#খেয়া_ঘাটের_প্রেম
#লেখনী_আলো_ইসলাম
#পর্ব_৪
“”তাসনু আয়নায় নিজের চেহারা দেখে জোরে চিৎকার করে উঠে। তারপর রাগে দুইহাত মুঠো করে ফুসতে থাকে। তাসনুর মুখে সেই মোটা গোফ আঁকা সাথে মাথার দুইপাশে শিং এর মতো করা৷ একদম বাজে দেখাচ্ছে তাসনুকে তাতে। যাকে বলে ভয়ংকর 😬
— তাসনু ওইভাবেই ওয়াসরুম থেকে বের হয় এক বালতি পানি নিয়ে। তারপর আয়ানের রুমে গিয়ে আয়ানের উপর সব পানি ঢালে। আয়ান বেচারা তো নিশ্চিন্তে ঘুমাতে ছিল। তার উপর পানি পরাতে বৃষ্টি আসছে বৃষ্টি আসছে বলে জোরে চিৎকার করে উঠে তারপর লাফ দিয়ে উঠে বসে পড়ে। আয়ানের কাজে তাসনু হতভম্ব হয়ে যায়। বলে কি এই ব্যাটা ঘরে মধ্যে নাকি বৃষ্টি আসছে তাই ভেবেই তাসনু জোরে হাসতে শুরু করে।
— আয়ান একবার উপরে তাকাচ্ছে আর একবার নিজের দিকে। তারপর মনে মনে ভাবে উপরে তো ঠিকই আছে তাহলে পানি আসলো কোথায় থেকে। ঘুম থেকে উঠে তার মাথা যেনো কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে৷ সামনে কারো হাসি শব্দ শুনে সামনে তাকিয়ে দেখে তাসনু হেসেই যাচ্ছে। আয়ান বুঝতে পারে কি হয়েছে আসলে। তারপর তাসনুকে ভালো ভাবে খেয়াল করে আয়ানও জোরে হেসে উঠে
–” আয়ানের হাসি দেখে তাসনু থেমে যায়৷ তারপর রাগী লুক নিয়ে তাকায়। আয়ান অনেক কষ্টে হাসি থামিয়ে বলে তোমাকে একদম দৈত্য রানী লাগছে কাদা সুন্দরী। তাসনু এবার আরো রেগে যায় তারপর বলে নিজেকে দেখেছো কেমন দেখাচ্ছে ভিজে বিড়াল লাগছে। আর তোমার কথা গুলো শুনে মনে হচ্ছে বিড়াল মিও মিও করছে। আয়ানের হাসি এবার থেমে যায়। বলে কি এই মেয়ে৷ তারপর বলে সে আমাকে যেমন দেখাক সমস্যা নাই। কিন্তু অন্য কেউ তোমাকে এই লুকে দেখলে নিশ্চিত অক্কা পাবে ভয়ে। আগে মানুষ হয়ে আসো যাও।।তাসনু এবার রাগে হাতের বালতি আয়ানের দিকে ছুড়ে মেরে বলে তোমাকে তো আমি পরে দেখে নেবো।
— আয়ান বালতিটা ধরে ফেলে তারপর বলে আমি দৈত্য দেখে ভয় পাই না তাই যখন ইচ্ছে দেখা দিও 😄।
“” অন্যদিকে ঘটেছে আরেক ঘটনা 😁
— নুসরাত ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হতে যায়। সে না দেখেই মুখে ফেসওয়াস লাগায়। তারপর যখন আয়নার দিকে তাকায় দেখে তার হাত সহ পুরো মুখে কালিতে ভরা। নুসরাত রাগ জোরে চিৎকার দেয়। তারপর বলে তুর্যের বাচ্চা তোরে তো আমি খাইছি আজ। তাই বলে কাদো কাদো হয়ে বসে পরে৷ এখন কালি উঠাবে কি করে । মনে মনে ফুসতে থাকে সে।
— অনু এখনো ঘুম থেকে উঠেনি। সে ঘুমের মধ্যে অনুভব করে তার শরীররে কিছু একটা ঘুরে বেড়াচ্ছে আর সুড়সুড়ি দিচ্ছে।তারপর অনুর গালে চলে আসে ওইটা অনু হাত দিয়ে ধরে আলতো চোখে চেয়ে দেখেই ওর চোখ ছানাবড়া। কারণ ওর হাতে একটা তেলাপোকা আছে 🤣। অনু ভয়ে ছুড়ে ফেলে তেলাপোকাটা সাথে সাথে উঠে বসে। তারপর দেখে তার বিসানার চারিপাশে কয়েকটা তেলাপোকা ঘুরে বেরাচ্ছে। বেচারা তেলাপোকা দেখে ভীষণ ভয় পাই। সাথে সাথে জোরে চিৎকার দেয়৷ অনুর চিৎকারে জমিদার বাড়ি যেনো কেপে উঠে।
— সবাই এক ছুটে অনুর ঘরে চলে আসে। এসে দেখে অনু সারা ঘর ছুটে বেরাচ্ছে। নাহিদা বেগম বলে কি হয়েছে অনু চিৎকার করছিস কেনো৷ অনু দৌড়ে গিয়ে নাহিদাকে জড়িয়ে ধরে বলে ছোটমা তেলাপোকা।। আমার ঘরে এতো তেলাপোকা কোথায় থেকে আসলো। হাপাতে হাপাতে বলে অনু। নাহিদা দেখে সত্যি বেশ ক’টা তেলাপোকা ঘুরে বেরাচ্ছে। তাসনু বলে সব ওদের কাজ। ওরাই এই সব করেছে। নাহিদা বলে আহ তাসনু কি বলছিস এই সব৷ ওরা কেন তেলাপোকা নিয়ে আসতে যাবে। হয়ত ভালো ভাবে ঘর পরিস্কার করা হয়নি তাই হয়ত চলে আসছে।
— নুসরাত বলে তুমি জানো না মা৷ সব ওই ব্যাটাদের কাজ। ওদের যা অবস্থা করব না বুঝবে ঠেলা। তাসনু বলে রিলাক্স বনু৷ এবাএ বুঝবে তাসনু কি জিনিস৷ আমার সাথে পাংগা নেয় দেখাচ্ছি মজা৷ নাহিদা বলে বেশি বাড়াবাড়ি করবি না তোরা বলে রাখছি৷ ওরা আমাদের মেহমান কোথায় তাদের খেয়াল রাখবি তা না ওদেরই পিছে লাগছিস। অনু বলে ওরা যদি আমাদের পিছে না লাগতো তাহলে তো কিছুই হতো না। কিন্তু এখন আমাদের কি দোষ। তুমি এর মধ্যে এসো না তো ছোটমা। নাহিদা বলে যা ইচ্ছে কর তোরা নাই এসবের মধ্যে নাই৷ পরে দাদিমা বকা দিলে আমি কিন্তু তোদের দিকে নাই বলে রাখছি।
—————————–
– রাতে আঁখি আমজাদ চৌধুরী আর সামিরা একসাথে ডিনার করছে। সামিরা বলে উঠে ভাইয়ার সাথে কথা হয়েছে তোমার মা। আঁখি বলে হয়েছে অল্প। ওইখানে খুব নেটের সমস্যা তাই তেমন কথা হয়নি। তোর নানাভাই ওদের থাকতে দিয়েছে জানিস উল্লাসের সাথে বলে উঠে কথাটা আঁখি। সামিরার মুখে হাসি আসে শুনে৷ কিন্তু আমজাদ চুপচাপ খেয়ে যাচ্ছে।
— সামিরা বলে মা আমরা কবে যাব নানু বাড়ি।খুব ইচ্ছে করছে আমার নানু বাড়ি ঘুরতে। প্রথমবার যাব ইসস কত মজা তাই না। আমার ফ্রেন্ড কত গল্প করে তাদের নানু বাড়ির৷ নানু বাড়ি খুব মজার হয় তাই না মা। আঁখির মন খারাপ হয়ে যায় সামিরার কথা শুনে। আমজাদ বুঝতে পেরে বলে চুপচাপ খাও সামিরা। খাওয়ার সময় কথা বলতে হয়না জানো না। সামিরা বুঝতে পেরে চুপ মেরে যায়।
— আঁখি অর্ধেক খেয়ে উঠে যায়। সামিরা বলে সরি বাবা বুঝতে পারিনি মার মন খারাপ হয়ে যাবে। নানু বাড়ির কথা বললেই মা মন খারাপ করে তাই আমি আর বলিনা।।ভাইয়াকে নিয়ে উঠলো কথা তাই বলে ফেলেছি। আমজাদ চৌধুরী হেসে বলে মন খারাপ করিস না৷ একটু পর দেখবি আবার ঠিক হয়ে যাবে সব।
— তাসনু রান্না ঘরে যায় সাথে অনু নুসরাত। অনু বলে রান্না ঘরে কেনো নিয়ে আসলে আমাদের। তাসনু বলে বেশি কথা না বলে বাইরে দেখ কেউ আসছে নাকি। নুসরাতকে বলে ডালের জায়গাটা নিয়ে আসতে। নুসরাত কিছু না বলে নিয়ে আসে ডালের জায়গাটা। অনু বাইরে দেখছে আবার তাসনুর কাজ। কি করতে চাইছে। তাসনু এবার একটা কাগজে মোড়ানো কি একটা বের করে তারপর ডালে ছিটিয়ে দেয়। নুসরাত বলে কিসের পাউডার এটা।
— অনু বলে কি মিশালে এটা। তাসনু একটু রহস্য হাসি দিয়ে বলে একটু পরেই বুঝতে পারবি। আমার সাথে পাংগা নেওয়া। ব্যটা এবার দোড়ায় ফের পাবে না। চল সবাই। তাই বলে রান্নাঘর থেকে চলে আসে তারা।
— সবাই খেতে বসেছে শুধু রায়হান শেখ আর আফজাল শেখ নেই। রায়হান শেখ এখন থেকে ঘরেই খায় আয়ানদের জন্য আর আফজাল শেখ কাজের জন্য বাইরে গেছে দুদিন। আসরাফ শেখ এখনো ফিরেনি৷ আয়ান রিক তুর্য তাসনু নুসরাত অনু নাহিদা বেগম আর নুরজাহান বিবি আছে। আয়ান খাচ্ছে আর তাসনুর দিকে দেখছে। আজ এতো চুপচাপ ক্যান বিচ্চু গুলা। আয়ান আর বেশি কিছু না ভেবে খেতে থাকে৷ তারপর তাসনু কে বলে ডালের জায়গাটা দিতে৷ তাসনু একটা হাসি দিয়ে ডালের জায়গাটা দিয়ে দেয়৷ আয়ান তো বেশ অবাক৷ এতো ভালো ব্যবহার আজ।
— রিক তুর্য ও বেশ অবাক হচ্ছে তাদের কাজে। তার আয়ান ডাল তুলে নেয় রিক তুর্য ও সাথে নেয়।
“” আয়ান খাওয়া মাঝে থেমে যায় কারণ তার পেটে হঠাৎ মোচড় দিয়ে উঠে। আয়ান বলে আসছি আমি তাই বলে উঠে যায়৷ তাসনু অনু নুসরাত বুঝতে পারে ব্যাপারটা তাই তাদের মুখে হাসি ফুটে উঠে। একটু পর রিক বলে আমিও আসছি৷ নাহিদা বলে আরে শেষ করে যাও রিক বলে এসে শেষ করছি ছোট মামি৷ সেও চলে যায়।
— তাসনুরা এবার তুর্যের দিকে তাকিয়ে আছে। এবার এর পালা। তখনই তুর্য উঠে দাঁড়ায়। তারপর সেও আসছি বলে দৌড় লাগায়। নুরজাহান বিবি বলে কি হলো বলতো। নাহিদা বলে কি জানি বুঝলাম না।
— আয়ান এসে আবার খেতে বসে৷ বসার এক মিনিটের মাঝে আবার দাড়িয়ে যায় তারপর আবার দৌড় লাগায়৷ এবার তাসনুরা জোরে হেসে উঠে। নাহিদা বলে কি হলো বলতো৷। তাসনু বলে আমরা কি জানি৷ ওদের জিজ্ঞেস করো। তাই বলে ওরা খাওয়া শুরু করে।
— এইদিকে আয়ান বাথরুমে যাচ্ছে আর আসছে। রিক আর তুর্য দু’জন যেনো প্রতিযোগিতা লাগিয়েছে। রিক গেলে তুর্য দরজা ধাক্কায় বাথরুমের আর তুর্য গেলে রিক৷ 🤣তাসনুরা তো তাড়াতাড়ি করে খাওয়া শেষ করে এসে এদের কান্ড দেখে হাসতে হাসতে শেষ।
— আয়ান এবার বিসানায় শুয়ে পড়ে আর চলার শক্তি তার নেই৷ রিক তুর্যর অবস্থা সেম। কিছুক্ষণ পর আবার সবাই একসাথে দৌড় লাগায়।
— তাসনুরা তো হাসতে হাসতে লুটোপুটি খাচ্ছে। তারপর তাসনু বলে দেখে এবার কেমন লাগে৷ আমার নাম তাসনু হু😎😎😎৷ অনু বলে বেশি হয়ে গেছে মনে হচ্ছে৷ বেচারারা কত কষ্ট পাচ্ছে। নুসরাত বলে কি ব্যাপার তোর দরদ মনে হচ্ছে উতলে পড়ছে ওদের উপর। অনু আর কিছু বলে না……
#খেয়া_ঘাটের_প্রেম
#লেখনী_আলো_ইসলাম
#পর্ব_৫
‘” আয়ান রিক তুর্য সবাই শুয়ে পড়েছে। আর চলার শক্তি নেই তাদের, সবার আধেক দেহ বিসানার বাইরে কিন্তু মাথা তিনজনের এক জায়গা দিয়ে। আয়ান বলে ভাই আমি আর যেতে পারব না। যদি ডাক আসে তোরা যাস। রিক তুর্য চোখ বন্ধ করে ছিল আয়ানের কথা শুনে বড় বড় চোখ করে তাকায়।
— রিক বলে শালা পাগল হয়ে গেলো নাকি। ওর ডাক আসলে নাকি আমরা যাব। আয়ান বলে মাথা কাজ করে না রে ভাই। এনার্জি শেষ তাই বলে দুইহাত মেলে দেয়। তাসনুরা বাইরে থেকে ওদের কথা শুনছিল আর হাসতে ছিল। বেচারাদের অবস্থা আসলেই অনেক খারাপ। নুসরাত একটা ট্রে তে তিনটা গ্লাসে স্যালাইন লেবু শরবত নিয়ে আসছে। সাথে তাসনু অনুও আছে। তাসনুদের দেখে আয়ান রিক তুর্য তাদের লুজ্ঞি টাওয়াল ঠিক করে। রিক তুর্য লুজ্ঞি পড়ে আর আয়ান একটা টাওয়াল জড়িয়ে আছে। তাসনুর বেশ হাসি পাচ্ছে তাদের কাজে।
— অনু বলে ভাইয়া এই শরবতটা খেয়ে নেন ভালো লাগবে। সাথে সাথে আয়ান রিক তুর্য লাফ দিয়ে উঠে বলে না না বইন মাফ চাই তোমাদের হাতের কিছু খাইতাম না। যাওয়ার মতো আর শক্তি নাই৷ শেষ আমি তাই বলে আয়ান আবার শুয়ে পড়ে। তাসনুরা মুখ টিপে হাসে। নুসরাত বলে আরে ভাইয়া কিছু নাই এতে বিশ্বাস করুন। খেলে কিন্তু আপনাদের ভালো লাগবে। রিক বলে তোমাদের বিশ্বাস নাই৷ আবার কি না কি মিশায় নিয়ে আসছো এবার মনে হয় একবারে উপরে যেতে হবে আমাদের।
— অনু বলে ওই কি আবোলতাবোল বকছেন হ্যাঁ। আমরা কিছু করিনি হু। তুর্য বলে আমরা কি বলেছি তোমরা করেছো।। নুসরাত এবার ঘাবড়ে যায়। তাসনু বলে এতো কথা কিসের ইচ্ছে হলে খান আর নাহলে যাওয়া আসা করেন। এই চল তোরা৷ এই জন্য কারো ভালো করতে নেই। আয়ান বলে তুমি করবে ভালো আমাদের তাহলে হয়েছে৷ এর থেকে সাপকে বিশ্বাস করা ভালো।
— এর মধ্যে নাহিদা বেগম আসে। তারপর এদের থেকে শরবতের গ্লাস গুলো নিয়ে তাসনুদের যেতে বলে। ওরা আর কিছু না করে বলে চলে যায়। নাহিদা বেগম বলে তোমাদের অনেক কষ্ট হয়েছে আর হচ্ছে তাই না। ওদের জন্য আমি লজ্জিত। এমন কাজ করবে ভাবি নাই৷ এই শরবত গুলো খেয়ে নাও ভালো লাগবে এটা আমি করে দিয়েছি ওদের দিয়ে৷ কিছু নেই এতে।
— আয়ান বলে আরে মামি তুমি এমন করে বলছো কেনো। আর ওরা যা করেছে তার হিসেব না হয় পরে হবে। তারপর শরবত গুলো খেয়ে নেই ওরা। এইদিকে নুরজাহান বিবি আয়ানের ঘরে আসার সময় সব শুনতে পাই। তাই সে আর আয়ানের ঘরে না গিয়ে তাসনুদের ঘরে যায়। তাসনুরা ঘরে এসেই শুয়ে হাসাহাসি করতে ছিল। নুরজাহান বিবিকে দেখেই ওদের হাসি বন্ধ হয়ে যায় তারপর উঠে দাঁড়ায় সবাই।
— নুরজাহান বিবি যে খুব রেগে আছে দেখেই বুঝতে পারছে৷ নুসরাত বলে আজ তো আমরা গেছি। তাসনু কনুই দিয়ে গুতা মেরে বলে চুপ। নুরজাহান বিবি বলে আমি তোমাদের থেকে এমনটা আশা করিনি। ওরা আমাদের মেহমান আর তোমরা ওদের দেখাশোনা না করে উল্টো ওদের পিছে পড়েছো। কি অবস্থা করেছো ওদের দেখেছো। তোমরা আর কেউ ছোট নেই তাহলে এই সব ছেলেমানুষী করার মানে কি।
— তাসনু বলে আসলে দাদিমা হয়েছে কি.. নুরজাহান বিবি ধমক দিয়ে বলেন চুপ একটাও কথা শুনতে চাই না আমি। এখনই আমার সাথে যাবে তোমরা আর ওদের কাছে ক্ষমা চাইবে৷
“””নুরজাহান বিবির কথা শুনে তাসনু অনু নুসরাত তিনজনই চমকে উঠে। অনু বলে ঠিক হয়েছে৷ আগেই বলেছিলাম এত বাড়াবাড়ি না করতে৷ এখন যাও মাফ চাও গিয়ে। তোমাদের জন্য এখন মান সম্মান সব শেষ হবে। নুসরাত বলে অনুর বাচ্চা তোরে তো আমি পরে দেখছি ভিতুর ডিম একটা। তখনই নুরজাহান বিবি বলে কি হলো চলো। তাসনু বলে হ্যাঁ হ্যাঁ যাচ্ছি তো তাই বলে বিড়বিড় হবে হাটে তারা। নুরজাহান বিবি বলে জোরে চলো৷ এবার ওরা জোরে হাটা ধরে।
— আয়ানের ঘরে এসে দাঁড়ায় সবাই। নুরজাহান বিবি আয়ানদের বলে এখন কেমন লাগছে তোমাদের। রিক বলে ভীষণভালো শুধু মাঝে মাঝে পেটে মোচড় দেয় এই আর কি।। তুর্য রিকের মাথায় একটা বাড়ি দেয়। আয়ান বলে দাড়িয়ে কেনো বসো না নানু। ভালো আছু এখন চিন্তা করো না।
“””নুরজাহান বিবি তাসনুদের এবার ইশারা করে মাফ চাওয়ার জন্য। সাথে সাথে নুসরাত আর অনু বলে সরি। এবার সবাই ওদের দিকে বড় বড় চোখ করে তাকায়। আয়ান বলে তোমরা সরি বলছো কেনো যে করেছে সে তো দিব্যি চুপ করে আছে। তাকে বলো। তাসনু এবার চোখ গরম করে আয়ানের দিকে কিন্তু বেশিক্ষন তাকায় থাকতে পারে না কারণ নুরজাহান বিবি ও তাসনুর দিকে চোখ গরম করে চেয়ে আছে। তাসনু আয়ানের থেকে চোখ নামিয়ে মিনমিন করে বলে সরি। তাসনুর সরি কেউ শুনতেই পাইনি৷ তুর্য বলে কি বিড়বিড় করছো জোরে বলো।
— তাসনু বলে আসলে ভাইয়া নেটওয়ার্কের সমস্যা তো তাই আামাদের পর্যন্ত যাচ্ছে না।। তাসনুর কথা আয়ান সহ উপস্থিত সবার মাথায় হাত। এই মেয়ে ঠিক হওয়ার না। আয়ান বলে নানু বাদ দাও।। আমরা এমনি মাফ করে দিছি ওদের। আমাদের তো আবার দয়ার শরীর। তাছাড়া বাচ্চামেয়ে ভুল করে ফেলেছে। আয়ানের কথা শুনে রিক তুর্য ফিক করে হেসে দেয় আর অনু নুসরাত তাসনু ছোট ছোট চোখ করে ওদের দিকে তাকাই। অনু বলে সুযোগ পেয়ে কেমন কথা শুনেচ্ছে দেখেছো আপু। তাসনু বলে বলতে দে সময় আমারও আসবে। দাদিমার সামনে কিছু বলা যাবে না এখন।
— তাসনু বলে এবার আমরা যাই তাহলে দাদিমা। নুরজাহান বিবি বলে যাও তবে এমন কাজ আর কখনো যেনো না হয়। এরপর কিন্তু তোমাদের কঠিন শাস্তি দেব। অনু নুসরাত তাসনু মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বলে চলে যায়।।আয়ানরা হাসছে৷ বেশ ভালো জব্দ হয়েছে দস্যু মায়া গুলা। তারপর নুরজাহান বিবি আয়ানেরে সাথে কথা বলে চলে যায়।
—————————-
— পরের দিন সামিরা কলেজে এসে বসে আছে।।একা একা তার ভালো লাগছে। তার যে বেস্টু আজ সাত দিন লাপাত্তা কই ঘাপটি মেরে যে বসে আছে শয়তানটা এই সব কথা মনে মনে ভাবতে ছিল সামিরা তখনই একজন এসে সামিরাকে জাপটে ধরে বলে ওরে দোস্ত কেমন আছিস। কত মিস করেছি তোকে এই ক’দিন বল্ব বুঝাতে পারব না।
— সামিরা চেনা কন্ঠস্বর পেয়ে একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে তারপর বলে ছাড় তান্নুর বাচ্চা৷ এতদিন কোন জামাইয়ের লগে ছিলিস শুনি এখন আইসা মিস মারাও দূর হ। তাই বলে গাল ফুলাই থাকে সামিরা। তানু বলে আর বলিস না দোস্ত আমার মামাতো কাজিনের বিয়ে তাই সেখানে যাওয়া লাগছিল। আমি প্রথমে যেতে চেয়েছিলাম না। কিন্তু আমার মাকে তো জানিসই কেমন। আমাকে না নিয়ে সে যাবে না তাই যাওয়া লাগছে। কিন্তু গিয়ে দেখি আর এক বিপদ একটু নেটওয়ার্ক নেই সেখানে তোকে যে জানাবো তার সুযোগটাই হয়নাই। কি যে বোরিং সময় গেছে আমার বুঝাতে পারব না।
— সামিরা বলে মাস্তি করে এসে এখন আমার কাছে ঢং মারস।
“” আসুন তানুর পরিচয় দিই আপনাদের। সামিরার একমাত্র বেস্টু তানজিলা রহমান। বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। খুব আদরের যাকে বলে। সবাই ছোট করে তানু বলে। আর সামিরা ওকে তান্নু বলে ডাকে মাঝে মাঝে। দুজনের বন্ধুত্ব খুব গভীর। স্কুল জীবন থেকে তারা এই ভাবে একসাথে আছে।
— সামিরা বলে জানিস ভাইয়া নানু বাড়ি গেছে। তানু অবাক হয়ে বলে তোর নানু বাড়ি জন্ম নিল কই থেকে। এতদিন তো শুনিনাই।সামিরা বলে আরে আমরা ও জানতাম না৷ সেদিন মা সব বলে নানু বাড়ির সম্পর্কে ভাইয়া অনেক জোর করার পর।তারপর ভাইয়া সেখানে যায়।।জানির তাদের সাথে আমাদের সম্পর্ক নেই। কিন্তু কেনো জানি। তাই বলে মন খারাপ করে সামিরা। তানু বলে বাদ দে। ভাইয়া গেছে মানে সব ঠিক করে আসবে তখনই তানু বলে দোস্ত ওই পুলাটা কে রে।সামিরা সামনে তাকিয়ে দেখে তুহিন যাচ্ছে বই হাতে নিয়ে একটা। সামিরা বলে এই খবরদার ওইদিকে চোখ দিবি না।।ওইটা তুহিন ভাইয়া। তুর্য ভাইয়ার ভাই। আমাদের নতুন প্রজেক্ট সেই দেখাশুনা করছে আর আমাদের সব দেখিয়ে দিচ্ছি। তানু বলে আরে সাবাস৷ এইক কদিনে এতো কিছু হয়ে গেছে। তুর্য ভাইয়ার এমন একটা কিউট ভাই আছে জানতাম না তো।
— সামিরা বলে তুর্য ভাইয়া আর তুহিন ভাইয়া জমজ কিন্তু দুজন দেখতে দুরকম আবার স্বভাব ও আলাদা।। ভীষণ মেধাবী স্টুডেন্ট। কোনো মেয়ের দিকে তাকায় না। তানু বলে এরেই তো দরকার আমার। ইসস আমার কিউটবয় এতো দিন কই ছিলে জানেমন তাই বলে সামিরার গায়ে ঢলে পড়ে। সামিয়া ভ্রু কুচকে বলে এই একদম আজেবাজে চিন্তা করবি না৷ যদি ভাইয়াকে বলে না আমি শেষ। তানু বলে এই তুই না আমার বেস্টু এতো ভিতুর ডিম কেন তুই। সামিরা বলে তোর বেস্টু দেইখা তো এতো ভয় 😑।।
— তানু বলে চল দোস্ত কথা বলে আসি।।সামিরা বলে একদম না। আমি পারব না তুই যা। আজ পর্যন্ত আমি কখনো কথা বলিনাই তার সাথে। দেখলে কেমন গম্ভীর থাকে সব সময়। তানু বলে তোকে দিয়ে কিছু হবে না থাক তুই আমি যায় তাই বলে তানু চলে যায় লাইব্রেরীর দিকে কারণ তুহিন ওইদিকে গেছে…….. #খেয়া_ঘাটের_প্রেম
#লেখনী_আলো_ইসলাম
#পর্ব_৬
— আয়ানরা সকালে উঠে ফ্রেস হয়ে রেডি হচ্ছে উদ্দেশ্য আজ গ্রাম ঘুরে দেখবে। তিনদিন প্রায় আসা হয়ে গেছে তাদের কিন্তু এখনো তারা গ্রাম ঘুরতে যাইনি এই তাসনুদের পাল্লায় পড়ে।
— আয়ান রিক তুর্য রেডি হয়ে একসাথে রুম থেকে বের হলো। আজ সকাল থেকে উঠে তাসনুদের কাউকে দেখিনি আয়ানরা। মনে মনে বলে আয়ান আজ অন্তত সকালে শান্তি লাগছে। বিচ্চু গুলা যত দূরে থাকে ততই ভালো। বসার ঘরে এসে দেখে রায়হান শেখ বসে খবরের কাগজ পড়ছে। পাশেই নুরজাহান বিবি আছে আর আশরাফ শেখ। আয়ানেরে দেখেই আশরাফ শেখ বলে আরে ভাগ্নে সকাল সকাল নায়ক সেজে কই যাওয়া হচ্ছে শুনি।
“” আয়ান হাল্কা হেসে বলে কেনো তোমার ভাগ্নে কি এমনি নায়ক না একটু ভাব নিয়ে বলে কথাটা। আশরাফ শেখ বলে অবশ্যই আমার ভাগ্নে নায়ক না মানে৷ নায়করাও পারবে না আমার ভাগ্নের কাছে। তাই বলে সবাই হেসে দেয়।। রায়হান শেখ আড়ে আড়ে দেখছে শুধু আয়ানকে। তখন আশরাফ শেখ বলেন আমি তোদের নিয়ে যেতাম ঘুরতে কিন্তু আমার একটা কাজ আছে তাই যেতে হবে। রিক বলে সমস্যা নেই মামা আমরা পারব। তিনজন আছি না।
— নুরজাহান বিবি বলে সকাল থেকে তাসনুদেরও দেখছি না কোথায় যে গেছে সকালে উঠে। এই মেয়ে এতো বড় হচ্ছে তাও ছেলেমানুষী গেলো না। আয়ান বলে থাকনা নানু আমরা পারব। আমাদের কি ছোট বাচ্চা ভাবো যে হারিয়ে যাব। আয়ামের এবার চোখ যায় রায়হান শেখের দিকে। আয়ান রায়হান শেখকে দেখে তার দিকে এগিয়ে যায়। তারপর বলে কেমন আছো নানুভাই। কথাটা রায়হান শেখের কর্ণপাত হতেই সেই হুংকার দিয়ে উঠে বলে কে তোমার নানুভাই। আমার মাত্র তিনটা নাতি আছে।। আমার দুই ছেলের মেয়ে। তাছাড়া আমার কেউ নেই বুঝেছো।
— তোমাকে না বলেছি এই বাড়িতে থাকতে হলে আমার থেকে দূরে থাকবে তোমাদের মুখও দেখতে চাইনা আমি। নুর ( নুরজাহান বিবিকে রায়হান শেখ নুর বলে) ওদের সাবধান করে দাও আমার থেকে যেনো দূরে থাকে। তাই বলে চলে যায় সেখান থেকে। আয়ান এতখন মাথা নিচু করে সব শুনছিল। এর মাঝে তুর্য বলে কি দরকার ছিল কথা বলার জানিসই তো আমাদের তিনি সহ্য করতে পারে না। রিক বলে মন খারাপ করিস না ভাই একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে।
“” আয়ান বলে আমাকে সব ঠিক করতেই হবে আমি যে মাকে কথা দিয়ে আসছি। কি ভাবে কি করব বুঝতে পারছি না। নুরজাহান বিবি বলে এত চিন্তা করো না নানুভাই। দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে৷ ওই মানুষটাও কষ্ট পায় তোদের জন্য কিন্তু প্রকাশ করে কিন্তু আমি তো বুঝি। তারপর আয়ানরা নুরজাহান বিবিকে বলে বের হয় গ্রাম দেখতে।
________________________________
|| তানু লাইব্রেরির সামনে এসে থেমে যায় ||
“” ভেতরে তাকিয়ে দেখে তুহিন একটা চেয়ারে বসে মনোযোগ দিয়ে একটা বই পড়ছে। তানু একটু ঠিকঠাক হয়ে ভেতরে যায় গিয়ে সোজা তুহিনের সামনে দাড়ায়।
— তুহিন একবার তানুর দিকে তাকায় তারপর আবার বইয়ের দিকে নজর দেয়। তানু এবার রেগে যায়। মনে মনে বলে কি ভাব হু। আমিও কম না দেখাচ্ছি বেটা তোকে। তাই বলে তানু বলে আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া। ভালো আছেন ভাইয়ায়ায়ায়া একটু টেনে বলে কথাটা।
“””” তুহিন এদিক ওদিক তাকিয়ে তারপর তানুর দিকে তাকিয়ে বলে আমাকে বলছেন। তানু এবার দাতে দাত চেপে বলে এখানে আপনি ছাড়া আর কেউ আছে বলে তো দেখতে পাচ্ছি না। আপনি কি
কাউকে দেখছেন ভাইয়া।
— তুহিন মাথা দুলিয়ে না বলে। তারপর বলে জি বলুন কি বলবেন।। তানু এবার গলাটা একটু ঝেড়ে বলে আসলে ভাইয়া আপনি তো আমাদের প্রজেক্ট দেখাশুনা করছেন তো আমি একটা জায়গায় বুঝতে পারছি না একটু দেখাই দিবেন প্লিজ।
– তুহিন এবার কিছুক্ষন তানুর দিকে তাকিয়ে থেকে তারপর বলে কোন ইয়ার তুমি। তানু বলে ফার্স্ট ইয়ারে ( অনার্স)
— তোমাকে আগে কখনো ক্লাসে দেখেছি বলে তো মনে পড়ছে না।।তানু এবার একটু হকচকিয়ে যায়। মনে মনে বলে বেটার নজর দেখি শকুনের চেয়েও গভীর। তানু এবার আমতাআমতা করে বলে আসলে ভাইয়া আমি কিছু দিন আসতে পারি নাই৷ তাই আর কি এই নতুন প্রজেক্ট এ এখনো কিছু করা হয়নাই।
“” তাহলে আর বুঝবে কেমনে। ক্লাসে থেকো বুঝাই দেব। তানু বলে আড়ে ভাইয়া ক্লাসে বুঝতে পারলে কি এখন আপনার কাছে আসতাম। না মানে ক্লাসেও বুঝব আর এখন যদি একটু দেখাই দিতেন তাহলে ক্লাসে ভালো করে বুঝতে সুবিধা হত এই যা।
— তুহিন কি একটা ভেবে বলে আচ্ছা বসো। তুহিনের বলতে দেরি কিন্তু তানুর বসতে দেরি নেই। তানুর কাজে তুহিন চমকে যায়।। তানু বুঝতে পেরে বলে সরি সরি আসলে আমি আবার অনেকখন দাড়িয়ে থাকতে পারি না৷ তার জন্য আর কি.. তুহিন বলে ইটস ওকে।
— তুহিন তানুকে বুঝিয়ে দিচ্ছে আর তানু সে তুহিনের মুখের দিকে এক পাণে চেয়ে আছে। তুহিন ব্যাপারটা বুঝতে পেরে বলে দেখো মিস তখনই তানু বলে তানজিলা রহমান সবাই তানু বলে আপনিও বলতে পারেন তাই বলে একটা দাত কেলিতে হাসি দেয়। তারপর তানু বলে আপনার নামের সাথে আমার নামের অনেক মিল তাই না ভাইয়া। তুহিন তানজিলা আহ দারুণ মিল। তানুর কথায় তুহিনের কাশি উঠে যায়। মনে মনে খুব বিরক্ত হয় তুহিন কিন্তু প্রকাশ করে না। তারপর বলে খাতায় নজর দাও বলে আবার শুরু করে কিন্তু তানু তো তানু সেকি কারো কথা শুনে৷ আবার তুহিনের মুখপানে তাকিয়ে আছে।
— তুহিন এবার খাতা বন্ধ করে বলে লেখাগুলো খাতায় আছে আমার মুখে নয়৷ তানু ওই ভাবে তাকিয়ে থেকেই বলে জানি তো কিন্তু তাও তাকিয়ে থাকতে ভালো লাগছে আপনার দিকে এত কিউট কেনো আপনি ভাইয়া। তুহিন এবার অবাক হয়ে বলে মানে। তখনই তানুর হুস আসে। ঘোরের মধ্যে কি বলে ফেলেছে বুঝতে পেরে মাথায় একটা গাট্টা মেরে তারপর বলে না ভাইয়া কিছু না। আসলে বুঝতে পারছি না তো তাই।
“” তুহিন বলে বুঝার জন্য মাথা জ্ঞ্যান আর মন থাকা দরকার যার কোনটাই তোমার মধ্যে নেই। সাথে সাথে তানু বলে ঠিক বলেছেন আপনি তবে একটু আলাদা হবে মাথা জ্ঞ্যান সব আমার কাছে আছে কিন্তু মনটা মনে হচ্ছে আমার মাঝে নেই। তুহিন বুঝতে পারে এই মেয়েকে দিয়ে হবে না। তাই বলে আচ্ছা ক্লাসে দেখা হবে আমি যায় বলে তাড়াতাড়ি করে উঠতে গিয়ে চেয়ারে বেধে তানুর উপর পড়ে যায় তুহিন। তানুও অবাক হয় একটু এমন হবে সে ভাবেনি। তানু তো মহাখুশি আর তুহিন সেতো বেকুব বনে গেছে। কি হলো বুঝতে তার বেশ সময় লাগছে।তারপর তাড়াতাড়ি করে তানুর উপর থেকে উঠে বলে সরি আমি আসলে.. তানু বলে আমি কিছু মনে করিনি ভাইয়া। আপনি চাইলে আবারও পড়তে পারেন আমার সমস্যা নেই৷ তাই বলে মুখ চেপে হাসে। তুহিন একটা বিরক্তিকর লুক নয়ে বের হয়ে যায় আর মনে মনে ভাবে সকালে কার মুখ দেখে যে বের হয়েছি।
________________________
“” এইদিকে আয়ানরা গ্রাম ঘুরে দেখছে আর সাথে আছে ক্যামেরা সব কিছু ক্যামেরা বন্দি করে নিচ্ছে। এমন সময় চোখ যায় তাদের সামনে কিছু মেয়ের দিকে যার মধ্যে অনু আর নুসরাতও আছে কিন্তু তাসনুকে দেখা যাচ্ছে না। আয়ান আর একটু সামনে এগিয়ে এসে দেখে অনুরা মই ধরে আছে আর তাসনু সে গাছে উঠে উপরের একটা ডাল থেকে আম পেড়ে ওদের দিচ্ছে। সাথে গ্রামের কিছু মেয়েরাও আছে।
— কিছুদুরেই গাছের মালিক একটা গাছের ছায়ায় নিশ্চিন্তে ঘুমাতে ছিল গাছের সাথে হেলান দিয়ে।।আয়ানের মাথায় একটা বুদ্ধি আসে। তারপর সে গাছের মালিকের দিকে এগিয়ে যায় তারপর ওই লোকটা ডেকে বলে চাচা এই বাগান কি আপনার নাকি। কাচা ঘুম ভেঙে যাওয়াতে লোকটা একটু বিরক্ত হয়। তাই বিরক্তভাব নিয়ে বলে হ্যাঁ আমার কেনো।
“”” আয়ান বলে না আসার সময় ওই দিকে দেখলাম কিছু মেয়ে আপনার গাছ থেকে আম পাড়তে ছিল৷ তাই ভাবলাম গাছ আপনার কি না।। লোকটা শুনা মাত্র গামছাটা ঘাড়ে নিয়ে বলে ওই ফাজিল মেয়ে গুলো আবার এসেছে বাগানে৷ আজ ওদের একদিন কি আমার একদিন তাই বলে জোরে চিৎকার করতে করতে চলে যায়৷ আর আয়ান একটা শয়তানি হাসি দেয়। মনে মনে বলে কাদা সুন্দরী এবার তুমি বুঝবে আমার সাথে লাগার মজা 😁।
— তাসনু উপরে নিশ্চিন্তে আম পাড়ছে নিচে সবাই দাড়িয়ে আছে৷ বাগান মালিকের কথা শুনে ওরা মই ফেলে রেখে যে যার মত দেয় ভৌ দৌড় আর তাসনু বেচারি পড়েছে বিপদে। মই ছাড়া মানবে কি করে এতো উঁচু থেকে৷ অনুরা যেদিন গেছে বাগান মালিকও তাদের সাথে ওইদিকে তাড়া করে গেছে।
— আয়ান গাছের নিচে এসে দাঁড়ায় আয়ানকে দেখে তাসনু একটু আশা খুজে পায়। তারপর আয়ানকে বলে ভাইয়া। আয়ান শুনে না শুনার ভান করে থাকে । তাসনু
এবার বিরক্ত নিয়ে আবার বলে এই যে শহরে বিলাই তখনই আয়ান উপরে তাকাই আর বলে আরে কাদা সুন্দরী যে তা তুমি ওইখানে কি করছো। মাটিতে থাকতে ভালো লাগছিল না বুঝি।
— আয়ানের কথায় তাসনুর বেশ রাগ হচ্ছে কিন্তু এখন রাগলে হবে না তাই দাতে দাত চেপে সব সহ্য করছে। আয়ান আবার বলে জানো তো মাটিতে কারা থাকতে পছন্দ করে না।। বানররা আচ্ছা তুমিও তাদের দলে না তো। তাসনু বুঝতে পারে আয়ান ইচ্ছে করে সব কিছু বলছে তাই সে রেগে বলে দেখুন বেশি বেশি হচ্ছে কিন্তু। বাজে না বকে পারলে একটু সাহায্য করুন দেখি আপনাদের শহরের মানুষ কেমন সাহায্য করে মানুষকে।
— আয়ান বলে আমাদের শহরে মানুষ কেমন কি করে তা প্রমাণ করার কোনো দরকার নেই আর তোমার মত বাচ্চা একটা বানরের কাছে তো নয়ই। তাও আমার তো দয়ার শরীর কি না।।কি ভাবে সাহায্য করতে হবে শুনি। তাসনু মনে মনে বলে একবার শুধু নিচে আসি তারপর তোর ভাব আমি বের করছি বেটা বজ্জাত………….
চলবে……..
(