অনুতাপ পর্ব -২৭+২৮

#অনুতাপ
#সপ্তবিংশ #Yasira_Abisha (#Fatha)

রুহি আর ইরাদ এক রাস্তার দিকে বেড় হলো একই সাথে। কাউকে এদিকটায় দেখা যাচ্ছে না গভীর থেকে গভীরে চলে যাচ্ছে ওরা দু’জন। রুহি মনোযোগ দিয়ে সামনের দিকে তাকিয়ে যাচ্ছে আর ইরাদ মুগ্ধ হয়ে ওকেই দেখছে। রুহি নিজে খেয়ালই করছে না কোন পথ দিয়ে ওরা যাচ্ছে।
পুরো ৩ বছর পরে আজকে আবারো রুহি আর ইরাদ একা কোথাও এসেছে। ভালোবাসাটা দুজনের মনে আগের মতো থাকলেও, সেটা আর প্রকাশিত হচ্ছে না। রুহি তো একদম গুটিয়ে ফেলেছে নিজেকে, ও আর চাইছেই না ইরাদকে নিজের মনের কথা জানাতে। আর এদিকে ইরাদের আর ইচ্ছে নেই নিজেকে ধরে রাখার যতটা কষ্ট দেওয়ার ও দিয়ে ফেলেছে রুহিকে। মেঘার মতো ভেবে ও রুহির মনটা ক্ষতবিক্ষত এমনিতেই করে দিয়েছে। রুহিকে ইরাদ বুঝতে অনেক বড় ভুল করে ফেলেছিলো। তবে এখন থেকে সবটা ইরাদ শুধে আসলে চুকিয়ে দিবে ভেবে নিয়েছে। কিছু দূর যাওয়ার পরে রুহি থেমে যায় কিছুটা দূরে একটা ঠিলার মধ্যে ঘর দেখা যায়, আলো জ্বলছে কুপি দিয়ে ভেতর থেকে। এরপাশে চোখ যেতেই আরো একটা ঘর দেখা যাচ্ছে। এরপরই রুহি চারপাশে তাকায় এবং সামনের দিকে তাকিয়েই ইরাদকে বলে,
– আমরা কি পাহাড়ের ওপরে উঠে গেছি?
ইরাদের তখন খেয়াল আসে চারদিকে চোখ বুলিয়ে বলে,
– আই থিনক ইউ আর রাইট, আমরা বোধহয় পাহাড়ের দিকে উঠে গেছি।
– শিট, তাহলে ওরা ঠিকি বলেছিলো এদিকে আর পেশেন্ট নেই।
-হুম।
-তাহলে চলুন ফিরে যাওয়া যাক।
এই বলেই রুহি পেছন ঘুরে দ্রুত হাটতে নেয় এবং পাহাড়ি উঁচুনিচু রাস্তা হওয়াএ কারণে পা পিছলে পড়ে যায় মাটিতে।
রুহি এভাবে পরে যাওয়ায় ইরাদ সাথে সাথে রুহিকে হাত দিয়ে ধরে উঠায়। তবে হাটুতে এতোটা জোরে আঘাত খায় রুহি যে সে নিজে থেকে উঠে আর দাড়াতে পারে না। পায়ের গোড়ালি টাও বেশ খানিক ছিলে গেছে।
ইরাদের হাতের স্পর্শ রুহিকে অস্বাভাবিক করে তোলে, রুহির অস্বস্তি বেড়ে যায় এই মানুষটা থেকে ও যতটা চেষ্টা নিজেকে দূরে রাখার চেষ্টা করে চলে।
– আমাকে ছাড়ুন আমিই হাটতে পারবো
ইরাদ রুহির এমন অবস্থা দেখে কোনো কথা না বলেই ওকে কোলে তুলে নেয়।
রুহিকে এভাবে কোলে তুলে ফেলায় রুহি একদম হকচকিয়ে উঠে,
– কি করছেন?
ইরাদ সামনের দিকে হাটতে হাটতে বলে,
– পেশেন্ট কে হেল্প করছি
– এখানে পেশেন্ট এলো কোথথেকে?
– আমার কোলে যে বাচ্চা মেয়েটা আছে সে।
-আমাকে নামান
– হুম একটু পর নামিয়ে দিচ্ছি, ওয়েট মনে হচ্ছে ৩-৪ কেজি বেড়ে গেছে আপনার।
মুচকি হেসে কথাটা বলে ইরাদ
ইরাদের কথা শুনে রুহি ভ্রু কুচকে ফেলে।
এইভাবে কথা কোনোদিন ইরাদ বলে নি, আর রুহি কি সত্যিই বেশি মোটা হয়ে গেছে যে ইরাদ ওকে এটা বললো?
তবে পায়ের ব্যাথাটা বেশ লাগছে।
রুহি ইরাদকে বলে,
– আপনি দেখছেন তো ঠিকভাবে আমরা কোনদিকে যাচ্ছি?
– হুম দেখেই তো হাটছি
– তাহলে আপনি অন্ধ হয়ে গেছেন নির্ঘাত, কারণ আপনি পাহাড়ের ওপরে উঠে যাচ্ছেন নিচে না নেমে।
– আমি ঠিকি আছি কিন্তু আপনার বুদ্ধি লোপ পেয়েছে ডক্টর রুহি। আমরা এখন নিচে গেলে সমস্যা কারণ পথ অনেকটা আর খুজেও বেড় করা যাবে না সবাইকে। তাই ওপরে ওই ঘর গুলোর মধ্যে আমাদের আশ্র‍য় নিতে হবে আজকে রাতে।

.

-হ্যালো, মেঘা। মা কেমন আছেন?
– ভালোই,
– আর কি বললো ডক্টর? কবে ফিরবে?
-আরো কিছুদিন থাকতে হবে এরপর ফিরবো। হিমা কি ঠিকঠাক খাওয়াদাওয়া করতেসে?
– তুমি কি ওর খাওয়াদাওয়ার খোঁজ নাও কোনোদিন?
– কিহ? আমার মেয়ের খোঁজ আমি নিই না? তাহলে তুমি নাও? অফিস ছাড়া তোমার আর কোনোদিন খেয়াল থাকে? নাকি একবার ভাবতে পেরেছো আমাদের নিয়ে?
– আমি না ভাবলে তোমাদের এই লাইফস্টাইল কিভাবে লিড করতে তুমি? আর মেয়ের কথা বাদই দিলাম তুমি আমার জীবনে কোনো খেয়াল রেখেছো?
– নাহ আমি রাখিনা তো, তোমার এক্স জিএফরা এসে খোঁজ নিয়ে যায় তোমার।
– তোমার হয়তো এক্সের সাথে সম্পর্ক আছে তাই আমাকে বলছো
– সাহিল মুখ সামলে কথা বলবা,
-মুখ তুমি সামলাও মেঘা, অনেক বলো আমাকে। যদি বাচ্চা না থাকতো তাহলে হয়তো আমি সেপারেশনে চলে যেতাম।
– বেধে কে রেখেছে? যাও
– তোমার সাথে আসলে কথাই বলা উচিত না।
– তাহলে বইলো না।
এই বলেই মেঘা ফোনটা কেটে দিয়ে বিছানায় ছুরে মারে।
আজকে এটা নতুন না, এখন প্রতিদিন যে কোনো টপিক নিয়েই স্বাভাবিকভাবে মেঘা আর সাহিলেএ কথা হয় না। কেনো এমন হয় এটা মেঘা ও বুঝে না সাহিল ও বুঝে না। একে অপরকে মানাতে পারে না। দুজনের দু’দিক শুনলে মনে হবে ওরা নিজ জায়গায় ঠিক আছে। তবে একত্রে ক্যালকুলেট করতে গেলে দেখা যায় ওদের কারো জায়গা থেকে কেউ ঠিক না।

এদিকে সোবহান সাহেব তার স্ত্রী ও রুহির বাবা সবাইবজানে তাদের বড় মেয়ে স্বামী বাচ্চা নিয়ে সুখে আছে। এখন ছোট মেয়েও তো বড় হয়ে গেছে ওকে একটা ভালো পাত্র দেখে বিয়ে দিতে হবে। রুহির বাবার ইচ্ছে আছে সাহিলের ফুপাতো ভাই আকিবের সাথে রুহিকে বিয়ে দেওয়ার। আর রুহির বাবা তো ইরাদকে পছন্দ করেই রেখেছেন মেয়ের জন্য। সোবহান সাহেব জানে তার রুচি ভালো আর এতে রুহির পিতা বা মেঘার মায়ের কারোরই আপত্তি হওয়ার কথা না।

.

রুহি আর ইরাদ একটা ঘরের সামনে গিয়ে দরজার কড়া নাড়লো ঠিক তখনি মুশল ধারে আকাশ থেকে বৃষ্টির বর্ষণ শুরু হয়ে গেলো। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ইরাদ আর রুহির কাক ভেজা হয়ে গেলো।
ভেতর থেকে এক বয়ষ্ক পাহাড়ি দম্পত্তি বেড়িয়ে এলো,
রুহি ইরাদকে দেখে বয়ষ্ক লোকটা জিজ্ঞেস করলো
– কাকে চান?
– আসলে আমরা শহর থেকে এসছি, আমরা ডক্টর পথ হারিয়ে এই রাস্তায় এসে পরেছি আজ রাতে কি আমাদের আশ্র‍য় দেওয়া যাব? অনেক বেশি বৃষ্টি হচ্ছে আর পায়েও বেশ ব্যাথা পেয়েছে উনি। এই অবস্থাতে আমরা যেতেও পারছি না।
সবটা শুনে আর রুহি ইরাদের আইডি কার্ড দেখে পাশের ঘরটায় ওদের থাকতে দিতে রাজি হয়ে গেলো ওরা,
– তবে একটা কথা, তোমাদের নাম কি? আর তোমরা জামাই বউ তো?
রুহির চোখ বড় বড় হয়ে গেলো ও কিছু একটা বলতে যাবে তখনই ইরাদ বলে,
– আমি ডক্টর ইরাদ, উনি ডক্টর রুহি। আর হ্যাঁ উনি আমার স্ত্রী।
কথাটা শুনে রুহির কলিজার ভেতরটা মোচর দিয়ে ওঠে, কত ইচ্ছা ছিলো রুহির ওকে ইরাদ নিজের স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করবে আর আজকে কি নক অন্যজনের হয়ে যাওয়ার পর রুহিকে মিথ্যামিথ্যি ভাবে ও স্ত্রী বলে সম্ভোধন করছে। এতে রুহির রাগ লাগছে, কান্নাও পাচ্ছে রুহির চোখ দুটো লাল হয়ে গেছে। ইরাদ বুঝতে পেরেছে একবার রুহির দিকে তাকিয়েই।
ইরাদ মনে মনে বলছে,
– আর একটু কষ্ট করুন আমার হবু স্ত্রী এই কথাটা আমি ইনশাআল্লাহ সত্যি করবোই৷ যতগুলো চোখের পানি ফেলেছে এগুলো সব আমি সুখ দিয়ে ভরিয়ে দেবো। তবে আপনার কাছে আগে মাফ তো চাইতে হবে আমার।

রুহি আর ইরাদকে একটা ঘর দিলো তারা থাকার জন্য এই সময় কাক ভেজা হয়ে গেছে ওরা দু’জনই, নিতাই চাকমা ও সুধা চাকমা এই বৃদ্ধ দম্পতির নাম। ইরাদকে আর রুহিকে তারা কাপড় দিলো পাল্টে পড়ার জন্য, ইরাদের কাধে ব্যাগ ছিলো যেখানে ওর একটা ট্রাউজার ও টিশার্ট ছিলো। এমন সময় কাপড় সাথে ক্যারি করা উচিত ইরাদ এটা জানতো কিন্তু রুহি তো জানতো না। রুহিকে একটা সবুজ শাড়ি দিয়ে গেছে সুধা চাকমা পড়ার জন্য,
ইরাদ ঘর থেকে বেড়িয়ে গিয়ে চেঞ্জ করে এলো নিজের কাপড় পরে । এ সময় ফিরে এসে দেখে রুহি ওভাবেই বসে আছে,
-চেঞ্জ করবেন না?
রুহি কিছু না বলে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
রুহির মুখে কোনো উত্তর না শুনে ইরাদ রুহির কাছে এগিয়ে এলো, এবং একদম কাছে এসে কানের কাছে বললো,
– ঠিক আছে আমি হেল্প করছি।
কথাটা শুনে রুহির হার্টবিট একদম বেড়ে গেলো,
কথটা বলেই ইরাদ রুহির পাশে থাকা শাড়িটি হাতে নিয়ে সুধা চাকমা কে ডাক দিলো,
এবং মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
– হেল্পটা এইভাবেই করি
রুহি ইরাদের কথা শুনে ভ্রু কুচকে বলে
– এই মুহুর্তে আপনি ঘর থেকে গেলে ভালো হয়।
#অনুতাপ
#অষ্টবিংশ_প্রহর #Yasira_Abisha (#Fatha)

রুহি কিছু না বলে বাইরের দিকে তাকিয়ে আছে।
রুহির মুখে কোনো উত্তর না শুনে ইরাদ রুহির কাছে এগিয়ে এলো, এবং একদম কাছে এসে কানের কাছে বললো,
– ঠিক আছে আমি হেল্প করছি।
কথাটা শুনে রুহির হার্টবিট একদম বেড়ে গেলো,
কথটা বলেই ইরাদ রুহির পাশে থাকা শাড়িটি হাতে নিয়ে সুধা চাকমা কে ডাক দিলো,
এবং মুচকি হাসি দিয়ে বললো,
– হেল্পটা এইভাবেই করি
রুহি ইরাদের কথা শুনে ভ্রু কুচকে বলে
– এই মুহুর্তে আপনি ঘর থেকে গেলে ভালো হয়।

ইরাদ মুচকি হেসে ঘর থেকে বেড় হয়ে গেলো, সুধা চাকমা ভাবলো জামাই বউয়ের মধ্যে কোনো কারণে মনমালিন্য চলছে তবে এই গুলো হলো দুষ্ট মিষ্টি মনমালিন্য যেগুলো তাদের এই বয়সে তারাও করেছে। রুহিকে শাড়ি পরিয়ে দেওয়ার সময় সে বললো,
– তোমাগো বয়সে আমরাও এমন অনেক করসি
রুহির চোখে প্রশ্ন নিয়ে তাকায় উনার দিকে,
– বোঝো নাই?
– না আন্টি
– এইজে জামাইর সাথে জেদ রাগ, তবে তোমার জামাই তোমারে আদর করে অনেক বুঝা গেসে
– কিভাবে?
– এইজে তুমি কাপড় পড়তে পারতাসো না দেইখা আমারে ডাইকা আনলো পুরাটা পাহাড় কোলে কইরা তুইলা আনলো। আদর সোহাগ না থাকলে কেউ করে নি?
কোনো উত্তর দিলো না রুহি। শুধু মলিন একটা হাসি দিলো।শাড়িটা পড়ার পরে রুহিকে একদম সুশ্রী রূপবতী দেখাচ্ছে মনে হচ্ছে স্বর্গের কোনো অপ্সরাও হার মানবে। কোনো সাজসজ্জা ছাড়াই গোলাপী ঠোঁট আর বড় বড় চোখ গুলো রুহির যে কাউকে ঘায়েল করতে যথেষ্ট। ইরাদ ঘরে ঢুকে কয়েক মুহুর্তের জন্য একদম জমে গেলো রুহিকে দেখে, ছিমছাম ঘরটা বেশ সুন্দর করে গোছানো আর এর মধ্যে রুহিকে মনে হচ্ছে একটা হূর বসে আছে।
রুহি গুটিশুটি মেরে বিছানার এক কোণে বসে আছে, পা বেশ ব্যাথা করছে। এই কারনে যতটা না অসহ্য লাগছে তার চেয়ে বেশি অসহ্য লাগছে ইরাদকে ওর স্বামী ভাবছে সবাই তাই। ইরাদ তো অন্য মেয়েকে বিয়ে করেছে তাহলে কেনোই বা সবার ভুল ইরাদ ভেঙে দেয় নি? এসবটা ভেবেই রুহির ডুকরে কান্না আসছে।

ইরাদ ঘরে এসেছে হাতে একটা বাটি নিয়ে, রুহি ইরাদকে দেখে অন্যদিকে মুখ করে তাকিয়ে রইলো। ইরাদ কিছু না বলে একদম রুহির কাছে এসে বসলো। এতেও রুহি কিছু বললো না, ইরাদ যে এখানে আছে এটা যেনো রুহির মধ্যে কোনো ধরনের ভাবান্তর ঘটাচ্ছে না। এবার ইরাদ আলতো করে রুহির হাতটা সরিয়ে পায়ের গোড়ালিতে হাত দিলো রুহি এবার ইরাদের দিকে তাকিয়ে,
– কি করছেন আপনি?
– কাজ করছি
– মানে?
– মানে পায়ে ব্যাথা পেয়েছেন এখন হলুদ আর নিমের লেপ দিতে হবে নাহয় শুকবেনা।
– এমনি ঠিক হয়ে যাবো দরকার নেই।
– দরকার আছে।
– ছাড়েন তো, অন্যের স্বামী আমাকে স্পর্শ করবে এটা আমার পছন্দ না।
– হ্যাঁ?
– নিজের স্ত্রী থাকা স্বত্তেও অন্য মেয়ের গায়ে হাত দেওয়া ঠিক না।
– আমি একজন ডক্টর। আমার কাছে কেউ ছেলে আর কেউ মেয়ে বলে পার্থক্য নেই আর এটা বোধহয় একজন ডাক্তার হিসেবে আপনিও জানেন।
– ছাড়েন
– চুপ থাকেন আর একটা কথাও বলবেন না আপনি।
আমার কাজ আমাকে করতে দিন এই বলেই রুহির পায়ে যে যে জায়গায় ক্ষত হয়ে গেছে সব জায়গায় লেপটা দিয়ে দিলো ইরাদ। ইরাদের স্পর্শ পেয়ে রুহি বারবার কেপে উঠছিলো। ইরাদকে হাজার চাইলেও নিজের মন থেকে রুহি বেড় করতে পারে না, এর মধ্যে এমন রাতের বেলা রুহি আর ইরাদ একা একটা ঘরে খুব বেশি কষ্ট হচ্ছে রুহির। একটা সময় ছিলো ইরাদ ওর হতেও পারে তখন একটা অপেক্ষায় কেটে যেতো রুহির দিন কিন্তু এখন? এখন কি ভাববে রুহি? কি নিয়েই বা থাকবে?

.

রুহিকে আর কোনো কথা বলতে না দিয়ে ইরাদ লেপ দিয়ে দিলো আর খাবার খাইয়ে দিলো এবং নিজেও খেয়ে নিলো। খাওয়া নিয়ে যদিও প্রথমে রুহি আপত্তি করছিলো তবে ইরাদ ও নাছরবান্দা রুহিকে মানিয়েই ছেড়েছে।

রাত প্রায় ২ঃ৩০টা বেজে গেছে,
রুহিকে ঘুম পাড়িয়ে ইরাদ জানালার কাছে এসে বসেছে আজকে রুহির কথায় ইরাদের বুঝতে বাকি রইলো না যে রুহি কেনো ওর সাথে এমনটা করছে, বিগত তিন বছরের অভিমান তো আছেই তবে তার সাথে এসে জুড়েছে সেদিনের কেকটা। কেকের মধ্যে যে এন্যিভার্সারীর উইশ ছিলো রুহি তাহলে ভেবে নিয়েছে ইরাদ বিবাহিত।
” ইশশ, আমি বারবার রুহিকে কষ্ট দিয়ে ফেলি মেয়েটা আমার কারণে আর কতো কাদবে? রুহির এই মুখে আর কান্না আনতে চাই না আমি। ওর ভুলটা আজকে ভেঙে দিতেই হবে আমার নাহয় যে নিজেকে মাফ করতে পারবো না। আর তাছাড়া আমি যে পরিমাণ কষ্ট ওকে দিয়েছি এরপর আসলেই আর কিছু বলার থাকে না যদি রুহি আমাকে মাফ করে তাহলে ভালো না করলেও আমি কিছু বলবো না। কারণ এই শাস্তি যে আমার প্রাপ্য।”

রুহির ঘুম তখন ভেঙে যায়,
ইরাদ রুহিকে উঠতে দেখে বলে,
-রুহি কিছু জরুরি কথা আছে যেগুলো আপনার জানা দরকার আমি বলি?

কথাটা খুব করুণ সুরে বললো ইরাদ। চোখ দুটো যেনো অনেক কথা বলে ফেলছে,

(চলবে…)
(

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here