখেরে কি পাবে? ফল কি হবে? শূন্য! তাই ধৈর্য্য রাখো। হীরের কথা যদি বলি তবে ওকে আরও চোখে চোখে রাখতে হবে আমাদের। আমাদের নয় তোমাকে। ওকে আরও কাছাকাছি রাখো সাবাব। নিজের আশেপাশে রাখো। দুনিয়ার এই মিছেমায়ায় কাউকে বিশ্বাস করোনা। আমাকেও নয়। আমিও যে তোমার ক্ষতি করছিনা বা করবো না সেই নিশ্চয়তা আছে তোমার কাছে? আমিই তো সেই নিশ্চয়তা দিতে পারছিনা সাবাব। তাই আরও সতর্ক হও। আমার মনে হচ্ছে শত্রু তোমার ঘরেই আছে। মনি তো বাইরের লোক।’
—-‘ মানে?’
—-‘ আপাতত মানে খুঁজতে যেওনা। সময় এলে নিজেই বুঝবে। আমাদের এই মুহুর্তে হীরকে নিয়ে ভাবা উচিৎ। আমার মনে হচ্ছে ওরা এতরাতে ডক্টর পাবেনা। তাই ভাবছি ঘরোয়া ট্রিটমেন্ট আমিই শুরু করবো।’
সাবাব দীর্ঘনিঃশ্বাস ফেললো। হীরের শীতল হয়ে থাকা হাতটা নিজের হাতের মুঠোয় নিয়ে শক্ত করে চেপে ধরল। করুন কন্ঠে বলল,
—-‘ আমার সবকিছুর বিনিময়ে হীরপাখি কে চাই তরী। সবকিছুর উর্ধ্বে…’
তরী সাবাবের কাঁধে হাত রেখে মৃদু হেসে বলল,
—-‘ আমরা সবাই আছি তো ডিয়ার। ওর যেমন শত্রু আছে, তেমন ভালোবেসে আগলে রাখারও তো লোক আছে বলো। ভরসা রাখো প্রিয়, যতক্ষণ বেঁচে আছি ওর জীবন রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। এতদিন এই লড়াই তোমার একার ছিলো, কিন্তু আজ থেকে এই লড়াই আমাদের পুরো গ্যাংয়ের। আমি আমাদের বাকি ফ্রেন্ড সার্কেলকে হীরের ব্যাপারে জানিয়েছি। ইভেন রিয়াদ স্যারের ব্যাপারেও জানিয়েছি। ওরা তো জানতোই না হীর রিয়াদ স্যার এবং কনিকা ম্যামের মেয়ে। ইভেন রিয়াদ স্যার যে তোমার বাবাই সেটাও জানতো না। ওদের সবটা বুঝিয়ে বলেছি। ওরা সবটা শুনে বলল আমরা আর এক সেকেন্ডও লেট করবো না। কালই আমরা হাজির হচ্ছি। এবার মনিকাও বুঝতে পারবে ব্রিগেডিয়ারদের পাওয়ার। জাস্ট ওয়েট এন্ড সি। রিয়াদ স্যারের মার্ডার হওয়ার পেছনের রহস্যের সমাধান খোঁজা ওদের কাছেও বড় একটা ড্রিম প্রজেক্ট সাবাব। আমরা সবাই তোমার সঙ্গে আছি। আজ থেকে এটা কেবল তোমার একার লড়াই নয়, আমাদের সবার লড়াই।’
সাবাব অবাক হয়ে তরীর কথা গুলো শুনল। মাথা নীচু করে দুই হাতে মুখটা একবার মালিশ করে বুক ফুলিয়ে নিঃশ্বাস ছাড়লো। অতঃপর জোর করে হাসার চেষ্টা করে বলল,
—-‘ থ্যাংক্স ইয়ার।’
সাবাবের ধন্যবাদে তরীর মুখ কুঁচকে এলো। সাবাবের পাশ থেকে উঠে হীরের পাশে গিয়ে বসল। তার ট্রিটমেন্ট শুরু করতে করতে বলল,
—-‘ ফ্রেন্ডেদের মাঝে ফর্মালিটি আমার পছন্দ নয় জনাব। আপনি কিন্তু ভালো করেই জানেন সেটা।’
সাবাব মৃদু হাসলো। মাথা নেড়ে বলল,
—-‘ এটা কিন্তু ফর্মালিটি নয়, সত্যি সতি থ্যাংক্স।’
—-‘ ব্যস ব্যস। অনেক হলো ধন্যবাদ। এবার হবু বউয়ের ট্রিটমেন্ট শুরু করতে দাও।’
সাবাব আবারও হাসলো। হীরের হাতটা শক্ত করে চেপে ধরেই পাশে সরে তরীকে বসতে জায়গা দিলো। তরীও বসলো। ধীরে সুস্থ ট্রিটমেন্ট শুরু করলো হীরের।
ঘন্টাখানিকের মাঝে ডক্টর নিয়ে হাজির হলো ইভান এবং মাহদী। অন্যদিকে কিরন এবং আভিক হীরের পুরো রুম তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কিছু পেলো না
সবাই ব্যস্ত হয়ে গেলো হীরকে নিয়ে। কিন্তু সাবাব হাল ছাড়লো না। ভোরের আলো ফুটতেই সে নিজেই গিয়ে হাজির হলো হীরের রুমে। ভোরের আলোয় অন্ধকার কেটে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে পুরো রুম। তবুও যেন মন হচ্ছে কিছু অস্বাভাবিকতা রয়েছে এখানে। কৃত্রিমতায় ছেপে আছে চারপাশ। ভোরের আলোর চেয়েও বেশি আলো এঘরে আটকা পড়েছে। সাবাব বাঁ হাতটা উঁচিয়ে ঘরের লাইট গুলো অফ করে দিলো। আর সঙ্গে সঙ্গে কৃত্রিমতা কেটে গেলো। এখন ঘরটা প্রকৃতির সাথে বেশ সখ্যতা গড়ে তুলছে যেন। সাবাব ধীরগতিতে পা ফেলছে। ঘরের প্রত্যেকটা জিনিস খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। রাতের তুলনায় ঘরটা কিঞ্চিৎ ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। সাবাব সুক্ষ্ম দৃষ্টি মেলে তাকালো। রাতে ছিলো, কিন্তু এখন নেই। কি নেই? কি ছিলো? কি নেই? কি নেই কি নেই?
—-‘ ফুল নেই।’
সাবাবের মস্তিষ্ক নাচ পেড়ে উঠলো। বুকের ভেতরটা ধক করে উঠলো। হ্যাঁ, সে ধরতে পেরেছে। সাবাব ফট করে চোখ দুটো বন্ধ করে আবারও আওড়ালো কথাটা,
—-‘ ইয়েস, ফুল নেই।’
ফুল নেই। রাতে রজনীগন্ধা ফুল দিয়ে হীরের রুম সাজানো ছিলো। তার তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে এসেছিলো তা স্বল্প সময়ের জন্য। তবে তাড়াহুড়োয় দ্বিতীয় বার লক্ষ্য করা হয়নি। সাবাব আর এক মুহুর্তও দাঁড়ালো না। দ্রুত পায়ে ছুটে গেলো নিজের রুমে। পুরো টিমকে ব্যাপার টা জানাতে হবে। কেমিক্যাল দেওয়া ফুলগুলো মনি সরিয়ে ফেলার আগে সেগুলো উদ্ধার করতেই হবে। যেকোনো উপায়ে।
—-‘ রাতে উল্টো পাল্টা খেয়েছিলে কিছু?’
সাবাব ভেতরে ঢুকেই থমকে গেলো। তার মা বসে আছে হীরের পাশে। হীরের ঘুম ভেঙেছে। বাকিরা পাশে জড়োসড়ো হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। সাবাবকে ভেতরে ঢুকতে দেখেই অসহায় দৃষ্টি নিক্ষেপ করল সবাই। সাবাব সবাইকে শান্ত হয়ে দাঁড়তে ইশারা করলো। মায়ের পাশে গিয়ে দাঁড়াতে দাঁড়াতে গলা খাঁকারি দিয়ে বলল,
—-‘ মা তুমি… মানে তুমি কি…’
—-‘ সাবাব, হীর যে অসুস্থ হয়ে পড়েছে তুই আমায় একবারও ডাকলি না কেন? হ্যাঁ? সকাল হয়ে গেলো এখনও জানানোর প্রয়োজন মনে করলি না মাকে!’
—-‘ মা! মা! তেমন কিছু নয় তো মা। আই মিন তেমন সিরিয়াস নয়। আসলে ওর হঠাৎ করে একটু মাইগ্রেনের প্রবলেম দেখা দিয়েছিলো! আ,,আসলে…’
—-‘ হয়েছে থাক। মাইগ্রেনের ব্যাথা হোক বা যেটাই হোক মাকে না বলে ঠিক করিসনি। দেখ একবার মেয়েটাকে! কেমন শুঁকিয়ে গিয়েছে মুখ খানা।’
মায়ের বকা খেয়ে সাবাব অসহায় চোখে হীরের দিকে তাকালো। হীরে ফ্যাকাশে মুখে সেই থেকেই তাকিয়ে ছিলো সাবাবের দিকে। সাবাব তাকাতেই সে চোখ সরিয়ে নিলো। সাবাব মাথা নীচু করে ভ্রু চুলকালো। পাশ থেকে তরী মা ছেলের কান্ড দেখে তাদের পানে এগিয়ে এসে বলল,
—-‘ আন্টি তুমি রাগ করোনা প্লিজ। আসলে হয়েছে কি আমি বলছি? বাড়ি ভর্তি লোকজন ছিলো বলেই সাবাব আর ভীড় বাড়াতে চায়নি হীরের কাছে। এই দেখো, আমরা কিন্তু সবাই ছিলাম। সারারাত ধরে তোমার মেয়ের ট্রিটমেন্ট করে তাকে কিন্তু সুস্থও করে দিয়েছি। তাই বলছি আর চিন্তা করোনা। তোমার মেয়ে এখন একদম ঠিক আছে। একটু ক্লান্ত বটে। কিন্তু বাকি সব পার্ফেক্ট। কি হীর? বেটার লাগছে তো এখন?’
শেষ কথাটা তরী হীরের দিকে তাকিয়েই জিজ্ঞেস করলো। হীর শুঁকনো হাসি দিলো। চোখ ঝাপটে বলল,
—-‘ হ্যাঁ বড়মা। তরী আপু ঠিক কথাই বলেছে।’
তরী নাজমা বেগমের হাত দুটো ধরে শান্ত কন্ঠে বলল,
—-‘ ভরসা রাখতে পারো আন্টি আমাদের উপর। আমরা থাকতে হীর পরীর কিছু হতেই পারেনা। কি সাবাব?’
সাবাব মাথা চুলকে মায়ের পানে তাকাল। নাজমা বেগম তরীর গালে আলতো করে হাত রেখে মুচকি হাসলেন।অতঃপর সাবাবের কান মুলে দিয়ে বললেন,
—-‘ বদ ছেলে। পরের বার যদি আবার এই কান্ড করেছিস তবে মার আছে তোর কপালে।’
সাবাব সটান হয়ে দাঁড়িয়ে গিয়ে চোখমুখ খিঁচে বন্ধ করে নিলো। বাচ্চাদের মতো চেঁচিয়ে উঠে বলতে লাগল,
—-‘ মা। মা। মা। আমার ইজ্জতের ফালুদা করোনা প্লিজ। এখানে সব আমার জুনিয়র মা!’
মা ছেলের কান্ড দেখে উপস্থিত সবাই মুখ টিপে হাসতে লাগলো।। হীর শুঁকনো মুখেও হেসে উঠলো। সেটা দেখে সাবাব লজ্জা পেয়ে মাথা নীচু করে নিলো। নাজমা বেগম হীরের পানে তাকিয়ে প্রশান্তির হাসি দিয়ে সাবাবকে ছেড়ে দিলেন। হীরের পাশে বসে তার মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বললেন,
—-‘ শরীর টা এখন কেমন লাগছে মা?’
হীর বড়মার হাতটা আগলে ধরে নিস্তেজ গলায় বলল,
—-‘ ভালো লাগছে বড়মা। তবে একটু ক্ষিধে ক্ষিধে অনুভব হচ্ছে।’
—-‘ ওমা ক্ষিদে পেয়েছে আগে বলবে না? আমি এক্ষনি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি লক্ষিটি।’
হীর স্মিত হেসে মাথা নাড়লো। নাজমা বেগম দ্রুত চলে গেলেন হীরের জন্য খাবার আনতে। বাকিরাও আর দাঁড়িয়ে থাকল না। নাজমা বেগমের পেছন পেছন তারাও চলে গেলো। সবাই বেরিয়ে যেতে সাবাব ধীরেপায়ে এগিয়ে এসে হীরের পাশে বসলো। সাবাব বসতেই হীরও একটু নড়েচড়ে উঠলো। সাবাব আঁড়চোখে হীরের দিকে একবার তাকিয়ে গলা খাঁকারি দিলো। হীর শান্ত কন্ঠে বলল,
—-‘ আমি ঠিকাছি। আমাকে নিয়ে আর বেশি ভাবতে হবেনা।’
সাবাব স্মিত হাসল। ভাবুক কন্ঠে জবাব দিলো,
—-‘ ভাবার লোক কি জোগাড় করে ফেলেছিস?’
—-‘ আমি কি তা বললাম নাকি? বললাম যে,আমি এখন ঠিকাছি। আ’ম ফাইন। তোমাকে আর আমাকে নিয়ে দুঃশ্চিন্তা করতে হবেনা।’
—-‘ আমিও তো সেটাই বললাম। আমি দুঃশ্চিন্তা করবো না মানে আরেকজন করবে। আর তুই সেই আরেকজনকে খুঁজে পেয়েছিস। কি তাইতো?’
—-‘ উফফ। যাও তো, তোমার সাথে কথাই বলবো না।’
—-‘ তার মানে কথা বলারও লোক পেয়ে গেছিস?’
হীর অসহায় চোখে তাকালো সাবাবের দিকে। সাবাব মনে মনে হাসছে। হীর জবাব দিচ্ছে না দেখে পূনরায় বলে উঠলো,
—-‘ ওহ,তাহলে এখন থেকেই প্রাকটিস শুরু হ্যাঁ? ভালো ভালো। বেশ ভালো।’
—-‘ যাও তো এখান থেকে। তোমার সঙ্গে কথা বলতে আমার মোটেই ইচ্ছে করছে না।’
—-‘ নতুন মানুষ জুটিয়েও ফেলেছিস এর মধ্যে? তুই এতো ফাস্ট জানা ছিলো না তো।’
হীর ঠোঁট উল্টে কাঁদো কাঁদো মুখ করে তাকালো। জবাবে কি বলবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছেনা সে। কিছু বললেও বিপদ না বললেও বিপদ। এতো অদ্ভুত কেন লোকটা?
সাবাব হীরের জবাবের প্রতীক্ষা না করে আচমকা হীরের দিকে ঝুঁকে গেলো। দু’জনের মাঝে এক ইঞ্চ পরিমানে জায়গা রেখে থেমে গেলো সাবাব। ঠোঁটের কোনে বাঁকা হাসির রেখা টেনে হীরের চোখে চোখ রাখলো। আকস্মিক ঘটনায় হীরের চোখ জোড়া কোটর ছেড়ে বেরিয়ে আসার উপক্রম হলো। ভয়ের দরুন চোখের পাতা অব্দি কাঁপতে লাগলো তার। কতক্ষণ চোখ পিট পিট করে ঢোক গিলল সে। আমতাআমতা করে কিছু বলতে নিলেই সাবাব তার কপালে এক গভীর চুমু একে দিলো। হীর অতিদ্রুত চোখ বন্ধ করে নিয়ে অনুভব করল সাবাবের গভীর ছোঁয়াকে। সে চোখ বন্ধ রেখেই অনুভব করল সাবাবের গাঢ় চাহনি। হীরকে চোখ বন্ধ করে নিতে দেখে মুচকি হাসল সাবাব। কিছুক্ষণ তার ভয়ার্ত মুখখানাকে পর্যবেক্ষণ করে হুট করে হাওয়া হয়ে গেলো সে। হীর চোখ খুলে দেখলো সাবাব আশেপাশে নেই। মানে সে অনেকক্ষন আগেই চলে গিয়েছে। হীর মৃদু হাসলো। হঠাৎ আবিষ্কার করলো তার ভীষণ লজ্জা লাগছে। হঠাৎ করে এই লজ্জা কোথা থেকে উদয় হলো জানেনা সে। লজ্জায় তার সারা শরীরে শিহরণ খেলে গেলো। সে দু’হাতে নিজের মুখ আড়াল করে লজ্জা ঢাকতে চেষ্টা করলো। যা আড়াল থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে সবটাই দেখলো সাবাব।
#চলবে_
[ বিঃদ্রঃ এতদূর কষ্ট করে পড়ে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট করবেননা। যদি ছোট্ট একটা মন্তব্যে আপনার মতামত জানাতে কষ্ট হয়। ধন্যবাদ। ]