#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ১১
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি
মেহেক,অথৈ আর রিফা হাঁটাতে হাঁটাতে ভার্সিটির পেছনে চলে আসে।ভার্সিটির পেছনে একটা বড় গাছ আছে,ওখানে বসে আড্ডা দিচ্ছে কয়েকজন।মেহেক একটু ভালো করে দেখলে বুঝতে পারে ওখানে সৌন্দর্য আর স্পর্শ দুজনেই আছে আর স্পর্শ হেসে হেসে কথা বলছে।স্পর্শকে হাসতে দেখে তো মেহেক অবাক কারণ ও এসেছে পর্যন্ত স্পর্শকে একবারো হাসতে দেখেনি।
এসব চিন্তা করতে করতেই কখন যে মেহেক তাদের কাছে চলে এসে বুঝতেই পারেনি সে।
” কিরে তোরা ক্লাসে না গিয়ে ঘুরাঘুরি করছিস কেন?” বলে সৌন্দর্য।
” মেহেককে ভার্সিটি ঘুরিয়ে দেখাচ্ছি আর এখন আমাদের ক্লাস নেই।”
” এই মেয়েটা কে রে সৌন্দর্য?” পাশ থেকে একটা ছেলে বলে।
সৌন্দর্যকে বলতে না দিয়ে রিফা বলে,” ও হচ্ছে মেহেক আমাদের নতুন বান্ধবী।এবার তোমরা তোমাদের পরিচয় দাও।আচ্ছা বাদ দাও আমিই পরিচয় করিয়ে দিচ্ছি।মেহু এটা হচ্ছে শান্ত ভাইয়া,এটা আদিব ভাইয়া,এটা মহুয়া আপু আর এটা হচ্ছে লিজা আপু।”
” আসসালামু আলাইকুম ভাইয়া আপুরা।”
” ওয়ালইকুম আসসালাম ।” সবাই একসাথে বলে।
” মেহেক আজ থেকে তুমিও আমাদের ছোটবোন আর বন্ধু।কোন হেজিটেশন ফিল করোনা আমাদের সাথে কথা বলার সময়।এখানে কিন্তু সৌন্দর্য আমাদের সবার বড় তাও আমরা সবাই অনেক ভালো বন্ধু।” বলে শান্ত।
” আপনারা সবাই একি ক্লাসে না?”
” সৌন্দর্য ছাড়া আমরা বাকি সবাই সেইম ব্যাচ।”
” তা মেহেক তুমি সিঙ্গেল আছো নাকি?” আদিব বলে।
আদিবের কথা শুনে মেহেক ঘাবড়ে যায়।
” ওই তোর না গার্লফ্রেন্ড আছে?” আদিবের মাথায় টোকা দিবে বলে শান্ত।
” আরে আমার গার্লফ্রেন্ড আছে?কে সে?”
” ভাই আজ তোর কপালে সত্যি দুঃখ আছে।লিজা যেভাবে লুচির মতো ফুলছে না জানি কখন পুড়ে যায়।”
আদিব লিজার দিকে একটা কিউট স্মাইল দিয়ে তাকায়।কিন্তু লিজার মুখের ভাব দেখেই তার হাসি উবে যায়।লিজা ফট করে আদিবারের চুল ধরে ফেলে।
” তোর গার্লফ্রেন্ড নাই না?তোর গার্লফ্রেন্ড নাই?তো আমি কে?আমি কি কাজের বেটি জরিনা?”
” ছেড়ে দে মা ছেড়ে দে।”
” কি বললি?আমি তোর মা লাগি।দাঁড়া আজ তোর সাধের চুল আমি সব ছিঁড়ে ফেলবো।তোরে যদি আমি আজ টাকলা না বানিয়েছি তো আমার নামও লিজা না।”
” ভুল হয়ে গেছে গার্লফ্রেন্ড আর জীবনেও এরকম কিছু বলবোনা।সত্যি বলছি।”
” তাহলে বল তোর গার্লফ্রেন্ড আছে?”
” আছে আছে আমার গার্লফ্রেন্ড আছে।”
” আর কোনদিন অন্য মেয়েকে লাইন মারবি?”
” আরে আমি কেন লাইন মারতে যাবো?আমার এতো সুন্দর,ভালো,শান্ত লেজ বিশিষ্ট একটা গার্লফ্রেন্ড থাকতে আমি কেন অন্য মেয়েকে লাইন মারবো?আমি কি এরকম তুমিই বলো বাবু।”
” হুম জানি আপনি কতো ভালো।লুইচ্চা পোলা।আর যদি তোরে আমি অন্য মেয়ের সাথে ফষ্টিনষ্টি করতে দেখেছি তো তোর চুল……”
” না না আর যাই কর প্লিজ আমার চুলরে কিছু করিস না।”
” না কিছু করবো কেন?কিছু করবো না জাস্ট তোর চুলে আগুন লাগিয়ে দেবো।”
এতোক্ষণ নীরবে সবাই আদিব আর লিজার কান্ড দেখছিল এবার লিজার কথা শুনে সবাই একসাথে হেসে উঠে।হাসতে হাসতে হঠাৎ মেহেকের চোখ পড়ে শান্তের উপর।শান্ত কেমন করে যেন অথৈ এর দিকে তাকিয়ে আছে।মেহেক অথৈ এর দিকে তাকিয়ে দেখে সে নিজের মতো হাসতে ব্যস্ত।
রিফা,অথৈ আর মেহেক ক্লাসে দিকে যাচ্ছে।হাঁটতে হাঁটতে মেহেক রিফাকে কানে কানে বলে,
” আচ্ছা রিফু শান্ত ছেলেটা কেমন রে?”
” কেন কি হয়েছে?হঠাৎ এরকম প্রশ্ন করছিস কেন?”
” আরে আমরা যখন হাসাহাসি করছিলাম তখন শান্ত ভাইয়া কেমন করে যেন অথুর দিকে তাকিয়ে ছিল।”
” আরে তুই শান্ত ভাইয়ার ব্যপারে উল্টাপাল্টা কিছু ভাবিসনা।শান্ত ভাইয়া খুব ভালো ছেলে।শোন তোকে একটা সিগরেট বলি।”
” কি?”
” আসলে শান্ত ভাইয়া না অথুকে পছন্দ করে।”
” তোকে বলেছে নাকি?”
” আরে ধুর উনার কি আর কোন কাজ নেই নাকি যে আমাকে বলবে।”
” তাহলে তুই কিভাবে জানলি?”
” আরে ওনার হাবভাব দেখে যে কেউ বুঝতে পারবে।আর আমিও তো প্রেমে পড়েছি তাই আমি বুঝি কাউকে পছন্দ করলে বা প্রেমে পড়লে তার আচরণ কেমন হয়।”
” ও আচ্ছা।”
” শোন এটা অথুকে বলিস না।”
” কেন?বললে কি হবে?”
” আসলে অথু কেন যেন শান্ত ভাইয়াকে তেমন একটা পছন্দ করেনা।সবসময় এড়িয়ে এড়িয়ে চলে।”
” কিরে তোরা কি এতো ফুসুরফুসুর করছিস?আমাকেও তো বল।”
” কিছু না।চল তাড়াতাড়ি ক্লাসে দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
রিফা একহাতে অথৈ আর অন্যহাতে মেহেকের হাত ধরে ক্লাসের উদ্দেশ্যে দৌড় দেয়।
__________________________________________
” কিরে রিফু এখানে দাঁড়িয়ে আছিস কেন?কারো জন্য অপেক্ষা করছিস নাকি?” রিফাকে জিজ্ঞেস করে মেহেক।
” আরে আমার বাবুর জন্য দাঁড়িয়ে আছে।” মাঝখান থেকে বলে উঠে অথৈ।
” বাবু!”
” এই তোর লজ্জা করেনা নিজের হবু জিজুকে বাবু বলতে?” রেগে অথৈকে বলে রিফা।
” ও মা লজ্জা কেন করবে?সে আমার হবু জিজু হলেও ভাই তো আর না।”
” জিজু আর ভাই সমান।তাই ভাইয়ের নজরে দেখবি।লিচু মেয়ে কোথাকার।”
” হ্যালো গার্লস।কেমন আছো তোমরা?”
” বাবু……।তুমি চলে এসেছো।জানো তোমার জন্য কত অপেক্ষা করেছি আমি।”
” আরে আমার আধিঘরওয়ালি।ও সো সুইট তুমি আমার জন্য অপেক্ষা করেছো।”
” রিফু এটা কে?” কানে কানে রিফাকে বলে মেহেক।
” এটাই হচ্ছে ইভান।”
” ও আচ্ছা তাহলে এই হচ্ছে অথুর বাবু।”
” ও তাহলে তুমিই মেহেক।তোমার কথা রিফার মুখে অনেক শুনেছি আজ দেখেও নিলাম।হাই আমি ইভান।”
” হ্যালো ভাইয়া।”
” রিফু দেখ আজ আমার বাবুটাকে ওয়ার্ট শার্টে কত কিউট লাগছে।হায় কিসি কি নাজার না লাগে।”
” রিফু তোকে একটা কথা বলবো?রাগ করবিনা তো?” মেহেক বল।
” বল কি বলবি।”
” শোন না তোর বয়ফ্রেন্ডটা না আসলেই অনেক কিউট।পুরোই কিউটের ড্রাম।আমারো এখন বলতে ইচ্ছে করছে হায় কিসি কি নাজার না লাগে।”
রিফা অথৈ আর মেহেকের কথায় কিছু না বললেও সে ভিতরে ভিতরে রাগে ফুসছে।তার ইভানের উপর এতো রাগ হচ্ছে যে ইচ্ছে করছে তাকে কাঁচা চিবিয়ে খেতে।
” দাঁড়া আজ তোর সাজগোজ আমি বার করছি।যেখানে আমাকে নিজের বান্ধবীরা তোর দিকে নজর দিচ্ছে না জানি বাকি মেয়েগুলো তোকে চোখ দিয়ে গিলে খায়।” মনে মনে কথাগুলো বলে রিফা।
” তো গার্লস চলো সামনে কফিশপটাতে গিয়ে বসি।”
” হ্যাঁ হ্যাঁ বাবু চলো চলো।”
” দাঁড়া।শোন তোরা আগে আগে যা,আমার ওর সাথে কিছু কথা আছে।”
” কি কথা তোর বাবুর সাথে?”
” তোকে কেন বলবো?যা বলার আমি ওকে বলবো।তুই এখন মেহেকের সাথে আগে আগে হাঁট আমরা আসছি।”
” আচ্ছা ঠিক আছে।বাবু তুমি তাড়াতাড়ি চলে এসো আমার কাছে।আই মিস ইউ বাবু।মেহু চল।”
মেহেক আর অথৈ যখন কিছু দূরে যায় তখন রিফা চোখ বড় বড় করে ইভানের দিকে তাকাই।
” এই এই।”
” কি হয়েছে?এভাবে ছাগলের মতো ব্যাঁ ব্যাঁ করছো কেন?”
” কি আমি ছাগল।” রেগে বলে রিফা।
” আরে না না আমি ছাগল কেন হবে?তুমি তো মহিষ।” মুচকি মুচকি হেসে বলে ইভান।
” রাখ তোর ছাগল,মহিষ।আমি এই ব্যপারে তোর সাথে পরে কথা বলছি।তার আগে এটা বল এতো সেজেগুজে এসেছিস কেন?”
” কোথায় সাজলাম?আমি কি মেয়ে নাকি যে সাজগোছ করবো?আর তুমি তুই তুই করে কেন বলছো?”
” একশো বার বলবো হাজার বার বলবো।আর তুই বলছিস তুই সাজিসনি।তাহলে জেল দিয়ে চুলগুলো স্টাইল করেছিস কেন?আর এতো সুন্দর করে শার্ট পড়েছিস কেন?”
” ও মা বাইরে একটি একটু পরিপাটি হয়ে আসবো না?”
” রাখ তোর পরিপাটি।এরপর থেকে তুই চুলগুলো কাকের বাসার মতো করে আসবি আর পুরোনো জামাকাপড় পড়ে বের হবি।আর যদি তোকে আমি একটু স্টাইল করে আসতে দেখেছি তো তুই শেষ।”
” কি করবে?”
” বেশি কিছুনা জাস্ট তোর জামাকাপড় গুলো একটু ছিঁড়ে দেবো।তারপর সেসব জামাকাপড় পড়ে দেখি তুই কিভাবে বাড়িতে ফেরত যেতে পারিস।”
রিফার শেষের কথাগুলো শুনে ইভান ভয় পেয়ে যায়।
অন্যদিকে,
” কিরে অথু এইভাবে হাসছিস কেন?”
” হাহাহা…..দেখ রিফু কিভাবে ক্ষেপেছে।”
” তুই শুধু শুধু মেয়েটাকে রাগিয়ে দিলি।দেখ এখন কিভাবে ইভান ভাইকে জাড়ছে।”
” হাহাহা…..কি করবো বল,ওরে ঝালাইতে ভালো লাগে।”
মেহেক আর কিছু না বলে রিফা আর ইভানের দিকে তাকাই।তাদের দেখে মেহেকের মুগ্ধ আর তার কথা মনে পড়ে যায়।সেও এরকম রাগ করতো যদি কোন মেয়ে মুগ্ধের প্রশংসার করতো।
” না না মেহু তুই এসব কি ভাবছিস।ভুলে যা মুগ্ধের কথা।মুগ্ধ বলে কেউ তোর জীবনে ছিল একথা ভুলে যা।”
#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ১২
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি
কিছু কাগজ নিয়ে তাড়াহুড়ো করে টিচার’স রুমে যাচ্ছিল অথৈ।তাড়াহুড়ো করার কারণে অসাবধানতায় কারো সাথে ধাক্কা লেগে তার হাতের সময় কাগজ পড়ে যায়।অথৈ এতে প্রচুর বিরক্ত হয়।সে বিরক্ত নিয়ে কাগজগুলো নিচে থেকে তুলতে শুরু করে।তখন তার সাথে অন্যকেউ তাকে কাগজ তুলতে সাহায্য করছিল।অথৈ কাগজ তোলা শেষ হলে মাথা তুলে দেখে তার সামনে শান্ত দাঁড়িয়ে আছে।শান্তকে দেখে অথৈয়ের বিরক্তবোধের স্তর আরো বেরে যায়।সে শান্তের হাত থেকে কাগজগুলো নিয়ে চলে যেতে নিলে শান্তের কথা শুনে থেমে যায়।
” অথৈ।”
” আ…….এ আবার কেন ডাকছে?ধুর বিরক্তিকর।” মনে মনে বলে অথৈ।বিরক্তভাবটা ধমিয়ে রেখে অথৈ পেছনে ফিরে তাকাই।
” জ্বি বলুন।”
” কেমন আছো?”
” কেন?চোখে দেখতে পারছিস না?(মনে মনে) জ্বি ভাইয়া আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি।”
” তুমি………”
” আচ্ছা ভাইয়া আমি এখন আসি।আমার কিছু কাজ আছে।”
অথৈ শান্তকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে চলে যায়।শান্ত নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে অথৈ এর যাওয়ারপানে তাকিয়ে আছে।
” তুমি আমাকে কবে বুঝবে অথুপরি?কবে আমার মনের কথা বুঝবে?আমার মনের কথা বুঝতে বেশি দেরি করোনা অথুপরি।নয়তো দেখা যাবে ততদিনে আমি মানুষটাই নেই।” মনে মনে কথাগুলো বলে শান্ত।সে বুঝতে পারে অথৈ তাকে দেখলে তেমন একটা খুশি হয়না তাই তো সে দূর থেকেই অথৈকে দেখে।সে চায়না তার প্রেয়সীর যেন কোন সমস্যা হয়।
________________________________________
ভার্সিটির পেছনে বড় গাছটার নিচে বসে আড্ডা দিচ্ছে সৌন্দর্য,শান্ত,আদিব,লিজা আর মহুয়া।স্পর্শ কিছু কাজে নিজের ক্লাসরুমেই আছে এখন।তারা ভার্সিটি সবসময় এই জায়গায় বসে আড্ডা দেয়।তবে আজ তাদের সাথে আছে মেহেকও।না মেহেক তাদের সাথে আড্ডা দিতে আসেনি সে এসে সৌন্দর্যের সাথে কথা বলতে।
” আরে সুন্দরী,কতদিন পর তোমার সাথে দেখা।কেমন আছো?” আদিব বলে।
” জ্বি ভাইয়া ভালো আছি।”
” হায়…..ভাইয়া বলে মনটা ভেঙে দিলে।”ঢং করে বলে আদিব।
” তো তোরে ভাইয়া না বলে কি সাইয়া বলবে?” রেগে আদিবকে বলে লিজা।
” আরে আরে পাখি তুমি রাগ করছো কেন?আমি তো সুন্দ….না মানে মেহেকের সাথে মজা করছিলাম।হেহে…..দেখো তুমি মজাও বোঝো না।”
” দাঁড়া আজ তোরে আমি একা পাই।তোর চুল যদি আমি আজ না জ্বালিয়েছি তবে আমার নামও লিজা না।শয়তান,হারামি আমার সাথে দাঁড়িয়ে তুই অন্য মেয়েকে লাইন মারিস।আবার সুন্দরীও বলিস।”
” আরে জান ওটাতো আমি বোন হিসেবে সুন্দরী বলেছি।বোনকে কি সুন্দরী বলা যায় না নাকি?”
” এই তোরা দুজন থামবি।সবসময় খালি বাচ্চাদের মতো ঝগড়া করে যায়।মেহেক এখানে কেন এসেছে তা জানতে চাইবি না?” শান্ত বলে।
” আসলে আমি মিস্টার সৌন্দর্যের কাছে এসেছি।আপনি কি আমার সাথে একটু আসতে পারবেন?আসলে কিছু জরুরি কথা আছে।”
” আচ্ছা চলো।এই তোরা এখানেই থাকিস।”
মেহেক আর সৌন্দর্য গাছ তলা থেকে সেরে কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ায়।
” বলো মেহুপাখি কি বলবে?”
” আসলে…..কিভাবে যে বলি।”
” কি বলবে বলো।এতো হেজিটেশন ফিল করোনা।বলে ফেলো।”
” আসলে আপনি কি আমাকে দুটো টিউশন খুঁজে দিতে পারবেন?”
” কেন?”
” আসলে আমি যা টাকা পয়সা নিয়ে এসেছিলাম তা প্রায় শেষ।যখন চট্টগ্রামে ছিলাম তখন তো টিউশন করেই নিজের খরচ চালাম।কিন্তু এখানে তো আমি তেমন কিছু চিনিনা তাই যদি আপনি একটু হেল্প করতেন।”
” তোমার টিউশনি করার কি দরকার?ভাবী…..”
” না আমি আপু থেকে বা দুলাভাই থেকে কোন টাকা নেবোনা।আর আপনি চিন্তা করবেন না আমার টিউশনি করার অভিজ্ঞতা আছে।কোন সমস্যা হবেনা।”
” আচ্ছা ঠিক আছে আমি তোমাকে টিউশন খুঁজে দেবো।”
এদিকে দূর থেকে সৌন্দর্য আর মেহেকের দিকে তীক্ন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে মহুয়া।লিজা থেকে মহুয়ার কাঁধে হাত রাখে।
” কিরে কি দেখছিস?”
” কিছু না।”
” আমি জানি তুই কি ভাবছিস।মেহেকের সৌন্দর্যের এতোটা কাছে থাকা যে তোর ভালো লাগছেনা তা আমি বুঝতে পারছি।তুই কেন সৌন্দর্যকে নিজের মনের কথা বলছিস না?বলে দে ওকে।”
” না আমি এরকমই কি করবো না আর না তুই কিছু বলবি।আমি চাইনা সৌন্দর্য এই ব্যপারে কিছু জানুক।আমি ওর বন্ধু হিসেবে আছি আর ওর বন্ধু হিসেবেই থাকতে চাই।”
” ভেবে দেখ মহুয়া,সময় থাকতে বলে দে।নয়তো দেখা যাবে তুই ওকে হারিয়ে ফেলেছিস।”
মহুয়া কিছু বলেনা,সে একদৃষ্টিতে আবারো সৌন্দর্য আর মেহেকের দিকে তাকাই।লিজা একটা দীর্ঘশ্বাস নেই।তার মহুয়ার জন্য চিন্তা হচ্ছে।যা জানি মেয়েটা নিজের ভালোবাসার কথা বলতে না পেরে কতটা কষ্ট পাচ্ছে।
সৌন্দর্যকে কথাটা বলতে পেরে মেহেকের অনেকটা রিলেক্স ফিল হচ্ছে।মেহেক খুশি মনে হেলেদুলে সিঁড়ি দিয়ে নিজের ক্লাসে যাচ্ছে।তবে মাঝ সিঁড়ি সে দেখতে পাই স্পর্শ উপর থেকে নামছে।স্পর্শকে দেখে মেহেক নড়াচড়া বন্ধ করে দিয়ে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে।মেহেক ভালো মেয়ের মতো দাঁড়িয়ে থাকলেও স্পর্শ ঠিকই দেখেছে প্রথমে মেহেক কিভাবে উঠছিল।স্পর্শ কিছু না বলে মেহেককে ক্রস করে নিচে নেমে যায়।তবে নিচে নামতে নামতেই স্পর্শ ঠোঁটে কয়েক সেকেন্ডের জন্য হাসি ফোঁটে উঠে।স্পর্শকে চলে যেতে দেখে মেহেক স্বস্তির নিশ্বাস নেয়।
_________________________________________
নিজের রুমে বসে একদৃষ্টিতে বইয়ের দিকে তাকিয়ে আছে রিফা।তখন মেহেক দৌড়ে রিফার কাছে আসে।
” রিফু….রিফু….রিফু…….”
” কি হয়েছে?এভাবে করছিস কেন?”
” জানিস কে এসেছে?”
” আমি কেমন করে জানবো?আমি কি দেখতে গিয়েছিলাম নাকি?”
” আরে ইভান ভাইয়া এসেছে।”
” উনি এখানে কেন এসেছেন?”
” আমি কি জানি?”
” শোন উনি যদি জানতে চায় আমি কোথায় তো তুই বলবি আমার মাথাব্যথা করছে তাই আমি ঘুমাচ্ছি এখন।”
” কিন্তু তুই তো দিব্বি আছিস।তাহলে মিথ্যা কথা বলবো কেন?”
” তোরে যেটা করতে বলছি তাই করবি।এখন যা ধুর হ।”
” এই তাড় ছেঁড়া মেয়েটার আবার কি হলো?”
মেহেক বিরবির করতে করতে চলে যায়।তবে কিছুসময় পর আবারো ফিরে আসে।
” রিফু… রিফু… রিফু….।”
” আবার কি হয়েছে?তোকে না বলেছি আমাকে ডিস্টার্ব না করতে।”
” ওরে ইভান ভাইতো চলে গেলো।তুই একবারো ওনার সাথে দেখা করছিনা কেন?”
” সেটা আমার ইচ্ছা।এখন যা তো এখান থেকে।”
” আচ্ছা চল না একটু ছাদে যায়।”
” এই এতো রাতে ছাদে কি?”
” চল না প্লিজ প্লিজ।”
” এতো রাতে ছাদের গেলে তোরে ভুতে ধরবে।”
” আরে ধরবেনা।চল তো।”
মেহেক রিফাকে টেনে ছাদে নিয়ে আসে।ছাদের সিঁড়ি কাছে এসে মেহেক থেকে যায়।
” কি হলো দাঁড়িয়ে পড়ছি কেন?”
” রিফু তুই না আগে যা।আমি তোর পেছন পেছন আসছি।”
” কেন আমি কেন আগে যাবো?”
” ওই আসলে আমার না ভয় লাগছে।”
” কেন?তখন তো খুব করে বলছিলি ভুত ধরবে না।তো এখন কেন ভয় পাচ্ছিস?”
” আরে যা না প্লিজ।আমি আছি তো তোর পেছনে।”
রিফা ছাদের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে পড়ে।রিফা ভেতরে ঢুকতেই মেহেক বাইরে থেকে দরজাটা বন্ধ করে দেয়।
” মেহু…. এই মেহু…..দরজা বন্ধ করলি কেন?দরজা খোল।মেহু……”
” শ্যামলীনি।”
পেছন থেকে কারো ডাক শুনে রিফার বুক ঢক করে উঠে।কারণ এই নামে শুধু তাকে ইভানই ডাকে।রিফার পেছন ফিরে দেখে ইভান দাঁড়িয়ে আছে।রিফা ভাবছে ইভান এখানে কিভাবে এলো।
” মেহু না বললো ইভান চলে গিয়েছে।তার মানে মেহু আমাকে মিথ্যা কথা বলেছে আর ছাদে নিয়ে এসেছে।” (মনে মনে)
ইভান রিফার কাছে আসতে নিলে রিফা তাকে থামিয়ে দেয়।
” একদম আমার কাছে আসবেন না।দূরে থাকুন।আমার যা জানার তা আমি জেনে গিয়েছি।সো আমার কাছে আর কিছু এক্সপ্লেন করতে হবেনা।”
#কাশফুলের_ভালোবাসা
#পর্বঃ১৩
#লেখিকাঃঅনন্যা_অসমি
” কি জেনে গেছো তুমি?”
” এইযে আপনি আমাকে ভালোবাসেন না।”
” কিসব বলছো তুমি এসব?”
” আমি যা বলছি ঠিক বলছি।”
” রিফু আমার…… ”
” বলছিনা এগোবেন না।ওখানেই দাঁড়িয়ে থাকুন।”
” আচ্ছা আমি আগাবোনা।তুমি প্লিজ বলো কেন তুমি আমাকে দুদিন ধরে এভাবে ইগনোর করছো?না ফোন ধরছো না মেসেজের রিপ্লাই দিচ্ছো।”
” কেন দেবো?কি কারণে দেবো?”
” কি কারণে মানে?তোমার কি হয়েছে বলো তো।”
” আমার কিছু হয়নি।তবে আপনি আমাকে এভাবে না ঠাকালেও পারতেন।”
” ঠাকালাম মানে?আর তুমি আমাকে আপনি করে বলছো কেন?”
” জ্বি ঠকিয়েন।চিট করেছেন আমার সাথে।ভালোবাসেন না আপনি আমাকে।”
” কে তোমাকে এসব বলেছেন?” রেগে বলে ইভান।
” কেউ বলেনি।আমি সব নিজের চোখে দেখেছি।”
” কি দেখেছো?”
” এইযে আপনি আমার পিটপিছে অন্য মেয়ে সাথে ফটিনষ্টি করেন।”
” তোমার মাথা কি পাগল হয়ে গিয়েছে।কিসব বলছো তুমি?”
” হ্যাঁ আমি তো পাগল।আপনিই ভালো।”
” আচ্ছা তুমি কি দেখেছো?”
” শুনতে চান?তাহলে শুনুন।আমি দু’দিন আগে আপনার কলেজে গিয়েছিলাম ভেবেছিলাম আপনাকে সারপ্রাইজ দেবো কিন্তু আপনি তো তখন অন্য মেয়ের সাথে মজা করতে ব্যস্ত।”
” কিসব বলছো তুমি?”
” ঠিকই বলছি।আমি নিজের চোখে দেখেছি আপনি একটা মেয়ের সাথে ক্লোজলি বসে ছিলেন আর তার সাথে হেসেহেসে কথা বলছিলেন।আমি আপনাকে ফোনও করেছিলাম।কিন্তু আপনি এতোটাই ব্যস্ত ছিলেন যে আমার ফোন তোলার সময়ই আপনার ছিলনা।” কান্না করতে করতে বলে রিফা।
” কান্না বন্ধ করো শ্যামলীনি।”
কিন্তু রিফা তো কান্না করেই চলেছে।ইভান এবার রেগে চিৎকার করে বলে—-
” আই সে স্টপ ক্রইং।”
রিফা ইভানের কন্ঠ শুনে কেঁপে উঠে।প্রথমে রিফা কান্না বন্ধ করলেও কিছুক্ষণ পরে আবারো কান্না শুরু করে দেয়।ইভান রিফাকে দেয়ালের সাথে চেঁপে ধরে।
” কান্না বন্ধ করো।আর আমার কথা শোনো।”
কিন্তু রিফা তো কান্না বন্ধ করার নামই নিচ্ছে না।ইভান না পারতে রিফার মুখ চেপে ধরে।
” তুমি না শুনে না বুঝে আসল কথা না জেনে নিজে নিজে কাহিনী বানিয়ে নিলে কেন?ওদিন যাকে দেখেছিলে ও হচ্ছে নওশিন।আমার ক্লাসমেট।ওইদিন ও একটা টপিক বুঝতে ছিলনা তাই ওকে ওটা বুঝিয়ে দিয়েছিলাম।আর ফোন রিসিভ করতে পারিনি কারণ ফোনে চার্জ ছিলনা।আর তুমি বোকা মেয়ে নিজে নিজে কাহিনী বানিয়ে নিলে।”
রিফা ইভানের হাতটা মুখ থেকে সরিয়ে নেয়।
” এভাবে কেউ ধরে নাকি?আরেকটু হলে তো নিশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতো।”
” তো কি আর করতাম?তুমিই তো চুপ করছিলেনা।তাই এই পদ্ধতি।”
” আচ্ছা মানলাম নওশিন তোমার ক্লাসমেইট।তাহলে ওর সাথে এতো ঢলাঢলি কিসের?”
” আরে ও আমার ছোট বোনের মতো।ছোট বোন হিসেবে ওর সাথে মজা করছিলাম।আর তুমি কিভাব ভাবলে আমি তোমাকে ধোঁকা দেবো?তোমাকে ছেড়ে অন্যকাউকে ভালোবাসবো?”
এদিকে,
ছাদের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মোবাইল টিপছে মেহেক।ইভানই তাকে বলেছে তারা না আসা পর্যন্ত যেন এখানে দাঁড়িয়ে থাকে।হঠাৎ মেহেক কারো পায়ের আওয়াজ শুনতে পাই।মেহেক ফোন থেকে চোখ সরিয়ে দেখে স্পর্শ উপরে আসছে।স্পর্শকে দেখে মেহেক ভয় পেয়ে যায়।স্পর্শ এইসময় মেহেককে এখানে আশা করেনি তাই সে অবাক দৃষ্টিতে মেহেকের দিকে তাকিয়ে রয়।
” এতো রাতে এখানে কি করছো?” গম্ভীর ভাবে বলে স্পর্শ।
এই প্রথম স্পর্শ নিজে থেকে মেহেকের সাথে কথা বলেছে।স্পর্শের কথা শুনে মেহেক বুঝতে পারছেনা কি বলবে সে।
” ওই আসলে…..আসলে রুমে ভালো লাগছিলো নাতো তাই ভাবলাম ছাদ থেকে ঘুরে আসি।”
মেহেকের কথা স্পর্শের বিশ্বাস হলো বলে মনে হলোনা।মেহেক মনেপ্রাণে চাইছে যেন স্পর্শ তার কথা বিশ্বাস করে।
” ও…..বেশি সময় থেকোনা।”
স্পর্শ আর কিছু না বলে উল্টো পায়ে নিচে নেমে পড়ে।স্পর্শকে যেতে দেখে মেহেক স্বস্তির নিশ্বাস নেই।
” যাক বাবা এই যাত্রায় বেঁচে গেলাম।
ছাদে,
রিফার ইভানকে জরিয়ে ধরে।
” আমাকে ছেড়ে কখনো যেওনা,আমি তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না।বেঁচে থাকলেও জীবন্ত লাশ হয়ে যাবো।”
” কিসব বলছো তুমি?বিশ্বাস রাখো কখনো তোমাকে ছেড়ে যাবোনা।”
” সরি তোমাকে কষ্ট দেওয়ার জন্য।”
” এবারের জন্য তো সরি একসেপ্ট করলাম কিন্তু পরের বার করবোনা।এরপর থেকে নিজে নিজে কাহিনী বানিয়ে নিওনা।আমাকে আগে জিজ্ঞেস করবে বুঝতে পেরেছো?”
” হুম।”
ছাদের সিঁড়িতে,
দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে মেহেকের পা ব্যথা হয়ে গিয়েছে।তাই সে সিঁড়িতে বসে বসে মোবাইলে ড্রামা দেখছে।
” ধুর,এদের প্রেম কি শেষ হয়নি নাকি?কতোক্ষণ ধরে অপেক্ষা করছি।ধুর।”
” তুমি এখানে কি করছো মেহুরাণী?”
হঠাৎ কারো কন্ঠস্বরে ঘাবড়ে যায় মেহেক।সে ভয় পেয়ে হুট করে উঠে দাঁড়ায়।মেহেক সামনে তাকিয়ে দেখে সৌন্দর্য কথাটা বলেছে।
” আরে আস্তে আস্তে।”
” আরে…..ধুর এ আবার এখানে কেন এলো?আরে কি জ্বালায় পড়লাম।” (মনে মনে)
” তুমি এখানে কি করছো মেহেক?”
” আসলে হয়েছে কি রুমে ভালো লাগছিলোনা তাই এসেছিলাম।”
” তো সিঁড়ি বসে আছো কেন?ছাদের ভেতরে যাও।চলো আমিও যায় তোমার সাথে।আমারো ভালো লাগছিলেনা রুমে।চলো দুজনে মিলে চন্দ্রবিলাস করি।”
” না না আমি আর যাবোনা।আসলো আমার না পড়া বাকি আছে।”
” আচ্ছা ঠিক আছে তাহলে তুমি যাও আর আমি একটু ছাদ থেকে ঘুরে আসি।”
” এই না….ছাদে যাওয়া যাবেনা।”
” কেন?” ভ্রু-কুচকে জিজ্ঞেস করে সৌন্দর্য।
” (এখন কি বলি-মনে মনে) আসলে এতো রাতে ছাদে যাওয়া ভালোনা আর ছেলেদের তো একদমিই না।কারণ ছেলেরা বেশি সুন্দর হলে রাতে তাদের পেত্নি ধরে।আর আপনি তো খুব সুন্দর এবং হীরার মতো।না জানি কোন পেত্নির আপনাকে ভালো লেগে যায়।দেখা যাবে পরে পেত্নি আপনার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে।তখন কি করবেন?তাই এখন ছাদে যাওয়া যাবেনা।
মেহেকের এই আজগুবি কথা শুনে সৌন্দর্যের মাথা ঘুরে যায়।হঠাৎ কি মনে কর যেন সৌন্দর্য চট করে মেহেকের দিকে তাকাই।
” এই তুমি কি বলেছো একটু আগে।”
” বলেছি ছাদে যাওয়া যাবেনা।”
” না তার আগে কি বলেছে?আমি সুন্দর হীরার টুকরা।তার মানে তুমি বলতে চাইছো আমি হ্যান্ডসাম।রাইট?” অনেক আগ্রহ নিয়ে বলে সৌন্দর্য।
সৌন্দর্যের কথার মেহেক বুঝতে পারে সে কি বলতে কি বলে ফেলে।
” আচ্ছা সেসব কথা বাদ দিন এখন রুমে যান।”
” তুমি যাবেনা?”
” (আমি গেলে পাহাড়া দিব কে?— মনে মনে)হুম যাবো তবে আগে আপনি যান আমি আসছি।
” আচ্ছা তাড়াতাড়ি এসো।বেশিক্ষণ থেকোনা নয়তো ভুত তোমার প্রেমে পড়ে যাবো।”
কথাটা বলে হাসতে হাসতে চলে যায় সৌন্দর্য।সৌন্দর্য যেতে মেহেক হাফ ছেড়ে বাঁচে।
” ধুর আমি আর এখানে থাকবোনা।এমনিতেই রাত হয়ে গিয়েছে তারপর বারবার কেউ না কেউ আসছে।এবারের মতো তো বেঁচে গেলাম না জানি কখন ধরা পড়ে যায়।”
মেহেক ছাদের দরজা খুলে উঁকি মেরে ভেতরে দিকে।
” রিফু এই রিফু।” আস্তে আস্তে রিফাকে ডাকে মেহেক।
” কি হলো?শুনতে পাচ্ছেনা নাকি?রিফু এই রিফু…ওই রিফু কি বাচ্চি।” হালকা জোরে বলে মেহেক।
দোলনায় ইভানের কাঁধে মাথা দিয়ে চন্দ্রবিলাস করছে রিফা আর ইভান।হঠাৎ রিফা শুনতে পাই মেহেকের কথা।রিফা থাকা তুলতে গেলে ইভান তুলতে দেয়না।
” কি করছো?ছাড়ো।”
” মাথা সরাচ্ছো কেন?”
” দেখছোনা মেহু ডাকছে।আর অনেক্ষণ তো হলো এবার যেতে হবে।কেউ দেখে ফেললে তো ঝামেলায় পরে যাবো।”
” আরেকটু থাকোনা প্লিজ।”
” না যেতে হবো তো।”
” প্লিজ আর কিছু সময়।”
” আচ্ছা জাস্ট ২ মিনিট।”
রিফা আবারো ইভানের কাঁধে মাথা রেখে চন্দ্রবিলাস করতে থাকে।
এদিকে মেহেক রিফার বা ইভানের কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে বিরক্ত হয়।
” এরা কি মহাকাশে প্রেম করতে চলে গেলো নাকি?ধুর ছাই যা ইচ্ছা করুক আমার কি?ধরা পড়লে এদের দোষ,হু……।এই রিফু আমি চলে যাচ্ছি।ছাদের দরজা কিন্তু খোলা।এতো বেশি প্রেম করিস না,স্বাস্হ্যের জন্য ভালো হবেনা।তাড়াতাড়ি চলে আসিস,আমি গেলাম।”
মেহেক কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে যদি তারা আসে বা কিছু বলে।কিন্তু না যখন কেউ কিছু বলেনি বা আসেনি তখন মেহেক নিচে চলে আসে।
চলবে…….
চলবে…….
চলবে……