সাত সমুদ্রের তিমির পর্ব শেষ

#সাত_সমুদ্রের_তিমির
পর্বঃ২৭(অন্তিম পর্ব)
#সুমাইয়া_আফরিন

অনু হতভম্বিত হয়ে তাকালো তার মায়ের দিকে।হাফসা বেগমের কথা শুনে মনে হচ্ছে সবকিছুই জানতেন তিনি। অনু বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে হাফসা বেগমের কথায়। অনুর পুরো পৃথিবীটা যখন পুরো অন্ধকার হয়ে আসছিল তখন কাকলি সরকার কান্না মিশ্রিত কন্ঠে বললেন,

‘টিভিটা অন করতো ফাইজা।’

ফাইজা কোনো কথা না বলে টিভি অন করল। টিভি অন করতেই ভেসে উঠল আলি উদ্দীন চৌধুরির আত্মগ্লানি ভরা মুখটা। অধিক সংকোচ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। তারপাশে দুইজন পুলিশ তার হাত ধরে আছে। তিনি বারবার মুখ ঢাকার চেষ্টা করছেন। তা অপরাধিত্ব ভরা মুখটা যেন তিনি কাউকে দেখাতে চাচ্ছেন না। একটু দুরেই রাফাতকে দেখতে পেল অনু। এক রাশ ঘৃনা নিয়ে তাকিয়ে আছে আলি উদ্দিন চৌধুরির নির্মম চেহারার দিকে।

অনু বুঝতে পারলো অনেকক্ষন আগে ঘটনাটি ঘটে গেছে। কারন রাফাত তো এখন বাসায়,তার সেখানে থাকার প্রশ্নই ওঠে না। অনু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে টিভির দিকে। এখানে কি হচ্ছে তা অনুর বোধগোম্য নয়। কিন্তু আলি উদ্দিন চৌধুরিকে যে পুলিশ গ্রেফতার করেছে তা স্পষ্ট।

কিন্তু কীভাবে করলো? কখনই বা করলো? কে তার সমস্ত অপকর্ম ফাস করলো? কিছুক্ষন পর একজন সাংবাদিক পুরো ঘটনাটির অংশবিশেষ খুলে বলতে লাগলো। সাংবাদিকের কথা শুনে অনু অবাকের চরম পর্যায়ে পৌছে গেল। চোখ পানি উঠে গেল তার।

কাকলি সরকার শব্দ করে কেদে দিলেন। তিনি আর কিচ্ছু সহ্য করতে পারছেন না। নিজের স্বামীর এত অপরাধ আর মেনে নিতে পারছেন না তিনি। অনুর সাথে ধর্ষনের মতো জঘন্য অপিরাধ করার পর এক রাশ ঘৃনা জমে গেছিল আলি উদ্দিন চৌধুরির উপর।

কিন্তু কাকলি সরকারকে খুব সহজেই ভুলিয়ে ভালিয়ে আপন করে নিয়েছিল আলি উদ্দিন চৌধুরি। কাকলি সরকার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রনে নিয়ে এসেছিল সে। কিন্তু আজকের এত জঘন্য অপরাধ সামনে আসতেই আলি উদ্দিন চৌধুরিকে মেনে নিতে পারছেন না তিনি। তার সাথে এতগুলো বছর কাটয়েছে এটা ভাবতেই গা ঘিনঘিন করে উঠছে তার।

অনু চোখ মুছে দৌড়ে উপরে উঠে রাফাতের ঘরের দিকে আগ্রসর হলো। রাফাতের ঘরে ঢুকতেই স্তব্ধ হয়ে গেল সে। রাফাত ড্যাবড্যাব করে তাকিয়ে আছে তার দিকে। এই মুহূর্তেই যে অনু আসবে তা রাফাতের জানা ছিল না। অনু কিছুক্ষন লজ্জিত হয়ে চেয়ে রইল রাফাতের দিকে। রাফাত একটা গেঞ্জি নিয়ে তাড়াতাড়ি শরীরে জড়িয়ে নিল। অনু গলা খাকারি দিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে বিব্রত গলায় বলল,

‘এসব কি হচ্ছে রাফাত? আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। আপনার বাবাকে অ্যারেস্ট করা হয়েছে তারপরেও কিছু বলছেন না কেন আপনি? আপনি তো আপনার বাবার সাথে মিলিত ছিলেন।’

রাফাতের ঠোটের কোনায় এক ফালি হাসি ঝুলতে দেখল অনু। রাফতের মুখস্রিতে যেন অন্য এক ভাবান্তর কাজ করছে। রাফাত হালকা গলায় বলল,

‘তুমি সারাজীবন আমার বাহিরটাই দেখলে, ভেতরটা দেখলে না অনু।’

‘আপনার মতো এত সুক্ষ্ম চোখ নেই আমার রাফাত৷ একটু খুলে বলবেন কি হচ্ছে? আপনি কি আপনার বাবার সাথে একটা খেলা খেললেন?’

‘যাক, তোমার মোটা মাথায় এইটুকু ধরেছে। আসলে মিস্টার আলি উদ্দিন চৌধুরি যেমন ছলনাময়ী তেমনই আমাকেও একটু ছলনাময়ী হতে হলো। তার ফাদে ফেলার উপায়েই তাকে ফাদে ফেলতে হয়েছে।’

‘আমার একটা কথা কিছুতেই মাথায় ঢুকছে না রাফাত, আপনার বাবা মাত্র একদিনেই আপনাকে বিশ্বাস করে নিল? তিনি তো অনেক বুদ্ধিমান এবপং বিচক্ষন একজন মানুষ, সে এত সহজে আপনাকে বিশ্বাস করে নিল?’

রাফাত তাচ্ছল্যের হাসি দিল। যেন অনুর কথায় ভালোই বিনোদন পেয়েছে সে। হাস্যজ্জল মুখ নিয়ে অনুর দিকে দুই কদম এগিয়ে গেল সে। অনুর কোমর জড়িয়ে ধরে নিজের সাথে মিশিয়ে নিল রাফাত। অনুর গালের সাথে গাল মিশিয়ে আবার সরিয়ে নিল নিজের মুখ। অনুর শরীরে এক ঠান্ডা শিহরন বয়ে গেল। অনু রাফাতের শ্লেষ্মা জড়ানো চোখের দিকে দ্বিতীয়বার আর তাকাতে পারলো না। রাফাত চাপা গলায় অনুকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,

‘অনু তোমার মধ্যে না এক অদ্ভুত শক্তি আছে জানো? কখনো অপারেশন থিয়েটারে ট্রাই করবে বুঝেছো?’

‘কি ট্রাই করবো?’

‘তুমি ইংজেকশন না দিয়েই মানুষকে অজ্ঞান৷ করে দিতে পারবে। আমার কথাটা এক___

‘রাফাত!’

অনু অগ্নি দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রাফাতের দিকে। রাফাতের এমন কথা অসম্ভব রেগে গেছে অনু। সে অপারেশন থিয়েটারে নিজের সর্বোচ্চ নিয়ে চেষ্টা করে এবং মাত্র কয়েকদিনেই অনেক ডাক্তার ও প্রফেসরদের প্রিয় হয়ে গেছে সে। সেই তার বিষয়ে রাফাত এমন কথা বলায় যথেষ্ট মাথা গরম হয়ে গেছে তার।

রাফাত জিভ কেটে এক চোখ দিয়ে পরখ করে নিল অনুকে। অনুর এমন রাগান্বিত চেহারা যেন রাফাতকে পাগল করে দিচ্ছে। চোখে একটু ঝাপসা দেখতে পাচ্ছে সে। রাফাত মাথা ঝাকিয়ে নিজের ধাতস্থ করে নিল। অনুর দিকে আবার তাকিয়ে দেখল তীক্ষ্ম দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে সে। অনুর রাগান্বিত হয়ে রাফাতকে বলল,

‘কোমড় থেকে হাত সরান।’

রাফত যেন আরো জাপটে ধরল অনুকে। অনু বিরক্ত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করে দিল। রাফাত অনুকে বাধা দিয়ে বলল,

‘অনু ছোটাছুটি তুমি এর আগেও অনেকবার করেছো কিন্তু পারোনি, তাই একইভুল বারবার কেন করো বলোতো?’

অনু থেমে গেল। দাঁত কিটমিট করতে করতে বলল,

‘এইসব কথা ডাস্টবিনে ফেলুন আর আমাকে বলুন এইসব কোত্থেকে কি হলো?শুরু থেকে ষেষ পর্যন্ত বলবেন।’

রাফাত এক দীর্ঘশ্বাস ফেলে অনুকে পুরো ঘটনা বলতে শুরু করল,

‘যখন আমি ঢাকায় আসি মানে দুই বছর আগে যখন আসি তখনই সব প্ল্যান তৈরি করে নেই আমি। বাবার সাথে আবার কথ বলতে শুরু করি। তার বিশ্বাস প্রথমে আমার উপর স্থাপিত না হলেও ধীরে ধীরে তিনি আমাকে বিশ্বাস করে শুরু করে। প্রায় এক বছর তার প্রত্যেকটা কথা অনুসরন করে গেছি আমি। বাবা আমাকে পুরোপুরিভাবে বিশ্বাস করে উঠতে পারেনি যার কারনে তার ব্ল্যাকমানির কোনো খবরই তিনি আমাকে দেয়নি। কিন্তু যখন আমাকে তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করলেন আস্তে আস্তে সব খবর আমাকে দিতে শুরু করলেন। আমি আরো উৎসাহের সঙ্গে তার ব্ল্যাকমানির হিসাব নিকাশ করতে লাগলাম। বাবাকে আমার উপর বিশ্বাস স্থাপন করার জন্য দুই এক বার আমাকেও বাজে কাজ করতে হয়েছে কিন্তু যথাসম্ভব চেষ্টা করেছি না করার। বাবা যখন জানতে পারলো তুমি তার বিরুদ্ধে প্রমান জোগাড় করছো তখন বাবা তোমাকে মেরে ফেলতে চাইছিল কিন্তু আমি বাবাকে বলি যে তোমাকে ব্যাবহার করে আমরা রেকর্ডিংটা নিতে পারবো। বাবা আমার কথা বিশ্বাস করে আমাকে বলল তোমার সাথে ভালোবাসার নাটক করতে। আমি ঠিক মতো কাজ করছি না তা দেখার জন্য নিজের লোকও লাগিয়ে দেন তিনি। কিন্তু আমার পার্ফেক্ট অ্যাক্টিঙে কেউ কিচ্ছু বুঝতে পারেনি। তখন বাবা আমার উপর পূর্ণ বিশ্বাস করল। তিনি এই বাড়িতে এসে তোমার ভাবভঙ্গি দেখে বুঝতে পারলেন তুমি তার জন্য নিরাপদ না। তাই তোমাকে মেরে ফেলাম হুকুম দিল আমায়। তাই আমি তার সামনে তোমায় কিডন্যাপ করে ওই বাড়িতে বন্দি করে রাখলাম আর তিনি মনে করলেন আমি তোমায় মেরে ফেলেছি। বাবা আমায় অনেক বিশ্বাস করে ফেলেছিল তাই তোমাকে মারার প্রমানটাও চায়নি সে। তোমাকে বন্দি করে রেখে আমাকে অনেক কাজ করতে হয়েছিল। বাবার সব ব্ল্যাকমানির প্রপাটি ছিল তার সেক্রেটারি জনসনের কাছে। তাকে এক কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে সব প্রপাটি নিয়ে নিলাম আমি। আর এতদিনে বাবার পক্ষে থাকা সব পলিটিশিয়ানদের আমার হাতের মুঠোয় করে নেই আমি। তাই পুলিশে দেওয়ার সময় কোনো পল্টিশিয়ানদের খুজেও তিনি পাননি। তাই আজকে তাকে কারাগারে কাটাতে হচ্ছে।’

অনু রাফাতের এমন কর্মঠ প্ল্যান শুনে স্তব্ধ হয়ে গেল। অনু শুকনো ঢক গিলে রাফতকে বলল,

‘দুই হাজার মানুষের প্রান সংশয়ে ফেলে কি শান্তি পেলেন তিনি?’

‘বাবা নিঃসন্দেহে একজন অমানুষ এবং খারাপ মানুষ। ওই কম্পানিতে তিনি সেইসব মানুষজনকে নিয়োগ করতেন যারা বেকার ছিল, তাদেরকে নিয়োগ করে অল্প বেতনে কম্পানির কঠনতম কাজ করাতেন তিনি। বাবার একজন সাইন্টিস্ট ফ্রেন্ড আছে, তিনি একটি কেমিকেল আবিষ্কার করে যা পরীক্ষা করা হয় ওই নির্দোষ আর অসহায় মানুষগুলোর উপর। তাতেই এতজন মানুষের মৃত্যু হয়।’

‘সেই মানুষগুলোর ক্ষয়পূরন কে দেবে?’

‘এটা কেমন কথা? অবশ্যই আমাকে দিতে হবে। অবশ্য পুরো টাকাটা আমাকে দিতে হবে না কারন বাবার একাউন্টে প্রায় সাতানব্বই কোটির মতো টাকা আছে । সেই টাকা প্লাস আরো টাকা দিতে হবে আমায়।’

‘আজব তো! আপনি কেন দেবেন টাকা?’

‘তো এতজন মানুষের কি হবে? আর বাবার টাকা দিয়ে তো আর সব হবে না যার কারনে জেল থেকে ছাড়াও পাবে না সে। আমি সেই মানুষগুলোকে টাকা দেবো কিন্তু সেটা বাবার জন্য নয়। আমার একটা দায়িত্ব আছে তাই দেবো।’

‘আপনার বাবার ফ্রেন্ডের কি হবে?’

‘উনি পালাতে গেছিলো তাই কোনো উপায় না পেয়ে তাকে ইনকাউন্টার করতে বাধ্য হয়েছে পুলিশ।’

অনু সব সত্য শুনে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। তার অগোচরে যে রাফাত এত কাজ করেছে এবং এতগুলো মানুষদের ন্যায় বিচার দিতে পেরেছে তা ভাবতেই এক প্রশান্তি পাচ্ছে সে। এক বিষন্ন আনন্দে ভরে উঠল তার মন। কিন্তু বেশিক্ষন আর টিকলো না তার এই আনন্দ। অনু মন খারাপ করে বলল,

‘আর আমার রাফাত? আমার বিচারের কি হবে?’

‘ওহো,তোমাকে তো বলতে ভুলেই গেছি। তোমার বাবা রেকর্ডিংটা দিতে রাজি হয়েছেন। কালকে বাবাকে কোর্টে হাজির করা হবে। সেখানেই তার শাস্তি নিশ্চিত হবে।’

অনু খুশিতে রাফাতকে জড়য়ে ধরল। রাফাত অনুকে আবদ্ধ করে নিল তার বাহুডোরে। অনুর ইচ্ছে করছে রাফাতের এই ভালোবাসাতেই আকড়ে থাকতে। অনু চোখ বন্ধ করে ফেলল। এই জঘন্য পৃথিবীটা কিছুক্ষন ভুলে থাকতে চায় সে।

______________

অনু ক্লান্ত শরীরে হাতে অ্যাপ্রোন ঝুলিয়ে হসপিটাল থেকে বেরিয়ে আসলো। রাফাত গাড়ির সাথে হেলান দিয়ে অপেক্ষা করছে অনুর। অনুকে দেখতে পেয়েই এক ফালি হাসি ফুটে উঠল তার মুখে। অনু রাফাতের কাছে যেতেই রাফাত বলে উঠল,

‘তো ডাক্তার ম্যাডাম, কাজ শেষ।’

‘জ্বি, রাফাত সাহেব,শেষ।’

‘তো যাওয়া যাক।’

‘হুম।’

অনু গাড়িতে উঠে বসলো। রাফাত গাড়ি চালাতে শুরু করল। অনু জানালার দিকে তাকিয়ে রইল। বাইরে হঠাৎ করেই বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। এক বিষন্ন আনন্দ নিয়ে অনু বৃষ্টিপাত দেখছে। অসম্ভব ভালো লাগছে এই বৃষ্টি। বৃষ্টির প্রত্যেকটা পানির ফোটা যেন ছেদ করে যাচ্ছে তার ছোট্ট হৃদয়। পুরোনো কথাগুলো খুব মনে পড়ছে তার।

আলি উদ্দিন চৌধুরির জাবজ্জীবন কারাদন্ড হওয়ায় কাকলি সরকার অনেক ভেঙে পড়েন। কিন্তু অনু আস্তে আস্তে সবটা ঠিক করে দেয়। কাকলি সরকার এক মানুষিক রোগে ভুগতে গেলে অনু খুব সহজেই বের করে আনে তাকে। প্রায় পাঁচ বছর অতিবাহিত হয়ে গেছে তার জীবনে। এখন অনু মোটামোটি একজন ভালো ডক্টর। অনেক প্রেশেন্ট আসা যাওয়া করে তার কাছে। অনুর আর রফাতের এক ছোট কন্যা সন্তান আছে, তার বয়স মাত্র চার বছর। রাফাত অনেক ভেবেচিন্তে তার নাম রেখেছে মারিয়া জান্নাত। নামটা অনুরও পছন্দ হয়েছে তাই আর দ্বিধা করেনি সে। ইরা,লারা আর মিমিও এখন বিবাহিত। বৈবাহিক জীবনে অনুর মতোই তারা অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়েছে কিন্তু তবুও অনুর সাথে অনেক সময় কাটানো হয় তদের। সায়মা এখন অনেকটা বদলে গেছে। জীবনে যে কর্মঠ হতে হবে তা এখন বুঝতে পারছে সে। কিন্তু বর্তমানে তার কর্মঠ না হলেও চলবে, অনেক কেয়ারিং হাজবেন্ট পেয়েছে সে। রাফাতকে মন প্রন দিয়ে ভালোবেসেছিল সে কিন্তু রাফাত যে অন্য কারপ এটা বুঝতে বেশি দেরি হয়নি তার। তাই রাফাতকে খুশি দেখতে খুব তাড়াতাড়িই তার জীবন থেকে চলে আসে সে। সায়মার হাজবেন্ট খুব কেয়ারিং হলেও অনেক রাগী। রাগী তো হবেই কারন সে রাফাতের বন্ধু। সায়মা বাঘের মতো ভয় পায় তাকে। বলতে গেলে সায়মা সাত মাসের প্রেগনেন্ট। যার কারপ্নে যথেষ্ট সেবয় আছে সে।

হঠাৎ এক মাঠের সামনে গাড়ি থামাতেই অনু চমকে উঠল। অবাক দৃষ্টিতে রাফাতের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞাসা করল,

‘এখানে কেন গাড়ি থামালেন রাফাত?’

রাফাত গাড়ি থেকে নেমে অনুকেও গাড়ি থেকে নামিয়ে দিল। বৃষ্টি পড়ছে কিন্তু এতে কোনো ভাবান্তর নেই রাফাতের। মুশলধারের বৃষ্টিতে ভিজে কাতর হয়ে গেল অনু আর রাফাত। রাফাত অনুকে নিজের বাহুডোরে আবদ্ধ করে বলল,

‘আজ তোমাকে অনেক কাছে পেতে ইচ্ছা করছে অনু। এই বৃষ্টিতে তোমার সাথে অনেক ভিজতে ইচ্ছা করছিল। আসো না, একটি ভিজি এই পানির বন্যায়।’

অনু চোখ বন্ধ করে জাপটে জড়িয়ে ধরল রাফাতকে। রাফাত অনায়েসে আপন করে নিল অনুকে। এই জীবনে আর অনুকে ছাড়া থাকতে চায় না সে। অনু আর মারিয়াকেই তার জীবন বানাতে চায় সে। রাফাত একটা জিনিস সবসময় চেয়ে এসেছে ঢাকায় আসার পর যেই সুন্দরী রমনীর প্রেমে মাতাল হয়েছিল সে, সেই রমনী যে অনু তা কখনো অনুকে জানতে দিতে চায় না সে। সারাজীবন অজানাই রাখতে চায় এই রহস্য।

(সমাপ্ত)

(ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here